নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি কখনো নিজের নাম লুকোই না। আকাইমা শব্দ দিয়ে বানানো ছন্ম নাম আমার পছন্দ নয়। মা-বাবা\'র দেয়া নাম দিয়েই প্রোফাইল খুলেছি।

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন

আমি কেউ না।একদা পথ শিশু ছিলাম। বড় হয়ে এখন পথ মানব হয়েছি। বাবা এক দিন স্বপ্ন দেখানোর সুরে বলেছিলেনঃ দেখিস, এক দিন আমাদেরও....! আমার দেখা হয়নি কিছুই । এখনো অপেক্ষায় আছি কিছু একটা হবো, কিছু একটা দেখবো।

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন › বিস্তারিত পোস্টঃ

সাত সকালে খাবার পানি সংগ্রহ করতে গিয়ে

১১ ই অক্টোবর, ২০২০ রাত ৮:৩৯



খাবার পানি শেষ হয়ে যাওয়ায় সাত সকালে পানি আনতে বের হলাম।

আমি যে মেশিন থেকে পানি সংগ্রহ করি ওটার খরচ বেশ কম অথচ পানিটা ভালো। খেতে খুব ভালো।
খরচ অবিশ্বাস্য রকম কম। 50 পয়সায় 10 লিটার পানি সংগ্রহ করা যায়।

আমি চারটা কন্টেইনার সাথে নেই ‌ প্রতিটা প্রায় 6 লিটার পানি ধরে।
আমি পানি আনতে রওনা দিলাম সকাল সাড়ে আটটার দিকে। বাসা থেকে গাড়ী নিয়ে গেলে 3/4 মিনিট লাগে।

সে যাই হোক । সকাল বেলায় ওখানে পার্কিং পাওয়া যায় সহজেই। আমি গাড়ি পার্ক করে দুটি পানি ভরার কন্টেনার নিয়ে পানির মেশিন এর কাছে গেলাম। যথারীতি দুটি বোতল পানি দিয়ে পূর্ণ করে ফেললাম।

পিছনে তাকিয়ে দেখি এক মালয়েশিয়ান ভদ্রলোক হোন্ডা অর্থাৎ মোটরসাইকেল নিয়ে পানি নিতে এসেছেন। তার সাথে পানি ভরার দুইটা কন্টেইনার আছে। 10 লিটার করে পানি ধরে।

আমি আমার পানি ভরা দুটি কন্টেনার নিয়ে গাড়িতে রেখে বের হলাম। বাকি দুটি বোতল পানিতে ভরব বলে। এমন সময়ে শুরু হল ঝুম বৃষ্টি। আমি কোন বুদ্ধি না পেয়ে গাড়ির ভেতর ঢুকে পড়ে ইঞ্জিন স্টার্ট দিয়ে এসি অন করলাম।

বাইরে তাকিয়ে দেখি ওই ভদ্রলোক পানি ভরে বোতল রেখে দৌড়ে বারান্দায় গিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন।


আমি বসে বসে ফ্রেঞ্চ ভাষায় লেকচার শুনতে লাগলাম।। 10 মিনিট পরে মনে হলো বৃষ্টি মনে হয় জীবনেও থামবে না।


আমি ঠিক করলাম ছাতা নিয়ে বাকি দুটি বোতল ভরে ফেলি। সেই অনুযায়ী ছাতা আর বোতল নিয়ে বের হলাম
পানি ভরতে শুরু করলাম।

বারান্দার দিকে তাকিয়ে দেখি মালয় ভদ্রলোকটি আমাকে মালয় ভাষায় ডাকছেন। বুঝতে পারলাম উনি আমার সহযোগিতা চেয়েছেন। যেন আমি আমার ছাতা দিয়ে উনাকে উনার মোটরসাইকেল এর কাছে নিয়ে যাই।

আমি দ্রুত উনাকে মোটরসাইকেলের কাছে নিয়ে গেলাম । তিনি মোটরসাইকেলের ভেতর থেকে কি যেন হাবিজাবি টাকা-পয়সা বের করে আবার আমার সাথে বারান্দায় চলে গেলেন। চলে যাবার সময় মালয় ভাষায় ধন্যবাদ দিচ্ছিলেন। যেন তিনি খুবই খুশি।


