নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

চারুশিল্পী , লেখক

শাহ আজিজ

চারুশিল্পী , লেখক

শাহ আজিজ › বিস্তারিত পোস্টঃ

দুই দলের প্রধান কার্যালয় দুটিকে মানসিক হাসপাতাল করা উচিত।

২৮ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ দুপুর ২:০০

ছোট বোনের অস্ত্রোপচার হবে। ওখানে ওর পাশে থাকার কেউ নেই। আমি জানতাম না আজ গাড়ি চলবে না। আজকে তো কোনো হরতাল-অবরোধ নাই। গাড়ি চলবে না কেন?’

ফরিদপুরে ফিরতে বাসের প্রতীক্ষায় থাকা যাত্রী ইভানা সুলতানা এভাবে খেদ প্রকাশ করেন। ষষ্ঠ শ্রেণীতে পড়ুয়া ছেলে মাহিদকে নিয়ে গাবতলী বাস টার্মিনালে এসেছেন তিনি।

রাজধানীর গাবতলী ও সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালে গতকাল শুক্রবার রাত থেকে দূরপাল্লার বাস চলাচল কার্যত বন্ধ হয়ে গেছে। আজ শনিবার সকাল থেকে বাসের জন্য হাজারো যাত্রী অপেক্ষা করছে।

গাবতলীতে অপেক্ষমাণ যাত্রীদের বেশির ভাগই জরুরি প্রয়োজনে ঢাকা ছাড়ার জন্য ভোর থেকে এসে অপেক্ষা করছে। একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরিরত কামরুল হাসান তাঁর ছোট ভাই কাজী কনক হাসানকে নিয়ে টার্মিনালের সামনের সড়কে বাসের জন্য অপেক্ষা করছেন। ছোট ভাই গতকাল জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দিয়েছেন। আজ তাঁকে মাগুরায় পাঠানো হবে।

ক্ষোভ প্রকাশ করে কামরুল হাসান বলেন, ‘ঢাকার বাইরে যাওয়ার জন্য বাধা কিসের? ঢাকার বাইরে গিয়ে তো কেউ মার্চ ফর ডেমোক্রেসি করবে না। ঢাকা ফাঁকা হলে তো সরকারেরই লাভ। বিরোধী দল সমাবেশ করে কী করবে, বুঝতে পারছি না। দুই দলের প্রধান কার্যালয় দুটিকে মানসিক হাসপাতাল করা উচিত। হাসপাতালের ভেতরে অফিস রাখা উচিত। তারা সেখান থেকে খেয়াল খুশিমতো কর্মসূচি দিতে পারবে। আবার দুই দলের নেতাদের চিকিত্সাও দিতে পারবে।’

যাত্রীদের এই আটকে পড়ার সুযোগ কাজে লাগাচ্ছেন স্বল্পপাল্লার বাস ও ট্যাক্সিচালকেরা। ট্যাক্সিচালক হোসেন আলী পাটুরিয়া ফেরিঘাট পর্যন্ত জনপ্রতি ভাড়া হাঁকছেন এক হাজার টাকা। চারজন নিয়ে যাবেন চার হাজার টাকায়। বেশি ভাড়া কেন নিচ্ছেন? জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমার ট্যাক্সি যদি ভেঙে দেয় বা রাস্তায় যদি কোনো ক্ষতি হয়, এর দায় তো কেউ নেবে না।’

গাবতলীতে অবস্থিত যশোর-সাতক্ষীরাগামী বাস কাউন্টার এসপি গোল্ডেন লাইনের ব্যবস্থাপক আরিফুজ্জামান জানান, রাতে যেসব গাড়ি যশোর-সাতক্ষীরা থেকে ছেড়েছে, সেগুলো এখনো ঢাকায় আসেনি। তাই আজ গাড়ি ছাড়ার নতুন সময়সূচি তিনি বলতে পারছেন না। তিনি জানালেন, ফেরি বন্ধ। তাই গাড়ি বঙ্গবন্ধু সেতু হয়ে ঘুরে আসছে। আজ কখন বাস ছাড়া হবে মালিকপক্ষের কাছ থেকে সে নির্দেশনা পাননি।

আগামীকাল বিএনপির কর্মসূচি মোকাবিলায় গাবতলীতে সড়কের এক পাশে চেয়ার পেতে অবস্থান নিয়েছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও শ্রমিক লীগের নেতারা। দারুস সালাম থানা শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক আকতার হোসেন বলেন, ‘আগামীকাল বিএনপি যে কর্মসূচি দিয়েছে, সেটা ধ্বংসাত্মক। সেটা মোকাবিলার জন্য শান্তিপূর্ণভাবে এখানে অবস্থান করব। তা ছাড়া বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করে জনগণকে সচেতন করব।’

পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা যতটুকু জানি গতকাল দূরপাল্লার বাস ছাড়েনি। আজও দূরপাল্লার বাস ছাড়েনি। সম্ভবত আগামীকাল সন্ধ্যা থেকে বাস ছাড়ার কথা রয়েছে। অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি মোকাবিলায় আমরা সতর্ক রয়েছি।’ কাউকে বাধা দেওয়া হচ্ছে না বলে তিনি জানান।

