নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সত্য প্রতিষ্ঠার চেষ্টায় রত......

সাইমা বিনতে জামান

সাইমা বিনতে জামান › বিস্তারিত পোস্টঃ

সালাতুত তারাবীহ ২০ রাক\'আত না ৮ রাক\'আত?

১৯ শে জুন, ২০১৫ বিকাল ৩:১৭

রাত্রির বিশেষ নফল সালাত তারাবীহ ও তাহাজ্জুদ নামে পরিচিত। রমযানে এশার পর প্রথম রাতে পড়লে তাকে 'তারাবীহ' এবং রমযানে ও অন্যান্য সময়ে শেষরাতে পড়লে তাকে 'তাহাজ্জুদ' বলে।

তারাবীহঃ মূল ধাতু রা-হাতুন,অর্থঃ প্রশান্তি। অন্যতম ধাতু রাওহুন,অর্থঃ সন্ধ্যারাতে কোনো কাজ করা। সেখান থেকে তারবীহাতুন। অর্থঃ সন্ধ্যারাতের প্রশান্তি বা প্রশান্তির বৈঠক, যা রমযান মাসে তারাবীহর সালাতে প্রতি চার রাক'আত শেষে করা হয়ে থাকে। বহুবচনে'তারাবীহ' অর্থঃ প্রশান্তির বৈঠকসমূহ (আল মুনজিদ)।

উল্লেখ্য যে, তারাবীহ, তাহাজ্জুদ,ক্বিয়ামে রমযান, ক্বিয়ামুল লায়িল সবকিছুকে এক কথায় 'সালাতুল লায়িল' বা 'রাত্রির নফল সালাত' বলা হয়। রমযানে রাতের প্রথমাংশে যখন জামা'আত সহ এই নফল সালাতের প্রচলন হয়,তখন প্রতি চার রাক'আত অন্তর কিছুক্ষণ বিশ্রাম নেয়া হতো। সেখান থেকে তারাবীহ নামকরণ করা হয়। (ফাতহুল বারী, আল-ক্বামূসুল মুহীত্ব)।

তারাবীহর জামা'আতঃ রাসূল (সাঃ) রমযান মাসের ২৩,২৫,২৭ তিন রাত্রি মসজিদে জামা'আতের সাথে তারাবীহর সালাত আদায় করেছেন। প্রথম দিন রাত্রির এক-তৃতীয়াংশ পর্যন্ত, দ্বিতীয় দিন অর্ধ রাত্রি পর্যন্ত এবং তৃতীয় দিন নিজের স্ত্রী, পরিবার ও মুসল্লিদের নিয়ে সাহারীর আগ পর্যন্ত দীর্ঘ সালাত আদায় করেন। (আবুদাঊদ,তিরমিযী প্রভৃতি, মিশকাত হা/১২৯৮ 'সালাত' অধ্যায় ৪, 'রমযান মাসে রাত্রি জাগরণ' অনুচ্ছেদ ৩৭)। পরের রাতে মুসল্লিগণ তার কক্ষের কাছে গেলে তিনি বলেন, 'আমি ভয় পাচ্ছি যে, এটি তোমাদের উপর ফরজ হয়ে যায় কিনা। আর যদি ফরজ হয়ে যায় তাহলে তোমরা তা আদায় করতে পারবে না (মুত্তাফ্বাক আলাইহ,মিশকাত হা/১২৯৫ 'রমযান মাসে রাত্রি জাগরণ' অনুচ্ছেদ ৩৭)

তারাবীহর ফযীলতঃ রাসূল (সাঃ) বলেছেন, যে ব্যক্তি রমযানের রাত্রিতে ঈমানের সাথে ও সওয়াবের আশায় রাত্রির সালাত আদায় করে,তার বিগত সকল গুনাহ মাফ করা হয়' (মুসলিম, মিশকাত হা/১২৯৬)

তারাবীহর জামা'আতঃ ইমাম শাফিঈ,আবু হানীফা,আহমাদ ও কিছু মালেকী বিদ্বান এবং অন্যান্য বিদ্বানগ্ণ বলেন,তারাবীহর সালাত জামা'আতে পড়া উত্তম, যা হযরত উমর (রাঃ) ও সাহাবায়ে কেরাম চালু করে গেছেন এবং এর উপরেই মুসলমানদের আমল জারি আছে।কেননা এটি ইসলামের প্রকাশ্য নিদর্শনসমূহের অন্তর্ভুক্ত। যা ঈদায়েনের সালাতের সাথে সামঞ্জস্যশীল (শাওকানী,নায়লুল আওত্বার 'তারাবীহর সালাত', অনুচ্ছেদ, ৩/৩২১)।

রাক'আত সংখ্যাঃ রমযান বা রমযানের বাইরে রাসূল (সাঃ) হতে রাত্রির এই বিশেষ নফল সালাত ৩ রাক'আত বিতর সহ ১১ রাক'আত সহীহ সূত্র দ্বারা প্রমাণিত। যেমন আয়েশা (রাঃ) বলেন,"রমযান বা রমযানের বাইরে রাসূল (সাঃ) রাত্রির সালাত ১১ রাক'আতের বেশি আদায় করেননি। তিনি প্রথমে (২+২) [মুত্তাফ্বাক আলাইহ,মিশকাত হা/১১৮৮, 'রাত্রির সালাত', অনুচ্ছেদ ৩১] চার রাক'আত পড়েন। তুমি তার সৌন্দর্য ও দীর্ঘতা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করো না। অতঃপর তিনি (২+২) চার রাক'আত পড়েন। তুমি তার সৌন্দর্য ও দীর্ঘতা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করো না। অতঃপর ৩ রাক'আত পড়েন ( বুখারী ১/১৫৪ পৃঃ, হা/১১৪৭; মুসলিম ১/২৫৪ পৃঃ হা/১৭২৩; তিরমিযী হা/৪৩৯)

