![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
নবী মোহাম্মদকে বলা হয় বিশ্ব নবী এবং দাবী করা হয় আল-কোরান সমগ্র মানবজাতির জন্য নাযিলকৃত দিক নির্দেশনামূলক ধর্মীয় গ্রন্থ!! তবে এমন দাবী করা হলেও এর যৌক্তিক ভিত্তি যথেষ্ট দুর্বল! এবং তাদের এই দাবী ও বিশ্বাস যে অনেকটাই অমূলক ভ্রান্ত সেটা প্রমাণ করতে আলাদা কোনো যুক্তি তথ্যর আমদানি করতে হয় না বরং স্বয়ং কোরান থেকেই প্রমাণ করে দেয়া যায় যে, কোরান শুধুমাত্র নির্দিষ্ট আরব জাতীর জন্যই নাজিল হয়েছে!! এবং নবী মোহাম্মদ নির্দিষ্ট আরব অঞ্চলেরই নবী, সমগ্র মানবজাতির জন্য নয়!!
এবিষয়ে কোরানের কিছু সূরা থেকে কয়েকটি আয়াত পেশ করছি।
আর-রাদ- ১৩.৩০: এমনিভাবে আমি তোমাকে পাঠিয়েছি এমন *এক জাতির নিকট,* যার পূর্বে অনেক জাতি গত হয়েছে, যেন আমি তোমার প্রতি যে ওহী প্রেরণ করেছি, তা তাদের নিকট তিলাওয়াত কর। অথচ তারা রহমানকে অস্বীকার করে। বল, ‘তিনি আমার রব, তিনি ছাড়া আর কোন (সত্য) ইলাহ নেই, তাঁরই উপর আমি তাওয়াক্কুল করেছি এবং তাঁরই দিকে আমার প্রত্যাবর্তন’।
সুরা সাজদা ৩২:৩: তারা কি বলে, এটা সে মিথ্যা রচনা করেছে? বরং এটা আপনার পালনকর্তার তরফ থেকে সত্য, যাতে আপনি এমন *এক সম্প্রদায়কে সতর্ক করেন,* যাদের কাছে আপনার পূর্বে কোন সতর্ককারী আসেনি। সম্ভবতঃ এরা সুপথ প্রাপ্ত হবে।
ইয়াসীন: ৩৬.৫ (এ কুরআন) মহাপরাক্রমশালী, পরম দয়াময় (আল্লাহ) কর্তৃক নাযিলকৃত।
৩৬.৬ যাতে তুমি এমন এক কওমকে (জাতিকে) সতর্ক কর, যাদের পিতৃপুরুষদেরকে সতর্ক
করা হয়নি, কাজেই তারা উদাসীন।
লক্ষ্য করুণ এখানে স্বয়ং আল্লাহ্ নবীর উদ্দেশ্যে স্পষ্ট করে বলছে যে তাকে পাঠানো হয়েছে "এক জাতির" বা সম্প্রদায়ের নিকট যাদের কাছে পূর্বে কোনো সতর্ককারী বা নবী আসে নাই এবং কোরান নাজিল হয়েছে যাতে নবী "এক কওম (জাতি) বা সম্প্রদায়কে" সতর্ক করতে পারে!!
উপরুক্ত আয়াত গুলায় এত স্পষ্ট করে বলার পড়েও এর বিরুদ্ধে তেনা পেঁচানোটা অবশ্যই কোরান পরিপন্থী হবে!!
এছাড়াও কোরান পরকাল সম্বন্ধে জান্নাত ও জাহান্নামের যে ধারণা দেয় তা বিশ্লেষণ করলে দেখা যাবে একটি নির্দিষ্ট আরবিয় জাতিকেই গুরুত্ব দেয়া হয়েছে! এবং তাদের জাতিগত রুচি, চাহিদা, আশা, আকাঙ্ক্ষা, লোভ, ভয়ের প্রতিফলন ঘটেছে!!
