নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

দিন দিন বিশ্বাস নিলাম হয়ে যাচ্ছে,অবিশ্বাসের কাছে চড়া দামে!! মনুষ্য জাতির মাঝে বিশ্বাস শব্দটা তলিয়ে যাচ্ছে পৃথিবীর ভূগর্ভের অতল দেশে ।

শাহাদাত নিরব

দুই লাইনের বায়ো তে কি জীবন বৃত্তান্ত লিখা যায় ?

শাহাদাত নিরব › বিস্তারিত পোস্টঃ

ইরা ও ইমনের কাছে আসার গল্প:

২২ শে জানুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৫:১৩


ইরা ও ইমন একই ভার্সিটিতে পড়ে,ইরা ফ্রেশার,
এই সেমিস্টারে নতুন ভর্তি হয়েছে,দেখতে যেমন সুশ্রি,স্বভাবে তেমন মিষ্টি,লেখাপড়ায় ও ভালো,
ইমন ঠিক তার উল্টো,বড়লোক বাবা মায়ের একমাত্র সন্তান,টাকার পিছনে ছুটতে থাকা বাবা মায়ের সময় না পেয়ে, টাকা আর দুষ্টুমিকেই নিজের সংগি করে নিয়েছে।ভার্সিটিতে এখন সে সিনিয়র,সব মেয়েদের সাথে ফ্লার্ট করা তার নেশায় পরিনত হয়ে গেছে,পারলে দুষ্টুমি করে সুন্দরী মেম দের সাথেও ফ্লার্ট করতে বাদ রাখে না সে।
এক মিষ্টি শীতের সকালে কফি হাতে ইরাকে ক্যাম্পাসের ক্যাফেটেরিয়া তে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে ইমন,এক দেখাতেই ভালোলাগা কাজ করতে থাকে এবং সেখান থেকেই বন্ধুদেরকে নিয়ে ইরার ডিপার্টমেন্ট জেনে নেয় সে,এর পর থেকেই শুরু হয় ইরাকে পটাতে ব্যস্ত হয়ে পরে সে,প্রতিদিন ইরার বসার জায়গায় একটি লাল ও হলুদ গোলাপ এবং একমুঠো কাচের চুড়ি রেখে দেয় ইমন,ইরা অবাক হয়,খুজতে থাকে, প্রথমে বিরক্ত হলেও তার মধ্যেও ভালললাগা কাজ করতে শুরু করে,কিছুদিন পর নিজ হাতে কিছু বেলুন ও গোলাপ নিয়ে ইরার সামনে হাজির হয় ইমন, ইরা কিছু বলার আগেই ইমন বলে,তোমার কিছু বলতে হবে না,তোমাকে আমার ভাললাগে,এর মানে এই নয় আমাকেও তোমার ভাল লাগতে হবে,আমাকে বন্ধু হিসেবে পাশে রাখতে পার,যদি আমাকে ভাল লাগে তাহলে কাল সকালে লাল গোলাপ নিয়ে এখানে থেকো,আর বন্ধু হতে চাইলে হলুদ গোলাপ নিয়ে এসো. আর যদি একদমই অপছন্দ হয় তাহলে আমি বুঝে নিবো আর কখনো তোমার সামনে আসব না,
পরের দিন নির্দিষ্ট জায়গায় ইমন ইরার জন্যে অপেক্ষা করতে থাকে,ইরা আসে না,যখন ইমন চলে যাচ্ছে তখন একটি মেয়ে এসে তাকে একগুচ্ছ হলুদ গোলাপ আর একটি চিঠি দিয়ে যায়,চিঠিতে লেখা থাকে,"তোমাকে আমার খারাপ লাগে নাহ,বন্ধু হওয়া ই যায়"। এরপর শুরু হয় বন্ধুত্ব এর পথচলা।ইমন তার ভাললাগা,খারাপলাগা গুলো বলে,বলে ছোটকাল থেকে বাবা মার আদর না পাওয়ার কথা,মায়ের হাতের রান্না না খাওয়ার কথা,বাবা মার ঝগড়া করার কথা।