নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সাইদুল ইসলাম

শাহেদ সাইদ

এখনও বেঁচে আছি

শাহেদ সাইদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

সকাল

১৫ ই এপ্রিল, ২০১৩ দুপুর ১:১৬

দুপুরে রফিক ভাই এলেন। তিনি আমাদের বাড়িতে এই প্রথম। তাকে দেখার জন্যে আমরা দোতলার রেলিং-এ ঝুঁকে পড়লাম। রাস্তার ধারে আমাদের বাড়ি। এই রাস্তায় যারা নিয়মিত যাওয়া আসা করে তাদের প্রায় সবাইকেই আমরা চিনি। আমার বোন তিনটি এ ব্যাপারে আশ্চর্য রকম দক্ষ। রাস্তার মানুষদের অদ্ভুত সব নাম দেয়ায় তাদের জুড়ি নেই। তাদের গল্পের বেশির ভাগই রাস্তার লোকজন সম্পর্কিত। বলা যায়, পথিক চর্চা,

- এই, আজকে লাল জামাটা এসেছিল?

- এসেছিলো, তবে উপরে তাকায়নি।বাপরে!এযে টেলি সামাদ।

- দ্যাখ, হলুদ পাঞ্জাবি, চোখে আবার অরণ্য দেবের চশমা। হি-হি-হি দশ্যু হলুদ- হি-হি



আমরা কিছু বুঝে ওঠার আগেই রফিক ভাই দাদাভাই এর সাথে কথা বলে ফিরে যাচ্ছিলেন। ঘাড় নিচু করে হাটেন তিনি, বাম দিকে ঝুঁকে। হাফ প্যান্ট আর স্যান্ডোগেঞ্জি পরা শাম্মী হাটছিলো তার পিছু পিছু। গলির মুখ থেকে হঠাত দৌড়ে এলো সে। আমার দিকে তাকিয়ে চেচয়ে ঊঠলো, “এই জানো আব্বা মারা গেছে”। তারপর আবার উলটে দিকে ফিরে ছুটতে লাগলো-“রফিক ভাই, ও রফিক ভাই একটু দাঁরান না”।



পরিস্থিতি বদলে গেল মুহুরতেই। দাদা ভাই গম্ভীর মুখে উপরে এসে জানালো, খালুজান আর নেই। কাল মারা গেছেন তরা ঘাটে নৌকা ডুবে। সবার মন খারাপ হয়ে গেল। দুঃখ ,শোক আর কৌতুহল একসাথে নেমে এলো আমাদের পাঁচ জনের উপর। বাবুল না বুঝে কিছু বলতে গিয়ে দাদাভাই এর হাতে চড় খেয়ে চিৎকার করে কাঁদতে লাগদেরমোটে টু তে পড়ে সে। লিলি, বোনদের মধ্যে সবচেয়ে ছোট। অস্ফুট স্বরে বল্লো, “আল্লা নৌকা ডুবলো কি করে?”



মা কলতলায় ছিলেন। খবর পেয়ে ঘটি বালতি ফেলে রেখে, ভিজে কাপড়েই উপরে উঠে এলেন। বড় খালার বিয়ের সময় মা ছিলেন তিন বছরের শিশু। খালুজান তাকে নিজের বোনের মত ভালোবাসতেন। খুব আস্তে সুর করে কাঁদছিলেন মা। মিহি সুরে গাওয়া শক গাঁথার মত লাগছিলো তার কান্না। তিনি রিকসায় অঠার সময় মেজ বোন জলি বল্ল, “দ্যাখ মা’র দই পায়ে দুই রকম স্যান্ডেল”।





+++



দুপুর গড়িয়ে যাবার আগেই আমরা সবাই খালা বাড়ি চলে এলাম। খালুজান উঁকিল ছিলেন। বাড়ি ভরতি লোকজন। খালার ঘরে মেয়েরা কাঁদছিলো। এক এক জনের কষ্ট এক এক রকম। সবার কান্না মিলে মিশে একাকার। আমার ভালো লাগছিলো না। চোখ ভিজে আসছিল বার বার।