যেমন কোরানে অসংখ্য সূরায় জান্নাতের বর্ণনায় অসংখ্যবার বলা হয়েছে জান্নাতের পাদদেশে নদী প্রবাহিত হয়েছে!! এবং সেখানে থাকবে আরামদায়ক মেঘ ও গাছের শীতল ছায়া!! নদী, মেঘ ও গাছের শীতল ছায়া এসবই আরবের রুক্ষ প্রখর রৌদ্র উত্তপ্ত মরুভূমি অঞ্চলের মানুষদের কাছে অতি আকাঙ্ক্ষার জিনিস!! এবং বেহেস্তি যত ফলমূলের নাম কোরানে পাওয়া যায় সবগুলাই সেই আরবিয় মরুভূমি অঞ্চলেরই!! ভারতীয় উপমহাদেশের কোনো ফলমূলের নাম গন্ধ নাই!! শুধুমাত্র ফলমূলই নয় বরং কোরানে যত উদহারণ উপমা পাওয়া যায় সবই আরবিয় অঞ্চল থেকেই নেয়া যেমন জাহান্নামীরা উত্তপ্ত পানি পান করবে পিপাসিত উটের ন্যায়!! (সূরা সুরা ওয়াক্বিয়া-৫৫!!), বিশ্বের সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্ট রেখে আল্লাহ্ কসম করছে সিনাই’ পর্বতের (৯৫.২)!! এবং "যারা কাফের, তাদের কর্ম মরুভূমির মরীচিকা সদৃশ, যাকে পিপাসার্ত ব্যক্তি পানি মনে করে।"!! (সূরা নুর, আয়াত-৩৯,)
দেখা যাচ্ছে উপমা, উদহারণ দেয়ার বা বুঝানোর ক্ষেত্রে আল্লাহ্ দুনিয়ায় আর কিছু খুঁজে পান নাই!! নির্দিষ্ট অঞ্চল ও পরিবেশেই আটকে ছিলেন!! দোযখের কোথায়ও হাড় কাঁপানো তীব্র হিম-শীতল কোনো শাস্তির উল্লেখ পাওয়া যায় না!! আর সবচেয়ে বড় কথা কোরান নাজিল হয়েছে আরবি ভাষায়! এক্ষেত্রে সূরা ৪৩ এর ২নং আয়াতে আল্লাহ্ নবীকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন " আমি একে আরবি ভাষায় কোরআন রূপে অবতীর্ণ করেছি, যাতে তোমরা (নবী ও আরবি ভাষাভাষীর লোকজন) বুঝতে পার!!
এর পড়েও যারা বিশ্বাস করে নবী মোহাম্মদ ও আল-কোরান সমগ্র বিশ্বের মানবজাতির জন্যই এসেছে তারা অবশ্যই মোহগ্রস্ত অবস্থায় আছে!! তবে কোরানে বেশ কিছু আয়াত আছে যে গুলা "হে মানব সম্প্রদায়" "মানব মণ্ডলী" এমনভাবে বলা! এবং মনে হয় যে সমগ্র মানবজাতির জন্যই বলা হয়েছে! এক্ষেত্রে এগুলার সাথে উপরে উল্লেখিত আয়াতসমূহ স্পষ্ট স্ববিরোধী!! আর প্রমাণ হিসাবেও এখানের উল্লেখিত আয়ত গুলার বক্তব্য ঐ সমস্ত আয়াত থেকে অনেক স্পষ্ট!!
২| ৩০ শে মার্চ, ২০১৮ সকাল ১০:৫৯
নূর আলম হিরণ বলেছেন: তো যে আয়াত ও হাদিস গুলোতে বলা হয়েছে দো'জাহানের নবী, সকল মানবের মুক্ততির পথ পদর্শক সে গুলিকে কিভাবে ব্যাখ্যা করবেন?
৩০ শে মার্চ, ২০১৮ দুপুর ১:৫৬
শহিদুল বলেছেন: সেগুলা স্ববিরোধীতা, চিন্তা করেন কোনো ঈশ্বর রচিত গ্রন্থে স্ববিরোধী কিছু থাকতে পারে কি না!!
৩| ৩০ শে মার্চ, ২০১৮ সকাল ১১:০৫
রানা সাহেব বলেছেন: যত্তসব ফাউল পোস্ট,
৪| ৩০ শে মার্চ, ২০১৮ সকাল ১১:০৮
এ্যান্টনি ফিরিঙ্গী বলেছেন: আলোচনায় আসার সবচেয়ে সস্তা পলিসি,,,,,।
৩০ শে মার্চ, ২০১৮ দুপুর ১:৫৯
শহিদুল বলেছেন: ব্লগারেরা এত বছর ধরে সমালোচনা করে আসছে! এত বছরেও কি ধর্মের সমালোচনা স্বাভাবিক হয়ে যায় নাই?!!
