নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মানুষ শুধু মানুষের জন্য না, জগতের সকলের জন্য

গরল

জগতের সকল প্রাণী শান্তি লাভ করুক

গরল › বিস্তারিত পোস্টঃ

শুধু ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে চলেছি কিন্তু ই-বর্জ্য ব্যাবস্থাপনা নিয়ে কোন মাথাব্যাথা নেই আমাদের

২৬ শে অক্টোবর, ২০১৬ ভোর ৪:৪২

সারা বিশ্বই এখন ই-বর্জ্য নিয়ে হিমশিম খাচ্ছে আর এটা নিয়ে এখন পর্যন্ত আমাদের কোন উচ্চবাচ্চ্য নাই। এমনকি চ্যানেল আই এর পরিবেশ বিশেষজ্ঞ মূকিত মজুমদারও কখনও এটা নিয়ে কোন কথা বলেনি। অথচ এটা শিল্পকারখানার বর্জ্যের চেয়ে কোন অংশে কম ক্ষতিকর নয়। সবচেয়ে ভয়াবহ দিকটা হচ্ছে সীসার প্রকোপে দেশের মাটি, পানি, বাতাস এমনকি গভীর পানির স্তর পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে ধীরে ধীরে। যা আমাদের চাষাবাদ, মাছের বংশবৃদ্ধি, পোকা-মাকড়, পশু-পাখী, গাছপালা এমনকি মানুষের উপর, বিশেষ করে মহিলাদের প্রজনন স্বাস্থ ও শিশু বিকাশ এবং সবচেয়ে বেশী নাজুক হচ্ছে গর্ভস্থ শিশুদের অবস্থা। খাদ্য, বাতাস, পানি ও ব্যাবহার্য্য জিনিষের মদ্ধ্যে সীসার উপস্থিতি ফরমালিন কিম্বা অন্যান্য কেমিকেলের চেয়েও মারাত্মক ক্ষতিকর।

কিভাবে তা হচ্ছে একটু ব্যাখ্যা করলেই বুঝতে পারবেন কত ভয়ংকর পরিস্থিতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছি আমরা। ডিজিটাল যুগের সবচেয়ে ভয়ংকর জিনিষটি হচ্ছে ব্যাটারী, বিশেষ করে লেড-এসিড ব্যাটারী। দেশের এক কোটির মত পরিবারে একটা করে আইপিএস আছে যার সাথে অবশ্যই লেড এসিড ব্যাটারী আছে। যে মানের লেড এসিড ব্যাটারী আমরা ব্যাবহার করি তা এতটাই ক্ষতিকর যে তা পৃথিবীর যে কোন উন্নত দেশে ব্যাবহার নিষিদ্ধ। কারণ হচ্ছে সেটার এসিড ঢালার ক্যাপ দিয়ে ক্রমাগত সীসার বাস্প নির্গত হয় আর এটা এত দ্রুত হয় যে ব্যাটারীগুলো এক-দুই বছরের বেশী টিকে না। দেশের একমাত্র ব্যাটারী নির্মাতা ইস্টার্ণ ব্যাটারী এই দূষণ কমানোর জন্য ক্যাপে কার্বন এর টুকরা ব্যাবহার করে যাতে করে ৩০% এর মত সীসাকে বাতাসে ছড়ানো থেকে রোধ করা যায়। অথচ এই ব্যাটারীর কথা কয়জন জানে? আর যেহেতু এটা সরকারী প্রতিস্ঠান তাই কিছুটা হলেও স্টান্ডার্ড মেনে চলে কিন্তু এটা সরকার কেন বাধ্যতামূলক করলনা অন্যান্য নির্মাতদের জন্য একটা প্রশ্ন। ৯৫% মানুষই ব্যাবহার করে অন্যান্য ব্যাটারী যেগুলোতে কোন কার্বন নাই। তাহলে চিন্তা করুন প্রতিটি ঘর কতটা বিষাক্ত হয়ে উঠছে দিনের পর দিন।

এখন আসুন বাইরে, প্রত্যেকটা গাড়ীতে একই ব্যাটারী। দেশে আরও অন্তত এক কোটি ব্যাটারী আছে ব্যাবহৃত বা অব্যাবহৃত যা থেকে ক্রমাগত সীসা বাস্প নির্গত হচ্ছে। এরপর আসুন দেশে অন্তত এক কোটি ডেস্কটপ আছে যেগুলোর সাথে একটি করে ইউপিএস আছে যার ব্যাটারী ছয় মাস থেকে এক বছর অন্তর অন্তর বদলাতে হয়। অতএব ধরে নিতে পারি গত দশ বছরে অন্তত এক কোটি ব্যাটারী নষ্ট হয়েছে। আর এগুলো কোথায় গেছে, নিশ্চয় মাঠে ঘাটে, খালে বিলে বা নর্দমায়। ব্যাটারীর ওজন মূলত তার সীসার দন্ডের ওজন। এক একটা ব্যাটারীতে সীসা উড়ে যাবার পরও ৫-১০ কেজি করে সীসা থাকে। তাহলে যদি ধরে নেই যে ৫কোটি কেজি বা ৫০হাজার টন সীসা দেশের মাটি বা পানিতে মিশে গেছে এবং এসিড সহযোগে থাকার কারণে তা অ্যাকটিভ বা আরও বেশী মারাত্মক অবস্থায় তা মাটি ও পানিতে মিশেছে এবং পরবর্তী ১০ বছরে এর দ্বিগুন মানে ১লক্ষ টন সীসা মাটি ও পানিতে ছড়িয়ে পড়বে। এবং তা থেকে অন্তত ১০% বাতাসে ছড়াবে। যেহেতু বন্যা ও বৃস্টি বিধৌত দেশ, তা খুব দ্রুত নদ, নদী, খাল, বিল, জলাশয়, কৃষি জমি ও দেশের আনাচে কানাচে ছড়িয়ে যাবে। ম্যাগী নুডুলস এ সীসা আসল কোথা থেকে, অবশ্যই নিজস্ব ডীপ টিউবওয়েল এর পানি থেকে এবং লবন থেকে যা তারা মসলার সাথে দিয়ে থাকে।

