নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কলম চলবে সত্যের পথে

সাংবাদিক সাগর

আমার কলম চলবে সত্যের পথে

সাংবাদিক সাগর › বিস্তারিত পোস্টঃ

কাপুড়িয়া নগরের মসজিদ- আমাদের নির্বোধ ও দায়িত্বজ্ঞানহীন ধর্মানুরাগ এবং দেশপ্রেমের একটি সহজ লিটমাস টেস্ট

২৭ শে জুন, ২০১৬ রাত ১১:৩৭



উপক্রমণিকা
বাংলাদেশ বুদ্ধিমান ও দূরদর্শী নাগরিকের অভাবে যুঝছে ঠিকই, কিন্তু সবচেয়ে বেশি বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছে স্থূলবুদ্ধি, কৌশলজ্ঞানহীন কিছু অর্বাচীনের সৌখিন দেশপ্রেমের জন্য। গত দিনগুলোতে, আসলে গত কয়েক বছর ধরেই বিভিন্ন কৌশলে এদেশের সাম্প্রদায়িক পরিস্থিতির অবনতি ঘটানোর ক্ষেত্র প্রস্তুত করা হচ্ছে। বর্তমানে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেখা যায়, আপাত দৃষ্টিতে সবাই এই বিষয়টা বুঝতে পারছে।
প্রসঙ্গ কাপুড়িয়া নগরের প্রস্তাবিত জামে মসজিদ
অথচ সাম্প্রতিক সময়ে পুরান ঢাকার কাপুড়িয়া নগরের এক ঘটনাকে কেন্দ্র করে অনলাইনে এক শ্রেণীর বুদ্ধির দুশমনের কার্যকলাপ দেখে মনে হয়, এরা হাওয়া খেয়ে বুড়ো হচ্ছে, এদের গুপ্তকেশও গজিয়েছে স্রেফ পৈত্রিক অন্ন ধ্বংস করে প্রাপ্ত পুষ্টির বদৌলতেই! মুখে অনেক বড় বড় আর শক্ত কথা বলে, বিএসআরএম রডের মতো স্নায়ু দেখিয়ে চলা এসব অর্বাচীন তরুণ আসলে ভারতের উদ্দেশ্য সফল করে এদেশে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা লাগিয়ে দিয়ে দেশকে নাঙ্গা ফেলে স্ত্রী বা মাশুকার দোপাট্টার তলে আশ্রয় নিতে, এবং শেষমেশ মানে মানে লেজ গুটিয়ে কোনমতে বিদেশগামী প্লেনে চেপে বসতে সামনের জুমার নামাজ কাপুড়িয়া নগরের সেই প্রস্তাবিত মসজিদের স্থানে আদায় করার জন্য ইভেন্ট খুলে বসেছে।
এই পরিস্থিতিকে বিবেচনা করার প্রয়োজনীয় দৃষ্টিভঙ্গি কেমন হওয়া উচিত?
এখানে বেশ কিছু বিষয় বিবেচনায় আনতে হবে। এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত আছে, যে স্থানটি মসজিদ নির্মাণের জন্য নির্ধারিত হয়েছে, তা আসলেই নিষ্কণ্টক ও ওয়াকফ সম্পত্তি, নাকি শত্রু সম্পত্তির আওতায় সরকার কতৃক অধিগ্রহণ করা সম্পত্তি। এছাড়াও যেসব হিন্দু এই জমিকে মন্দিরের জমি বলে দাবী করছে, তাদের দাবীর সত্যাসত্য নিরূপণও জরুরী। কারণ অনেক স্থানীয় হিন্দুই বলছেন, এই স্থানে কখনো কোন মন্দির ছিল বলে তারা জানতেন না। ফলে মসজিদ চালু করতে উদ্যোগী হওয়া সেই ক্লাব, বা বায়বীয় মন্দিরের দাবী নিয়ে আসা হিন্দু নেতারা, উভয়ই যে কোন ঘোঁট পাকানোর তালে এই পরিস্থিতির জন্ম দেয়নি, তেমন সম্ভাবনা এক বাক্যে অস্বীকার করা যায়না।
