অভিমান এবং নীরব কান্না

১১ ই জুলাই, ২০১৫ সকাল ১১:২৫

যে হাসি মুখ না দেখলে সময় যেতো না সেই হাসি মুখে আর হাসি দেখা যায় না। যে মানুষটির সাথে দুষ্টমি না করলে হয়তো দিনটা একটু অপূর্ণ থাকতো তার সাথে আর দুষ্টমি হয় না। যে হাতটি মাঝে মাঝে নিজ হাতে খাওয়ানোর জন্য এগিয়ে আসতো হয়তো এখন আর সে হাতটি আসেনা। প্রতিদিনের খোজ যে মানুষটি নিতো এখন আর কোনো খোজই নেয় না সেই মানুষটি। আবেগী এই সম্পর্কটা অঙ্কুরে বিনাশ হবে বলেই ভালবাসা খুব প্রখর হয়েছিল। শেষ হয়ে যাবার আগের মুহূর্ত হয়তো অনেক বেশী ভালো হয়। আমরাও শঙ্কিত ছিলাম আমাদের নিয়ে। তোমার ধারণাই সত্যি হলো। হেসে হেসে যে কথাগুলো বলতে সে কথাগুলোকে সত্যি করে ছাড়লে।

খুব কষ্ট হয় তোমাকে দেখলে। তুমি কষ্টে আছো এমন মনে হলে আরো বেশী কষ্ট হয়। কেন আমার মন এখনো তোমাকে নিয়ে ভাবে জানি না। তোমার নীরব কষ্ট আমাকে অনেক ভাবায়। হয়তো এখন আর তোমাকে জিজ্ঞেস করতে পারি না। কিসের প্রতিবন্ধকতা আমাদের মাঝে জানি না। শুধুই অভিমান করে দু’জন দু’জনকে পর করে রাখা। যে কষ্টে নিজেকে ক্ষত-বিক্ষত করছো সেই একই কষ্টে আমি নিজেও ক্ষত-বিক্ষত।

প্রতিদিন তোমাকে ভাবি। ভাবি অতীত হয়ে যাওয়া ছোট ছোট সেই স্মৃতি। যে স্মৃতিগুলো মনে হলে দু’চোখের সীমানা পেরিয়ে নীরব কান্না বয়ে যায়। অনেক কষ্ট এবং অনুভূতি মিশে থাকে সে কান্নার মাঝে। কিছুতেই যেনো আমাকে হালকা করতে পারছি না। তোমাকে যে কতটা আপন করে নিয়েছি সেটা এখন বুঝতে পারছি। চাইলেই ভুলতে পারছিনা বুকের মাঝে জমানো হাজারো স্মৃতি। আমরা কিভাবে এত আপন হয়েছিলাম অনেক খুজেও পেলাম না সেই সূত্রপাত।
কত দূরত্ব আমাদের মাঝে। তোমার কি একটুও কষ্ট হয় না এই দূরত্ব ভেবে। কত আপন ছিলাম আমরা আর এখন কত পর। সত্যিই জীবনের গতি অনেক এলোমেলো হয় মাঝে মাঝে। কেমন করে এই স্বপ্নিল দিনগুলো এলোমেলো হয়ে গেল মনকে বুঝাতে পারি না। দূরত্ব বেড়েই যাচ্ছে সাথে সাথে বেড়ে যাচ্ছে কষ্টের মাত্রাও।

খুব ইচ্ছে করে তোমার সম্পর্কে জানতে। তোমার মন খারাপ থাকলে এখন আর জিজ্ঞেস করতে পারি না তোমার সম্পর্কে। অনেক ইচ্ছে হয় জিজ্ঞেস করতে কিন্তু অদৃশ্য প্রতিবন্ধকতা দূরে ঠেলে দিচ্ছে আমার সে ইচ্ছেকে। আজকে অনেকবার মনে হলো তোমাকে। তোমার সম্পর্কে একটু জানার জন্য অনেক চেষ্টা করেও পারলাম না। বাস্তবতা সত্যিই অনেক কঠিন। পৃথিবীতে যখন কেউ অসহায় হয়ে যায় তখন সবাই তাকে অনেক ছোট ভাবে। অসহায়ত্ব তখন এমন ছোট করে রাখে কেউই আর তার কোনো অনুরোধ রাখে না। অনুরোধ অথবা ইচ্ছের কথাগুলো যখন বেশী বেশী প্রকাশ করা হয় তখন হয়তো সবাই নির্লজ্জ অথবা মানসীক রোগী ভাবে। আগেবগুলো তখন সবার কাছেই অনেক তুচ্ছ বলে মনে হয়।

তুমি হয়তো বুঝবে না কি ব্যাথা নিয়ে আমি পথ চলি। প্রতিটি মুহূর্ত তোমাকে মনে পড়ে। আমার প্রতিটি নি:শ্বাসে মিশে আছো তুমি। তোমার হাস্যজ্জ্বল মুখটি আমার হৃদয়ে গেঁথে আছে। যে স্বপ্নগুলো একটু একটু করে বড়ে হয়েছিল কেন যেন আজ তা ভেঙ্গে যাওয়ার প্রহর গুনছে। অনেক কিছুই শুরু না হতেই শেষ হওয়ার পথে। ভালোবাসা জড়ানো দু’চোখের স্বপ্নগুলো ভাগ্য স্রোতে ভেসে গেছে। স্বপ্নগুলো ভেবে ভেবে চোখের অনেক জল নীরব গভীর রাতে বয়ে যায়। তোমাকে বিশ্বাস করে আমার শেষ আশ্রয় ভেবেছি। আর সেই আশ্রয়টুকু এখন তোমার ঝড়েই ভেঙ্গে যাচ্ছে।

দিন দিন ছোট হয়ে আসছে আমার পরিধি। যে কষ্টগুলো আগে তোমার সাথে শেয়ার করতে পারতাম এখন আর সেটুকুও পারি না। তুমি অনেক অদ্ভুত হয়ে গেছো। হয়তো অনেক বড় কোনো রঙ্গিন স্বপ্নে তুমি বিভোর আছো। তোমার কল্পনার কাছে আমার আবেগ এবং ভালোবাসা হয়তো অনেক অসহায়। আমার এই অসহায় আবেগগুলোই তোমাকে অনেক ভালোবাসে। তোমার স্মৃতিগুলো আমাকে প্রতিদিন কাঁদায়। অনেক কষ্ট হয় যখন তোমাকে খুব মনে পড়ে। হয়তো তুমি আমার কষ্টটুকু বুঝতে পারো না। তোমার মহা সুখের মাঝে হয়তো আমার কষ্ট নিয়ে তোমার ভাবার সময় নেই। অভিমান ভুলে চলো আবার স্বপ্ন দেখি নতুন উদ্যমে। আমরা হয়তো অনেক ভালো থাকবো। অনেক ভালোবাসা থাকবে আমাদের মাঝে যেখানে কোনো কষ্ট থাকবে না। চলো আবার হাসি প্রানখুলে। সব কষ্ট এবং দু:খকে আমরা ফিরিয়ে তাদের জগতে। সব ভুলে চল আমরা আমাদের জগতে নব উদ্যমে পথ চলি।

০ টি +০/-০