আমি আমার বাকি বোতলটা পানি ভরতে শুরু করলাম। এই সময় বৃষ্টি খুবই কমে গেল। তাকিয়ে দেখি উনি বারান্দা থেকে নেমে আসছেন। এসে আমার কাছে দাঁড়িয়ে মালয় ভাষায় কৃতজ্ঞতা সূচক কিছু কথা বললেন। এবং সেই সাথে ধুম করে 20 পয়সার চারটি কয়েন মেশিন এর উপর রেখে চলে গেলেন। আমি বললাম আমি মেশিনে অলরেডি প্রচুর পরিমাণে কয়েন ঢুকিয়ে দিয়েছি। কোন সমস্যা নাই। তিনি ধন্যবাদ ধন্যবাদ বলতে বলতেই যেয়ে মোটরসাইকেলে চেপে বসে বসলেন।


আমি কি করব বুঝে উঠতে পারছিলাম না। দ্রুত পয়সা চারটি নিয়ে উনার কাছে চলে গেলাম‌। বললাম, আমি আপনার সামান্য উপকার করতে পেরে খুবই আনন্দিত। আর পানি নেওয়ার মতো যথেষ্ট পয়সা আমি অলরেডি মেশিনে ঢুকিয়ে দিয়েছি ।
আপনি ভালো থাকবেন। বলে পয়সাগুলো মোটরসাইকেলের সামনের জিনিসপত্র রাখার যে জায়গা আছে সেখানে রেখে দিলাম।

তখনো বৃষ্টি হচ্ছিল। এই বৃষ্টির মধ্যে ভিজতে ভিজততে ভদ্রলোক মোটরসাইকেলে 20 লিটার পানি নিয়ে বাসার দিকে ছুটলেন।

আমিও আমার পানির বোতল গুলো নিয়ে বাসার দিকে ছুটলাম।

মন্তব্য ১৬ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (১৬) মন্তব্য লিখুন

১| ১১ ই অক্টোবর, ২০২০ রাত ৮:৫১

চাঁদগাজী বলেছেন:


খাবার পানি?

১১ ই অক্টোবর, ২০২০ রাত ৯:৫৪

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন: জি । খাবার পানি। সরাসরি বোতলজাত খাবারের পানির দাম অনেক বেশি। এই কারণে পাবলিক প্লেসে অনেক পানি সরবরাহের মেশিন বসানো আছে। মানুষ যার যার সুবিধা মতো পানি সংগ্রহ করে।

তবে যাদের সামর্থ্য আছে তারা বোতলজাত পানি সরাসরি বাসায় নিয়ে আসে। আমি দরিদ্র মানুষ ।
আমার সেটা সামর্থ্য নেই।

২| ১১ ই অক্টোবর, ২০২০ রাত ৯:০৩

অনল চৌধুরী বলেছেন: ৮০ পয়সা দেয়াটা কি আন্তরিকতা?
আপনি কি গাড়ি চালান?
প্রোটন সাগা?
এই ব্র্যান্ড টা ১৯৮৭ সালে বাংলাদেশে আসলেও চলেনি।

১১ ই অক্টোবর, ২০২০ রাত ৯:৫৭

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন: লোকটা কি মনে করে দিয়েছিল সেটা তো আর আমি জানি না। হয় তো সে আন্তরিকতার সাথে এটা দিয়েছিল।

মালয়েশিয়াতে রিক্সা নেই। তাই গাড়ি ছাড়া এখানে চলাচল করাটা খুবই কষ্টদায়ক ও একই সাথে ব্যয়বহুল হবে।

আমি কম দামি নিশান ব্র্যান্ডের একটা গাড়ি চালাই।

বাংলাদেশের মানুষের হাতে প্রচুর পরিমাণে টাকা আছে । Proton গাড়ি বাংলাদেশে সেই ভাবে চলবে না। যদিও বাংলাদেশে চট্টগ্রামে এই গাড়ির কারখানা স্থাপিত হয়েছে।

৩| ১১ ই অক্টোবর, ২০২০ রাত ৯:০৪

সৈয়দ মোজাদ্দাদ আল হাসানাত বলেছেন: খাবার পানি আনতে এতো কষ্ট করতে হয়?

