![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মানুষ অদ্ভুত এক প্রাণী। কেউ যদি মানুষের মন নিয়ে গবেষণা শুরু করে আমি নিশ্চিত মাঝ পথে তাকে ফিরে আসতে হবে। পৃথিবীর এই আধুনিক প্রযুক্তির যুগেও এই আবিষ্কার অসম্ভব, মানুষের মন যে কি চায় অথবা আসলেই মনের গন্তব্য কোথায় সেটা প্রকৃতভাবে জানা। আপনি যদি কারো মন সম্পর্কে ভাবেন আলো পরে দেখবেন আসলে তার মন অন্ধকারে ভরা। আবার যদি কারো মন সম্পর্কে ভাবেন অন্ধকার পরে জানতে পারবেন তার মন আলোতে ভরা। বাহ্যিকরূপ দেখে আপনি যে আত্মাটির কষ্টের জন্য কান্না করবেন ভিতরে ঢুকে দেখবেন সে আত্মাটি মহাসুখে ভাসমান। আবার যে আত্মাটির সুখ নিয়ে আফসোস করবেন খোজ নিয়ে জানবেন তিনি বড় কষ্টের মাঝে আছে। আজব জীবনের পরিধি এবং পরিণাম বুঝতে পারা খুবই মুশকিল।
প্রতিটি মানুষই তার আত্মার অন্তরালে অন্য একটি আত্মা পোষণ করে খুব যত্মসহকারে। মানুষের সেই আত্মাটা সুন্দর হওয়া উচিৎ। কারণ সেই আত্মার উপরই নির্ভর করে তার আসল পরিচয়। যে লোকটাকে আপনি তার বাহিরের মন দেখে ভালো মনে করলেন সে হয়তো ভালো হতেও পারে আবার নাও হতে পারে। আবার বাহিরের মন দেখে যাকে খারাপ ভাবলেন হয়তো তার ভিতরের রূপটা আপনার ধারণার চেয়ে অনেক সুন্দর হতে পারে। কিন্তু সেই ভিতরের আত্মা অথবা অন্তরালের আত্মা মানুষ কি কোনভাবে বুঝতে পারে?
মানুষের ভিতরের রূপ অথবা ভিতরের আত্মা সম্ভবত জানা যায় যখন কোন মানুষ কোনো মানুষের উপর প্রচণ্ড পরিমাণে রেগে যায় অথবা কোনো মানুষের ধারাবাহিক অপমান কোন মানুষকে খুব কষ্ট দেয়। কোনো ব্যক্তি যখন কোন ব্যক্তির উপর প্রচণ্ড পরিমাণে রেগে যায় তখন তার আসল রূপ বেরিয়ে আসে। একজন মানুষকে তিনি কি কি করতে পারেন যদি তার পছন্দ না হয় অথবা তার কাজগুলো যদি তার মনের মতো না হয় তখন এ সম্পর্কে জানা যায়। জানা যায় তার ব্যক্তিত্ব ও অভিরুচি সম্পর্কে। আবার কিছু অন্তরালের আত্মা চেনা যায় কষ্ট দিয়ে। কেউ যদি একটি আত্মাকে ক্রমাগত কষ্টদিয়েই যায় তখন কষ্টপাওয়া সেই আত্মা কষ্টের প্রতিবাদ কিভাবে করে তার উপর ভিত্তি করে জানা যায় তার অন্তরালের আত্মা কেমন। কষ্টের এই প্রতিবাদ কেউ করে নীরবে। শুধু কান্নাই হয় কিছু আত্মার প্রতিবাদের হাতিয়ার। আবার কিছু আত্মা কষ্ট পেয়ে কষ্ট দেওয়ার নেশায় মত্ত হয়ে যায়। আমার কষ্ট হয় সেই আত্মাগুলোর জন্য যাদের প্রতিবাদের হাতিয়ার হয় নীরব চোখের অসহায় পানি।
অন্তরালের আত্মা যাদের অসহায় হয় জীবনে তাদের কষ্টই হয় সবচেয়ে বড় সঙ্গী। অত্মানিয়ে যারা খেলায় মগ্ন থাকে অথবা অসহায় আত্মাগুলোকে যারা হাতের মুঠোয় চিবাতে পছন্দ করে অসহায় আত্মার খোজ যখন তারা পায় আনন্দ তখন তাদের শূন্যে ভাসাতে থাকে। অসহায় আত্মাগুলোকে পেয়ে পৃথিবীর সবচেয়ে বেশী সুখ পায় আত্মা নিয়ে খেলার জুয়াড়ীরা। কিছু কিছু সময় তারা অসহায় আত্মাগুলোকে এতই কষ্ট দেয় যে আপনি আপনার মাথা সেই জুয়াড়ীদের পায়ের তলায় অবনত করে বিনীত অনুরোধ করলেও তারা আপনাকে ছাড়তে নারাজ। আপনার অসহায় আর্তনাদ অথবা চিৎকার কোন কিছুই তাদের কর্ণকুহূরে পৌছেনা। যখন আপনার আর্তনাদে তারা করুণার সুর শুনবে তখন তারা আপনার আত্মাকে আরো বেশী চিবাবে।
মানুষ কিভাবে অন্তরালের সেই কঠিন রূপটাকে আড়াল করে রাখে জানি না। যে আত্মার জন্য আপনার হৃদয় হাহাকার করতো আপনি একসময় দেখলেন সেই আত্মা আপনার হাহাকারের অনুভূতিগুলোকে পা দিয়ে পিষে দিচ্ছে। আপনার করুন আর্তনাদ তার কাছে এখন পৃথিবীর সবচেয়ে বিরক্তির ধ্বনি। আপনার থেকে বাঁচার জন্য তখন তার প্রয়োগকৃত আচরণগুলো আপনাকে মাঝ পথে থমকে যেতে বাধ্য করবে। মানুষ যখন স্বপ্নে বিভোর থাকে তখন ডানা ছাড়াই শূন্যে ভাসতে থাকে।
জীবনের বৃত্তচাকা যখন ঘুরে কোন মানুষের বিপরীত প্রান্তে আসে তখন প্রতিটা মানুষ অথবা আত্মা তার কর্মের ফল উপলব্ধি করতে থাকে। অত্যাচারে নিয়োযিত আত্মাগুলো তখন খুব অসহায় হয়ে যায়। খুব চালাক মানুষটাও তখন নির্বোধ হয়ে ভাবতে থাকে অতীতের সব কর্ম। সুন্দর রূপের নন্দিনীরাও তার রুপের বেড়াজালে যাদেরকে ফেলে খুব আন্ন্দ পেয়েছে তারাও আর ইচ্ছে করলেই যেতে পারে না পিছনের দিনগুলোতে। জীবনের প্রতিটি ভুল, প্রতিটি খারাপ কাজের পরিণাম এবং কষ্টদেওয়ার জন্য প্রতিটি খারাপ আচরণ মানুষ বা আত্মারা তখন খুব নীরবে ভাবে। নিয়তি তখন তাদেরকে সব কিছুই মনে করিয়ে দেয়। আর এজন্যই মানুষ জীবনের কোন এক মুহূর্তে আঘাত দেয়া সেই মানুষগুলোর খোজে আপ্রাণ চেষ্টা করে। কিসের আশায় করে জানি না তবে কষ্ট পাওয়া সেই আত্মাগুলো নাকি খুব ভালো থাকে কষ্টদেয়া সেই আত্মাগুলোর চেয়ে।
©somewhere in net ltd.