নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মানুষ। সাধারন মানুষ হিসেবেই বাঁচতে চাই। পৃথিবীতে মানুষের খুবই অভাব। মানুষ রূপে প্রতিনিয়ত আমরা যাদের দেখছি এদের সবাই কিন্তু মানুষ না।

সায়েম০৭১

রাগ ক্ষোভ যন্ত্রণা আর যতসব গুরু দায়িত্ব; এসবে বিরক্ত না হয়ে জীবন উপভোগ করুন, দেখবেন শুধু আনন্দ আর আনন্দ।

সায়েম০৭১ › বিস্তারিত পোস্টঃ

ধর্ষণ কি?কেন? এবং প্রতিরোধে করনীয়

০৫ ই অক্টোবর, ২০২০ দুপুর ১২:৫৬

ধর্ষণের খবর এখন প্রতিদিনই শুনতে হয়, পড়তে হয়। এটা কোনোভাবেই কাম্য নয়। যারা ধর্ষণ করে তারাতো এটাকে অপরাধই মনে করেনা। এর কারণ হতে পারে, অতীতে কোনো ধর্ষকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হওয়া।

যাহোক, যখন একটা ধর্ষণের খবর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এর কল্যাণে ভাইরাল হয়ে যায়, তখন ভার্চুয়াল জগতে অনেক মানবতাবাদীর সচেতনতামূলক, প্রতিবাদমূলক, খোঁচানিমূলক, দোষাদোষীমূলক আরো অনেক ধরনের লেখা চোখে পড়ে। দেখে ভালো লাগে এই ভেবে যে, এখনো মানুষের মাঝে কিঞ্চিত পরিমাণের হলেও মানবিকতা আছে।

শুধু যে ভালো লাগে ব্যাপারটা পুরোপুরি সেরকমও নয়। খুব বিরক্ত ও হই। কারণ ভাইরাল হওয়া একটা ‍খবর নিয়ে তিনটা পক্ষকে ভার্চুয়াল জগতে দেখা যায়। এদের ২টা পক্ষই হলো রাজনীতি কেন্দ্রিক। একটা পক্ষে অন্যটা বিপক্ষে। কাদা ছোড়াছুড়ি করাই এদের মুখ্য উদ্দেশ্য। বিচার এবং শাস্তি হওয়া না হওয়ায় এদের কিছুই যায় আসেনা।
অন্য পক্ষ হলো,- আমজনতা। এই আমজনতার মাঝেও তিনটা ক্যাটাগরি রয়েছে। ক. ধার্মিক সাধারণ আমজনতা, খ. শিক্ষিত সচেতন মহল এবং গ. শাস্তি এবং বিচারের দাবী আদায়ে সোচ্চার শ্রেণী। এরা নতুন ইস্যুর আভির্ভাব হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত বর্তমান ইস্যু নিয়ে সোচ্চার থাকে।
শাস্তি এবং বিচারের দাবী আদায়ে সোচ্চার শ্রেণীর কল্যানেই কিন্তু বেশ কিছু ইতিবাচক ফলাফল আমরা দেখতি পেয়েছি বিগত বছর গুলোতে।
এই সোচ্চার শ্রেনীর প্রতি আমর মত সমাজের প্রায় সকলেরই অনুচ্চারিত অনুরোধ ‘ধর্ষণের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আইন করা এবং প্রয়োগ করার দাবীতে কঠোর আন্দোলন এর।’

আমর আলোচনার বিষয় হলো, ধর্ষণ কি? এর জন্য দায়ী কি? প্রতিরোধের উপায়?

