![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
কবি শফি মোঃ ওমর ফারুক
রোদেলা
শফি মোঃ ওমর ফারুক
২৫শে, আগ্রায়ন ১৪১৯
কিছুক্ষনের মধ্যেই নিদ্রাছন্ন শহরটা জেগে উঠবে। সকল কােলাহল আর ব্যস্থতার মাঝে মানুষগুলো আসল কাজটা ভুলে যাবে। সব নীরবতা ভেঙ্গে ভয়ংকর চিৎকারের মাধ্যমে শিশুটি ভুমিষ্ট হলো । সকল বির্পযয় ঠেলে সে পৃথিবীর বুকে জায়গা করে নিলো । কাক ডাকা ভৈার। এখনো আজান পড়েনি। সারা রাত জীবনের সাথে লড়াই করে রােমেলা এবারও একটি তৃতীয় কন্যা সন্তান প্রসব করলো। মস্থ বড় হাসপাতাল। লেবার রুমটা একেবারে জাতীয় মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের শেষ কােনায়। যেখানটায় মানুষের চলাচল বিরল। নিতান্ত প্রয়োজন ছাড়া কেউ এ-দিকটায় এগোয় না।
দশ/এগারো বৎসরের কিশোরী কন্যা ঋতু ছাড়া আত্নিয় পরিজন অন্য কেউই রােমেলার সাথে হাসপাতালে উপস্থিত নেই।
প্রসব বেদনা উঠায় রােমেলাকে ওয়ার্ড থেকে লেবার রুমে স্থানান্তরিত করা হয় মধ্য রাতের পূর্বেই। যদিও রােমেলার সন্তান প্রসবের তারিখ ছিল আরো বেশ ক’দিন পর। জনমানবহীন লেবার রুমে ডাক্তার তাে নেই, নার্স থেকে ও উধাও আছে শুধু একজন আয়া। আয়া রােমেলাকে স্যালাইন পুশ করে রাত কিছুটা গভীর হলে টেবিলের উপর মাথা ঠুকে ঘুমিয়ে পড়েছে। জেগে আছে শুধু তারা মা ও মেয়ে। গভীর রাত। চারি দিক গুটগুটে অন্ধকার। ঋতু মাকে জড়িয়ে ধরে আছে। প্রসব বেদনা তীব্র না হলেও ভয়ে রােমেলা আরো বেশী কাতরাচ্ছে ও ঘামাচ্ছে। মা, তাের বাপেরে মােবাইলে পাইলি না ?
না, মা। বাবার মােবাইল বন্ধ। মনে হয় চার্জ শেষ। এক আক্কেলকে অনুরোধ করে বাবার নাম্বারে কয়েকবার চেষ্টা করেছিলাম। এদিকে তাড়াহুড়ো করে আসার পর এতো রাতে মােবাইল তাে দূরে থাক কােন মানুষ-জন চােখে পড়লো না।
ঠিক আছে মা। আল্লাহকে ডাক্।
কনকনে শীত তথাপি রােমেলা অঝরে ঘামাচ্ছে। চারিদিক নীরব নিস্তদ্ব। বেশ বড়সড় লেবার রুমে দু’টি বেড। একটিতে রােমেলা অন্যটি খালি। উচা দালান। পূরনো আমলের দালান। মোটা অনেক বড় একটা ফ্যান ঝুলানো। দুইটা বড়সড় আলমিরায় কিছু মেডিক্যাল যন্ত্রপাতি ছাড়া ঔষধ পত্র তেমন কিছু নেই। পূরনো দোতলা দালানের চারিপাশ পূরনো বেশ বড় বড় গাছ-গাছাড়ি দ্বারা ঘেরা। রাত যতো গভীর হচ্ছে ততই রােমেলার প্রসব বেদনা বৃদ্বি পাচ্ছে। মাঝে মাঝে পেছা ডাকছে । পেছার ডাক নাকি ভাল না। মরা বাড়িতে নাকি পেছা আসে। এতে রােমেলা আরো বেশী ভয় পেয়ে যায়। ঋতু মাকে আরো বেশী চাপ দিয়ে আকড়ে ধরে। ঘন কুয়াশায় আলোর তেজ ক্ষীন হয়ে আসে। রাতের তীব্রতায় চারিপাশ ঝিমিয়ে পড়েছে। রােমেলা কাতরাচ্ছে। ধীরে ধীরে তার প্রসব বেদনা বৃদ্বি পাচ্ছে। ভয়ে আর ব্যাথায় তার গলা শূকিয়ে এলে সে মৃদু স্বরে পানি পানি বলে। ঋতু পানি এনে মাকে খাইয়ে দেয়।
আয়া বেভোরে ঘুমাচ্ছে। তার কােন নড়চড় নেই। টিপ টিপ করে স্যালাইন চলছে। স্যালাইন প্রায় অর্ধেকের বেশী শেষ।
এখন পেচার ডাক আরো বেশী বৃদ্বি পায়। ঋতু মাকে আবারো জড়িয়ে ধরে। এমন সময় বিদ্যুৎ চলে যায়। চারিপাশ ঘুটঘটে অন্ধকার। ভয়ংকর একটি পরিবেশ। পেছার ডাক যেন তাদের কানে আরো বেশী প্রতিধ্বনি হতে লাগলো। মা মেয়ে পরস্পরকে জড়িয়ে ধরে আছে। মা, ভয় করছে। আল্লা ভরসা। আল্লাহকে ডাক।
ঋতু আর দাড়িয়ে থাকতে পারছে না। সারা দিন দৌড়াদৌড়ির পর ক্লান্তিতে তার সমস্থ শরীর অবশ হয়ে আসছে। প্রচন্ড ঘুম পাচ্ছে তার। কিন্তু মায়ের এ অবস্থায় সে ঘূমায় কি করে ? তার উপর ভয়। ভয়ে তার শরীর কাঁপতেছে।
মা, ভয় পাইস না। সুরা এখলাস পড়। তারা দু’জন অনবরত সুরা এখলাস পাঠ করিতেছে। সময় গড়ায়।
রোমেলার প্রসব বেদনা আরো বেড়ে যায়। ব্যাথায় সে চটপট করতে থাকে। কিন্তু মুখে শব্দ বের করছে না। ব্যাথায় সে চােখে মুখে কিছু দেখতে পায় না। মুখে সুরা পাঠ বন্ধ হয়ে যায় তার। প্রচন্ড ব্যথায় তার মাথা ঘুরতে থাকে। সে বুঝতে পারতেছে তখন তার ঞ্জানশক্তি লােব পাইতেছে। সে বার বার চেষ্টা করছে তার ঞ্জান ধরে রাখার কিন্তু পারছে না। সে একবার চােখ মেলে আবার বন্ধ করে। মনে মনে বার বার আল্লাহকে ষ্মরন করার চেষ্টা করে। হে আল্লা রক্ষা করো। হে আল্লা রক্ষা করো। হে আল্লা দয়া করো। সে অনেক চেষ্টা করে চােখ মেলে রাখার কিন্তু পারে না। তার মাঝে ঘন অন্ধকার নেমে আসে। সে ঞ্জান হারিয়ে ফেলে। ঘন অন্ধকারে মায়ের শাড়া শব্দ না দেখে, ঋতু ভঁয় পেয়ে যায়, মায়ের কি হল, মায়ের কি হল, তার ভঁয় আরও বৃদ্ধি পেল। না, ভঁয় পেলে চল্বে না। আয়াকে ডাকি, আয়াকে ডাকতে থাকে ঋতু। বৃব্ধ আয়ার কােন সাড়া শব্ধ নেই। সে একবার মায়ের কাছে দৈাড়ায় আবার আয়ার কাছে। আয়াকে যতই ডাকাডাকি করে ঋতু, সে নিশ্চল। আয়া বেভৈারে নাক ডেকে ঘুমাচ্ছে। অন্ধকারে ঋতু দৈড়াতে গিয়ে হােছট খেয়ে পড়ে ”মা-গো ” বলে চিৎকার দেয় । কিন্তু তার মায়ের কােন সাড়া শব্দ নেই। সে উঠে দাড়িয়ে তার মায়ের বাহুতে কযেকটি ধাক্ক দিয়ে মা মা বলে ডাক দেয়, কিন্তু মায়ের সাড়া শব্দ নেই। সে প্রচন্ড ভয় পেয়ে যায়। মায়ের জানি কি হলো ? মাযের কপালে হাত বুলিয়ে দেখে তার মায়ের কপাল ঠাণ্ডা হয়ে গেছে। সে মায়ের হাতে, পায়ে ধরে দেখে হাত পাও ঠাণ্ডা হয়ে গেছে। ঋতু অন্ধকারে দৈাড়ে এসে আয়াকে তার সমস্থ শক্তি দিয়ে ধাক্কা দিয়ে প্রচন্ড জােরে চিৎকার করে বলে ’খালা আমার মা” মারা গেলো। আয়া থতো মতো খেয়ে জেগে উঠে। চিৎকার শুনে কােথা হতে নার্স এসে আয়াকে ধমক লাগায়। তাড়াতাড়ি মােম জ্বালাও। নার্স মােম হাতে রােগীর পাল্স চেক করে। খালা ইনজেকশন নাও। মােমের আলোতে আয়ার ইনজেকশান খুজে পেতে কিছুটা বিলম্ব হলে নার্স আবার তাকে ধমক লাগায়। রােগীর অবস্থা অশংকাজনক দেখেও নার্স ঘাবড়ে যায়নি। মােমের আলোতেই সে রােগীর শরীরে দুইটি ইনজেকশন পুশ করে দেয়। এমন সময় বিদ্যুৎ চলে আসে। এই তােমার বাবা কই ? যাও তােমার বাবাকে দ্রুত ডেকে নিয়ে আস বলে ঋতুকে রুম হতে বের করে দিয়ে দরজা আটকে দেয় নার্স। ভয়ে ঋতু কাঁদতে থাকে। সে ভেবে পায় না সে কি করবে? এতো রাত? চারিদিক নীরব নিস্তদ্ব। তার উপর পেচার ডাক। সব মিলিয়ে একটি ভয়ংকর পরিবেশ। তার শুধু কান্না পাচ্ছে। সে অনবরত কাঁদতে থাকে। এই রাতে বাবাকে কই পাই? জনমানবহীন এই অরন্যে কাকে খুজি, কাকে বলি। সে কান্নার পাশা পাশি বিড় বিড় করে প্রার্থনা করতে থাকে, হে আল্লা দয়া করো, রহম করো। সে ভাবে শুধু কাঁদলে কি চলবে? কিছু একটা করতে হবে। কিন্তু কি? করি, কি করি? ভাবতে ভাবতে দু হাতে দু চােখ মূছতে থাকে। হঠাৎ তার মনে পড়ে যায় বিকেল বেলায় হাটতে হাটতে সে আলম নামের এক আংকেলের রুমে প্রবেশ করে। যার সাথে তার অনেক আলাপ হয়। শখ্যতা হয়। সে কেন হাসপালে? তার মায়ের কি অবস্থা? তারা ক” ভাই বােন । বাবা কি করেন? সে কি স্কুলে যায়? ইত্যাদি নানা বিতান্ত।
প্রথম প্রথম অতো প্রশ্নের উত্তর দিতে চায়নি সে। পরে বুজতে পারলো আংকেল খুবই ভাল মানুষ, তার সাথে আলাপ করা যায়। গল্প করা যায়। সখ্যতা গড়া য়ায়।
সে বলেছিলো যে কােন সমস্যা হলে সােজা তার কাছে চলে যেতে। সে তাকে আইসক্রীম খাওয়াতে চেয়েছিলো সে খায়নি। এই রাতে কি তাকে পাওয়া যাবে ? বাবার মতো তার ও তাে নাইট ডিউটি পড়তে পারে। সে হাসপাতালের প্রধান ফলকের দিকে দৈাড়াতে থাকে। তার এ দৈাড়, যেন শেষ হয় না। তথাপি সে দৈাড়াচ্ছে। দৈাড়াতে দৈাড়াতে এসে, সেই রুমের দরজা সজোরে ধাক্কা দিয়ে খুলে রুমে প্রবেশ করেই দেখতে পায় তার কাঙ্গিত আংক্কেল টেবিলে মাথা রেখে ঘুমুচ্ছে।
আলমকে দেখতে পেয়ে ঋতু সমস্থ সাহস ফিরে পায়। সে হাত মুঠি করে বিধাতার নিকট শুকরিয়া ঞ্জাপন করে।
প্রচন্ড শব্দে আলমের ঘুম ভেঙ্গে যায় । সে কে ? কে ? বলে চেচিয়ে উঠে, চােখ কচলাতে কচলাতে ঋতুর দিকে এগিয়ে যায়। চােখে কিছুটা ঝাপসা দেখলেও ঋতুকে চিনতে তার বেশী সময় লাগেনি। কি? ব্যাপার তুমি এ অসময়ে? ঋতু কাঁদতে থাকে । আলম এগিয়ে এসে ঋতুর মাথায় হাত বুলিয়ে শুধু কাদলে চলবে ? কথা না বললে আমি বুঝবো কি করে তােমার কি সমস্যা ? ঋতু কাঁদতে কাঁদতে আমার মা, ..
আমার মা কি ? কি সমস্যা ?
আমার মা মারা যাচ্ছে।
কি বলো ! কখন ? কােথায় ?
লেবার রুমে ।
চলো, চলো.. তারা দু জন লেবার রুমের দিকে দৈাড়াতে আরম্ব করে।
লেবার রুমের দরজা বন্ধ। তার সামনে ঋতু দাড়িয়ে। ভেতরে তেমন কােন সাড়া শব্দ নেই। ঋতু বিড় বিড় করে প্রার্থনা করছে। আলম পায়চারি করছে। তোমার বাবার নাম্বার বন্ধ। খালার নাম্বারও বন্ধ। আর কারো নাম্বার নাই ?
এই দুইটা নাম্বারই আমার মুখস্থ।
অন্য কােন নাম্বার ? তোমার মামা, বা নানার নাম্বার ?
ওনারা আমাদের বাসায় আসে না।
কেন ?
জানি না।
কাকা বা, দাদা ?
ওনাদের কখনো দেখি নাই।
আচ্ছা। অন্য কারো নাম্বার? দেখ চেষ্টা করে।
মনে নেই।
মনে করার চেষ্টা করো।
খালার নাম্বারে চেষ্টা করতে থাকুন। উনি ভৈারে নামাজ পড়তে উঠলে, তখন মােবাইল খােলে।
আলম বারবার ডায়াল করতে থাকে। কিন্তু বার বার একই শব্দ ভেসে আসে। দি মােবাইল কেন নট রিচ এট দা মােমেন্ট ...।
এমন সময় ভেতর হতে উচ্চস্বরে বাচ্চার কান্নার আওয়াজ ভেসে আসে।
আলম, আলহামদুলিল্লা বলে।
এ শব্দ যেন খান খান করে ভেঙ্গে দিলো রাতের নীরব-নিস্তদ্বতা। প্রকৃতি যেন নড়ে চড়ে উঠলো। পেছার ডাক থেমে গেলো।
ভৈারের কিছুটা আভা ভেসে উঠলো। দূর হতে আজানের ধ্বনি ভেসে আসলো। ক্ষানিক বাদে নার্স দরজার এক পাটি খুলে তােয়ালে পেছানো শিশুটি কােলে নিয়ে বাহিরে এলো। আরে স্যার আপনি? বাচ্চার বাবা কই? অন্য আত্নিয় স্বজন কই? আশ্চার্য ব্যাপার !
জানি না। ঋতু আমাকে ধরে নিয়ে এলো।
ভাল হয়েছে। মেয়ে হয়েছে, আপনিই এখন বাপ, ধরেন, বাচ্চাটা কোলে নিন। কোন সমস্যা ?
আলম বাচ্চাকে কােলে তুলে নিলো, সে হৃদ স্পন্দন টের পেল। জীবনের স্পন্দন। এ, এক ভিন্ন্ অনুভুতি। যা সে আগে কখনো টের পায়নি, এই প্রথম সে এতো ছােট্র শিশু কােলে তুলে নিলো।
স্যার; মেলা ঔষধ পত্র লাগবে। রােগীনির অবস্থা ভাল না। অনেক কষ্টে দুজনকেই সেভ করেছি। সিজার দরকার ছিলো। প্রচুর রক্ত ক্ষরন হয়েছে। আপনি একটু অপেক্ষা করুন আমি আসছি বলে সে ভেতরে চলে গেলো।
নার্সের কথা শুনে ঋতু ভড়কে যায়। আলম ঋতুর দিকে এগিয়ে এসে, ভয পেয়ো না । আমি আছি না ? এই দেখ্, কি সুন্দর শিশু। তােমার বােন। ঋতু আলমের দিকে দেখে একবার আবার শিশুটির দিকে, ঋতু শিশুটির কপালে ঘালে আদর দেয়।
তোমরা তা হলে এখন তিন বােন।
ঋতু ম্লান চােখে আলমের দিকে আবার তাকায়।
আরে মেয়েরাই তাে ভাল। মেয়েরা লক্ষ্যি হয়। মেয়েরা বাবাদের খুব আদরের হয়।
বাবার খুব শখ ছিলো এবার একটি ছেলের।
নার্স ফােনে কথা বলতে বলতে লেবার রুম হতে বের হয়ে, ম্যাডাম, চার নাম্বার ওয়াডের বার নাম্বার বেডের রােগীর এই মাত্র ডেলিবারী হয়েছে। রােগীর অবস্থা ভাল না। অনেক সময় লেগেছে। প্রচুর রক্ত ক্ষরন হয়েছে। সিজার দরকার ছিলো। ছােট অপারেশন করেছি। বি/পি খুব লাে। পালস আছে । ঞ্জান নেই।
ডাক্তার নার্সকে বেশ কিছু ঔষধের কথা বলে দিলো। রক্ত জােগাড় করে লাগিয়ে দিতে বললো। স্যালাইন চলছে ?
জি, ম্যাডাম।
ঠিক আছে। আমি এক্ষুনি আসছি। তুমি ভঁয় পেয়ো না। আল্লা ভরসা।
নার্স দ্রুত ভেতরে প্রবেশ করলো। এবং কিছু রক্তের নমূনা ও ছােথা নিয়ে আবার বের হলো। স্যার এই ঔষধ গুলো দ্রুত নিয়ে আসেন। আর এই ব্লাড টা গ্রুপ চেক করে তিন বেগ রক্ত নিয়ে আসবেন। নিন ধরেরন। তাড়াতাড়ি যান। বাচ্চা আমার কাছে দিন।
নার্স বাচ্চা কােলে নিয়ে ভেতরে চলে যায়।
আলম ঋতুর দিকে একবার তাকিয়ে, না, ঠিক আছে আমি এগুলো নিয়ে আসছি ; তুমি থাক। এক দম মন খারাপ করবে না। নড় চড় করবে না। এখানেই থাকবে। আলম হাসপাতালের দিকে রওনা দেয়।
ব্লাড ব্যাংকে ব্লাড নাই। তয় থাকে কি ? তােরা কেন থাছিস?
স্যার আমরা আছি এই-ই ডিউটি করার লাইগ্যা।
কি ডিউটি করতাছিস ? তা তাে দেখতেই পাইতাছি। এক বেগ রক্ত নাই ?
আমাগো কাম, রক্তের গ্রুপ ম্যাচিং করে রােগীর শরীরে রক্ত প্রয়োগ করা। তয় রক্ত জােগাড় করা তাদের দায়িত্ব।
আর তােগো দায়িত্ব .. ? যাগগা, এখন কি করা লাগবো তা’ বল? রােগী বাঁচান লাগবো।
স্যার আপনে আইছেন বলে কথা, না হইলে এই ভৈারে কেউ ঘুম থেকেই উঠতো না। রক্ত জােগাড় করন যাইবো তয় টাকা লাগবো।
এই কথা, বলবি তাে, কতো লাগবো ?
গ্রুপ বুইজা। কি গ্রুপ ?
গ্রুপ জানি না। এই নমূনা থেকে গ্রুপ বাহির করন লাগবো।
গ্রুপ বের করা আপনার লাইগা ফ্রি। কিন্ত রক্তের দাম কম দিবার পারবেন না।
ঠিক আছে, এই এক হাজার টাকা রাখ। তোরা গ্রুপ ম্যাছিং করে রক্ত জােগাড় কর। ততোক্ষনে আমি ঔষধ গুলো নিয়ে আসি।
ব্লাড ব্যাংকের ওগাে মতো তুমিও বলবা না, স্যার ঔষধ নাই ?
দীর্ঘ ছােথা দেখে স্টোর কিপার ভড়কে যায়। এত্তো ঔষধ ! এত্তো ঔষধ নাই। দুই চারটা দিবার পারুম।
কী ? ঔষধ নাই ? ব্লাড নাই। আছেটা কি ?
সেই প্রশ্ন আপনি আমারে করেন কেন ? স্যার, আমি কি করব ? আমার কিছুই করার নাই।
আপনাকে করুম না †তা কি এই দেওয়ালরে করুম ?
তাই করেন । কিন্তু চিৎকার চেছামেছি কইরেন না।
চেছামেছি করুম না তাে কি করুম ? সরকার কি ? প্রতি বছর বাজেট দেয় না ? সে-টা যায় কই ?
সে-টা আমি কেমনে কমু। আমার ছেয়ে তা আপনার ভাল জানার কথা।
তুই কবি না তাে কে কইবাে ? তােরে বেতন দিয়া রাখছে না ? হাসপাতালের আসল প্রানই ঔষধ। আর সেই ঔষধ নাই ..?
সেই কথা কর্তা বাবুকে জিগান। না হয় ইউনিয়নের নেতাগো জিগান। আপনি আপনার নিজেরে জিগান।
আমি এই হাসপাতালের একজন কর্মকর্তা হয়ে আমার এ- অবস্থা, সাধারন মানূষদের কি দূরগতি তা বলাই বাহুল্য। আমি নতুন আইলাম বলে, নইলে তােগো সবগুলারে ...।
প্রথম প্রথম সবাই এমনই কয়। ধাঁর দেখায়। পরে বােথা হইয়া যায়। এমন হলে তাে ভাল ই হয় । আমরা ও বাঁচি
একটা জরুরী বিভাগে কি থাকন লাগে না লাগে বা কি আছে না আছে, সেটা তুই আমারে শিখাস ?
স্যার আমাগো দেশে অপারেশনের রােগী গাে ঔষধ কিনে অপরেশন থিয়েটারে ডুকতে হয় আর জরুরী বিভাগ ? ভালই কইছেন।
তো - তােরা এটা চালাস কেমনে ?
চলছে, এমনিতেই চলছে। জােড়া তালি দিয়ে।
তো-গো যদি এমন বিপদ হয় তখন কি করবি?
স্যার সত্যি কইছি তেমন কিছুই নাই। আমি দুঃখিত।
ঠিক আছে, তো এখন কি আছে দে, বাকী ঔষধ কি বাহিরের দােকানে পামু।
হ্যা, পাইবেন ।
কত লাগবো ?
সব মিলিয়ে সাড়ে তিন হতে চার হাজার .. ।
ঠিক আছে। কে যাবে ?
ঐ-ই হাবু - ঐ, এই দিকে আয় স্যারকে ঔষধ গুলা আইনা দে,
আলম মানি বেগ হতে টাকা বের করে টাকা গুনে, টেনে টুনে দেখে সর্ব মােট পনেরোশত টাকা হয়। হাবু এই নে, সট পড়লে বাকী রেখে আসবি। আমার নামে।
স্যার আমারে বাকী দিব না।
কেন ?
আগে বাকী আনছি যে, সেই গুলোর টাকা এখনো দেই নাই। মেলা দিন হয়।
দোকানীকে আমার কথা বলবি। সমস্যা হলে আমাকে ফােন দিস। এই নে আমার কার্ড।
স্যার একটা কথা জিগামু ?
কি বলবি ? বল।
স্যার রােগী কি আপনার খুব কাছের কেউ ?
না। কেন ?
কাছের কেউ না হলে এমন করে কেউ ?
দুনিয়াতে সব মানুষই আমার খুব কাছের। কাউকে বাচানোর জন্য কাছের হওয়া লাগে না। মানুষ বা আল্লাহ্র উম্মত হলে চলবে। আর কিছু ?
না, স্যার।
তয়, যা।
স্যার এক বেগ জােগাড় করতে পেরেছি। তাও চড়া দামে।
বলিস কি ? তা ’হলে..?
স্যার তাও অনেক কষ্টে। দিনের বেলা হইলে এক কথা।
তো এখন উপায় ?
আপাতত এ-ই-টা দিয়েই চালান পরে না হয় ..
না- না, অনতন্ত দুই বেগ দরকার, রক্তের গ্রুপ কি ?
স্যার এ’ পজেটিভ।
কস কি ? আমার এ’ পজেটি। আমারটা টান। তাড়াতাড়ি কর।
স্যার আপনি যা’ করলেন ! মাইয়ার বাপেরে কমুনি আপনাকে বেশী করে মিষ্টি খাওয়াতে।
কি ? আর এমন করলাম।
যে-টুকু করলেন তা’ কয়-জনে করে। আরে আপনি কই যান? ভেতরে যাওয়া যাবে না। ঔষধ গুলো আমার হাতে দেন ।
না, শিশুটার লাইগা বড় মায়া লাগলো, ওরে একটু দেখতে পারলে ভাল লাগতো।
ভেতরে ম্যাডাম। সেলাই চলছে। আাপনি বাহিরে অপেক্ষা করুন। দরজা চাপাইয়া নার্স ঔষধ পত্র নিয়ে ভেতরে চলে যায়।
রিতু তােমার বাবার নাম্বার তাে এখনো বন্ধ। খালাকে কি এখন পাওয়া যাবে ?
যাইতে পারে। চেষ্টা করে দেখুন।
আলম ডায়াল করলে রিং টােন বেজে উঠে। যাক বাবা পাওয়া গেল। কিন্তু রিং টােন বাজতেই আছে কিন্তু কেউ রিসিভ করছে না। আবারো ডায়াল করলো কিন্তু এবার ও কােন উত্তর নেই। আবারো ডায়াল করে আবার ও কােন উত্তর নেই। বারবার ডায়াল করে আলম বিরক্ত হয়ে আরে ধূর হিয়া-টিয়া ভাল লাগে ? সে আবারো ডায়াল করে আবারো বাজতে থাকে ” আমার হিয়ার ভেতর লুকিয়ে ছিলে”। একদম শেষ পর্যায়ে অপর দিক থেকে দৃঢ় কণ্ঠে, ”হ্যালো”।
ফোন বন্ধ রাখলে আর সে নাম্বার ব্যাবহার করার দরকার কি ?
সে কৈফিয়ত কি আপনাকে দিতে হবে ?
হাঁ, দিতে হবে।
কে আপনি, আপনি কে ? কেন এতো সাত সকালে কল করে বিরক্ত করছেন?
আমি কে ? সেটা পরে হবে, ফােনটা এতােক্ষন বাজলো রিসিভ করলেন এতো দেরীতে ?
আমার ফােন আমি রিসিভ করব কি করব না সেটা আমি বুঝবো। আপনার এতো মাথা ব্যাথা কেন। মেয়ে মানুষের কণ্ঠ পেলেই .. গদদগ, না ? হুস হারিয়ে ফেলেন ?
মাথা ব্যাথা আপনার, আমার না।
আপনি কি বলতে চান, সরাসরি বলুন নতুবা আমি ফােন রাখবো।
তা - তাে, রাখবেনই। আপনারা কেমন মানুষ ...? একটি ছােট্র বাচ্চা মেয়ে হাসপাতালে রেখে, বাসায় গিয়ে নিশ্চিন্তে নিদ্রা যাপন করেন।
কেন? কি হয়েছে ? আপনি কে ?
কি আর হবে? আপনার বােন গতকল্য গভীর রাত্রে ভোর রাত্রে একটি কন্যা সন্তান প্রসব করেছেন।
ও মাই গড়। বলেন কি ?
কেন বিশ্বাস হয় না ?
হবে না কেন ? আসলে আমি নামাজ পড়তে ছিলাম তাই ফােন রিসিভ করতে দেরী হয়েছে। আমার পরীক্ষা চলছে তাই আমি হাসপাতালে থাকতে পারিনি। আমি দুঃখিত। এখন কি অবস্থা ? কল করার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। তা ছাড়া আপার ডেট তো আরও অনেক দেরিতে ছিল।
অবস্থা ভাল কি মন্দ বলতে পারছি না। তবে শিশুটি কােলে তুলে নিয়ে আমার খুব ভাল লেগেছে।
আপার কি অবস্থা ? উনি এখন কােথায় ?
সে খবর রাখার প্রয়োজন তাে আপনারা বােধ করেন না।
আপনি এখনো রেগে আছেন ? আমি দুঃখিত। সত্যি দুঃখিত।
ঠিক আছে। আপনার বােন লেবার রুমে। কি অবস্থা সঠিক বলতে পারছি না।
ধন্যবাদ, আপনার নামটা জানা হলো না।
আমি আলম, আপনি ?
আমি রোদেলা।
সত্যি আপনার বোনের অবস্থা খুব একটা ভাল না। লেবার রুমের ভেতরে আমি যেতে পারিনি। আপনি আসুন।
আমি এক্ষুনি আসছি।
স্যার, এই যে, নকল বাপ খালি ফােনে কথা বললে চলবে ? লন মাইয়া লন। এখন প্রান বইরা দেখেন। লাগলে চশমা লাগাইয়া দেখেন।
প্রয়োজনে মাইক্রোস্কোপ লাগাইয়া দেখুম । তাতে আপনার কি? দেন আমার কােলে দেন।
স্যার একটু মজা করলাম, মাইন্ড করলেন ?
দূর, পাগল। আমার ভাল লেগেছে। তুমি বেশ মিষ্ট হাসিনি।
নার্স একটু লজ্জা পেল। স্যার না হাঁসলে বাঁচন জাইবো ? এ-ই মেয়ে, এই দিকে আস। সারা রাত তাে ঘুমাওনি ? এখন মায়েরে দেখে , পাশের বেডে ঘুমিয়ে পড়। স্যার আর কিছু ?
না, রােগীনির অবস্থা কেমন ?
ভাল। এখন আশংকা মুক্ত। সেলাই মেলাই সব শেষ। এখন ঞ্জান ফিরলেই হয়। তাে, থাকেন, আমরা ভেতরে যাই।
আচ্চা যান।
আলম রােদেলাকে দেখে অভিভুত। প্রথম দেখাতেই ভাল লাগা। বুকের ভেতর অজানা এক শিহরণ। এরেই কি ক্য় ভালবাসা। আয়েশ করে চা খাওয়াটা আলমের প্রতিদিনের অভ্যাস। তার কথায় সকল চিন্তা ভূলে সকাল বেলায় আয়েশ করে এক কাপ চা না খেলে কি চলে ? এর সাথে যােগ হলো সুন্দরী রমনী। আলম বিমুগ্ধ নয়নে রােদেলার রুপ লাবণ্য অবলোকন করলো। আলমের ভেতরটা আবার কেমন যেন একটা শিহরনে নাড়া দিলো। রােদেলা অপূর্বা সুন্দরী। যার খ্যাতি পাড়া মহল্লা হতে ভার্সিটি পর্যন্ত। ই;রেজী সাহিত্যের তৃতীয় বর্ষের ছ্ত্রাী সে। ছাত্রী হিসেবে যতোটা না খ্যাতি তার ; তার চেয়ে ঢ়ের বেশী তার রুপ ল্যাবণ্যের। মৃষ্ট হাঁসিনি রােদেলা কথা বলে খুব নিচু স্বরে। সে লজ্জিত কণ্ঠে, আমি দুঃখিত । সত্যি আমি দুঃখিত।
ঠিক, আছে । আগে চা টা শেষ করুন।
আপনি না থাকলে যে কি হতো ?
সব উপর ওয়ালার ইচ্ছা । সে কােন্ উছিলায় কার কােন তোরী পার করে দেন, বা কার কোন মনের ভাসনা পুরন করে দেন, তা এক মাত্র উনিই ভাল জানেন। আমার খারাপ লেগেছে এমন একজন রােগী হাসপাতালে রেখে আপনারা ঘুমালেন কি ভাবে? কি ভাবে সবাই চলে গেলেন হাসপাতাল ছেড়ে ?
রাতে দুলাভাই আসার কথা ছিলো। তা ছাড়া বললাম না আপার ডেটটা আরও অনেক পরে ছিল।
তবে, উনি আসেনি কেন ?
মনে হয় অফিস থেকে বের হতে পারেনি।
ফোন তাে খােলা রাখবে ? নাকি ?
ওনার মােবাইল সেটটা খুব একটা ভাল নয়। প্রায় সময়ে চার্জ থাকে না। অল্প ক’দিন পূর্বে আমি একটা মােবাইল সেট গিফট করেছিলাম সেটা চােরে নিয়ে গেছে।
ছোট্র একটি বাচ্ছা মেয়ে কি করতে পারে? সাথে ময়মুরুব্বী কেউ নেই। অসম্ভব? আমি ভাবতেও পারছি না। ওনার কি? আত্নিয় পরিজন কেউ নেই ?
সবই আছে। আপাকে গতকালই ভর্তি করানো হলো। আমি সন্ধা পর্যন্ত ওনার পাশেই ছিলাম।
আপার ডেইটা আরো বেশ কয় দিন পর ছিলো। কােন লক্ষ্যন তাে দেখলাম না। দুলাভাই ছুটির দরখাস্থ দিয়েছে। সকালে ওনার বড় মেয়ে আসবে। আমি আসব বিকেলে। সরকারী হাসপাতাল। সময় মতো বেড পাওয়া দুঃষ্কর । তাই দুলাভাই আপাকে আগে ভাগেই ভর্তি করিয়ে রেখেছেন। কে জানবে ? সে দিনই ওনার প্রসব বেদনা উঠবে...?
সকল প্রশ্নের কােন না কােন উত্তর বা ব্যাখ্যা থাকে ?
আপনি খুব বুদ্ধিমত্তার সাথে কথা বলেন ।
বুদ্ধিমান আর হইলাম কই? তা হলে কি এই রাত বিরাত হাসপাতালে দৈড়া দৈড়ি করি?
মন্দ কি? সরকারী কর্মকর্তা আপনি। ঢাটে বাটে থাকেন, চলেন।
হিংসে লাগে নাকি ? ডাঁটে বাঁটে, তা যদি পারতাম তাে .. ?
অবশ্য সবার দ্বারা সব কিছু হয় না। কিছু মনে না করলে আপনার তাে অনেক টাকা খরছ হয়েছে, কত ? যদি বলতেন আমি দিয়ে দিতাম।
এই - তাে, বাঃ, আপনারা পারেনও । যখন তখন যাকে তাকে ছােট করতে।
ছিঃ ছিঃ। আমি সে অর্থে বলিনি। আপনি তাে আমাদের আত্নিয় স্বজনের মধ্যে কেউ পড়েন না, যে আপনি খরচ বহন করবেন।
আত্নার আত্নিয় হলেই তো আত্নিয়, আপ্ন কেউ হওয়া লাগে নাকি ? তারপরও যদি লাগে আমি পরে চেয়ে নেব।
শুনেছি আপনি সারা রাত না ঘুমিয়ে . ..?
ধূর, বাদ দেন তাে, পাজি নার্সগুলো আপনার আপাকে দেখতে দিলো না।
হো- হাে, বােকা নাকি ? এমন মেয়েলি ব্যাপার গুলো বুঝি জানেন না।
জানবো কােথায় থেকে? আমি কি বিয়ে সাদি করেছি নাকি?
তা’ কি করে বলব। আপনার সাথে তো এই মাত্র আলাপ ।
যাগগে, আপনি চা-টা শেষ করুন। আমি আয়েশ করে আরেখ কাপ চা খাব। আপনি? আমার আবার গরম গরম চা না হলে চলে না।
রোদেলা মিষ্টি করে হেসে উঠলো। না, আমি আর চা খাব না তবে চায়ের মাঝে আয়েশ কি ?