সায়েদাবাদ থেকে কিশোরগঞ্জ ও আশপাশের জেলার রুটে সকালে কিছু বাস ছেড়েছিল। তবে নরসিংদী ও নারায়ণগঞ্জ থেকে বাসগুলো ফেরত পাঠানো হয়েছে বলে শ্রমিকেরা দাবি করেছেন। সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালে অবস্থিত ফেনীর স্টার লাইন আগে ১৫ মিনিট পরপর বাস ছাড়লেও এখন এক ঘণ্টা পর পর ছাড়ছে।

রাজধানীর মহাখালী বাসস্ট্যান্ডে আজ সকাল থেকে কোনো বাস ঢোকেনি, ছেড়েও যায়নি। ৫০০টির মতো বাস ঠায় দাঁড়িয়ে আছে টার্মিনালে। স্থান সংকুলান না হওয়ায় টার্মিনালের বাইরেও বাস দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। প্রচণ্ড শীত উপেক্ষা করে মানুষ বাস টার্মিনালে এসেছেন, গাড়ি না পেয়ে অসহায়ভাবে ঘোরাঘুরি করে ফিরে গেছেন বা ভেঙে ভেঙে যাওয়ার চেষ্টা করেছেন।

গাড়ি-ঘোড়া চলছে না কেন, জানতে চাইলে বাসচালক ও মালিকদের কাছ থেকে পাওয়া গেছে ভিন্ন ভিন্ন মন্তব্য। হালুয়াঘাট থেকে ঢাকাগামী পরিবহন শ্যামলী বাংলার চালক মো. তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ‘সরকারি ধর্মঘট না বিএনপির ধর্মঘট বুঝতেসি না। কাল বেলা তিনটায় রওয়ানা দিয়া ঢাকায় পৌঁছছি রাত সাড়ে ১১টায়। সকালে উইঠ্যা শুনলাম গাড়ি যাইব না। তবে কাইল প্রচুর মানুষ ঢাকায় আসছে। চার ঘণ্টার রাস্তা পারাইতে আট ঘণ্টা লাগছে।’

শেরপুর থেকে ঢাকাগামী সোনার বাংলা পরিবহনের এক চালক বলেছেন, গাড়ির মালিকদের বেশির ভাগই আওয়ামী লীগের নেতা। কাল বিরোধী দলের অবরোধ থাকায় তাঁরা ইচ্ছে করে গাড়ি চালাচ্ছেন না। অপর এক চালক মো. লাল্টু খান বলেছেন, বিরোধী দলের কর্মসূচি থাকলেই শ্রমিক সংগঠনের নাম করে ধর্মঘট ডাকা হয়।

এসব বিষয়ে জানতে মহাখালী বাস টার্মিনাল সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি মো. আবুল কালামের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি ‘অসুস্থ’ এবং কথা বলতে পারবেন না বলে জানান।

মালিক সমিতির কার্যালয়ে বসে অপর এক মালিক প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরা জানতে পেরেছেন নির্বাচনকালীন সময় পর্যন্ত বাস ‘রিক্যুইজিশন’ দেওয়া হচ্ছে। পুলিশের জিম্মায় থেকেও গাড়ির ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে। সে কারণে তাঁরা বাস চালাচ্ছেন না। দুঃখ করে তিনি বলেন, ‘মহাসড়কে যেসব বাস চলে তার মধ্যে সবচেয়ে কম দামি বাসের দাম ৪০ লাখ টাকা। আমি বাস রাস্তায় নামলাম, কেউ আগুন দিয়ে দিলে আমি তো শেষ। কার ভরসায় গাড়ি নামাব রাস্তায়? আওয়ামী লীগ-বিএনপি মারামারি করে। তারা একজন আরেকজনের বাড়িতে, গাড়িতে আগুন দিক। আমার গাড়িতে কেন?’

এদিকে ঢাকা থেকে বাস ছেড়ে না যাওয়ায় দুর্ভোগে পড়েছে যাত্রীরা। বাসস্ট্যান্ডে বিভিন্ন বয়সের যাত্রীরা ভোর থেকে আসছে, তবে গাড়ি না পেয়ে তারা ফেরত যাচ্ছে। মহাখালী বাসস্ট্যান্ডে রাবেয়া খাতুন নামের ষাটোর্ধ্ব এক নারী নেত্রকোনা যাওয়ার জন্য ব্যাগ হাতে দাঁড়িয়ে ছিলেন। বাস না পেলে বাড়ি যাবেন কীভাবে, তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন তিনি।

প্রঃআঃ

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ২৮ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:০২

হাসিব০৭ বলেছেন: ১০০০০০০% সহমত =p~ =p~ =p~ =p~ =p~ =p~ তাইলে যদি দেশের পাব্লিক শান্তি পাইত

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.