নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

চারুশিল্পী , লেখক

শাহ আজিজ

চারুশিল্পী , লেখক

শাহ আজিজ › বিস্তারিত পোস্টঃ

ঢাকা শহর -২

০৩ রা নভেম্বর, ২০২০ রাত ৯:৫৬







চারুকলায় ক্লাসে যাওয়া আসা হলে বসে আড্ডা মারা চলছে । এতদিন বাদে প্রায় ৪৫ বছর হল মনে পড়ছে না , কে আমায় কাজি আলাউদ্দিন রোডে হাজির বিরিয়ানি খাওয়াতে নিয়ে গেল । সম্ভবত আমার বড় ভাই । একদিন মনে হল আরেকবার যাওয়া উচিত তবে কাউকেই পেলাম না সঙ্গী হিসাবে । কেউ ১৪ আনা দিয়ে এক প্লেট বিরিয়ানি খাবে না । আমায় বাই সাইকেল কিনে দিয়েছেন বড় ভাই । ওটা নিয়ে এদিক সেদিক ঘুরি । নভেম্বরের সন্ধ্যায় সাইকেল চালিয়ে কাজি আলাউদ্দিন রোডে হাজির । তখনো ফুলবাড়িয়া রেল স্টেশন দালান ছিল , ছিল রেল লাইন । তবে আলাউদ্দিন রোড থেকে নীলক্ষেত হয়ে সোনারগাঁ মোড় হয়ে তেজগাঁ পর্যন্ত লাইন তুলে ফেলেছে কিন্তু রাস্তা তৈরি হয়নি । মানুষ হেটে চলাচল করত খোয়া ভরা রাস্তা দিয়ে , গাড়ি যেত না । আমি হাইকোর্ট হয়ে ডানে গিয়ে পৌছুলাম হাজির বিরিয়ানির সামনে । দোকান ভর্তি মানুষ বসে কিন্তু খাবার খাচ্ছেনা কেউ । বারান্দায় দাঁড়ানো সাদা পিয়নের পোশাক পরা একটি লোক আমায় বলল এই ব্যাচ খাইয়া শেষ করলে আপনি বইসেন । রাস্তার অপর পারে সাইকেল রেখে তালা দিলাম । একজন টুপি মাথায় লোক এসে বারান্দায় রাখা ডেগের সামনে বসে ঢাকনা উচিয়ে ধোয়া ওঠা বিরিয়ানি বাড়তে লাগলো প্লেটে । খুব দ্রুত তা টেবিলে সারভ হতে লাগলো । একজন উঠে আসতেই আমি বারান্দায় দাঁড়ালাম । আমাকে বলা হল বসতে । আমার টেবিলে বাকি তিনজন খাচ্ছে তখনো । ওদের শেষ হতেই টেবিল সাফ করল একজন । হাত ধুয়ে নিলাম বেসিনে সাবান দিয়ে । আহা কি মজার বিরিয়ানি ! সাথে কাচা পেয়াজ এক টুকরো আর কাচা মরিচ আছে । সব মিলিয়ে না খেলে বিরিয়ানির স্বাদ বোঝা মুশকিল । বিরিয়ানি , পিয়াজ, কাচা মরিচের ঐকতান মুখের ভেতরে মাড়িতেই টের পাওয়া যায় । কেউ কেউ দুই প্লেট খাচ্ছে । আমার এক প্লেটেই পেট ভরে গেল । খাসীর হাড়খানা চুষে চিবিয়ে ক্ষান্ত হলাম । হাত ধুয়ে হাজি সাহেবের সামনে দাড়িয়ে একটি টাকা বাড়িয়ে দিলাম , তিনি আমায় দু আনা ফেরত দিলেন । পাশেই পানের দোকান । মিষ্টি পান মুখে দিয়ে একটা সিগারেট ধরালাম । মিষ্টি পানটা দারুন ছিল । আমি রাস্তার অপর পারে দাড়িয়ে ধোয়া উড়াচ্ছি আর দোকান খানা দেখছি । লোহার কাস্টিং এর ডিজাইন করা খাম্বা আর ওপরে টিনের ঘর । জনা বিশেক লোক বসতে পারে । মাগরিবের নামাজ শেষ হলেই ডেগ খুলবেন হাজি সাহেব । পরে অবশ্য অন্যরাই বিরিয়ানি তোলে আর হাজি সাহেব পেমেন্ট নেয় । মাস দুয়েক পরে আমার সহপাঠীকে পটিয়ে সাইকেলের পিছনে বসিয়ে হিজ হিজ হুজ হুজ সিস্টেমে খেতে এলাম । এবার হাজি সাহেব চোখ তুলে তাকালেন এবং বললেন আপনেরা তো ইনভারসিটির না ? হ্যা সুচক জবাব দিলাম । উনি চেচিয়ে বয়স্ক বয়কে বললেন এই ছাত্ররা আইলে আগে বয়াইয়া দিবি । গম্ভীর বয় মুখে হাসি টেনে মাথা নাড়লেন । ইনভারসিটির স্টুডেন্টগো আলাদা প্রেস্টিজ পুরান ঢাকায় ।
অনেকদিন যাওয়া হয়না ওদিকে । শ্বশুর বাড়ি ওদিকে হওয়ায় মাঝে মধ্যেই একগাদা বিরিয়ানি নিয়ে যেতাম । ততদিনে হাজি সাহেবের ছেলে বসেছে , দোকান পাল্টে দালান বানিয়েছে । পিকিং থেকে ফেরত এসে শেষ কবে গিয়েছি মানে পার্সেল এনেছি মনে নেই তবে এখনো মিস করি । হাজি সাহেব প্রয়াত , তাকে খুব মনে পড়ে আমাদের মর্যাদা দেবার জন্য ।