আয়েশ মানে আয়েশ। আসলে আমাদের জীবনে আয়েশ বিষয়টা উঠে গেছে। আয়েশ থেকে অস্থিরতা তথা সিরিয়াসনেছটাই বেশী গুরুত্ব পাচ্ছে। অসুস্থ একটা প্রতিযোগিতা সবখানে।
মন্দ না বললেও আপনার কথায় বেশ যুক্তি আছে। না হেসে তাই পারলাম না।
হাসুন। হাসা, স্বাস্থের জন্য ভাল। প্রান খুলে হাসতে পারে ক’জন।
আলম চা খাচ্ছে। রােদেলা এতোক্ষন পর আলমকে খুটিয়ে খুটিয়ে মুগ্ধ নয়নে দেখছে। টগবগে যুবক। বয়সটা তেমন বুঝা যাচ্ছে না। বেশ হ্যন্ডসাম। চােখে মুখে একটা দুষ্ট হাঁসি লেগে আছে। বেশ লম্বাও বুদ্বিমান বটে।পর্পোকারী তাে নিশ্চিত। সব মিলিয়ে মন্দ না। তাকে নিয়ে আমার এতো বিশ্লেষন কেন ? রােদেলা তা ভেবে নিজে নিজে কিছুটা লজ্জা বােধ করলো। কতো অপার এলো, রােদেলা ফিরিয়ে দিয়েছে ? আর আজ সেইই কিনা অন্যের দিকে চেয়ে থাকলো? ভদ্রলোককে যতোই অবলোকন করছি ততোই তার প্রতি আর্কষণটা বৃদ্বি পাচ্ছে। বারবার তাকাতে ইচ্ছে করছে। কেমন যেন একটা মাদকতা অনুভব করছি। কেন ? এমন হলো ? সব ্্এলোমেলো লাগছে। না এতো ইমোশনাল হলে চলবে না। মনকে যতোই বারন করি না কেন ? সে কােন বাঁধা মানছে না। পাচে কােন বিপদে পড়ি। কিন্তু মন কান বিপদ মানছে না। আবারো রােদেলা লােকটির দিকে তাকিয়ে থাকলো। কেন তাকাতে হচ্ছে তা সে বুজে উঠতে পারছে না। কিন্তু যার প্রতি এতো কৈাতুহল সে নির্বিকার চিত্তে চা গিলছে। এক অপরিচিত লােককে নিয়ে তার এতােটা ভাড়াবাড়ি ঠিক না। তথাপি কি আর্কষনে তাকে দেখছি ? আলমের দ্বিতীয় কাপ চা শেষ। কিন্তু রােদেলা প্রথম কাপও শেষ করতে পারেনি। আলম কিছুটা রােদেলার মুখোমুখি এগিয়ে এসে, আপনার চা ? ঠান্ডা হয়ে এলো। রােদেলার চেতনা ভাঙ্গলে সে বেশ লজ্জা পেয়ে যায়। সে লজ্জিত ও অবনত মস্তকে চা পান করতে লাগলো। আলম আড় চােখে বিষয়টা অবলোকন করলো। সে এই প্রথম লজ্জিতা নারীর মুখোমুখি হলো। সে কিছুটা বিব্রত বােধ করলো। কি করবে সে, বুজে উঠতে পারছে না । যাগগে .. আমার অফিস আছে । উঠতে হবে। লজ্জা পেলে মেয়েদের অনেক ভাল লাগে আলম ভাবে। রোদেলা চা শেষ করে আলমের দিকে তাকিয়ে, যার জন্যে এতো করলেন তাকে দেখে যাবেন না ?
অবশ্যই। তাকে দেখার আগ্রহ ও কৈাতুহল অনেক। তবে এখন নয়। লাঞ্চ আওয়ারে, এক ফাঁকে দেখে যাব।
রোদেলা ভাবে যার জন্যে, মনে এতো আলোড়ন সে সেটা মোটেই গুরুত্ব দিচ্ছে না, একেই বলে নিয়তি। যাক, মনকে শান্ত করে রাখা ছাড়া উপায় কি ?
কোলাহল মুখর সকাল। লােকে লােকারণ্য সমস্থ হাসপাতাল বিশেষ করে বর্হি বিভাগ। কােন বিশেষ দিন নয়। সাধারন কর্ম দিবস। প্রায় প্রতিটি রুমের মুখে রােগীদের দীর্ঘ ভীড়। বেশী ভীড় মেড়িসিন বিশেষঞ্চ ডাঃ হাসান মাহমুদের রুমের গেটে। এ হাসপাতালে প্রায় প্রতিদিনই হাজার হাজার রােগী এসে জড়ো হয় চিকিৎসা সেবা নিতে।এর সাথে বেশ কিছু মেডিক্যাল রিপ্রেজেনটিটিভ এর উপস্থিতিও বেশ লক্ষ্যনীয়। কিছু কিছু ভদ্রলোক আছে যারা লাইন ধরার ভান করলেও লাইন ধরে না। পােষাখে, আষাখে ভদ্র লােক হলেও এরা আসলে ভদ্র লােক নয়। এদের চােখে লােক লজ্জার বালাই বলতে তেমন কিছু নেই। এরা নির্লজ্জ । এরা একটু উকি-জুকি মেরেই সুযোগ বুজে ভেতরে ডুকে পড়ে। মেডিক্যাল রিপ্রেজেনটেটিভরা য়েমন ভদ্রোচিত পােষাক – আষাক পরিধান করে থাকে তেমনি বেশ ভদ্রোচিত আচরনও করে থাকে। তারা বেশ কায়দা করে ফাঁক বুঝে ডাক্তাদের রুমে প্রবেশ করে থাকে। কিছু কিছু ডাক্তার বৈষম্য মূলক আচরন করলেও বেশীর ভাগই ভাল আচরন করে থাকে তাদের সাথে। তেমনি ডাঃ হাসান মাহমুদের যশ ও খ্যাতি বেশ। উনি খুবই ধৈয্য ও যত্নের সাথে রােগীদের দেখা শােনা করেন। ওনার কাছে অন্যান্যদের তুলনায় রোগীরা সব চেয়ে বেশী গুরুত্ব পায়। প্রয়োজনের তুলনায় অতিরিক্ত কােন সােথা উনি কাউকে ধরান না। অনেক রােগী আছে সােথা না দিলো বলে, মন খারাপ করে থাকেন। তেমনি এক রােগী বকতে বকতে রুম হতে বের হলো, দেখ তাে হাসমত, এতো দূর হতে বুকে ব্যাথা নিয়া আইলাম। ডাক্তার সাব শুধু দুইড়া ঔষধ লিখে দিলো। কােন টেস্ট পেস্ট কিছু দিলো না। এতে কি রােগ বালা হয়। হাসমত তার হাত হতে চিলিপটা নিয়ে বিঞ্জের মতো বেশ খানিক ক্ষণ দেখলো। দূর বােকা, ”সেকলো” দিলো যে, তাের গ্যাসটিকের জন্য তাের বুকে ব্যাথা তাই তােকে সেকলো দিলো যে। তুই এই ঔষধ খা দেখবি তাের বুকের ব্যাথা সেরে যাবে।
যাবে ?
হাঁ যাবে। এখন যা।
দীর্ঘ লাইন।
অন্য দিনের তুলনায় আজ রােগীর চাপটা একটু বেশী। পুরো অউটডোরে এতো বড় লাইন কােন রুমের সামনে নেই।
লাইন দীর্ঘ হলেও হাসমত বেজায় খুশী। তার স্যারের যশ-খ্যাতিতে সে মুগ্ধ । তার স্যারের চেয়ে বড় বড় ডিগ্রীধারীদের রুমের সামনে এতো বড় লাইন পড়ে না। রােগীদের আস্থা ও বিশ্বাস ভাল থাকায় ডাঃ হাসান মাহমুদের রুমের সামনে প্রতিদিন দীর্গ লাইন পড়ে। সেই লাইন সামলাতে বেশ হিমসিম খেতে হয় হাসমতকে। এতে তার খুব একটা ক্লান্তি বা বিরক্তি কােনটাই তেমন একটা নেই। সে বেশ দক্ষতা ও সাচ্ছন্দের সাথে এ দায়িত্ব পালন করে থাকেন। লাইন দীর্ঘ হাসমতের আয় রুজিও দীর্ঘ হয়। তাই সে বেজায় খুশী। লাইনে দাড়ানো বাদে দুজন লােক রুমের মুখে বার বার উকি ঝুকি মারতাছে। বার বার এমন করাতে হাসমত তাদের লাইনে দাড়ানোর কথা বলে। এর পরও তারা লাইনে না দাড়িয়ে আবারও রুমের মুখে উকি ঝুকি মারলে হাসমত একটু ধমকের সুরে, বলছি না, লাইন ছাড়া ভেতরে প্রবেশ সম্পূর্ন নিশেষধ।তারা একজন এগিয়ে এসে হাসমতের হাত চেপে ধরে ভাই আমাগো অনেক বিপদ। আমরা অনেক দূর হতে আইছি। আমাগো রুগীর অবস্থা খুব খারাপ। আজই আবার ফেরত যাওন লাগবে। ভাই অনেক দূর, ভাই মেলা দূর
হবে না। বললাম না হবে না। এতোগুলো লােক, কি, না ? কষ্ট করে লাইন ধরে দাড়িয়ে আছে? দেখছেন না ? হাত ছাড়ূ–ন, হাত ছাড়ূ–ন। প্রথম জন হাত ছেড়ে দিলে দ্বিতীয় জন এসে এবার হাসমতের হাত ছেপে ধরে তার ভেতর বিশ টাকার একটি নােট গুজে দিয়ে বলে, ভাই আমাদের খুব বিপদ। আমাদের বাছান। অনেক দূর থেকে আইছি,
হাসমত চট করে টাকাটা পকেটে গুজে কিছুটা উচ্ছ স্বরে বলতে লাগলো, বিপদ? খুব বিপদ? বিপদ তাে মানুষেরই হয়, মানুষেরই আবার সেই বিপদ আপদ দেখতে হয়। তা-ই-না বলে, সে লাইনে দাড়ানো লােকগুলোর মুখের দিকে তাকায়।লােকদের চােখে মুখে সম্মতির অভাস দেখতে পেয়ে, যান, দ্রুত রােগী নিয়ে আসেন। তয় ভেতরের রােগী বের হলে তারপর ভেতরে যেতে পারবেন।
দীর্ঘ লাইন ভেতরে ইউনিয়ন নেতা সাথে চার-পাঁচজন।সহজে বের হচ্ছে না। সাধারন রােগীদের মাঝে বেশ বিরক্তি ও অসন্তোষ। মাঝ বয়সী এক লোক লাইনের মাঝামাঝি হতে বের হয়ে এসে রুমে প্রবেশ করতে চাইলে হাসমত বাধা দিয়ে, বলে ধৈর্য ধারন করুন, সবাইকে স্যার দেখবেন।
কি ধৈর্য্য ধারন করব? দু’ঘণ্টা ধরে লাইনে দাড়িয়ে আছি। আমাদের শ্রম-ঘামের কি কােন মূল্য নেই ? লাইনের সবাই একই সুরে চেছিয়ে উঠে।
আপনারা একটু ধৈর্য ধারন করে অপেক্ষা করুন। আমাদের স্যার খুবই ভাল মানুষ। উনি কোন রােগী থাকা অবস্থায় চেম্বার হতে উঠেন না। উনি সবাইকে দেখবেন।
কি-রে হাসমত কি দেখবেন? এতো হট্রগোল কিসের?
আসামুআলাইকুম স্যার। স্যার আপনি ?
হাঁ- আমি, দরজা খােল।
ভেতরে ইউনিয়ন নেতা।
নেতা-পেতা আমি দেখছি। তুই দরজা খােল।
আলম ভেতরে প্রবেশ করেই, আসামুআলাইকুম –ডাক্তার সাহেব। কেমন আছেন ?
ওয়ালাইকুম আর সালাম। আরে আলম সাহেব যে, বসুন –--বসুন, ভাল, আপনি কেমন আছেন?
ভাল। জানতাম আপনার বাস্থতা রােগী নিয়েই বেশী। এখন দেখছি নেতা নিয়েও . । যাগগে। কেমন চলছে?
ভাল, ভাল বলে ডাক্তার ইউনিয়ন নেতাদের দৃষ্টি আর্কষন করলে, ইউনিয়ন নেতা আজ তা’হলে উঠি, উঠি বলে উঠতে উঠতে আড় চােখে আলমের দিকে এক ফলক বাঁকা দৃষ্টি নিক্ষেপ করে চেয়ার ছেড়ে উঠে পড়ে।
ডাক্তার কিছুটা বিরক্ত কণ্ঠে জি, আসুন। তারা বের হলে আলম চেয়ার টেনে ডাক্তারের মুখোমুখি বসে, হাসান সাহেব, ও আমার খুবই নিকট আত্নিয়।
আপনি না আসলেও পারতেন।
সবার ক্ষেত্রে কি ?..
ঠিক আছে। আপনি বসুন। কি সমস্যা? বলুন, খুলে বলুন। কিছুই লুকোবেন না। ডাক্তাদের নিকট সব খুলে না বললে রােগ সহজে যায় না। সব খুলে বলবেন।
স্যার বুকে-পিঠে ব্যাথা। শুধু কামড়ায়।
কতো দিন ধরে?
মেলা দিন ধইরা।
মেলা দিন বলতে কত বছর?
বছর পাঁচেক হবে।
এতো দিন আসেননি কেন?
গগণ বাবুর সিরাপ খেতাম।
কি সিরাপ খেতেন ?
এ্যন্টাসিড।
আপনারা শেষ পর্যায়ে ডাক্তারের কাছে আসেন। শুয়ে পড়ূ–ন। আমি দেখছি।
ডাক্তার রােগীর পেট এবং বুকের মাঝখানটায় দু’হাত দিয়ে চাপ দিয়ে দিয়ে জিঘ্যেস করে, ব্যাথা লাগে?
স্যার এই দিকে কম কিন্তু পিঠের দিকে বেশী লাগে। ডাক্তার রােগীর পেটে কিছুটা টিপে টুপে, উপুড় হয়ে শােন তাে দেখি।
রোগী উপুড় হয়ে শুইলে ডাক্তার রােগীর মেরুদন্ডে বিভিন্ন জায়গায় দু"হাত দিয়ে চাপ দেয় এবং জিঘ্যস করে এখানে ব্যাথা? এখানে ব্যাথা ? দু’বার পর রােগী বললো, হাঁ স্যার এখানে ব্যাথা। ;;;;; দিয়ে ডাক্তার চেপে চেপে রােগীর পিঠের বিভিন্ন অংশে দেখলো।
আপনি কি? কােন একসিডেন্ট করেছেন ?
না। তবে অনেক আগে একবার গাছ থেকে পড়ে গিয়েছিলাম।
অনেক আগে বলতে ?
ছয়/সাত বছর হবে।
ঠিক আছে উঠে পড়ুন। আলম সাহেব ওনার গ্যাসটিকের সমস্যা আর সম্ভবত মেরুদন্ডে কিছু একটা আঘাত আছে। আপনি পারলে আজই ওনাকে একজন অর্থোপেডিক দেখান। আর এই ঔষধ গুলো নিয়মিত খেতে বলবেন। অবশ্যই আজই একজন অর্থোপেডিক দেখান, দীর্ঘ দিনের পুরনো ব্যাথা !
বেলা পড়ে এলো। দীর্ঘ লাইনও ছােট হয়ে এলো। দু’চারজন রােগী বাকী। হাসমতের চােখে মুখে তাড়া। এমন সময় আলম এসে হাজির, স্যার আবার কি সমস্যা?
দেখ দেখি – এই অর্থোপেডিকের বাচ্চা আমারে কি ছােথা ধরাইলো। কত বড় ছােথা।
বললাম রােগী আমার খুব কাছের লােক। এক্সরেটা কােন রকম এখানে করালাম। বাকী দশ/বারটা টেস্ট বাহিরে করাতে হবে। তাও তার মনোনিত সেন্টারে। সেকলো দেখে এন্ডোসকপি দিলো। বল দেখি, বেটা কি আমারে চধূ পাইলো? আমি কি কিছু বুজি না। আবার কার্ডটা ধরাইয়া দিলো। এর পর আসলে চেম্বারে যেতে। চেম্বারে যেতে পারলে রােগী হাসপালে আসে? বেটা কি আমারে চিনে নাই?
মনে হয় তাই। আপনারে ভালভাবে চিনলে বা জানলে এমন করতো না। নূতন তাে, কয়দিন হয় আইলো।
বলে দিস, না হয় তারে এমন চিনান চিনামু বাপদাদার নাম বুইল্লা যাইবো।
ঠিক আছে স্যার, আমি ওনাকে বিষয়টা ভাল ভাবে বুঝিয়ে বলে দিবো স্যার। এমন সময় কােনার লম্বা টুলের এক কােনে মন খারাপ করে বসে আছে এক মেডিক্যাল রিপ্রেজেনটিটিভ ...। আলম সেদিকে এগিয়ে গিয়ে।
কি সমস্যা ছোট ভাই, মন খারাপ কেন ?
না স্যার এমনি।
তবে তােমার সঙ্গী সাথী সবাই চলে গেলো তুমি একা বসে ? বাড়ী যাবা না? বেলা পড়ে এলো।
বাড়ী !! আমাদের মেসে থাকা দায় সেখানে বাড়ী।
সেই -ই, তাে সােনার চেয়ে দামী সুখের নীড়। আমাদের জন্য এর চেয়ে বেশী আর দরকার কি ? সেখানে যাবে।আসলে তোমার আসল ঘটনাটা কি বলো তাে দেখি।
স্যার আপনি খুব ভাল মানুষ আমি জানি। কিন্তু আমি চাই না আমার কারনে অনর্থক আপনি মনে কষ্ট পান। তাছাড়া এ হাসপাতাল নির্ভর করে কাজ করে আমাকে জীবিকা নির্বাহ করতে হয় ।
আমরা সবাই তাে কােন না কােন ভাবে এ হাসপাতালের সাথে জড়িত। আমাদের ভাল মন্দ যদি আমরা এ হাসপাতাল থেকে আদায় করতে না পারি তা হলে এখানে আছি কেন? তুমি আসল ঘটনাটা বলো।
স্যার আমার মা আজ অনেক দিন ধরে অসুস্থ। আমার আয়ে কুলায় না। বাবা নেই । ভাই বােন ছােট। মায়ের কয়েকটা টেষ্ট করাতে হয় প্রতি মাসে। অনেক বেশী দাম নেয় ল্যাব ওয়ালারা। কিন্তু কমে অন্য কােথায়ও এই টেষ্ট করানোর সুযোগ নেই। ওরা যা ধরে তাই। আবীর স্য্যার সেখানকার কনসালটেন্ট।উনাকে তাই বললাম, স্যার একটু ফিপটি পার্সেন্ট ডিসকাউন্ট লিখে দিন। উনি টুয়েন্টি পাইব পাসেন্ট এর উপর দিবেন না। আমি একটু চাপা চাপি করলে তিরস্কার করে তাড়িয়ে দেয়।
একটা কথা মনে রাখবা,ছােট ভাই---
”জীবনটা একটা ছােট্র কম্বল,
উপরে টানলে নীচে খালি
নীচে টানলে উপরে খালি।
ডানে টানলে বামে খলি
বামে টানলে ডানে খালি””
এরি মাঝেই গড়াগড়ি করেই আমাদের বাঁচতে হবে।
স্যার, আমরা তাে ভাল করেই জানি ল্যাবগুলো কি পরিমাণ অতিরিক্ত মূনাফা অর্জন করে। আমরা এ লাইনের লোক হয়ে ..।
বাদ দাও। আমি দেখছি কি করা যায়। তুমি শুধু আমার সাথে আস। দেখ,
খাবারটা কেমন ?
কেনটিনের খাবার আবার কেমন হবে ? তাছাড়া পড়ন্ত বিকেলের খাবার, যেমন রেধেছে তেমন।
এটা কি উত্তর হলো? আমি বলছিলাম কি? কেনটিনের খাবার খেতে অসুবিধা হচ্ছে না তাে ?
অসুবিধা হবে কেন? মানুষ খায় না? তাছাড়া আমার কেনটিনে খাবার খেয়ে, ভাল অভ্যাস আছে। খাবারটা খুব একটা ভাল না হলেও অমৃত লেগেছে।
আলম †হা-হো-হো করে হেসে উটলো। এ আবার কেমন কথা।
ইহাই সত্য কথা। অনেক পরিশ্রমের পর এবং দীর্ঘক্ষন অপেক্ষার পর যে কােন খাবারই অমৃত লাগে। যদিও বাহিরের খাবার আমার খুব একটা পছন্দ নয়। আপনি জাের করলেন তাই খেলাম। আপনার জন্য মিতুর হাতের রান্না করা খাবার খেতে পারলাম না। সবাই খাওয়ার পরও বেশ খাবার ছিলো। ওর হাতের রান্না দারুন। মিষ্টিটাও খেতে দিলেন না, খেলেনও না, এ এক অদ্ভুদ আচরণ।
মিতুটা কে?
আপার বড় মেয়ে।
দেখলাম না যে।
ওর, এসএস সি পরীক্ষা চলছে।তাই সকাল সকাল খাবার দিয়ে, মা-কে দেখে পরীক্ষার হলে চলে গিয়েছে।
ইহা ওর জন্য নিতান্তই নিদারুন কষ্টের বিষয়। আপনার দুলাভাই অতি ভদ্র মানুষ। অতি ভদ্র মানুষ আজকের যুগে অচল।
আজকের যুগে ওনার মতো মানুষ হয় না। দুলাভাই খুবই ভাল মানুষ। এতো অল্প সময়ের পরিচয়ে বা কাউকে ভালভাবে না জেনে কথা বলা উচিত নয়।
দুলা ভাইরা বরাবর খুবই ভাল মানুষ হয়।
হেয়ালী করছেন না? না ঠাটটা করছেন?
তুমি রেগে গেলে?
রাগার মতো কথা বলবেন আর রাগবোনা। শুধু আপনি বলে অন্য কেউ হলে কষে একটা চড় মারতাম।
একটু বাজিয়ে দেখলাম।
আমি ঢােলও না ঢুগঢুগিও না, যে বাজিয়ে দেখবেন। আমি আত্নমারজদাশীল একজন নারী।
রেগে গেলে তােমাকে দারুন লাগে। বিষয়টি আমি ভাল উপভোগ করলাম।
পটানোর কৈাশল পুরুষরা ভালই জানে। আপনিও এর ব্যতিক্রম কিছু নন। তাছাড়া, কেন আমি আপনার মনো আনন্দের খোরাখ হব?
সেটা জানি না। কিন্তু এমন কিছু আমার জীবনে ঘটেনি।
কি ভাবে বিশ্বাস করবো?
সেটাও ঠিক। কিন্তু এমন বিশ্বাস নিয়েই জীবনে চলতে হয়। বাঁচতে হয়। আর আপনার বিশ্বাস করার প্রয়োজনটা কি?
চমৎকার বললেন। আসলেই আপনি বুদ্বিমান।
ভাল বললে না। রোগীর ঞ্জান ফিরেছে কখন ?
ঘন্টা খানেক হবে।
ওনার চােখে মুখে বেশ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ পেয়েছে। দেখেই বুঝা গেলো উনি একজন সহজ সরল প্রকৃতির মানবী। কিছু একটা বলতে যেয়েও পারলো না। তােমাদের পারিবারিক বৈষম্যটা বেশ লক্ষ্যনীয়।
বুঝলাম না।
এই ধর রােগীর পাশে কােন ময়মুরুব্বী নেই। অর্থনৈতিক পার্থক্য তাে অনেক। আই মিন আপনার মা বাবা কেউ কি নেই ?
এই সব প্রশ্নের দীর্ঘ উত্তর। আরেক দিন সময় করে দেব। শুধু এটুকুই জানুন ওনাদের বিয়েটা খুবই ভিন্ন প্রকৃতির ছিল।
ও- আছ্ছা। কখন যে আপনি থেকে তুমিতে নামলাম টেরই তাে পেলাম না।
সমস্যা নেই। আমি আবারো বলছি আপনার প্রতি যে কি ভাষায় কৃতজ্ঞতা জানাব সেই ভাষা আমার জানা নেই।
সে-ই একই ভদ্রতা। আমি এ হাসপাতালের একজন কর্মকর্তা হিসেবে যে কােন রােগীর ভাল মন্দ দেখার দায়িত্ব আমার।
আপনি তাে ম্যানেজমেন্টের লােক। তাছাড়া আপনি যা করেছেন তা দায়িত্ব বা কর্তব্য কােনটির আওতায় পড়ে না। ইহা নিছকই আপনার মহানুভবতার পরিচয়।
ম্যানেজমেন্টই তাে করলাম।
রোদেলা মূচকি হাঁসি হাসলো।
আলমের চােখ সে হাঁসি এড়ালো না।
আলমও মূচকি হেঁসে চা, না কফি।
যেই না চা তার উপর আবার কফি?
কফি পাওয় যায় এই ঢ়ের। চা- ই, বলি।
ব্পলুন, আপনি চলে যাওয়ার পর, আপাকে দেখে হাটতে হাটতে ডাক্তারদের ক্যাফেতে ডুকে পড়ি। সমস্থ রুম ধূয়ায় আচ্ছন্ন।
প্রচন্ড সাের গােল। ডাক্তারী পড়ূয়া ছাত্ররা যে এতো সিগারেট টানতে পারে আমার জানা ছিলো না। এতো সোর-গোলের মাঝে তারা যে কি ভাবে পরস্পর কথা বলে তা আমার বােধগম্য নয়। ভবিষ্যতে এরা যে রোগীদের কি সেবা যত্ন দিবে বলা মুসকিল।
সমস্থ হাসপাতালটাই তাে একটা বড় রােগী। এরই চিকিৎসা দরকার আগে। মস্থ বড় মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল বটে কিন্তু অপরিছ্চন্ন। মাথাভারী প্রশাসন। নিয়ম শৃঙ্খলার বড় অভাব। যন্ত্রপাতি আছে তাে ডাক্তার নেই। ডাক্তার আছে তাে যন্ত্রপাতি বিকল। যন্ত্রপাতি আছে তো ঔষদ নেই। ওয়ার্ড, বেড, মেঝে কাথায়ও রােগীর কমতি নেই। কিন্তু সেবার মানের কথা বলাই বাহুল্য। রাত গভীর হলেই বােঝা যায় এতাে হাসপাতাল বা নিরাপদ স্থান নয় এ যেন এক ভয়ংকর প্রকান্ড মৃত্যুপুরী। তথাপি মানুষ এখানে আসে নির্ভরতার জন্য। কেউ হাঁসতে হাঁসতে বিদায় হয়। কেউ কাঁদতে কাঁদতে। আমার কমিটমেন্ট একটাই এ অসহায় মানুষগুলোকে কিছুটা নির্ভরতা দেওয়া, বিশ্বাস দেওয়া। আসস্থ করা।
রোদেলা আলমের দৃঢ়তা ও সাহস দেখে অভিভূত ! আজকাল এমন পরোপুকারী লােকের সংখ্যা নগণ্য। রােদেলার আলমের প্রতি কৈাতুহলটা আরো বেশী বৃদ্বি পায়। মাত্র কয়েক ঘন্টার পরিচয় তারি মাঝে বেশ নির্ভরতা ও বিশ্বাস পেয়ে গেলো সে আলমের মাঝে। মনে হয় আলম বিশ্বাস করার মতো মানুষ। যার সাথে শেয়ার করা যায় অনেক কিছু। আলম সমন্ধে জানার আগ্রহ তার আরো বেশী বৃদ্বি পায়। যতো সময় গড়ায় ততো তার ভেতর আলম সমন্ধে জানার চঞ্চলতা বৃব্দি পায়। সে সরাসরি আলমকে প্রশ্ন করে বসলো যদি কিছ মনে না করেন আমার একটা প্রশ্নের উত্তর দিবেন?
কেন নয়?
ব্যক্তিগত তাই।
সমস্যা নেই, নির্ধিদায় বলতে পার।
আপনার, আইমিন তােমার কি কােন অতীত তথা কমিটমেন্ট আছে?
আলম হতচকিত হয়ে উঠলো। সে এমন প্রশ্নের জন্য মােটেই প্রস্থুত ছিলো না। এতো সামান্য সময়ের পরিচয়ের মাঝে এমন অপূর্বা সুন্দরী এমন প্রশ্ন করবে সে সেটা ভাবতেও পারেনি। সে কিছুটা বিব্রত ও লজ্জা বােধ করলো, সে নিজেকে কিচুটা সামলে নিয়ে, যাগগে, আসলে আমার কােন কমিটমেন্ট নেই। অতীত বলতে বন্ধুর ছােট বােন একটু পছন্দ করতো তাও বিয়ে হয়ে গেছে মেলা দিন হয়। আমার অতীত বর্তমান সকল কিছু আমার ’মা’ যিনি একজন স্কুল শিক্ষিকা যার সকল চিন্তা চেতনা আমাকে ঘিরে। ছোট্র বােনটার অল্প বয়সেই বিয়ে হয়ে গেছে। এমন সময় চা আসে তারা দু’জন চুপচাপ চা পান করতে থাকে। পড়ন্ত বিকেল, রােদেলার কিছুটা ক্লান্তি লাগছিলো চা পানে সে ক্লান্তি দূর হলো। সত্যি চা মানুষকে সতেজ করে।
বাবা বেবিটার কি নাম রাখবা ?
কেন রে ?
ও মা , নাম রাখতে হবে না।
রিতু মা, তোমার মন যা চায় তাই রাখ।
সত্যি.. ? আজানি রাখি।
ঋতু , কেন এমন নাম রাখবি?
মিতু আপু, ও আজানের সময় হয়েছে তাে তাই।
না। তুই অন্য কিছু ভাব।
আচ্ছা ভেবে, পরে রাখব। কিন্তু তােমরা রাখতে পারবে না।
ঠিক আছে মা, তাের যেমন পছন্দ, কিন্তু তােদের নামের সাথে মিল রেখে, রাখিস।
আমাদের নামের সাথে মিল রেখে ডাক নাম রাখব কিন্তু আসল নাম তাে তােমাকে রাখতে হবে।
সেটা পরে দেখা যাবে।
আচ্ছা বাবা ছেলে জম্মালে আজান দেয়, মেয়ে জম্মালে কেন ? আজান দেওয়া হয়না।
এটা ধর্মীয় নিয়ম। ধর্মীয় নিয়ম নিয়ে কথা বলতে নেই।
বাবা তুমি বেবীকে আমার কােলে দাও, আমি তাকে একটুও কােলে নিতে পারিনি।
আচ্ছা নে, সাবধানে রিতু।
বাবা, তুমি একটা গান ধরো না।
গান! এই হাসপাতালে?
হাসপাতালে সমস্যাা কি? এখানে তাে কেউ নেই আমরা ছাড়া।
তাও, মা।
তুমি কতো ভাল গান গাও। কি সুন্দর সন্ধা !
হাঁসালিরে মা। ভাল গায়ক এখন সিটি করপোরেশনের কেরানী।
মনে হয় আপনি খুশী হন নাই।
না-না, কি যে বলো? আলহামদুলিল্লা। আমি আমার মেয়েদের নিয়ে বেজায় খুশী। এমনিতে মনটা খারাপ। তােমার এমন বিপদের সময় আমি পাশে থাকতে পারলাম না। প্রধান মন্ত্রী আসবে বলে জরুরী ভিত্তিতে এই এলাকার পরিচ্ছন্নতার কাজ করানাে হলো। রাত বিরাত সবাই কাজ করলো। সবার ছুটি বাতিল করা হলো। কেউরই অফিস হতে বের হবার সুযোগ ছিলো না।
বলা লাগে? আপনি সুযোগ পেলে, না আসতেন, নাকি ?
তারপরও বিষয়টা কেমন হলো। আলম সাহেব কি ভাবলো। তিনি অতি ভাল মানুষ। ওনার মতো মানুষই হয় না। কতো সাধলাম। এক কাপ চাও খেলো না।
লেবার রুমটার পরিবেশ খুবই নীরিবিলি। রিতুরা ছাড়া আর অন্য কােন রােগী নেই রুমে। দু’ দিন হয় তারা এখানে । নার্স তাদের ওয়ার্ডে যেতে বলেছে। তারা যায়নি । এখানেই তাদের ভাল লাগে। মিতু মা, বাসায় যাবা না?
না, বাবা। কাল আমার পরীক্ষা নাই। আজ আমি মায়ের সাথেই থাকি।
আচ্ছা থাক।
বাবা এতো সুনন্দর সন্ধা। আমরা ছাড়া আর কেউ নেই। তুমি একটা গান ধরো। খুব ভাল লাগবে।
মুড আসছে না। মিতু মা, মনটা খুব একটা ভালো না-রে।
আসবে, মন খারাপ করতে নেই, বাবা । তুমি শুরু করো। প্লিজ বাবা।
এ সময়ে গান করা যায় ? আচ্ছা দেখছি..
চাঁন্দের হাটে চাঁন্দের বাতি
সুখের হাটে সুখ ।
মধ্য রাতে স্বপন আসে
দেখি না তার মুখ।।
সুরের মূর্ছনায় সমস্থ লেবার রুম আনন্দে মেতে উঠলো। সবাই গুনগুনিয়ে গেয়ে উঠলো। চাঁন্দের হাটে .....
চমৎকার হয়েছে বাবা। খুব ভাল লেগেছে। অনেক দিন পর সময়টা দারুন কাটলো।
হেঁসে গেয়ে বাকী জীবনটা এভাবে পার করতে পারলেই হয়।
বাবা! আবার তােমার মন খারাপ ?
তোরা আমাকে এতো বুজিস ভালবাসিস এর চেয়ে বেশী আনন্দের আর কি? হতে পারে আমার জন্য? একটা কথা কি? নিয়তিকে মেনে সন্তষ্ট থাকতে পারলেই হয়।
পড়ন্ত বিকেল। আলম রােদেলাকে কয়েকটি বেলী ফুলেরর মালা উপহার দেয়। রােদেলা আলমকে ধন্যবাদ দিয়ে ভাবে এ’কদিনে আলম বার বার এই বেলী ফুলটাই তাকে উপহার হিসেবে দেয় কিন্তু অন্য ফুলও তাে দিতে পারতো ? বা অন্য কিছু কিন্তু ইহা কেন বারবার। বিষয়টা তার বােধগম্য হয় না। যাক সেটা তার বিষয় তা নিয়ে আমার মাথা ব্যাথা হওয়া উচিত নয়। আলম রােদেলা পাশাপাশি ছাত্রাবাসের সামনের রাস্থা ধরে হাটতেছে।হাটতে হাটতে তারা দু’জন রাস্থার শেষ মাথার পুকুর পাড়ে এসে বসে। বেশ বড় সড় পুকুর। পানি খুব স্বচ্চ। কে বলবে? এ স্বচ্চ পানির ভেতর মিশে আছে আলমের বাবার লাশ? আলম সে পানিতে তার বাবার দেহের গন্ধ শূকে। বারবার পানির দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করে প্রশ্ন ছােড়ে কি দােষ ছিলো তার বাবার? কেন মানুষ এতো নিষ্ঠুর হয়। গাছের ছায়া এসে পুকুরের জলে পড়েছে। পানির ভেতর গাছ গুলোর প্রতিচ্ছবি দেখতে ভারী সুন্দর লাগে। আলম চুপচাপ, রোদেলাও চুপচাপ। রােদেলা মনে মনে ভাবে আলম এতো নিশ্বুপ থাকে কি করে। এতো সুন্দর বিকেল, সুন্দরী রমনী পাশে, তাতে তার কােন দৃষ্টিপাতই নেই। অদ্ভুত প্রকৃতির এই ভদ্র লােক। বেশীর ভাগ সময়েই কেমন যেন উদাস। কবিদের মতো।
চা, খাবে ।
হু।
আর কিছু ?
না। শুধু চা হলে চলবে। আপাকে দু’চার দিনের মধ্যেই রিলিজ দিয়ে দেবে। কিন্ত বাবার শরীরটা তেমন একটা ভাল নয়। বড় ভাইয়া ফােন করে আপার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছে। উনি চুপে চুপে আমার মাধ্যমে আপার জন্য কিছু টাকাও পাঠিয়েছে।
তোমরা ক’ ভাই বােন ? যদিও বিষয়টা ব্যক্তিগত।
সমস্যা নেই। আমরা দু ভাই, তিন বােন। আপা সবার বড়। তার পর ভাইয়া তারপর আমি। ভাইয়া অর্নাস শেষ করেই স্কলারশিপ নিয়ে বিদেশ চলে যায়। পড়াশোনার ফাঁকে ফাঁকে সে চাকুরী করে অর্থ উপাজন করে। মাষ্টাস শেষ করে সে সেখানকার নাগরিকত্ব নেয়। ফলে ভাল চাকুরি পেতে তার আর সমস্যা হয়নি। ভাইয়া বিদেশ যাওয়ার পর আমাদের পরিবারে অর্থনৈতিক স্বচ্ছলতা আসে। বাবা সরকারী ব্যংকের কর্মকর্তা। সারা জীবন সংগ্রামী জীবন যাপন করেছেন। কােন অন্যায়ের সাথে কখনো আপোষ করেনি। আমরা আগে সরকারী কােয়াটারে থাকতাম। এখন ভাইয়ার কেনা ফ্লাটে উঠেছি। আমার বিয়ে না হওয়া পর্যন্ত ভাইয়া দেশে আসবে না এটা তার ঘােষনা। অর্নাস শেষেই বাবা আমায় বিয়ে দিয়ে দেবেন বলেছে। বাবা উপরে শক্ত থাকলেও ভেতরটা তার বেশ নরম। আপার জন্য বাবা খুব বড় আঘাত পেয়েছেন। সেই থেকে ওনার শারীরিক অবস্থার অবনতি। টিকে আছে শুধু ঔষধ আর মায়ের সেবা যত্নের উপর।
বড় জামেলার কথা। তােমাদের পরিবারের অনুশাসনের সাথে তােমার আপার ..