ধর্ষণ কি?
সাধারণত, একজন ব্যক্তির অনুমতি ব্যতিরেকে তার সঙ্গে যৌনসঙ্গম বা অন্য কোনো ধরনের যৌন অনুপ্রবেশ ঘটানোকে ধর্ষণ বলা হয়।
ধর্ষণ শারীরিক বলপ্রয়োগ, অন্যভাবে চাপ প্রদান কিংবা কর্তৃত্বের অপব্যবহারের মাধ্যমে সংঘটিত হতে পারে। অনুমতি প্রদানে অক্ষম (যেমন- কোনো অজ্ঞান, বিকলাঙ্গ, মানসিক প্রতিবন্ধী কিংবা অপ্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি) এরকম কোনো ব্যক্তির সঙ্গে যৌনমিলনে লিপ্ত হওয়াও ধর্ষণের আওতাভুক্ত।

বাংলাদেশ সংবিধানে ধর্ষণের সংজ্ঞা:
যদি কোন পুরুষ বিবাহ বন্ধন ব্যতীত ষোল বৎসরের অধিক বয়সের কোন নারীর সাথে তার সম্মতি ছাড়া বা ভীতি প্রদর্শন বা প্রতারণামূলকভাবে তার সম্মতি আদায় করে, অথবা ষোল বৎসরের কম বয়সের কোন নারীর সাথে তার সম্মতিসহ বা সম্মতি ব্যতিরেকে যৌন সঙ্গম করেন, তাহলে তিনি উক্ত নারীকে ধর্ষণ করেছেন বলে গণ্য হবেন।

ধর্ষণ এর জন্য দায়ী কি?
ধর্ষণের নির্দিষ্ট কোনো কারণ নেই। একজন ধর্ষক যে কোনো কারণে, যে কোনো সময়, যে কোনো কাউকে ধর্ষণ করতে পারে। এটা তার ভিতরে লুকিয়ে থাকা হিংস্রতার একটা প্রকাশ।

যখন একটা ধর্ষণের খবর ভাইরাল হয়ে পড়ে তখন ভার্চুয়াল জগতে একটা জরিপ চলতে দেখি যে,

"ধর্ষনের জন্য পোষাক নাকি মানসিকতা দায়ী??"

এই পশ্নের উত্তরে খুব সহজেই প্রশ্নকর্তা উত্তর প্রদানকারীকে আইডেন্টিফাই করে ফেলে সে কোন মতাদর্শের।
আপনি যদি পোষাক কে দায়ী করেন তাহলে আপনি নির্ঘাত ইসলামী মতাদর্শের কট্টর অনুসারী। এবং আপনি যদি মানসিকতাকে দায়ী করেন তাহলে আপনি মুক্তচেতা মানুষ, কিছুটা বাম, কখনো সখনো আপনাকে নাস্তিকও বানিয়ে ফেলতে পারে। (হাহাহা)

এই জরীপ টা শুধুই বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির উদ্দেশ্যেই করা হয়। অন্য কোনো কারণ নেই। এই জরীপের উদ্দেশ্যে দুটো। একটা হলো ইসলাম পন্থীদেরকে হেয় করা এবং মনে প্রাণে ইসলাম ধারণ কারী মুক্তচেতা মানসিকতার মানুষকে বাম স্বীকৃতি দেয়া। জরীপটা উভয় পক্ষই করে থাকে, বাম এবং সাধারণ ইসলাম পন্থীরা।

আমার মতে, পোষাক এবং মানসিকতার সাথে আরো অনেক গুলো বিষয় জড়িত আছে ধর্ষণ সংঘঠিত হওয়ার পিছনে। কারণগুলো হলো,-

১। পরিবার থেকে নৈতিক শিক্ষার অভাব। এর জন্য মা-বাবার উদাসীনতাই দায়ী।

২। ধর্মীয় রীতিনীতি উপেক্ষা করে চলা। সে যে ধর্মই হোক। কোনো ধর্মই মানুষকে অমানুষ হবার শিক্ষা দেয়না।

৩। উগ্র আধুনিক সংস্কৃতির অনুসরণঃ
বর্তমান বিশ্বে আধুনিকতার নামে নগ্নতার প্রদর্শনী চলছে খুব সস্তায়। নগ্নতা এখন বাংলাদেশের টিভি নাটকেও চলে এসেছে, তার সাথে ১৮+ ডায়লগে ভরপুর বর্তমানের বেশির ভাগ নাটকে। সিনেমা এবং বিভিন্ন সাইটের কথা না হয় বাদ দিলাম। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম গুলোতেও অবাধে চলছে নগ্ন ভিডিওর লিংক আদান প্রদান।

