![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ঘুরে বেড়াতে ভালবাসি। সৌন্দর্য উপভোগ করতে চাই, সুন্দরের মাঝে বেঁচে থাকতে চাই।
ডিসেম্বর মাসের পূর্ণিমা রাত। ভ্রমণ বাংলাদেশ’ এর নিয়মিত আয়োজন ‘সাইকেল অভিযানঃ পূর্ণিমার সওয়ারী’ শুরু হয়ে গেল সাড়ে ছয়টায়। এবারের পূর্ণিমায় সওয়ারীর সংখ্যা ‘নয়’। আমি, আবু বক্কর ভাই, ইসহাক ভাই, মনির ভাই চলে এলাম বংশালে রঞ্জু ভাইয়ের দোকানে। প্ল্যান অনুযায়ী বাবু বাজার ব্রিজ পার হয়ে রুহিতপুর দিয়ে নিমতলি হয়ে আমরা চলে যাব সিরাজদিখানের দোসরপাড়া টেকেরহাট। উদ্দেশ্য লালন সাঁইয়ের গান শোনা। টেকেরহাটের পদ্মহেম ধামে প্রতিবছর আয়োজিত হয় লালন শাহ বটতলা সাধুসঙ্গ। দেশ-বিদেশের লালন সাধক, ভক্ত-অনুসারীরা লালনজীবনী, সাধনাবিষয়ক বয়ান আর লালনগীতি পরিবেশনের মাধ্যমে উদ্যাপন করেন দুই দিনের এই আয়োজন। বাংলাদেশের কুষ্টিয়ার দরবেশ নহির শাহ, দরবেশ মহরম শাহ, দরবেশ সামসুল শাহ ও দরবেশ বুড়ি ফকিরানীসহ ৩০ জন সাধুগুরু লালন জীবনী, সাধনাবিষয়ক বয়ান ও লালনগীতি পরিবেশন করেন। আর সাঁইজির গান পরিবেশন করেন রাজ্জাক বাউল, শফি মণ্ডল, আরিফ বাউল, পাগলা বাবলুসহ অনেক বাউল শিল্পী। এ বছর অবশ্য রাজনৈতিক অস্থিরতার কারনে অনুষ্ঠান সূচীতে কিছুটা পরিবর্তন আনা হয়েছে। দুই দিনের আয়োজন সংক্ষিপ্ত করে এক দিন করা হয়েছে। এটি ছিল অষ্টম সাধুসঙ্গ।
বাবু বাজার ব্রিজের পরে আমাদের সাথে যুক্ত হল আরও তিন জন-আদিব ইফতেখার, শোয়েব রাহমান ও তিয়াশ। সবাই মিলে আমরা রওনা হলাম আবার। মাঝে রুহিতপুরে ছোট্ট একটা বিরতি। আবার ছুটে চলা। এক সময় চলে এলাম সৈয়দপুর নৌকা ঘাটে। আকাশে তখন পূর্ণিমার চাঁদ। কুয়াশা আর জোছনায় মাখামাখি চারপাশ। ইছামতীর বুকে এখন পানি কম। সেই পানিতেই আকাশ থেকে নেমে এসেছে ভরা চাঁদ। শীতল বাতাস কাঁপন তুলছে জলে, টলমল করছে কাঁসার থালার মতো চাঁদটাও। চাঁদের টলমলানো দেখতে দেখতে দাড়টানা নৌকায় পার হলাম শান্ত ইছামতী। মাঝির কাছে পথ জেনে আবার রওনা হলাম। সামনে পড়ল একটি দোলনা সাঁকো। এটি পার হতে হল সাইকেল কাঁধে নিয়ে। সে এক মজার অভিজ্ঞতা। এক সময় পৌঁছে গেলাম নিমতলা বাজারে। রাতের খাবার সেরে নিলাম সেখানেই। এখান থেকে সিরাজদিখানের দোসরপাড়া খুব একটা দূরে নয়। আমরা প্রায় চলে এসেছি এমন সময় ইসহাক ভাইয়ের টিউব গেল পাংচার হয়ে! কি আর করা? সবাইকে আখড়ায় পাঠিয়ে আমি, ইসহাক ভাই আর রঞ্জু ভাই গেলাম লিক সারাতে। ঘড়িতে তখন সময় রাত এগারটা। প্রায় ঘণ্টা খানেক চেষ্টা করেও আমরা কোন সাইকেল মেকার খুজে পেলাম না। এদিকে আবু বক্কর ভাই ফোন করে জানালো অনুষ্ঠান প্রায় শেষ । আর মাত্র একটা গানের পর আসর ভাঙবে। এরপর আমাদের ফিরতে হবে। আমরা বাজারে মিলিত হলাম। কিন্তু এই অবস্থায় সাইকেল নিয়ে কোন ভাবেই ইসহাক ভাইয়ের পক্ষে ফেরা সম্ভব না। তাই আমরা কয়েকজন থাকার সিদ্ধান্ত নিলাম আর তিন জনের ফিরতেই হবে। তারা আমাদের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে ফিরতি পথ ধরল। আমরা ব্রিজের পাশ দিয়ে মেঠোপথ ধরে হেঁটে চলেছি। আখড়ায় গিয়ে দেখি লোকজন নেই তেমন একটা। যারা আছেন তারাও শোয়ার আয়োজন করছেন। স্থানীয় সাধুদের আমাদের অবস্থা জানালে তারা আমাদের খাওয়া ও থাকার বেবস্থা করে দিলেন। সাধুদের সবার জন্য খিচুড়ি রান্না করা হয়েছে। আমাদের ভাগ্যেও জুটল সেই খিচুড়ি।
