নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

পেশায় ভূতত্ত্ববিদ ।ভালো লাগে কবিতা পড়তে। একসময় ক্রিকেট খেলতে খুব ভালবাসতাম। এখন সময় পেলে কবিতা লিখি। প্রাচ্যের অক্সফোর্ড ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কার্জন হল ভালো লাগে খুব। ভালোলাগে রবীন্দ্র সংগীত আর কবিতা । সবচেয়ে ভালো লাগে স্বদেশ আর স্বাধীন ভাবে ভাবতে। মাছ ধরতে

সেলিম আনোয়ার

[email protected] Facebook-selim anwarবেঁচে থাকা দারুন একটা ব্যাপার ।কিন্তু কয়জন বেঁচে থাকে। আমি বেঁচে থাকার চেষ্টা করি।সময় মূল্যবান ।জীবন তার চেয়েও অনেক বেশী মূল্যবান।আর সম্ভাবনাময়।সুন্দর।ঢাকাবিশ্বদ্যিালয়ের পাঠ চুকিয়ে নিরস চাকুরীজীবন। সুন্দরতর জীবনের প্রচেষ্টায় নিবেদিত আমি সেলিম আনোয়ার।

সেলিম আনোয়ার › বিস্তারিত পোস্টঃ

গ্রাম বাংলায় দিনগুলি

০৩ রা মে, ২০১৫ রাত ৯:৩২





হবিগঞ্জ জেলা পরিষদ ডাক বাঙলো । ছোট্ট একতালা ভবন ।সেখানেই থেকে আমাদের সাম্প্রতিক ফিল্ড ট্রিপ। দারুন প্রতিকূলতার মধ্যে দিয়ে গেল সময় । প্রথম দিনই বাঙলো সংলগ্ন রাস্তায় এক বৃদ্ধের সঙ্গে সাক্ষাৎ। তিনি নিজে থেকেই বলে ওঠলেন ভৌতিক কাহিনী। পাশের ঝিলটায় নাকি এক বিশাল আকৃতির মানুষের মাথা ভেসে ওঠেছিল।সেটা কিছুক্ষণ পর ডুব দেয় পানিতে । সেটা দেখে আমির হোসেন নামের একজন লোক তৎক্ষণাত হার্টফেল করে মারা গেছেন।শুনে অবিশ্বাসী চোখে বুড়োর দিকে তাকালাম।বুড়োর চোখে মুখে বিশ্বস্ততার ছাপ ।যাই হোক ধরে নিলাম এটা ভুত/জ্বীনপ্রবণ এলাকা ।



সন্ধ্যার সময় আমি আর আমার কলিগ বেড় হলাম নাশতা করার জন্য। সেই জলাশয়টাতে অন্ধকারের মধ্যেই লাগাতার একজন মহিলা কন্ঠ ভেসে আসতে থাকলো । ঘুটঘুটে অন্ধকার এর মধ্যে এরকম শব্দ। যাক মনে মনে বেশ খুশি হলাম । ভুত বিশ্বাস করিনা তাতে কি? মোটামুটি ভুত মার্কা এলাকায় এসেছি। পরে অবশ্য এর রহস্য উদঘাটন হলো সেটি একজন পাগলি। যার কেউ নেই ।তিনি ওখানে ঘন্টার পর ঘন্টা শব্দ করে করে ডুবিয়ে বেড়ান ।



রাস্তায় চলার পথে ঘাড় বাঁকামতন কিছু মানুষের দেখা পেলাম ।জ্বীন প্রবণ এলাকা মনে হলো ।