এদেশে মসজিদ ও মন্দিরের নামে সম্পত্তি দখলের ঐতিহাসিক নজিরের দুটি নমুনা
বিশেষত, মসজিদের নামে সরকারী জমি দখলের সিলসিলা এদেশে নতুন নয়। যারা নিয়মিত হাতীরঝিলে বেড়াতে যান, তারা নিশ্চয়ই ঝিলের মধ্যে বাঁশের খুঁটিতে তৈরি একটি মসজিদ দেখতে পান। এই মসজিদ কোন বৈধ মসজিদ নয়। কোন জামে মসজিদ স্থাপনের প্রথম ও প্রধান শর্তই হচ্ছে, নিষ্কণ্টক ও ওয়াকফকৃত জমি। তেমনিভাবে মন্দিরের নামে অর্পিত সম্পত্তি অধিগ্রহণের তরকীবও এদেশে খেলা হয়। পুরান ঢাকার বুড়িগঙ্গার তীরে অবস্থিত এককালের সুরম্য প্রাসাদ রূপলাল হাউস দখল করতে ১৯৭৩ সালে এই প্রাসাদের জমিদারদের উত্তরাধিকারী দাবী করা এক ব্যক্তি আদালতে মামলা ঠুকে দিয়েছিলো। মামলার আর্জিতে রূপলাল হাউসকে ধর্মীয় স্থাপনা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছিলো। অথচ বাস্তবতা হচ্ছে, রূপলাল হাউস একটি জমিদার বাড়ী। এখানে হরদম জমিদার আর ব্রিটিশ সাহেবদের সৌজন্যে বাইজী নাচ, আর উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতের আসর বসানো হতো। এসব উপভোগ করতে রূপলাল হাউসে আসা অভ্যাগতদের মধ্যে আছেন ব্রিটিশ ভারতের ভাইসরয় ফ্রেডরিক হ্যামিল্টন (লর্ড ডাফরিন) থেকে শুরু করে শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় পর্যন্ত অনেকেই। পুরো প্রাসাদে বড়জোর একটি নাটমন্দির ছিল, যা জমিদার পরিবারিরের নিজস্ব পূজাঘর হিসেবে ব্যবহৃত হতো। এই পূজাগৃহ ও অন্যান্য সকল আসবাবপত্র, বহুমূল্য ঝাড়বাতি নিয়ে রূপলাল হাউসের বাসিন্দারা ১৯৪৬ সালের শেষের দিকেই কলকাতা চলে যান, রেখে যান রূপলাল হাউসের কংকাল।
সারাদিন ভারতের পিণ্ডি চটকানো এসব বুদ্ধি প্রতিবন্ধীদের কয়জন না বুঝে ভারতের হস্তে প্রার্থিত তুরুপের তাসটি তুলে দিতে যাচ্ছে, আর কয়জন ইচ্ছা করেই লিঞ্চিং মবের মতো পরিস্থিতির জন্ম দিয়ে ভারতের জন্য অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টিতে নিয়োজিত হয়েছে, সে বিষয়ে আমি সন্দিহান।
প্রসঙ্গ পঞ্চম বাহিনী
স্পষ্টতই, দেশে এক শ্রেণীর পঞ্চম বাহিনীর তৎপরতা শুরু হয়েছে। এর প্রাথমিক উদ্দেশ্য এদেশে ভারতের প্রত্যক্ষ সামরিক আগ্রাসন তরান্বিত নয়, বরং এদেশে ভারতের প্রভাব কোন না কোন ভাবে প্রলম্বিত করা। আর এজন্যই গত কয়েক বছর ধরে সন্তর্পণে চালা হিন্দু কার্ডের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া এখন ধীরে গোচরীভূত হওয়া শুরু করেছে।
ডানপন্থী ও জাতীয়তাবাদের সমর্থকদের সকরুণ ও নিদারুণ ভ্রান্তি