চমৎকার সে খিচুড়ি স্বাদ। সবজিও নাকি ছিল তবে সেটা শেষ হয়ে যাওয়াতে আমাদের খাওাতে না পারায় দুঃখ প্রকাশ করলেন তারা। খাওয়া শেষে আমরা বটতলার পাশের একটি ঘরে ঢুকে গেলাম। বিশাল ঘর। ঢুকে দেখলাম আমাদের মতো অনেকেই আছে। দু’জন বাউল ফকির সিরাজসাঁই ও লালনের বানী বর্ণনা করছেন। শ্রোতাদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছেন তারা। সিরাজসাঁই সম্পর্কে ভিন্ন মতও পাওয়া গেল এদের মাঝে। ফাঁকে ফাঁকে চলছে গান।
এখানে বাইরে থেকে এসেছেন যাঁরা, সেই বাউল-সাধকদের পরিবেশনাও অসাধারণ। আমরা বাউল গানে মুগ্ধ। পাশে ফিরে দেখি মনির ভাই ঘুমের মাঝে পাশের জনের কম্বল টানাটানি করছে! দেখে আমরা তো হেসেই খুন। রাত বাড়তে থাকল। মাঝে কখন যে ঘুমিয়ে গিয়েছি আর কখন ঠাণ্ডায় কাঁপতে কাঁপতে উঠেছি তার হিসেব নেই। তবে যখনি উঠেছি দেখি গান চলছে। অদ্ভুত সেই গানের আবেদন। মন ছুয়ে যায় প্রতিটি বানী। স্বর্গীয় সেই সুরের মূর্ছনা। সারা রাত চলল সেই গান। এক সময় ভোর হল।
ভোরের প্রথম কিরণ খেলা শুরু করলো শিশির বিন্দুর সাথে। আমরা ফিরে চলেছি শহরের কোলাহলে । কানে তখনো সাঁইজির বাণী, ‘দিন থাকিতে দিনের হিসাব কেন করলে না, সময় গেলে সাধন হবে না’।
২৬ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১:৫২
তাহসিন মামা বলেছেন: ধন্যবাদ।
২| ২১ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৫৮
সৌম্য বলেছেন: মচতকার!!!
২৬ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১:৫৩
তাহসিন মামা বলেছেন: সৌম্য ভাই, কেমন আছেন? অনেক দিন দেখি না আপনাকে।
৩| ২১ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৫৮
সৌম্য বলেছেন: মচতকার!!!
৪| ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৪:৩৫
বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: লেখা ভালো হয়েছে। বিশেষ করে রাতেরবেলা নৌকায় করে সাইকেল নিয়ে নদী পারাপার আর পুল পারাপারের ছবি ভালো লেগেছে।
অনেক শুভকামনা রইল।
২৬ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১:৫৬
তাহসিন মামা বলেছেন: ধন্যবাদ বোকা মানুষ বলতে চায়। আপনাদের লেখা পরেই তো অনুপ্রানিত হচ্ছি। ছবিগুলো ইসহাক ভাই এর তোলা। আমি ক্যামেরা নিয়ে যাইনি।
৫| ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৪:৩৫
বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: লেখা ভালো হয়েছে। বিশেষ করে রাতেরবেলা নৌকায় করে সাইকেল নিয়ে নদী পারাপার আর পুল পারাপারের ছবি ভালো লেগেছে।
অনেক শুভকামনা রইল।
৬| ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৪:৩৫
বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: লেখা ভালো হয়েছে। বিশেষ করে রাতেরবেলা নৌকায় করে সাইকেল নিয়ে নদী পারাপার আর পুল পারাপারের ছবি ভালো লেগেছে।
অনেক শুভকামনা রইল।
৭| ২৮ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ সকাল ১১:১৮
আমিনুর রহমান বলেছেন:
অসাধারণ +++
২৮ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১:১৮
তাহসিন মামা বলেছেন: ধন্নদাদ।
©somewhere in net ltd.
১|
২১ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৫:৫৫
অনন্ত শেশা বলেছেন: অসাধারণ