কাজল আপার ঘরের দরজা বন্ধ। প্রথমে খবর তার কাছেই এসেছে। ঢাকা থেকে ফোন করেছিলো কেঊ।



টনির দু’চোখ ফুলে গেছে। শাম্মীর কান্না বোঝা যায় না। সবচয়ে আদরের চন্দনও পরে আছে অবহেলায়। আরাই বছর মাত্র বয়স। ছোট ছোট পায়ে টলমল হাটতে হাটতে, অন্যদের কান্না দেখে এক সময় নিজেও কেঁদে উঠলো।কেঊ দৌড়ে এলো না। কোলে তুলে নিলো না।



রুনু মামা এলেন একটু পরে। বাস্তববাদী মানুষ।অহেতুক কান্না কাটি পছন্দ করেন না। সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠতে উঠে বললেন, “ দুলা ভাই এর লাশ আনার কী হবে?” আব্বা খালুজানের মক্কেলদের সাথে কথা বলছিলেন নিচতলায়। বললেন,

- খোকনরা কই? সবার মতামত নেওয়া দরকার।

- দাদার সাথে দেখা হয় নি। মা আর টুনু ওপরে।

- একটা ট্রাক হলে ভালো হতো।

- ট্রাক এখন পাওয়া কঠিন হবে, বেলা পড়ে আসছে।

- দু’দিন আগে আমার ট্রাকটা চিটাগাং...।কথা শেষ হলো না খালুজানের শুভাকাংখী মক্কেলের।আব্বার

শীতল দৃষ্টির সামনে ম্রিয়মান হয়ে পড়লেন তিনি।আব্বা বললেন, “ঘটনাটি দু’দিন আগে না হওয়ায় আমরা খোদার কাছে কৃতজ্ঞ’।



একটু পরে খোকন মামা আর রুনু মামাকে নিয়ে আব্বা চলে গেলেন ট্রাকের খোঁজে।“উকিল সাহেবের ডেড বডি মানিকগঞ্জ হাসপাতালে। আর দেরি করা থিক নয়।



এখন ছোট খালুজানের উপর এসে পড়লো বাড়ির দায়িত্ব। বড় খালা আর নানী বাদে তিনি অন্য সবার মুরুব্বী। বড় আপাকে ডেকে বললেন, “ মঞ্জু, বাইরের লোকে গিজগিজ করছে বাড়ি। অনেক কে তো চিনিই না। একটু খেয়াল রেখো। জিনিষ পত্র চারিদিকে এলোমেলো। কার মনে কী আছে বলাতো যায় না। একটু নজরদারি থাকা দরকার”।



বড় আপা ততক্ষণে সামলে নিয়েছেন। আমার দিকে তাকিয়ে বললেন, তোর দুলা ভাইকে খবর দে”। আমি দুলা ভাইয়ের খোঁজে বের হলাম। দেখি সিঁড়ির কাঁছে দাঁড়িয়ে আমাদের বড় আপা। সেখানে আন্সারি নানির সাথে খটা খটি বেঁধেচ্ছে রিকসা ওয়ালার।( আমাদের বড় আপা দু’জন। মঞ্জু আপা আমাদের দু’বাড়ির ভাইবোনদের সবার বড়। আর আমার বোন রীনা।) ভাড়া মিটিয়ে নানী কাঁদতে শুরু করলেন।“ আনার উকিল থাকতি কোন রিকশালা আমার সাথে ভাড়া নিয়ে ইরাম কত্তি পা-রি- ি ছে এ এ?” কাঁদতে কাঁদতে তিনি সিঁড়িতেই বসে পড়লেন।



খালুজান কিভাবে মারা গেলেন আমার খুব জানতে ইচ্ছে করছিলো।বাসায় আমরা পাঁচজন বিষয়টি নিয়ে আলাপ করেছি, কিছু স্পষ্ট হয়নি। কাজল আপার কাছে খবরট প্রথম আসে, কিন্তু সে ঘর বন্ধ করে বসে আছে। সব কিছু জানার জন্যে আমি ভীড়ের মধ্যে শাম্মিকে খুঁজতে লাগলাম।



