নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

চারুশিল্পী , লেখক

শাহ আজিজ

চারুশিল্পী , লেখক

শাহ আজিজ › বিস্তারিত পোস্টঃ

৭১সালে এই দিনে আমি এবং আমার সত্ত্বা

১৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ সকাল ১১:০০

আজ ভোর বেলাতে তোপধ্বনির গুরুধ্বনি ভুল করে বড়সড় বোমার আওয়াজ ভেবে শুরু করলাম আমার বিজয়ের অনুভূতি । ৭১এর ১৩ই ডিসেম্বর আমরা দু ভাই মুক্তাঞ্চলে ঢুকে পড়েছি । আমরা দীর্ঘ নৌকা ভ্রমনে কিন্তু পাকিস্তানী দখলকৃত এলাকা থেকে আসছি । দূর থেকে বোঝা যাচ্ছিল থানা ভবন এর পতাকা ঠিক পাকিস্তানী পতাকা লাগছে না । আমি দাড় বাওয়া বন্ধ করে মাথা ঘুরিয়ে এক নজরে তাকিয়ে দুরের পতাকার দিকে । মেজ ভাই ছইএর ভিতর দিয়ে এগিয়ে আমার পাশে দাঁড়ালেন । মাঝি এখন একাই নৌকা বাইছে জোয়ারের বিপরীতে । মৃদু বাতাসে পতাকা নড়ছে বটে তবে পুরোপুরি বোঝার মতো নয়, আমাদের গ্রাম কি এখনো পাকিস্তানী দখলে ! হটাত দমকা বাতাসে খুলে গেল পুরো পতাকা । আরে এযে স্বাধীনবাংলার পতাকা ! আনন্দে দু ভাই একে অপরকে জড়িয়ে ধরলাম , একসাথে চিৎকার করে উঠলাম “ জয় বাংলা”। পশুর নদীর পারে রামপাল এসে নামলাম । অন্য ভাইয়েরা দৌড়ে এলো আমাদের দিকে । আমরা ভীষণ ক্ষুধার্ত । মাঝিকে বললাম খেয়ে নিতে । মাঝি তার থালা দিয়ে বলল ভাত তরকারি ওটায় দিতে কারন ও এই জোয়ারে কম কষ্টে বেয়ে ফিরবে তাও রাত হয়ে যাবে বাড়ি ফিরতে । তাই হল। কিন্তু এক অদ্ভুত চিন্তা পেয়ে বসল ,তা হল মাঝি এখন স্বাধীন মুক্তাঞ্চল থেকে আবারো পাক নিয়ন্ত্রিত এলাকায় ফিরে যাবে । দীর্ঘ নদীপথ । মাঝি চলে গেল ।
আমরা মেতে উঠলাম আনন্দে ফিরে আসা পরিচিত যোদ্ধাদের সাথে । ওরা সতর্ক রাজাকারদের আক্রমনের হুমকিতে । ক জায়গায় মেশিনগান পোস্ট বসেছে । গত ন মাসের দুশ্চিন্তাগ্রস্ত মুখগুলিতে সে কি হাসি । ওরা জানতে চাইল খুলনা শহরের পরিস্থিতি । ভারতীয় বাহিনী খুলনার দারপ্রান্তে । রূপসা নদিতে ভারতীয় গানবোটের উপর ভারতীয় বিমানের বোমা বর্ষণ । ওরা পাকিস্থানি পতাকা লাগিয়ে বলতে গেলে ঢুকে গিয়েছিল । যদি আর আধা ঘণ্টা পেত তাহলে যুগপৎ বিমান ও গানবোটের আক্রমনে খুলনা শহরের ঠিক কি অবস্থা হত ভাবতেই গা শিউরে ওঠে এখনো । গানবোট ধ্বংসের পরদিনই হাজারও জনতার সাথে আমরা বাড়ন্ত দুভাই সবার চাপে শহর ছাড়লাম ।
১৬ই ডিসেম্বর আকাশবাণীতে সন্ধ্যাবেলায় দেবদুলাল বন্দ্যোপাধ্যায় কাঁপানো কান্নাজড়িত কণ্ঠে একটি স্বাধীন দেশের জন্মলগ্নের আবেগমথিত বানী পড়ে শোনালেন । আমরা চোখ মুছলাম আমাদের ৯মাসের এক বীর মিডিয়া সহযোদ্ধার সাথে।
আজ ৪২ বছর বাদে আমাদের জীবন হুমকির মুখে । উপর থেকে নিচ পর্যন্ত সর্বত্র পাকিস্থানি ধারার একটি ঘরানা গড়ে উঠেছে । এ ঘরানায় যারা আছে তারা সবাই শাসক যারা ৪২ টি বছর শাসন করেছে অদল বদলের আঁতাত করে । একজন পুচকে মোল্লার ফাসিতে যে ভাবে ফুঁসে উঠেছে সারা দেশ তাতে এই ই মনে আসে এই ফুঁসে ওঠার আস্কারা শাসকরাই দিয়েছে ।
কিন্তু কেন ??
জবাব না দিয়ে পালাতে দেবনা শয়তান ।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১:২১

ঢাকাবাসী বলেছেন: একজন পুচকে মোল্লার ফাসিতে যে ভাবে ফুঁসে উঠেছে সারা দেশ!!
লেখাটি ভাল লেগেছে।

২| ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:১৮

পাঠক১৯৭১ বলেছেন: আপনাকে অভিনন্দন।

আপনারা ২ ভাই কি মুক্তিযোদ্ধা?

১৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১২:৫৩

শাহ আজিজ বলেছেন: না আমরা কেউই মুক্তিযোদ্ধা ছিলাম না । আমার দু সহপাঠী ও ভাইএর অনেক বন্ধু ভারতে গিয়েছিলেন । ভাই ধরা পরেন মায়ের হাতে যাত্রার ঠিক আগে। তবে দেশের ভিতরে আমার সবচে বড় ভাইটি গোপনে সমনয়কের কাজ করতেন। বিশেষ করে গোপনে যোদ্ধাদের চাল ডাল সরবরাহ ও শান্তি কমিতিকে ভয় ভীতি কাফন ও টাকা পাঠানো তার কাজ ছিল । শেষ প্রহরে তিনি রাজাকারদের দ্বারা আটক হন তবে প্রানে বেচে ছিলেন ।

৩| ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ৯:০১

পাঠক১৯৭১ বলেছেন: @লেখক,

খহুশী হলাম শুনে যে, আপনাদের পরিবারের অবদান আছে মুক্তিযুদ্ধে

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.