নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

Shondhi Muhid

সন্ধি মুহিদ

ভেতরে বৈরাগ্য, বাইরে সংসারী মুখোশ!

সন্ধি মুহিদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

বিলাপ

১০ ই জুলাই, ২০১৪ রাত ৯:০৩

হিসেব করে দেখলাম, আমার মৃত্যুর পরে যারা কাঁদবে, তাদের সংখ্যা টেনেটুনে পাঁচ জনও হবে না। খুব বেশি মানুষের সাথে শেকড় গড়তে পারি নি। আমি মরার পরে, মৃত্যুসংবাদ পেয়ে কারোরই কিছু আসবে যাবে না। আমার মা হয়তো ভাববে, "ধুর! বিশ বছরের ইনভেস্টমেন্ট বৃথা গেলো। বিশ বছর খাওয়াইলাম, পড়াইলাম পুরাটাই নষ্ট হইলো!" কতখানি দুঃখ পাবে আমার বাবা? এবং কতদিন তার মধ্যে দুঃখটা রয়ে যাবে, আমি জানি না। খুব অভিমান থাকবে সবার জন্য। আমার চোখেই জল এসে যাচ্ছে, নিজেকে এতটা নিঃস্ব দেখে!

সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় এক বছর ধরে একটা লাইব্রেরিতে বিভিন্ন ধর্মের ধর্মগ্রন্থ পড়ে পড়ে শেষ করেছিলেন। এবং তারপর পুরোপুরিভাবে নাস্তিক হয়ে গিয়েছিলেন। লাইব্রেরিয়ান খুবই উৎসাহের সাথে বইগুলো খুঁজে দিতেন। ধর্মের প্রতি অনাসক্ত সুনীল যখন লাইব্রেরিয়ানকে জানালেন যে তিনি তার পৈত্রিক ধর্ম পরিবর্তন করতে চান, তখন লাইব্রেরিয়ান বললেন, "অত তাড়া কীসের? " সেই প্রসঙ্গে সুনীল লিখেছিলেন, মানুষের আত্মহত্যার ইচ্ছে যেমন এক বছর ধরে রাখা যায় না, তেমনি ধর্ম পরিবর্তনের ইচ্ছেটাও হুজুগের মত। সম্পূর্ণ অপ্রাসঙ্গিক গল্পটা বললাম, শুধু ঐ আত্মহত্যার ব্যাপারটা টানার জন্য।

আমার অনেক আগে থেকে আত্মহত্যা করার খুব ইচ্ছা ছিল। জগতের প্রতি তীব্র বৈরাগ্য, তীব্র বিতৃষ্ণা নিয়ে মাঝে মাঝেই ভেবেছি মরেই যাই। মরে গেলেই তো সব চুকেবুকে গেলো! কিন্তু আবার যখন অনিচ্ছায় মরার কথা, অর্থাৎ কোনো দুর্ঘটনায়, কিংবা অসুখে পড়ে মরার কথা খেয়াল হয়েছে, তখনই খুব বাঁচতে ইচ্ছে করেছে।

অনেক অনেক স্বপ্ন ছিলো। অনেক কিছু করে দেখাতে পারতাম আমি বিশ্ববাসীকে। কিন্তু দেখানোর সুযোগ পাইনি। ভেবেছিলাম, নিজের সুযোগ নিজেই করে নেবো একটা সময়। সঙ্গীসাথী কেউই পাশে ছিলো না কখনো। এমনকি, বাবা মার সাথেও আমার অনেকখানি দূরত্ব। একা একা থেকেছি। কেউ যখন ভালোবাসতে চেয়েছে, তাচ্ছিল্য করেছি। তখন মনে হয়েছে, "আমি ভালবাসা পাবার যোগ্য নই। এই মণিহার আমায় নাহি সাজে।" আবার যখন কেউ আমাকে তাচ্ছিল্য করেছে, তখন মন খারাপ করেছি। এখন একটা দম্ভ চলে এসেছে। এখন সবাইকেই তাচ্ছিল্য করে আমি মধ্যমাঙ্গুলি প্রদর্শন করে বেড়াই।

মা এসে বলে, "রাস্তায় মুরুব্বী দেখলে সালাম দিতে পারোস না? মানুষ আইসা আমারে কথা শোনায়!"