সে কথাই বলছিলাম। আপা খুবই সহজ সরল প্রকুতির মেয়ে। সবে কলেজ জীবনে পা রাখলো। প্রথম বর্ষেই আপা এক ছেলের প্রেমে পড়ে যায়। তাদের সম্পর্ক খুব বেশীদুর না এগুতেই আপার সরলতার সুযোগে সে আপাকে গর্ভবতী করে ফেলে। আপা তাকে বিয়ের চাপ দিলে সে সর্ম্পক অস্বীকার করে আত্নগোপন করে। পরে জানাজানি হয় সে ছেলে হিন্দু ছিলো এবং ভারতে চলে যায়। আপা তখন পাঁচ মাসের অন্তসত্তা। পাড়া মহল্লা সবখানে ছিঃ ছিঃ রব পড়ে যায়। আপা সেই ছেলের খােজে বহু জাগায় ধর্না দিয়েও নিরাশ হয়ে ফিরে আসে। কােথায়ও তার কােন হদিস পাওয় যায়নি। পরে সত্যি সত্যি যখন তাকে পাওয়া গেলো না আপা তখন ভীষন মূষড়ে পড়লেন । তার খাওয়া দাওয়া বন্ধ হয়ে যায়। বাবা আপার সাথে কথাবার্তা বলা বন্ধ করে দেন। বাবা রীতিমত অসুস্থ হয়ে পড়েন। মা কান্নাকাটি করলেও বাবার উপর কথা বলার সাহস ওনার কখনো হয়নি। আপার শারীরিক অবস্থার আরো অবনতি হলে আপাকে হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয় এবং সেখানে সে উম্মাদের মতো আচরন করতে লাগলো। আপার অবস্থা দিনকে দিন অবনতির দিকে চলে যায়। বাবা , মা, আপার খােজ খবর নেওয়া বন্ধ করে দেয়। আমরা তখন খুবই ছােট। দুলা ভাই তখন বুয়েটের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। উনি আমার বড় মামার সেজো ছেলে। ওনার নাম আরিফ। আমাদের বাসায় ওনার যাতায়াত তেমন একটা ছিলো না। আপার প্রতিও ওনার তেমন কােন আগ্রহ ছিলো না। ছোট মামার মাধ্যমে জানলেন আপার এ দূর অবস্থার কথা। ছােট্র মামাই একমাত্র আপার কিছুটা খােজ খবর রাখতেন ও দেখাশোনা করতেন । মা ছোট মামার মাধ্যমে আপার খোঁজ খবর রাখতেন আর নিরবে নিভৃত্যে কাঁদতেন। আপার যখন চরম খারাপ অবস্থা তখন দুলাভাই আপার পাশে গিয়ে দাড়ায়। আপা বেশ ক’বার আত্নহত্যার চেষ্টা চালায়। দুলাভাই তাকে ঠেকায়। আপা তখন সাত কি আট মাসের অন্তসত্তা । সে অবস্থায় দুলাভাই আপাকে হাসপাতালের মধ্যেই বিয়ে করে। সমস্ত হাসপাতালে হাঁসাহাসি পড়ে যায়। মিতু সেই মেয়ে। ছােট মামা ছাড়া দু পরিবারের সবাই তাদের সাথে সকল সর্ম্পক ছিন্ন করলাে। দুলাভাই টিউশনি করে কােন মতে সংসার চালায়। এ ভাবে ক’ দিন চলে ? তখন তাদের অর্থনৈতিক দুর অবস্থা চরমে। দুলাভাইর পড়াশোনা বন্ধ হয়ে যায়। ছােট মামা অনেক চেষ্টা তদবির করে দুলাভাইকে সিটি করর্পোরেশনের এ চাকুরী পাইয়ে দেয়। সেই থেকে এ যাবৎ তাদের পথ চলায় তাদের পাশে ছােট মামা আর নূতন করে আমি যােগদান করলাম। বছর দুইয়েক হয় ছােট মামা রােড একসিডেন্টটে মারা গেলে তারা একেবারে অসহায় হয়ে পড়ে। আমি রাতে মােবাইল বন্ধ রাখি অযাচিত অনেক কল আমাকে খুব বিরক্ত করে। প্রায় সময় রাতে বাবা এসে আমার রুমে উকি মেরে যায়। আমি দু’টাে টিউশানি করি। যা, পাই তার বেশীর ভাগই আমি গোপনে আপার হাতে তুলে দেই। ইদানিং বাবা জানে আপার সাথে আমার যােগাযোগ আছে। শুনেছি মায়ের মাধ্যমে উনি অনেক খােজ খবর রাখেন।
গ্রেট। আমি মুগ্ধ।
সন্ধে হয়ে এলো, তােমাকে এগিয়ে দিই।
রোদেলা একা একা হাটছে। আলম তাকে রিক্সায় উঠিয়ে দিয়েছিলো। কিছূ দূর এগোনোর পর রােদেলা রিক্সা থামিয়ে নেমে পড়ে । তার কিচুই ভাল লাগছে না। কেন যেন তার খুব মন খারাপ। আনমনে হাটতে গিয়ে আইল্যান্ডে একবার হােছট খায়। সে ভেবে পায় না আলমের কথা কেন তার মনে এতো বেশী ভেসে উঠছে? তার মানসপটে শুধু আলমের ছবি। না-না, আলমকে নিয়ে তার এতো ভাবা চলবে না। আমি বাবাকে দূঃখ দিতে পারব না। কোন ভাবেই নয়। আলম অতি ভাল মানুষ কিন্তু বাবার শরীরের যে অবস্থা ? সন্ধের নিয়ন আলো যেন তাকে উপহাস করছে। তার মনে হলো। আমাদের হাতে পায়ে কতো শৃঙ্খল। আমরা উড়তে চাইলেও উড়তে পারি না। বুক ভরে নিঃশ্বাস নিতে পারি না। আমাদের চেয়ে ছােট্র একটি প্রজাপতিরও স্বাধীনতা অনেক বেশী। তার প্রচন্ড ক্লান্তি লাগছে। দূর খুব ঘুম পাচ্ছে। কখন যে বাসায় পৈাছাব। কিছুই ভাল লাগছে না।
রোদেলা তােমার আচরনে বেশ পরিবর্তন লক্ষ্যনীয়। এতো কিছুর পর অবশ্যই তুমি তােমার বাবাকে দুঃখ দেবে না। তাকে বাকী জীবন শান্তিতে বাঁচতে দেবে ? এমন কোন ঝামেলা তুমিও পাকাবে না। জেনে শুনে অন্যায় করা ঠিক নয়।
রোদেলা নিরুত্তর ।
তোমার বিষন্নতা আমাকে বেশ নাড়া দেয়। যে কােন আঘাত ব্দিতীয়বার সহয্য করার মতো মানষিক বা শারিরীক শক্তি কােনটাই তোমার বাবার নেই। যে কােন বিষয়ে ভেবে চিন্তে সিন্দান্ত নেবার বয়স তােমার হয়েছে।
রোদেলা তারপরও নিরুত্তর। সে মাথা নিচু করে চুপচাপ খাটের উপর বসে আছে। মা, কি বলছে তা যেন তার কান দিয়ে প্রবেশই করছে না। সে নির্বিকার, নিরুত্তর।
দু’ দিন বাদে তােমার পরীক্ষা। রাতের খাবারও খাওনি। সন্ধে বেলা কােথায় থেকে এলে। কথা না বার্তা না অসময়ে ঘুমিয়ে পড়লে। তােমাকে বললাম টিউশানি বাদ দিতে। কােন কর্ণপাত করলে না। কর্ণপাত না করলে ভাল। কিন্তু নিজের কাজ নিজে গুছিয়ে ক্রলেই হয়।
রোদেলা নিরুত্তর। তার মুখ দিয়ে কােন সাড়া শব্দ বের হচ্ছে না।
রাতের খাবার খেয়ে নাও। আমি চা করে দিচ্ছি। চা, খেয়ে পড়তে বস্। আগে ভালভাবে পরীক্ষা দাও । তারপর শোনা যাবে বাকীটা।
যা পড়াশোনা করেছি এতেই পরীক্ষা খারাপ হবে না। আরো পড়লে ভাল হতো কিন্তু পড়তে ইচ্ছে হচ্ছে না। মাথাটা ধরে আছে। চা, এ ভাল কাজ হয়নি। মন, এমনি, যাকে ধরে বেধে রাখা যায় না। সে, যে কোন সময় যে কোন ফুলে রং লাগায়, গন্ধ শুঁকে, স্বপ্ন দেখে, কাব্য রচনা করে আরও কতো কি? দেখি কিছুক্ষন গান শুনি। যদি মন ভাল হয় তা হলে আবার না হয় পড়া যাবে।
রোদেলা ডেক সেটে মান্নাদের গান ছেড়ে .. জানালার পাশে গিয়ে দাড়ায়। তুমি কি সেই আগের মতোই আছো, নাকি অনেকখানি বদলে গেছ্, জানতে ইচ্ছে করে, খুব জানতে ইচ্ছে ।
কি চমৎকার গান। মন ভরে গেল। এ গান শুনলে যে কেউরই মন ভাল হয়ে যায়। রােদেলার মনও কিছুটা হালকা হয়ে যায়। কি চমৎকার চাঁদ? রাত অনেক। রাত অনেক হলে মানুষের মনের গােপন অভিলাষ গুলো জেগে উঠে। মনুষজন বেশীর ভাগই ঘুমিয়ে পড়েছে। মানুষ জন ঘুমিয়ে পড়লে শহরটা কতো ভাল লাগে। চাঁদের জোছনায় আলোকিত চারিদিক। কেমন যে এক আনন্দদোলায় নাচছে চারি পাশ। এ চাঁদের জোছনায় কারো হাত ধরে যদি হাটতে পারতাম। রােদেলা গানের সাথে সাথে মুখ মিলিয়ে গেয়ে উঠে, ”খুব জানতে ইচ্ছে করে’।
মুহুর্তে তার মানসপটে আলমের চেহেরা ভেসে উঠল। সে ভেবে কুল পায় না। কি করে আলমকে ভুলে থাকা যায়। যে কােন উপায়ে হউক আলমকে ভুলে যেতে হবে। ভুলে থাকতে হবে। ভুলে যেতে হবে। মা, কি ভাবে বুঝল, আমার মনের গোপন কথা ? আসলে সে যে মা।
পরীক্ষা ভালই হয়েছে। থার্ড ইয়ার শেষ। আর আজই শেষ পরীক্ষা। পরীক্ষা খুবই ভাল হয়েছে। পরীক্ষার হল হতে বের হলেই রােদেলা মুক্তি ও স্বস্থির নিঃশ্বাস ফেলল। আজ হতে আবার কিছু দিন মুক্ত, বিহঙ্গ, আনন্দ। তাই তার ফুর ফুরে মেজাজ। বসন্তের কৃষ্ণচুড়ায় লাল ফুলের সমারোহ। গাছে গাছে নূতন কূঁড়ি। বসন্তের এ রুপ সজ্জা দেখে রােদেলা অভিভুত। তার মন নেছে উঠে নতুন ভাবনায়। কৈকিল ডাকছে। ঝির ঝির বাতাস। দারুন একটা পরিবেশ চারিদিকে। রোদেলা বিড় বিড় করে গেয়ে উঠলো ..
"দুষ্ট পাখির মিষ্ট হাঁসি, কানে কানে বাজে
ফাগুন এলে বসন্তরাজ নূতন করে সাজে"।
গান গেয়ে রােদেলা নিজেই অভিভুত। সেও কাব্য রচনা করতে পারে! মনে মনে তার খুব হাঁসি পায়। লজ্জাও পায়।
প্রেমে পড়লে নাকি মানুষ কবি হয়। সেও কি প্রেমে পড়লাে? দূর কেমন যেন..। আপাকে হাসপাতাল থেকে আনার পর আর আলম সাহেবের সাথে কােন যােগাযোগ রাখব না। বাবাকে দুঃখ দিতে পারব না। বাবা কতো সংগ্রাম করে আমাদের কােলে পিঠে করে মানুষ করেছে। কতো স্বপ্ন দেখেছে। সারা জীবন কতো ত্যাগ স্বীকার করেেেছ। কােন অন্যায়ের সাথে কখনো কােনো আপোষ করেনি। আমাদের জান দিয়ে ভালবেসেছে। তার সাধ্যের চেয়েও অনেক বেশী করেছে। খেয়াল রেখেছে, ডানে বামে কোন দিক তাকায়নি আমাদের ছাড়া।
কিরে, এতোক্ষন ধরে তােকে ডাকছি, সােজা হেটেই চলেছিস ! হল থেকে বের হয়ে, কােন উত্তর নেই। কি হয়েছে তাের ?
না কিছু নয়। তোর পরীক্ষা কেমন হয়েছে?
ভাল। তাের পরীক্ষা কেমন হয়েছে? তুই আনমনা কেন? কি সমস্যা ?
ভাল। কই? কােন সমস্যা নেই।
আমার কাছেও লুকোবি ! অনন্তত আমার চােখকে তুই ফাঁকি দিতে পারবি না। না বলতে চাইলে নেই, যাক, বাদ দে, চল। আমাদের সাথে । আজ আমরা সব বান্ধবী মিলে বাহিরে খাব। আমি খাওয়াব।
না, তােরা যা, বাহিরে খেতে আমার খুব একটা ভাল লাগে না।
কেন? সমস্যা কি? আমি আন্টিকে কল করে বলে দিচ্ছি। উনি বারন না করলে তাে যাবি?
মাকে কল করার দরকার নাই। অযথা উনি টেনশন করবে। কােথায় খাবি?
নীরবে।
নীরবে খাওয়ার কি হলো ?
তুই তাে বাসায় খাস তাই নীরবে খাওয়ার পার্থক্যটা বুঝিস না। আমাদের মতো হলে খাইতি, তাহলে বুঝতে তাের অসুবিধা হতো না।
আমি রেনুকা
আমি ঝিনুকা
ও হিমু। আমার সিনিয়র কাজিন। হিমু-ওরা, আমার বান্ধবী ও পড়শী। পাশের ফ্লাটে উঠেছে। নূতন এসেছে। টু-ইন। আমি হিমু না। আমি সাজিদ ফাহমিন।
ও গল্পবাজ তাে, তাই আমরা ওকে হিমু বলেই ডাকতে সাচ্ছন্দ বােধ করি। ও খুব ভাল গল্প বলতে পারে। আজ আমরা ওর গল্প শুনব ও আড্ডা দেব। সুদূর বরিশালে থাকে। ঢাকায় এসেছে ভার্সিটিত ভর্তি হতে, আজ বাবা-মা বাসায় নেই। তাই পুরো ফ্লাটটাই আমাদের দখলে। সুতরাং তােমরা যেথায় খুশী বসতে পার।ড্রয়িং রুমেই বসি।
কিন্তুু গল্প বলার সময় লাইট অফ থাকতে হবে। কেউ মন্তব্য করা চলবে না। তাহলে আমার মুড অফ হয়ে যায়। মুড অফ হলে আমি গল্প বলতে পারিনা।
ঠিক আছে; ঠিক আছে; আমরা কেউই কথা বলবো না। কিন্তুু হাঁসি ফেলে তাে থামিয়ে রাখতে পারবনা। যদিও তুমি ভাল হাঁসাতে পার কিনা ? তা দেখার বিষয়। আপুর কাছে অবশ্য তােমার খ্যাতি শুনেছি। সে থেকে তােমার প্রতি কিছুটা আগ্রহ আছে।
কি বলো? যাকে দেখো-ই-নি কখনো তার প্রতি তােমার এতো আগ্রহ?
অদেখা বস্তুর প্রতি মানুষের আগ্রহ অনেক বেশী। চুপ-বোকা, তার প্রতি নয়। গল্প শােনার প্রতি।
ও আচ্ছা, কিন্তুু তুমি তা-আমার সাথে শেয়ার করোনি কেন?
দেখ্ ঝিনুকা আমি তােমার সিনিয়র, সিনিয়রদের কিছুটা ব্যক্তিগত বিষয় থাকতে পারে।
পাঁচ মিনিটের।
তোমরা কি? এমনই করবে, না গল্প শুনবে? এ--ই, রোমেল, রোমেল।
জিঃ আপু।
তুমি কি? আমাদের সাথে জয়েন করবে?
অবশ্যই এক মিনিট, আমি ফেইস বুকটা বন্ধ করে আসছি।
আমি ভাল গল্প বলতে পারি না? তা নিয়ে সন্ধেহ? দাড়াও, এমন গল্প বলব, হাঁসতে হাঁসতে কাহিল হয়ে যাবে। গল্প শােনার জন্য আমরি পিছুই ছাড়বে না, খালাকে বলো জগ ভরে পানি দিতে। সবাই পানি খেয়ে নাও। কারো যাওয়ার থাকলে যেতে পার। মাঝে নড়া - ছড়া চলবে না কারো। দরজা - জানালা সব বন্ধ কর, সবাই চুপ চাপ বসে পড়।
সবাই চুপচাপ। কােন সাড়া শব্দ নেই কারোরই।
কিন্তু ঝিনুকা হঠাৎ হেসে উঠলো।
গল্প বলা শুরু করার পূর্বেই এতো হাঁসি। তা হলে শুরু হলে কি অবস্থা হবে এদের?
না, ওনার বাচন ভঙ্গি খুব সুন্দর তাে তাই না হেসে পারলাম না। দেখ্ ঝিনুকা ফাহমিন আমার কাজিন, জােকার না।
স্যরি স্যরি,আপু ফ্যান করলাম। রেনুকা বার বার ফাহমিনকে অবলোকন করছে। তার কাছে ফাহমিনের সব কিছুই ইর্ষনীয় লাগছে। দেখতে হ্যান্ডসাম, ছাত্র ভাল, সাবলীল কথাবার্তা। ব্যাপারটা নাবিলার চােখ এড়ায় না। সাজানো গােছানো ড্রয়িং রুম। খুবই মনোরম পরিবেশ। সবাই চুপ চাপ। পিন পতন নিরবতা কেউ কথা বলছে না। ফাহমিন গল্প শুরু করবে। সবাই আগ্রহ ভরে অপেক্ষা করছে। ড্রিম লাইট জ্বালানো। নিয়ন আলোতে তাদের কারো কারো বুক দুপ দুপ করছে। একটা ভৌতিক পরিবেশ। সবাই ভাবছে ফাহমনি ভুতের গল্প বলবে। না জানি কেমন হয়। এমন সময় বিদ্যুৎ চলে যায়। সবার চােখে মুখে বিরক্তির চাপ। এমন সময় এই বিড়ম্বনা। নাবিলা উঠে ওকে, ক্যানডেল লাইট গল্প এবং ক্যানডেল লাইট ডিনার। তোমরা বসো, আমি খালাকে ভুঁনা খিচূড়ি ও গরুর মাংস করতে বলি। সবাই চেচিয়ে উঠে, দারুন হবে।
ড্রয়িং রুমটা বেশ বড়সড়। টি টেবিল এর দু’মাথায় দুটো মােম জ্বালানো হল। দরজা-জানালা বন্ধ থাকায় গরমে সবাই কিছুটা ঘেমে উঠেছে। সাজিদ ফাহমিন গল্প শুরু করবে। সবাই অপেক্ষায়।
ঘটনাটা সত্য এবং বাস্তব ..
আমার এক আংকেল খুবই কিপটা, এক্কেবারে হাড় কিপটা যাকে বলে। তার ছেলেগুলো আরো বেশী কিপটা। যার দরুন কেউ কেউ তাদের ঘটি বলেও ডাকে।
ভাইয়া তােমার আংকেল কিপটা তাতে আমাদের কিচ্ছু যায় আসে না। তুমি গল্প শুরু করো।
এটাই তাে গল্প।
তা-ই-ই, আমি ভাবলাম যে পরিবেশ সৃষ্টি করেছ তুমি ভৌতিক কিছু একটা বলবা।
অপেক্ষা কর --- ইহা, ভৌতিকের চেয়েও ভয়ংকর।
তা-ই- ই শুরু কর।
তো,ওনার ছেলেরা ভয়ংকর কিপটে কিছু দিনের মধ্যে ওনার ডায়াবেটিকস ধরা পড়লো। এতে উনার ছেলেরা ভেজায় খুশী। বাবা, খাবে কম। উনি ডায়াবেটিসের নিয়ম-কানুন মেনেই জীবন যাপন করছেন সকালে দু’খান শুকনো রুটি বিকেলে লাল চা চিনি ছাড়া। এতে ওনার খুব একটা সাচ্ছন্দ্য না থাকলেও বিরক্তি নেই।
কারো প্রতি কােন অভিযোগ ও নেই, এ ভাবে বেশ কিছু দিন কেটে যায়। মাস ছয়েক পর ওনার বেশ জ্বর হয়। জ্বরে উনি খুবই কাহিল হয়ে পড়ে, বয়স হয়েছে বেশ। ডায়াবেটিস তাই শরীরের রােগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম। ডায়াবেটিস হলে রােগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। তাই উনি খুবই সর্তকতার সাথে চলাফেরা করে থাকেন। নিয়মিত সকাল বিকেল হাটা হাটি ব্যায়াম করতে করতে ওনার পায়ের গােড়ালীতে প্রথম ছােট একটা ফোস পড়ে। ব্যথার যন্ত্রনা না যতটা বেশী তার চেয়ে বেশী যন্ত্রনা হলো ইহা শুধু চুলকায়। চুলকাতে বেশ আরাম লাগে। তাে উনি চুলকাইয়া ইহা ঘাঁ বানাইয়া ফেলিয়াছেন। দু/একদিনের মধ্যেই ইহা পাঁকা শুরু করিয়াছে। টাকা খরচার ভয়ে উনি ডাক্তারের কাছে না যেয়ে যথারীতি গরম পানি ঢালা শুরু করিলেন । গরম পানিতে উনি বেশ আরাম বােধ করলেন ও পুুরনো তেনা দিয়ে মুছে একটা মলম লাগতে লাগলেন। দু’দিন যেতে না যেতেই এতে পচন ধরা শুরু হলো। কেননা হাটাহাটি বন্ধ। এতে ডায়াবেটিস বৃদ্ধি। ডায়াবেটিস বৃদ্ধি পেলে কােন ঔষধ কাজ করে না। পচে পূঁজ ও র্দূগন্ধ বের হতে লাগলে ওনাকে ডাক্তারের নিকট নেওয়া হলো। ডাক্তার বিস্তারিত শুনে কিছু বকা-জকা করলেন, ও ঔষধ পত্র লিখে দিলেন এবং নিয়মিত পচা জায়গা উত্তম রুপে ড্রেসিং করাতে বললেন।
বাবা, এই সামান্য একটু মুইছা মাইছা দিলো বেটায় একশো টাকা চায়?
দেখ, পঞ্চাশ টাকায় মানাতে পারিস কিনা ?
দিলাম - - তাে, মানে না,
তয়, -- -। আরো দশ টাকা দিয়ে দেয়।
আচ্ছা। এই-যে ভাই, নেন ধরেন, বাবা বললো বলে আরো দশ টাকা দিলুম।
একশো টাকার এক পাইও কম হবে না।
কেন ?
কেন ? এর কােন উত্তর নেই। একশত টাকা দিয়ে কেটে পড়ুন।
কি বলেন? একশত টাকা কামাই করতে কি মেহনত করতে হয় আপনি কি ? তা জানেন?
আমার এতো জানার প্রয়োজন নেই। আপনি বেশ বিরক্ত করছেন ও সময় নষ্ট করছেন। টাকাটা দিয়ে কেটে পড়ুন।
টাকা দেব যখন কেটে পড়ব কেন? এই নিন্। এর বেশি দিতে পারব না।
আপনাকে না বললাম একশত টাকার এক টাকাও কম হবে না, বলে টাকাটা ছুড়ে মারলো।
আপনি আমার গায়ে টাকাটা ছুড়ে মারলেন? সত্তর টাকা আপনি টাকা মনে করলেন না ?
এ-ই চুপ। একদম চুপ, এটা চেচামেচির জায়গা নয়।
কেন চুপ করবো ? আপনি বললেই হলো ?
তা-না, হলে গাঢ় ধ্বাক্কা দিয়ে বের করে দেব।
কি বল-লে? তাদের চেচা-মেচিতে লােকজন ঝড়ো হয়ে যায়। কারো কারো হস্তক্ষেপে তারা কিছুটা নিভৃত হয়।
দেখুন, মশায়, এই লােকটা প্রতিদিন ড্রেসিং এর পর টাকা নিয়ে ঝামেলা পাঁকায়। কয়েকদিন কম নিয়েছি।
তাই আজ তাদের ড্রেসিং করতে চাইনি। সে ওয়াদা করলো আজ কম দেবে না। তাই ড্রেসিং করে দিলাম। বললো পুরো একশ টাকাই দিবে। কিন্তু ড্রেসিং শেষে এখন ষাট/সত্তর টাকা দেয়। বলুন - তাে –মশাই--?
সবাই বলে তা হলে টাকাটা দিয়ে দিন।
তুমি ঠেকিয়ে টাকা টা নিলে, মনে রেখ।
ঢাকা শহরে একশত টাকা দিয়ে ড্রেসিং করিয়েছি, এই মফস্বল শহরে নেবে তার অর্ধেক। এখানে দেখি দ্বিগুন টাকা চায় ? কি ? মছিবত বলতো ?
স্যার জবানা পাল্টাইয়াছে না ?
তা- না হয় পাল্টাইলো, কিন্তু উল্টাইলো কেমনে?
হাঁ হাঁ হাঁ; স্যার কি -যে কন ? আপনার পা, টা যে ভাবে বেন্ডিস করেছে, এতে আপনার বড় ধরনের ক্ষতি হইতে পারে। আপনি বরিশাল শহরে গিয়া বড় ডাক্তার দেখান।
খরচ বাচানোর জন্যে গ্রামে আইলাম আর তুই আমারে আবার সে শহরে যাইতে কস?
ওখানে খরচ অনেক কম নিবো।
তাহলে -তাে, যাওয়া যায়।কিন্তু সেখানে কি দ্বিগুন ফিস নেবে?
ও-মা, কয় কি ? আপনি তাে যাবেন সরকারী হাসপাতালে, দশ টাকা দিয়ে টিকেট কাটবেন আর লাইন ধইরা ডাক্তার দেখাইবেন।
রিক্সা থামা ।
ঘর দেখা যায়। ঘরের সামনেই নামাই।
না, এখানে নামালেই চলবে। এই নে, দশ টাকা।
স্যার এ্যাত্তো দূর থেকে আইলেন? মাএ দশ টাকা দিলেন?
তুই তাে কইলি দশ টাকা।
দশ টাকা তাে, আমি টিকিটের কথা কইলাম। ন্যায্য ভাড়া হয় পঞ্ছাশ টাকা, আপনি দশ টাকা কম দিন।
এই নে, আরো দশ টাকা, দিলাম যা।
না, আপনি চল্লিস টাকার কম দিতে পারবেন না। আর কম দিবেন কেন? এতো দূর আসতে মেহনত লাগে না।
আমি তো ঘরের সামনে নামিনি, একটু দূরে নামলাম না, তাই একটু কম দিলুম।
আমি আপনারে ভাল পথ দেখাইয়া ভুলই না করলাম।
বরিশাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতল, জনাব সাদেক সাহেবকে ঘিরে সবাই, উনি হাসপাতালের বেড়ে শুয়ে।এক পা বেন্ডেজ করা বালিশের উপর রাখা অন্য পা বেডে। সবার মাঝে ভাবগম্বীর বিষন্নতা। তার গুনোধর দুই পুত্র মাথা নীচু করে তল পেটে এক হাতের উপর অন্য হাত রেখে পাশাপাশি দাড়িয়ে।
এটা কাজ হলো? মাত্র একশত টাকা বাচাঁতে গিয়ে একটি পা শেষ। কেটে ফেলতে হলো একটি পা।এ কেমন কিপটামো? মানুষ জীবন নিয়ে এমন করে?
প্রথম ছেলে, তাও বাম পা। গােড়ালি থেকে কাটলো।
চুপ কর হতভাগা কােথায়কার? তােরা কেমন মানুষ !
ব্দিতীয় ছেলে বাবাই তাে, গ্রামে চলে এলো।
তোদের অপব্যাবহারের জন্যই তাে তাকে ঢাকা শহর ছাড়তে হলো।
প্রথম জন, না ভাইয়া বাবা খরচ বাচানোর জন্য নিজেই ইচ্ছাকৃত ভাবে গ্রামে চলে গেলেন।
আবার একই কথা। উনি যেতে চাইলো, তােরা অমনি ওনাকে ছেড়ে দিলি ! তোরা এমন কাজ করলি মানুষের কাছে মুখ দেখানো দায়। মামা বাসায় বসে বসে নিজের পা নিজে ড্রেসিং করে আর তােরা থাকিস কই? আমি আসলুম বলে রক্ষে। সাদেক সাহেবের ভাগেনে তার সরকারী অফিসের বড় কর্তা। ভাগ্যিস আমার বন্ধু ডাক্তার বলে পার পেয়ে গেলি, বাসায় ড্রেসিং করাতে ওনার পায়ে পচনের সাথে সাথে সেটা সেপটিক হয়ে গেছে। পায়ের গােড়ালী থেকে না কাটলে হয়তো পুরো পা,টাই যেতো। হয়তো উনি মারাও যেতে পারতেন। মানুষের জীবনের মূল্যের চেয়ে তােদের কাছে দু’চার শত টাকার মূল্য বেশী?
সাদেক সাহেবের দু"ছেলের মস্তক অবনত। তারা অপরাধী এমন ভাবধারায় বিশেষায়িত। তাদের মুখ থেকে একটি শব্দও বের হচ্ছেনা, শুধু মাঝে মাঝে চােখটা তুলে আড়চোখে বক্তাকে একটু দেখেই আবার চােখ নামিয়ে নিচ্ছে।স্বীয় স্থানে দন্ডায়মান। তারা বেশ ভয় পেয়েছে একে অন্যকে কিছুটা দােষারোপ করলেও তেমন একটা বিবাদ নেই তাদের মাঝে।বেডের অন্য পাশে সাদেক সাহেবের ভায়রা ভাইও মাথা নেড়ে ওনার কথায় সায় দিচ্ছেন।
আপনি যথার্থই বলেছেন। এদের নিয়ে আর পারা গেলো না। কতো বললাম? কে শােনে করা কথা? আজ তােমাদের মাঝে একটা বিষয় পরিস্কার তাে যে, সব-জায়গায় কিপটামো চলে না। তােমদের নিকট পন্যের মূল্যের চেয়েও পন্যের ভাড়ার হিসেবটা অনেক বেশী। আপনার ভাগেনে ছিলো বলে, আপনি একদম চিন্তা করবেন না।
এমন সময় নার্স চটের বেগে রাখা কাটা পা-টা নিয়ে এসে সাদেক সাহেবের বেডের নীচে রেখে এই যে, ওনার কাটা পা। কোথায়ও নিয়ে মাটিতে পূঁতে ফেলবেন বলে সে চলে যায়।
সবাই একে অপরের চােখা চােখি তাকায়।
দেখছিস কি ? যা, - গার্ডকে ঢেকে নিয়ে আয়। এটা কােথায়ও মাটি চাপা দিতে ব্যবস্থা কর।
জিঃ ভাইয়া। যাচ্ছি।
স্যার, এটা কবরস্থানে নিয়ে মাটি চাপা দিতে হবে। খরচা পাত্তি একটু বেশী লাগবে।
কত লাগবে?
এই ধরেন হাজার খানেক ।
কয়- কি? পঞ্চাশ / একশত টাকা নিবা, এখানে তেমন কাজ কি? কি বলো ভাগেনে? তাই না ভায়েরা ভাই? রােগী নিশ্চুপ।
এক পাইও কম হবে না, বলে গার্ড প্রস্থান করে। তারা একে অন্যের দিকে তাকাচ্ছে কিন্থু কেউ টাকা বের করছে না। আপনারা আবারো কিপটামো আরম্ভ করলেন বলে ভাগিনে মানিবেগ থেকে একটা এক হাজার টাকার চকচকে নােট বের করলে সাদেক সাহেবের ভায়েরা ভাই টপ করে সেই টাকা টেনে নিয়ে আপনি একদম ভাববেন না। আমি এর সকল ব্যবস্থা করে নেব।
মামা, আপনি একদম চিন্তা করবেন যে কােন প্রয়োজনে আমাকে ফােন করবেন। আজ আমি উঠি। আমার একটা জরুরী মিটিং আছে।
ভাগেনে আপনার বড় কর্তা, বড় মন। দেখলে। আর এ অপধার্থ গুলো ! এরেই বলে ... ।
এক হাজার টাকার কচকচে তাজা নাে বাঃ, এর ঘ্রানটাই আলাদা। সাদেক সাহেবের ভায়েরা ভাই এক হাজার টাকার নােট নিয়ে বার বার উল্টাইয়া পালটাইয়া টাকাটা দরখে আর নেচে নেচে হাটে ও নাকের উপর ধরে এর ঘ্রান শােকে। অনেক দিন এমন ঘ্রান পাইনি,আঃ। এই বলতে বলতে কাটা পা ভর্তি চটের বেগ হাতে ঘরে প্রবেশ করে ঘরের এক কােনে বেগটা রেখে খোশ মেজাজে খাটের উপর এসে পায়ের উপর পা তুলে বসে। এমন সময় তার স্ত্রী অগ্নিমূর্তি ধারন করে তার সামনে এসে হাজির। সারাদিন কােথায় ছিলে? কথা বলছো না কেন? তােমার কানে কি? কথা যায় না? দেখলাম হাতে একটা চটের বেগ নিয়ে ঘরে ডুকেছ সেটা কই? কি এনেছ তাতে? কি এমন অমৃত এনেছো যে লুকিয়ে রেখেছো।
না- কিছু আনিনি।
আমার চােখে ধূলো ? কিছু আনোনি ?
বললাম তাে কিছুই আনিনি। সত্যি বলছি। কিছুই আনিনি।
আমাকে বােকা পেয়েছ ? প্রতি হাটবারে বাতাসা এনে লুকিয়ে লুকিয়ে গিলো। আর বলছ কিছুই আনিনি। অন্য বার তাে বেগটা খুব ছােট ছিল।এবার বেশ বড় সড় দেখলাম।এতো বাতাসা একা খাবে ?
আরে যাও তাে বিরক্ত করো না ।
আমি সামনে আসলেই বিরক্তি? আর কিপটামি যা কর। তার জন্য কখনো কিছু বলি? আজ আমি ছাড়ছি না। কােথায় রেখেছ? বলো।
বললাম তো কিছুই আনিনি। লুকাব কেন ?
লুকাইনি বললেই হলো ? কােথায় লুকিয়ে রেখেছ ?
বললাম,বিরক্ত করো না। যাও .. ও..।
আমি আজ বের না করে ছাড়ছি না বলে সে ঘরে বিভিন্ন কোনায় খুজতে লাগলো। খুজতে খুজতে সে এক কােনা হতে সেই চটের বেগটা বের করে আনলো। এই তাে পাওয়া গেলো। তার পরও বলবে বাছাধন কিছু আনোনি !
এ-ই এ-ই, এ-ই, এটা, খুলো না । খুলো না । বিপদ হবে।
চটের বেগে বিপদ না ? একা বাতাসা গিলো।
বললাম তাে খােল না। কিছুই নেই।
এতো ভারী বেগ আর বলছ কিছুই নেই। এতো বাতাসা কাকে গিলাবা গাে শূনি। আমার জান।
কাউকে না। সত্যি কিছু নেই। লক্ষ্যিটি খােলো না।
এখন লক্ষ্যি? এতো দিন আমি বজ্জাত। না ? একা বাতাসা গিলার সময় আমি বজ্জাত!