ইরা শুনে,তার কস্টগুলোকে স্পশ করার চেষ্টা করে।অন্যদিকে ইরা তার সুখী পরিবারের গল্প শোনায়,ইমন আফসোস করে।২জনের মধ্যে বন্ধুত্বের গভীরতা বাড়ে।ইরা ইমনের জন্য নিজ হাতে বিরিয়ানি,নুডুলস রান্না করে নিয়ে আসে।ইরা ইমনের সকল একাকীত্ব দূর করতে চায়।মনের অজান্তে ইমনকে ভালবেসে ফেলে সে।এরমাঝে বিপত্তি আসে।ভার্সিটির কিছু সিনিয়র মেয়ে ইরাকে বলে ইমন ভাল নয়,সব মেয়ের সাথে একইরকম করে সে।ফ্লারট করা,মেয়ে পটানো তার নেশা।ইরা বিশ্বাস করে না।সে ইমনকে অবিশ্বাস করতে পারে না, সামনে ১৪ ই ফেব্রুয়ারি,ইরা ভাবে অই দিন ই সে ইমন কে তার ভালবাসার কথা জানাবে,অন্যদিকে ইমন ও ইরার প্রতি দুর্বল হয়ে পরে তার হাসি,তার সারল্যের প্রেমে পড়ে যায়,কিন্তু সে অনুভূতিকে প্রাধান্য দিতে চায় না,কারন ছোটকাল থেকেই সে তার বাবা মায়ের ঝগড়া আর দুরত্ব দেখে আসছে,ভালবাসা বিয়ে এসবের প্রতি এক ধরনের অবিশ্বাস জন্মে গেছে তার,সে ভাবে ইরাকে বিয়ে করলেও কখনো ভাল রাখতে পারবে না,তাই সে সিদ্ধান্ত নেয় ইরার থেকে দূরে সরে যাওয়ার।
১৪ ফেব্রুয়ারি,
ইরার সাজে,গাঢ় নীল রঙ এর শাড়ি,হাতে ইমনে দেওয়া কাচের চুড়ি,কপালে নীল টিপ ক্যাম্পাসে ঢুকে ইরা,ইমনকে খুজতে থাকে হন্য হয়ে,তার ভালবাসার কথা জানানোর জন্য,
কিছু দুরে ইমন কে হাসতে দেখে ছুটে যায় ইরা। কিছু দূর সামনে গিয়ে দেখে ইমন অন্য একটি মেয়ের সাথে হাসতে হাসতে হাত ধরে কথা বলছে।ইরার মাথায় আসমান ভেঙ্গে পড়ার মতো কিছুতেই বিশ্বাস করতে পারছে না তখনি মনে পড়ে, সিনিয়র আপুদের কথাই তাহলে ঠিক ইমন এমনই ইরা’র সাথে সে ফ্লাটিং করেছে। সবই খেলা ছিলো। ইরা ক্যাম্পাসের এক কোনে দাঁড়িয়ে ইমনের জন্য অপেক্ষা করছিলো। ইমন আসতেই ইরা সামনে গিয়ে দাঁড়ায় এবং তার চোখে দেখা প্রতারনার কারন জানতে চায়। ইমন নিস্তব্দ হয়ে ইরার সব কথা হজম করে এবং চোখের জল ফেলতে ফেলতে দুটো কথা বলে । সে যেই মেয়েটির হাত ধরে কথা বলেছিলো সে তার কাজিন এবং এগুলো ছিলো ইচ্ছাকৃত যেনো ইরা ভুল বুঝে তার কাছ থেকে দূরে সরে যায়। কিন্তু ইমন জানতো না এর পরিনাম দু-জনকে কতটা কষ্ট দিতে যাচ্ছে। একদিন বিকেলে ইমনের নাম্বারে একটি ফোন আসে। তার চোখ দিয়ে পানি ঝরতে থাকে সকালে ইমন কে ঐ অবস্থায় দেখার পর ইরা ক্যাম্পাস থেকে বেরিয়ে অন্য মনস্ক হয়ে হাটতে থাকে আর পিচন থেকে একটি ট্রাক এসে ইরা’কে