নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জীবন একটি মুখোশ

শেরিফ আল সায়ার

মানুষ। বড় আজব এই মানুষ। মানুষ নাকি ফানুষ তাও এখন আর বোঝার ক্ষমতা আমি রাখি না। সব ক্ষমতা হারিয়ে গেছে। হারিয়ে দিন যাচ্ছে নির্জনে। নির্জনে থাকি নিজের সাথে। ধীরে ধীরে নির্জনতা প্রিয় মানুষে রুপান্তরিত হচ্ছি। হয়তো হয়েও গেছি। ইদানিং চলাফেরা করতেও ভয় হয়। চারিপাশে মানুষ দেখি না। দেখি শুধু মুখোশ। মুখোশে-মুখোশে ছেয়ে গেছে গোটা পৃথিবী। নিজের বিভৎস চেহারা সামনে একটি মসৃন আবরন। সেটাই মুখোশ। নিজেকে লুকিয়ে রেখে ভালো মানুষি মুখোশটাকে ইদানিং দেখা যায় বেশী। স্বার্থ এমনই ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছে। স্বার্থ ফুরালেই সব শেষ। মুখোশটা ঠিক তখনই উন্মোচন হয়। বিভৎস সেই চেহারা দেখে বমি চলে আসে। থুথু ছিটিয়ে প্রতিবাদ করতেও উদ্ধত হই। কিন্তু তাও পারি না। এত কাছের মানুষকে তাও করা সম্ভব হয় না। তাইতো নির্জনে চলে গেছি। একদম নির্জনে। হাজার অবিশ্বাস নিয়ে এখন আমিও মুখোশধারীদের মতো হয়ে গেছি। মুখোশটাই হয়ে গেছে জীবনের মূলমন্ত্র। কারণ, জীবন একটি মুখোশ।

শেরিফ আল সায়ার › বিস্তারিত পোস্টঃ

ওয়ার ক্রাইমস ফাইল- এর পরিচালক নন বার্গম্যান!

০৬ ই জুন, ২০১৪ বিকাল ৩:৪২

বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধ ও যুদ্ধাপরাধ নিয়ে নির্মিত তথ্যচিত্রের মধ্যে অন্যতম “ওয়ার ক্রাইমস ফাইল”। এমনকী বাংলাদেশের যুদ্ধাপরাধ ইস্যুতে এটাই প্রথম আন্তর্জাতিক পুরস্কারপ্রাপ্ত তথ্যচিত্র। ১৯৯৫ সালে তথ্যচিত্রটি নির্মাণ করে অালোচনায় অাসেন বাংলাদেশে বসবাসকারী ব্রিটিশ নাগরিক ডেভিড বার্গম্যান। বেশ কয়েকটি অনলাইন সূত্রে উল্লেখ অাছে ডেভিড বার্গম্যান ওই তথ্যচিত্রের পরিচালক। বাংলা ট্রিবিউনের অনুসন্ধানে দেখা গেছে “ওয়ার ক্রাইমস ফাইল” তথ্যচিত্রের পরিচালক ছিলেন হাওয়ার্ড ব্র্যাডবার্ন। তথ্যচিত্রটিতে একজন প্রতিবেদক হিসেবেই কাজ করেছেন বার্গম্যান।

ডেভিড বার্গম্যান পরিচালক নাকি প্রতিবেদক? এমন প্রশ্নের জন্ম দেয় বার্গম্যানের ব্যক্তিগত ব্লগ প্রোফাইলের পরিচিতি অংশ। সেখানে এই তথ্যচিত্রের সঙ্গে তিনি ‘যুক্ত‘ ছিলেন বলে উল্লেখ করেছেন। প্রোফাইলে এ সম্পর্কে তিনি উল্লেখ করেছেন, “১৯৯৫ সালে রয়্যাল টেলিভিশন সোসাইটি অ্যাওয়ার্ড বিজয়ী চ্যানেল ফোর-এর প্রামাণ্যচিত্র ‘ওয়ার ক্রাইমস ফাইল‘ নির্মাণে আমি যুক্ত ছিলাম। তথ্যচিত্রটি ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে অভিযুক্ত তিনজন মানুষকে নিয়ে এটি নির্মিত।” (“In 1995, I was involved in making the Royal Television Society award winning Channel Four documentary, the ‘War Crimes File’, a film about war crimes allegedly committed by three men during the 1971 War of Independence।”)