৫| ৩০ শে মার্চ, ২০১৮ সকাল ১১:১৬
কালীদাস বলেছেন: আস্তিক-নাস্তিক মাথা ফাটাফাটির পোস্টে ঢুকিনা, করুক কামড়াকামড়ি দুই পার্টি যত পারে। আজকে ঢুকে হাসতে হাসতে শেষ। দশ বছর ব্লগিং করেও এরকম আল্লামা হয়রান ভাই বা হুজুরে আলা মাহফুচ ভ্রান্তের মত লজিক নিয়ে চললে বুঝতে হবে বাংলা ব্লগিং মিনিংলেস আপনার জন্য।
৩০ শে মার্চ, ২০১৮ দুপুর ১:৫০
শহিদুল বলেছেন: বাপ্রে! এই পোষ্ট পড়েই একেবারে হাসতে হাসতে শেষ হয়ে গেছেন!! আপনার সেন্স অফ হিউমার সম্ভবত এলিয়েন লেভেলের উন্নত!! যাই হোক এত পুরোনো ব্লগার হয়েও কি যথেষ্ট হাস্যকর মন্তব্য করলেন না? পোষ্টে অযৌক্তিকতা তুলে ধরলে ভালো হয়।
৬| ৩০ শে মার্চ, ২০১৮ সকাল ১১:২৫
নাঈম মুছা বলেছেন: আর মহা কিতাব আল-কুরআন নাযিল হয়েছে মহান আল্লাহ কর্তৃক বিশ্ববাসী এবং সমগ্র মানবজাতির জন্য সূসংবাদ ও সতর্কীকরন হিসাবে মুহাম্মাদ (সাঃ)-এর উপর যিনি শেষ রাসুল হিসাবে প্রেরিত হয়েছিলেন।
বিশ্ববাসী বলতে মানব, জ্বিন এবং আসমান ও দুনিয়ার মাঝে অবশিষ্ট যা কিছু আছে সব কিছুর জন্য মুহাম্মাদ (সাঃ)-কে রহমত বুঝানো হয়েছে।
মহান আল্লাহ নবী মুহাম্মাদ (সাঃ)-কে সূসংবাদ দিয়ে বলেছেনঃ
"আমি আপনাকে বিশ্ববাসীর জন্যে রহমত স্বরূপই প্রেরণ করেছি। "
***সূরা আম্বিয়াঃ আয়াতঃ ২১:১০৭।
আর সমগ্র মানবজাতি বলতে শুধু মুসলমানই নয়, বরং পূর্বেকার ইয়াহুদি, খ্রীষ্টান ধর্মের তথা নাস্তিক, মুশরিক, কাফির সকলের জন্য মানবতার মুক্তির দূত হিসাবে মহান আল্লাহ মুহাম্মাদ (সাঃ)-কে রাসুল হিসাবে সুসংবাদদাতা ও সতর্ককারী রূপে বুঝানো হয়েছে।
কিয়ামত অবধি আর কোন রাসুল আসবেন না।
মহান আল্লাহ নবী মুহাম্মাদ (সাঃ)-কে সূসংবাদ দিয়ে আরও বলেছেনঃ
"আমি আপনাকে সমগ্র মানবজাতির জন্যে সুসংবাদদাতা ও সতর্ককারী রূপে পাঠিয়েছি; কিন্তু অধিকাংশ মানুষ তা জানে না। "
***সূরা সাবাঃ আয়াতঃ ৩৪:২৮।
কুরআনের বিশেষ বৈশিষ্ট্য এই যে, এর ভাষা আরবী।
আর আরবী হল ঊর্ধ্ব জগতের সরকারী ভাষা। ঊর্ধ্ব জগতের সরকারী ভাষা আরবী থেকেই সরাসরি আল্লাহ কর্তৃক সমগ্র মানবজাতি ও জ্বিনের জন্য কুরআন নাযিল হয়েছে।পূর্ববর্তী নবী-রাসুলগনের (মহান আল্লাহ তাদের রুহের উপর অবিরাম শান্তি বর্ষন করুন) উপর নাযিলকৃত কিতাব তাদের উম্মতদের দ্বারা বিকৃত হয়ে গিয়েছিল বা গেছে এবং মহান আল্লাহ সেগুলোকে প্রত্যাহার করে নিয়ে শেষ কিতাব হিসাবে কুরআনুল কারীম বা কূরআনূল হাক্বীম নাযিল করেছেন শেষ নবী ও রাসুল মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপর বিশ্ববাসীর জন্য।