ধাক্কা দেয়। ইরা এখন I C U তে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে এখন সে কোমায়। ইমন ছুটে হাসপাতাল যায় তার বুক ধর ঘর করে কাঁপছে সে ইরা’র থেকে দূরে যেতে চেয়েছিলো ঠিকই কিন্তু এভাবে নয়। সে নিজেকে কিছুতেই ক্ষমা করতে পারছিলো না। ভাবছিলো তার জন্যই সবকিছু। ইমন ইরা’রে ছুঁতে চাচ্ছিলো,গলা ফাটিয়ে বলতে চাচ্ছিলো ইরা একটিবার তাকাও,একটি বার শোনো,একটিবার অনুভব করো। অনুভব করো কতটা ভালোবাসি তোমায়,কতটা আপন করে চাই তোমাকে,কতটা চাই পাশাপাশি হাটতে। আর তখনই ডাক্তার অপারেশন থিয়েটর থেকে বের হলো ইমন ছুটে গেলো ডাক্তারের কাছে, ডাক্তার বলল ইরা কোমায় চলে গেছে কবে তার জ্ঞান ফিরবে কেউ জানে না।
যতটা সম্ভব তার আশেপাশে থাকতে হবে,তাকে আনন্দে রাখতে হবে,সে কোমায় চলে গেছে ঠিকই কিন্তু অনুভুতি এখনো রয়েছে।এই অনুভুতি দিয়েই তাকে জ্ঞান ফিরাতে হবে। ইমন এবার আর পিছু হটলো না কারন যেই ভাবেই হোক ইরা’কে তার সুস্থ করে তুলতেই হবে পূরো হসপিটাল রুম সে বেলুন আর গোলাফ দিয়ে সাজালো। মাথার উপর কাঁচের চুড়ি বেধে দিলো কারন ইমন জানতো ইরা’র কাঁচচে চুড়ির শব্দ অনেক প্রিয়। প্রতিদিন সকাল থেকে রাত ইরা’র পাশে সে বসে থাকে। তাকে জোকস শুনাতো,গল্প পড়ে শুনাতো,মোবাইলে তার প্রিয় গান শুনাতো। হাসপাতালকেই তার ঘর বানিয়ে নিয়েছিলো। প্রতিদিন রাতে এই আশাতেই থাকতো যে সকাল হলেই ইরা’র ঐ দু-চোখ খোলা দেখতে পাবে।হাসির কল কল আওয়াজ শুনতে পাবে।
আল্লাহর কাছে তার একটাই প্রার্থনা ইবা যেনো চোখ খুলে।ইরা’কে যে অনেক কথা বলার আছে তার,আছে ক্ষমা চাওয়ার,আছে তার সাথে হাটতে চলার অনূরোধ।এসব ভাবতে ভাবতেই ইমনের চোখ দিয়ে দু’ফোটা জল গড়িয়ে পড়লোইবার হাতে বিধাতাই যেনো এরই অপেক্ষায় ছিলেন। ইমনের চোখের জল পড়তেই ইরা তার হাত নাড়তে লাগলো। ইমন দৌড়ে গেলো ডাক্তারের কাছে। ডাক্তার কে নিয়ে এসে দেখলো ইরা চোখ খুলছে। ইমন দেরি না করে ইরা’র কাছে ছুটে গেলো এবং কানে ধরে ক্ষমা চাইলো বলল তুমি কি আমার সব অপরাদ ক্ষমা করে তোমার সাথে একই রাস্তায় হাটতে দিবে ? ইরা’ও হ্যাঁ-সূচক মাথা নাড়ায়।
এভাবেই শুরু,
সব বাধা পেরিয়ে শুরু হয় তাদের কাছে আসার গল্প।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৫:৫০

চাঁদগাজী বলেছেন:


আমি কয়েকজন রাজনীতিবিদের অন্যায় নিয়ে লিখছি, আপনি বাকীদের নিয়ে লিখেন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.