সত্যি তুমি লক্ষ্যিটি। আমার জান।
রাখ-তোমার লক্ষ্যি টক্যি, বলে তার স্ত্রী চটের বেগ হতে কাটা পা বের করে আনলো। এবং চােখের উপরে ধরে দেখলো এটা- কি ? দেখেই সে, ওরে মাের খােদা,ও আল্লারে, ওআল্লারে বলতে বলতেই ধপাস করে পড়ে অজ্ঞান।
তো উনি তিন দিন ধরে অজ্ঞান, কিছুতেই ওনার জ্ঞান ফিরছে না। পুরো বাড়ী ওনাকে নিয়ে চিন্তিত,উদ্বিগ্ন।বিভিন্ন চেষ্টা তদবিরের পর অবশেষে যথারীতি ঔজা খবর দেওয়া হলো।ঔজা আসছেন। সবাই তার অপেক্ষায়। ঔজা সাহেব বিশেষ পূঁর্নিমা রাত ছাড়া চিকিৎসায় বের হন না। আজ পূনিঁমা রাত তাই আজই উনি আসছেন। কােন বাড়ীতে পা দিয়েই উনি ঐ বাড়ির হাল হকিকত বলে দিতে পারেন।এটা তার বিশেষ গুন।লােকজনের ধারনা। আর এ বাড়ীতেও পা রেখেই উনি ঘন্ডগোলের গন্ধ পেলেন। তাই সে রােগী না দেখেই; হুংকার ছেড়ে গন্ডগোল সম্পর্কে জানতে চাইলেন।কেউ একজন এগিয়ে এসে কিছু একটা কানে কানে বলার সাথে সাথে উনি চঁেচিয়ে উঠে বললেন রােগীর চিকিৎসা পরে। আগে ঐ গ্রামের ‘পা’ এই গ্রামের মাটিতে ফুতে রাখার দূর সাহস কে দেখিয়েছেন? তার কৈফিয়ত আগে চাইলেন। এটা আগে জানা তার বিশেষ প্রয়োজন বলে হুংকার ছাড়লেন। সবাইকে নিরুত্তর দেখে সে ফতুয়া জারি করেেলন আগে ঐ গ্রামেরে “পা’ মাটি হতে তুলে সেই গ্রামের মাটিতে ফুতে, কু-লক্ষন তাড়াতে হবে। তারপর উনি রােগীর চিকিৎসায় মনোযোগ দেবেন। তার ঘােষনায় যথারীতি তিনজন গিয়ে পা তুলে এনে সেই চটের বেগে করে নিয়ে অন্য সেই গ্রামের উদ্দেশ্যে রওনা দিলেন। ঘন অন্ধকার পূর্নিমার রাত। পূর্ণিমা শেষে চারিদিক ঝি ঝি পােকার ডাক। এতো বেশী অন্ধকার যে নিজের হাতটাও চােখে দেখা যায় না। তারা তিন জনের কেউই কারো সাথে কথা বলছে না। সবাই নীরবে হেটে চলেছে। সামনের জনের হাতে টচ লাইট । টর্চ লাইট জ্বালিয়ে সে পথ প্রদর্শকের ভূমিকা পালন করছে। তাদের পেছনের জন বললো আস্থে হাট। সামনের জায়গাটা ভাল নয়। ভয়ংকর। সেখানে কি যেন থাকে। তার মাঝে এ নিয়ে বেশ ভয় কাজ করছে। মাঝের জন বিষয়টা আমলে নিলোনা। দূর এটা তাের মনের ভয়। ভূত টুত তেমন কিছু নেই। এগুলো মানুষের বানানো গল্প। প্রথম জন বললো গল্প নয়। বাস্তব ওখানে ভয়ংকর কিছু একটা আছে। শেষের জনের ভয়ে গাঁ কাটা দিয়ে উঠলো। সে ইন্নালিল্লাহ পড়তে লাগলো। গভীর রাত চারিদিকে ঘন-অন্ধকার তিন যুবক হাটছে।এতোক্ষনে তারা সেই ভয়ংকর জায়গা গিয়ে পৌছেছে। এখানকার গাছ-গাছালি গুলো বেশ বড় বড় ও পুরানো। রাস্তাটা ও সমতল থেকে বেশ উচুতে। সেখানে প্রকান্ড কয়েকটি বট গাছ। বট গাছগুলো লতাপাতা ছেড়ে চারি দিক গেড়ে বসেছে।এতো বড় বড় গাছগুলো দেখে তারা ঘাবড়ে গেলো। তিন যুবক হাটছে। ভয়ে তাদের হাঁটু কাপছে তারপরও তারা হাঁটিতেছে, দ্রুত পায়ে হাঁটছে। কিছুদূর এগুতে না এগুতেই ভয়ংকর হুংকার ছেড়ে তলোয়ার হাতে কয়েকজন ডাকাত তাদের ঘিরে ধরলো। ডাকাত সর্দার তলোয়ার উচিয়ে এতো বড় স্পর্দা। আমাকে কূ’র্ণিশ না করে আমার এলাকায় পর্দাপন। এক কােপে তােমাদের মুন্ড দ্বিখন্ডিত করে ফেলব। হাঁ হাঁ হাঁ হাঁ হাঁ হাঁ। অট্র-হাঁসিতে সে ফেটে পড়লো। আমার তল্লাটে তেলেফোঁকা, তা আমার চােখকে ফাঁকি। আমার ইশারা ছাড়া এই তল্লাটে মাছ্ওি হাগে না। কি আছে? বের কর।
প্রথম জন, হুজুর কিছু নেই।
মূল্যবান স্বর্না-লংকার পারা পার করছ রাতের গভীরে। লােকচক্ষুর অন্তরালে। আর আমাকে বলছ কিছুই নেই। এখনো সময় আছে। চটপট সব বের করে দাও নতুবা এক কােপে দ্বিখন্ডিত করে দেব। হুজুর এক জনের মুণ্ডুটা আমার বেশ পছন্দ হয়েছে, আমি সেটা রেধে খাব।
দ্বিতীয় জন দৃঢ় কণ্ঠে, বললাম তাে কিছুই নেই।
কি? আমার মুখের উপর কথা? সে সজােরে তলোয়ার উচিয়ে তাদের কােফ দিতে উদ্যত হলে তৃতীয় জন লা-ইলা- পড়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে ধপ করে মাটিতে পড়ে যায়। প্রথম জন সজোরে দৌড়ে পালায়। দ্বিতীয় জন স্বীয় চটের বেগ হাতে দাড়িয়ে থাকে। ডাকাত সর্দার দু’জনের এ অবস্থা দেখে তলোয়ার নামিয়ে ও, তাহলে তুমিই সেই বীর বাহাদুর। সে দিতীয় জনের মুখোমুখি এসে দাড়িয়ে তা হলে বাঁচাধন দেখি তােমার থলের মধ্যে কি মূল্যবান রত্ন। যা তুমি সযন্তে লুকিয়ে বহন করছ।
তেমন কিছু নয়। তবে দেখাচ্ছি।
দ্বিতীয় জন থলে হতে কাটা ” পা ”’টা বের করে হাতের তালুতে রেখে ডাকাত সর্দারের চােখের সামনে তুলে ধরে বলে আলোটা কাছে আনুন্ আর দেখুন । কি ? মূল্যবান রতন যা আমি রাতের অন্ধকারে পাচার করছি।
ডাকাত সর্দারের ইশারায় অন্যরা আলোটা কাছে এনে সবাই একযোগে দ্বিতীয় জনের তালুতে রাখা কিছুটা মাটি মিশ্রিত কাটা পা’টা ভাল করে দেখতে লাগলো, তাদের একজন এটা দেখে ওরে বাবারে ভূ’ত ভুত বলে চেচিয়ে উঠলো এবং সবাই এক যােগে অস্ত্র শস্ত্র ফেলে দৌড়ে পালালো । দিতীয় যুবক অট্ট হাঁসিতে ফেটে পড়লো।
ভাই শফিককে পুলিশ ধরে নিয়ে যাচ্ছে। পুরা ছাত্রাবাস পুলিশ ঘিরে রেখেছে। ক্যাম্পাসে খুবই থমথমে অবস্থা।
কেন ? গতকালই তাে সরকারী দলের ছাত্র-শিক্ষক সহ তাদের বেদড়ক পেটালো কয়েকজনকে তাে; বহিস্কারও করলো ?
জানি না; তবে অনেক নিরীহ ছাত্রকে গ্রেফতার করেছে।তারাও নাকি মিছিলে ছিলো?
মিছিলে থাকতেই পারে। এটা তার গনতান্ত্রিক অধিকার। হঠা করে টিউশন ফি কয়েক গুণ বৃদ্ধি করবে, আর গরীর ছাত্র-ছাত্রীর তাে ঘরে বসে থাকতে পারে না। একটা যৌক্তিক পর্যায়ে বৃদ্ধি করলে কারো বলার কিছু থাকে না। এমন চার/পাঁচ গুন বৃদ্ধি করলে তাে আগুনে ঘি দেওয়া হলো।
সাধারন ছাত্র-ছাত্রীরা অনেকেই মামলার ভয়ে ক্যাম্পাস ছেড়ে পালিয়েছে। তাদের আর কিই-ই বা করার থাকে? এমন আন্দোলনে কিছুটা উত্তেজনা তাে বৃদ্ধি পাবেই। ভাংচুরের ঘটনা অস্বাভাবিক কিছু নয়; তবে ছাত্রদের ধৈর্য ধরা উচিত ছিল।
তাছাড়া সাধারন ছাত্র-ছাত্রী ছাড়া সরকারী দলের ছাত্র-ছাত্রীরাই তাে ভাংচুর তান্ডব বেশী চালালো।
হ্যাঁ মনে হয় নীল নকশা ছিল। মামলা করার জন্যই তারা এমন করেছে।
চল কথা না বাড়িয়ে তাড়াতাড়ি চল পাছে পুলিশ তাদের নিয়ে যায়।
স্যার, শফিককে ছেড়ে দিন।
হলে তল্লাশী চলছে। যা কিছু করার পুলিশই করবে। আর কিছু করা এখন আমাদের এখতির বর্হিভ’ত।
শফিক খুব একটা রাজনৈতিক সংশ্লিষ্ট নয়, তাছাড়া বাম রাজনীতি তাে খুবই ক্ষীন ও দূর্বল হয়ে পড়েছে। নামে মাত্র সে সংগঠনের সাথে জড়িত। সে সংগঠনের তেমন কেউ নয়।
নামে বা বেনামে সেটা বড় কথা নয়। রাজনীতির সাথে জড়িত ইহাই বড় কথা। আপনি কথা বাড়াবেন না। আমাদের কিছু করনীয় নেই।
স্যার এমন সামান্য তুচ্ছ ঘটনায় একটা গরীব পরিবারের ছাত্রের জীবনের সকল হিসাব নিকাশ পাল্টে যায়।
সেটা কি তারা মনে রাখে, বা চলে ? আপনি তুচ্ছ বলছেন? ছাত্র-রাজনীতিকরা যখন তখন সামান্য বিষয় আশয় নিয়ে আন্দোলন পাঁকিয়ে দেয়, ভাংচুর, তান্ডব, আতংক ছড়িয়ে দেয়। বিরোধী ছাত্র সংগঠনের সাথে আতাআত ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়। আপনি তুচ্ছ বলছেন? এ উচ্চ শিক্ষা? অধ্যায়ন?
আপনারা কােন অধ্যায়ন আর উচ্ছ শিক্ষা গ্রহন করেছেন স্যার? একজন শিক্ষক হয়ে কি ভাবে আপনারা নীরিহ ছাত্র ছাত্রীদের পেটানোতে অংশ গ্রহন করলেন? শুধু ছাত্রদের মেরেই ক্ষান্ত হননি ছাত্রীদেরও কিল ঘুষি নির্যাতন ও শীলতা হানি করে ছেড়েছেন। ভাবলেন না এ বয়সী আপনার ও তাে একটা কন্যা সন্তান থাকতে পারে? আন্দোলন সংগ্রাম বাঙ্গালী ছাত্র ছাত্রিদের রক্তের নেশা, বাঙ্গালী ছাত্র ছাত্রীরা কখনো কোন অন্যায়কে প্রশ্রয় দেয়নি। এটা তাদের অধিকার। বড় কথা বলবেন না। আমরা সব কিছুই স্বচোখে দেখেছি। কি অন্যায়টা না আপনারা করেছেন। আমরা কর্ম কর্তা কর্মচারীরা আপনাদের তামাসা দেখিছি। আপনাদের সম্মান করতে গিয়ে আমরা মারাত্বক অন্যায়কে প্রশ্রয় দিয়েছি।
দেখুন আলম সাহেব আপনি এ হাসপাতালের একজন কর্মকর্তা। হাসপাতালের নিয়ম কানুন মেনে চলা আপনার কর্তব্যের মধ্যে পড়ে, পুলিশকে তাদের দায়িত্ব পালন করতে দিন।
দায়িত্ব? দায়িত্ব ছিলো। সাধারন ছাত্র-ছাত্রীদের দাবি দাবার বিষয়ে তাদের সাথে আলাপ আলোচনায় বসা। তাদের দাবি যুক্তিযুক্ত হলে তা মেনে নেওয়া না হলে আলোচনার মাধ্যমে নির্ধারন করা। কিন্তু কি? দায়িত্ব পালন করেছে ম্যানেজমেন্ট কর্তৃপক্ষ? কেউ কেউ আন্দোলন চাঙ্গা করেছে কেউ কেউ সরকারের তােষামোদে ব্যস্থ থেকেছে। কেউ কেউ এই ফাঁকে ফায়দা লুটেছে। প্রমোশন নিয়ে আলোচনা সেরেছে। আন্দোলন চাঙ্গা করতে পানি ডেলেছে। নিয়োগ বদলি কােন জায়গায় স্বচ্ছতা আছে?
আপনি সীমা লংঘন করছেন?
সীমা লংঘন আপনারা ইতিমধ্যে করে সেটার চূড়ান্ত রুপও দিয়ে দিয়েছেন। আপনি শফিককে ছেড়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করুন।
আমার কিছুই করার নেই।
আপনি একজন হলের প্রক্টর আপনাদের পারমিশন ছাড়া পুলিশ ছাত্র/ ছাত্রী হলে প্রবেশ করে কি করে?
সেটার কৈফিয়ত কি আপনাকে দিতে হবে?
কৈফিয়ত দিতে হবে না। আপনি শফিককে ছেড়ে দিলেই চলবে। নতুবা;;;
সম্ভব নয়।
আমার সমন্ধে নিশ্চয়ই আপনার ভাল ধারনা আছে। আমি কতটা কি করতে পারি? এই শফিক উঠ। চল আমার সাথে।শফিক উঠে এসে, আলমকে জড়িয়ে ধরে। সব ঠিক হয়ে যাবে বলে আলম শফিকের হাত ধরে, চল বলে তারা ছাত্রাবাসের ওয়েটিং রুম হতে বাহিরে হেটে চলে যায়। শিক্ষকরা তিন জন নীরব দৃষ্টিতে তাদের প্রস্থান অবলোকন করে।
রােগ তাে নয় সে তাে হলো মৃত্যুর আগাম নােটিশ। ভাবলাম আলম সাহেবের সাথে আর দেখা করব না। ভাগ্যের কি? নির্মম পরিহাস যাকে নিয়ে ভাবতেই চাইনি সেই-ই এখন সবচেয়ে বড় নির্ভবরতার ব্যক্তি। যে বাবার কথা ভেবে আলমের সাথে সম্পর্ক গড়তে চাইনি সে বাবাই এখন আমাকে তার নিকট নিয়ে এলো। মনে হল বাবা মেয়েকে জামাতার হাতে তুলে দিতে নিয়ে এল। এরেই বলে নিয়তি।গভীর রাত।ইনর্টানি ডাক্তারদের ধর্মঘট। বাবা আই সি ইউতে। আপা এখনো লেবার রুমে। তার মেয়েলি কিছু জটিলতার কারনে ডাক্তার আপাকে এখনো হাস্পাতাল থেকে রিলিজ দেয়নি। বাবার কথা শুনেই সে কান্নাকাটি জুড়ে দিয়েছে। কাঁদতে কাঁদতে সে বেহুশ। তার কান্না আর থামে না। তার শারীরিক অবস্থা গত কয়েক দিনে †বশ উন্নতির দিকে দু’চার দিনের মধ্যেই †স রিলিজ নিয়ে বাসায় যাবে। বাবাকে †দখতে চাইলেও এ অবস্থায় তার নড়াছড়া করা যাবে না বলে নার্স আসতে বারন করলো। বাচ্চা গুলো নানাকে দূর হতে এক ফাক †দখে †গলো । দুলা ভাই আই সি ইউতে ডুকতে সাহস †পলো না। এতো বড় হাসপাতালের †গটে দ’ুচার জন অপরিচিত †লাক ছাড়া †কউ †নই। আমি একা †কমন †যন প্রচন্ড বিরক্তি লাগছে। নীরব শূন শান নগরী । হাসপাতালের সামনে দিয়ে বয়ে যাওয়া, বড় রাস্তাটিতে গাড়ী †ঘাড়ার †তমন †কান সাড়া শব্দ †নই। আলম ঔষধ আনতে †গছে। একে †তা গভীর রাত তার ওপর তীব্র শীত । শীতের কাপুনিতে সবাই এলাকা †ছড়ে পালিয়েছে । †য †কান অনাকাঙ্খিত ঘটনা এড়াতে আলম আমাকে হাসপাতালের †গটে †রখে †গছে। আমার তার সাথেই যাওয়া উচিত ছিলো। তা হলে এতো শাস্থি †পতে হতো না, কতোক্ষন দাড়িয়ে থাাকা যায় ? এতো রাত্রে, একা একা একটি †ময়ে। ঔষধ †পলো কি ? †পলো না; এই উত্তেজনায় আমার নাভিশ্বাস উ?ে †গছে । বিদেশী ঔষধ। দাম †কমন হবে জানি না। এখানকার †দাকানে ঔষধটা ছিলো কিন্তু তাদের স্টক †শষ । একটি মাত্র †দাকানীা এই ঔষধগুলো রাখে। দামী ঔষধ বিধায় অন্যরা রাখে না। আলম টাকা নিতে চায়নি এবার †জার করে পকেটে টাকা গুজে দিয়েছি।এ ক’দিনের আন্দোলনে †বশীর ভাগ †রাগীই হাসপাতাল †ছড়ে অন্যত্র চলে গিয়েছে। †দশের স্বাস্থ ব্যবস্থায় এতো অরাজকতা ভাবলেই খুব কষ্ট লাগে । এরই মাঝে খুব ভাল লাগলো সদ্য বিবাহিত এক জুটিকে হাসপাতাল ত্যাগ করতে †দখে। স্বামী পরম মমতায় তার স্ত্রীকে †কালে তুলে নিয়ে হাসপাতাল ত্যাগ করতেছে। স্ত্রীটির এক পা ভাঙ্গা, প্লাষ্টার করা। †স স্থির দৃষ্টি নিক্ষেপ করে স্বামীর গলা জড়িয়ে ধরে রেখেছে। চমৎকার লাগলো।
এতো দুঃখের মাঝে ও এ সুখ †যন কারো †চাখ এড়ালো না। সবাই মৃদু হাসলে ও বধূটি নড়লোই না। †স মুগ্ধ নয়নে স্বামীকে †দখছে। ইচ্ছে হচ্ছে দেŠড়ে গিয়ে বড় রাস্তায় উ?ে, দেখি আলম আসছে কিনা। ঔষধের †চয়েও আলমের প্রতি আগ্রহটা †কন †যন †বশী মনে হচ্ছে। মনকে বারন করে রাখা দায়। লাইট †পŠষ্ট গুলোর নিয়ন আলোর ফাঁকে শুধুই নিস্থবদ্ধতার দীর্য়শ্ব^াস ছাড়া কিই †নই। সকল নিরবতা †ভঙ্গে হ?াৎ এক মাঝ বয়েসী বৃদ্ধ এসে বলে মা, বসেন। একটি টুল এগিয়ে দিলো। টুলটি অনেকটা জল চকির মতো। †স সিড়ির †কানে বসে পড়লো। আমি কিছুটা ভড়কে †গলাম। প্রথমে কিছুটা সংশয় হলেও পরে তার মুখো-মুখি বসে পড়লাম, কতোক্ষন দাড়িয়ে থাকা যায়। ব্যাথায় পা টনটন করছে । বসতে †পরে ভালই লাগলো। চাচা আপনি ? †ক ? কি চান ?
আমি, মা; এ হাসপাতালের দারোয়ান। †তামাকে অনেকক্ষন দাড়িয়ে থাকতে †দখলাম। নিশ্চয়ই †কান বিপদে পড়েছো, তাই এগিয়ে না এসে পারলাম না।
আপনাকে †দখে †তা মনে হয় না, আপনি এ হাসপাতালের †কউ ?
?িক ধরেছ। আন্দোলনের কারনে গার্ডের †পাষাক ছাাড়া আসতে বলেছে। তুমি নির্ভয়ে †তামার সমস্যার কথা আমাকে বলতে পার।
সমস্যা ছাড়া †তা †কউ এতো রাত্রে হাসপাতালের সদর দরজায় দাড়িয়ে থাকে না। সমাধানের জন্য একজন বাহিরে †গছে।
তা ছাড়া যে আন্দোলন চলছে নিচক বিপদে না থাকলে এই হাসপাতাল চত্বরে †কউ থাকে ?? এ †তা হাসপাতাল নয় †যন †দাজক খানা। সমস্থ অবয়বই ভঙ্গুর, নষ্ট।
তা , বলতে পার । তারপর ও মানুষ আসে ।
যারা নিরুপায় তারা †তা আসবেই। মানুষের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি যা দাড়িয়েছে ?
সকল কিছুর দাম দিন †ক দিন †য পরিমান বৃদ্বি †পয়েছে, আমাগো মত নি¤œ আয়ের মানুষের শহরে টিকে থাকা দায়। †রাদেলা দীর্ঘ এক হামি দিয়ে ?িক বলেছেন চাচা।
†তামার মনে হয় ঘুম আসছে ? চা-খাবে মা;
চা- পাবেন †কাথায় ?
সে আমি ব্যবস্তা করব। তুমি খাবে কিনা বলো ?
হলে মন্দ হয় না
তারা দু’জন চা - খাচ্ছে।
চা -পান প্রায় †শষ পর্যায়ে চা টা ভালই লাগলো। চাচা যদি কিছু মনে না করেন। চায়ের পয়সাটা আমি †দই।
এ সামন্য পয়সাটা দিয়া আমারে ছোট কেেত চান ? হাসপাতালে আপনার †ক ভতির্ ? বাহিরে ট্যান্সপার করান না †কন ? এখানে †য অবস্থা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে †মলা সময় লাগবে ।্
আমার বাবার হাটের সমস্যা। আই সি ইউ †ত আছে। ¯œানান্তর জুকিপূর্ন। আপনি এ বয়সে ও রাত্রে ডিউটি করছেন। শরীর খারাপ করবে না ?
হো †হা †হা; আমাগো আবার শরীর খারাপ স্বাধীনতার অনেক আগ †থকেই এই †গটে দাড়িয়ে আছি। মাগো স্বাধীনতা আইছে মুক্তি আসে নাই। কত্তো মানুষ এ দরজা দিয়া প্রতিদিন আসে আর যায়। কে জিজ্ঞায় ? আমাগো ভালমন্দ। কতো মানুষ হাসতে হাঁসতে ডুকে। যায় কাঁদতে কাঁদতে । কতো মানুষ †রাগী হয়ে আসে। যায় ডেড বডি হয়ে। কত্তো আন্দোলন সংগ্রাম, উত্তেজনা। উত্তপ্ত মিছিল, মুক্তিযুদ্ধ, মারা মারি; কাটা-কাটি দেখলাম । চড়াই উৎরাই। এ †গট আর আমি স্বাক্ষী। স্বাধীকারের লাইগ্যা কত্তো রক্ত এই †গইটে †য ঝরলো ? আহারে স্বাধীকার , স্বাধীনতা, মুক্তি, সংগ্রাম ? আমার চাকুরীর †ময়াদ †শষ। এখন এল পি. আর এ আছি । এ হাসপাতালের মায়া ছাড়তে পারি না। তাই যখনি ডাক পড়ে চলে আসি । প্রতিদিন এখানে এসে চা না †খলে শান্তি পাইনা। মা,একটা কথা, আলমরে আপনি †কমনে চিনেন ??
চাচা আপনার নাম টা জানা হলো না।
আমার নাম শওকত আজম খাঁ । সবাই আজম বলেই ডাকে।
দীর্ঘক্ষন পর আলম ঔষধ নিয়ে এলো। সারা দিনের খাটাখাটুনির পর আলম এখন আরো †বশী ক্লান্ত হয়ে পড়েছে। কতো বললাম রাতের খাবার †খতে । †খলো না। সামান্য পানি মুখে দিয়ে বলতে লাগলো.. ঔষধ আনার দীর্ঘ বিড়ম্বনার কথা। এখানে ওখানে †কাথায় ও এ ঔষধ †নই। এরে ওরে †ফান করে †কান লাভ না হওয়ায় আবশেষে তার পরিচিত এক ঔষধ †কম্পানীর †পাডাকশন †সকশনের প্রধানকে †ফান করে । †স তখন †প্রাডাকশনে ব্যস্থ। †স এতো রাতে আলমের †ফান †পয়ে আশ্বার্য় । পরে তার গাইড লাইন অনুসরন করে আলম ঔষধ সংগ্রহ করে । কিন্তু এতো দূর ফিরে আসে †কমনে ? অতো রাতে। †কান অটো ., রিক্সা আসতে নারাজ । তাদের মধ্যে একটু ভদ্রতা †তা †নই মায়া মহব্বত ও †নই। কারো বিপদ †দখলে তারা আরো †বশী †চপে ধরে । যা সত্যিই দুঃখজনক। দিনকে দিন মানুষের মাঝে মায়া মহব্বত উ?ে যাচ্ছে। অবশেষে দ্বিগুন ভাড়ায় একটি সিএন জি নিয়ে আসতে লাগলো আলম। পথি মধ্যে তাদের গাড়ী পুলিশ আটকায় । নানান অবাঞ্চিত প্রশ্নের পর তারা গাড়ীটি আটকে †দয় কাগজ পত্র ?িক †নই এ ছুতোয়। আলমের কথ্ায় কর্ণপাতই করলো না। তারা উল্টো তিরস্কার করে অন্য গাড়ী নিয়ে আলমকে চলে আসতে বলে। পুলিশ পারে ও ঝড়ের মাঝে তুপান চালাতে।
অবশেষে †জার করে আলমকে মায়ের আনা খাবার খাইয়ে দিলাম আমি ও কিছুটা †খলাম । মায়ের রান্না খুবই সুস্বাদু কিন্তু ?ান্ডা হওয়ায় এবং অসময়ে খাওয়ায় খাবারটি খুব একটা ভাল লাগেনি। আলমের নাকি খুব ভাল †লগেছে। মা খাবার দিয়ে বাবাকে †দখে †ছাট ভাই †বান নিয়ে চলে †গছে। দূর সম্পর্কের এক আতœীয় †স বহু আগে নাক †ডকে ঘুমিয়ে পড়েছে হাসপাতালের †মঝেতে। অন্যান্য দর্শনাথীরা সন্ধাকালীন সময়েই চলে গিয়েছে। †জগে থাকার মতো আমি ছাড়া অবশেষ আর †কউ †নই। †মঝো মামা থাকতে †চয়ে ও পরে কি †ভবে চলে †গছে । †ময়ে মানুষ বলে মা নিজেই থাকতে চাইলো আমার †জারালো বাধার মুখে উনি চলে যান। পরে ওনাকে নিয়েই টানাটানি করতে হবে। বাবা আই সি ইউতে । করিডোরে আমরা অনেকক্ষন পাশাপাশি হাটাহাটি করলাম। নানান বিষয়ে আলাপ আলোচনা করলাম বিশেষ করে ইর্টানিদের ধর্মঘট নিয়ে। আলাপের ফাঁকে ফাঁকে আমি আলমকে পর্যবেক্ষন করলাম †স আমার ব্যাপারে বরাবরই উদাস । যতই তার দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করি তার দৃষ্টি অন্যদিকে। ভালই হলো আমি তাকে ভাল ভাবে আবলোকন করতে পারলাম । অনেকক্ষন হাটাহাটির পর আমি আর আলম ওয়েটিং রুমের †সাফায় পাশাপাশি বসি । পুরো ওয়েটিং রুম ফাঁকা। আলো জ্বালানো। কেমন †যন †রামাঞ্চকর। আমরা দুজন যুবক যুবতী পাশাপাশি। শীতের রাত †ভতরটা †কমন †যন †কঁপে উ?লো। এ এক ভিন্ন অনুভ’তি †টর †পলাম । আলম নির্বিকার। †স চা চাইলো। কিন্তু চা নেই। চা হলে ভাল হতো। ক্লান্তি দূর হতো। কিছুক্ষন পর পর আমরা দূর হতে বাবাকে †দখে আসলাম। আলম বললো চা হলে সারা রাত জাগা তার জন্য †কান সমস্যাই নয়। এ সমযে †কাথায়ও চা পাওয়া যাবে না। নতুবা †স চা নিয়ে আসতো।
আমরা পাশাপাশি বসে । আলম একজন অপরিচিত †লাক কিন্তু আমার মধ্যে তাকে নিয়ে বিন্দু পরিমান ভয় কাজ করলো না। আমি অবলিলায় তার †চাখে †চাখ †রখে প্রশ্ন করলাম , †স উত্তর দিলো। নানান প্রশ্নের মাঝে উল্যেখযোগ্য হলো , তার বাসায় না †ফরা নিয়ে। বাসায় না ফিরলে কি সমস্যা হতে পারে ? †স বললো তার মা জানে আলম পরোপকারী তাই †স বাসায় না ফিরলে †কান †টনশনই করেন না তার মা। আমার নিকট আশ্বর্য় লাগলো ! এমন নানান কথার ফাঁকে কখন †য় ঘুমিয়ে পড়লাম †টরই †ফলাম না। ঘুম ভাঙ্গালো সকালের †সানালী †রাদ্রুর। †রাদের মিষ্টি আমেজ ভাল লাগলো। নিজেকে আবিস্কার করলাম আলমের বাহুতে। আলম এখনো ঘুমিয়ে । †চাখ †মলেই চারিদিক তাকিয়ে †দখলাম †কউ †নই। নিজেকে সামলে নিয়ে আলমের বাহু †থকে সরে এলাম। কিছুটা লজ্জা লাগলো আমার ।এ , এক দারুন †রামাঞ্জকর সময় আমার। এ ভাল লাগা প্রকাশ করা দায়। আলম বেভোরে ঘুমাচ্ছে। †দখতে খুবই মায়া লাগলো।
বাবা হাসপাতালে আজ তৃতীয় দিন এখনো ঞ্জান †ফরেনি । আতœীয় পরিজন সবাই উদ্বিগ্ন। ডাক্তারদের স্পষ্ট †কান মতামত পাচ্ছি না। খুবই †টনশান লাগছে। †কউ বলছে ফিপটি ফিপটি। নানান প্রশ্ন মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে। †কউ বলছে এখান †থকে †কউ †বক করে না। †কউ বলে †বক করে । কেউ বলে আল্লা ভরসা সব ?িক হয়ে যাবে। আলম অভয় দিলেও নিশ্চিত করে কিছু বলে না। যা আমাকে সত্যি বিরক্তির মধ্যে †ফলে দিয়েছে। †য †কান উপায়েই হউক বাবাকে বাচাঁতে হবে। †বঙ্গে পড়া যাবে না †মাটেও। এরি মাঝে রাত বিরাত ভাইয়ার †ফানের জ্বালায় বাছি না। †স খালি টাকা দিয়ে সব উড়িয়ে নিতে চায়। এমন সময় †রাদেলার †ফান †বজে উ?ে। †স †ফানের জ্বালায় অস্থির । আতœীয় পরিজন সবাই অনবরত কল করছে । কথা না বলে উপায় কি ? তাদের নানান প্রশ্নের উত্ত্র দিতে দিতে †রাদেলা হাফিয়ে উ?েছে। †রাদেলার তাই †ফান রিসিভ করতে বিরক্তি লাগছে। তাই জিন্স †পন্টের পকেট হতে †মাবাইল †বর করছে না। †ফান একবার †বজে দ্বিতীয় বার বাজতে আরম্ব করলে †রাদেলা পকেট হতে †মাবাইল †সট †বর করে বিরক্তির সাথে কর্কশ ভাষায় বললো হ্যালো †ক ?
আপু , আমি ।
আমি †ক ?
আপু , আমি নাবিলা। আমার কন্? চিনলে না।
কি বলবি বল। ?
মায়ের প্রচন্ড জ্বর এসেছে। ঔষধ খাইয়ে শুইয়ে দিয়েছি। দুপুরের খাবার নিয়ে আমি আসব । কয় জনের খাবার আনবো ?
রোমেল স্কুলে যায়নি , ও সাথে আসতে চায় । ওকে কি ? নিয়ে আসবো ?
কয়জনের খাবার আনবো মানে ? রোমেলের স্কুলে না যাওয়ার †কান কারন †দখি না। মাকে এতো বললাম †টনশন না করতে , কপালে যা আছে হবে । খাবার আনতে হবে না। তুই মায়ের মাথায় ভাল করে জল পট্রি †দ। আমি বাহিরে †খয়ে †নব। রাখি বলে †স †ফান †কটে †দয়। আলম আসছে না †কন । তাকে নিয়ে একজন সিনিয়র কনস্যালটেন্ট এর সাথে †দখা করবো। তাকে সকল রির্পোট †দখিয়ে পরামর্শ †নব । আমার বান্ধবী কলির বড় †বান পিজিতে এফসি পিএস করছে । উনাকে আসতে বলেছি উনি কিছুক্ষনের মধ্যেই এসে পেঁŠছাবে। কিন্তু আলম ? তার †কান হদিস †নই। মাঝে মাঝে এ †লাকটা এতো ভালো কিন্তু মাঝে মাঝে বিরক্তিকর।
আপা , দূর হতে বাবাকে †দখার সুযোগ †পল। এতো বছর পর বাবার সাথে তার এমন অবস্থায় †দখা হবে †স চিন্তা ও করতে পারেনি। †স প্রচন্ড কান্নায় †ভঙ্গে পড়ল। মা আপার সাথে †কান কথাই বললো না। এতে আপা আরো †বশী কষ্ট পেলো। এতো বছর পরও মা আপাকে ক্ষমা করতে পারলো না। আপাকে আজ হাসপাতাল হতে রিলিজ দিলো । †স অনেক কান্নাকাটি করতে করতে অবশেষে হাসপাতাল ত্যাগ করলো। আলম সকল কিছু অবলোকন করলে ও তার অভিব্যক্তিতে †কান পরিবর্তন †দখলাম না। মনে হয় †স খুবই শক্ত প্রকৃতির †লাক। আমার সাথে সাথে নাবিলাও অনেক কান্নাকাটি করলো । মায়ের হাতে পায়ে ধরলাম অনেক । কিন্তু মা টললো না। বাবার অবস্থার উন্নতি হলে ও জ্ঞান ফিরেনি। ইর্ন্টানিদের ধর্মঘট ভাঙ্গলো। হাসপাতাল †যন প্রাণচাঞ্চলো ফিরে †পল। সবাই কর্ম তৎপরাতায় ব্যাস্থ।
আলম আর আমি মুখোমুখি । চা, পান করছি । ওয়েটিং রুমে অন্য †কউ না থাকলে ও আলম আমার †থকে †বশ দূরত্ব বজায় রাখলো। সন্ধে রাত । চমৎকার চাঁদ । আমার বার বার †সই সকালের কথা মনে ভাসছে । মুখ ফুটে কিছু বলতে †যয়ে ও পারছি না। মন চাচ্ছে তার খুব কাছে গিয়ে বসি । তার হাতটা ছুই। কিন্তু পারছি না। সিদ্বান্ত নিতে পারছি না কি করবো। এ ক’দিনে আলমের প্রতি আমার †য অনুভ’তি জম্মেছে তাকে কি ভাষায় প্রকাশ করা যায়। আমি আমার অভিব্যক্তি প্রকাশ করতে পারছি না। মন বারবার বলছে কিছু একটা বল †রাদেলা। এই সুযোগ। এমন †রামান্টিক সময় আর পাবি না। কিন্তু আলম কি ভাববে ?
বাবাকে আই সি ইউ তে †রখে †ময়ে †প্রম করছে। ছিঃ ছিঃ । আমি এসব কি ভাবছি।
কি ভাবছো ?
কই ? কিছু না।
না বললে †জার †নই । তবে এতো প্রতিক’লতার মাঝে ও †তামার মধ্যে অন্য একটি ঝড় বইছে।
তুমি কি ? †স ঝড়ের সাথী হবে ?
আলম †কান উত্তর না দিয়ে মৃদু হাঁসলো। আমি †স হাঁসির অর্থ বুজলাম না।
চোখটা বন্ধ হলেও মগজটা সচল নয়। ভালই †তা ডায়ালগ শিখেছিস্ ?
কি ? যে কন বড় ভাই। আপনারা আছেন বলেই †তা আমরা আছি । ..
আর আমরা না থাকলে ?
আপনারা না থাকলে , আমরা নাই।
সত্যি ?
থাকতাম না †তা , আপনি দাড়াতে বললেন ।
কলোনীর খবর বার্তা কি ? সরকারী কলোনী সরকারী ভাবেই চলে । না কি †তাদের মতের উপর চলে ?
কেমনে কমু ? আপনারা বড় ভাই , আপনারাই না ভাল জান†বন।
আমরা জানলে আর †তার †থকে , জিঞ্জেস করি। ? শুনলাম †তারা সন্ধের পর এলাকায় জটলা পাকাস । †ছলে †ময়েদের পড়া †শানায় বিগ্ন ঘটাস । কলোনীর †ময়েদের †দখলে শিষ্ বাজাস ? উৎপাত করিস ?
না , ভাই । †মা?েও না। সম্পূর্ন মিথ্যা শূনেছেন ।
মিথ্যাই †যন হয়। তো, †বশভ’শা †তা ভালই লাগাইছিস।
কলোনিতে জুনিয়র গুলা আছে না। †বশ ভ’শা ভাল না হলে , ভাব লওন যায় না। দাম দিতে চায় না। ইদানিং রাজনীতি করি †তা ? আপনার কাছে †তা আর লুকানো যায় না।
ও- ও -ও , রাজ নীতি ও বুঝিস ? তয় স্কুল পাশ দিতে †পরেছিস ?
ভাই রাজনীতির লাইগ্যা , পড়া †লখা মূখ্য নয়। মূখ্য হলো সাহস ।
সত্যি ? আমার সাহস কি ? †তার †থকে কম আছে ?
আহাঃ , হায়, ভাই কন কি ? আপনার মতো সাহস থাকলে †তা আমি †কন্দ্রের †নতা হয়ে †যতাম। আপনার মতো সাহসী বীর পুরুষ কয় জন আছে ?
