![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আজকে নদী পার হতে ইচ্ছে করছেনা, শরীর অনেক দুর্বল লাগছে, আর কত ?... ১৬ বছর ধরে কত মানুষের স্বপ্ন কে নদী পার করে দিচ্ছি, সেই ৩ বছর আগেই নিজেকে বাতিলের তালিকায় ফেলে দিয়েছি, কিন্তু মালিকের লোভ-লালসার বলি হয়ে এই শেষ বয়সেও নিজেকে নিংড়ে মালিকের ইচ্ছা পূরণ করছি...ইদানিং পদ্মার বুকে ভেসে বেড়াতে খুব ভয় হয়, যুবক বয়সের সেই দুর্দান্ত শরীর কি এখন আর আছে, নিজের বলতে এখন শুধু ধুঁকে চলা ইঞ্জিনটি, বাকি সব কিছু অন্যের থেকে নেয়া, ডেক এবং ছাদ তো ২০০৮ এ ডুবে যাওয়া "এম.ভি রাজদূত" থেকে নেয়া, এম.ভি রাজদূতের কথা কি আপনাদের মনে আছে ? কিভাবে থাকবে, মানুষকেই মনে থাকেনা আর লঞ্চ..... "পদ্মা" মার দোষ দিয়ে আর লাভ কি, সৃষ্টির সেরা জীবগুলো (মানুষ) যেভাবে এই নদীকে নিশ্চিহ্ন করে দেয়ার ষড়যন্ত্রে মেতেছে, সেই ষড়যন্ত্রের প্রতিশোধ নিতে "পদ্মা" মাও দিন দিন নিষ্ঠুর হয়ে উঠছে...
দুর্বল শরীর নিয়েও মানুষগুলোকে নদী পার করে দেয়ার জন্য প্রস্তুত হচ্ছি, আমার কাছে সবসময় মনে হয় আমি যেন মানুষ না একেকটা স্বপ্ন পার করি, - আহারে! কত বিচিত্র এই স্বপ্নগুলি! এইত এখনও কত স্বপ্ন নীল আকাশে ঘুড়ির মত উড়ছে, নিচতলার সামনের ডান দিকের জানালার পাশে বসা এক নতুন দম্পতি তাদের নতুন সংসার গোছানোর স্বপ্নে বিভোর...... পাশেই আরেক গর্ভবতী মেয়ে স্বামীর সাথে তাদের প্রথম সন্তানের নাম কি হবে তা নিয়ে ঝগড়া করছে...... দোতালার দক্ষিনের জানালার পাশে বসা ছেলেটি ভাবছে আগামী ঈদে মাকে একটি মোবাইল কিনে দিবে, ছেলের কণ্ঠটি একবার শোনার জন্য মমতাময়ী মা একটা ফোন করার জন্য কত মানুষের কাছে যে ধরনা দেয়, এই ব্যাপারটি ছেলেটিকে অনেক কষ্ট দেয়...... ছাদের মধ্যে ৫ জন তরুণ হাসি-তামাশায় সময় কাটাচ্ছে, তারা সিলেট ঘুরতে যাচ্ছে বলে সকলের মনেই আনন্দের জোয়ার বইছে, ওদের আনন্দ দেখে আমারও অনেক আনন্দ হয়, আমি স্বপ্ন দেখিনা, লোহা-লক্কড়ের জঞ্জালের আবার কিসের স্বপ্ন, মানুষের এই টুকরো টুকরো স্বপ্নের মধ্যেই আমি বেঁচে থাকি......
