নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নীল মুদ্রা

একদিন চমকে যেয়ে নিজেকে আবিষ্কার করলাম ভিন্ন সত্তায়, পৃথিবীতে সবাই একা তাই যত কথা লেখালেখিতে, আমার লেখাই আমার অনুভূতির অনুবাদ......

নীল মুদ্রা › বিস্তারিত পোস্টঃ

জীবনের কথা-২১

১০ ই মে, ২০১০ সকাল ১০:২৩

চলছে...



রানার মা সেই যে নিয়ে গেলো আর আসতে দিলো না।

ভালোই যাচ্ছিলো দিনগুলি, কিন্তু আমার শাশুড়ীর সাথে ফ্রি হতে পারছিলাম কিছুতেই, উনিও সহজ করে নিচ্ছিলো না আমাকে কেমন যেনো ভয় ভয় করতো। রানার সাথে কোথাও বেড়াতে গেলে অনুমতি নিতে হতো কোথায় যাবো তাও বলতে হতো কখন ফিরবো সেটাও বলতে হতো।

অনেক জেরা করতো, মিথ্যা কথা বলে বাইরে যেতে হতো সেই ভয়ে বাইরে বের হওয়া কমিয়ে দিলাম, মাঝে মাঝে আম্মার বাসায় আসতাম প্রতি সপ্তাহেই বলা যায়। জীবনে কখোনো ৭দিনের বেশী আব্বা আম্মাকে ছেড়ে থাকিনি।

রানাদের বাসায় আরো অনেক নিয়ম ছিলো, কাজের মানুষ থাকা সত্বেও আমার ঘরের কাপড় সব আমার ধুতে হতো, আমি কাজের মেয়েকে কোন অর্ডার করতে পারবো না। যদিও আম্মার বাসায় কোন কাজ করিনি কখোনো, তাও ওখানে যেয়ে নিজেরটা নিজেই করতাম, যদিও কষ্ট হতো তবু রানা বলেছিলো প্লিজ এটুকু মেনে নাও। রানার জন্য এতটুকু করতে পারবো না! মেনে নিলাম।

আমি বুঝে গেলাম আমাকে রানার মা এখনও সহজভাবে নিতে পারে নাই। রানার বোন ইভা ও শিখা যে দুইজনের বিয়ে হয় নাই তাদের মধ্যে শিখা ছোট ও আমার সাথে লালমাটিয়া কলেজে পড়তো। শিখা আমাকে তেমন পছন্দ করতো না, ইভা একটু ভালো ছিলো, ও ইকোনমিক্সে অনার্স পড়তো ঢাকা ইউনিভার্সিটিতে।

একদিন আমি ঘর থেকে শুনলাম রানার মা রানার সাথে রাগারাগি করছে আমি কেনো রান্না করি না । রানা ঘরে এসে আমাকে বললো তুমি আম্মাকে যেয়ে বলো তুমি রান্না করবে, চাবি দেওয়া পুতুলের মত রানা যা বলেছে তাই করেছি। শুধু শান্তির আশায়।

মার বাসায় কখোনো রান্না করিনি, একমাত্র মেয়ে আমি হয়তো বাবা মায়ের আদরটা একটু বেশিই পেয়েছিলাম। তারপরও বুদ্ধি দিয়ে যতটুকু সম্ভব সেভাবেই শুরু হলো রান্না।

একটা নিয়ম হলো ১০টার সময় যেয়ে রানার মাকে বলতে হবে মা কি রান্না করবো। উনি যা বলতেন তাই রান্না করতাম। কখোনো যদি আমার রান্নার কথা জিজ্ঞেস করতে ১০-১৫ মিনিট দেরি হতো তবে তার জন্য আমার বকা খেতে হতো।

খুব ভয় পেতাম আমি সকাল থেকে ঘড়ির দিকে তাকিয়ে থাকতাম কখোন ১০টা বাজবে। একা রাঁধতে হতো আমাকে কেউ কোন হেল্প করতো না।

এসব কষ্ট কোন কষ্টই মনে হয়নি তখন রানার ভালোবাসা আর আদরের কাছে, তখন আমার মনে হয়েছিলো আমি সব মেনে নিতে পারি শুধু রানা যদি আমাকে ভালোবাসে, আমি কষ্টে নীল হতে রাজী যদি ভালোবাসার ঊষ্ণতায় আমাকে বার বার সতেজ করো। সব মেনে নিলাম।

কিন্তু ভয় গেলো না। সবসময় কেমন রাগী রাগী হয়ে থাকতেন উনি। এমনি করে কাটছে দিন। মনের মধ্যে কিছুটা ভয় আতংক অশান্তি নিয়ে।