কূরআনুল কারীম অবিকৃত থাকবে কিয়ামত অবধি এবং এটা মহান আল্লাহর চ্যালেঞ্জ।
মহান আল্লাহ স্বয়ং কুরআনের সংরক্ষক হিসাবে চ্যালেঞ্জ করে বলেছেনঃ
"আমি স্বয়ং এ উপদেশ গ্রন্থ অবতারণ করেছি এবং আমি নিজেই এর সংরক্ষক।"
***সূরা হিজরঃ আয়াতঃ ১৫:৯।
মুহাম্মাদ (সাঃ)-এর বিশেষ বৈশিষ্ট্য এই যে, তার উপর আল-কুরআন নাযিলের সময় থেকে পূর্বেকার সকল আসমানী কিতাব ও সেই গুলোর বিধি-বিধান মহান আল্লাহ বাতিল করে দিয়েছেন এবং সমগ্র মানবজাতিকে আল-কুরআন ও তার বিধি-বিধান অনুসরন করতে নির্দেশ দিয়েছেন।
যেদিন রাসুল (সাঃ) শেষ রাসুল হিসাবে নবূয়ত-রিসালাত লাভ করেছেন সেই দিন থেকেই তিনি ছিলেন বিশ্ববাসীর জন্য রহমতস্বরুপ।
কারন, তার পরে আর কোন রাসুল আসবেন না এবং কুরআন নাযিলের সময় থেকে মহান আল্লাহ আগেকার সকল আসমানী কিতাবের বিধানকে বাতিল করে দিয়েছেন। মহান আল্লাহ কুরআনের বিধান জ্বিন ও ইনসান তথা আগেকার সকল ধর্মের মানুষের জন্যই প্রযোজ্য এবং বাধ্যতামূলক করে দিয়েছেন।
আল্লাহ যদি চাইতেন তাহলে পৃথিবীর বুকে যারা আছে তারা সবাই ঈমান নিয়ে আসতো।
কারন, মহান আল্লাহ বলেছেনঃ
"আর তোমার পরওয়ারদেগার যদি চাইতেন, তবে পৃথিবীর বুকে যারা রয়েছে, তাদের সবাই ঈমান নিয়ে আসত সমবেতভাবে। তুমি কি মানুষের উপর জবরদস্তি করবে ঈমান আনার জন্য?"
***সুরা ইউনুসঃ আয়াতঃ ১০:৯৯।
মহান আল্লাহ আরও বলেছেনঃ
"দ্বীনের ব্যাপারে কোন জবরদস্তি বা বাধ্য-বাধকতা নেই। নিঃসন্দেহে হেদায়াত গোমরাহী থেকে পৃথক হয়ে গেছে। এখন যারা গোমরাহকারী ‘তাগুত’দেরকে মানবে না এবং আল্লাহতে বিশ্বাস স্থাপন করবে, সে ধারণ করে নিয়েছে সুদৃঢ় হাতল যা ভাংবার নয়। আর আল্লাহ সবই শুনেন এবং জানেন।"
***সুরা বাকারাহঃ আয়াতঃ ২:২৫৬।
মহান আল্লাহ আরও বলেছেনঃ
"বলুনঃ সত্য তোমাদের পালনকর্তার পক্ষ থেকে আগত। অতএব, যার ইচ্ছা, বিশ্বাস স্থাপন করুক এবং যার ইচ্ছা অমান্য করুক। আমি জালেমদের জন্যে অগ্নি প্রস্তুত করে রেখেছি, যার বেষ্টনী তাদের কে পরিবেষ্টন করে থাকবে। যদি তারা পানীয় প্রার্থনা করে, তবে পুঁজের ন্যায় পানীয় দেয়া হবে যা তাদের মুখমন্ডল দগ্ধ করবে। কত নিকৃষ্ট পানীয় এবং খুবই মন্দ আশ্রয়।"
***সুরা কাহফঃ আয়াতঃ ১৮:২৯।
অতএব, কুরআনের পরে আর কোন কিতাব জ্বিন ও মানবজাতির জন্য আসবে না।
তাই, যারা কুরআনের উপর বিশ্বাস রাখে না; তাদের জন্য রয়েছে মহা অগ্নি- যেখানে তারা চিরকাল থাকবে।