ওয়ার ক্রাইমস ফাইল

১৯৭১ সালে যুদ্ধাপরাধের সঙ্গে যারা জড়িত ছিলেন তাদের অনেকেই অবস্থান করছিলেন যুক্তরাজ্যে। বিষয়টি নিয়ে লন্ডনভিত্তিক চ্যানেল ফোর এবং টোয়েন্টি টোয়েন্টি টেলিভিশনের সহযোগিতায় নির্মাণ করা হয় “ওয়ার ক্রাইমস ফাইল”। যুদ্ধাপরাধে অভিযুক্ত চৌধুরী মুঈনুদ্দীনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করে নির্মিত এই তথ্যচিত্র চ্যানেল ফোরে ১৯৯৫ সালের ৩ মে প্রচারিত হয়।

ওই সময়ে শহীদ জননী জাহানারা ইমামের নেতৃত্বে বাংলাদেশের জনগণ যুদ্ধাপরাধ বিষয়ে সোচ্চার হচ্ছিলেন। ধারণা করা হয় এজন্যই মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তির কাছে “ওয়ার ক্রাইমস ফাইল” অন্যরকম অনুভূতির জন্ম দেয়। তখনই অালোচনায় অাসেন ডেভিড বার্গম্যান। তথ্যচিত্রটি নির্মাণের জন্য তিনি বাংলাদেশে এসেছিলেন। গবেষণা কাজে ওই সময় দেশের কিছু তরুণ সাংবাদিকদের সহযোগিতাও নিয়েছিলেন তিনি।

তথ্য-উপাত্তে পরিচালক বার্গম্যান

মুক্তিযুদ্ধের অনলাইন অার্কাইভ জেনোসাইড বাংলাদেশ ওয়েবসাইটে (http://www.genocidebangladesh.org/?p=542) এই তথ্যচিত্রের পরিচিতিতে বার্গম্যানকে পরিচালক হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।



এমন তথ্যবিভ্রাট প্রসঙ্গে বার্গম্যান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, “আপনারা genocidebangladesh.org ওয়েবসাইট কর্তৃপক্ষকে প্রশ্ন করতে পারেন। এ তথ্য কেন তারা প্রকাশ করলো। আমি কোথাও বলিনি ওই তথ্যচিত্রের পরিচালক অামি ছিলাম। যদিও এ তথ্যচিত্রের দৃশ্যধারণ ও সম্পাদনায় হাওয়ার্ডের ভূমিকা ছিল খুবই গুরুত্বপূর্ণ, তিনি কিন্তু এর গবেষণা, অনুসন্ধান, নির্মাণ ও প্রচারে যুক্ত ছিলেন না। হতে পারে এ কারণেই এ তথ্যচিত্রের সঙ্গে তার যোগাযোগটা অতটা পরিচিতি পায়নি। আর তাই এটা দুঃখজনক; কেননা তার ভূমিকা ছিল সত্যিই গুরুত্বপূর্ণ।”

মুক্তিযুদ্ধের তথ্যনির্ভর গুরুত্বপূর্ণ এই ওয়েবসাইটে এ ধরনের ভুল তথ্য কেন রয়ে গেল? এ প্রসঙ্গে জেনোসাইড বাংলাদেশ ওয়েবসাইটের একজন উপদেষ্টা সালিম সামাদ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, সবাই চেষ্টা করে সঠিক তথ্য তুলে ধরতে। এটি একটি অার্কাইভ। অনেক মানুষ এখান থেকে তথ্য নেয়। সেক্ষেত্রে অবশ্যই এমন ভুল থাকা উচিত হয়নি।

তবে জেনোসাইড বাংলাদেশ ওয়েবসাইটের অন্যতম উদ্যোক্তা সুশান্ত দাস গুপ্ত বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, অামরা অন্য একটি মাধ্যম থেকে জানতে পেরেছিলাম ডেভিড বার্গম্যান এই তথ্যচিত্রের পরিচালক। কিন্তু তথ্যটি যদি ভুল হয় তবে শিগগিরই যাচাই করে সংশোধন করে নেওয়া হবে।

শুধু জেনোসাইড বাংলাদেশ ওয়েবসাইট নয়, অনলাইন তথ্যভাণ্ডার হিসেবে খ্যাত উইকিপিডিয়ায় বার্গম্যানের পরিচিতি নিয়ে যেসব তথ্য অাছে সেখানেও উল্লেখ করা অাছে “ওয়ার ক্রাইমস ফাইল” তথ্যচিত্রের পরিচালক তিনি।

