![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
অফুরন্ত সম্ভাবনার অপর নাম বাংলাদেশ। বিদ্যমান সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে পারলেই বাংলাদেশ হয়ে যাবে অর্থনৈতিক ভাবে বিশ্বের অন্যতম সমৃদ্ধশালী দেশ। এ দেশের রয়েছে অমিত সম্ভাবনাময় ষোল কোটি মানুষের বত্রিশ কোটি হাত। ষোল কোটি মানুষ বাংলাদেশের জন্য অভিশাপ নয়, আশীর্বাদ। কেননা আবহমান কাল থেকেই এ দেশের মানুষেরা কর্মনিষ্ঠ, পরিশ্রমী। বর্তমান সরকারের গতিশীল নেতৃত্বে জাতীয় প্রবৃদ্ধির বর্তমান ধারা অব্যাহত থাকলে অচিরেই এ দেশ পরিণত হবে পৃথিবীর অন্যতম বৃহৎ পোশাক, জুতা, ওষুধ, সিরামিক ও চামড়াজাত পণ্যের রপ্তানিকারক দেশে। সৃষ্টিকর্তার অপার কৃপায় ধন্য এদেশে রয়েছে পৃথিবীর সবচেয়ে উর্বর মাটি আর দূষণমুক্ত পানি। গ্যাস ও কয়লার প্রাচুর্যের পাশাপাশি এ দেশে বছরে তিনবার ফসল উৎপাদিত হয়। ফলে ঘনবসতিপূর্ণ দেশ হওয়া সত্ত্বেও ইতোমধ্যেই খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জিত হয়েছে, এ দেশে এখন আর কেউ না খেয়ে মরে না।বিভিন্ন উন্নয়ন সূচকের ধারাবাহিক বৃদ্ধিতে খুব শীঘ্রই বাংলাদেশ হতে যাচ্ছে মধ্য-আয়ের দেশে। দেশের কৃষিখাত, প্রবাসী আয় আর পোশাক শিল্পের আয়ে উন্নয়নের ক্রমোন্নতিতে পৃথিবীকে অবাক করে দেশের পুরো চেহারাটাই বদলে যাচ্ছে। রাজনৈতিক অপশক্তির নানা ষড়যন্ত্রে দেশের সার্বিক স্থিতিশীলতা বারংবার বিনষ্ট হওয়া সত্বেও অর্থনৈতিক উন্নয়নের ধারা বন্ধ হয়নি। কৃষিতে বৈপ্লবিক পরিবর্তনের পাশাপাশি দেশের দরিদ্র, শ্রমজীবী, প্রান্তিক জনগোষ্ঠী নির্ভর প্রবাসী আয়কে পুঁজি করে বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়িয়েছে। অন্যদিকে ঘামঝরা শ্রমের ফসল পোশাকশিল্প উন্নয়নের ধারাকে করেছে আরও বেগবান। দেশে যেভাবে প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে, অর্থনীতি এগিয়েছে, যেভাবে বিশ্বমন্দা ও রাজনৈতিক অস্থিরতা মোকাবিলা করেছে, তাতেই বোঝা যায় বাংলাদেশের মানুষ অপরিসীম ক্ষমতার অধিকারী। অপরিসীম তাদের ধৈর্য ও সৃজনশীলতা। বিষ্ময়কর তাদের সংগ্রামী মনোবল ও উদ্যম। বাংলাদেশ এগিয়ে যাবেই, কেউ তাকে আটকাতে পারবে না। ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হবেই। সত্তর দশকের ‘ষড়যন্ত্রমূলক’ তলাবিহীন ঝুড়ি, নব্বই দশকের বিশ্ব পরিমন্ডলে তুলনামূলক অচেনা বাংলাদেশ এখন বিশ্বব্যাপী এক বিস্ময়ের নাম। উন্নয়ন নিয়ে ভাবনা-চিন্তা করা মানুষদের কপালে ভাঁজ ফেলে রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যেও সম্ভাবনার দিগন্তে সাফল্যের পতাকা উড়িয়ে দেশ অব্যাগত গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। কোন চক্রান্তই থামাতে পারছে না বর্তমান সরকারের উন্নয়ন রথের অব্যাহত অগ্রযাত্রা। একের পর এক উন্নয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে সাফল্যের পেখমে যুক্ত হচ্ছে নব নব পালক। চার লেন মহাসড়ক, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, পানগাঁও নৌ-টার্মিনাল নির্মাণ প্রকল্প, গ্যাস সংকট নিরসনে এলএনজি টার্মিনাল প্রকল্প, মেট্রোরেল প্রকল্প, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প, রামপাল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্প, গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণ, মাতারবাড়ী বিদ্যুৎ প্রকল্প, পায়রা সমুদ্রবন্দর, রাজধানীর চারপাশে স্যুয়ারেজ ট্যানেল নির্মাণের মতো অবকাঠামো গড়ে তোলা হচ্ছে। সম্প্রতি যোগ হয়েছে পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্প, দোহাজারী-রামু-কক্সবাজার-ঘুমধুম প্রকল্প ও দেশের বিভিন্ন স্থানে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল গঠনের কাজ। বৃদ্ধি পেয়েছে চট্টগ্রাম ও মংলা সমুদ্রবন্দরের সক্ষমতা ও বিদ্যুৎ উৎপাদন। ১৬ কোটির দেশে মোবাইল ব্যবহারকারীর সংখ্যা এখন ১৩ কোটি, তথ্য-প্রযুক্তি খাতের উন্নতিতে দেশে ইন্টারনেট ব্যবহারকারী এখন সাড়ে ৫ কোটি। আগামী বছর মহাকাশে উৎক্ষেপণ করা হবে দেশের প্রথম কৃত্রিম উপগ্রহ ‘বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট’। আন্তর্জাতিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান বিএমআই রিসার্চের মতে আগামী ১০ বছরে বাংলাদেশ হয়ে উঠবে বিশ্বের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির নতুন চালিকাশক্তি। অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে এগিয়ে যাওয়ার যে সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে তাকে কাজে লাগাতে হলে দেশ থেকে জঙ্গিবাদের শেকড় উৎপাটন করতে হবে। দেশকে এ অঞ্চলের অন্যতম উৎপাদন কেন্দ্রে পরিণত করতে চাইলে আইনশৃঙ্খলার প্রশ্নে হতে হবে আপসহীন। এক সাগর রক্তের বিনিময়ে স্বাধীনতা অর্জন করেছে যে দেশের জনগণ তাদের দিয়ে সবকিছুই সম্ভব। দেশপ্রেম এবং হার না মানা মনোভাবের আত্মবিশ্বাসে উজ্জীবিত আত্মপ্রত্যয়ী বাংলাদেশের মানুষ অতীতে রূপকথায় ফিনিক্স পাখির মতো ভস্ম থেকে উড়াল দেয়ার সামর্থ্য দেখিয়েছে অসংখ্যবার। বিশ্বজয়ের সামর্থ্য দেখাতে এবার তাদের আরও প্রত্যয়ী হতে হবে, হতে হবে শৃঙ্খলাপরায়ণ, ঝেড়ে ফেলতে হবে সব নেতিবাচক চিন্তা-চেতনা। রক্ত দিয়ে কেনা স্বাধীনতাকে অর্থবহ করতে এদেশের সংগ্রামী মানুষের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টায় অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির মাধ্যমে সোনার বাংলা বিনির্মাণের স্বপ্ন বাস্তবায়িত হবেই।
©somewhere in net ltd.