নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মুসলিম

Mohammed Noor Hossain Shahed

Mohammed Noor Hossain Shahed › বিস্তারিত পোস্টঃ

আবারো ভূমিকম্প ও কিছু প্রশ্ন-উত্তর

০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ১:৩০

প্রশ্ন: ৬.৮ মাত্রার ভূমিকম্প ভুলতে আমাদের কত সময় লাগে?
উ: পানির ফিল্টারে জলের কাঁপন থামতে যতটা সময় লাগে।
প্রশ্ন ২: ভূমিকম্পের সময় কি পড়তে হয় এবং আমাদের মুখে কি উচ্চারিত হয়?
উ: কি পড়তে হয় জানিনা, তবে ভূমিকম্পের শেষে আমরা ভীতসন্ত্রস্ত-স্বস্তি নিয়ে কে কিভাবে তা টের পেলাম সে বর্ণনা করি।
প্রশ্ন ৩: ভূমিকম্পের ৩০/৪০ সেকেন্ড সময়টাতে আমরা কি ভাবি?
উ: মনে করতে পারিনা। তবে প্রচন্ড ভয়ে দিশেহারা লাগে।
প্রশ্ন ৪: "আমি যা জানি তোমরা যদি তা জানতে তবে তোমরা খুব কমই হাসতে এবং খুব বেশি কাঁদতে।(বুখারী- ৬৬৩৭)"_এই হাদীসের মর্মার্থ কিছুটা কি বোধে নাড়া দেয় তখন?
উ: ঠিক ঠিক, তখনকার ভাবনাটা এইরকম ভয়ের মধ্য দিয়েই যায়!

আরো কিছু খবর:

আজ ৬.৮ ভূমিকম্পের পরে আপনি যখন আসন্ন দুই দিনের ছুটির আমেজে আছেন, তখন একই দিনে ৬.২ ভূমিকম্পে ইতালির পেরুজিয়া শহরের অর্ধেকটাই ধ্বংস হয়ে গেছে এবং শেষখবর অনুযায়ী মৃতের সংখ্যা ৭৩। প্রথম আঘাতের পরবর্তী ৪ ঘন্টায় আফটার শক ছিল ৬০ বার। মাটির সঙ্গে মিশে গেছে আমাট্রিস শহর। পার্শ্ববর্তী আকুমোলির রাস্তায় রাস্তায় ধ্বংসাবশেষ।(সূত্র: মানবজমিন)

এই খবরে হয়তো ভাবছেন, ইতালীর ভবনগুলো সব প্রাচীন, তাই এত ক্ষয়ক্ষতি। আর মনে মনে কিছুটা স্বস্তি পাচ্ছেন এবং নিজেকে কিছুটা নিরাপদও ভাবছেন এই ভেবে, আপনার ভবনটি বিল্ডিং কোড মেনে তৈরী করেছে বিল্ডার্স এবং বাজারে তাদের যথেষ্ট সুনামও আছে। মনে রাখবেন, আল্লাহ্ ও সালেহ (আঃ) এর উপর অবিশ্বাসের জন্য স্থাপত্যবিদ্যায় পারদর্শী সামুদ জাতির বিনাশ ঘটেছিল ভয়াবহ এই ভূমিকম্পেই।

(আবারো প্রশ্ন-উত্তর)

প্র: ভূমিকম্প কেন হয়?
উ: বৈজ্ঞানিক মত: ভূতত্ত্ব বিজ্ঞানের আলোকে ভূপৃষ্ঠের নীচে একটি নির্দিষ্ট গভীরতায় রয়েছে কঠিন ভূত্বক। ভূত্বকের নীচে প্রায় ১০০ কি.মি. পূরু একটি শীতল কঠিন পদার্থের স্তর রয়েছে। একে লিথোস্ফেয়ার (Lithosphere) বা কঠিন শিলাত্বক নামে অভিহিত করা হয়। আমাদের পৃথিবী নামের এই গ্রহের বৈশিষ্ট্য হচ্ছে যে, কঠিন শিলাত্বক (লিথোস্ফেয়ার) সহ এর ভূপৃষ্ঠ বেশ কিছু সংখ্যক শক্ত শিলাত্বকের প্লেট (Plate) এর মধ্যে খন্ড খন্ড অবস্থায় অবস্থান করছে। ভূতত্ত্ব বিজ্ঞানের আলোকে এই প্লেটের চ্যুতি বা নড়া-চড়ার দরুণ ভূমিকম্পের সৃষ্টি হয়।

শরীয়া মত: মহান আল্লাহ মাঝে মাঝে পৃথিবীকে জীবন্ত হয়ে উঠার অনুমতি দেন, যার ফলে তখন বড় ধরণের ভূমিকম্প অনুষ্ঠিত হয়। তখন এই ভূমিকম্প মানুষকে ভীত করে। তারা মহান আল্লাহর নিকট তাওবা করে, পাপ কর্ম ছেড়ে দেয়, আল্লাহর প্রতি ধাবিত হয় এবং তাদের কৃত পাপ কর্মের জন্য অনুতপ্ত হয়ে মুনাজাত করে। আগেকার যুগে যখন ভূমিকম্প হত, তখন সঠিক পথে পরিচালিত সৎকর্মশীল লোকেরা বলত, ‘মহান আল্লাহ আমাদেরকে সতর্ক করেছেন।’ - আল্লামা ইবনুল কাইয়ুম (রহ.)।