ইউটিউবে “ওয়ারক্রাইম বিডি” চ্যানেলে অাপলোডকৃত এই তথ্যচিত্র সম্পর্কে বলতে গিয়েও বার্গম্যানকেই পরিচালক হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।

“ওয়ার ক্রাইমস ফাইল” তথ্যচিত্রের সমাপ্তিতে (ক্রেডিট লাইনে) এর সঙ্গে জড়িতের নামে দেখা যায় বার্গম্যান একজন প্রতিবেদক (রিপোর্টার) হিসেবে কাজ করেছেন। পরিচালক হিসেবে কাজ করেছেন হাওয়ার্ড ব্র্যাডবার্ন। অথচ বাংলাদেশের মানুষের কাছে ব্র্যাডবার্ন নামটি অজানাই রয়ে গেছে। ডেভিড বার্গম্যান কোথাও কখনও পরিচালকের নাম বলেছেন বলেও অনুসন্ধানে পাওয়া যায়নি।

এমনকি ২০১৩ সালের ২৩ ডিসেম্বর বিবিসি বাংলায় দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বার্গম্যান এ সংক্রান্ত একটি প্রশ্নের উত্তরে বলেন, “…একবার বন্ধুর সঙ্গে কথা বলার সময় জানলাম ইস্ট লন্ডনের মসজিদের কোনো একজন বাংলাদেশে যুদ্ধাপরাধের সঙ্গে জড়িত ছিল। অামি বাংলাদেশ সম্পর্কে তখন তেমন কিছু জানতাম না। … বিষয়টি সম্পর্কে খোঁজ নিলাম। খানিকটা অনুসন্ধানের পর মনে হলো একটা ভালো প্রতিবেদন হতে পারে। ঠিক ওই সময় চ্যানেল ফোর থেকে এই ডকুমেন্টারি বানানোর জন্য একটি ফান্ড পেয়ে গেলাম। এভাবেই বাংলাদেশে অাসা। স্থানীয় বাংলাদেশি সাংবাদিকদের সহযোগিতায় এই ডকুমেন্টারি বানিয়েছিলাম। তখন এখানে ছয় মাস ছিলাম।”

এখানেও হাওয়ার্ড ব্র্যাডবার্নের কথা উল্লেখ করেননি বার্গম্যান।

বাংলা ট্রিবিউনের সঙ্গে বার্গম্যানের যোগাযোগ হয় ইমেইলের মাধ্যমে। ইমেইলে একটি প্রশ্নের জবাবে ২০১৩ সালের ৮ নভেম্বর নিউএইজ পত্রিকায় প্রকাশিত “Tracking down the killers” শিরোনামে নিজের একটি লেখার লিংক দেন বার্গম্যান। তাতে অনেকের প্রসঙ্গ অাসলেও কোথাও হাওয়ার্ড ব্র্যাডবার্নের কথা উল্লেখ করেননি।

বার্গম্যান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, “হাওয়ার্ড ব্র্যাডবার্ন ছিলেন এই ছবিটির (ওয়ার ক্রাইমস ফাইল) পরিচালক। অর্থাৎ এটি পরিচালনা করা, এডিটিং, সব কিছুর দায়িত্বেই তিনি ছিলেন। সে সময়ই হাওয়ার্ড বেশ অভিজ্ঞ চলচ্চিত্র নির্মাতা ছিলেন। আমি নিশ্চিত সময়ের সঙ্গে তিনি আরও অভিজ্ঞ পরিচালক হয়ে উঠেছেন।”

তাহলে কে এই ব্র্যাডবার্ন? তার সম্পর্কে জানতে চাইলে বার্গম্যান কিছুটা এড়িয়ে গিয়ে বলেন, “গুগলে হাওয়ার্ডের নাম খুঁজে দেখতে পারেন। তার সম্পর্কে এবং তার নির্মিত ছবি সম্পর্কে খোঁজ পাবেন।”
Howard

গুরুত্বপূর্ণ সব সোর্সে ওয়ার ক্রাইমস ফাইলের তথ্য-বিভ্রাট প্রসঙ্গে সাংবাদিক জুলফিকার অালি মাণিককে প্রশ্ন করা হয়। তিনি এই তথ্যচিত্রে গবেষক দলের সদস্য হিসেবে কাজ করেছিলেন। মাণিকের মতে, “ক্রেডিট লাইনে যার নাম অাছে তিনিই অাসল পরিচালক। বার্গম্যান এখানে রিপোর্টার হিসেবে কাজ করেছিলেন। এছাড়া অামার জানা মতে বার্গম্যান কোথাও নিজেকে পরিচালক হিসেবে দাবি করেননি।”