যখন একজন শিক্ষিত লোক, যাকে মোটামুটি কেউ না কেউ অনুসরণ করে, শিক্ষিত লোকের কথা না হয় বাদ দিলাম। ধরুন একজন সাধারণ লোক, তাকে অন্য কেউ অনুসরণ না করুক, তার পরিবার এবং আত্মীয়-স্বজনদের মাঝে অনেকেই তাকে অনুসরণ করে। এমন একজন ব্যাক্তি যদি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আপত্তিকর কন্টেন্ট শেয়ার করে অথবা অন্য কারো শেয়ার করা পোস্টে গিয়ে কমেন্ট বক্সে মজার ছলেও আপত্তিকর কন্টেন্ট এর লিংক চেয়ে বসে, এর ফলাফল প্রভাব ফেলে তাকে অনুসরণ করা ছোটদের উপর। তাকে অনুসরণ করা ছোটরা ভাবে যে, এইসব বিষয়গুলো স্বাভাবিক এবং এতে অন্যায় কিংবা পাপের কিছু নেই। তাই তারা ধাপে ধাপে যৌনতার বিষয়ে হিংস্র হয়ে উঠে। তা ইভটিজিং থেকে শুরু করে ধর্ষণ কিংবা খুনে গিয়ে ঠেকে।

৪। উপযুক্ত বয়স হওয়া সত্ত্বেও বিয়ে না দেয়া/ না করানোঃ
অনেক গুলো কারণের মাঝে এটাও অন্যতম। একজন প্রাপ্ত বয়ষ্ক সুস্থ্য মানুষের যৌন ক্ষুদা থাকবেই। তাই বলে এই ক্ষুধা নিবারণের জন্য অন্যায় ভাবে নিজের হিংস্রতার প্রকাশ ঘটিয়ে যাকে পাই তাকে জোর করে ভোগ করার কোনো বিধান কোনো ধর্ম এবং সমাজে নেই। এটা অন্যায় এবং মাহাপাপ। আর তাইতো প্রতিটি ধর্মেই বিয়ের ব্যবস্থা রয়েছে। যৌন ক্ষুধা থাকাটা পাপ কিংবা অন্যায়ের কিছু না। বিয়ের মাধ্যমে বৈধভাবে এই ক্ষুধা নিবারণ করতে হবে। এই জন্য উপযুক্ত বয়স হওয়া মাত্রই ছেলে মেয়েকে বিয়ে করিয়ে দেয়া উচিৎ মা-বাবার। নচেৎ এসব অপকর্মের দায়ভার মা-বাবা এড়াতে পারেনা।

৫। পোষাক এবং মানসিকতাঃ
ধর্ষণের কোনো খবর ভাইরাল হলে, ‘পোষাক এবং মানসিকতা নিয়েই বেশি আলোচনা হয়। পোষাক এবং মানসিকতা দু’টোই দায়ী ধর্ষণের ক্ষেত্রে।
তথাকথিত বিশ্ব জ্ঞানী, বিজ্ঞ এবং পন্ডিতরা ধর্ষণের জন্য পোষাক নির্বাচন যে একটা কারণ তা তারা মানতেই চাননা। পোষাক নির্বাচন ধর্ষণের ক্ষেত্রে অন্যতম একটি কারণ এটার স্বীকৃতি এই এলিয়েন গোত্রের বিজ্ঞ শ্রেণীর লোকেরা দিতে চাননা, কারণ এমনটি হলে তাদের আর চোখ দিয়ে ধর্ষণ করা হবেনা। এরাও ধর্ষক।