ভালই পট্রি মারা ও শিখেছিস †দখি । হবে হবে †তারে দিয়ে হবে । আমাদের রাজনীতির ভবিষ্যৎ খুবই উজ্জল।
উজ্জল †তা হতেই হয় । †যখানে আপনার মতো বড় ভাই আছে ।।
ঐ-ই কি কইলি ? দাড়া , দাড়া , †স কি ? আর দাড়ায় । †স দৈাড়ে পালায় ।
বাবার ঞ্জান ফিরেছে । তার শারিরিক অবস্থা এখন উন্নতির দিকে। মা এখন বাবাকে †বশী সময় †দয় । আমি বাসায় চলে এসেছি । আলম টাইম টু টাইম আমাদের সকল †খাজ খবর রাখছে। সারা দিন ঘুমানোর পর সন্ধায় আমি ঘুম হতে উ?ি । †বশ ক্লান্তি দূর হলো। ভাইয়া †বশ ক’বার †ফান করেছে। একই কথা বার বার বলে । বিরক্তি লাগলে ও কিছু করার †নই।
কিচ্ছু ভাল লাগছে না। তাই ছাদে উ?ে হাটাহাটি করছি । †কালাহল মুখর শহর হলে ও ছাদে †তমন একটা †কালাহল †নই। এইসময় যদি আলম †ফান করতো ? খুব ভাল লাগতো। ছাদে আলোর †তমন একটা ব্যবস্থা †নই। দূর হতে †য আলো †ভসে আসছে তাতেই খুব সুন্দর লাছে সারা ছাদের পরিবেশ । আশে পাশে কিছু গাছ গাছালি থাকলে ও ছাদের উচ্চতায় পৈাঁছাতে পারেনি। সে পরে †ফান করবে বলেছে। কি †যন ব্যস্থতা আছে তার। তাই আমি ও †ফান দিচ্ছি না। ছাদে একা কতোক্ষন হাটা যায়। আরেবকটা বিষয় লক্ষনীয় একা একা এখন †কান কিছুই করতে ভাল লাগেছে না । আমার †ভতরে একটা অস্থিরতা বিরাজ করলো। এমন সময় আলমের কল ।
হ্যালো, ঘুম †ভঙ্গেছে ? নাবিলা কিছু বলেছে।
হু। বলেছে । তুমি ব্যস্থ থাকবা । পরে †ফান দিবে।
গুড। †ভরী নাইস।
তুমি প্রপেশনাল কন্?ে কথা বলছো †কন ?
কই না †তা।
এখন ?িক আছে। কি করছ ? আজ সারা রাত †তামার সাথে গল্প করবো। না করতে পারবে না। কাল †তামার ছুটি।
ভালই বললে। মা †টর †পলে ??
আমি মায়ের সাথে ও গল্প করব। ওনার সাথে কথা বলতে পারলে আমার ভাল লাগবে।
এ-ই †সরেছে। সারা দিন †তা ঘুমালে কিছু †খয়েছো ?
ক্ষুধা আছে কিন্তু কিছু †খতে ইচ্ছে হচ্ছে না।
এ আবার †কমন কথা ? আগে †খয়ে নাও ।
দূর, বলছি †তা , †খতে ইচ্ছে হয় না। আমার কিছু ভাল লাগছে না । তুমি কি ? কিছু বুঝ না ?
যদি এখন বৃষ্টি নামে ।
বৃষ্টি পাবে কই এখনো শীতই †শষ হয়নি । হাঁ-হাঁ-হাঁ।
ধরো , তারপর ও যদি নামে ?
আমরা †স বৃষ্টিতে ভিজবো। তুমি আমি †স বৃষ্টিতে নাচব।
একটা কবিতা শুনবে।
হু ।
এক ফসলা বৃষ্টিতে সিক্ত নয় আকাশ
এক ফসলা বৃষ্টিতে মিষ্ট নয় বাতাস।।
দারুন । তুমি আসলে জিনিয়াস । আমি মুগ্ধ।
কেন ?
এই আমার মন ভাল করে দিলে ।
খারাপ করে †দব ?
হোঁ , †হাঁ .হোঁ। †রাদেলার হাঁসিতে ঝংকার উ?লো। তুমি পার ও। †তামার তারিফ ..
থাক থাক , †বশী দিলে †ফটে যা†ব। আসলেই আমি †সই বৃষ্টিতে ভাসছি। †তামার অবগাহনে আমার সমস্থ নদী প্লাবিত।
বাবা, †তামার কাব্যিক ভাষা বুজার মগজ এখনো আমার হয়নি।
মনের আলোয় নাচরে শখী , দিনের আলোয় নয়। তারায় তারায় ভাসরে শখী, ভ’বন ছুতে নয়।
মা †গা, তুমি †দখছি কথায় কথায় কাব্য রচনা করো।
তুমি আমার †স কাব্য †দবী।
আলম আমি পাগল হয়ে যাব। †শষে...।
শেষে সকল †শষ নয় †গা শখি , †শষে সকল জয়, †তামার আমার এ ধরাতে মিলন †যন হয়।
আলম , আলম প্লিজ । ..
হোঁ - †হাঁ - †হাঁ। তুমি না সারারাত কথা বলবে। ? গল্প করবে ?
আলম, আমার কান গরম হয়ে †গছে।
আলতো †ছায়ার বাদল দিনে একা থাকতে নয়, শশীর ছায়া কিরণ দিলে জুটি বাঁধতে হয়।
বাঃ চমৎকার। †তামার এ কাব্য গুলো আমার জন্য হলে আমার জীবন ধন্য। আমি আমার সকল প্রশ্নের উত্ত্র খুজে †নব।
তোমার কি †কান সন্ধেহ আছে ?
না। বিনিময়ে আমি কি †দব ? আমি †য আজ বড্ড অসহায়।
তোমার অসহায়ত্বটাই আমার ভীষন দরকার ।
তুমি নিতে পার আমায় ছুঁতে , দিতে পার অল্প , †তামায় নিয়ে সারাটি জীবন করে যাব গল্প।।
বাঃ চমৎকার । তুমি ও খুব ভাল কাব্য বললে। দারুন হয়েছে।
দারুন না ছাই ।। †তামার নিকট আমি শিশু।
শিশির †ভজা ভ’বন তলে, বিছিয়েছি বিছানা , শিমূল পারুল গল্প বলে, দিলো †মাদের ?িকানা।।
আলম আর বলো না।্
†কন ? †গা শখি । ?িক , আছে তুমি বলো।
তোমার নদের নীরব জলে, অশ্রু †যন ঝরে না। পাখিরা সব জানিয়ে †গলো †তামার আমার ?িকানা।।
আশ্রু ঝরবে না। কথা দিলাম ।
আমি ও কথা দিলাম ।। আমরা কতো ক্ষন গল্প করলাম ।।
এই †তা, প্রায় ঘন্টা খানেক ।
এ গল্পের †কান সীমা বদ্ধ সময় †নই। সারা জীবনেও †শষ হবে না। আলম আমি রাখি । ক্ষিধে †পয়েছে। ঘুমুতে যাব।
আলমের সাথে বাবার পরিচয়টা বাবা খুব একটা ভাল চোখে নেয়নি। যদিও আলমের তিন বেলা সেবা যত্নে বাবা বেজায় খুশি। আলম এই হাসপাতালের কর্মকর্তা হওয়ায় বাবা বেশ বাড়তি সুবিধা পেয়েছে। আমরা সুবিধা পেতে খুব একটা অভ্যস্থ নই। বাবা কখনোই বাড়তি সুবিধা পেতে অভ্যস্থ নয়। তাই সে কিছুটা বিব্রত ও বিরক্ত। আই সি ইউ থেকে বাবাকে কেবিনে আনা হলো। আলমের বদৈালতে বাবা ডাক্তার নার্স থেকে সবার খুব খাতির যত্ন পেলো। হাসপাতালের বিলেও বেশ ডিসকাউন্ট নিলো। তাই বাবা আলমকে একদিন বাসায় নেমন্ত্রন করতে বললো। বাবা আলমকে নেমন্ত্রন করলেও আত্না থেকে খুশী হয়ে করেনি বিষয়টি আলম বুঝতে না পারলেও আমি ভালভাবে বুঝেছি। যাক আলম নেমন্ত্রন গ্রহণ করেছে।
মা, বেশ ভালমন্দ রান্না করলো। আমরা সবাই খাবার টেবিলে আলমের অপেক্ষায়। দুপুর গড়িয়ে বিকেল হয় আলমের আসার কােন নাম গন্ধ নেই। মা বাবাকে বকে ঝকে আমার দােষ বাবার গাঢ়ে চাপালো। প্রথম প্রথম মােবাইল বাজলেও পরে আর সেটাও বাজলো না। কি হলো কিছুই বুঝলাম না। কােন খবর পাত্তা নেই । না আসলে ফােন করে বলবে তাে যে আসতে পারব না। এ, কােন অদ্ভুত লােক ! তার পরিচিত দুএক জনের নিকট ফােন করে কোন লাভ হয়নি। সারাদিন রােদেলা কিছু খায়নি। সে তার রুমের দরজা বন্ধ করে ভেতরে বসে আছে। সন্ধার দিকে তার মা এসে কতোক্ষন দরজা নক করে গেলো।
বাপ বেটি মিলে কাকে না কাকে নেমন্ত্রন করেছে কে জানে? এখন আমার যতো জ্বালা। উঠ, দরজা খােল। নাবিলার বান্ধবীরা এসেছে । তাের সাথে দেখা করতে চায়। কিছু মুখে দে। শরীরর খারাপ করবে য়ে। তাের বাবা জানলে রাগ করবে। দরজা খােল। এ মেয়েকে নিয়ে হলো আমার যতো জ্বালা। কারো কথা শুনবে না।
ভেতর থেকে কােন সাড়া শব্দ নেই। বিফল হয়ে মা ফেরৎ গেলেও খালা ফেরত যায়নি। আপামনি আমি খাবার নিয়ে আইছি। কেউ নাই । আমি খাবারটা দিয়ে যাই। আপনি চুপচাপ খেয়ে নিন। সেও কতোক্ষন ব্যার্থ চেষ্টা করে নিরাশ হয়ে ফেরৎ গেল।
রোদেলা আমি সত্যি দুঃকিত। সারা দিন এতো বার ডায়াল করলাম, ফােন রিসিভ করোনি। সারা দিন গড়িয়ে এখন সন্ধা ঘনিযে এলো। এখনও কথা বলছ না। কথা না বললে আমি কি করে বুঝবো যে তুমি রােদেলা। আগে শুনবে তাে কেন আমি আসতে পারিনি। তারপর যা শাস্থি দিবে আমি মাথা পেতে নেব। অনন্তত একবার হ্যালো বলো। প্লিজ। ঠিক আছে, আমি ফােন রাখলাম। আলম ফােন কেটে দেয়। আবার ডায়াল করে এবারও রিসিভ করে কিন্ত কেউ কথা বলে না। আলম হ্যালো, হ্যালো বলেত বলতে আবার লাইন কেটে দেয়। আবার ডায়াল করে এবারও কেউ কথা বলে না। এবার কিন্তু সত্যি সত্যি আবার নিরুদ্দেশ হয়ে যাব। অনন্তত হ্যালোটা বলো। তুমি কি? আমার বাপ না মা, আমি কার সাথে কথা বলছি সেটা তাে বুঝতে দিবা। আরে আজব, আমার মাথা খারাপ হয়ে গেলো।
আমি আজব না গজব চারশত চুহাত্তর বার ফােন করে টের পাইছো? আমি কে ? যে ভুল করতে চাইনি, যখন সে ভুল করেই ফেলেছি, তখন সে ভুলের মাসুল তাে আমাকেই দিতে হবে। অপেক্ষা করো আমি আসছি।
ক্যাফেতে আলম মাথা নিছু করে বসে। রােদেলা তাকে জারছে। তাে জারছে। বন্ধুদের নিয়ে এসেছো সাপাই সাক্ষী দিতে? বলি তােমার মাঝে এতো ছেলে মানুষি কেন? এতো লজ্জা সংকোচ কেন? ফােন করে বলে দিলেই তাে পারতে। আমাকে পারলে এতো ছােট করতে? বাবা,মা, সবাই কি ভাবলো? এই প্রথম আমার বাসায় আসবে? সেটাই বুন্ডুল করে দিলে ? দূর হতে তার বন্ধুরা সে দৃশ্য দেখছে আর বলছে মামা ধরা খেয়েছে। ঔষধ মশল্লা ভালই পড়ছে। রােদেলা আরো বেশী চেছিয়ে উঠলে আলমের বন্ধুরা ক্যাফে ছেড়ে পালিয়ে যায়।
ফাগুনের আগুন ঝরা দিন। চৈাদ্দ ফেব্রুয়ারী ভালবাসা দিবস। আমাদের জীবনে প্রথম এই দিবস। তাই দিনটাকে স্মরনীয় করে রাখতে আলম ক’দিন পূর্বেই আমাকে বলে রেখেছে। যথারীতি তার থেকে সেই বেলী ফুলের মালা গিফট পেলাম। অবশ্য এর সাথে আরো ক’টি বই ও সিডি গিফট হিসাবে পেলাম। নজরুল সংগীতের সিডি। নজরুল সংগীত আমার খুবই প্রিয়। সকাল সকাল রিক্সায় করে ঘুরে বেড়াচ্ছি। রিক্সায় ঘুরতে ভালই লাগছে। আলমের সান্নিধ্যটা খুব কাছ থেকে আরো বেশী উপলব্ধি করার সুযোগ পেলাম। পুরুষের স্পর্শ কি এই প্রথম টের পেলাম। আলমের অভিব্যক্তিতে সে লক্ষ্যন নেই। আমার খুবই ভাল লাগছে।ওর হাত টেনে নিয়ে ধরে রাখলাম। রিক্সা হাওয়ার বেগে চলতে লাগলো। ঢাকা শহরে প্রাণ খুলে ঘুরার জন্য রিক্সার বিকল্প নেই। আমাদের মতো আরো অনেক জুটি এমনি রিক্সায় করে ঘুরছে। প্রায় জনের হাতেই লাল গােলাপ আমার খােপায় শুধু বেলী ফুলের মালা। তার পরও খুব আনন্দ লাগছে।সে কি বাধন হারা, আনন্দ ধারা, মনে।রিক্সা টিএস সি মােড়ে এসে থামলো। এখানে পা রেখেই মনে হলো, ফুলের বাগানে প্রবেশ করলাম। হাজারো নর নারীর পদচারনায় মুখরিত সমস্থ টিএস সি মােড়। সবার চােখে মুখে আনন্দ ধারা। খুব একটা ভীড় নেই। ডাসের পেছনে ব্যান্ডের প্রােগ্রাম চলছে। আমরা সেখানে প্রবেশ না করে ডার্সের সামনে এসে দাড়ালাম। আলম কফি নিলো আমাকে দিলো আইস ক্রীম। হালকা শীতে আইসক্রীম খেতে ভাল লাগছিলো না বলে আইসক্রীম ফেরত দিয়ে আমিও কফি নিলাম। কফিটা নিয়ে ঘুবে আসতেই একটি ছেলের সাথে ধাক্কা লাগলো। কফি পড়ে ছেলেটির প্যান্ট নষ্ট হওয়ার উপক্রম। তার চেয়েও দােষটা আমার বেশী হওয়ায় আমি বেশ ক’বার স্যরি বললাম। কারন আমি খেয়াল করলে এমন হতো না। ছেলেটি মেনে নিলেও তার সাথে থাকা মেয়েটি বিষয়টা ভালভাবে নেয়নি। সে কিছুটা অশালীন ভাষা ব্যাবহার করলো, ছেলেটির বারণও মানলো না, অবশেষে আলম চােখ লাল করে ঝাড়ি দিলে সে নিভৃত হয়। কফি পানের মজা শেষ। টি এস সির ভেতরে শত শত নারী পুরুষের সমাবেশ। এদের সিংহভাগই জুটি। খােলা মাঠ লোকে লােকারণ্য। আমরাও অন্য কােথায়ও জায়গা না পেয়ে মাঠে এসে সামনা সামনি বসলাম। যে যার মতো আড্ডা দিচ্ছে। জুটি গুলো একটু বেশী করে ক্লজ হয়ে অন্তরঙ্গ হয়ে বসেছে। বিশেষ করে যারা বেলকনীতে বসেছে তারা একটু বেশী বেপরোয়া। আজকের দিনে তাদের এমন দেখেও কেউ দেখছে না। আজকের দিনে একটু আধটু এমন তারা করতেই পারে। আমারও ইচ্ছে করছে তেমন না হউক তবে কিছু একটা করতে। কিন্তু আলম যে দূরত্ব বজায় চলছে তাতে মনে হয় কিছুই করা সম্বব নয়। সে শুধু মাঝে মাঝে লুকিয়ে লুকিয়ে অন্য জুটিদের দেখছে। বিষয়টি আমার নজরে এলেও কিছু বললাম না। এমন সময় মা ফােন করলো, এই সেরেছে। এতো সােরগোলের মাঝে মায়ের সাথে কথা বললে নানা কথা জিঞ্জেস করবে। না ধরলেও বিপদ। আলম বললো একটু সাইডে গিয়ে কথা বলতে। সাইডে গিয়ে কােন রকম মাকে বুঝ দিয়ে আসলাম। উনি খুব একটি আসস্থ হতে পারলেন না।
এবার এসে আমি আলমের পাশে তার শরীরর ঘেষে বসলাম। আলম কিছু না বললেও খুব একটা ভালচোখে নেয়নি। তাই আমি নিজেই সরে বসলাম। খুব আশ্বার্য লাগলো। আজকালের যুগে এমন লােকও হয় ! আমি আমার আবেগ সংবরন করে নিলাম। মনটা খারাপ হলেও আলমকে বুঝতে দিলাম না। অন্যদিন হলে ঝগড়া হয়ে যেত। আমরা বেশ কিছুক্ষন চুপচাপ বসে থাকলাম। বাদাম ওয়ালা আসলো, বাদাম খেলাম।আলম কিছুই বলছে না। তার কি? মন খারাপ কিছু বুজতে পারছি না। কতোক্ষন এভাবে চুপচাপ বসে থাকা যায়। সে কেমন যেন অন্যমনস্ক। তবে সে কি খুশী নয় আমাকে পেয়ে? তার উদাসীনতায় তার প্রতি অভিযোগের পরিবর্তে মমতা জেগে উঠলো। আমার ভেতর শুধু তার মন ভাল করার চেষ্টা। এমন দিনে তার মন খাবার থাকবে তা হয় না।আমার মন চঞ্চল হয়ে পড়লো। তাকে কেমন যেন ভয় ভয় লাগতে লাগলো। আমি অসহায় হয়ে পড়লাম। সে যা চাইবে তাই করতে। এখন বুজলাম মা কেন বাবার প্রতি অসহায়। ভালবাসা মানুষকে কতোটা অসহায় করে দেয় আমি ছাড়া এখন আর কে? বেশী বুঝবে? আলম যা চাচ্ছে আমি অসহায়ের মতো তাই করলাম। সে টি এস সি ছেড়ে বাহিরে বের হলো কােন কারন ছাড়া। এই আনন্দ ঘন পরিবেশ ছেড়ে যেতে মন চাইছিল না। রিক্সা নিলো।আমার অনুযোগ ষত্বেও। কােথায় নিলো তাও বুঝরাম না। রিক্সা চলছে আমরা চুপচাপ রিক্সায় বসে। আলম কি হয়েছে? কিছু বলছো না যে। সে কােন উত্তর দিলো না। রিক্সা চলছে।এমন ফাগুন দিনে আগুন ঝরা প্রেমের পরিবর্তে আমরা নিরুত্তাপ।রিক্সা প্রেস ক্লাব অতিক্রম করে পল্টনের দিকে এসে পড়েছে। আমার মন খারাপ হলেও কিছুই তাকে বুঝতে দিলাম না। এতো সুন্দর একটা পরিবেশ হতে সে আমাকে তুলে নিয়ে এলো। মন মােটেই চাচ্ছিলো না সেখান হতে আসতে। পল্টন মােড় হতে রিক্সা বামে মােড় নিলো। কিছুদূর এগিয়ে রিক্সা থামলো। ভাড়া চুকিয়ে আলম আমাকে নিয়ে কিন্নরী নামক একটি খাবারের রেস্টুরেন্টে প্রবেশ করলো।খুবই চমৎকার পরিবেশ। পরিস্কার পরিচ্ছন্ন। এখন বুঝলাম ছেলেরা কিভাবে মেয়েদের উপর ছড়াও হয়। তাদের অসহায়ত্বের সুযোগ নেয়। আলম আজ আমাকে যে কােন কিছু করলেও আমার কােনোর উপায় ছিলো না। আমার কঠিন না হয়ে উপায় নেই। যে কােন পরিস্থিতি সামাল দিতো পারাটাই বড় কথা। খাবার আসলো বড় বড় রুপ চাদা মাছ ভাজা। অনেক দিন পর এমন ভাজা মাছ। দেখে জিবে পানি এসে গেলো।আলম ইশারা করলে খাওয়া আরম্ব করলাম। এ মাছ খুবই সুস্বাধু। আমরা দুজনই তৃপ্তি সহকারে খাচ্ছি। আলম তখনো নিশ্চুপ। যাক কখন যে এতো খিদে পেয়েছে টেরই পেলাম না। আগে পেট পুরে খেয়ে নিই তারপর দেখা যাবে কি করা যায়। সে কেন চুপচাপ। তার কি মন খারাপ না বাহানা, নাকি সে কোন ফন্দি আঁটছে। একটু পর আসলো বড় চিংড়ি মাছ বুনা।ওমা, এতো লাগবে না। আলম ইশারা করলো খাও। চিংড়িও নিলাম। কিন্তু খেতে পারছি না। রুপ চাদা খেয়েই তাে পেট পুরে গেলো। তারপর চিংড়ি বলে কথা ছাড়লাম না। তাও খেয়ে শেষ করলাম। পেট এতো বেশী ভারী হলো যে নড়তে পারছি না। আলম পান আনালো, পান খেলাম। যদিও পান আমি খাই না তথাপি পান খেলাম, মন্দ না। পান ভালই লাগলো। কিছুটা নেশা নেশা লাগলো। আলম পানে কিছু মিশিয়ে দিলো না তাে? দিলে দিক। আগে মজাটা নিয়ে নিই। ডুলো ডুলো লাগলো সব কিছু। নিজকে সামলে খাবার হােটেল হতে বের হলাম। আলমকে ধন্যবাদ দিলাম খাবারের জন্য। বের হতেই জোড়ো হাওয়ার কবলে পড়লাম। খুব জোরালো হাওয়া, এই দিনে এমন হাওয়া আষার কথা নয়। যাক, হাঅয়া কমলে, রিক্সার জন্য আমরা দাড়িয়ে অপেক্ষা করলাম।রিক্সা পাচ্ছে না আলম। অনেকক্ষন অপেক্ষার পর রিক্সা পাওয়া গেলো। আমরা আবার রিক্সায়। রিক্সা কিছুদূর এগোনোর পর আমার নেশা কেটে গেলো। এবারও বুঝলাম না রিক্সা কােন দিকে যাচ্ছে। রিক্সা চলছে। আমি আলমের বাহু জড়িয়ে ধরে আছি। সে চুপচাপ নির্বিকার। আমার মতো রুপোসী মেয়ে পাশে পেয়েও একটা লােক কি ভাবে চুপচাপ থাকতে পারে? অদ্ভুদ ! ব্যাপার। সে শুধু চুপচাপই নয় বেশ গম্ভীর। কেন এতো গম্ভীর আজ, তা আমার বাধগম্য নয়। সে কি আমাদের প্রেমকে অনেক বেশী শ্রব্দ্রা করে? না কি এমনি কঠিন লােক। বুঝলাম না। নাকি রােমান্টিক। নাকি আমার জন্য আরো কিছু সারপ্রাইজ আছে। নাকি কােন মতলব আটছে। কােনটি বুঝে নেব। এই দূর বেধ্য লােককে রিড় করাই মুশকিল। যাক যা হবার হবে। তবে সাবধানে থাকতে হবে। পুরুষ মানুষ যে কােন সময়ে হিংস্র হয়ে উঠতে পারে। তাদের খুব বেশী বিশ্বাস নেই। রিক্সা শান্তি নগর বাজার অতিক্রম করে এখন শান্তি নগর মােড়ের একটু আগে। কিছুটা জ্যাম। জ্যাম ঠেলে রিক্সা বামে মােড় নিলো। বুজলাম রিক্সা বেলী রােডে প্রবেশ করলো। এ আরেক বাঙ্গালীর প্রানের জায়গা। যদিও ধরা হয় এটা উচ্চবিত্তের আড্ডাস্থল। রিক্সা এসে বেলী রােডের মাঝামাঝি থামলো। বেলী রােড আরো বেশী জমজমাট। জুটির আর শেষ নেই। সবাই বেশ ঝাঝালো সাজে সেজে। নেশা জাগানো পারফিউম সবার শরীরে। গােলাপ ফুল প্রায় নারীর খােপায়। আমি ব্যাতীত। জুটিদের পাশাপাশি অনেকে আবার পরিবার পরিজন নিয়েও এসেছে। ফাষ্ট ফুড গুলোয় বাচ্ছারা খেলা ধুলায় ব্যাস্থ। বেশ ভীড় । ভীড় ঠেলে দােতলার একটি ফাষ্টফুডে এসে আমরা বসলাম। আলম এখনোও চুপচাপ। আমার পেটে জায়গা নেই কিছুই খাব না তারপরও আমার জন্য আইসক্রীম নিলো, সে কফি। সে উদাস মনে কফি গিলছে আমি গিলছি তাকে। তাকে দেখতে আমার খুবই ভাল লাগছে। কেন তাকে বার বার দেখতে ইচ্ছে করছে বুজতে পারছি না। কিন্তু ভাল লাগছে দেখতে। প্রান ভরে তাকে দেখতে লাগলাম। এমন সময় আলমের মােবাইলে ফােন আসে হ্যালো কে?
দোস্থ, আমি আনিস।
ও, দােস্থ, কেমন আছিস? কি মনে করে? অনেক দিন পর, কােথায় তুই ?
বাসায়। এমনি। অনেক দিন কথা হয় না। ব্যস্থতার কারনে কল করা হয়নি। আজ হঠাৎ মনে পড়লে, অমনি কল দিলাম। তুই †কাথায়?
আমি বেইলী রােডে।
বেইলী রােড়ে? তু - ই, বেইলি রােড়ে?
কেন? বিশ্বাস হয় না?
বিশ্বাস কি করে করি? তুই যে ধাঁচের মানুষ! আসলেই বিশ্বাস হয় না।
আরে আমি একা না। সাথে আরো কেউ আছে।
আরো কেউ মানে? বিশেষ কেউ ? তুই আমার সাথে পাজলামি করছিস। বাদ দে, কেমন আছিস?
আবশ্যই বিশেষ কেউ। পাজলামো নয়। সিরিয়াস ইস্যু। বিশ্বাস না হলে আয় দেখে যা।
ঠিক আছে, আমার বাসা এখন বেইলী রােডে, তুইও বেলি রোডে, বিষয়টি কাক তালিয়,তুই আয়। আমার বাসায় আয়। অনেক দিন দেখা হয় না। বন্ধুত্বের মাঝে ধুলোর আবরন পড়ে গেছে, আসলে বিষয়টি ঠিক নয়, বন্ধুত্ব ধরে রাখা জরুরি।
বুঝলাম না। বাসা কই বললি? বেইলী রােড? হাসালি, কভে আসলি? আর এখন কি ভাবে আসি। সাথে যে আছে। সে কই ভাববে? অন্য দিন, বন্ধু ধন্য বাদ।
অন্য দিন নয়, আজই আয়, এতো কাছে এলি, আর বাসায় আসবি না, তা কি করে হয়, সমস্যা নেই। এলে খুশী হব। খুব খুশী হব।
দেখি আসতে পারি। তুই কােথায়ও বেরুবি না?
না, দােস্থ, আমার কােন প্রােগ্রাম নেই। আমি তােদের অপেক্ষায় থাবলাম। আয় এক সাথে চা খাব।
ঠিক আছে, অপেক্ষায় থাক। চেষ্টা করব, আমরা আসবোনি। আসলে ভাল মন্দ রাধিস, রাতে ডিনার করে বের হব।
রোদেলা মনে মনে ভাবে যা সন্দেহ করেছিলাম, তাই হলো। আজকের দিন না হলে .. । তারে আমি বুঝাইতাম ..। যাক, মাথা গরম করা যাবে না। দেখি চান্দু কি করে। তার মধ্যে এখনো কােন পরিবর্তন নেই। সে কফি শেষ করে বলে চলো, আমার দিকে এখনো তার কােন নজর নেই। তার ভাবসাব বুজে উঠতে পারছি না। আমরা বেরিয়ে পড়লাম। আমার আইসক্রীম খাওয়া তখনো শেষ হয়নি। আমি আইসক্রীম খেতে খেতে আইল্যান্ড ধরে আলমের পিছন পিছন পশ্চিম দিকে হাটতে লাগলাম। আইল্যান্ড গুলো সব হকারদের দখলে। সে কিছুই বলছে না, বুঝতেও পারছি না কোথায় যাচ্ছে, দেখি চান্দু আমারে কই লইয়া যায়। যদি উল্টাপাল্টা কােথায়ও যেতে বলে তবেরে.. । যা, কি সব ভাবছি? এমন নাও তাে হতে পারে। হাটতে হাটতে আমরা মহিলা সমিতি নাট্য মঞ্চের সামনে এসে থামলাম। নাট্য পাড়া আরেক প্রাণের জায়গা। কতোদিন ভেবেছি এখানে এসে আড্ডা দেব। নাটক দেখবো। দুপুর গড়িয়ে সন্ধা হবে। জীবন থেকে ছুটি নেব। জিবঙ্কে না গড়ে হারিয়ে যাব অরন্যে। আলস্য আর অবসন্নতার সাথে আড্ডা হবে। চা সিঙ্গারায় ক্ষুধা তাড়াবো। সন্ধের নাটক শেষে বাড়ী ফিরব। কিন্তু সময় আর সুযোগের অভাবে তা আর হয়ে উঠেনি। আলম অবশ্য আমার এ শখের কথা জানে। সে অনেকবার বলেছে আসার জন্য। আসা হয়নি। ও মা, উনি দেখছি মহিলা সমিতিতেই ডুকছে। আমিও তার পেছন পেছন গেলাম। সে গেটে কি যেন জিঘ্যেস করে আবার বেরিয়ে পড়লো। পাশেই গাইড হাউস নাট্যমঞ্চ সেখানে প্রবেশ করলো। কি দূরবেধ্য লােক বুঝতে পারছিনা কিছু। কাকে যেন ফােন দিলো, আমরা গাইড হাউসের সামনে গাছের নীচে দাড়ানো। কিছুক্ষনের মধ্যে বেশ সুঠাম এক ভদ্র লােক এসে তার সাথে করমর্ধন করলো। দেখেই বুঝা গেলো নাটকের লােক। ডিসিপ্লিন আর নিয়মের লোক। আমার সাথে আলম পরিচয় করিয়ে দিলো, তার ছােট বেলার বন্ধু। সে বললো দেখেই বুঝেছি তোর অর্ধাঙ্গানি। ভাল করেছিস, অনেক দিন পর খুব খুশী হলাম। তোর একটা ব্যবস্থা হল, অবশেষে। আমি ভেবেছি তুই একা, একাই থেকে যাবি, সারা জীবন। ভাল, ভাল করেছিস, খুব খুশী হলাম বন্ধু। তার কথা আমার খুব ভাল লাগলো। সে খুব সুন্দর একটা কমেন্ট করলো। সে চা, খেতে বললো। আলম বারন করলো। সে বললো তা হলে, তােরা অপেক্ষা কর, আমার তাড়া আছে। সন্ধায় শাে – অনেক কাজ বাকী। সে ভেতরে চলে গেলো। আমি এখনো কিছু বুঝলাম না। আমরা .. অপেক্ষায়। তখন পড়ন্ত বিকেল। নাট্য কর্মীদের খুব ব্যস্থতা সন্ধায় নাটক। গাইড হাউজের সামনে বেশ ফাকা জায়গা। কিছু গাছগাছাড়িও আছে। আমাদের মতো আরো কয়েকটা জুটি গাছের নীছে দাড়িয়ে ছুটিয়ে আড্ডা দিচ্ছে। আলম চুপচাপ আমিও চুপচাপ। অনেকক্ষন পর জিঞ্জেস করলাম কি কিছু বলছো না যে। এভাবে কতক্ষণ চুপচাপ থাকবে। কতক্ষণ কথা না বলে থাকা যায় ? তবে কেন আমায় সাথে আনলে? আমার সঙ্গ ভাল না লাগলে আমি চলে যাই। সে কােন উত্তর দিলো না। আমারও আর সেধে তাকে বেশী কিছু জিগ্যেস করতে ভাল লাগলো না। সন্ধে হয়ে এলো, সে চা নিয়ে এলো, আমরা আনমনে চা খেলাম যে যার মত। এমন সময় তার বন্ধু দুটো টিকেট নিয়ে এলো। আমাদের জন্য আগেই উনি দুটো টিকেট ম্যানেজ করে রেখেছে।আজকের দিনে টিকেট পাওয়া দূরহ ব্যাপার। আমার ভেতরটা আনন্দে নেচে উঠলো, কিন্তু প্রকাশ করলাম না। কতো দিনের ইচ্ছে, নাট্য পাড়ায় এসে মঞ্চ নাটক দেখবো। কতো ইচ্ছে জলে গেল, পুরন হল না, সঙ্গী, সুযোগের অভাবে মেয়েদের যতো ইচ্ছেই অপূর্ণ থেকে যায়। আজ আমার সে একটি ইচ্ছে পূরণ হবে, ভাবতেই ভাল লাগছে। মঞ্চ নাটকের আবেদনই ভিন্ন। টিভিতে ভিবিন্ন সাে এর খবর দেখে দেখে মনে মনে কতো কি লালন করতাম। থিয়েটার মিশন নামক ন্যাট্য গোষ্ঠীর পরিবেশনায় নাটক ” ভালো বাসার অহংকার ” মঞ্চায়িত হবে। আমরা নাট্য মঞ্চে প্রবেশ করলাম। তখন সন্ধে বেলা। পাশাপাশি দুটো সিটে বসলাম। কিছটাু আফচা আলো। ভাল করে সব কিছু দেখা যাচ্ছে না। আমি আলম হতে বেশ দুরত্ব বজায় রেখে বসলাম। সে কিছু কাছাকাছ আসার চেষ্টা করলো। আমি আরো দূর ঠেকে বসলাম। সে আমার হাত ধরার চেষ্টা করলো। মেজাজটাই খারাপ হয়ে গেল। সারাটি দিন আমার মাটি করে দিলো। এখন আসে ভাব দেখাতে। আমি অনেকক্ষন লপটা লপটি করার পর ..।
স্যরি, তােমার সাথে একটু মজা করলাম। সারপ্রাইজ দেওয়ার জন্যে।
এমন দিনে এমন মজার কােন মানে হয় না। আমার সারাটা দিন মাটি করে দিয়ে এখন ..।
রহস্য করলাম ।
এমন রহস্য আমি চাইনি।
তোমর সাথে রহস্য না করলে, কার সাথে করবো। আমি কিন্তু মনে মনে অনেক মজা পেয়েছি।
মজা, তাে পাবেই। আমাকে কাঁদিয়েই তােমার যতো আনন্দ। সব পুরুষই এক। তারা মেয়েদের কাঁদিয়ে মজা পায়। তুমিও ভিন্ন কেউ নও। কতো, কি না ভাবলাম। প্রতি মুহুর্তে আমার নাভিশ্বাস আসে আর যায়। তােমার এ দূরবেধ্য রুপ, রিড করা আমার মতো সাধারন নারীর জন্য সত্যিই দূরহ ব্যাপার। হাত ছাড়।লোকে কি ভাববে?