ছোট খালুজান ব্যস্ত হয়ে ছোটাছুটি করছিলেন। বাড়ির সামনে বাতি দেওয়া হয়েছে। একেবারে রাস্তা পর্যন্ত আলো ঝলমল। সামনের লনে বেঞ্চ পাতা হয়েছে কয়েক সারি। খালুজান শহীদ মশিউর রহমান স্কুলের সেক্রেটারি ছিলেন। ক্লাশরুমের বেঞ্চ গুলোই পাঠিয়ে দিয়েছেন হেডস্যার। দূর-দূরান্ত থেকে যারা আসবেন তাদের জন্যে এই ব্যবস্থা।



কারো মৃত্যু সংবাদ পেলে বা কেঊ মারা গেলে আমার ভয় করে। যুদ্ধের সময় গ্রামের বাড়িতে ছায়মানা বু’ মারা গিয়েছিলো কলেরায়। একা থাকলেই তার কথা মনে হত। অন্ধকারে মনে হয় তাকে সরে যেতেও দেখেছি একবার। একবার স্বপ্ন দেখলাম ছায়মানা বু’ শুয়ে আছে আলনায়। তার শরীর কাফনের কাপড়ে মোড়া।



শাম্মির খোঁজে বারান্দার দিকে এসে দেখি, আধো অন্ধকারে কেউ বসা। অস্পস্ট, আলো আঁধারিতে একটা ঘন ছায়া। ভয় পেয়ে দৌড় দেব ভাবছি। এমন সময় ছায়াটি নরে চড়ে উঠলো। কথা বলে উঠলেন বড় দুলাভাই

- গিনিটা কী লাকি, নারে!

- কেন?

- আরে ও তো ডুবতে ডুবতে বেঁচে গেছে

- কি ভাবে?

- সে এক সিনেমা। একটু হালকা ভাবে বললেন দুলাভাই। ওখানকার এক ছেলে পানিতে ঝাপিয়ে তুলে এনেছে গিনিকে।

- গিনি আপা কই?

- আজ এসে যাবে।

যাক, এতক্ষণে তবু কিছু জানা গেল। দুপুর থেকে চারিদিকে শোকের ছয়া দেখে চোখ ভিজে আসছিলো বার বার। গিনি আপার খবর শুনে মনটা একটু হালকা হল। বললাম, দুলা ভাই খালুজান ঠিক কি ভাবে মারা গেলেন জানেন?” এই প্রথম বড় কাঊকে জিজ্ঞাসা করলাম কথাটা।তিনি তার উত্তর দিলেন না।বললেন, “ছোট খালু কি করছে রে?”

- কি জানি!

- বড় আপাকে দেখেছিস?

- দুপুরে খেয়েছে কিছু?

- জানি না।

- তোর ক্ষিধে লাগেনি?

- লেগেছে একটু

- তোর বড় আপা কোথায় দ্যাখনা একটু

- বললামতো, জানি না।

- তা জানোটা কি?” রেগে গেলেন দুলাভাই। “ বোনটা কোথায়, জানো না। খালু কি ভাবে মারা গেলেন জানো না। যা জিগ্যেস করি তার কিছুই জানো না। তা জানো টা কী?”



তাঁর কথা শুনে আমিই ধুপ ধাপ করে হাটতে লাগলাম। দুলাভাই আমাকে আরও রাগানোর জন্যে বললেন “বেড়ে হাফেজ”। আমাদের সবারই এরকম নাম আছে। আমরা বলি ক্ষেপানো নাম। আমি তাঁকে ভেঙচি কেটে বেরিয়ে যাবার মুখে দুলাভাই আমার হাত ধরে ফেললেন, তারপর নরম স্বরে বললেন, “রান্না ঘরে কেউ আছে নাকি একটু দ্যাখতো ভাই”।



শেষ রাতের দিকে খালুজানের লাশ এলো। মিইয়ে আসা কান্নার সুরটা বেড়ে গেলো হঠাত করেই। খালুজানের কথা আলোচনা করতে করতে যাদের চোখে দুলুনি এসে গিয়েছিলো, অথবা ধৈর্য হারিয়েও যে দু’একজন বাড়ি যেতে পারছিলেন না চক্ষু লজ্জায়, আড়মোড়া ভাংলেন তারাও।