তবে হ্যা একজন নারী যদি আপাদমস্তক বোরকা দিয়ে আবৃত করার পরও ধর্ষণের শিকার হয়, তাহলে এখানে ধর্ষকের মানসিকতার বিষয় আসে। আমি শুরুতেই বলেছি যে, “ধর্ষণের নির্দিষ্ট কোনো কারণ নেই। একজন ধর্ষক যে কোনো কারণে, যে কোনো সময়, যে কোনো কাউকে ধর্ষণ করতে পারে। এটা তার ভিতরে লুকিয়ে থাকা হিংস্রতার একটা প্রকাশ।”
টিভি, নাটক, সিনেমা এবং বিজ্ঞাপনে যে সব অশালীন পোষাকের প্রমোট করা হয়,তা দেখে প্রত্যেক প্রাপ্ত বয়ষ্ক সুস্থ্য মানুষের যৌন ক্ষুদা সুড়সুড়ি দেয়। যারা মানসিক ভাবে নৈতিক,তারাই পারে নিজেদের কন্ট্রোল করতে। আর যাদের মানসিকতা হিংস্র প্রকৃতির , তারা নিজেদের নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনা। ফলে তারা ছলে বলে কৌশলে যেকোনো নারী কিংবা শিশুর সাথে এই ধরণের ঘৃণ্য অপকর্মটি করে ফেলে।

তাহলে বুঝা গেলো ধর্ষণের জন্য পোষাক আগে দায়ী। পরে মানসিকতা। কারণ অশালীন পোষাকই আগে যৌন সুড়সুড়ি দেয়, পরে মানসিকতা থেকে নৈতিকতা নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে অপকর্মটি ঘটে।
এখানে একটা কথা বলে রাখা ভালো, যে ধর্ষণের শিকার হয়, সে তার পোষাকের জন্য হয়না। অশালীন পোষাকের প্রমোট করা থেকে এমনটি হয়। যার ফলে বোরকা পরিহিতরাও আজ নিরাপদ নয়।
পোষাক এবং মানসিকতার আলাদা আলাদা দোষ খুঁজবেন না দয়া করে। অশালীন পোষাকের কারণেই কিন্তু মানসিকতার বিকৃতি ঘটছে।

৫। ক্ষমতার অপব্যবহারঃ
বর্তমানে ধর্ষণের জন্য সবচেয়ে বেশি দায়ী ক্ষমতার অপব্যবহার এবং বিচারহীনতা। বিচারহীনতা এবং ক্ষমতার অপব্যবহারে মানুষ রূপি জানোয়ার গুলো বেপরোয়া হয়ে উঠছে। ক্ষমতাবানরা নিজ দলের অভিযুক্তদের অভয় এর সাথে সকল ধরণের সাপোর্ট দেয় বলে হারামজাদারা নিয়মিত এমন হিংস্র কাজ করে যাচ্ছে স্বাভাবিকভাবেই।

৫। দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির অভাবঃ
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০, এর ৯ ধারা মতে দোষ প্রমাণ হলে, হিংস্রতা এবং ধরনের উপর নির্ভর করে বিভিন্ন অঙ্কের অর্থদন্ড এবং বিভিন্ন মেয়াদের কারাদন্ডের বিধান রয়েছে ধর্ষকের উপর।
তবে তা কার্যকর হয়েছে কিনা কখনো, তা আমার জানা নেই। কার্যকর যদি কখনো সখনো হয়েও থাকে, তাহলে বলতে হয়, এই আইন ধর্ষণ প্রতিরোধে মোটেও কার্যকর নয়। কার্যকর যদি হতো, তাহলে প্রতিযোগীতামূলক ভাবে ধর্ষণের সংখ্যা এরকম বাড়তোনা।
আইনের প্রতি যথেষ্ঠ পরিমাণের শ্রদ্ধা রেখে বলছি, ধর্ষণ প্রতিরোধে আরো কঠোর এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির বিধান জারি এবং তা কর্যকর করা এখন সময়ের দাবী। এমন দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির বিধান করতে হবে, যা টাকা এবং রাজনৈতিক শক্তির নিকট হার না মানে।
একজন ধর্ষককেও যদি দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি প্রদান করা হত। তাহলে ‍দ্বিতীয়বার এই অপকর্ম করার সাহস কেউ পেতনা।
অর্থদন্ড মানে প্রভাবশালীদের জন্য ধর্ষণ বৈধ করা। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে কারাদন্ডটা শুধু নিরীহদের জন্য। প্রভাবশালীরা টাকার বিনিময়ে কারাদন্ডটাকেও উল্টে ফেলতে পারে।
তাই ধর্ষণ প্রতিরোধে প্রয়োজন দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি।