মন্তব্য ৩০ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (৩০) মন্তব্য লিখুন

১| ০৩ রা নভেম্বর, ২০২০ রাত ১০:২৪

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: প্রথম বাবুর্চিকে একবার দেখে আসা উচিত ছিল আপনার। না কি হাজী সাহেবই বাবুর্চি ছিলেন?

০৩ রা নভেম্বর, ২০২০ রাত ১০:৫২

শাহ আজিজ বলেছেন: বাবুর্চি দেখার সুযোগ ছিল না তখন । রেসিপি হাজি সাহেবের ।

২| ০৩ রা নভেম্বর, ২০২০ রাত ১০:৩৭

রাজীব নুর বলেছেন: দিলেন তো মাথাটা নষ্ট করে!!
আবার ছবিও দিয়েছেন।
এমনিতেই ক'দিন ধরে খেতে ইচ্ছা করছে।
এদিকে হাতও খালি।

রাত সাড়ে দশটা বেজে গেছে। নইলে এখুনি রওণা দিতাম। অসুবিধা নাই। আগামীকাল যাবো। এর জন্য আপনি দায়ী

০৩ রা নভেম্বর, ২০২০ রাত ১০:৫০

শাহ আজিজ বলেছেন: :) :) :) :) :) :) :) :) :)

৩| ০৩ রা নভেম্বর, ২০২০ রাত ১১:০৯

করুণাধারা বলেছেন: হাজীর বিরিয়ানি মতিঝিল, বসুন্ধরা এসব জায়গায় করেছে। কিন্তু পুরান ঢাকার স্বাদ পাইনি।

০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২০ সকাল ৯:৩০

শাহ আজিজ বলেছেন: পুরান ঢাকারটাই আদি । মতিঝিলে অনেক পরে খুলেছে । ওরাই খুলেছে কিনা জানিনা ।

৪| ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২০ ভোর ৪:৩০

আমি সাজিদ বলেছেন: এই রাতে এই ছবি, খিদা লেগে গেল!

০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২০ সকাল ৯:৩২

শাহ আজিজ বলেছেন: হ্যা ক্ষুধা এক আশ্চর্য ব্যাপার কখন লেগে যাবে বলা মুশকিল ।

৫| ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২০ সকাল ৮:৪১

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: পুরাতন ঢাকার হাজীর বিরিরানি! আহ!