রিংকুভাই-রানার যে বন্ধুর নামের সাথে উলটপালট হয়ে রানার সাথে আমার পরিচয়, তার বাসায় নিয়ে গেলো আমাকে, নতুন বিয়ে করেছে সেও। তার বউটা অনেক মোটা। তবে বড় লোকের মেয়ে। রিংকুভাই দেখতে অনেক ভালো ছিলো।

কথা হলো উনাদের সাথে,উনি বেশ ভালো উনার বউটা অহংকারী। মানুষ বলে অহংকার পতনের মূল কিন্তু- এখন আমার মনে হয় ‘নারীর অহংকার’ উন্নতির চাবিকাঠি যে কোন নারীর অহংকার থাকা উচিত।

যে অহংকার আমি কখোনো করতে পারিনি শুধু নিজের সম্পর্কে কমপ্লেক্স ছিলো একগাদা।

যদি আমি অহংকারী হতাম সব কিছুর মোকাবেলা হয়ে যেতো শুরু থেকেই।

রিংকুভাই বললো তোর বউটা খুব লক্ষী, একেবারই বাচ্চা একটা মেয়ে। আমি হেসেছিলাম। কেনো জানি আমার ক্ষুদ্র বুদ্ধিতে মনে হয়েছিলো রিংকুভাই হ্যাপি না। আমার দিকে তার দৃষ্টিটা প্রথম দিনই কেমন যেনো লাগলো, আমার দিকে তাকিয়ে আছে বার বার চোখাচোখি হচ্ছে।

যাক বেশ কিছুক্ষণ ওখানে থেকে বাড়ি ফিরলাম।

এর দু’তিন দিন পর হঠাৎ আরিফের ফোন রানার সাথে কথা বললো অনেকক্ষণ, আরিফ আমাকে চায়নি রানা-ই আমাকে ফোনটা দিলো,

জিজ্ঞেস করলো কেমন আছো ? ভালো ছাড়া কি-ই-বা বলার আছে। ওপাশ থেকে কথা বলে যাচ্ছে অপ্রাসঙ্গিক কিছু কথা। আমি চুপ করে শুনছি এছাড়া পথ কি! কেনো যেনো মায়া হতো ওর জন্য।

ও বললো তোমার একটা ছবি আছে আমার কাছে লিজের কাছে পেয়েছিলাম তুমি স্কার্ট পরা, হাটু পর্যন্ত দেখা যাচ্ছে, আমি রোজ তোমার পায়ে এবং ঠোঁটে কিস্ করি। তোমার ঐ ছবিটা দেখলে আমি পাগল হয়ে যাই। তোমাকে আদর করতে ইচ্ছা করে, তোমাকে অনুভব করি - সারাজীবন তোমাকে ভালোবাসবো, মনে রাখবো, তুমি আমার হবে না জানি কখোনো, তবু ভালোবাসি কিন্তু চাইলে হতে পারতে। জানো পৃথিবীতে ভালো মেয়ের খুব অভাব।

আরো কত কি! এর আগে এমন খোলামেলাভাবে কখোনো বলেনি ও। কি বলবো আমি বুঝতে পারলাম না- রানা সামনে বসা, শুধু বললাম ভালো থাকবেন, এখন রাখি পরে কথা হবে। ফোন রাখলাম। আজও বুঝি না কেনো এতো ভালোবাসতো সে আমাকে।

রানার সাথে বেশ ভালোই দিন কাটছে। রানার উপর অনেক বেশী নির্ভরশীল ছিলাম আমি, কখোনো কোনো কিছু লুকাইনি, জীবনের সব গল্পই তাকে বলেছি, কিন্তু সেটা আমার উচিত হয়নি, স্বামীকে সব কথা আসলেই বলা উচিত না। কারণ কোনো ছেলে যখন স্বামী হয়ে যায় তখন সে হয়ে যায় আলাদা প্রজাতীর কিছূ। কখোনো কখোনো বিভিন্ন কথার খোটা খেতে হতো। কিন্তু রানাকে এতো ভালোবাসতাম কোন কথা লুকাতে পারতাম না, আমার মনে হতো কোন কথা লুকালে ভালোবাসার পূর্ণতা আসে না একটু যেনো বাকী থেকে যায়। এতো সিনসিয়ার থেকেও সত্যি কি এসেছিলো ভালোবাসার পূর্ণতা...



চলবে...