ধর্ষণ প্রতিরোধে করনীয়ঃ
ধর্ষণ প্রতিরোধে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন হলো, সতর্ক এবং সচেতন থাকা। যে কোনো বিপদ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য প্রাথমিক প্রয়োজন হলো সতর্ক এবং সচেতনতা। সতর্ক এবং সচেতন থাকলে পরবর্তী পদক্ষেপ গুলো নেয়া সহজ হয়।

বুঝ-জ্ঞান সম্পন্ন একজন মেয়ে/নারীর উচিত যে, এমন কারো সাথে বন্ধুত্ব না করা, ঘুরতে না যাওয়া এবং খেলাধুলা না করা যাকে একটু হলেও সন্দেহ হয়, যার আচরণগত ত্রুটি আছে, যে কথায় কথায় গায়ে হাত দেয়, ক্লাস কিংবা কাজে ফাঁকি দিয়ে দুজন মিলে দূরে কোথায় ঘুরতে যেতে চায়, বিভিন্ন দিবস উদযাপনের জন্য রাতে হোটেল কিংবা বাসায় যেতে বলে।

প্রত্যেক মেয়ে/নারীর উচিত এ ধরণের বন্ধু-বান্ধব থেকে কৌশলে নিজেকে দূরে রাখা। এধরণের বন্ধু গুলোর বেশিরভাগ উদ্দেশ্যই খারাপ থাকে। এবং এসব বিষয়ে অভিভাবকদেরও সতর্ক থাকা উচিত। মনে রাখতে হবে কেউ ফেরেশতা নয়। শয়তান এর কাজ কু প্ররোচনা দেয়া। সে প্ররোচনা দিতেই থাকবে। তাই সবসময় সতর্ক এবং সচেতন থাকা প্রয়োজন।

সন্তানদের হাতে অল্প বয়সেই স্মার্ট ফোন তুলে দিবেন না। একান্ত প্রয়োজনে দিলেও নিষিদ্ধ সাইট গুলো ব্লক করে তারপর দিন। (এ ব্যাপারে গুগলে সার্চ দিলে উপায় পেয়ে যাবেন)

একাডেমিক পড়াশোনার পাশাপাশি মা-বাবার উচিত বন্ধুসুলভ আচরণের মাধ্যমে সন্তানদের নৈতিক এবং ধর্মীয় শিক্ষা প্রদান করা। কারণ নৈতিকতা হীন মানুষ যতই শিক্ষিত হোক না কেনো, তার আর পশুর মাঝে কোনো পার্থক্য নেই।

জীবনে চলার পথে ধর্মকে উপেক্ষা করা যাবেনা। ধর্ম থেকেই নৈতিকতার শিক্ষা আসে। ধর্ম মানুষকে নমনীয় হতে শিক্ষা দেয়, মানুষ হতে শিক্ষা দেয়। সকল ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই বলছি, ইসলাম ধর্মের বিধি নিষেধ গুলো যদি আমরা মুসলমানরা শতভাগ মেনে চলতাম, তাহলে আমাদের সমাজে ধর্ষণের মত জঘন্য পাপাচার কোনোদিনও হতোনা। তাই আসুন ধর্ষণ প্রতিরোধে ধর্ম-কর্ম মেনে চলি।
সংস্কৃতির নামে নগ্নতাকে পরিহার করি, সমাজ থেকে সংস্কৃতি নামের অপসংস্কৃতি কে উৎপাটন করি। আধুনিকতার নামে নগ্নাতাকে প্রমোট করা বন্ধ করি।