মাণিক অারও বলেন, “ভুলটা হচ্ছে তাদের যারা গণমাধ্যমে বার্গম্যানকে এই তথ্যচিত্রের পরিচালক হিসেবে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন।”

ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শাহরিয়ার কবির এ প্রসঙ্গে বলেন, বার্গম্যান এই তথ্যচিত্র নির্মাণের পেছনে মূখ্য ভূমিকায় ছিলেন। তিনি প্রতিবেদক হলেও তার ভূমিকা অস্বীকার করা যাবে না। কিন্তু পরে তিনি পুরো ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে গেছেন।

বার্গম্যান সম্পর্কে শাহরিয়ার কবির অারও বলেন, অামার “যুদ্ধাপরাধ-৭১” তথ্যচিত্রে বার্গম্যানের সাক্ষাৎকার নিয়েছি। তখন তিনি যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের পক্ষে জোরালো কথা বলেছেন। কিন্তু এখন তার অবস্থান বদলে গেছে।

১৯৭১ সালে সংঘটিত যারা যুদ্ধাপরাধ করেছিল তাদের জবাবদিহিতা ও বিচার নিয়ে দৃষ্টিভঙ্গি বদলে গেছে, এমন অভিযোগ অস্বীকার করে ডেভিড বার্গম্যান জানি‌‌‌য়েছেন, ছবিটা তৈরির সময় তিনি যেমন জবাবদিহিতার সমর্থন করেছিলেন, এখনও তা-ই করছেন।
বাংলা ট্রিবিউনের অনুসন্ধানে যে ‘তথ্য বিভ্রাট‘ বের হয়েছে যা সংশোধনের কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলেও দেখা যায়নি। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের অংশ হয়ে যাওয়া “ওয়ার ক্রাইমস ফাইল” তথ্যচিত্রটি যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের অন্যতম দলিল হিসেবে চিহ্নিত হতে পারে। আর তাই সব ধরনের রেফারেন্স কিংবা সূত্রে হাওয়ার্ড ব্র্যাডবার্নের নাম পরিচালক হিসেবে তুলে ধরার গুরত্ব অনুভব করছেন সবাই।

মূল রিপোর্ট পড়তে বাংলা ট্রিবিউনে ক্লিক করুন ওয়ার ক্রাইমস ফাইল- এর পরিচালক নন বার্গম্যান!

বাংলা ট্রিবিউনে এই রিপোর্ট প্রকাশিত হওয়ার পর সব রেফারেন্স লিংক থেকে বার্গম্যানের নাম উঠে যায়।
রিপোর্টটি দেখে নিতে পারেন-

বিভিন্ন ওয়েবসাইটে ওয়ার ক্রাইমস ফাইলের পরিচালক হিসেবে নাম মুছে গেলো বার্গম্যানের


মন্তব্য ৩ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ০৬ ই জুন, ২০১৪ বিকাল ৪:০৫

একজন ঘূণপোকা বলেছেন: এখানে বার্গম্যানের দোষ কোথায়??

২| ০৬ ই জুন, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:০১

শাহ্‌রিয়ার বলেছেন: আমার মনে হয়েছে বার্গম্যান নিজ মুখে কখনও নিজেকে পরিচালক বলে দাবি না করলেও কখনও এমনও বলেননি যে উনি পরিচালক নন। কিনবা পরিচালকের নামও উনি কোথাও উল্লেখ করেননি। তিনি সম্ভাবত পরিচালক পরিচয়টা উপভোগই করেছিলেন'
এটাও তো একধরণের দোষের পর্যায়েই পড়ে..

৩| ১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৫:১০

রাফা বলেছেন: ভালোইতো কালপ্রিট চিরদিনই কালপ্রিট।জামাতের টাকার কাছে বিক্রি হয়ে গেলে ১৮০ ডিগ্রি কেনো ৩৬০ ডিগ্রিও টার্ণ নিতে পারে।বাঘা কাদের যদি টাকার জন্য নয়া দিগন্তে কলাম লিখতে পারে তাহোলে বার্গম্যান কোন ছার !


আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.