কুরআনের আয়াত গোপনকারী, অবমাননাকারী এবং বিকৃতকারীদের জন্য রয়েছে মহা দূঃসংবাদ।
কুরআনূল কারীমের আয়াত গোপনকারীদের পরিনাম সম্পৰ্কে মহান আল্লাহ বলেছেনঃ
"নিশ্চয় যারা গোপন করে, আমি যেসব বিস্তারিত তথ্য এবং হেদায়েতের কথা নাযিল করেছি মানুষের জন্য কিতাবের মধ্যে বিস্তারিত বর্ণনা করার পরও; সে সমস্ত লোকের প্রতিই আল্লাহর অভিসম্পাত এবং অন্যান্য অভিসম্পাতকারীগণেরও। তবে যারা তওবা করে এবং বর্ণিত তথ্যাদির সংশোধন করে মানুষের কাছে তা বর্ণনা করে দেয়, সে সমস্ত লোকের তওবা আমি কবুল করি এবং আমি তওবা কবুলকারী পরম দয়ালু।"
***সূরা বাকারাহঃ আয়াতঃ ২:১৫৯-১৬০।
মহান আল্লাহ আরও বলেছেনঃ
"আর তোমরা সে গ্রন্থের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন কর, যা আমি অবতীর্ণ করেছি সত্যবক্তা হিসেবে তোমাদের কাছে। বস্তুতঃ তোমরা তার প্রাথমিক অস্বীকারকারী হয়ো না আর আমার আয়াতের অল্প মূল্য দিও না। এবং আমার (আযাব) থেকে বাঁচ। তোমরা সত্যকে মিথ্যার সাথে মিশিয়ে দিও না এবং জানা সত্ত্বে সত্যকে তোমরা গোপন করো না।"
***সূরা বাকারাহঃ আয়াতঃ ২:৪১-৪২।
শেষ কথা,
১. আরব জাতি কি মানব সম্প্রদায়ের বাহিরে? পুরো কুরআনে যতগুলো না আয়াত অারব জাতির জন্য অবতীর্ণ হয়েছে তার থেকে বেশি আয়াত অবতীর্ণ হয়েছে সমগ্র মাবজাতি ও জ্বীন জাতিকে উদ্দেশ্য করে।
২. কুরআন যদি শুধুমাত্র আরব জাতির জন্যই অবতীর্ণ হতো তাহলে শুধুমাত্র আরবদের জন্য পুথক একটা সূরা থাকত। কিন্তু সেটা নেই। বনী ইসরাইলদের জন্য পৃথক একটা সুরা অাছে তাহলে এখন কি আমি বলব কুরআন ইহুদি ধর্মের মানুষদের জন্য নাজিল হয়েছে? ন্যূনতম কমন সেন্স থাকলে তো এটা বোঝার কথা।
৩. জ্বীন জাতির জন্যও আলাদা সুরা রাখলেন কেন আল্লাহ তা'য়ালা তাহলে? জ্বীনদের জন্য রাখতে পারলে আরবদের জন্য কেন রাখতে পারলেন না?
৪. মহান আল্লাহ তা'য়ালা এটাও তো বলেছেন মুমিনগণ জান্নাতে যেটা চাইবে সেটাই পাবে। আল্লাহ তা'য়ালা কি কোরআনের কোথাও একেবারে জান্নাতে কি কি থাকবে আর কি কি থাকবে না তার পুরো লিস্টটা কি দিয়ে দিয়েছেন? আর বলে দিয়েছেন এই যা যা বললাম এর বাহিরে কোনো কিছু থাকবে না? ভারতীয় উপমহাদেশের কোনো লোক জান্নাতে গেলে সে তার দুনিয়াবি জীবনে যা যা করেছে তা হতেও নেয়ামত চাইবে জান্নাতের অন্যান্য নেয়ামতের পাশাপাশি। আমি হলেও অামিও চাইব। বলব যে, আমি গাব খেতে চাই। তখন কি ফেরেশতারা বলবে যে এটা তো আরবদের খাবারের বাহিরে? জান্নাতের স্টকে নাই?