আমার তখন খুব খারাপ লাগে এই কথা ভেবে যে, আম্মা ক্যানো আমাকে সাপোর্ট দিচ্ছে না। আম্মা তো তাকে আমার পক্ষ থেকেও বলে দিতে পারতো কিছু। তারপরেই ভাবি, ভালো করেছি, তাও তো সেই সালামপ্রত্যাশীর ভাগ্য ভাল যে তাকে আমি আমার মধ্যমাঙ্গুলি দেখিয়ে আসিনি!

আত্মহত্যা প্রসঙ্গে ফিরে আসি। আমি কিন্তু কয়েক বছর ধরেই আত্মহত্যার কথা ভাবি। পরিকল্পিত কিছু না। খালি ভাবি, আর কত? একদিন টুপ করে উধাও হয়ে যাব।

যার কেউ নেই, তার নাকি ঈশ্বর থাকে। আমি আমার পাশে এই ঈশ্বরকেও খুঁজে পাই নি।

ইদানিং ইমোশোন কমে গেছে। কবিতাও কমে গেছে। কিন্তু যার জন্য আমি কবি হয়েছি, সেই দ্যুতি যেদিন বললো যে সে আমাকে ব্ল্যাকলিস্টে ফেলে রেখেছে, অভিমানের চোটে এক কবিতায় ঈশ্বরকে গুলি করে মেরে ফেললাম। এই একটা মানুষকেই আমি ভাবতাম যে আমার জন্য একটু হলেও সমবেদী (Sympathetic), কিন্তু এখন জানি যে সেটাও মিথ্যে। আমি পুরোপুরিভাবে বাঁধনছাড়া। ঈশ্বরহত্যা বিষয়ক কবিতাটা আমার এ যাবৎ লেখা সব কবিতার মাঝে আমার চোখে শ্রেষ্ঠ। কিন্তু কবিতাটা আমি প্রকাশ করবো না এখন। আমি প্রচণ্ড ভীতু এই ব্যাপারে। কারণ, পাগল ছাগল শ্রেণির লোক কিছু না বুঝেই যদি আমাকে খেদিয়ে বিদেয় করে দিতে চায়, দেশ বা দুনিয়া হতেই? আমি কোথায় গিয়ে দাঁড়াবো। এই দুনিয়া, অথবা, দুনিয়ার বাইরে, কোথাও আমার কেউ নেই।

আবার মাঝে মাঝে ইচ্ছে করে, তোমাদেরকে "fuck you" বলে যাচ্ছেতাই করতে থাকি। মরলে মরলাম। কী আর আসবে যাবে? শুধু শুধুই হয়তো ভয়টা পাই। মৃত্যু হয়তো অতটা খারাপ কিছুও না! মানুষ মরে গেলেই বেঁচে যায়। তো, থাকো তোমরা! আমি মরেই যাই।

আশা করি, মৃতুর পর আমি চোখ মেলে দেখবো অন্তত কেউ একজন আমার জন্যে সেখানে অপেক্ষা করে আছে, যার জন্যে পরম যত্নে আমি জমিয়েছি অনেক অনেক ভালোবাসা।

থাক, আপাতত আর বাড়াচ্ছি না। বিদায়

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ১০ ই জুলাই, ২০১৪ রাত ৯:০৬

চড়ুই বলেছেন: মানে কি? B:-) B:-) B:-) B:-) B:-) B:-) B:-) B:-) আত্মহত্যার সিধান্ত নিছেন নাকি? রোজা রমজানের দিনে এইসব কি বলেন ভাই!!!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.