তখনই দেখতে পেলাম গিনি আপাকে। আব্বার সাথে ট্রাকের সামনের সিট থেকে নামলো সে। সাদা জামা, ঝলমলে আলো, আর ফর্সা রঙে তাকে দেখাচ্ছিল অসম্ভব রোগা আর ক্লান্ত।ভালো করে পাও ফেলতে পারছিলো না। আব্বার হাত ধরে সারি সারি বেঞ্চের মধ্যদিয়ে টলতে টলতে যখন সে এগিয়ে আসছিল তখন তার কানে আসছিল তখন তার কানে আসছিলো ভয়াবহ সব মন্তব্য। কোন কোনটি মৃত্যুর মতই শীতল ও নির্দয়।

- এই মেয়ের জন্যেই গেল উকিল সাহেব।

- মেয়েই তো পানিতে জাপটে ধরেছিলো শুনলাম।

- ওই আর কি, মেয়েতো সাঁতার জানতো না।নৌকা ডুবির পর উকিল সাহেব মেয়ের জন্যে জান লড়ায়ে দেছেলো

- আর মেয়ে? ও তো বাপকে ছেড়ে দিলেই পারতো

- যা বলেন, মেয়েটির রাশিটা ভালো নয়।

- কিরম ভাবে হাটে দেইখেছেন?অলক্ষণে…



বারান্দায় ঊঠে থর থর করে কাঁপতে কাঁপতে দুই হাতে মুখ ঢেকে বসে পড়লো গিনি আপা। আব্বা তার মাথায় হাত রাখলেন আলতো করে,” গিনি ওঠ, সবার কথা কী ধরতে আছে?”



আমার খুব কষ্ট হতে লাগলো তার জন্যে। খালুজানের মৃত্যুর চেয়ে বেশি। আমি দোতলা থেকে ছুটে গিয়ে তার হাত ধরলাম। আমাকে জড়িয়ে ধরে ঝর ঝর করে কাঁদতে লাগলো সে।





+++



আমাদের পারিবারিক গোরস্তান বারান্দিপাড়ায়। মুরুব্বীরা ঠিক করলেন, খালুজানের কবর হবে নানার কবরের পাশে। লাশের ট্রাক নিয়ে রাত থাকতেই আমরা রওনা হলাম। সবচেয়ে আগে আব্বা আর খোকন মামা লাশের ট্রাকে। খলা, মা আর ছোট খালুজান একটা প্রাইভেট কারে। পিছনে আমাদের মাইক্রোবাস। সামনে খালুজানের দুই বোন, বড় আপা, টনি আর দু’তিন জন মহিলা। একদম পিছনে প্রায় সিতের সাথে মিশে আছে গিনি আপা, তার পাশে আমি। গিনি আপার ফুপুরা একবারও পিছনে ফিরে তাকাচ্ছেন না। বাস ভরা শোকার্ত মানুষ ছুটে যাচ্ছে শেষ রাতের নির্জন পথে। মাঝে মাঝে কান্নার গুঞ্জন বাড়িয়ে দিচ্ছে নৈঃশব্দ। কান্নার ফা৬কে ফা৬কে টুকরা তাকরা হা-হুতাশ, ছোট খাটো স্মৃতিচারণ ছঁয়ে যাচ্ছিল আমাকে। তবে সবচেয়ে বেশি শোনা যাচ্ছিলো ফুপুদের হাহাকার আর তিরষ্কার। “ সারাডা যুদ্ধের বছর পাকিস্তানি খানেরা মারতি পারলো না ময়া ভাইরে। আল বদর, রাজাকাররা গুলি করেও গায় ল্লাগাতি পারলো না যার, মাইয়ে ওয়ে সেই মানুষটারে তুই ডুবোয় মারলি!”

- বু’ও জান ওর কথা বলিস নে। ও নিজি বাঁচলো কি করে? অতো সাঁতারো জানে না। এসব য়চ্ছে কপাল

- তুই রাখ তোর কপালের কথা। শুনিসনি মিয়া ভাই ডাঙ্গাই উটে অড়ে দেখতি না পায়েই মরে গেছে?

- ওর করার কি ছেল?

- বাপের জন্যি জান ডা দিয়ে দেলো না ক্যান?