অসুখ বিসুখে আর খাওয়া হয় না। একসময় খুব খেয়েছি।


০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২০ সকাল ৯:৩৪

শাহ আজিজ বলেছেন: হুম , আপনার জন্য নিষিদ্ধ খাবার ।

৬| ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২০ সকাল ৯:৩১

ভুয়া মফিজ বলেছেন: প্রকৃত জ্ঞানী লোকেরা (সার্টিফিকেটের জ্ঞানের কথা কই নাই) অন্যদেরকে সন্মান দিতে জানে, যেইটা হাজী সাহেবরে দেইখ্যা শিখনের আছে।

আমি চাইর পায়ের কোন গোশত খাই না। তাই এতো দামী জিনিসটা কোনদিন পূর্ণমাত্রায় খায়া দেখি নাই। তয় গোশত আমার বউরে দিয়া আমি খালি পোলাও খাইছি বহুবার। টিএসসি'র বারান্দায় আড্ডা দিতে দিতে কতোবার যে ''উঠলো বাই, তো হাজীর বিরানী খাইতে যাই'' হইছে, তার কোন গোনা-গুনতি নাই!

আহারে দিনগুলি!!!! :((

০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২০ সকাল ৯:৩৮

শাহ আজিজ বলেছেন: আহা , যৌবনে চারি পা , দুই পা , এক পা , পা ছাড়া কোন কিছুই বাদ দেই নাই ইনশাল্লাহ ।

৭| ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২০ সকাল ৯:৩৫

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:
খুবই ভালো লাগলো।
++

০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২০ সকাল ৯:৪৮

শাহ আজিজ বলেছেন: সরিষার তেলে রান্না বিরিয়ানি , ভালতো লাগবেই ।

৮| ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২০ সকাল ১১:০৩

রাশিয়া বলেছেন: বলেন তো এইটা কোন জায়গা?

০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২০ সকাল ১১:১৬

শাহ আজিজ বলেছেন: মিক্সড ছবি । বাদিকে মেডিক্যাল কলেজের পুরাতন গেট , পুরাতন এমারজেন্সির পাশে । ডান দিকে হাইকোর্ট মনে হচ্ছে ।

৯| ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২০ সকাল ১১:৫৮

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: আহা!
নষ্টালজিক স্মৃতি!!!

০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২০ দুপুর ১২:১১

শাহ আজিজ বলেছেন: আহা , হুম

১০| ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২০ সকাল ১১:৫৮

রাশিয়া বলেছেন: জ্বি না। আপনিও হাইকোর্ট দেখান? পুরোটাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ভবন। আর যে পুকুরটা দেখা যাচ্ছে, সেটা হচ্ছে এখনকার কেন্দ্রীয় খেলার মাঠ কাম জিমনেশিয়াম কাম সুইমিং কমপ্লেক্স। এত আগের মানুষ আপনি - এগুলো চিনতে পারলেন না?

০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২০ দুপুর ১২:০৮

শাহ আজিজ বলেছেন: কলা ভবন বোঝা যায় না , জিমনেশিয়ামের কাছে কলা ভবন এল কিভাবে ? মেডিক্যালের গেট ঠিক আছে কিন্তু কলা ভবন সেখান থেকে ২ কি মি দূরে ।

১১| ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২০ দুপুর ১২:১৭

রাশিয়া বলেছেন: পাকিস্তান আমলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ ভবনটিই কলা ভবন নামে পরিচিত ছিল। পরবর্তিতে তা অপরাজেয় বাংলাখ্যাত মল চত্বরে স্থানান্তরিত হয়। এখন যেটিকে আমরা ঢাবি মেডিকেল সেন্টার বলে চিনি - এটি আগে ঢাকা মেডিকেল ছিল। পরে স্থান সঙ্কুলান না হওয়াতে এটিকে কলা ভবনে স্থানান্তরিত করা হয়।