হাদীসে উল্লেখিত: আবু হুরাইরা (রা.) কতৃক বর্ণিত, রাসূল (সা:) বলেন, যখন অবৈধ উপায়ে সম্পদ অর্জিত হবে, কাউকে বিশ্বাস করে সম্পদ গচ্ছিত রাখা হবে কিন্তু তার খিয়ানত করা হবে, জাকাতকে দেখা হবে জরিমানা হিসেবে, ধর্মীয় শিক্ষা ব্যতীত বিদ্যা অর্জন করা হবে, একজন পুরুষ তার স্ত্রীর আনুগত্য করবে কিন্তু তার মায়ের সাথে বিরূপ আচরণ করবে, বন্ধুকে কাছে টেনে নিবে আর পিতাকে দূরে সরিয়ে দিবে, মসজিদে উচ্চস্বরে শোরগোল (কথাবার্তা) হবে, জাতির সবচেয়ে দূর্বল ব্যক্তিটি সমাজের শাসক রুপে আবির্ভূত হবে, সবচেয়ে নিকৃষ্ট ব্যক্তি জনগণের নেতা হবে, একজন মানুষ যে খারাপ কাজ করে খ্যাতি অর্জন করবে তাকে তার খারাপ কাজের ভয়ে সম্মান প্রদর্শন করা হবে, বাদ্যযন্ত্র এবং নারী শিল্পীর ব্যাপক প্রচলন হয়ে যাবে, মদ পান করা হবে (বিভিন্ন নামে মদ ছড়িয়ে পড়বে), শেষ বংশের লোকজন তাদের পূর্ববর্তী মানুষগুলোকে অভিশাপ দিবে, এমন সময় আসবে যখন তীব্র বাতাস প্রবাহিত হবে তখন একটি ভূমিকম্প সেই ভূমিকে তলিয়ে দিবে (ধ্বংস স্তুপে পরিণত হবে বা পৃথিবীর অভ্যন্তরে ঢুকে যাবে)। [তিরমিযি-১৪৪৭]

প্রশ্ন: ভুমিকম্প হলে করনীয় কি?
উ: যখন কোথাও ভূমিকম্প সংগঠিত হয় অথবা সূর্যগ্রহণ হয়, ঝড়ো বাতাস বা বন্যা হয়, তখন মানুষদের উচিত মহান আল্লাহর নিকট অতি দ্রুত তওবা করা, তাঁর নিকট নিরাপত্তার জন্য দোয়া করা এবং মহান আল্লাহকে অধিকহারে স্মরণ করা এবং ক্ষমা প্রার্থনা করা যেভাবে রাসূল (সা.) সূর্য গ্রহণ দেখলে বলতেন, যদি তুমি এরকম কিছু দেখে থাক, তখন দ্রুততার সাথে মহান আল্লাহকে স্মরণ কর, তাঁর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা কর। [বুখারি ২/৩০ এবং মুসলিম ২/৬২৮]

বর্ণিত আছে যে, যখন কোন ভূমিকম্প সংগঠিত হতো, উমর ইবনে আব্দুল আযিয (রহ) তার গভর্ণরদের দান করার কথা লিখে চিঠি লিখতেন।

বিপদকালীন কিছু দোয়া:

১। ‘ইন্না লিল্লাহি, ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন’
অর্থ: নিশ্চয় আমরা আল্লাহর জন্য এবং নিশ্চয় আমরা আল্লাহরই দিকে প্রত্যাবর্তনকারী।

(কারণ সূরা বাকারার ১৫৫-১৫৭ নম্বর আয়াতে আল্লাহ তায়ালা মানুষকে জানিয়ে দিয়েছেন তিনি তাদের কী দিয়ে পরীক্ষা করবেন এবং এই পরীক্ষার সময় মানুষকে কী বলতে হবে। আয়াতগুলোতে আল্লাহ বলেন, “আর আমি অবশ্যই তোমাদেরকে পরীক্ষা করব কিছু ভয়, ক্ষুধা এবং জান-মাল ও ফল-ফলাদির স্বল্পতার মাধ্যমে। আর তুমি ধৈর্যশীলদের সুসংবাদ দাও। যারা, নিজেদের বিপদ-মুসিবতের সময় বলে ‘নিশ্চয় আমরা আল্লাহর জন্য এবং নিশ্চয় আমরা আল্লাহরই দিকে প্রত্যাবর্তনকারী’, তাদের উপরই রয়েছে তাদের রবের পক্ষ থেকে মাগফিরাত ও রহমত এবং তারাই হিদায়াতপ্রাপ্ত।” এ আয়াত থেকে জানা যায় ভূমিকম্পের ভয়ের সময়েও আল্লাহর বান্দারা এই দোয়াই পড়বে।)