বেশী জোরাজুরি ভাল নয়, হাতটা একটু ধরি। যা খুশি তা ভাবুক। আর ছাড়ছি না।
একুশের ভৈার। সকালের প্রভাত ফেরিতে আলম রােদেলা পাশাপাশি দাড়িয়ে। শত শত নর নারীর মতো তারাও শহীদদের শ্রদ্বা জানাতে এসেছে শহীদ মিনারে। শিশুদের সরব উপস্থিতিও চােখে পড়ার মতো। তারা গালে শহীন মিনারের উলকি একে এসেছে অনেকে। ভালই লাগছে দেখতে। দীর্ঘ অপেক্ষার পর আলম ফুলের তােড়ার সাথে সেই বেলী ফুলের একটি মালাও শহীদ মিনারে অর্পন করলো। বিষয়টি রােদেলার চােখ এড়ালো না। রােদেলা যে বিষয়টি দেখেছে আলমকে সে সেটা বুজতে দিলো না। শহীদ মিনারে কখনো গান বাজছে কখনো কবিতা আবৃতিতে মুখরিত হয়ে উঠছে সমস্থ শহীদ মিনার প্রাঙ্গন। সবার চােখে মুখে শােকের ছায়া ও গভীর শ্রদ্ধা। ঝাকে ঝাকে নারী পুরুষ আসতেছে আর বেদীতে ফুল ও শ্রদ্ধা অর্পন করছে। নারীদের পরনে সাদা শাড়ীতে কালো পাইড় কেউ কেউ আবার কালো শাড়ি পরেছে। পুরুষদের পরনে সাদা পান্জাবী। ভালই লাগছে। সবাই একই সুরে গেয়ে উঠে আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙ্গানো .. আমি কি ভুলিতে পারি। গানের মূর্ছনায় আকাশ বাতাস ভারী হয়ে উঠে। বেশ লক্ষনীয় আলম গভীর ভাবে সেই সুরে হারিয়ে যায়।
কোন এক সময় আমরা শহীদ মিনার ছেড়ে বই মেলা প্রাঙ্গনের দিকে হাটতে থাকি। কিছুদুর এগুনোর পর ফুটপাতের একটি চা দােকানে আমরা প্রবেশ করি। আলম চায়ের কথা বলে একটি টুলে বসে আমাকে পাশে বসতে বলে, এমন সময় একজন হকার এসে আলমকে একটি পত্রিকা ধরিয়ে দেয়। আলম সে পত্রিকা পড়তে আরম্ব করলো, পত্রিকা নেড়ে ছেড়ে আলম চা, খেতে আরম্ব করলো। আমি যে তার পাশে আছি সেটা তার নজরেই এলো না। অনেকক্ষন পর সে.
রোদেলা, তুমি কি খাবে?
এখানে কি আছে ? যে খাব।
যা আছে আপাতত তাই খাও। পরে আমরা ভাল করে নাস্তা করব।
চা, ছাড়া আর কিছু আছে যে মুখে দেব। আমার প্রতি তোমার এতো উদাসিনতা ভাল নয়।
ঠিক, আছে, এখন চা গিল, বলতে বলতে, বলে পত্রিকার পাতা উল্টানো যায় না। কি যে ভয়াবহ চিত্র। খুন খারাপি। একসিডেন্ট। ধর্ষন । মারামারি। ইত্যাদি। ভাল তেমন কিছু নেই।
আবার কেন, এগুলো? তুমি কি আমাকে একটু স্বস্থি দিতে পার?
হো -- হো -- হাে ।
এখানে হাঁসির কি হলো? যখনি তােমার সাথে থাকি এমন নীতি কথা ছাড়া কিছুই পাই না। একজন নারীর মন কি চায় তা কি তুমি বোঝ? নাকি বুঝেও না বোঝার ভান কর।
যা, আমাদের প্রত্যাহিক জীবনের নিত্য সঙ্গী। জীবনের সাথে ঔতোপোতো ভাবে জড়িত। তুমি তা থেকে কিভাবে মুক্তি চাও? আড়ালে থাকতে চাইলেই সব আড়াল হয়ে যায় না। এগুলোর সাথেই মিলে মিশে থাকতে হয়।
তোমার সাথে পেরে উঠা মুশকিল। বড্ড ক্ষিদে পেয়েছে।
চলো, .. চা শেষ না করেই তারা বেরিয়ে পড়ে।
বই মেলা। বাঙ্গালীর প্রানের মেলা। বাংলা সংকৃতির সব চেয়ে বড় উৎসব। অপরুপ সাজে সেজেছে সমস্থ বই মেলা প্রাঙ্গন। সুন্দর সুন্দর দােকানপাট। চমৎকার একটি পরিবেশ। এখানে এলে হৃদয়ের শাখা প্রশাখা আনন্দের হর্ষ ধ্বনি ছড়ায়। চারিপাশ বড় বড় গাছগাছাড়ি দ্বারা ঘেরা। প্রাঙ্গনের ভেতরেও কয়েকটি গাছ আছে। বট তলা তাে বিশাল বট গাছের নীচেই। এই সেই সাদা ভবন যার নাম বাংলা একাডেমী। খুব উচু বা বড় দালান নয় এটি। ইহা পূরনো আমলের একটি ত্রিতল বা তার বেশী একটি বড়সড় ভবন। যাহা বাংলা সাহিত্যের ধারক ও বাহক। আলম কখনো এ ভবনে প্রবেশ করেণি। থরে থরে বই দিয়ে সাজানো গােছানো সমগ্র বই মেলার প্রতিটি দােকান বা স্টল। প্রচুর নারী পুরুষের সরব উপস্থিতিতে জমজমাট সমগ্র বই মেলা প্রাঙ্গন। এখানে আসলে আমার প্রানটা জুড়িয়ে যায়। আগে এমন ছিলো না। লম্বা লাইন ধরে প্রবেশ করা। নিরাপত্তা বেষ্টনী অতিক্রম করে আসা। আমাদের জাতি সত্তা কতো দূর্বল হলে ..?
রোদেলা আলমের হাত ধরে এক ষ্টল থেকে অন্য ষ্টলে ঘুরে ঘুরে বেশ কিছু পছন্দের বই ক্রয় করে। আজ একটু বেশী ভীড়। পড়ন্ত দুপুর।
একুশে ফেব্রুয়ারীতে বড় বড় লেখকরা আসে বই মেলাতে। দর্শকরা লাইন ধরে অটোগ্রাফ নেয়। রােদেলাও ভীড় ঠেলে কয়েক জনের অটোগ্রাফ সংগ্রহ করে। এতে সে বেজায় খুশী। আলম তাকে বেশ কয়টি বই গিফট করে।
প্রচুর নর নারীর সমাগম এখানে। আলম কয়েক জনের সাথে কিছুটা দুষ্টমি করলেও রােদেলার কারনে কারো সাথেই বেশী সময় দেয়নি। সে নিজেকে কিছুটা আড়াল করে চলে, তেমনি ডাগোর চােখের এক রমনী আলমকে চিনে ফেলে। সে আলমের কবিতার খুব ভক্ত।
আরে, আলম ভাই যে, আপনি এতো ভাল লিখেন। আপনার কবিতা পড়ে আমি মুগ্ধ। কেমন আছেন ?
কি আর ? এমনি লিখি। সময় পার করা আর কি। কবিত্ব ধাছে কুলায় না।
না-না। আপনার লিখা চমৎকার। গতানুগতিক নয়। অনেক ভাল। আপনার বই আমি সব সময় সংগ্রহ করি। অনেক ভাল লিখেন।
ধন্যবাদ। আসলে মননের চর্চা বৃদ্বি করা জরুরী। মননের চর্চা অনেক কমে গেছে।
এবার কার থেকে বের করলেন? কি নামে ?
এবার বের করিনি।
কেন ? আপনার লিখা আমার মুখস্থ, কতো সুন্দর ও নান্দনিক লিখেন,
হে, যত শত মহাকাল
শিশির হাসিল কাল
মহা বিশ্বে তুমি দাঁড়াওনি ক্ষণকাল
তাহার সাথে তোমার দেখা হবে কি আগামী কাল ?
কি চমৎকার লিখনি, কেমন আবৃত্তি করলাম ? এতো ভাল লিখেন, আর বলছেন বই বের করেননি, কেন ?
সময় হয়নি। তা ছাড়া ইহা আমার নেশা। পেশা নয়।
এটা কোন ভাল উত্তর নয়, আত্নার সাথে চলনা, সবার ভাল লিখার যোগ্যতা থাকেন না, আর আপনি যোগ্যতা থাকা সত্বেও লিখছেন না? অদ্ভুদ।
দেখুন, "গোলাপের ডাটায় ভাল অর্থনীতি না থাকলে সে গোলাপ ভাল সূগন্ধি ছড়ায় না"
অসাধারন, অসাধারন উক্তি, অথচ লিখছেন না, হাসালেন।
আমি বোধ হয় আপনাকে বিষয়টি বোঝাতে পারলাম না।
না বোঝার কিছু নেই। তেমন সমস্যা হলে, পেশা না হওয়াটাই ভাল। বাস্তবতা তাে অস্বীকার করা যায় না। তবে আপনি পত্রিকায় তাে লিখতেন। কিছু দিন পূর্বেও পত্রিকায় পড়েছি আপনার কবিতা
হে, তরুলতা, শোননি নিঃসঙ্গ নদীর কাব্য গাঁথা
সে তোমায় নয়, নারীর ছন্দ, চঞ্চলতা খোঁজে
উদাস পথের শেষে নয় শুরুতে ।।
কি চমৎকার লিখনি, অথচ,
পত্রিকায় মাঝে মাঝে লিখতাম। তবে কবিতার কদর কমে গিয়েছে।
ঠিক বলেছেন, গুনি মানুষের কদর কমে গিয়েছে। তাদের উৎসাহিত না করলে তারা হারিয়ে যাবে। জাতি হারাবে মেধা ও দিক নির্দেশনা।
আপনার মতো করে সবাই ভাবলে ভাল হতো। ভাল থাকুন। একটু তাড়া আছে।
ঠিক আছে, ঠিক আছে। আসুন। ভাল থাবেন, শুভ কামনা রহিল, চেষ্টা করবেন চালিয়ে যেতে,
জি জি আসি, কি খাবে? আইসক্রিম ?
না, কিছু খাব না,
কেন? কিছু খাবে না?
আমি কি তোমার পাশে ছিলাম? তোমার এত বড় একটা প্রতিভা অথচ এতো দিনেও আমি জানি না, আমি কি তোমায় সম্মান করতাম না,
তোমায় নিয়ে আমি কি গর্ববোধ করতাম না ?
সরি, আসলে খেয়াল করা হয়নি। আমার মত নগণ্য কবির পরিচয় দেওয়ার মত কিছু নেই।
হু, নিজকে ছোট ভাবলেই ছোট, কেহই ধরেই বড় কবি বনে যায় না, তার জন্যে সময় লাগে, ধৈর্য ধারন করতে হয়, শ্রম ও সাধনা লাগে, সময় দিতে হয়। আসলে আমাকে নিয়েই তোমার চরম উদাসীনতা। ঐ মহিলার সাথে তো যে ভাবে সিরিয়াসলি আলাপ করলে আমি যে তোমার পাশে কেউ একজন আছি তা পাত্তাই দিলে না, তাছাড়া ঐ মহিলার সাথে কিসের এতো সখ্যতা ? শুনি ?
তুমি তো রেগে গেলে, অবশ্য রাগলে তোমায় চরম লাগে।
প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে ভালই আলুপাম মারা শিখেছ। সব না বুঝলেও কিছু খুব ভাল বুঝি। বিশেষ করে তোমায়। মেয়ে মানুষ দেখলেই মুখ থেকে কথার ফুলঝুরি বের হয় ? শুনি ?
মন বড় কর।
মন বড়ই আছে, দু চার কথা বলে ছেড়ে দিলেই হত, এত কিসের মাখামাখি।
কি এমন মাখামাখি করলাম, তুমি নিজ চোখে দেখেও দেখনি ? যাক, কবিতা শুনবে
নৈঃশব্দের মগ্নতায় বিবর্ণ হেমন্তে
বৃষ্টি মুগ্ধ সুর, বিষণ্ণ দরজায়
তুমুল বর্ষায়, দৃষ্টির অনতি দূরে, কে তুমি ?
জলজ জলাধারে শিশিরের শিষ দাও
আমার সমস্থ বসন্ত জুড়ে তাহার স্পর্শ,
কি করে তাকাই তোমায় ?
হু, আমার দিকে তাকানোর ফুসরত কোথায় তোমার, মনে অন্য কেউ থাকলে ?
খোদার কসম মনে অন্য কেউ নেই, তুমি ছাড়া।
রোদেলা হেসে উঠে, সত্যি ?
হু, কি খাবে ? আইসক্রিম ?
না, চটপটি।
চটপটি তাে পাবে বিকেলে। এখন আইসক্রীম খাও।
তুমি খাও। আমি খাব না।
কেন, আবারও রাগ করলে? তোমাদের মেয়েদের ক্ষণে ক্ষণে রাগ, তোমাদের বোঝা বড় দায়।
ঐই মহিলার সাথে তোমার কি এতো কথা ?
কি কথা তুমি দেখনি?
দেখলেও ভাল শুনিনি, সত্যি করে বল, তাহার সাথে তোমার কিছু নেই তো ?
না, নেই। কয় বার কসম কাড়ব?
তবে, তোমার কবি পরিচয় লুকালে কেন ?
কবিদের পরিচয় দেওয়ার মত কিছু নেই।কবিদের সংসার ধর্ম ভাল হয় না। আকাশে চাঁদ উঠলে সবাই দেখতো। আমার মতো নগণ্য কবির কে খােজ রাখে?
সবার কাছে নগন্য হলেও আমার নিকট সেটা অমূল্য। আমি তোমার এ পরিচয়কে সম্মান করি। সারা দিন তােমার সাথে ঘুরবো আর তােমার কবিতা আবৃতি শুনবো। সন্ধের মেলা প্রঙ্গনের সাংকৃতিক অনুষ্টান শেষ করে তারপর বাড়ী ফিরব। তুমি বারন করতে পারবে না।
কফিটা চমৎকার লাগলো। আরো, বই মেলার কফি। কফি হাউজের সেই আড্ডাটা .. । আড্ডার দিন গুলো মনে বেশ নারা দেয়। আড্ডার গন্ডি পেরিয়ে এখন আমরা ঝাজালো যাপিত জীবনে। একবার, এই বই মেলায় আড্ডা দিচ্ছিলাম সতীর্থদের সাথে। আমাদের এক বন্ধু চারুকলার। সে বললো তার এমন একজন নারী চরিত্র দরকার যে হবে লাবন্যময় নারী কিন্তু চেহারায় থাকতে হবে কাঠিণ্যতা। তবে সে সেই নারীর ছবি আকবে এবং যে এই নারী ম্যানেজ করতে পারবে তাকে সে শেরাটনে ব্যুফেতে খাওয়াবে। এমন নারী পাওয়া ভারী দুস্কর। বন্ধুরা সব এদিক সেদিক ছুটল, দেখলো মহা উৎসাহ নিয়ে কিন্তু মিলাতে পারলো না। সবাই যখন হতাস তখন হঠাৎ একজন আমাকে ইন্ডিকিট করলো যে আলমই পারবে। আমার খুব একটা আগ্রহ না থাকলেও সবার চাপে অবশেষে আমি তেমন একজন নারী খুজতে লাগলাম। পুরো বই মেলা খুজলাম কিন্তু মিললো না। বই মেলার বাহিরে খুজলাম অনেকক্ষন, তাও মিললো না। হাত পা ব্যাথা করে, বাহিরের ফুটপাতে বসে রইলাম। হঠাৎ চােখে পড়লো তেমনি এক রমনী উত্তর দিক হতে মূল সড়ক ধরে হেটে আসছে। মাথায় টুপি। পরনে জিন্স। চােখে চশমা। পিঠে জুলানো বেগ। দূর হতে মনে হলো পুরুষ কিন্তু যতো কাছে আসতে লাগলো তখন বুজলাম, নারী। খুবই রুপোসী কিন্তু চেহারা সত্যি কঠিন। কিন্তু এই কঠিন চেহারার নারীকে বশে আনি কি করে? যা জটিল আর র্দূবেধ্য। বুকে সাহস নিয়ে উঠে দাড়ালাম, যা হবার হবে। তার পিছু পিছু হাটতে লাগলাম। কিছুটা দূর পর্যন্ত তার গতিবিধি আবলোকন করলাম। কিছু বললে, চটে যায় কিনা? বন্ধুরা সবাই হেসে শেষ, আলম গেছে। আরেকটু হাটার পর ইছকুইজ মি। সে থমকে দাড়ালো।
জি? আমাকে ?
জি, আপনাকে।
কেন ? আপনাকে তাে চিনিতে পারলাম না।
চিনতে পারলেন না, চিনে নেবেন। অপরিচিত থেকেই তো মানুষ কোন এক সময় পরিচিত হয়। তাছাড়া একজন মানুষ একজন মানুষের সাথে কি কথা বলতে পারে না?
আবশ্যই পারে। যদি সেটা ক্ষতিকর না হয়।
অবশ্যই ক্ষতির হবে না। আপনি বিশ্বাস রাখতে পারেন।
ইন্টারেস্টিং ।
আপনি যদি আমাদের একটু সময় দিতেন ..।
আমাদের মানে ? আপনি তো একা ?
জি, একটু শুনুন, তাকে সব খুলে বললাম, সে হেসে অস্থির।
পরে সে আমাদের বন্ধু হলো। অনেকদিন হয় যােগাযোগ নেই।
কিভাবে বিশ্বাস করবো যে যােগাযোগ নেই ?
তোমাদের নারীদের সেই একই রােগ, সন্ধেহ করা। ইহা না হলে তােমাদের পেটের ভাত হজম হয় না।
তুমি দেখি রেগে গেলে? সন্ধেহ করব তো কি করব ? জাগায় জাগায় তোমার জন্যে নারীর সব্ধান পাই। নিজ চোখে দেখলাম। তারপরও
রাগবো না? তােমরা রাগতে পার, আমাদের রাগে কি? কােন নিষেধাঙ্ঘা আছে ?
নিসেধাঙ্ঘা কারো নেই, চল বাড়ি ফিরে যাই।
কেন ?
বাড়ি গিয়ে, দুজন দুজনার মুখোমুখি বসে থাকি।
বাড়ি কেন যাব ?
না, বাড়ি যাই। এখানে আর একদণ্ড নয়।
স্যারি, সত্যি আমি দুঃখিত। আমি দুষ্টমি করলাম।
তা বুঝলাম। চলো বাড়ী যাই।
তুমি এমন রাগতে পারো? বই মেলা না হলে তােমায় আমি জড়িয়ে ধরতাম।
জড়িয়ে না ধর হাতটা তাে ধরতে পারো। রােদেলা আলমের বাহু জড়িয়ে ধরে হাটতে লাগলো। আলম সত্যি বিমোহিত।
আলম কবিতা বলতে বলতে মেলার শেষ প্রান্তে এসে পুকুর পাড়ে বসলো। পুকুরে তেমন একটা পানি নেই।
এই বসন্তে .. । রােদেলা মুগ্ধ নয়নে আলমের কবিতা শুনলো। দুপুর গড়িয়ে তখন বিকেল। আলম কিছুটা ক্লান্ত। দুপুরের খাবার হিসেবে তারা বার্গার গিলেছে। রােদেলা চা চাইলো, আলম চা নিয়ে এসে, শরীরটা একটু হেলান দিয়ে আয়েশ করে চা খাচ্ছে। এমন সময় এক সাদা চামড়ার বিদেশীনি তাদের খুব পাশ ঘেশে হেটে যায়। আলম কেন যেন সাদা চামড়ার বিদেশী দেখতে পারে না। তাই সে বলে উঠে, যে সাদা কুত্তা দেখতে পারি না সেটাই পাশে ঘেষে হাটে। আবার, কেন ? এই দিকে আসে। সে ভাবতেই পারেনি বিদেশীনি বাংলা বুঝতে পরবে।
বিদেশীনি তাদের দিকে এগিয়ে এসে তুমি বকা দিয়ে কথা বললে কেন ?
আলম ভড়কে যায়। কই নাতো ! তোমায় বলিনি।
আমায় বলোনি ? তোমার সাথে তােমার মেয়ে বন্ধু রয়েছে, নতুবা তােমায় আমি .. ।
ইঁটস ওকে। আই এম স্যরি।
ভালো বাংলায় বললে আরো বেশী খুশী হতাম। তােমাদের বাংলা ভাষা কতো বেশী সম্মানিত। সেটা জান ?
জি, আমরা তা জানি।
তোমরা কিছুই ভাল জান না। না ভাল বাংলা, না অন্য ভাষা। আমি তােমার চেয়ে ভাল এবং শুদ্ব বাংলা বলতে পারি। যা তােমরা অনেক বাঙ্গালীই পার না। তোমাদের আমার খুব ভাল লেগেছে। তােমরা খুবই রােমান্টিক জুটি। এই ছেলে তােমাকে খুব রহস্যময় মনে হয়। তুমি এই মিষ্টি মেয়েটাকে জ্বালিয়ো না। ভালো থেকো। আসি ।
কি সব আজাইরা কথা ? এর কােন মানে হয় !
রোদেলা হেসে কুটি কুটি। তার হাসি থামেই না। আলম চেইতা মেইত্তা আরেক কাপ চা নিয়ে এসে একা একা খাইতে থাকে। আর বিড় বিড় করে বলে ”চোখটা বন্ধ হলেও মগজটা সচল নয় ”।
এই তুমি বিড় বিড় করে কি বললে ? ধরা খাইলে, এমন কর। মাঝে মাঝে তুমি এমন বিড় বিড় করে কি যেন বলো। যা রহস্যময়।
না, কিছু না।
কিছু না বললেই হলো । কি বলেছ ? ঠিক করে বলো, নতুবা তোমার এতো সুন্দর রােমান্টিক পড়ন্ত বিকেলটা মাটি করে দেব। সত্যি মাটি করে দেব ।
আমার এলাকায় এক ছােট ভাই আছে। সে প্রায় সময় এই কথাটা বলে, ”চোখটা বন্ধ হলেও মগজটা সচল নয়” । এখন বুঝেছ তাে এর অর্থ কি দাড়ায় ? বুঝেছ ?
হু। বুঝলাম। আসলেই তােমরা পুরুষরা র্দূবেধ্য।
বই মেলার সন্ধ্যাটা সবচেয়ে বেশী জমঝমাট। দােকানী প্রকাশক সবাই বেচা বিক্রিতে বেশ ব্যাস্থ। নামকরা প্রকাশনা গুলোয়, প্রবেশ করাই যায় না, এতো ভীড়। নারী পুরুষ সবার উপস্থিতিতে বেশ সরব সমস্থ বই মেলা প্রাঙ্গন। লেখক কুঞ্জে লেখকদের আড্ডা বেশ জমে উঠেছে । টিভি চ্যানেল গুলো ভিবিন্ন লেখক সাহিত্যিকের সাখ্যাতকার নিচ্ছে। সেগুলো সাথে সাথে লাইভ দেখাচ্ছে। টিভি স্কিনের বড় পর্দায় সেগুলো আবার বই মেলাতেই দেখা যাচ্ছে সাথে সাথে। বট তলায় লেখকদের প্রকাশনা উৎসব চলছে । কেউ কেউ বই এর মােড়ক উম্মোচন করছে। ক্যামেরায় সাংবাদিকরা তাদের ছবি তুলছে। তারা বেশ স্মিত হাঁসি হেসে পােজ দিচ্ছে। রােদেলার প্রশ্ন তুমি এবার বই বের করলে আমরাও এমন সাক্ষাতকার দিতাম। ছবি তুলতাম। তার উশ্বাস অনেক। এই যে দেখছো না এরা বেশীর ভাগই শখের কবি।
মানে? কি ভাবে বুঝলে?
এদের চেহারার লাবণ্যতা দেখেই বুঝা যায়। এরা শখের কবি। এরা পয়শা খরচ করে বই প্রকাশ করে। প্রকাশকদের উদর ফুর্তি করে।
কেন ? প্রকাশকরা কি করে ?
প্রকাশকরা কবিতার বইয়ে বিনিয়োগ করে না। করলেও খুব কম। নূতনদের তাে প্রশ্নই উঠে না।
কেন ?
কারন কবিতার বইয়ের কাটতি কম থাকে। তারা ব্যাবসায়ী। তাই তারা ঝুকি নেয় না। নূতন লেখকদের পেছন লগ্নি করে না। অখ্যাত লেখকের পেছনে লগ্নি করলে তাদের লগ্নি যদি ফেরত না আসে সে আশংকায়। যে বইতে গ্রন্থ স্বত্ব দেখবে যে লেখকের তা হলে বুঝবে যে, সে বই সেই লেখক তার পয়সায় ছাপিয়েছে।এরাই বেশীর ভাগ শখের কবি। যেমন আমি।এই ধরো নিজকে শান্তনা দেওয়া আর কি?
তা বুঝলাম, আমার সেই বইটি এখনো খুজে পাইনি। চলো খুজে দেখি।
রোদেলা এ দােকান ও দােকান খুজে দেখছে। আমি তার পাশা পাশি হাটছি। সে বই খুজছে আমি রকমারী রমনী দেখছি আর ভাবছি, প্রকাশকরা ছোট লেখকদের সকল রসদ চুষে নেয়। রমনীরা বেশ সেজে গুজে এসেছে। তাদের শরীরের সাথে ছােয়া লাগছে, হৃদয়ের বিভিন্ন ডানা গুলো সচল হয়ে উঠছে। মন কতো কি বলে। যদি এ সব নারী ..। একেক নারীর শরীরে একেক ধরনের সুবাস। ভালই লাগছে, মানুষ মনে হয় এ জন্যেই বই মেলায় বেশী ঘুরতে আসে। তেমনি ডাগোর চােখের আরেক অর্পূবা সুন্দরী নারীর চােখে চােখ পড়লো। সেও আমার দিকে এক দৃষ্টে তাকিয়ে আছে। বয়স রােদেলার চেয়ে একটু বেশী হবে। ভাল স্বাস্থ। সেজেগুজে এসেছে। অপূর্ব লাগছে। সাথে কেউ আছে কি না বুঝে উঠতে পারছি না। আমি যে তাকে দেখছি রােদেলার সে দিকে খেয়াল নেই বিন্দু মাত্র। আমি তার আপাদমস্ত সব দেখলাম। বেশ সুন্দরী। সুঠাম দেহের অধিকারীনি। ভালই লাগলো। এতো নারী, তার মাঝে সে বেশ আলাদা আর্কশনীয়া। আমি দু চার বার এদিক, ও দিক দৃষ্টি নিক্ষেপ করলেও সে মােটেই দৃষ্টি সরাচ্ছে না। এতে আমার সমস্থ সত্তা নড়ে উঠলো। আমি বার বার তার দিকে তাকালাম। আমার নিশ্বাস ভারী হয়ে এলো। মুহুর্তে মনে হলো আমরা পুরুষ। রােদেলা কােন অংশে তার চেয়ে কম নয়। এই নারীর সাথে হয়তো জীবনে কখনোই আর দেখা হবে না।এই প্রথম এই শেষ। তাই আরো কবার ভাল করে তাকে দেখে নিলাম।রােদেলা কয়েকটা বই ঘাটাঘাটি করে আমার হাত ধরে টেনে পাশের দােকানে নিয়ে গেলো, আমার দৃষ্টি তখনো সেই ডাগোর চােখের সেই রুপোসীর দিকে। রােদেলা পাশের দােকানে ডুকে আমাকে একটি বই দেখতে বললো। আমি সে দিকে নজর দিয়ে ঘুরে দেখি সে কােথায় হারিয়ে গেছে।
ফরিদা পারভীণ লালণ গিতি পরিবেশন করবেন। সবাই অধীর আগ্রহে অপেক্ষা।রােদেলা তখনো আমার হাত ধরে আছে। আমরাও বসে অপেক্ষায়। বাংলা একাডেমির আয়োজনে প্রতিদিনের এ মহতী উদ্যোগ। এ সংগীত সন্ধায় আরো কয়েক জন শিল্পি গান পরিবেশন করে গেছেন। সব্ইা মন্ত্রমুগ্ধের মতো সে গান গুলো শুনলো। মঞ্চটা বেশ সুন্দর করে সাজানো গোছানো। দর্শকরা সবাই চুপচাপ চেয়ারে বসে। ফরিদা পারভীন আসলেন, উনি গান আরম্ব করলেন । বাড়ীর পাশে আরশী নগর ..। সুরের মূর্ছনায় সবাই হারিয়ে গেলাম।
এই †তামর †প্রাপাইলে এগুলো কি ? এতো †ময়েকে †কন এড করেছো ? আর কি সব স্টাটাস দাও। বাদরামী ?
মনে করো আমি কিছুই †খাজ খবর রাখছিনা। ছাড়া পেয়ে †গছো ?
কই ? †তমন কিছু না।
তেমন কিছু না মানে ?
তেমন কিছু না মানে †তামন কিছু না ।
পাজলামো করো ? আমাকে নিযে †তামার ইনটেশন †কাথায় ? †তামার সাহস কতো বড় ? তুমি †ময়েদের পটোতে কমেন্স করো ? আমি †তামার গতিবিধি পর্যবেক্ষন করি না ?
কোথায় কমেন্স করলাম ?
তুমি সুমি নামক এক †ময়ের ফটোতে †লখোনি ”জটিল’।
ফেইসবুক একটি সামাজিক †যাগাযোগ ব্যাবস্থা এতে †ময়েদের সম্পৃক্ত করা জরুরী। †ময়েদের উৎসাহ না দিলে তারা এগিয়ে আসবে না।
তুমি কি ?িকাদারী নিয়েছো ? এমন †বহাল্লাপনা কুরুচি সম্পন্ন ছবিতে কমেন্স করতে †তামার রুচিতে বাঁধলো না। আবার সাপাই গাইছো।
না-না, সাপাই কি ? এমনি আর কি ?
এখন, এমনি, আর কি ? না ? †তামার †প্রাপাইলে যদি আর কখনো এতো †ময়ে †দখি তবে †তামার খবর আছে । আজই গিয়ে এগুলো সব মূছে †ফলবা। †কান নারীর ছবি †যন †তামার †প্রাপাইলে না থাকে ।
এইটা, এই সামান্য বিষয় নিয়ে এতো †ছতাছেতির কি আছে ?
ছেতাছেতির †দখেছো কি ? আমার প্রতি †তামার অুভ’তি গাঢ় হলে তুমি এমন করতে পারতে না।
দূর বাদ দাও । একটু পাজলামো করা আর কি ?
না আমি এমন কিছু সহয্য করতে পারব না। তুমি আমার । শুধুই আমার । †সখানে মাছির ছায়া পড়লেও আগুন জ্বালিয়ে †দব । আমি কিচ্ছু বুঝতে চাই না।
আমি †তা †তামারই । তুমি এতো ছটো ?
তুমি গরম †তলে ঘি †ঢলে দিবে । আমি ছটবো না ?
তাই বলে এতো ? চলো কিছু †খয়েনি ,
আগে প্রমিজ করো .. ।
আলম তুমি আমার সাথে একটা প্রমিজ করবা।
তুমি †দখছি টিনএজ †ময়েদের মতো কথা বলছো। আগে বলো কি বিষয় ? তারপর ভাবা যাবে , প্রমিজ করা যায় কি না।
থাক লাগবে না।
কেন লাগবে না। †ময়েরা অল্প বয়সেই তার †চয়ে অনেক †বশী বয়সী †য †কান †লাকের সাথে এডজাষ্ট করে নিতে পারে। যা একজন পুরুষ পারে না।
তোমরা †তা †ময়েদের বয়স আর †দহটাই †দখ ? কিন্তু তাদের মনটা †দখ না ।
মন †তা , †দখার বিষয় না, বুজার বিষয়।
উপহাস করছো । †রাদেলা উ?ে হাটা দিলে আলম তার হাত †টনে ধরে। †রাদেলা তার হাত ছাড়িয়ে †নওয়ার †চষ্টা করে কিন্তু পারে না। আলম তাকে †টনে তার পাশে বসিয়ে †দয়। আসলে ?াট্রা করছিলাম।
আমি কি ?াট্রার বস্তু ।
মোটে ও না।
তাহলে .. ।
এমনি ।
তুমি †কান কালেই আমার জন্য সিরিয়াস ছিলে না। মা, †ক আমার কথা বলবা বলেছো । আজ কতোদিন ? বলেছ ?
তুমি এক সপ্তাহের মধ্যে মাকে না বললে আমি নিজে গিয়ে মায়ের সামনে হাজির হবো।
তোমার মতো সুন্দরী †ময়েকে †ক অবহেলা করতে পারে ?? মাকে আমি আজই গিয়ে বলবো , †য এক সপ্তাহের মধ্যে তার পুত্র বধু ঘরে এসে হাজির হবে।
আলম , আমি যখন অন্য পুরুষের ঘরে ঘর করব , তখনো তুমি †তামার মাকে আমার কথা বলার সাহস মনে হয় পাবে না। †পলে ও লাভ হবে না। আমার এ অ¤্রু কখনোই †তামাকে টলাতে পারলোনা ।
আরে কান্নার কি হলো । সত্যি বলছি , আমি †তামার ব্যাপারে সিরিয়াসলি মায়ের সাথে আলাপ করবো।
তা হলে কথা দাও , আমাকে দুঃখ †দবে না।
কথা দিলাম । সত্যি কথা দিলাম ।
শিষ্
নৈঃশব্দের মগ্নতায় বিবর্ণ †হমন্তে
বৃষ্টিমুগ্ধ সুর , বিষন্ন দরজায়
জলকন্যা ”কবিতার ” †দহে ; পথের সারথী
শৈল - গিরি চ’ড়ায় ; যুগপুরুষ
নির্বাক বৃক্ষ †চাখে , ক্রুশবিদ্ধ যন্ত্রনা
পূণ্য-স্নানে বিবর্ন বসন্তে ; দৃষ্টির অনতি দূরে
†ক ? তুমি শিশিরের শিষ্ দাও।
আমার সমস্থ বসন্ত জুড়ে তাহার স্পর্শ
কি করে তাকাই †তামায়।।
একদিন ধানশালিকের গল্প বলেছিলো †যজন
চির-বসন্ত , চিরচেনা পথের আরতি শুনিয়েছিলো †যজন
জলকুমারীর মন-মন্দিরে কড়া †নড়েছিলো †সজন।
আমার সমস্থ বসন্ত জুড়ে তাহার স্পর্শ
কি করে তাকাই †তামায়।।
স্বর্ণালী স্মৃতিচিহ্ন হৃদপিন্ডে বসায় বিষাদ কামড়
সময় গড়িয়ে অন্ধকার †ধয়ে আসে
রাতের তীব্রতা চিবিয়ে খায় †কালাহলমুখর জীবনের নিঃস্তদ্বতা
ছোট †ছাট বিষাদ গুলো ডানা †মলে রাখি
নগ্ন পায়ের উষ্ণ ছায়া কি দিয়ে ঢাকি।
ছোট †ছাট বিশ্বাস গুলো ডানা †মলে রাখি
চন্দ্রালোকের অন্ধছায়া কি দিয়ে আঁকি।।
ছোট †ছাট স্বপ্নগুলো চিত্রকর্মে আঁকি
মেঘহীন বৃষ্টি -কথা কি ? জল দিয়ে ঢাকি।।
আমার সমস্থ বসন্ত জুড়ে তাহার স্পর্শ
কি ? করে তাকাই †তামায় ?
ক্ষুধার বা¯তবতায় রাতের তীব্রতা ভাঙ্গে
যুগল পালঙ্কে ধ্যানোমগ্ন ঋষি †খাজে
শিউলি গন্ধা নারী।
প্রতœতাত্তিক প্রণয়ে জীবমৃত্তিকা হাঁসে
কে ? তুমি যুগল বিকেলে ; জলাধারে
শিশিরের শিষ্ দাও ।।
আমার সমস্থ বসন্ত জুড়ে তাহার স্পর্শ
কি করে তাকাই †তামায়।।
তুমি গুনি †লাক †স কথা নির্ধিধায় বলা যায়। এমন চমৎকার কবিতা শুনে †য কোন নারীই †তামার †প্রমে হাবুডু খাবে।
হাবুডুবু †তা দূরে থাক । এতোটা বসন্ত †গলো †কউ পাশেই †ঘষলোনা।
ভেবে †দখ্ কাউকে কি ? †তমন ভাবে সময় দিয়েছ ? আমাকে কাছে †পয়ে ও অবহেলা করছ ।
তা’ ভাববার বিষয়।
তুমি ভাল লিখ । সাহিত্য চর্চাটা ধরে রাখলে পারতে।
কাব্য চর্চায়, বিলাসিতা করা যায় কিন্তু রুটিরুজি হয় না।
কেন ? সাহিত্যিকরা বুজি না †খয়ে ছিলো ?
না †খয়ে না থাকলে ও সবারই অর্থনৈতিক দৈন্যদশা প্রকট ছিলো। তাছাড়া আমাদের †দশে †কান সাহিত্যিকই মৃত্যুর পূর্বে খুব †বশী খ্যাতি বা যশ তথা প্রতিষ্?া পায়নি। বর্তমানে অবস্থার কিছুটা পরিবর্তন হলেও নগণ্য। যতো সম্মাননা মৃত্যুর পর। যা আসলে †সই সাহিত্যিকের জন্য প্রকৃত অর্থে কতোটা সার্থক হয় তা প্রশ্নের সম্মুখীন।
†তামার . কথাবার্তা. র্দূ†বধ্য।
গান , কবিতা ,, নাটক বাঙ্গালীর প্রত্যাহিক জীবনেরই একটি অঙ্গ। বাঙ্গালী †নচে †গয়েই †বঁচে আছে। এটাই তার অহংকার। সেই কবিতার †দহে ভর করেছে আজ উই †পাকার দল।
বুঝলাম না। তবে আমার †থকে ও †তামার আগ্রহটা অনেক প্রকট কবিতার দিকে ।।
সে জন্যই †তা কবির পরিচয়টা দিতে চাই না।
আমি কখনোই †তামার কবিতার প্রতিপক্ষ হব না ।
এই পড়ন্ত বসন্তে , নীল আর নীলান্তে , কাছে এসেছো তুমি শখা মনেরি অজান্তে।
বাঃ চমৎকার গান গাইলে †তা , কখনো †কাথায় ও শুনিনি ।
শুনবে †কাথা †থকে এখনিই রচনা করলাম ।
আলম †সজন্য †তামার পাশে থাকতে আমার খুব ভাল লাগে । তুমি কবিতা আবৃত্তি, গান †গয়ে আমার প্রান টা ভরে দাও।
ইহা †প্রমো জীবনে মানায় । বাস্তব জীবনে মানায় না।
আমি এ মুহুর্তে বাস্তব জীবন নিয়ে ভাবতে চাই না। আমি হাওয়ায় হাওয়ায় ভাসতে চাই। স্বপ্নের জগতে উড়তে চাই।
স্বপ্ন †নমে এলে ভবেতে , ...।
থাক থাক । আর কাব্যত্ব †দখাতে হবে না। চলো , আগে †খয়েনিই।
ক্ষুধা এলে .. , †প্রম জানালা দিয়ে পালায়। কবি যর্থাথই বলেছেন।
তুমি কখনোই অন্যের কবিতা আবৃতি করো না। †কন ?