৫. কুরআনে অায়াত আছে ৬২৩৬ টি। উপরে মাত্র কয়েকটা বিশেষ আয়াত নিয়ে এসে প্রমাণ করতে চাচ্ছেন কুরআন শুধু আরব জাতির জন্য? তাহলে আরও অসংখ্য আয়াত আছে আ'দ জাতি, সামুদ জাতি, ইহুদি জাতি, খ্রিস্টান জাতি আরও অসংখ্য অসংখ্য জাতির কথা উল্লেখ আছে। তাহলে আল্লাহ সেগুলো কেন উল্লেখ করতে গেলেন?
৬. কুরআনে আয়াত আছে ২ প্রকার। একটা হাকিকি আর আরেকটা মাজাজি। একটা রুপক আর আরেকটা স্পষ্ট। কুরআনে এমন অনেক আয়াত আছে যে আয়াতগুলোর মাঝে পরস্পরের ক্লাশ বিদ্যমান। কারণ ২৩ বছর ধরে কুরআন নাজিল হয়েছে। কোনো হুকুম আল্লাহ তা'য়ালা আগে দিয়েছেন পরে সেটা অন্য অায়াত দ্বারা রহিত করে দিয়েছেন। এটাকে বলা হয় মানসুখ করা। জমানার শেষ্ঠ মুফাস্সিরের এটা জানা নাই দেইখা অনেক কষ্ট পাইলাম।
৭. ইসলামের মূল হুকুম কুরআনে এসেছে। তারপর হাদিসে। ইসলামের মূল উৎস ৪টি। কুরআন, হাদিস, ইজমা, কিয়াস। মুফাস্সির সাব? পবিত্র কুরআনের মূল আরবি অায়াত পড়তে পারেন না অাবার তাফসীর করতে আসছেন? তাফসীর করতে ৪টা বিষয়েরই পরিপূর্ণ জ্ঞান লাগে। এসব না জাইনা কয়েকটা আয়াত জনসম্মুখে আইনা লম্ফঝম্প কইরা নিজের অসারতা প্রমাণ কইরেন না।
.
আপনের মত কুরআনের মোপেস্সেরগণের এ জমানায় অনেক প্রয়োজন! মানুষজন কুরআন পইড়া বিভ্রান্ত হইতাসে! তাগোরে বাঁচানোর জন্য শিম্পাঞ্জি/নেংটি ইদুর আপনাগো জন্ম দিয়া দুনিয়াতে পাঠাইসে! যে কাজের জন্য পাঠাইসে সে কাজ তো ভালোমত করতে পারতেসেন না। জবাবদিহি করোন লাগব না? নাকি অাপনাগো তা লাগে না? জনগণরে বাঁচাইলে ভালোমত বাঁচান। নাইলে আগে নিজে বাঁচেন।
৩০ শে মার্চ, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:১৩
শহিদুল বলেছেন: "আর আরবী হল ঊর্ধ্ব জগতের সরকারী ভাষা" হা হা হা!! ঊর্ধ্ব জগতের বেসরকারি ভাষা কি জনাব?!
পৃথিবীর কোনো ভাষাই একক কোনো উৎস থেকে উৎপত্তি হয় নাই! একটি ভাষার মধ্যে বহু ভাষার মিশ্রণ ঘটে!! এবং সকল ভাষার প্রতিনিয়তই সংযোজন বিয়োজন চলতে থাকে! দুনিয়াতেই আরবি ভাষার উৎপত্তিগত ইতিহাস আছে!! তবে আরবি ভাষার ইতিবৃত্তি ঘটাঘাটি করা মুসলিমদের জন্য বিব্রতকর কারণ এর সাথে তাদের আল্লাহ্র জন্মের ইতিহাস জড়িত!!
উপরে উল্লেখিত আয়াত গুলায় সমগ্র কোরআন খানা যে একটি নির্দিষ্ট জাতির জন্যই নাযিল হয়েছে সেটাই স্বয়ং আল্লাহ্ স্পষ্ট করে বলেছেন!! তবে আরো বহু আয়াতে এর বিপরীত কথা আছে বটে তবে সেগুলা এই সব আয়াতগুলার সাথে স্ববিরোধী!! অর্থত আল্লাহ্ একেক জায়গায় একেক কথা বলেছেন!! এখন আপনিই বিবেচনা করেন এই আচরণ কোনো ঈশ্বরের হতে পারে কি না?!!