অনলাইনে এমন অসংখ্য ইতর শ্রেণীর দেশভক্ত আছে, যারা দেশকে সিকিম বা নিজাম শাসিত হায়দ্রাবাদের কাতারে দেখতে পারলে আসলে খুশিই হয়। আর এজন্যই এদেশে ভারতের রাজনৈতিক প্রভাবের গন্তব্যকে সুযোগ পেলেই এরা সিকিম বা হায়দ্রাবাদের পরিণতির মতো দেখিয়ে অর্গাজম লাভ করে। এদের প্রায়ই সবাই কোন না কোন ডানপন্থী রাজনৈতিক দলের জিম্মায় নিজের বিবেক জিম্মা দিয়ে রেখেছে বিধায় তারা বুঝতে পারছে না, বাংলাদেশের জন্য সিকিম হবার চেয়ে ভুটান হওয়া অধিক অবমাননার। অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট নামের এক শ্রেণীর বুদ্ধির দুশমন যতোই কামনা করুক, বাংলাদেশের পক্ষে খাস ভৌগলিক ও জনমিতির বাস্তবতার জন্যই সিকিম হওয়া সম্ভব নয়।
বাংলাদেশ ও সিকিমের মধ্যকার তুলনা
পৃথিবীর অন্যতম জনবহুল বাংলাদেশ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধত্তোর বিশ্ব ব্যবস্থার একটি স্বতন্ত্র সেট আপ। আদিকাল থেকে এদেশের একটি আন্তর্জাতিক প্রতিমূর্তি আছে। এর জাতীয়তাও কৃত্রিম নয়, বরং ধর্ম ও ভাষার সম্মিলনে এক বিরল জাতিগত সাযুজ্যের অধিকারী এই দেশ, যার বর্তমান রূপের সূচনাই ঘটেছে ১৩৫২ সালে। কেবল চীন ছাড়া আশেপাশের কোন দেশের ধর্মীয় ও নৃতাত্ত্বিক জনমিতির এমন সুষম মেলবন্ধন নেই। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামকে চাইলেও ভারত নিজের ভূখণ্ড সম্প্রসারণের নামে চালিয়ে দিতে পারেনি। স্বাধীনতার পাঁচ বছরের মধ্যেই বাংলাদেশ বিশ্বের বেশিরভাগ দেশের রাজনৈতিক স্বীকৃতি পেয়ে যায়।
অপরদিকে হিমালয় পার্বত্য অঞ্চলে অবস্থিত জনবিরল ও লোকচক্ষুর আড়ালে থাকা সিকিম কখনোই সম্পূর্ণ স্বাধীন ও সার্বভৌম ছিলোনা। চেগিয়াল নামে পরিচিত রাজা শাসিত সিকিমে জাতীয়তাবাদী চেতনার কথাও কখনো শোনা যায়না। ১৯৭৫ সালে জবরদখলের আগে থেকেই আইনগত অধিকারে ভারত সিকিমের বেশ কিছু বিষয়ে নীতিনির্ধারণে ভূমিকা রাখতে পারতো। তাছাড়া ১৯৫০ সালে চীন কতৃক আধা স্বাধীন তিব্বত দখলে নেয়ার পর অনেকটা নিজের পিঠ বাঁচাতেই ভারতের জন্য আধা স্বাধীন সিকিম অধিকার করে নেয়ার দরকার ছিল। সিকিমের স্বাধীনতা কার্যত বিশ্বসভায় স্বীকৃতই ছিলোনা। জাতিসংঘ বা অন্য কোন আন্তর্জাতিক সংস্থাতেও সিকিম সদস্য ছিলোনা। এমনকি, ব্রিটিশ আমলে প্রণীত প্রতিটি মানচিত্রে সিকিমকে ত্রিপুরা, কোচবিহার প্রভৃতি দেশীয় রাজ্যের মতো অবিভক্ত বাংলা প্রদেশের প্রভাবাধীন অঞ্চল হিসেবে দেখানো হয়েছে।

১৯০৫ সালে বাংলা ভেঙ্গে সৃষ্টি করা নতুন প্রদেশ বেঙ্গল প্রেসিডেন্সীর সাথে সংযুক্ত অবস্থায় পাহাড়ি রাজ্য সিকিম
বাংলাদেশের আসল শক্তি এর জনমিতি ও ভৌগলিক অবস্থানে নিহিত