হুইশেলের শব্দে আমি বাস্তবে ফিরে আসি, আজ অনেক মানুষ, অতিরিক্ত মানুষের বোঝা বহন করতে আমার খুব কষ্ট হচ্ছে, কেন যে এরা আগে যাওয়ার জন্য এত তাড়াহুড়া করে, টাকার লোভে মালিকগুলোরও যেন কোন বোধোদয় নেই, সৃষ্টিকর্তার নাম নিয়ে পদ্মায় নিজেকে ভাসিয়ে দিলাম, আজ নদী কেমন যেন ফুঁসে ফুঁসে উঠছে, একদিকে অতিরিক্ত মানুষের চাপ অন্যদিকে পদ্মার আক্রমণে আমি দিশেহারা হয়ে গেলাম, দুবার কাত হয়েও তাল সামলে নিলাম, যেভাবেই হোক স্বপ্নগুলোকে বাঁচাতে হবে...... একসময় হার মানতে হল, পুরোপুরি কাত হয়ে গেলাম, মানুষের চিৎকার ও কান্নাকাটির আওয়াজ ছাড়া কিছুই শুনতে পাচ্ছিনা, শুধু অনুভব করলাম সুন্দর সুন্দর কিছু স্বপ্ন নিয়ে পদ্মার বুকে তলিয়ে যাচ্ছি.........
আমি "এম.ভি পিনাক - ৬ বলছি" শত চেষ্টার পরেও আমাকে খুঁজে না পেয়ে আমাকে খোঁজার কার্যক্রম নাকি স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে, ডুবে যাওয়ার জন্য আমার কোন কষ্ট নেই, বিশ্রাম চেয়েছিলাম, সেটা পেয়েছি, কষ্ট হয় যখন দেখি ডুবে যাওয়ার আগের সেই ছোট ছোট স্বপ্নগুলো এখন আমার আশেপাশে ঘুরে বেড়ায়, পদ্মার পাড়ে রাতের বেলা আসলে আপনিও হয়ত দেখতে পাবেন সেই ছোট ছোট স্বপ্নগুলো পদ্মার বুকে জ্বলজ্বল করছে, স্বপ্নগুলোকে দেখে আমি কাঁদি, আমার চোখের পানি পদ্মার পানির সাথে মিলে মিশে একাকার হয়ে যায়.........আজকে নদী পার হতে ইচ্ছে করছেনা, শরীর অনেক দুর্বল লাগছে, আর কত ?... ১৬ বছর ধরে কত মানুষের স্বপ্ন কে নদী পার করে দিচ্ছি, সেই ৩ বছর আগেই নিজেকে বাতিলের তালিকায় ফেলে দিয়েছি, কিন্তু মালিকের লোভ-লালসার বলি হয়ে এই শেষ বয়সেও নিজেকে নিংড়ে মালিকের ইচ্ছা পূরণ করছি...ইদানিং পদ্মার বুকে ভেসে বেড়াতে খুব ভয় হয়, যুবক বয়সের সেই দুর্দান্ত শরীর কি এখন আর আছে, নিজের বলতে এখন শুধু ধুঁকে চলা ইঞ্জিনটি, বাকি সব কিছু অন্যের থেকে নেয়া, ডেক এবং ছাদ তো ২০০৮ এ ডুবে যাওয়া "এম.ভি রাজদূত" থেকে নেয়া, এম.ভি রাজদূতের কথা কি আপনাদের মনে আছে ? কিভাবে থাকবে, মানুষকেই মনে থাকেনা আর লঞ্চ..... "পদ্মা" মার দোষ দিয়ে আর লাভ কি, সৃষ্টির সেরা জীবগুলো (মানুষ) যেভাবে এই নদীকে নিশ্চিহ্ন করে দেয়ার ষড়যন্ত্রে মেতেছে, সেই ষড়যন্ত্রের প্রতিশোধ নিতে "পদ্মা" মাও দিন দিন নিষ্ঠুর হয়ে উঠছে...