২। ‘ইয়া হাইয়ু ইয়া ক্বাইয়ুমু বিরাহমাতিকা আস্তাগীছ’
অর্থ: হে চিরঞ্জীব! হে বিশ্বচরাচরের ধারক! আমি আপনার রহমতের আশ্রয় প্রার্থনা করছি)।

আনাস বিন মালেক (রাঃ) বলেন, রাসূল (সাঃ) যখন কোন দুঃখ বা সংকটের সম্মুখীন হতেন, তখন এই দোয়াটি পড়তেন।

৩। “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’
অর্থ: আল্লাহ ছাড়া কোনো ইলাহা বা প্রভু নেই।

৪। “আল্লাহুম্মা হাওয়া লাইনা অলা ‘আলাইনা"
অর্থ: হে আল্লাহ! আমাদের থেকে ফিরিয়ে নাও। আমাদের উপর দিয়ো না।

৫। "আল্লাহুম্মা ইন্নী আ‘ঊযুবিকা মিন যাওয়ালি নি‘মাতিকা ওয়া তাহাউউলি ‘আ-ফিয়াতিকা ওয়া ফুজাআতি নিক্বমাতিকা ওয়া জামী‘ই সাখাত্বিকা"
অর্থ: হে আল্লাহ! আমি আপনার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি আমার থেকে আপনার নেয়ামত চলে যাওয়া হ’তে, আপনার দেওয়া সুস্থতার পরিবর্তন হ’তে, আপনার শাস্তির আকস্মিক আক্রমণ হ’তে এবং আপনার যাবতীয় অসন্তুষ্টি হ’তে।

৬। "আল্লাহ আল্লাহ রাববী লা উশরিকু বিহী শাইয়ান"
অর্থ: আল্লাহ, আল্লাহ আমার প্রতিপালক! আমি তার সাথে কোন কিছুকে শরীক করি না।

৭। "আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার ওয়া লিল্লাহিল হামদ"
(দুনিয়ার সব দেশের সাধারণ মুসলমানরাই যেকোনো পরিস্থিতি বুকে সাহস রাখতে এই তসবিহটি উচ্চস্বরে পড়ে থাকেন। কাজেই ভূমিকম্পের সময় আপনিও পড়ুন।)

৮। "আল্লা-হুম্মা সাল্লি ‘আলা মুহাম্মাদিউ ওয়া ‘আলা আ-লি মুহাম্মাদিন কামা সাল্লাইতা ‘আলা ইবরাহীমা ওয়া ‘আলা আ-লি ইব্রাহীমা ইন্নাকা হামীদুম মাজীদ। আল্লা-হুম্মা বারিক ‘আলা মুহাম্মাদিউ ওয়া ‘আলা আলি মুহাম্মাদিন, কামা বা-রাকতা ‘আলা ইব্রাহীমা ওয়া ‘আলা আ-লি ইব্রাহীমা ইন্নাকা হামীদুম্ মাজীদ"
অর্থ: হে আল্লাহ! আপনি মুহাম্মাদ(সাঃ) ও তার বংশধরদের উপর আপনার অনুগ্রহ বর্ষন করুন যেভাবে ইব্রাহিম (আঃ) ও তার বংশধরদের উপর অনুগ্রহ করেছিলেন।নিশ্চয় আপনি অত্যন্ত প্রশংসিত ও মহামহিমান্বিত। হে আল্লাহ! আপনি মুহাম্মাদ (সাঃ) ও তাঁর পরিবার পরিজনের উপর বরকত নাযিল করুন যেমন আপনি বরকত নাযিল করেছিলেন ইবরাহীম ও তাঁর পরিবার-পরিজনের উপর। নিশ্চয় আপনি অত্যন্ত প্রশংসিত ও মহামহিমান্বিত।

রাসূল (সাঃ) বলেন, যে ব্যক্তি আমার প্রতি একবার দরুদ পাঠ করে, আল্লাহপাক তার প্রতি দশবার রহমত নাজিল করেন -নাসায়ী শরিফ।

শেষ প্রশ্ন : কিভাবে বুঝবেন পরিবর্তন আপনার জন্য নয়?
উ: যখন দেখবেন ভূমিকম্পের আগে ও পরে আপনার জীবন-যাপনের কোন পার্থক্য নেই।

বিভিন্ন তথ্যসূত্র: ইন্টারনেট থেকে
> মাওলানা মিরাজ রহমান/ http://islam.priyo.com
> http://onlinebangla.com.bd

২৫ আগস্ট, ২০১৬

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ২:৩৬

মোটা ফ্রেমের চশমা বলেছেন: শেয়ার করার মত একটি পোস্ট। খুবই দরকারি।

২| ০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ১২:৫৪

Mohammed Noor Hossain Shahed বলেছেন: যাজাকাল্লাহু খায়রান।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.