![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
হা করে তাকিয়ে আছেন মাক্কু মিয়া, হা টা এতোই বড়, যদি মাছি ঢুকে আবার বের হয় সে টের পাবে না! তাকিয়ে আছেন সামনের মিছিলের দিকে। গুন্ডা গুন্ডা পোলাগুলা কেমন কাচুমাচু ভংগিতে কথা বলছে, পিকির সাথে! মিছিলের নেতৃত্ব দিচ্ছে সে। গলায় উড়না পেচিয়ে, জিন্স- গেঞ্জি গায়ে, পায়ে চপ্পল। চুলগুলো টানটান করে বাঁধা, মাথার ক্যাপ। কি বিষয়ে শ্লোগান হচ্ছে ঠিক বুঝা যাচ্ছে না। আরেকটু কাছে! হ্যাঁ এবার বুঝা যাচ্ছে! অধ্যক্ষের পদত্যাগ চাই। মাইলস্টোন ইউনিভার্সিটির নতুন অধ্যক্ষ।
ভদ্রলোক কদ্দিন আগে মাত্র এসেছেন।এসেই ভেবেছেন বহুদিনের লালিত স্বপ্নপুরীতে এসে গেছেন। কি নেই এতে?
মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম, অত্যাধুনিক ল্যাবরেটরি, বিশাল সুইমিংপুল, সবুজের গালিচা বিছানো মাঠ, কাতারে কাতারে ফুলগাছ! ইউনিভার্সিটি নাকি শুটিং স্পট?
একনজর দেখেই বুঝা যায় বড় যত্ন নিয়ে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে এই ইউনিভার্সিটি। কিন্তু সব স্বপ্নের অপমৃত্যু ঘটিয়ে সবার অগোচরে এখানে ঢুকে পড়েছে এক কালসাপ। রাজনীতি! তাও আবার মহিলা নেতৃত্বে!! এই দুঃখ আমি কোথায় রাখি?
########################
রাত বারোটা। মিটিং শেষে বাসায় ফিরছেন ইরফান সাহেব।একি? এত রাতে এখানে কারা? গ্যারেজে গাড়ি রেখে বাসায় ঢুকতে যাবেন, পথ আগলে দাঁড়াল পিকি। সাথে তার "ছোটভাইরা"।
স্যার একটু দয়া করুন না, প্লীজ!
-দেখ পিকি! আমি আমার কথা সাফ বলে দিয়েছি, ইম্পসিবল।
-স্যার!!
-নো।
-এই হারামজাদা, তুই নিজেকে ভাবস কি? মহারাজা? ভালোয় ভালোয় বলছি কানে হাওয়া ঢুকে না। সমর্থন দিবি ত দিবি, সব স্টুডেন্টের সামনে কান ধরে বলবি -আমি পিকি প্যানেলকে সমর্থন দিলাম।
-দেখ, আমি তোমাদের অনেক ছাড় দিয়েছি। আর না।'
-মানে? সরকারি মাস্টাররাতো রীতিমতো ধোলাই খায়। প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি বলে এখনো রক্ষা!আবার বলেন ছাড়? পিকির ভাষা উঠানামা করছে। লক্ষণ ভাল না। সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছে। কোন ডিসিশন নিয়ে আসেনি। যেকোন মুহূর্তে কিছু ঘটতে পারে।
-তোমাদের কথায় বিনা টেন্ডারে কাজ দিয়েছি। এমন লোককে শিক্ষক বানিয়েছি যে দারোয়ান হবার যোগ্যতাও নেই। তার বেতনের টাকায় আমি বরং ছাত্রদেরকে মাসে একটি করে খাসি কিনে দিতাম, সেও ঢের ভালো ছিলো।
প্রাইভেট ইউনিভার্সিটিতে এগুলো হবার কথা না। ভার্সিটি চালাবে কমিটি। ছাত্ররা ব্যাগ ঝুলিয়ে খোকাবাবুর মতো আসবে যাবে। ভালো রেজাল্ট করবে,ব্যস!
কিন্তু এখানে তা হয়নি। মন্ত্রীপুত্র জুটিয়ে এরা রাজনীতির গরম বাজার খুলে বসেছে। কমিটি গাটের পয়সায় উন্নয়ন কাজ করবে,নিজেদের মনমতো করবে।তা না, করাতে হবে ওদের দিয়ে। বৃস্টি হলে রঙ খসে পড়ে। মোচড় দিলে বাথরুমের টেপের মাথা খুলে যায়। তবু কিচ্ছু বলা যাবে না। মানসম্মান থাকবে না। ওদের অত্যাচারে কমিটি দিশেহারা, যেকোনো মূল্য তারা এখন ভার্সিটি বন্ধ করে দিতে চান। স্থাবর সম্পত্তি বিক্রি করলেও কোটি টাকা পকেটে আসবে।সেই ভালো! এখন ধরেছে অভিভাবক নির্বাচনে ওদের প্যানেলকে সমর্থন দিতে। জীবন গেলেও ইরফান সাহেব তা করবেন না।রাজনীতি থেকে সারা জীবন একশ হাত দূরে ছিলেন। ব
-মাইয়া নিয়া রুমে ফস্টিনস্টি করেন, ফ্লাশ করে দিলে তো পিঠ বাঁচাইতে পারবেন?
ইরফান সাহেব বিভ্রান্ত বিধ্বস্ত চেহারায় তাকিয়ে আছেন। এমন কথাও কেউ বলে? তাঁর নাতনির বিয়ের কথা চলছে!
-রাত হয়ে গেছে, কাল অফিসে আপনার সাথে বুঝাপড়া হবে।
কম্পিত পদে ঢুলতে ঢুলতে বাসায় ঢুকলেন ইরফান সাহেব! এমন ভাগ্য নিয়েও কেউ জন্মায়? এতো অপমান?
©somewhere in net ltd.