কিন্তু বাংলাদেশের ব্যাপারটা কি তেমন? বাংলাদেশে ভারতের স্বার্থ অনেকটা প্রেমিকাকে ঈর্ষান্বিত করতে পরনারীর প্রতি ছদ্ম আসক্তির মতো। আর সিকিমে ভারতের স্বার্থ ছিল কাচারি ঘরে রেখে আসা বাঁধা বাইজীর মতো। ভৌগলিকভাবে বাংলাদেশ সিকিম, নেপাল, ভুটানের মতো কোন কোন বাফার স্টেট নয়। বরং প্রাচ্য ও ভারতের সঙ্গমে অবস্থিত বাংলাদেশ একটি মিডল কিংডম। মিডল কিংডম হবার কারণে বাংলাদেশ ভারত ও চীনের মধ্যকার সম্ভাব্য সামরিক ও অর্থনৈতিক সংঘাতে বাফার স্টেটের মতো শক অ্যাবজরভারের ভূমিকায় নয়, বরং মিডল কিংডম হবার বদৌলতে নীতিনির্ধারণী অবস্থান নিতে সক্ষম। বাংলাদেশ ভারতের জন্য সিকিমের মতো নিশ্চিন্ত কোন বিষয় নয় বলেই গাঁটের পয়সা খরচ করে ভারত পশ্চিমবঙ্গের হুগলী জেলার চুঁচুড়া মহকুমায় ১০০০ কিলোওয়াটের একটি রেডিও ট্রান্সমিটার বসিয়েছে, যার উদ্দেশ্য বাংলাদেশে প্রোপাগান্ডা চালানো।
বাংলা নামের মিডল কিংডমে চীনের স্বার্থ
এজন্য বাংলাদেশে চীনের স্বার্থ হচ্ছে, এদেশ যাতে ভারতের প্রতি অতিশয় অনুকূল না হয়ে পড়ে, সেটা নিশ্চিত করা। চীন বাংলাদেশকে নিজের অনুকূলে রাখতে টার্গেট করেছে এদেশের অবকাঠামো উন্নয়নে দেদার ভূমিকা পালন, এবং এদেশের সুশীল সমাজ ও সবচেয়ে প্রবল রাজনৈতিক শক্তি সামরিক বাহিনীর সাথে নিবিড় সম্পর্ক স্থাপন করে যাওয়া।
বাংলা নামের মিডল কিংডমে ভারতের স্বার্থ
অন্যদিকে একই লক্ষ্যে ভারতের স্বাভাবিক কর্তব্য হচ্ছে, বাংলাদেশে বিভেদ ও অনৈক্যের বীজ বপন করা, এবং তাতে সময়ে সময়ে ইন্ধন দিয়ে জাগরূক রাখা। কিন্তু ধর্ম ও ভাষার দিক থেকে বাংলার একরঙ্গা চেহারা এজন্য ভারতের জন্য বিশেষ অসুবিধাজনক। তবে তারা ভাষাগত বিভেদ টিকিয়ে রাখতে সত্তুর ও আশির দশকে পার্বত্য চট্টগ্রামে বিচ্ছিন্নতাবাদে ইন্ধন দিয়ে গেছে। আর সাম্প্রদায়িক দিক থেকে ভারত নিজেকে পরম হিন্দু হিতৈষী হিসেবে জাহির করেও এদেশের হিন্দুদের মাথায় নুন রেখে বড়ই খাওয়ার মানসে প্রথমে দক্ষিণপশ্চিম বাংলায় ‘বঙ্গভূমি’ নামে একটি বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলনের জন্ম দেয়। গত শতকের নব্বইয়ের দশকের শুরুতে যখন দেখা গেলো বঙ্গভূমি আন্দোলন কোন কাজেই আসবে না, তখন তারা এদেশের হিন্দু ও মুসলিম জনগোষ্ঠীর মধ্যে একটি সামগ্রিক সংঘাত লাগিয়ে দেয়ার জুয়ায় অবতীর্ণ হয়। এই পর্যায়ে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ বা হিন্দু মহাজোটের মতো পঞ্চম বাহিনীর মোতায়েন করা হয়। মজার বিষয় হচ্ছে, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদে বৌদ্ধ ও খ্রিষ্টানের অংশগ্রহণ নেই বললেই চলে। পঞ্চম বাহিনীতে এই দুই সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের অংশগ্রহণ থাকতো তখন, যখন দেখা যেতো খ্রিষ্টান ও বৌদ্ধদের দিয়ে আসল উদ্দেশ্য সমাপন সহজসাধ্য হতো!