সিনেমাতে নগ্নতা না ঢুকালে কি সিনেমা হয়না? অশ্লীল ডায়লগ না ঢুকালে কি নাটক, সিনেমা বানানো যায়না? আরে ভাই এটাতো আমাদের সংস্কৃতি না। আমাদের সংস্কৃতি হলো সুস্থ্য,স্বাভাবিক এবং সামাজিক। এর মাঝে নগ্নতাকে যুক্ত করে এই আঙ্গিনা কে কলুষিত করা হয়েছে। যতদিন না সংস্কৃতি নামের এই অপসংস্কৃতি থেকে আমাদের স্বাভাবিক সংস্কৃতি নিজস্বতায় ফিরে না আসছে, ততদিন সমােজ থেকে ধর্ষণ নির্মুল করা সম্ভব নয়।
তাই আসুন সুস্থ্য সংস্কৃতির চর্চার মাধ্যমে সমাজ থেকে ধর্ষনকে উৎপাটন করি।

পোষাক নির্বাচনে শালীনতা বজায় চালি, এমন পোষাক না পড়ি এবং এমন সাজে নিজেকে সজ্জিত না করি, যা দেখে যৌন সুড়সুড়ির সৃষ্টি হয়।
ধর্ষণ প্রতিরোধে রাষ্ট্রের এখন করনীয় একটাই। আর তা হলো, দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা। সেটা হতে পারে, ফাঁসি, জনসম্মুখে লিঙ্গ কেটে মৃত্যুদন্ড প্রদান অথবা রাষ্ট্র যেটাকে দৃষ্টান্তমূলক মনে করবে। তবে তা শতভাগ দৃষ্টান্তমূলক হতে হবে। যা দেখে ২য় বার আর কেউ সাহস না পায় বিকৃত যৌনতা উপভোগ করার।

রাজনৈতিক দলগুলোর উচিত হলো, সৎ চরিত্রবান এবং যাদের মাঝে নৈতিকতা আছে তাদের কে বাঁচাই করে দলের কর্মী থেকে শরু করে বিভিন্ন পদে নিয়োগ দেয়া। তাহলে তারা ক্ষমতার অপব্যাবহার করবেনা এবং ক্ষমতার অপব্যবাহর হতেও দিবেনা।
দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা প্রণয়ন এবং তা শতভাগ কার্যকর করার দাবীতে সচেতন এবং সোচ্চার শ্রেণীর পাশাপাশি আমাদের সবাইকে এক কন্ঠে গর্জন তোলার এখনই সময়।

দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি যতদিন না প্রণয়ন এবং কার্যকর হচ্ছে, ততদিন পর্যন্ত এই দেশে কোনো ভাবেই ধর্ষণ বন্ধ করা সম্ভব হবেনা। টিভিতে টক শো এবং সোস্যাল মিডিয়াতে রাজনৈতিক ভাবে দোষাদোষি করে কোনো লাভ নাই। ধর্ম, বর্ণ এবং দলাদলি বাদ দিয়ে সবাইকে এক কন্ঠে ধর্ষণের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা প্রণয়ন এবং তা শতভাগ কার্যকর করার দাবীতে আওয়াজ তুলতে হবে এবং তা বাস্তবায়ন করার জন্য রাষ্ট্রকে বাধ্য করতে হবে।

আমাদের একটা বিষয় মনে রাখতে হবে, ধর্ষকের কোনো ধর্ম, সামাজিক এবং রাজনৈতিক পরিচয় থাকতে পারেনা। সামাজিক এবং জাতীয় বন্ধন অটুট রাখার জন্য ধর্ম, সামাজিক অবস্থা এবং রাজনৈতিক পরিচয়ের মাধ্যমে কোনো ধর্ষকের পরিচয় তুলে ধরা থেকে আমাদেরকে বিরত থাকতে হবে।

“পড়তে এবং শুনতে চাইনা আর
একটা খবরও ধর্ষণের।
চাই দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক কার্যকর
মানুষরূপি প্রতিটা ধর্ষকের।”

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.