দূর , অন্য †কান কারন নাই, আমি †তমন কিছু মনে রাখতে পারি না। †সখানে আবার কবিতা মুখস্থ রাখবো। ???
হো , †হা †হা, । তুমি দারুন দারুন কবিতা রচনা করো কিন্তু বলছো ..
সত্যি বলছি । †তামার বিশ্বাস হয় না ? কসম।
তোমার এ সরল স্বীকারোক্তিতে আমি মুগ্ধ। আলম সত্যি তুমি খুব ভাল একজন মানুষ।
এই বিদেশীনি বারবার আমাগো দিকে তাকায় †কন ?? বিদেশী কুত্তা আমার একদম পছন্দ না।
রেষ্টুরেন্টে †য †কান মানুষই আসতে পারে ।
না। এরা আমাগো সংকৃতিটা নষ্ট করে †ফলে । আমাদের অহংকার করার মতো †য গৈারব উজ্জল সংকৃতি আছে তাতে এরা ফাটল ধরায়।
বুঝলাম না।
না বুজার কিছুই নাই। অহংকার করার মতো আমাদের একুশ আছে , একাত্তর আছে । বৈশাখ আছে । বই †মলা আছে । কি ? কি ? আরো †দখবার চাও। বাঙ্গালী জাতি সত্তা আছে।
গত তিন দিন ধরে †তামার †ফান বন্ধ। অফিস , পাড়া, মহল্লা , কলোনী †কাথায় ও তুমি †নই। †কাথায় নিরুদ্দেশ হয়ে গেছো ? উত্তর দাও। তুমি †তা উত্ত্র †দওয়ার প্রয়োজনই †বাধ করো না। আর কয়কাল জ্বালাইবা তুমি।
সারা জীবন।
তাহলে , †তা আমার মতো খুশী আর এ’দুনিয়াতে অন্য †কউ হতো না। আমার জীবন সার্থক হতো।
কেন ?? †তামার বিশ্বাস হয় না ।
বিশ্বাস ? †তামাকেই বুঝে উ?তে পারলাম না, আবার বিশ্বাস !
আমি রাখলাম , বলে আলম †ফান †কটে †দয়।
রোদেলা ডায়াল করলে আলমের †ফান বাজতে থাকে কিন্তু আলম †ফান রিসিভ করে না। †রাদেলা নাছোড় বান্ধার মতো বারবার ডায়াল করতে থাকলে অবশেষে আলম †ফান রিসিভ করে , †যখানে বিশ্বাসই নেই ,তো †সই সর্ম্পকের মূল্য কি ??
তোমার মতো রহস্যময় পুরুষ যদি †কান নারীর কপালে জোটে তা হলে †স নারীর কি অবস্থা হয় তা আমি ছাড়া অন্য †কউ †টর পায়নি।
সেটা বলতে পার । কিন্তু বিশ্বাস নিয়ে প্রশ্ন তুলবা না।
?িক আছে , ধরো †তামার মতো , আমি ও যদি না বলে প্রায় সময় তিন/চার দিন নিরুদ্দেশ হয়ে যাই তাহলে তুমি কি ভাবতে ? কি করতে ?
দিলা †তা †পজগিতে পালাইয়া। হ্যালো , হ্যালো , কি ব্যাপার .. কথা বলছো না †য।
না , ভাছিলাম ।
না তুমি ভাবনি , কাঁদছিলে , এখানে কান্না কাটির কি হলো ? কান্না কাটি করা †তামার স্বভাবে পরিনত হযেছে।
এখন বদনাম †তা দিব্ইে কিন্তু আমার কপালে †য কি ? আছে তা নিয়েই আমি শংকিত।
আরে দূর , তুমি আমার উপর ভরসা রাখো । বিশ্বাস করো আমি কিছু জটিলতার মধ্যে আছি একদিন সব ?িক হয়ে যাবে।
তোমাকে ছাড়া আমি কিচ্ছু ভাবতে পারি না । †তামাকে না †পলে আমি ..।
দেখ এই সব বাজে কথা মুখে ও আনবা না। কাল আমি ছুটি নিয়েছি , সারা দিন †তামার জন্য। দূরে †কাথায় ও গিয়ে।
না দূরে †কাথায় ও না , এলাকার গাঢেনে এসো । একদম ভৈারে । আজানের সময়।
আজানের সময় আসা যাবে কিন্তু অতো †ভারে কি গার্ডেন †খালা পাব। বরংচ রমনায় যাই।
অতো ভৈারে রমনা নিরাপদ নয়। তুমি এখান্্েই এসো । আমি গার্ডেনের চাচাকে বলে †রখেছি । উনি ভৈারে নামায পড়তে উ?ে । উনি বলেছে তখন খুলে †দবে।
আলম গার্ডেনের সামনে দাড়িয়ে। চোখে মুখে ঘুম না থাকলেও বিরক্তি †বশ। অতো ভৈরে গাঢ়েনের সামনে দাড়িয়ে থাকা ? দারোয়ান চাচার †গট †খালার নাম গন্ধ ও †নই। †রাদেলা আসছে না †কন ? কতোক্ষন ধরে দাড়িয়ে আছি। †লাকজন †দখলে কি বলবে ?? , যদিও জনমানবহীন পুরো গলি। ভৈারের আলোর আভা †ভসে আসতে লাগলো। †রাদেলা আসছে না †কন ? মোবাইল বন্ধ । †দখি আবার †চষ্টা করে ? না বন্ধ। এই বয়সে গাডেনে আসবো †কমন লাগে ? এমন সময় এক পাগল এসে আলমের সামনে হাজির।
সে ইংরেজিতে আলমকে প্রশ্ন করা শুরু করলো। পরে †জরা শুরু করলো। আলম প্রথম প্রথম পাগলের প্রশ্নের†কান উত্তর না দিয়ে †স চুপচাপ পাগলের কান্ড কারখানা †দখলো । মাত্রা অতিরিক্ত হলে আলম †জারে এক দমক লাগালে পাগল দৈড়ে পালালো। এমন সময় †রাদেলা আসলো। পাগলকে পালাতে †দখে †রাদেলা †হঁসে অস্থির । চাচা †গট খুলে দিলে তারা গাডেনে প্রবেশ করে।
গার্ঢেনে প্রবেশ করলেই মিষ্ট সুবাস †ভসে আসে আলমের নাকে। আলমের মন ভরে যায়। নানান ফুলের ঘ্রান। অতি সুন্দর গার্ঢেন। কি ? চমৎকার পরিবেশ। চারি পাশ পরিস্কার পরিছন্ন । আলমের জানাই ছিলো না এতো সুন্দর একটি গার্ঢেন আছে শহরের মাঝে। †ছাট্র খাট্রো গার্ঢেনের চারি পাশ বড় বড় গাছ দ্বারা †ঘরা। মাঝে †ছাট্র একটি পুকুর। বড় গাছগুলোর মাঝে মাঝে নানান পদের প্রচুর ফুলের গাছ। †বশীর ভাগ ফুল গাছেই ফুল ফুটে আছে। ফুল আমার খুবই প্রিয় । †রাদেলা তাই মনে হয় আমাকে এখানে নিয়ে এসেছে। পুকুরের পাড়ে বসার ব্যাবস্থার সাথে সাথে অনেক গুলো সিড়ি †নমে †গছে পুকুরের পানিতে। সমস্থ পুকুরটাই ফুল আর নানা প্রজাতির ফলধি ও ঔষধি গাছ দ্বারা আচ্ছাদিত। গার্ঢেনটির সব †চয়ে বড় বৈশিষ্ট হলো এখানে বিরল প্রজাতির কিছু গাছ গাছড়া বিদ্যমান। †রাদেলা আর আলম পাশাপাশি হাটছে। কিছু কিছু পাখির †কালাহল †ভসে আসলো তাদের কানে। হাটতে হাটতে তারা পুকুর পাড়ের †শষ মাথায় এসে একটি †বঞে বসে।
মোবাইল বন্ধ †কন ?
তোমার মুখ †থকে সরাসরি জ¤œ দিনের শুভেচ্ছা নিবো বলে ।
শুভ জম্ম দিন । †মনি হ্যাপি রির্টান অফ দা †ড।
ধন্যবাদ। আলম আর †রাদেলা মুখোমুখি বসে। ভৈারের ¯িœগ্ধ আলোতে ..।
দারুন এক জাগায় নিয়ে এলে তুমি আমায়। তার জন্য †তামাকে বাড়তি ধন্যবাদ।
বাড়তি †কন এটা †তা আমার পাওনা। বাড়তি আমি আরো কিছু চাই।
ও এই নাও । আলম †রাদেলাকে একটি গিফট বক্্র এগিয়ে দিলো।
ধন্যবাদ। কিনÍু এতে ও চলবে না। কাল সারা রাত আমি ঘুমাত পারিনি। †স কথা †ভবে , কিভাবে †তামায় হতে আমি তা চাইবো ?
বুজলাম না। বুজার দরকার †নই । †দখি কি ? এনেছো । †রাদেলা আলমের †দওয়া গিফট বাস্ক খুলে †দখে †ছাট্র একটি †কক। মাঝে লিখা শুভ জম্মদিন, †রাদেলা। সাথে রঙ্গিন একটি †মাম ও †মছবাতি ও একটি †ছাট্র †ছারা। দারুন । আমার খুব পছন্দ হয়েছে। কিন্তু আমার ফুল কই। †সই †বলী ফুল।
ও.. আচ্চা । আলম পকেট হতে বাসী †বলী ফুলের মালা †বর করে †দয়।
রোদেলা প্রাণ ভরে †স ফুলের মালার ঘ্রান গ্রহন করে। †ককের মাঝে †মাম বসিয়ে †মছবাতি দ্বারা †মামে আগুন জ্বালায়। আলমকে আরো কাছে এনে †রাদেলা ও আলম উভয়ে এক সাথে †কক কাটে। আলম †হপিবাড †ড টু ডিয়ার †রাদেলা বলে †রাদেলাকে †কক খাইয়ে †দয়। †রাদেলাও আলমকে †কক খাইয়ে †র্দয়।
¯িœগ্ধ শিশিরের †কামলতায় শুভ হউক †তামার পথ যাত্রা। খুব ভাল লাগলো। এমন জম্মদিন পালন করবো স্বপ্নে ও ভাবিনি। আনকমন।
বাকীটা †পলে তুমি আতœ হারা হয়ে যাবে।
কি †পলে ?
দূর, বুদ্ব। এদিকে এসো আলম †রাদেলার মুখোমুখি এগিয়ে এলে †রাদেলা আলমকে কাছে †টনে আলমের কপালে আলতো করে দুটো চুমো †দয়। আলমের প্রায় †বহুশ হবার উপক্রম । †স †কান দিন †কান নারীর এমন †ছায়া পায়নি । †স †কমন †যন লজ্জায় লাল ..।
এ আমার একান্ত স্মৃতি । এ স্মৃতি নিয়ে যখন আমি পাশে থাকবো না তখন †স সময়টা ভাল ভাবেকাটাবা।
ও মাই গড়্ । সাজিদ †সদিন তুমি দূর্দান্ত †গয়োছ । অ-সা-ম । আমার বিশ্বাসই হয় না তুমি †সই সাজিদ। †ষ্টজে বুজাই যাচ্ছিলো না তুমি †সই সাজিদ ফাহমিন। †তামার সেই গান ..
এক প্রসন্ন বিকেলে
ক্লান্ত এ মনে ...
জাগিয়ে দিলেই তুমি
নূতন করে আবার
পথ চলার .. ।।
তুমি †ভারের আলোর মতো
আস †কন অবিরত ।
তোমার বিষন্ন দু’চোখে
নেই কি কিছু বলার
পথ চলার ।।
তন্দ্রা হারা এ মাঝ রাতে
এক যুবকের ছায়া পথে
†তামারি †ছাট্র এ দুটি হাতে।
নেই কি কিছু আকার
পথ চলার।
এটা †তা সবার মুখে মুখে। সবাই †তামার এ গান †শানার পর রীতিমতো শিষ্ দিচ্ছিলো। আমরা দর্শক গ্যালারিতে বসা।
দর্শক গ্যালারি উল্লাসে †ফটে পড়ছিলো।
দেখ ্ ঝিনুকা ।
না , আমি †রনুকা। ঝিনুকা বাসায়।
দেখ , †রনুকা - সকালের †রাদ্র আমার খুব ভাল লাগে। তাই আমি ছাদে আসি। †তামার সাথে আড্ডা দিতে নয়।
আমি †তা †তামার সকালের †রাদ্র হতে চাই ।
তা হয় না।
কেন হয় না ?
সকল প্রশ্নের উত্তর †দওয়া যায় না।
সেটা †তামার হেয়ালী।
হেয়ালী করে সময় পার করা যায় , কিন্তু জীবন চলেনা।
কেন ? আমি কি †তামার †যাগ্য নই। কোন অংশে কম ?
তুমি সর্বাঙ্গীন ভাবে †যাগ্য এবং অপূর্ব সুন্দরী ।
তা হলে। ?
বিষয়টা অন্য। আমি †তামাকে †বাজাতে পারব না।
তুমি কি জান ? আমার সমস্থ সত্তা †তামার জন্য অপেক্ষা করে।
†তামার সমস্থ সত্তা আমায় ছিবিয়ে খায় কিন্তু আমি অসহায়।
আমি সারা জীবন †তামার জন্য অপেক্ষা করতে পারি।
পাগলামো কথা বাদ দাও।
পাগলামো কথা নয় । আমি সিরিয়াস। তোমার অবরুদ্ব ছাযা ও আমার পথের সারথী।
ও-ও , জনাবেরা এখানে। তাই †তা বলি .. প্রতি সকালে জনাবের ছাদে কি ?
ছাদে এমনিই , কিছু না। †রাদ্র আমার ভাল..
চুপ। আমি র্র্†ছাট্র খুকি না। সাজিদ তুমি আমার সমস্থ বিশ্বাস †ভঙ্গে দিয়েছো .. .. ।।
নাবিলা একটু †বশী ভাড়াবাড়ি হচ্ছে না। আমি কি জানতাম †রনুকা ছাদে।
তুমি সবি জানতে।
না। জানতাম না । আর এমন কিছু হয়নি †য তুমি এমন আচরন করতে পার।
তুমি অন্য †ময়ের সাথে যা-তা করবা , আমি বললে †সটা ভাড়াবাড়ি ? †তামার দূর সাহস †তা কম নয়। এদের সাথে পরিচয় করি†য় †তা আমি চরম ভ’ল করেছি। আমি †সদিনো †দখেছি এই †ময়ে মনে হয় †তামাকে গিলে খাচ্ছে। এই †ময়ে এই,, তোমাকে আমি অনেক ভাল †ভবেছি , তুমি †জনে শুনে কি করে , সাজিদের পিছু লাগলে। আমি আর †কান দিন যদি †তামাকে সাজিদের সাথে †দখি , তা’ হলে , †তামার একদিন কি আমার একদিন ।
শীতের †শষে বসন্তের সুন্দর সকাল। মিষ্ট একটা আমেজ সব খানে।
রোদেলার আজ ফুর ফুের †মজাজ । চারুকলার এ মনোরম প্রাকৃতিক পরিবেশ তার খুবই প্রিয়, বসন্তের এ †কŠকিল ডাকা সকাল দীর্ঘ অপেক্ষার অবসাদ দূরে †?লে †দয়। প্রকৃতি †যন গুন গুনিয়ে তাকে গান শুনিয়ে যায়। †রাদেলাও প্রকৃতির সাথে †?াট মিলিয়ে †গয়ে উ?ে..
”কে †য ডাকে বারে বারে ..
গোপনো শিহরন মনে জাগে
এ নিশি মধূরো রাতে ।।
কে †য ডাকে বারে বারে।।
হংস মিথুন কারাঘারে
কি মখমল খুজে †পলে ?
ত্রি- ব, ভ’বন ভ’লে গিয়ে
দৈব বনে আশ্রয় নিলে।
তাঁর উষ্ণ †ছায়ার
কোমল পরশে
মন †য মাতিলো পরম আবেশে।
চন্দ্র ছায়ার কল্পোলোকে
সে-যে †থকে †থকেই
দেয় †য উঁকি আমারে ।।
কে †য ডাকে , বারে বারে ..।
†রাদেলার মানসপটে আলমকে ঘিরে পুরনো আনেক স্মৃতি †ভসে উ?ে। ঝির ঝির মিষ্টি বাতাস । †রাদেলা †ছাট্র একটি পুকুর পাড়ে বসে। যার চারি পাশ বড় বড় গাছ-গাছাড়ি দ্বারা †ঘরা। মাঝে মাঝে দু ’চারটি ফুল গাছ। †রাদেলা †তমনি একটি শিউলি ফুল গাছের নীছে বসা। সকালের †সানালী †রাদ এসে তার সমস্থ শরীরে মিষ্টি কিরণ ছড়ায়। শিউলি গাছের নীছে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে অনেক শিউলি ফুল। †রাদেলা কিছু ফুল কুড়িয়ে নিয়ে অঞ্জলিতে †রখে একটু পর পর তার সুবাস †নয়। আলম কি আসলে আসবে ? কথা †তা দিলো আসবে। সে দিন তাকে আসলে একটু †বশীই বকা-ঝকা করা হয়েছে। সারাটা দিন বসিয়ে রাখলো। আসি আসি বলে পরে আর †ফানটা ও রিসিভ করলো না। মাথা কতোক্ষন ?ান্ডা রাখা যায়। †স পরোপকারী বটে । কিন্তুু দায়িত্ব , ভালবাসা †সটা ও †তা †দখা দরকার।
কে শুনে কার কথা। আমাকে নিয়েই তার যতো উদাসীনতা। †কন †য এ ভুল করলাম ? অবশ্য †স দিন আমায় নিঃষিক্তকরন †ছায়ায় ভাসিয়ে নিলো। আমি হারিয়ে †গলাম তারি আবেশে পরম মমতায়। ভাবতে ভাালই লাগে। এতোক্ষণ হলো আসার নাম গন্ধ নেই। †ফান দিয়ে †দখ্ ি। রিসিভ করে না। নাকি †সদিনের মতো করে। †শষ পর্যন্ত না আসে। †দখি অপেক্ষা করে । এতোক্ষন †তা ভালই †লগেছে এখন এমন লাগছে †কন ? †কান কিচুই †তা ভাল লাগছে না ? দূর বিরক্তিকর সব। ইচ্ছে হয় †ফানটা আছাড় মারি। †রাদেলা †ফানটা আছাড় মারার জন্য উদ্যত হলো এমন সময় আলম এসে হাজির।
এই তুমি কি ভুলে †গছো †সদিনের প্রমিজ ?
না, ভুলিনি।
তা হলে এতো †দরী †কন ?
পথে ট্রাফিক জেম ছিলো। †কান সিএন, জি পাচ্ছিলাম না। অনেক দূর †হটে আসতে হলো।
আমি আসিনি ? কিসের †তামার এতো পরোপকারীতা ? কিসের †তামার এতো মহত্ব ? আমাকে নিয়েই †তামার যতো উদাসীনতা। আমি কি কিছু বুঝি না। †তামার সকল কিছু ছাড়তে হবে। আমাকে ছাড়া বিন্দু পরিমান অন্য কিছু নিয়ে ভবছো †তা .. ????
কি †য বলো ? †তামাকে ছাড়া আমি আর কাকে নিয়ে ভাববো ?
কাকে নিয়ে ভাববো মানে , আরো †কউ আছে নাকি ?
ছিঃ । তুমি এসব কি বলো। †তামার এই বিশ্বাস ?
কতোক্ষন একটা †ময়ে একা একা বসে থাকতে পারে , †সটা কি ভালবাসা না হউক †তামার দায়িত্বে পড়ে না।
তা মন্দ বলোনি। কিন্তু সত্যি †তমন †কাথায় ও যাইনি।
কিভাবে বিশ্বাস করবো ? কয় ঘন্টা পর তুমি এসেছো , একবার ঘড়ি †দখোছ ?
রাখ না লক্ষ্যিটি। বাদ দাও ..
লক্ষ্যি না ছাই। তুমি আমায় কখনো সম্মান করোনি , অবহেলা আর অবঞ্জা ছাড়া। কি বাদ দিব ? তুমি যা-তা, করবা আর আমি সব †মনে †নব ? এতো দিন কম সহয্য করেছি ?
এতো রাগ করো †কন ? অবশ্য রাগলে †তামায় দারুন লাগে।
পট্রি মার ? পট্রি মারার আর জায়গা পাইলা না ।
স্যরি। সত্যি স্যরি। তুমি ইদানিং †কমন †যন খ্যাপা বাঘিনী হয়ে উ?েছো।
স্যরি ট্যরি বললে চলবে না। †তামাকে সকল কিছু ছাড়তে হবে। †কান দিকে তাকাইছো †তা ?
চোখ বন্ধ করে চলবো ? তুমি দিনে দিনে হিং¯্র হয়ে উ?েছো।
প্রয়োজনে †চাখ বন্ধ করে হাটবা।
নিঃশ্বাস ও বন্ধ করে হাটবো ?
রোদেলা এবার †হঁসে উ?লো . না , তা হলে ... । তুমি আমাকে এতো জ্বালা ও।
হ্যালো তুমি †কাথায় ।
এই †তা । এলাকায় ।
এলাকায় কি করো ?
বন্ধুদের সাথে আড্ডা †দই।
কেন আড্ডা দাও ? †তামাকে না বলেছি আড্ডা পাড্ডা চলবে না।
কেন ? তুমি কি সব কিনে নিয়েছ ?
হাঁ নিয়েছি । তুমি কারো সাথে আড্ডা দিতে পারবে না। আড্ডা না দিয়ে বাসায় গিয়ে গল্পের বই পড়। কবিতা চর্চা করো।
আড্ডা দিলে মন ভাল হয়। শরীর ভাল থাকে। তা’ছাড়া ছুটি ছাটা ছাড়া †তা আমরা আড্ডা †দই না।
শরীর ভাল না ছাই । †তামরা †ছলেরা প্রথম আড্ডা দাও তার পর †ময়ে †দখলে শিষ দাও। কলোনির জানালার দিকে তাকিয়ে থাক । এই †তামাদের জন্য মেয়েরা স্বাচ্ছন্দে চলাফেরা করতে পারে না।
আমরা †তা কলোনিতে না । আমরা পুকুর পাড়ের দোকানে চা’ খাচ্ছি।
ও--ও , স্যরি। কাল কি করছো ?
এখন স্যরি। কেন ?
বারে, কাল না পহেলা বৈশাখ । আমাদের জীবনের প্রথম পহেলা বৈশাখ । দুজনে ঘুরবো। এক সাথে চটপটি ফ’চকা খাব। নাগর †দালায় উ?বো। ঘুরে ঘুরে জুটি †দখবো। †বন্ডের †সা †দখবো। আরো কতো কি ?
কাল আমরা ?িক করেছি সব বন্ধুরা নীল পানজাবী পরে এক সাথে ঘুরবো।
কী ? আর আমি ? কতো প্লান করে †রখেছি , †স গুলোর কি হবে ?
সেটা আমি †কমনে কমু ।
কেমনে কমু মানে । তুমি পাজলামো করো ? আমার কিন্তু †মজাজ খারাপ হচ্ছে।
এখানে †মজাজ †দখানোর কি আছে ? আমি কি বন্ধুদের কিছু সময় দিতে পারি না ?
আছে মানে আমি এক্ষুনি †তামার এলাকায় চলে আসবো। তখন †দখাবো সময় কাকে †দবে ?
আস্ । তা হলে তো ভালই হয়। আমার বিপদ উদ্দার হয়। মায়ের নিজ †চাখে †তামাকে †দখা হয়। এলাকার †লাকজন জানুক বিয়ের পূর্বে বউ জামাইর বাড়ী চলে এসেছে।
বউ ! সে-টা †তামার মুখে । অন্তরে নয় । এখনো মাকে তুমি আমার কথা বলতেই সাহস পাওনি । বাবার শরীরের †য অবস্থা †য †কান সময় আমার বিয়ে ?িক করে †ফললে আমি না বলতে পারব না।
তুমি সব সময় আমাকে দৈাড়ের উপর রাখতে চাও।
কাল সকাল সকাল আমি †তামায় রমনার বটোমূলে †দখতে চাই। এক সাথে ইলিশ পান্তা খাব।
আচ্ছা ?িক আছে । রাখি ।
শুভ নববর্ষ।
শুভ নববর্ষ । †কমন আছ আলম ?
ভাল, তুমি ?
ভাল । এই নাও †তামার জন্য।
ধন্যবাদ, লাল পাড় সাদা শাড়ীতে †তামাকে অপূর্ব লাগছে ।
হাঁ- হা-ঁ হাঁ , অপূর্ব নয় অপূর্বা। তোমাকে ধন্যবাদ।
ফুল , বই , কলম , সিডি। †তামার কালেকশন গুলো আমার চমৎকার লাগে। দারুন ফুলের ঘ্রাণ। গোলাপ আমার খুবই প্রিয় ফুল।
গোলাপ †তামার প্রিয় ফুল । কিন্তু তুমি আমায় সব সময় †বলী ফুলের মালা গিফট করো †কন ? অন্য †কান কিছুই নয় †কন ? আজ ও †তা †সই †বলী ফুলের মালা। তাও আবার বাসী । রহস্যটা কি আলম আমাকে খুলে বলবে ?
না থাক , আজ এই আনন্দের দিনে †বদনার কথা বলতে †নই ।
আনন্দের দিনেই †বদনাকে সাথে নিতে হয়। তা হলে †স আনন্দ আরো †বশ ী মধূর হয়।
অন্য দিন বলি ,
না , আজই বলতে হবে।
তোমার এই †জদটা সব সময় ধরা উচিত নয়। এটা আর †গলো না।
সেটা বুজলে †তামার †দরী করা উচিত নয়।
আমি প্রতিদিন দু’টো বাচ্চা শিশু †থকে ফুল কিনি । ফুল বিক্রিতেই তাদের পুরো পরিবারের জীবিকা। বাবা পঙ্গু। মা , তাদের সাথে ফুল বিক্রি করে। আজ তারাও ঘুরতে আসবে †মলায় । তাই গতকল্য তাদের †থকে ফুল কিনে †রখেছি।
সব সময় আমি অনেক গুলো ফুলের মালা একসাথে কিনে †রখে দিই। তারা যখন আমার জন্য অপেক্ষা করে তখন তাদের জন্য মমতায় আমার মনটা ভারী হয়ে উ?ে।
শিশু দুটি কি †ময়ে শিশু।
হাঁ , †ময়ে শিশু।
একটা প্রমিজ করবে ? তুমি সারা জীবন শুধু মাত্র এই †বলী ফুলের মালাই আমাকে উপহার হিসেবে দিবে।
হ্যালো †ক ? শুভ নববর্ষ।
শুভ নববর্ষ। আলম †তারা †কাথায় ?
আমরা চারু কলার সামনে মঙ্গল †শাভা যাত্রায়। †তারা ?
আমরা রমনার বটমূলে , অনেক ভীড়্ এগুনো যায় না। তারেকরা এসেছে ?
বলতে পারব না । ওর †মাবাইল বন্ধ †পলাম ?
কেন ?
জানি না , মনে হয় আরতির সাথে কিছু একটা হয়েছে ।
ওকে নিয়ে আর পারা †গলো না। সারা বছর ঝগড়া ঝাটি করে, †ময়েটাকে শুধু ঝালায়।
জালানোর মজাই আলাদা ।
দূর তুই ও না কি সব বলিস ।
পুরুষ জালাবে না †তা কি †ভড়ায় জ্বালাবে ?
?িক আছে বন্ধু থাক । পরে কথা হবে।
?িক আছে বন্ধু । পরে †দখা হবে।।
লোকে †লাকারন্য সমস্থ শাহাবাগ এলাকা। উৎসব মুখর সমস্থ পরিবেশ। †য যার মতো †সজে এসেছে। †নচে †গয়ে সবাই আনন্দ উৎসব করছে। বাঙ্গালীর প্রানের মিলন †মলা এ শাহবাগ এলাকা। হাজার বছরের ঐতিহ্য বুকে লালন করে তারা মঙ্গল †শাভা যাত্রা †বর করে। নানান র†ঙ্গর †পস্টুন প্লাকার্ড, বড় বড় পশু পাখির প্রতিক্রীতি। আরো কতো কি ? কিছু কিছু বখাটের ্্্্্্্উৎপাত ব্যাতীত সমস্ত পরিবেশই চমৎকার। †ছলে বুড়ো প্রায় সবার মুখে উলকি আঁকা। কেউ ঢুগঢুগি বাজায় †কউ বা †ঢাল , এক তারা। †কউ †নচে †গয়ে আনন্দে †মতে আছে । আলম আমাকে †রশমী চ’ড়ি কিনে †দয় । সাথে কিছু কাচের চ’ড়ি । কাঁচের চ’ড়ি আলমের খুবই পছন্দ। †স নিজ হাতে আমার হাতে কাচের চ’ড়ি পরিয়ে †দয় । আমার খুব ভাল লাগে তাতে। †ময়েরা লাইন ধরে †স চ’ড়ি †কনা কাটা করে। অনেক ব্যান্ড তাদের †শা করছে। নামী দামী সব শিল্পী রা ও গান †গয়ে মাতিয়ে †রখেছে । যুবা ছেলেরা বাধনহারা নৃত্য করে †স আনন্দ উৎসব সার্থক করে তুলছে। বড় বড় টিভি চ্যানেল গুলো লাইভ †টলিকাষ্ট করছে †প্রগ্রাম গুলো। শোভা যাত্রা এগিয়ে যাচ্ছে। আমরাও †শাভাযাত্রার সাথে তাল মিলিয়ে এগিয়ে যাচ্ছি। জুটির আর অভাব †নই। †জাড়ায় †জাড়ায় যুবক যুবতী আনন্দ উৎসবে †মতে উ?েছে সবাই । সবার †চাখে মুখে আনন্দের হাসি। †তমনি এক যুগল †দখে আমি অভিভুত। †ময়ে যুগলের লাল টিপ †ছলে যুগল তার কপালে লাগিয়ে †রখেছে। †দখতে দারুন লাগছে। বড় লাল টিপটি তার কপালে ফুটে রয়েছে। আন কমন অইডিয়া। আলমের এক বাহু আকড়ে ধরে আমি হাটছি। সে কি †য ভাল লাগছে বলে বুঝান দুস্কর। আলম মাঝে মধ্যে অন্য নারীর দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করলে তা আমার †চাখ এড়ায় না। কিন্তু †স এবার সীমা অতিক্রম করে †ফললো।
আমাকে ভাল না লাগলে বলতা আমি চলে †যতাম।
কেন , কি হয়েছে ?
কি হয়েছে ? না। আমার †চাখকে ফাঁকি ?
কি ফাঁকি ?
তুমি অন্য নারীর দিকে তাকিয়ে থাকবা । তাদের সমস্থ †দহ অবলোকন করবা । গিলবা। আমি †চয়ে †চয়ে †দখবো ?
এই ভীড়ের মধ্যে , এতো মানুষের মধ্যে †চাখকে সামলানো দায়।
সত্য স্বীকার করেছো । যাও মাপ করে দিলাম । আজকের জন্য সব ফ্রি।
আলম আমাকে কিছু টাকা ধার †দবে ?
কত ?
হাজার দশেক ।।
এতো টাকা দিয়ে তুমি কি করবে ?
সেটা পরে বলবো। আগে টাকাটা দাও
এতো টাকা আমার কাছে †নই।
কি বলো সবে মাসের প্রথম , মোটা অংকের †বতন পাও , এতো টাকা কি করে খরচ করলে ?
আচ্ছা কাল দিলে চলবে ?
না আজই লাগবে ।
আজ পকেটে টাকা †নই ।
ব্যাংক †থকে তুলে দাও।
ব্যাংকে ও টাকা †নই।
না থাকলে , কাল †কাথা †থকে দিতে ?
যে ভাবেই হউক ম্যানেজ করে দিতাম।
কেন ধার করে দিতে । টাকা লাগবে না।
রাগ করলে ?
তিনদিন পর এলে । †মাবাইল বন্ধ । নিরুদ্দেশ । কিছু টাকা চাইলাম । তাও †নই ।
তুমি কি আমাকে সন্ধেহ করো ?
আমার প্রশ্নের স?িক উত্তর কখনো আমি পাইনি। আমি উ?ি। †রাদেলা চলে যায় । আলম খাবার সামনে নিয়ে †রষ্টুরেন্টে বসে থাকে।।
আমাদের সম্পর্কের আজ দ্বিতীয় বর্ষ।
হু।
হু, কি ??
আর ক’ দিন এ ভাবে।
যে ক’ কাল বাঁিচ।
স-রো । সব ব্যাপারে †হয়ালী।
তোমার আমার †প্রম এতো পূরনো হয়ে †গছে।
পাজলামো ছাড়।
ছাড়লাম কি দিবে। ??
বিয়ে তাড়াতাড়ি না করলে ঝাটার †পটা।
ও -রে বাপ †র, আচ্ছা একটা ব্যাপার †তামার আমার বয়সের পার্থক্য †দখেছ।
সে সময় এখন আর নাই।
আমরা বিয়ে করলে মানাবে ??
কি হবে ? †সটা আমি এ পর্যায়ে এসে বিন্দু পরিমান ভাবতে চাই না। আমি শুধু †তামাকে চাই। তা’ ছাড়া †তামার বয়স কিছুটা ভারী হলেও †সটা †তমন একটা বুঝা যায় না।
তারপর ও।
এটা নিয়ে †যখানে আমার †কান মাথা ব্যথা †নই । †সখানে †কন ? †তামার এতো মাথা ব্যাথা। মতলব টা কি ? শুনি।
মতলব কিছুই না । †তামার ভালর জন্য বলছিলাম ?
আমার এতো ভাল চাইতে হবে না। আ†গ বলো কখন আমার বাসায় বিয়ের প্রস্তাব পা?াবে ?
এ-ই †তা, আজিই।
তুমি সব সময় এ প্রসঙ্গ আসলেই কৈাশলে এড়িয়ে চলো।
আমার পরীক্ষা †শষ বহু পূর্বে। বাবা †য †কান সময় পাত্র †জাগাড় করতে পারে। আমি কি বলে †?কাবো।
†রজাল্ট হলে তুমি একটা চাকুরি নিয়ে নাও।
রেজাল্ট হলে আমি চাকুরী নিতে পারবো কিন্তু বিয়ে †?কাতে পারব না । তুমি থাকো †তামার পাজলামো নিয়ে । †রাদেলা উ?ে †গলে আলম †রাদেলাকে †পছন হতে ডাকতে থাকে †স কর্ণপাত না করে †হটে চলে যায়। আলম তার যাওয়ার দিকে চেয়ে থাকে।।
তুমি †স দিন এভাবে চলে †যতে পারলে ??
কেন ? লাগে। ?
তোমার কি ? মনে হয় ?
আমার যাই-ই মনে হউক না †কন ? †তামার †বাধদয় হলেই হতো।
এসো , আজ দুপুরে বাহিরে †কাথায় ও খাব। না হয় দূরে †কাথায় ও যাব।
অনেক †খয়েছি । বাহিরে খাওয়ার †লাভ আমার †নই।
আচ্ছা ?িক আছে। এটলিষ্ট †দখা করে যাও।
পারব না।
কেন ?
কেন এর উত্তর আমি দিতে পারব না।
না পারলে , তো †জারের কিছু †নই । তার পরও
মা , বাহিরে †যতে নিষেধ করেছে। বাবা মা, আমাকে কড়া নজরে †রখেছে। তারা আমার জন্যে †ছলে †দখা শুরু করে দিয়েছে। আগে †তা ক্লাস ছিলো । †স কথা বলে †বর হতাম । এখন কি বলে †বর হবো ?
আমি রাখি ।
এই শোন । †শানো। রাতে †মাবাইল †খালা †রখো কথা আছে।
পারব না । রাখি বলে †রাদেলা †মাবাইল †কটে †দয়।।
এই সিগারেট †দ ।
সিগারেট !! তুই সিগারেট খাবি ??