মিডল কিংডমকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে গৃহীত পদক্ষেপের ধারাবাহিকতা
আশির দশকের শেষে কৈবল্যধামে ভাংচুর, ১৯৯২ সালে বাবরী মসজিদ ধ্বংসের প্রেক্ষিতে এদেশে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা বাড়ার প্রেক্ষিতে নানা ইস্যুকে কাজে লাগিয়ে ধর্মনিরপেক্ষতাকে পুনরায় এদেশের রাজনীতির পুরোভাগে এনে বেশ কিছু প্রথম পর্যায়ের গ্রাউন্ড ওয়ার্কের পর পরবর্তী কয়েক বছরে কৌশলে প্রথমে সরকারী পদসমূহে অস্বাভাবিক হারে হিন্দু নিয়োগের ব্যবস্থা করিয়ে মুসলিমদের মনে বিক্ষোভ সৃষ্টি করার কাজ শুরু করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় প্রকাশিত হতে থাকে রাসুল (সাঃ) এর শানে বিভিন্ন মহল থেকে ধৃষ্টতাসূচক মন্তব্য, হিন্দু শিক্ষক কতৃক মুসলিম ছাত্রী বলৎকারের একের পর এক ঘটনার কথা। উল্টা দিকে হিন্দুদের জমিজমা দখল, পাহাড়িদের আদিবাসী বানিয়ে তাদের উপর মুসলিমের অত্যাচারকে বেশ ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে ব্র্যান্ডিং করে বিপরীত দৃষ্টিকোণ থেকে একটা বৈশ্বিক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করার কাজও সমান তালে চলে। এসব ছিল দ্বিতীয় পর্যায়ের প্রস্তুতি পর্ব।
এখন সরাসরি মসজিদ স্থাপনে হিন্দুদের বাঁধা দেয়ার মতো ঘটনার শুরু হয়ে গেছে, যা একই পরিকল্পনার পরবর্তী ধাপ মাত্র। এই পরিকল্পনা তথাকথিত অখণ্ড ভারত কায়মের জন্য নয়, বরং ১৯৪৭ পরবর্তী বিখণ্ড ভারতকে নিরাপদ রাখতেই গৃহীত হয়েছে। এদেশের মানুষের মধ্যে অখণ্ড ভারতের ধারণা সম্পর্কে একটি ভীতি টিকিয়ে রাখা, এবং নিজের দুর্বলতা ঢেকে রেখে এদেশে স্বীয় স্বার্থে নিয়োজিত থেকে যেতে ভারত যে উদ্যোগগুলো নিয়ে এসেছে, নিজেদের জাতীয়তাবাদী ও ইসলামপন্থী বলে পরিচয় দেয়া এক শ্রেণীর শিশুতোষ দায়িত্বজ্ঞানহীনতায় আক্রান্ত ব্যক্তি নিজেদের অজান্তে, এবং সম্পূর্ণ বিনা পারিশ্রমিকে সেসব উদ্যোগগুলোর স্বপক্ষে প্রোপাগান্ডা মেশিনের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়ে কতো মুনশিয়ানার সাথেই না বাংলার খেদমত করে যাচ্ছে!
আমাদের সম্ভাব্য করনীয়
আমরা স্পষ্টতই গাছের গোড়া ফেলে আগায় কুড়াল মারতে প্রত্যয়ী হয়ে আত্মবিনাশী এক হুজুগে লিপ্ত হয়েছি। বলাবাহুল্য, দেশে যখন পঞ্চম বাহিনীর তৎপরতা বেড়ে যায়, তখন পঞ্চম বাহিনী নয়, বরং এদের পৃষ্ঠপোষকদের সামাজিক, আর্থিক ও সুযোগ মতো সামরিক পন্থায় প্রতিহত করাতেই মূল ইতিকর্তব্য নিহিত হয়ে যায়। কারণ গাছের গোড়া কেটে দিলে আগাও মরে যায়।
হতাশ উপসংহার
উপরে আমি যা বলতে চাইলাম, তা সন্তুষ্টচিত্তে কয়জন বুঝতে পারবে, সে বিষয়ে আমার সন্দেহ থাকলেও, সবাই যে সহজ বাংলায় লেখা এই নিবন্ধটি পড়তে পারবে, সে বিষয়ে আমার কোন সন্দেহ নেই। আমার এও সন্দেহ নেই যে, এতো কিছুর পরও, দিনদিন সবকিছু আমাদের সামনে দিবালোকের মতো স্পষ্ট হওয়া শুরু করলেও দেশকে উচ্ছন্নে নিতে আমাদের নির্বোধ ও দায়িত্বজ্ঞানহীন দেশপ্রেমের ইজাকুলেশন থামবে না। যাও বাছারা, ভালো করে কাপুড়িয়া নগরে নামাজ পড়ে এসো তোমরা। একটা দাঙ্গা না বাঁধাতে পারলে তোমাদের দেশপ্রেমের স্বীকৃতি মিলবে কেমনে…!
সংগ্রহ

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.