মন্তব্য ২২ টি রেটিং +৮/-০

মন্তব্য (২২) মন্তব্য লিখুন

১| ১০ ই মে, ২০১০ সকাল ১০:৩৭

'লেনিন' বলেছেন: আরিফের কাহিনি পড়িনি আগে। তবে সে কিস করার কথা উল্লেখ করেছে। সন্দেহ জাগে আসলেই ভালোবাসতো কিনা আপনাকে। জৈবিক চাওয়া আর ভালোবাসা এক কিনা সে ব‍্যাপারে আমার দ্বন্দ্ব কাজ করছে।

১০ ই মে, ২০১০ সকাল ১১:০০

নীল মুদ্রা বলেছেন: আপনার কথা ঠিক। তবে তখন এত ছোট ছিলাম যে সেটা বোঝার মত মন ছিলো না। খুব সহঝভাবেই ভাবতাম সব।
আর এটা ভাবার আরো কিছু কারণ আছে সেটা পরে জানবেন

ভালো থাকবেন

২| ১০ ই মে, ২০১০ সকাল ১০:৩৮

রাজিবুল ইসলাম বলেছেন: যদিও একালই মনে হয় তারপরেও একটা প্রশ্ন করি? আপনার এই অংশের লেখার সময়কাল কখন। এযুগেও এরকম বর্বর পরিবার হয় নাকি?

(কারণ কোনো ছেলে যখন স্বামী হয়ে যায় তখন সে হয়ে যায় আলাদা প্রজাতীর কিছূ। )

এই কথাটি কিন্তু সর্বক্ষেত্রে এরকম নয়। তাই লাইনটা অন্যরকম হলে ভাল হতো।

১০ ই মে, ২০১০ সকাল ১০:৫৭

নীল মুদ্রা বলেছেন: হ্যাঁ ভাই এ যুগেরই লেখা।

(কারণ কোনো ছেলে যখন স্বামী হয়ে যায় তখন সে হয়ে যায় আলাদা প্রজাতীর কিছূ)
আপনি এ লেখার প্রতিবাদ করেছেনে -ভালো লাগলো, তার মানে আপনি তাদের দলে পরেন না।
আমার কতা আমি ফিনরয়ে নিলাম সবাই হয় না তবে কেউ কেউ...

ধন্যবাদ।
ভালো থাকবেন

৩| ১০ ই মে, ২০১০ সকাল ১০:৫৯

ফেরিওলা বলেছেন: হূমমমমমমমমমমমমমমমমমমমমমমম.......তারপরে.........কানে কানে বলেন.....ফিসফিসিয়ে............ঝিরি ঝিরি, ঝিরি ঝিরি বাতাসে, বৃষ্টির ফোটায় ফোটায় ভিজে যাই।

১০ ই মে, ২০১০ সন্ধ্যা ৬:০৯

নীল মুদ্রা বলেছেন: ভালো লাগলো

৪| ১০ ই মে, ২০১০ সকাল ১১:০৪

'লেনিন' বলেছেন: এ জন্যই আগের পোস্টে বলেছি জীবন থেকে হয়তো শিক্ষা নেননি। এটা চিরন্তন ধ্রুবসত্য যে সবকিছুই বলতে হয়না। অন্তত নাটক, গল্প, উপন্যাস এসব সাহিত্যে যে জীবনবোধগুলো সমন্বিত থাকে তাতে এই উপদেশটিই দেয়া। সন্দেহপ্রবণতা, আর একাত্মতার অভাব....মিসফিট...

১০ ই মে, ২০১০ সন্ধ্যা ৬:১২

নীল মুদ্রা বলেছেন: তা আমি মানি না, আমি সত্য বলতে চাই, হতে পারে সত্য অসুন্দর, তবু এই সত্য থেকে কেউ কিছু শিখুক

তবে আপনার মন্তব্য আর পর্যবেক্ষন বেশ ভালো লাগলো

৫| ১০ ই মে, ২০১০ সকাল ১১:১২

রঙ পেন্সিল বলেছেন: আমি একটা প্রার্থনা সংগীত শুনছি! সংগীতের মর্মউদ্বার এর চাইতে এর শুদ্ধ প্রণোদনায় আমি আবিভুত। এই গল্পের নায়িকার জন্য আমার এ কালেকশানটা পাঠাতে চাই। গল্পের কথায় আসি, জীবন এমনি; কখনো রংহীন, কখনো বিবর্ণ, কখনো সাতরং এ উদ্ভাসিত আর কখনো বা ম্রীয়মান! আমি আমার চোখদুটো বন্ধ করলাম শক্ত করে....দুর দরান্তরের এক বালিকার আকুতি ভেসে আসে বাতাসে............ঝিরি ঝিরি.............ঝিরি ঝিরি..........ঝিরি ঝিরি বাতাসে............বৌদ্ধ ভীক্ষুদের প্রার্থনা সংগীতে লীন সেই আকুতি!