কেন আমি কি পুরুষ না । সিগারেট †খতে পারি না।
নে, জ্বালা । কি সমস্যা †দাস্ত। ?
ভাবছি নিউ মাকেট যামু কয়টা শাড়ী – টাড়ি কিনুম।
এই ছাদে বসে শাড়ীর প্লান । ব্যাপার টা কি বলতো ?
না, কিছু না।
জাহিদরে আইতে কইছি , ও আসুক তারপর যামু।
না এক্ষুনি চল। না হয় †তারা থাক আমি একাই যাই। †তারা ছাদে আড্ডা †দ।
লোকে †লাকারন্য সমস্থ নিউ মাকেট এলাকা। সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়ায় মানুষের ঢল †নমেছে। আলম বন্ধুদের নিয়ে এ †দাকান †থকে ও †দাকান ঘুরে †বড়াচ্ছে কিন্তু কিছুই †কনা হয়নি। আলম কিছুটা বির্মষ। তার শুধু †রাদেলার কথা মনে ভাসছে। প্রায় ছুটির দিনে তারা নিউ মার্কেটে আসতো। নিউ মার্কেট আসলে প্রান টা ভরে †যতো। নিউ মার্কেট না আসলে মনে হতো কি †য়ন অপূর্ণ †থকে †গলো। ছাত্র ছাত্রীদের ও মিলন †মলা এই নিউ মার্কেট। ছুটির দিনে সবাই ছুটিয়ে আড্ডা দেয় এখানে। †রাদেলা চটপটির জন্য পাগল ছিলো। আর কিছু না খাক চটপটি তার চাই-ই। আলম অবশ্য পুরি পছন্দ করতো । তাই তারা পুরি পার্কে আসতো। নিউ মাকেটের এই এলাকায় শুধু †ছাট পুরি বিক্রি হয় বিধায় তারা এর নাম †রখেছে পুরি পার্ক। এই পুরি পার্ক তার বন্ধুদের মধ্যে ও †বশ জনপ্রিয়তা পায়। আজ †রাদেলা না থাকায় †সখানে †যতে ইচ্ছে হচ্ছে না আলমের । আলমের আচরনে বন্ধুরা কিছুটা বিরক্ত হলে ও †কউ কিছু বলছে না।
তারা এক †দাকানে বসে †বশ ক’য়টি সুন্দর সুন্দর শাড়ী পছন্দ করে।
দোস্ত †দখ্ শাড়ী গুলো দারুন । †কান তিনটা †নব ?
তোদের †যটা পছন্দ †সটা নে।
তুই কার জন্য শাড়ী কিনবি ? †কানটা ভাল মানাবে †সটা †তা তুই বুঝবি। আমরা †তা †তাকে শুধু সঙ্গ †দব।
গঙ্গ টঙ্গ বুঝি না। †যটা ভাল হয় নিয়ে †ন। আমি কার জন্যে শাড়ি কিনতে পারি †তারা বুঝিস না ?
না বললে †কমনে বুঝব। তুই শুধু পছন্দ করে †দ । আমরা বাকীটা †দখছি।
বললাম †তা, †তারা পছন্দ করলেই চলবে।
এটা হয় না , †দাস্ত।
দূর বাদ †দ শাড়ী কিনন লাগবে ন্ া। চল। বলে †বরিয়ে পড়ে।
তোরা চা, খা , আমি আসছি। বলে আলম †রাদেলাকে †ফান দেয়। এই সন্ধে †বলা †কউ ঘরে থাকে ?
কেন ?
আমি প্রশ্ন করেছি !! তুমি শুধু উত্তর দিবা। উত্ত্র নাদিলে চুপপচাপ থাকবা পাল্টা প্রশ্ন করবা না।
তুমি এতো চটে আছ †কন ? এতো †শারগোল কিসের ?
নিউ মার্কেট আইছি। এতো †ময়ে মানুষ †দখলাম । একটারে ও আলাদা করবার পারি নাই । সব কয়টার মাঝে শুধু †তামার †চহারা †দখতে পাই।
হা-হা-হা, আমার বির্মষ বাদলা দিনে তুমি †মারে বড্ড হাঁসালে।
হাঁসির সাথে সাথে তার কাব্য ও †বর হয়। আমার কি দশা †সটার প্রতি নজর †নই।
নজর থাকবে না †কন ? এখন বুঝে †দখা আমার কষ্টটা .. ?
দেখ ্ লক্ষ্যিটি , তুমি ছাড়া একদম ভাল লাগছে ন্ া। তুমি চলে এসো । কতো দিন এক সাথে চটপটি পূচকা খাই না।
বন্ধুদের সাথে নিয়ে †গছো ন্ া? তাদের সাথে মজা করে চটপটি পূচকা খাও। সাথে পূরি †খতে ভ’লো না। আমি আসতে পারছি না। বাবা বলেছে আজ রাত্রে আমাকে †দখতে আসবে। রাখি । ভালো †থকো।
গত দু মাস তুমি আমার সাথে †দখা †তা দূরে থাক ?িক মতো কথা ও বলছো না । †তামার †রজাল্টের খবরটা †দবার প্রয়োজন †বাধ করলে না। দিন গুলো আমার কিভাবে কাটে ?
সেটার জন্য †তা আমি দায়ী না। আমি †তামাকে ভুলে †যতে চাই ।
পেরেছো ?
মেয়েদের পারা না পারার মধ্যে কি ? কিছু আসে যায় ? তাদের †বঁধে ধরে বাধ্য করা হয়। আর †সটা তুমি কি ?? পরিবার পরিজন কি ?
তুমি ইদারনিং খুব জটিল ভাষায় কথা বলো।
সেটা তুমিই শিখিয়েছো। আমি পাগলা ষাড়ের নাকে মরিচ পোড়া দিয়ে ও †স ষাড়কে টলাতে পারলাম না । †সটাই আমার ব্যর্থতা।
ব্যর্থতা না সফলতা †সটা নিরুপণ করার সময় এখনো আসেনি।
আমি একজন †ময়ে মানুষ । আমার সীমাবদ্ধতা অনেক †সটা †তামার বুজা উচিত ছিলো।
তুমি এমন ভাবে বলছো †য , তুমি অন্যের ঘরনী হয়ে †গছো।
না হলেও হতে কতোক্ষন। তুমি †যমন উদাসীন । বাবা †যভাবে উ?ে পড়ে †লগেছে।
একটু †ফান করা ও †তা †ছড়ে দিচ্ছ । কেমনে পারছো ?
প্রস্তুতি নিচ্ছি †য †কান পরিস্থিতির।
ভাল। কিন্তু এতোটা খারাপ ব্যাবহার †তামার †থকে আশা করিনি ।
সবে শুরু। অন্য পুরুষের হলে , তখন ভালবাবেই বুঝবে ব্যাবহার কাকে বলে ? একুটুতেই এই আবস্থা। যখন অন্য পুরুষ এস সবার সামনে আমাকে †দখবে । নিলজ্জ্যের মতো অতো মানুষের সামনে আমাকে গিলবে। তারপর একদিন হাত ধরে নিয়ে যাবে । তখন ?
তুমি †বাঝ না ? আমি কি ? চাই ?
আমি নিরুপায়।
এভাবে বলতে পারলে ?
তুমি বাধ্য করলে , আমি †তা †তামারই হতে চাই কিন্তু তুমি না নিলে আমি কি করব ?
আমি অবশ্যই †তামাকে †নব । আমি কখনো †তামায় দুঃখ দিতে চাই না। আমি কিছু জটিলতার মধ্যে আছি ।
কি †সই জটিলতা আমাকে খুলে না বললে আমি করে কি বুঝবো ?
পরে বলবো , আগে একটু †দখা করো।
দেখি , †রজাল্ট আনতে †বর হলে , †তামার সাথে একবার †দখা করে আসবো।
তুমি এলে না।
এলাম †তা ।
কই ? এলে। সারাটি দিন পার্কে দাড়িয়ে থাকলাম ।
আমি ও সারাদিন ছিলাম ।
মানে ? †কাথায় তুমি ছিলে ?
তোমার আসে পাশে ।
মজা করো ?
সত্যি, মজা নয় । তবে †তামর মুখোমুখি এসে দাড়াইনি ।
এর †কান মানে হয় ? দাড়িয়ে দাড়িয়ে আমার দূর দশা তুমি †দখতে পারলে ?
বুঝে †দখ , তুমি †য তিন/চার দিন উধাও হয়ে থাক, তার †কান মানে হয় ? †কান দিন এর সৎ উত্তর দিয়েছ ?
কথা বলছ না †কন ? তখন আমার কি রকম মানসিক পরিস্থিতি হয় ? তারপর †মাবাইল থাকে বন্ধ । †কান †ময়ে এভাবে রিলেশান রাখে না । আমি †রখেছি , শুধু †তামায় ভালবাসি বলে ।
তুমি ইদানিং অনেক ক?িন ভাষায় কথাবার্তা বলা শুরু করেছ ।
উপায় আছে কিছু ?
এই সামান্যতেই †ভঙ্গে পড়লে ? পৃথিবীতে †প্রমের উদাহর গুলো বিল্লেষন করে †দখ ? তারা †প্রমের জন্য কি না করেছে ?
আমি অতো মহৎ হতে পারব না। আমি একজন সাধারন †ময়ে , আমি লাইলি বা শিরি.. না। আমি কিচ্ছু বুঝতে চাই না †তামাকে ছাড়া।
আমাকে ছাড়া কিছু বুঝতে চাও না ?
হাঁ , চাই না ।
তবে আজ এসে †দখা করোনি †কন ? তাই এমন আচরন করছ ?
এসেছি , তবে †তামার সাথে †দখা করিনি । †দখলাম তুমি আমার জন্যে কতোক্ষন অপেক্ষায় থাকতে পার ।
কি †দখলে ।
এ পরীক্ষায় তুমি পাশ।
কিন্তু †তামাকে †দখলাম †য ? তুমি †কাথায় ছিলে ?
দেখবে †কাথায় †থকে , আমি †তা গাছের আড়ালে লুকিয়ে ছিলাম ,
এতোক্ষন ?
হু । তাছাড়া †তামার সামনে দিয়ে ও দু’ বার †হটে গিয়েছিললাম ।
বলো কি ? আমি †কাথায় ছিলাম ?
তুমি †তামার জাগায়ই ছিলে । শুধু †মাবাইলে কল করা নিয়ে , ব্যাস্থ , আর উত্তেজনায়. চটপট করছিলে. । আমার কি †য মজা লাগছিলো যখন তুমি একবার †মাবাইল ছুড়ে মারলে , আবার †সটা কুড়িয়ে নিয়ে ?িক ?াক করে আবার সেটা দিয়ে কল করলে।
আমি †তামায় †দখলাম না †য ?
দেখবে †কাথায় †থকে আমি †বারখা পরা ছিলাম । আরে বুদ্ব পার্কের †ভত†রর এমন †রাড়ের পাশে †কউ বসে †যখান দিয়ে অনেক মানুষের চলাচল । নাবিলা বললো তাকে নাকি জালিয়ে †খয়েছ ?
ভাবলাম তুমি আসলে পার্কের অনেক †ভতর প্রবেশ ক†র বসব। হাঁ , †তামাকে না †পয়ে নাবিলাকে আনেক বার †ফান দিয়েছি । †স কলেজে । অবশেষে দুপুরের পর †রামেলকে †ফান দিই , ও সবে স্কুল †থকে ফিরেছে । জামাকাপড় পাল্টাচ্ছে , আমার কথা ভালভাবে না শুনেই , ও আলম ভাইয়া, এই †য মা আছে সামনে , মায়ের সাথে কথা বলেন, বললেই আমি †ফান †কটে দেই । †তামার †ফান †তা †খালা ছিলো , রিসিভ করো নি †কন ? এতোবার কল দিলাম তুমি আসে পাশে থাকলে †তা , রিংটোন শুনতাম ।
শুনবে †কাথা †থকে । †মাবাইল †তা সাইলেন্ট করে †রখে ছিলাম ।
গ্রেট, গ্রেট প্লালানিং। অসাধারন !
হা- হা- হা, হা-হা-হা, দারুন বললে । †তামরা পার , আমরা পারলে †দাষের ? †তামরা অট্র হাসির ঝংকার তুলতে পার , নারীর কলিহজার উপর পা †রখে , হা-হা-হার , তুপান †তাল ?
তুমি সবার সাথে আমার তুলনা করছ ?
তুমি ও †সই পুরুষ জাতি কিন্তু †সই পুরুষ জাতিকেই ভালবাসতে হয় । †সটাই কষ্টের ।
পুরুষ বিদ্বে না আমি বিদ্বেষ ?
দুটোই , তবে তুমি সবচেয়ে †বশী , তুমি আমাকে অনেক †বশ ী জ্বালাও ।
আজ তুমি কি করলে ?
আজ আমি প্রতি†শাধ নিলাম ।
পারলে ?
পারলাম বলেই †তা , আজ আমার যতো আনন্দ ।
শেষ পর্যন্ত †দখা করতে ।
তা হলে †তা আমার পরাজয় । তবে একদম †শষ বিকেলে গিয়েছিলাম †তামার পেছনে । †তামার পিছু গিয়ে দাড়াতেই †দখতে †পলাম , এক হকার তাড়ি নিয়ে তোমর সামনে , তুমি তখন চুপচাপ বেঞ্চিতে বসে । †বটা বলছিলো , স্যার আপনার মন, মনে হয় খুব খারাপ , আমি ভাল করে দিবার পারি । এই †য তাড়ি , একদম খাটি । ফরিদ পুরের । ভেজাল †নই । কোন ক্ষতি ও †নই । এই †দখেন আমি †খয়ে †দখাচ্ছি । †কান সমস্যা †নই । আমি †খলাম । আপনি ও একটু খান । †দখবেন মনের সব জ্বালা দূর হইয়া যাইবো। তার উপদ্রব †বশী বাড়লে তুমি তাকে †য তাড়া দিলে , †বটার দৈড়ানি আর †তামার দৈড়ানি †দখে আমার হাসি আর †ক †দখে ? আমি আবার মুহুর্তে লুকিয়ে †গলাম । এবং বুঝলাম আমি ও পারব শক্ত হতে । তুমি যাওয়ার এবং সন্ধের অনেক পর বাসায় ফিরলাম ।
কি করছ ?
গান শুনছিলাম ।
কি গান ?
নজরুল সংগীত, †তামার †দওয়া †সই সিডি †থকে । সে-ই গানটা আমার খুবই প্রিয় ”
কোন গানটা ?
” চাঁদ †হরিছে , চাঁদ মুখোখানি .. ”।
গানটি আমারো খুব ভাল লাগে । তোমার †তা যা ভাল লাগে †সটা সারাক্ষন †শান । এখনো কি তাই করছ ?
হু । মাকে আমাদের কথা বলেছ ?
রাতে ঘরে ডুকেই মায়ের রুমে †গলাম , কিন্তু উনি তখন ঘুমে । ব্যর্থ মনে ফিরে এলাম।
কাল সকালে ঘুম হতে উ?ে , আগে মায়ের সাথে কথা বলবে । তারপর অফিসের জন্য তৈরী হবে ।
একটু †বশী স্বার্থপরোতা হয়ে †গলো না ?
স্বার্থপরোতা বলো , বা উদারতা বলো , †তামাকে ছাড়া আমি কিছুই বুঝতে চাই না। কিছুটা স্বার্থপরোতা না থাকলে †প্রম বাঁচে না।
?িক আছে বলবো। আর কিছু ?
ও একটা কথা , অনেক দিন †পটে ঘুরপাক খাচ্ছে ।
কি কথা বলো । আমার তাড়া আছে ।
থাক, তা হলে পরে বলি ।
না , এক্ষুনি বলো । †টনশন নিয়ে কাজ করা যায় না।
তোমার তিন/চার দিন উধাও হওয়ার রহস্যটা কি খুলে বলবে ?
এই কথা, অন্যদিন বলবো । আর কিছু ?
আফিসেই †তা যাবে এতো তাড়া কিসের ?
ও †তামাকে †তা বলাই হয়নি । †সই †ছাট্র শিশু দুটির একটিকে গতকল্য একটি প্রাইবেট কার চাপা দিয়েছে । কন্ডিশন খুবই খারাপ । মনে হয় বাঁচবে না। আমি গতকাল তাকে নিয়েই হাসপাতালে †বশী ব্যাস্থ ছিলাম ।
শহরের সকল †কালাহল দূরে †?লে সবুজ আর সবুজের মা?ে তারা দুজন । সারস পাখি উড়ছে । শষ্যে †ক্ষতের মা? ।
আলম †রাদেলার †কালে মাথা †রখে শূয়ে আছে।
কি ? কিছু বলছো না †য।
যা, বলার তুমি †সন বলবা। এতো দূরে নিয়ে এসেছো।
এই দূর আকাশ । নীলে নীলে সুখের ছায়া, †দ্যালায় †দ্যালায় কাব্য রচনা ।
সব সময় কাব্য ভাল লাগে না।
কেন †গা সখি ??
তোমার ?াট্রা †গলো না। তুমি কি করেছ ? মাকে বলেছ ?
তোমার ¯িœগ্ধ †ছায়ায় , মায়ের মমতা মাখা মায়ায় ..
আলম , আমার সত্যি সত্যি প্রচন্ড রাঘ লাগছে । †হয়ালী ছাড় ।।
ছাড়লাম , কি ধরবো বলো ?
দূর , বলে †রাদেলা হাতে থাকা †মাবাইল দূরে ছ’ড়ো মারে।।
আলম †সদিকে একবার তাকিয়ে , আবার †রাদেলার †কালের দিকে †ফরে ।। †তামার অনেক †জদ তা আমি জানি ।।
জান †তা কিছু করছো না †কন ?
কি করবো ??
সেটা ও আমাকে বলে দিতে হবে ।।
তুমি †য ভাবে রাগতেছ ..
তো কি করবো ? সুসাইড করবো। ?
তা করবা †কন ?
তা না করে উপায় কি ?
উপায় †তা একটা †বর করতে হবে।। দু জন এক সাথে মরলে মনে হয় ভাল হয়।।
তুমি †তা তাই চাও।।
না †চয়ে উপায় কি ??
উঃঃ ঘুরে ফিরে একই কথা । †রাদেলার †চাখ দিয়ে অশ্রু পড়া আরম্ব করলো । †রাদেলার †চাখের জল আলমের মুখে এসে পড়ে । †স অনবরত কাঁদতে থাকে ।
কান্না †তা পূরনো বিষয় নূতন কি ? তুমি বলো ।।
নতূন কিছু না ছাই ।। বাবা আমার বিয়ে ?িক করেছে। পরশু বর পক্ষ আমাকে †দখতে আসবে।
পছন্দ হলে রিং পরিয়ে যাবে।। মা সপিং শুরু করে দিয়েছে।। আমি †তামার †থকে †শষ কথা শুনতে এসেছি।
শেষ কথা , †শষ সময়ে বলি।।
রোদেলা , আলমকে †কাল †থকে ছ’ড়ে †ফলে, লাফ দিয়ে উ?ে , হাটা †দয়।।
রোদেলা সারা রাত ঘুমোতে পারেনি। সারা রাত একই গান শুনেছে †স আর †কঁদেছে। কান্না ছাড়া তার আর কিই-ই বা করার আছে । †স †কান মতেই বাসায় আলমের কথা বলতে পারবে না। মরে †গলে ও না। আলম তার সাথে এমন আচরন করবে †স †সটা স্বপ্নে ও ভাবেনি । †সই আলম আর এই আলমের মধ্যে কতো পার্থক্য ? †কন আলম এমন করছে ? কি রহস্য আছে এর মাঝে ? কি ? †দাষ করলো †রাদেলা †য তাকে আলম এতো বড় শাস্থি দিতে পারে । †রাদেলা †ভবে দিশে হারা।
গান শুনতে শুনতে †রাদেলা কা¬ন্ত। তারপরও †স একই গানই বার বার বাজাচ্ছে। রাত ও †যন তার সাথে করুন সুরে কথা বলছে।
কখন †যনো সারাটি রাত ফুরিয়ে †গলো
ন্ধদয়ে আমার প্রচন্ড ঝড় বয়ে †গলো।।
উদাসী হাওয়ার তাল
সবি লাগে †বসামাল -- (২)
এ হৃদয়ে প্রচন্ড বয়ে †গল ।।
ক্লান্ত অবসর
কেন হলে তুমি পর --(২)
বিষাদের ছায়ায় সব †ছয়ে †গল।।
রাত †শষে ভৈর হয়। লাইট জ্বলছে। গান বাজছে। †রাদেলা কখন †য †সাফায় ঘুমিয়ে পড়লো †স নিজে ও জানে না।
তার মা , নামাজ পড়তে উ?ে †ময়ের এ আবস্থা †দখে তাকে উ?িয়ে নিয়ে খাটে শূই†য় †দয়।।
হ্যালো ভাইয়া । আমি বললাম †তা , আমি পারব না। ঘর ভর্তি †মহমান। উৎসব মুখর সমস্থ বাড়ি। আপুর রুমে যাওয়াই যাচ্ছে না ।এংগেজমেন্ট বলে ওনাকে পার্লার †থকে সাজিয়ে আনেনি। ঘরে সাজাচ্ছে। †ছলে পক্ষ কিছুক্ষনের মধ্যেই এসে পড়বে। স্যারি , আমি পারব না।
নাবিলা আমি †তামার নিকট চির কৃতঞ্জ থাকব। প্লিজ, প্লিজ নাবিলা। †তামার †য †কান প্রয়োজনে আমাকে †ডকো , পাশে পাবে।
পাচ মিনিট পর †ফান দিন । †দখছি ..।
?িক আছে।
আলম ভাই আপা কথা বলতে চাচ্ছে না। মা আপুর †মাবাইল ছিজ করে নিয়ে †গছে। ধরা †খলে আমার টা ও যাবে।
আমি †কান ভাবেই এখন পারব না। মেহমান †গলে †চষ্টা করব।
দেখ নাবিলা , আমার জাগায় যাদি তুমি থাকতে , তা হলে তুমি কি করতে বলো।।
আচ্ছা ?িক আছে । তবে আপনি কল করবে না । আমি সুয়োগ বুজে কল করে আপুকে ধরিয়ে †দব ।
আলম নাবিলার কলের অপেক্ষায়। উত্তেজনায় তার অনবরত ঘাম ঝরছে। †স রুমাল দিয়ে †স ঘাম মুছতেছে । †সই রুমাল †রাদেলার †দওয়া । আলমের †স কথা মনে পড়ে যায় †রাদেলা আলমকে †স রুমাল দিতে চায়নি । রুমাল দিলে নাকি সর্ম্পক টিকে না। আলম †জার করে †স রুমাল নিয়ে নিয়েছিলো। আলম পায়চারি করছে । †কন ? তার এতো খারাপ লাগবে । †রাদেলা বার বার তার কাছে ছুটে এসেছিলো , †স ফিরিয়ে দিয়েছে । †কান সাহসী পদক্ষেপ †স †নয়নি। আজ তাহলে †কান মুখে †রাদেলার সামনে দাড়ায়। এমন সময় নাবিলার কল । আলম তড়িৎ গতিতে †ফান রিসিভ করে ।
তুমি সকল কিছু †জনে ও আমার কান্না বৃদ্বি করার জন্য †ফান দিলে ? †কন †ফান করলে ?
তুমি কি চাও।।
তুমি কি ? জান না ? আমি কি চাই । জান দিয়ে বিশ্বাস করাবো , আমি কি চাই ?
তা লাগবে ন্ া। আমার বিশ্বাস হয়ে †গছে ।
তবে †কন ? আমার কাটা ঘায়ে লবন ..
রোদেলা প্লিজ । আমি অসহায়। †তামার কাঁন্না আমার সহয্য হয় না।
†রাদেলা অনবরত †কঁদে চলেছে । আমার এ পরিনতির জন্য তুমি দায়ী।
হাঁ আমি দায়ী । সাহস হারিয়ো না।
না হারিয়ে কি হবে ? আমার কান্না থামবে ?
না থামলে ও ভরসা রাখো ভাল কিছুর। নিয়তির উপর বিশ্বাস †রখো।
হা-হ-াহা, †রাদেলা †হঁসে উ?ে। আল্লাহর উপর সবাই ভরসা রাখে । কিন্তু কপাল †খালে কয় জনের ?
এই †তা লক্ষ্যি †ময়ে । ধৈয্য ধরো। কবিতা শূনবে ??
†রাদেলা নিরুত্তর ।
থাক , কবিতা আরেক দিন †শানাব ।
আপনি প্রমিজ করেছেন , †যকোন প্রয়োজনে আপনাকে পাশে পাব।
হু ,। বলো।।
আমার একটা কাজ করে দিতে হবে ।
কি কাজ ?
পরে বলবো । কিন্তু তখন পল্টি মারতে পারবেন না।
আচ্ছা।
আপনাকে আমি পৃথিবীর সব †চয়ে খুশীর খবর টা †দব । বলেন, কি ? খাওয়াবেন।
তুমি যা †খতে চাও।।
আপুর বিয়ে †ভঙ্গে †গছে। ওরা বড় আপুর ব্যাপারে সরাসরি বাবাকে প্রশ্ন করলে বাবা †রগে যান । এতে ওনারা ক্ষিপ্ত হয়ে আপুর বিয়ে †ভঙ্গে †দয়।
এটা †তা খুশীর নয়, দুঃখের খবর । তুমি †কমন †বান ? †বানের বিয়ে †ভঙ্গে যাওয়ায় খুশী হও।।
এই †য , আমার সাথে চালাকি । আমি কিন্তু সব জানি ।। ফাকি বাজি আমার লগে চলবে না । আমি †রাদেলা না, নাবিলা। মুখ বুজে সব সহয্য করবো ? কলার †চপে ধরে নিয়ে আসবো।
তা হলে , আমার সহযোগিতা †তামার প্রয়োজন †নই।
তা থাকবে না †কন ??
তা হলে কি ? কলার †চপে ধরে নিয়ে যাবে না ..
দূর, কি †য বলেন দুলা ভাই ।
এই, এখনো হই নি ।
শ্রীঘ্রই বানিয়ে †নব। এবার আর ছাড়ছি না।
নাবিলা †রাদেলা পাশা পাশি হাটছে।
আলম তাদের গতি †রাধ করে । †তামার †ফান বন্ধ। আমার সাথে কারো †ফানে কথা বলছো না। †দখা করা †তা দূরের কথা। আমার প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছ না †কন ? †রাদেলা আলমকে বার বার এড়িয়ে যাবার †চষ্টা করলে আলম †রাদেলার হাত †চপে ধরলে,..
রোদেলা †চচিয়ে উ?ে। হাত ছাড় বলে আলমকে জাড়ি †দয়। আলম তাতে ও †রাদেলার হাত না ছাড়লে †রাদেলা ঝারা দিয়ে আলমের হাত হতে তার হাত ছাড়িয়ে †নয় তার পর বলতে লাগলো, যার আতœ সম্মান †বাধ আছে †স এমন করতে পারে না। দিনের পর দিন †য †লাক গায়েব হয়ে থাকে । †মাটা অংকের †বতন পাওয়ার পর ও যার কাছে †কানো ব্যালেন্স থাকে না । আমি দশ হাজার টাকা ধার †চয়েছি শুধু পরখ করার জন্যে। †য †লাক এতো টাকা উড়ায় গায়েব হয়ে থাকে †স লম্পট না হলে ও ভাল মানুষ হতে পারে না। উপরে ভাল মানুষি †দখালেই ভাল মানুষ হওয়া যায় না। †কমন মা, । †ছলের প্রয়োজন বুঝে ও নিশ্চুপ থাকে । †কান †খাজ খবর রাখে না। কি শিক্ষা দিয়েছে †ময়ে মানুষ †দখলেই রাস্থা ঘাটে টানা টানি করে ?
আলম †রাদেলাকে থাàর মারতে উদ্যত হয়।
হাঁ, মারো , আর কিছু না হউক মার †তা †খতে পারব।
তুমি মার খাওয়ার ও †যাগ্যতা হারিয়ে †ফলেছো। বলে আলম চলে যায়।
আপু একটা কথা, যদি ও †তামার ব্যক্তিগত বিষয়ে আমি হস্থক্ষেপ করতে চাই না তথাপি বলতে হয় । কিছু কথা আছে যা না বললেই নয়। তুমি আলম ভাইয়াকে এমন অপমান করা †তামার †মাটেই উচিত হয়নি।
রোদেলা নিরুত্তর । তার †চাখ দিয়ে অনবরত অশ্রু গড়িয়ে পড়ছে। †কান কথাই †বরুচ্ছে না।
আমার কথা †তামার খারাপ লাগতে পারে । আলম ভাইয়ার মতো মানুষ আজ কালকার যুগে বিরল।
তা, †তার †থকে শিখতে হবে ??
না, †মা?েই নয়। কিন্তু †তামার ভুলের মাসূল তুমি কিভাবে দিবে আমি †সটা নিয়েই শংকিত।
তো তুই গিয়ে তার সাথে মহত্ত্ব †দখা ?
আমি যাব †কন ,? তুমিই এখন উ?ে দৈাড় মারবে। তবে †শান । †স দিন বাবা , মার মধ্যে অনেক কথা কাটা কাটি হয়। মা আপুর জন্য বাবাকে তিরস্কার করে । †তামার †জদের কারনে †ময়েটা আমার এখনো অতো দূরে । কতো কষ্ট না †স করছে। আলমের অভিশাপে †রাদেলার বিয়ে †ভঙ্গে †গছে। †তামার †মাটেই উচিত হয়নি অফিসে †ডকে এনে †ছলেটাকে তিরস্কার করা। কতো ভাল †ছলে । এখনো সময় আছে শূধরে নিতে।। ইত্যাদি ইত্যাদি । বাবা আলম ভাইয়াকে বছর খানেক আগেই তিরস্কার করেছিলো। বিয়েতে আমি কিন্তু আলম ভাইয়া †থকে সব †চয়ে বড় গিফটা †নব। †রাদেলা নাবিলাকে জড়িয়ে ধরে , নিস্ ।।
মোবাইল বন্ধ। বন্ধু বান্ধব †কউই জানে না আলম †কাথায়। †রাদেলা আলমকে অফিস, পাড়া , মহল্লা সব স্থানে হন্যে হয়ে †খাজ করে। †কাথায় ও না †পয়ে †রাদেলা অস্থির । †রাদ ঘাম উপেক্ষা করে †রাদেলা আলমকে খুজতে থাকে। †কালাহল মুখর চির চেনা শহরটা কতো ক?িন অচেনা মনে হচ্ছে তার। এখানে †সখানে সারা শহর †রাদেলা ঘুরে †বড়ায় †কাথায় ও আলমকে খুজে পায় না । মনে মনে নিজেকে ধিক্কার দেয় †কন ? †স দিন , আলম কি ? বলতে চাইলো ধৈর্য ধরে শূনলো না। †কাথায় †গলো ? , †কাথায় †যতে পারে ? বার বার মনে করার †চষ্টা করলো †রাদেলা। আলম বলেছিলো নৈসর্গ তার খুব ভাল লাগে সাথে পশু পাখি , জল। এই তিনের সং¤্রশিন †তা এক মাত্র চিড়িয়া খানায়। †রাদেলা সমগ্র চিড়িয়া খানা চষে †বড়ায়। কিন্তু আলমের †দখা মিলে না। এ †কান পরীক্ষায় †পললো বিধাতা আমায় ? †স চিড়িয়াখানার পাশের জলাশয়ের সামনে এসে দাড়ায় । কি সুন্দর নৈসর্গীক পরিবেশ । সুরেলা আকাশ, বাতাস , পশু পাখি। †রাদেলার †সই স†বর কিছুই ভাল লাগে না । †য করেই হউক আলমকে খুজে †বর করতেই হবে। এ দু’দিনে †রাদেলা বড় ক্লান্ত হয়ে পড়ে। কা¬ন্ত †রাদেলা একটু এগিয়ে গিয়ে ঘাষের উপর বসে পড়ে । এমন সময় এক বৃদ্ধ হকার এসে মা, চা খাবেন । আপনের কি খুব সমস্যা ? মন খারাপ ? মা।
রোদেলা অভিভুত হয়ে †স বৃদ্ধলোকটির দিকে তাকালো এই দুই দিন এতো ঘুরলো †স, †কউই জিগাইলো না তারে । আর এ বৃদ্ধ †লাকটি কতো মমতা ভরে তাকে জিগাইলো। আল্লার দুনিয়া কতো বড় , আবার কতো †ছাট । এ বৃদ্ব †লাকটি চা বিক্রি করে অথচ মন তার কতো বড় ! কতো মমতা ভরে †স আমারে মা বললো। এ বৃদ্ধ †লাকটিকে †স †কাথায় †যন †দখেছে †দখেছে বলে মনে হয়। †স চা †খতে ভাবতে লাগলো । †কাথায় ? †কাথায় ? কার মতো †যন, কার মতো †দখতে ? হু , আজম চাচার মতো । আজম চাচা আলমের সাথে আমার পরিচয়টা জানতে †চয়ে ছিলো । আই মিন উনি আলম সম†ন্ধ বেশী না জানলে ও আসল খবরটা দিতে পারে । যদি চাচা †থকে কিছু না পাই তা হলে †সাজা আলমের মায়ের কাছে চলে যাব ।
দেখ মা তুমি আলমকে আজ অনেক বড় দুঃখ দিলে। †য আলম নিজের শরীরের রক্ত দিয়ে †তামার †বানকে বাচাঁলো। তুমি পারলে তাকে এতো বড় দুঃখ দিতে ? তুমি বড়ই ভ’ল করেছ। তবে †শান্, আলমের বাবা ছিলেন এই হাসপাতালের একজন বড় ডাক্তার। নাম যশ খ্যাতি †কানটি†তই তার কমতি ছিলো না। ১৯৭১। †দশে ভয়াবহ বির্পযয়। চারিদিকে যুদ্দ †লগে †গলে সবাই যার যার মতো শহর †ছড়ে পালাতে থাকে। উনি দৃঢ় চিত্তে এই হাসপাতালে রয়ে †গলেন । সাধারন †রাগীদের পাশাপাশি লুকিয়ে লুকিয়ে এই হাসপাতালে এনে অনেক মুক্তিযোদ্ধাকে তিনি চিকিৎসা †সবা দিয়েছেন। ফলে যা হবার তাই হলো। পাক †সনারা ওনাকে নির্মম ভাবে হত্যা করে এই পুকুরের পানিতে †ফলে দিলো। কবরটা পর্যন্ত দিলো না । ওর মাকে তুলে নিয়ে কয় মাস আটকে রাখলো। আলম তখন হামাগুড়ি †দয়। সরকার তাকে স্বীকৃতি স্বরুপ বীর উত্তম †খতাব †দয়, আর আলমের মা পায় সরকারী স্কুলে একটি চাকুরী। ভাবীর প্রতিটি দিনের †চাখের জল, ..। এই হাসপাতালের প্রতি আলমের তাই এতো মায়া। শৈশব , কৈাশর †থকে সে এ হাসপাতালের ইটা, বালু †মঝে, সিড়ি , দেওয়ালের সাথে মিলে মিশে বড় হয়েছে। আমরা তাকে †কালে পি?ে করে মানুষ করেছি । বড় অভিমানী †ছলে । মন খারাপ হলে এই পুকুর পাড়ে এসে বসে থাকতো। আমাকে †দখলেই বলতো চাচা সাতার শিখবো। আমাকে সাতার †শখাবে না ? †স এই পুকুরের পানিতে বাবাকে †খাজে। পানিতে বাবার শরীরের গন্ধ †খাজে । ভাল ছাত্র ছিলো। বিসিএস করে সচিবালয়ে না গিয়ে স্বাস্থ্য বিভাগে যোগদান করে গুরে ফিরে এ হাসপাতালে এসেছে। পাক †সনাদের নির্যাতনে .. তার মায়ের গর্বে একটি কন্যা সন্তান আসে । †স †বানকে †লাকজন পাড়া মহল্লায় কটু কথা বলে। অবশেষে আলমের মা , †ময়েটার পড়াশোনা বন্ধ করে দূরে †কাথায় নিয়ে বিয়ে দিয়ে †দয়। আলম †সই †বানটারে বড় ..জান দিয়ে ভালোবাসে। †বানটার বিপদ আপদ ভাল মন্ধে আলম †সখানে দৈড়ে যায়। বিয়ে সাধীর ব্যাপারে আলমের ভীষন আপত্তি। তার মা যতই কন্যা †দখতো ততই আলম বারন করতো । তার ধারনা মায়ে †ছলের সর্ম্পকে অন্য নারী ছীড় ধরাতে পারে। এখন কি ভাবে †তামার সাথে মায়ের পরিচয় করায় ? †স প্রায় সময় দু/চার দিন †সই †বানের বাড়ি গিয়ে অবস্থান করতো এবং †মাবাইল বন্ধ রাখতো। তার আয়ের সিংহ ভাগ †স †সখানে খরচ করতো। আলম এখন †সখানেই আছে। সেখানে †গলে তুমি তাকে পাবে। ভাবীর সাথে আমার আলাপ হয়েছে। উনি বলেছেন আজই †তামার বাবার সাথে †দখা করবেন।
©somewhere in net ltd.