গ্রাম বাংলা



কষ্ট : আমরা আমাদের কাজ শুরু করলেই সূর্য প্রচন্ড আক্রোশ নিয়ে রৌদ্রে পুড়িয়েছে। বিস্তীর্ণ ধানক্ষেত সেখান দিয়ে চলতে গিয়ে পিপাসায় প্রচন্ড কাতর অবস্থা । সঙ্গে পনি না থাকায় একবার বিলের পানি পান করেছি । বিস্ময়জনকভাবে হলেও পেট খারাপ করেনি । প্রচন্ড রৌদ্রে নিম্নচাপের সময় আমাদের হেটে ২০ কিলিমিটার পথ চলা । এরপর টানা ঝড় হতে থাকলো । সন্ধ্যা হলেই শুরু হতো বিদ্যুৎ চমকানো ।লাগাতার এবং সারারাত। কয়েকদিন একনাগাড়ে বিদ্যুৎ ছিলনা ।



ভূমিকম্প : একদিন ভূমিকম্প হলো । একতালা ঘরে ভূমিকম্প কিভাবে বুঝলাম ? আমি বসে ল্যাপটপে কাজ করছিলাম । মনে হলো সোফাটা নড়ছে । তারপর কলিগের দিকে তাকালাম । বললাম সে কিছু টের পাচ্ছে কিনা? সে চেয়ারে বসা ছিল। কিছু বলতে পারছেনা । একতলা ভবনে ভূমিকম্প বুঝা টাফ। তখন চোখ পরলো পানির বোতলে ।পানি নড়ছে ।স্পষ্ট পানির দুলুনিতে নিশ্চিৎ হলাম । কলিগকে কনফার্ম করলাম ভূমিকম্প হয়েছে । তবে সেটি যে এত বড় মাপের তা বুঝলাম পরে। আমাদের ড্রাইভার অন্য এক ড্রাইভারের অভিজ্ঞতা শেয়ার করলেন বললেন স্যার সে বললো গাড়ি চালাই কিন্তু কোন কনেট্রাল নাই ।



মর্মান্তিক : আমাদের অন্যতম শ্রমিক যিনি পুলিশের সোর্স তার ক্লাস নাইনে পড়া মেয়ের আকস্মিক মৃত্যু। মুখলেস কাজ করছিল হঠাৎ খবর আসলো তার মেয়ে অসুস্থ ।তাকে হসপাতালে নিয়ে যেতে হবে । তাকে কিছু টাকা দিয়ে ছুটি দিলাম।কিছুক্ষণ পরে খবর এল ।মুখলেস সাহেবের মেয়ে মরে গেছে ।



বিস্ময়কর : জাদিদ সাহেব, ব্লগের সম্পাদক ফোন দিলেন ভূমিকম্প বিষয়ক তার চাহিদা মাফিক পোস্ট দিতে পারবো কিনা ছবিসহ। ঠিক সেই সময় বিলের মাঝখান থেকে দেখলাম গ্রামের সবমানুষ ছোটে যাচ্ছে স্কুলের দিকে । খবর এল বিল্ডিং ভেঙে পরে শিশুরা আহত হয়েছে । কাজ স্থগিত করে ঘটনা পরিদর্শনে গেলে জানলাম স্কুল শিক্ষিকা ভূমিকম্পের পূর্বাভাস দিয়েছেন । সেই মুহুর্তে শব্দ হয়েছে ওপরে ।বাচ্চারা ভূমিকম্প আতঙ্কে ছুটতে গিয়ে আহত হয়েছে । একজনের পা ভেঙে গেছে ।







সোনার তরী



গাড়ি আটকে গেলো : বৃষ্টিতে রাস্তার উপর দিয়ে পানি ওঠে গেল। সেখান দিয়ে নৌকা চলাচল করছে অবলীলালায় ।আমাদের পরিচালক মহোদয় উদ্বিগ্ন হয়ে দ্রুত গাড়ি পারের ব্যবস্থা করতে বললেন । নৌকা ছাড়া সেটা পার করার অন্য কোন উপায় ছিলনা ।আমি সিদ্ধান্ত নিলাম কাজশেষে গাড়ি পার করবো আগামী দুইতিন দিনে যদি রাস্তার পানি শুকোয় তাহলে সেটা দিয়ে পার হবার সুযোগ হবে আর যদি না হয় অগত্যা নৌকা দিয়ে পার হতে হবে ।পানি কমেনি। দুটো বিশাল নৌকা দিয়ে অভিনব কায়দায় নৌকা পার করলাম । ইউনিয়ন চেয়ারম্যান সঙ্গে থেকে আমাদের গাড়ি পারে সহায়তা করলেন ।উপজেলা চেয়ারম্যানও নৌকা দিয়ে সহায়তা করলেন।আমাদের ড্রাইভার দারুণ দক্ষতায় গাড়ি নৌকোতে তুলে হাসি দিয়ে ছবি ওঠাতে বললেন । চোখে মুখে তার গর্বের ছাপ স্পষ্ট।





