নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমাদের ছোটবেলায় মা দিবস বলে কিছু ছিলনা । মা কখন রান্না শেষ করে আমাদের টেবিলে গরম খাবার দেবেন তার জন্য অপেক্ষা । এ কারনে ৩৬৫ দিনই মা দিবস পালিত হত । আমাদের কাজের লোক অনেক থাকলে কি হবে মার হাতের রান্না ছাড়া বাবা খেতেন না । কাজেই আমরা এক ভিন্ন সংস্কৃতি ও আদব কায়দায় বড় হয়েছি । ছোটবেলায় মর্নিং শিফটের স্কুলে পড়তাম । স্কুল টিফিন দিত কিন্তু তাতে কি ক্ষুধা মেটে? ঠিক সাড়ে বারোটায় প্লেটে ভাত নিয়ে চুলার পাশে দাড়িয়ে থাকতাম। অন্য তরকারি বা মাছ মাংস নয় , ডালের প্রথম দেয়া বাগারের এক ওড়ং ( নারকেলের আচা দিয়ে তৈরি চামচ ) আমার পাতে তুলে দিতেন মা কারন তিনি জানতেন এই ঘন পেয়াজ ,রশুন আর তেলের সমাহারে সুস্বাদু জিনিশ আমি পছন্দ করি সবচে বেশি । একারনে বাগারের মশলা পাতি বেশি দিতে হত যাতে বাকি ডালে মশলা কম না পড়ে যায় । আমি থালা ধরে অপেক্ষায় , কাঠের ধোয়া উঠছে, চোখ দিয়ে পানি পড়ছে তবুও আমি নড়িনা , মা’ও আমায় কিছু বলেননা । প্রথম চামচ ডাল দিয়ে গরম ভাত কিযে মজা বোঝানো যাবেনা । ফু দিয়ে , ফ্যান চালিয়ে ওটা ঠাণ্ডা হয়ে যাবার আগেই আমার পেটে ঢুকে যেত । অন্য তরকারি থাকলে ভাল না আর রান্না না হয়ে থাকলে কুচ পরোয়া নেহি, মা আমার খুব দুঃখ করতেন । একটু বড় হলে দেখি বাটিতে আলাদা করে মিট সেফে বাগারের প্রথম চামচ উঠিয়ে রেখেছেন ।এখন সমাজ পালটেছে , চাকর বাকর অথবা নিজেই রান্না করে জীবন চলে । সংসারে দুজনকেই সময় দিতে হয় কর্মক্ষেত্রে । বাচ্চারা কাজের লোকের হাতে নাহয় কিনডারগারটেনে মানুষ হয় । তারপর অনেক মা , এই ঢাকা শহরে পরিবারকে রান্না করে দেন যাতে সাহেব আর বেড়ে ওঠা সন্তানরা মায়ের হাতের রান্না বঞ্চিত না হয় । আমরা বুয়া কালচারে চলছি । মা হারা সন্তানদের বেদনা বলে বোঝানো যাবেনা । যাদের মা বেচে আছে তারা যেন মায়ের সেবা করে । রাতে পায়ের আঙ্গুল নিয়ে মেসেজ করে দ্যায় সাথে দুচারটে ভালো কথা মায়ের রাতের ঘুমটাকে কণ্টকহীন করবে । মনে রাখবেন মা চলে গেলে আর ফিরে আসে না ।
শুভ মাতৃদিবস ।।
©somewhere in net ltd.