তাছাড়া ই-বর্জ্যের আরও কিছু ক্ষতিকর ধাতু হচ্ছে সার্কিট বোর্ডের কপার, ক্রোমিয়াম ও দস্তা যেগুলো যত্রতত্র ফেলে দেওয়ার কারণে মাটির PH ব্যালেন্স নষ্ট করে দেয়। ফলে মাটির স্বাভাবিক ধর্ম নস্ট হতে বাধ্য এবং বিষাক্ত হতে বধ্য করে। সেই সাথে বিষফোড়া হচ্ছে পাচ কোটি মোবাইল ফোন যার বেশীর ভাগই চাইনীজ। চাইনীজ ইলেক্ট্রনিক্সের কোন মান বা স্টান্ডার্ড না থাকা তার যথেচ্ছ ডিসপোজাল পরিবেশের জন্য হুমকি স্বরুপ। অতএব আমরা যদি এখনি কোন পদক্ষেপ না নেই তাহলে দেশে অ্যাজমা, ক্যান্সার, বিকলাঙ্গ শিশু বা অটিস্টিক শিশু জন্মানো, পশু-পাখী ও গাছপালার বিলুপ্তি, মাছ নিশ্চিহ্ন হয়ে যাওয়া জলাশয় থেকে, অপুষ্টি মহামারী আকার ধারণ করবে বলে আশংকা করছি। এখনি ই-বর্জ্য ব্যাবস্থাপনা নিয়ে না ভাবলে ভবিশ্যতে অনেক দেরী হয়ে যাবে। ব্লগে যদি কোন সাংবাদিক থাকেন তাদের কাছে অনুরোধ থাকবে যে সচেতনতা সৃষ্টির জন্য লেখালেখি করুন। এতটুক দেশে এত বর্জ্যের ডিসপোজাল প্রকৃতিক ভাবে সম্ভব না, এর জন্য উপযুক্ত ব্যাবস্থা দরকার এবং তা এখনই।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২৬ শে অক্টোবর, ২০১৬ ভোর ৬:৫৩

সিলেক্টিভলি সোশ্যাল বলেছেন: সমস্যাটা হল আমরা বাঙালিরা প্রতিরোধের চেয়ে প্রতিকারেই বেশি বিশ্বাসী। তাই সচেতনতা মূলক কথা গুলো আমাদের সহসাই সচেতন করতে পারে না! ভালো পোস্ট। পোস্ট পরে ভালো লাগায় ভালো মন্তব্য করে যেমন আমি বিদায় নিচ্ছি তেমনি হয়ত আর সকলেও বিদায় নেবে। এটাই আমাদের স্বভাব। (সহজ স্বীকারোক্তি)

২৭ শে অক্টোবর, ২০১৬ রাত ১:৪৮

গরল বলেছেন: চলমান বস্তু চিরকাল চলমান ও স্থীর বস্তু চিরকাল স্থীর অবস্থায় থাকিবে যদি না কোন বাহ্যিক বল তাহাদের অবস্থার পরিবর্তন ঘটায়। আইন না করলে এখন আর উপায় নাই, বল প্রয়োগ না করলে জড়তা কাটবে না। ধন্যবাদ সরল স্বীকারোক্তির জন্য।

২| ২৬ শে অক্টোবর, ২০১৬ সকাল ৮:৫০

রক্তিম দিগন্ত বলেছেন: সিলেক্টিভলি সোশ্যাল বলেছেন: সমস্যাটা হল আমরা বাঙালিরা প্রতিরোধের চেয়ে প্রতিকারেই বেশি বিশ্বাসী। তাই সচেতনতা মূলক কথা গুলো আমাদের সহসাই সচেতন করতে পারে না! ভালো পোস্ট। পোস্ট পরে ভালো লাগায় ভালো মন্তব্য করে যেমন আমি বিদায় নিচ্ছি তেমনি হয়ত আর সকলেও বিদায় নেবে। এটাই আমাদের স্বভাব। (সহজ স্বীকারোক্তি)

আমিও একই কথাগুলো বলতে চাচ্ছিলাম। সচেতনতা আমাদের মাঝে যে একেবারেই নেই তা নয় - আছে, কিন্তু আমরা মান্য করি কম।

২৭ শে অক্টোবর, ২০১৬ রাত ২:০৪

গরল বলেছেন: শুধু আমাদেরই না, মহাবিশ্বের সব কিছুরই জড়তা আছে, তাই বল প্রয়োগ দরকার হয়। ধন্যবাদ উপলব্ধির জন্য কিন্তু শংকা থেকেই গেল ভবিশ্যতের।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.