অবশেষে : বাংলোত পাখির মেলা ।বউ কথা কও ,কোকিল ,ময়না ,শালিক প্রভৃতি পাখির বিচিত্র ডাকে মুখরিত। আমার মনে দোলা দেয় কাঠ ঠোকরা পাখির গাছ কাটার বিচিত্র শব্দ। কিন্তু সেগুলো খুঁজে পাইনা ।অবেশেষে শেষদিনে ঠিকই দুটো কাঠটুকরো আবিষ্কার করলাম ।ছবি তুলতে গিয়ে বারাবার ব্যর্থ হলাম। ক্যামেরা তাক করলেই তারা ফুরুত। অবশেষে দূরের সুপারি গাছে তাদের ক্যামেরা বন্দি করতে সক্ষম হলাম ।

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ০৩ রা মে, ২০১৫ রাত ১০:২০

রিকি বলেছেন: ভাই শেষ পর্যন্ত কি ভেসে উঠা মাথা দেখেছিলেন যে কয়দিন ছিলেন? ;) ;) Bed loadded head :P

০৪ ঠা মে, ২০১৫ রাত ১২:৩১

সেলিম আনোয়ার বলেছেন: না দেখিনি । তবে ভয়ানক ছিল মরা মানুষ পোড়ানোর ব্যাপার যেটা নিয়মিত হত সঙ্গে হরে হরে গান । দিনে এত মানুষ মরে এই এ্রলাকায় ।মনে হচ্ছিল নিজেই মরে যাই কিনা । এখানে আবার বজ্রপাতে মানুষ মরে ।সময়টা ছিল বজ্রপাতের । :(

২| ০৪ ঠা মে, ২০১৫ রাত ৮:১৫

প্রামানিক বলেছেন: আপনার লেখা পুরো বর্ননা পড়লাম। অনেক ভাল লাগল। এরকম ভ্রমণ আমার প্রিয়। শুভেচ্ছা রইল।

০৪ ঠা মে, ২০১৫ রাত ৯:৫৩

সেলিম আনোয়ার বলেছেন: কমেন্টে আর পাঠে ধন্যবাদ । নিরন্তর শুভকামনা ।

বিস্তীর্ণ ধানক্ষেত দিয়ে ছোটে চলেছি রবি ঠাকুরের রাশি রাশি ভারা ভারা ধানকাটা হলো সারা পড়েছি আবৃত্তি করেছি ।

৩| ০৪ ঠা মে, ২০১৫ রাত ৮:২৩

জুন বলেছেন: গ্রাম বাংলার চালচিত্র ভালোলাগলো সেলিম আনোয়ার ।
+

০৪ ঠা মে, ২০১৫ রাত ৯:৫৩

সেলিম আনোয়ার বলেছেন: কমেন্টে আর ভাল লাগায় ধন্যবাদ জুনাপি ।

৪| ০৬ ই মে, ২০১৫ বিকাল ৫:৪৫

বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: পোস্টে ভালোলাগা সাথে +++ কর্মময় যাপিত জীবনের গল্প পড়তে ভালো লেগেছে। ভালো থাকা হোক সবসময়।

০৬ ই মে, ২০১৫ রাত ৯:২১

সেলিম আনোয়ার বলেছেন: কমেন্টে ও পাঠে ধন্যবাদ নিরন্তর শুভকামনা

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.