দুর্বল শরীর নিয়েও মানুষগুলোকে নদী পার করে দেয়ার জন্য প্রস্তুত হচ্ছি, আমার কাছে সবসময় মনে হয় আমি যেন মানুষ না একেকটা স্বপ্ন পার করি, - আহারে! কত বিচিত্র এই স্বপ্নগুলি! এইত এখনও কত স্বপ্ন নীল আকাশে ঘুড়ির মত উড়ছে, নিচতলার সামনের ডান দিকের জানালার পাশে বসা এক নতুন দম্পতি তাদের নতুন সংসার গোছানোর স্বপ্নে বিভোর...... পাশেই আরেক গর্ভবতী মেয়ে স্বামীর সাথে তাদের প্রথম সন্তানের নাম কি হবে তা নিয়ে ঝগড়া করছে...... দোতালার দক্ষিনের জানালার পাশে বসা ছেলেটি ভাবছে আগামী ঈদে মাকে একটি মোবাইল কিনে দিবে, ছেলের কণ্ঠটি একবার শোনার জন্য মমতাময়ী মা একটা ফোন করার জন্য কত মানুষের কাছে যে ধরনা দেয়, এই ব্যাপারটি ছেলেটিকে অনেক কষ্ট দেয়...... ছাদের মধ্যে ৫ জন তরুণ হাসি-তামাশায় সময় কাটাচ্ছে, তারা সিলেট ঘুরতে যাচ্ছে বলে সকলের মনেই আনন্দের জোয়ার বইছে, ওদের আনন্দ দেখে আমারও অনেক আনন্দ হয়, আমি স্বপ্ন দেখিনা, লোহা-লক্কড়ের জঞ্জালের আবার কিসের স্বপ্ন, মানুষের এই টুকরো টুকরো স্বপ্নের মধ্যেই আমি বেঁচে থাকি......
হুইশেলের শব্দে আমি বাস্তবে ফিরে আসি, আজ অনেক মানুষ, অতিরিক্ত মানুষের বোঝা বহন করতে আমার খুব কষ্ট হচ্ছে, কেন যে এরা আগে যাওয়ার জন্য এত তাড়াহুড়া করে, টাকার লোভে মালিকগুলোরও যেন কোন বোধোদয় নেই, সৃষ্টিকর্তার নাম নিয়ে পদ্মায় নিজেকে ভাসিয়ে দিলাম, আজ নদী কেমন যেন ফুঁসে ফুঁসে উঠছে, একদিকে অতিরিক্ত মানুষের চাপ অন্যদিকে পদ্মার আক্রমণে আমি দিশেহারা হয়ে গেলাম, দুবার কাত হয়েও তাল সামলে নিলাম, যেভাবেই হোক স্বপ্নগুলোকে বাঁচাতে হবে...... একসময় হার মানতে হল, পুরোপুরি কাত হয়ে গেলাম, মানুষের চিৎকার ও কান্নাকাটির আওয়াজ ছাড়া কিছুই শুনতে পাচ্ছিনা, শুধু অনুভব করলাম সুন্দর সুন্দর কিছু স্বপ্ন নিয়ে পদ্মার বুকে তলিয়ে যাচ্ছি.........
আমি "এম.ভি পিনাক - ৬ বলছি" শত চেষ্টার পরেও আমাকে খুঁজে না পেয়ে আমাকে খোঁজার কার্যক্রম নাকি স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে, ডুবে যাওয়ার জন্য আমার কোন কষ্ট নেই, বিশ্রাম চেয়েছিলাম, সেটা পেয়েছি, কষ্ট হয় যখন দেখি ডুবে যাওয়ার আগের সেই ছোট ছোট স্বপ্নগুলো এখন আমার আশেপাশে ঘুরে বেড়ায়, পদ্মার পাড়ে রাতের বেলা আসলে আপনিও হয়ত দেখতে পাবেন সেই ছোট ছোট স্বপ্নগুলো পদ্মার বুকে জ্বলজ্বল করছে, স্বপ্নগুলোকে দেখে আমি কাঁদি, আমার চোখের পানি পদ্মার পানির সাথে মিলে মিশে একাকার হয়ে যায়.........
©somewhere in net ltd.