বিশ রাক'আত তারাবীহঃ প্রকাশ থাকে যে,উক্ত রেওয়ায়েতের পরে ইয়াযীদ বিন রুমান থেকে 'ওমরের যামানায় ২০ রাক'আত তারাবীহ পড়া হতো বলে যে বর্ণনা এসেছে তা 'যঈফ' এবং ২০ রাক'আত প্রসঙ্গে ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে যে বর্ণনা এসেছে তা 'মওযূ' বা জাল (আলবানী,হাশিয়া মিশকাত হা/১৩০২, ১/৪০৮ পৃঃ ইরওয়া হা/৪৪৬,৪৪৫, ২/১৯৩,১৯১ পৃঃ)।

এতদ্ব্যতীত ২০ রাক'আত তারাবীহ সম্পর্কে কয়েকটি 'আসার' এসেছে যার সবগুলোই 'যঈফ' ( তারাবীহর রাক'আত বিষয়ে বিস্তারিত জানার জন্য মির'আত হা/১৩১০ এর আলোচনা দ্রষ্টব্য, ৪/৩২৯_৩৫ পৃঃ ; ইরওয়া হা/৪৪৬ এর আলোচনা দ্রষ্টব্য ২/১৯৩ পৃঃ)।

২০ রাক'আত তারাবীহর উপরে ওমরের যামানায় সাহাবী গণের মধ্যে ইজমা বা ঐক্যমত্ হয়েছে বলে যে দাবী করা হয় তা একেবারেই ভিত্তিহীন ও বাতিল কথা (তুহফাতুল আহওয়াযী হা/৮০৩ এর আআলোচনা দ্রঃ ৩/৫৩১ পৃঃ ; মির'আত ৪/৩৩৫)। সুতরাং রাসূল (সাঃ) এর তারাবীহ ছিলো ৮ রাক'আত।

এটা স্পষ্ট যে,রাসূল (সাঃ) ও খুলাফায়ে রাশেদীন থেকে এবং রাসূল (সাঃ) এর অন্য কোন স্ত্রী ও সাহাবী থেকে ১১ বা ১৩ রাক'আতের ঊর্ধ্বে তারাবীহর কোন বিশুদ্ধ প্রমাণ নেই (মুওয়াত্ত্বা,৭১ পৃঃ, টীকা ৮ দ্রঃ)। বর্ধিত রাক'আত গুলো পরবর্তীকালের সৃষ্টি।

ইমাম ইবনু তায়ামিয়াহ (রহঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহর (সাঃ) রাত্রির সালাত ১১ বা ১৩ রাক'আত আদায় করতেন। পরবর্তীকালে মদীনার লোকেরা দীর্ঘ ক্বিয়ামে দূর্বলতা বোধ করে। ফলে তারা রাক'আত সংখ্যা বৃদ্ধি করতে থাকে,যা ৩৯ রাক'আতে পৌছে যায়। (ইবনু তায়ামিয়াহ, মাজমূ' ফাতাওয়া (মক্কাঃ আননাহযাতুল হাদীসাহ ১৪০৪/১৯৮৪), ২৩/১১৩।

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ১৯ শে জুন, ২০১৫ বিকাল ৪:২৮

রাসেল আহমেদ মাসুম বলেছেন: তারাবীহর নামাজ ২০ রাকাত। ১৯/৬/২০১৫ তারিখে খিলক্ষেত নিকুঞ্জ-২ মসজিদের পেশ ঈমাম জুম্মার বয়ানে এই কথা বললেন। যারা ৮ রাকাত বলেন তারা আসলে তাহাজ্জত নামাজের ভুল ব্যাখ্যা করেন। আমি এ বিষয়ে তেমন কিছুই জানি না। তাই লেখককে অনুরোধ করবো তিনি যেন খিলক্ষেত নিকুঞ্জ-২ জামে মসজিদের পেশ ঈমামের সাথে এ বিষয় নিয়ে কথা বলেন। এবং আপনার কাছে আশা করব আপনি যেন দ্বীনের ব্যাপারে কার্পন্য না করেন। আমি ঠিকানা দিলাম ,দলিল দেখালে আপনি এই নিকুঞ্জ-২ জামে মসজিদে চলে আসুন। আর যদি না আসেন তাহলে জানব আপনি মুসলমানদের মধ্যে বিভ্রান্ত ছড়াচ্ছেন। আমি আপনার বিরুদ্ধে মন্তব্য করছি না, আমি মুসলিম উম্মার ঐক্যের লক্ষ্যেই এই মন্তব্য করলাম।

২| ১৯ শে জুন, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:১৬

সাইমা বিনতে জামান বলেছেন: আগে হাদিস তারপর অন্যকেউ। ভাই আমি হাদিসের রেফারেন্স, আরো অন্যান্য ফিকাহের রেফারেন্স দিয়েছি। এখন আপনি আগে হাদিস মানবেন না আগে হুজুরকে মানবেন সেটা আপনার ব্যাপার।

৩| ২০ শে জুন, ২০১৫ সকাল ৯:৪১

নীল আকাশ ২০১৪ বলেছেন: আমার মতে তারাবীর নামায ২০ রাকাতই হওয়া উচিত, ঊমর (রা) যেহেতু এটিকে একটি শৃঙ্খলার মধ্যে নিয়ে এসেছেন, সেই শৃঙ্খলা আমাদের মেনে চলা উচিত। তবে তারাবীর নামাজকে নিয়ে ফটকা হাফেজেরা যেভাবে ছেলেখেলায় মেতে ওঠে, তাতে সালাত এবং কুরআন - দুটোর সৌন্দর্যই নষ্ট হয় ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.