হঠাত করে ডুকরে উঠলো গিনি আপা। এতক্ষণ নিশ্চুপ বসে ছিলো সে সিটের সাথে মিশে।মনে হচ্ছিলো, দম বেরিয়ে যাওয়া বেলুন।ন্যাতানো রাবারের মত পড়ে আছে নিষ্প্রাণ। গারিতে ওঠার পর একটুও কান্না শুনিনি তার। কোন কথাও বলেনি। শুধু লাইটপোষ্টের কাছ দিয়ে যাওয়ার সময়, দু’একবার ঝিকিমিকিয়ে ঊঠেছে তার চোখ ঊপচে পড়া অশ্রু। আমি আরও কাছে সরে গিয়ে গিনি আপার হাত ধরলাম। হাত ছাড়িয়ে নিয়ে দু’হাতে সামনের সিট ধরলো সে। তারপর সাইট মাথা গুঁজে দিয়ে ফুলে ফুলে কাঁদতে থাকলো নিঃশব্দে।



বারান্দিপাড়া মাত্র দশ মিনিটের পথ। দেখতে দেখতে আমরা পৌছে গেলাম নানা বাড়ির দরজায়। এই প্রথম বার বাড়িতাকে নিরানন্দ মনে হলো। দেয়ালের সরে যাওয়া ইটের ফাঁকে চুন-সুরকি, বাড়ির সামনের ম্রিয়মান আলো, দেয়ালের ফাঁটা দাগ, সব মিলিয়ে নিঃসঙ্গ আর করুণ মনে হলো অবস্থা।



প্রায় নিঃশব্দে নামলাম গাড়ি থেকে।



একটু পরে খোকন মামা এলেন বারান্দি মাদ্রাসার মোহাদ্দেস সাহেবকে নিয়ে। আমি বড় আপাদের সাথে ছোট নানির ঘরে চলে এলাম। তিনি খালাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদছিলেন। মাঝে মাঝে সান্তনার কথা শোনাতে গিয়ে তাঁর নিজের গলাও ভারি হয়ে আসছিলো।



ঊঠোনের এক কোনে, বাঁকা শিঊলি গাছটার নিচে বসে ছিলো গিনি আপা। নানীর ঘর থেকে তঁকে ঠিক মত চেনা যাচ্ছিলো না। মনে হচ্ছিল অন্য পৃথি্মপরকহীন। আমদের সাথে সম্পর্কহীন, সম্পূর্ণ একা।







+++

ফজরের আজানের আগেই নানার কবরের ডান পাশে খোঁড়া হয়ে গেল কবর।ফজরের নামাজে যারা বারান্দী মাদ্রাসায় এসেছিলো সেই মুসল্লীরাও শ্রীক হলো জানাযায়। শেষ বারের মত কাফন খুলে খালুজানের মুখ দেখানো হলো। খালুজানের মুখটাকে দেখাচ্ছিল খুব ফরসা আর পবিত্র। এই পৃথিবীর কোন মলনতাই যেন তাঁকে স্পর্শ করেনি। ভিড়ের মধ্যে ডুকরে উঠলো কেঊ। মোহাদ্দেস সাহেব বললেন , “ কেউ কান বেন না। বড় ভালো লোক ছেলেন ঊকিল সায়েব, দোয়া করেন আল্লাহ যেন তাঁর গোর আজাব মাফ করেন”।



দাফন শেষ হতে হতে সূরযের আলো ছড়িয়ে পড়ছিলো দিগবিদিক।হালকা কুয়াশা ভেদ করে ঊঠোনের কোনে শিঊলিতলায় গিনি আপাকেও ছুঁয়ে যাচ্ছিল সেই আলো।









ভোরের স্নিগ্ধ আলোয় অন্য পৃথিবীর এই নিঃসঙ্গ মেয়েটিকে তখন অপরূপ মনে হচ্ছিলো।



মন্তব্য ২ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৫ ই এপ্রিল, ২০১৩ দুপুর ১:৩৫

সায়মন এ শুভ বলেছেন: ভাল লাগলো।

২০ শে এপ্রিল, ২০১৩ দুপুর ১:২০

শাহেদ সাইদ বলেছেন: ধন্যবাদ

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.