০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২০ দুপুর ১২:৩০

শাহ আজিজ বলেছেন: ছবিটি ঝাপসা হওয়াতে বোঝা যায়নি । মনে হচ্ছিল ঢাকা মেডিক্যালের বিল্ডিং আবার গম্বুজ সদৃশ হওয়ায় হাইকোর্ট লাগছিল ।

১২| ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২০ দুপুর ১:৩৯

ঢাবিয়ান বলেছেন: পুরান ঢাকার হোটেলগুলো আর ইউনিভার্সিটির ছাত্র ছাত্রী এক তারে বাধা।আমাদের সময়ে জনপ্রিয় বেশি ছিল নিরব হোটেল। হাজীর বিরিয়ানী দোকানে গিয়া খাই নাই। তবে খেয়েছি। টেস্ট মনে হয় সব বাঙ্গালীরই জানা B:-/

০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২০ দুপুর ১:৫৯

শাহ আজিজ বলেছেন: সর্ষের তেল দিয়ে রান্না হত বলে ওর স্বাদ আলাদা ছিল । ৮০ সালের পর আর খুব বেশি বলতে পারব না ওদিককার গল্প ।

১৩| ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২০ বিকাল ৪:৩০

মিরোরডডল বলেছেন:



বিরিয়ানি খাবারটাই অনেক মজা আর যদি সেটা হয় হাজির বিরিয়ানি তাহলেতো বেস্ট ওয়ান ।
সেই ঐতিহাসিক হাজির বিরিয়ানি হাউজ এখানেও ব্রাঞ্চ খুলেছে , বেশ অনেক বছর ।
আলাউদ্দিন রোডের ওখানে কখনও নামা হয়নি কিন্তু ওই রাস্তায় যাওয়া আসার পথে দেখেছি, মানুষ লাইন দিয়ে দাড়িয়ে থাকে, অতটুকু ছোট জায়গায় অনেক ভিড় ।


০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২০ বিকাল ৫:৩০

শাহ আজিজ বলেছেন: সুনাম করা মুশকিল । সততার সাথে ব্যাবসা করলে সুনাম আসে হাজি বিরিয়ানি তার প্রমান ।

১৪| ০৫ ই নভেম্বর, ২০২০ রাত ১:৪০

নুরুলইসলা০৬০৪ বলেছেন: হাজির বিরানী প্রসিদ্ধ হবার মুলে ছিল বিবিসির ফিসার।এর থেকে ভাল ছিল নারিন্দার বিরানি।

০৫ ই নভেম্বর, ২০২০ সকাল ১১:১২

শাহ আজিজ বলেছেন: পুরাতন ঢাকায় আরও কিছু স্পট ছিল খাবার দাবারের । আলাউদ্দিন রোড কমন এরিয়ায় পড়ে যাওয়াতে এর সুনাম ছড়িয়ে পড়ে । নর্থ সাউথ রোড চালু হবার আগে কাজি আলাউদ্দিন রোড ছিল গেট ওয়ে । আমায় নিয়ে প্রথমবার খাওয়ার পর আমি জানতামও না এটা কি বা দোকানের নাম কি ? স্বাদ অপূর্ব লাগার ফলাফল পরবর্তীতে আবার যাওয়া ।

১৫| ০৫ ই নভেম্বর, ২০২০ রাত ৯:৩৪

সোহানী বলেছেন: দেশে থাকতে অনেকদিন ছিলাম পুরান ঢাকায়, একবারে হাজির বিরয়িানের পাশে প্রায়। সেকারনে খাওয়া হতো প্রায়ই। তবে সত্য কথা আমার ভালো লাগে নাই। খুব সাধারন মানেরই মনে হতো।

০৫ ই নভেম্বর, ২০২০ রাত ১০:২০

শাহ আজিজ বলেছেন: কিন্তু ৭৬/৭৭ সালে টেস্ট ভাল ছিল । পরে নষ্ট হয়েছে তা মানি । আমি নিজেও তেমন ভালবেসে খাইনি । তারচে স্টার বিরিয়ানি কাবাব অনেক ভাল লেগেছে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.