১১ ই মে, ২০১০ সকাল ১০:০৮

নীল মুদ্রা বলেছেন: ভিসুয়ালাইজেসনটা অন্য রকম ...........ভালো লাগলো

৬| ১০ ই মে, ২০১০ বিকাল ৩:১৩

যাচ্ছেতাই বলেছেন: গল্পের কয়েকটি জায়গায় কিছু অসন্গতি আছে।পরে একসাথে বলব।বাকিটুকু পড়ার অপেক্ষায় থাকলাম।

লেখার পরিমাণ বাড়ানোর জন্য ধন্যবাদ।

১০ ই মে, ২০১০ সন্ধ্যা ৬:১৩

নীল মুদ্রা বলেছেন: অসঙ্গতি গুলো জানতে পারি? তবে আমার সুবিধা হয় তবে কিছু অসঙ্গতি পরে বুঝতে পারবেন, কেনো ছিলো....?

৭| ১০ ই মে, ২০১০ বিকাল ৫:০২

সুরঞ্জনা বলেছেন: +++

১১ ই মে, ২০১০ সকাল ১০:০৮

নীল মুদ্রা বলেছেন: ধন্যবাদ

৮| ১৬ ই মে, ২০১০ রাত ১০:০৭

প্রতীক্ষা বলেছেন: অনেক অনেক ভালো লিখেছেন...অনেক গোছানো!

' কখোনো কখোনো বিভিন্ন কথার খোটা খেতে হতো। কিন্তু রানাকে এতো ভালোবাসতাম কোন কথা লুকাতে পারতাম না, আমার মনে হতো কোন কথা লুকালে ভালোবাসার পূর্ণতা আসে না একটু যেনো বাকী থেকে যায়। এতো সিনসিয়ার থেকেও সত্যি কি এসেছিলো ভালোবাসার পূর্ণতা...'

উফফ এ কষ্টগুলো ছুঁয়ে গেল! বিশ্বাস আর শ্রদ্ধা ছাড়া কি ভালবাসা পূর্ণতা পায় কখনো!


++++++++++++++++++

১৭ ই মে, ২০১০ সকাল ১১:৫৭

নীল মুদ্রা বলেছেন: সত্যি বিশ্বাস আর শ্রদ্ধা ছাড়া ভালোবাসায় পূর্ণতা আসে না.... তবে এক তরফা কোনো কিছুতেই পূর্ণতা আসে না।
ভালোলাগলো আপনার মন্তব্য পেয়ে। ধন্যবাদ। পাশে থাকবেন

৯| ১৭ ই মে, ২০১০ সকাল ৮:৫৬

নীল মুদ্রা বলেছেন: সত্যি বিশ্বাস আর শ্রদ্ধা ছাড়া ভালোবাসায় পূর্ণতা আসে না.... তবে এক তরফা কোনো কিছুতেই পূর্ণতা আসে না।
ভালোলাগলো আপনার মন্তব্য পেয়ে। ধন্যবাদ। পাশে থাকবেন

১০| ১৭ ই মে, ২০১০ সকাল ১০:২০

করবি বলেছেন:
জীবনের কথা সিরিজে আপনার কথা গুলো বাস্তব জীবনের কিছু কঠিন রূপ। অনেক সাহসীকতার সাথে লিখছেন।



লিখেতে থাকুন
শুভ কামনা........।

১৭ ই মে, ২০১০ দুপুর ১২:০১

নীল মুদ্রা বলেছেন: এক সময় ছিলো না সাহশ, জীবনের বহু বিপর্জয় পার আজ সাহসী হয়েছি জীবনের প্রয়োজনে, আপনারা পাশে আছেন, ভাবতে ভালো লাগে_

শুধু খারপ মানুষ কেনো ভালো মানুষও পৃথিবীতে আছে, তাইতো এখোনো মানুষ আশা করে, ভালোর জন্য বাঁচে...........

ভালো থাকবেন
ভালো রাখবেন

১১| ১৭ ই মে, ২০১০ সকাল ১১:২৫

প্রতীক্ষা বলেছেন: তবে এক তরফা কোনো কিছুতেই পূর্ণতা আসে না

হুমম! আসলেই! একতরফা কিছুই হয় না! না ভালবাসা, না বন্ধুত্ব, না কোন সম্পর্ক!

১৭ ই মে, ২০১০ দুপুর ১:২৯

নীল মুদ্রা বলেছেন: হু সেটাই.......

তাই
ভালো থাকবেন
ভালো রাখবেন

১২| ১৭ ই মে, ২০১০ দুপুর ১:৪৩

রাজসোহান বলেছেন: আচ্ছা ? আগের গুলো পড়ে আসি , মাঝে কয়েকদিন ব্লগে অনিয়মিত ছিলাম :(

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.