১১ ই অক্টোবর, ২০২০ রাত ৯:৫৮

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন: এত কষ্ট কোথায় দেখলেন ?
গাড়ি নিয়ে গেলাম।
গাড়ি নিয়ে ফিরে এলাম।

৪| ১১ ই অক্টোবর, ২০২০ রাত ৯:১১

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
বাসার ট্যাপের সাথে একটা পিউরিফায়ার
সংযোগ করে নিলেইতো ল্যাটা চুকে যায়।
দামও খুব একটা বেশী না।

১১ ই অক্টোবর, ২০২০ রাত ১০:০০

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন: না। লেঠা চুকে যায় না।
বাসায় যেয়ে কম দামি জিনিস বসাবেন ওটার পানি খাওয়া আর ডাইরেক্ট পুকুরের পানি খাওয়ার মধ্যে খুব বেশি পার্থক্য হবে না।

এখানে বাইরে বসানো পানি বিশুদ্ধকরণ মেশিন গুলো নিয়মিত সার্ভিসিং করা হয়। প্রচুর পরিমাণে যত্ন করা হয়। কেননা এগুলো ভালো আয় এর উৎস ও বটে।

৫| ১১ ই অক্টোবর, ২০২০ রাত ১১:২৬

রাজীব নুর বলেছেন: ৫০ পয়সা !!!!
আমাদের এখানে ছোট একটা পানির বোতল ১৫ টাকা।

আপনি কি জানেন আজ ঢাকায়ও বৃষ্টি হয়েছিলো।
মালোশীয়ার এত বৃষ্টি হয় কেন?

১২ ই অক্টোবর, ২০২০ ভোর ৫:৫৫

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন: এখানে বাংলাদেশের পনের টাকায় ১লিটার পানি পাবেন যে কোন দোকানে।

বৃষ্টি প্রকৃতির আশীর্বাদ।
যত বৃষ্টি হবে ততই ভালো।
সব দিক বিবেচনায়ই ভালো।

৬| ১২ ই অক্টোবর, ২০২০ রাত ২:১৮

হাসান কালবৈশাখী বলেছেন:
এটা কি সত্য। গত বছর কুয়ালামালপুর শহরে ২ দিন সাপ্লাই পানি ছিল না।

১২ ই অক্টোবর, ২০২০ ভোর ৫:৫৩

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন: এরকমটি প্রায়ই হয়। গত বছর সব চেয়ে খারাপ দিন গেছে। ৭ দিনের উপর কোন পানি ছিল না।
আসলে কুয়ালালামপুর ও এর পার্শ্ববর্তী জেলাগুলো পাহাড়ী এলাকার মতো। এখানে পানি সংকট প্রতি নিয়তই হয়।

৭| ১৯ শে অক্টোবর, ২০২০ রাত ৯:৪৫

খায়রুল আহসান বলেছেন: চমৎকার একটি ছোট পোস্ট। চলার পথের এসব ছোট খাট ঘটনা অনেক সময় বড় কিছু শিখিয়ে যায়, কিংবা বড় কিছু করারও উৎসাহ যুগিয়ে যায়। এ অভিজ্ঞতাটুকু শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ, পড়ে ভাল লেগেছে।
মন্তব্যের উত্তরগুলোও যথেষ্ট আন্তরিকতার সাথে দিয়েছেন, সেটাও ভাল লেগেছে।
"এত কষ্ট কোথায় দেখলেন ? গাড়ি নিয়ে গেলাম। গাড়ি নিয়ে ফিরে এলাম।" - এ ইতিবাচক উপলব্ধিকে সাধুবাদ।
পোস্টে দ্বিতীয় ভাল লাগা। + +

২১ শে অক্টোবর, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৪৮

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন: স্যার পোষ্টটি আপনার ভালো লেগেছে জেনে আমি অত্যাধিক খুশি হয়েছি।
আপনি এই ব্লগের একজন শ্রদ্ধাভাজন মুরুব্বী।
আপনার প্রতিটি কথা আমার কাছে বেদবাক্য মনে হয়।

৮| ১৯ শে অক্টোবর, ২০২০ রাত ১০:০১

মনিরা সুলতানা বলেছেন: যাপিত জীবন !!
ভাললাগল আপনার অভিজ্ঞতা।

২১ শে অক্টোবর, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৪৭

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন: আপনি কষ্ট করে পড়েছেন জেনে আমি খুবই খুশি।।

প্রতিদিনই আমাদের জীবনে কোন না কোন ঘটনা ঘটে যেটা অন্যের সাথে শেয়ার করলে ভালো লাগে ।
সেরকম ঘটনা আমাদের সবার জীবনেই আছে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.