কোরআনে আল্লাহ্ নিজেই বলেছেন তিনি কোরআনকে সুস্পষ্ট ভাবে নাযিল করেছেন! তবে কোরআন বুঝতে হলে আমাকে কেন অন্যান্য গ্রন্থের সাহায্য নিতে হবে?!!
কিছু আয়াত যদি রহিত করে থাকেন তবে সেগুলা আক্ষরিক অর্থেই অকার্যকর এবং সেগুলা নিয়া বিভ্রান্তি সৃষ্টি সম্ভাবনা থাকে!!
অকার্যকর রহিত আয়াত গুলা কোরআনে ঠিক কোন যুক্তিতে রেখে দেয়া হয়েছে?!!
৭| ৩০ শে মার্চ, ২০১৮ দুপুর ১২:১৮
নাঈমুর রহমান আকাশ বলেছেন:
আসসালামু আলাইকুম। সম্মানিত লেখকের জানার জন্য এখানে পবিত্র কোরআন সম্পর্কিত একটি রচনা পেশ করছি।
কুরআন আমার প্রিয় কুরআন
লেখক: আলহাজ্জ মোহাম্মাদ মুতিউর রহমান
১ম কিস্তি
‘কুরআন সাব ছে আচ্ছা কুরআন সাব ছে পেয়ারা
কুআন দিল কি কুওওয়াত কুরআন হ্যা সাহারা’
(কুরআন সবচেয়ে উত্তম কুরআন সবচেয় প্রিয়
কুরআন প্রাণের শক্তি কুরআনই হলো আশয়।।)
অনলাইন লিংক: ahmadiyyabangla.org/Articles/Al Quran/Quran - Amar Prio Quran1.html
কুরআন মজীদ আল্লাহ্ তাবারক ওয়া তাআলার পবিত্র ও অনন্য কিতাব এবং কালাম বা বাণী। সারা বিশ্বের মানবমন্ডলীর উদ্দেশ্যে এ পবিত্র কালাম অবতীর্ণ হয়েছে (সূরা বাকারা: ১৮৬)। রূহুল কুদুস রূহুল আমীন হযরত জিব্রাঈল (আ.)-এর মাধ্যমে এ কুরআন হযরত খাতামুন্নাবীঈন রহমাতুল্লিল আলামীন বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ মুস্তাফা আহমদ মুজতাবা সাল্লাল্লাহু আলায়হে ওয়া সাল্লামের ওপর অবতীর্ণ করেছেন মহান আল্লাহ্ তাআলা। ৬১০ খৃষ্টাব্দের ২৪শে রমযান হযরত জিবরাঈল আমীন সর্ব প্রথম হেরা গুহায় প্রথম কুরআনের বাণী নিয়ে আসেন নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলায়হে ওয়া সাল্লামের কাছে।
কুরআন মজীদ সম্পর্কে প্রাথমিক জ্ঞাতব্য বিষয়:
এ কুরআন শেষ ও পরিপূর্ণ জীবন বিধান গোটা মানবজাতির জন্যে।
‘আল্ কুরআন’ শব্দটি ‘কারায়া’ মূল শব্দ থেকে উৎপন্ন। ‘কারায়া’ অর্থ সে পাঠ করেছিল, সে বাণী পৌঁছিয়েছিল, সে সংগ্রহ করেছিল। কুরআন অর্থ: (১) পাঠ্যোপযোগী পুস্তক যা বার বার পাঠ করা যায়। (২) একখানা পুস্তক যা বিশ্বের সব জায়গায় নিয়ে যাওয়া এবং পৌছানো প্রয়োজন। এমন যা সব সত্যকে ধারণ করে ইত্যাদি। কুরআনের ২য় সূরা আল্ বাকারার প্রথমেই ‘যালিকাল কিতাব’ বা এ সেই প্রতিশ্রুত কিতাব বলে ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়েছিল একদিন এ এক সুসমন্বিত আকারে গ্রন্থ হিসেবে আকৃতি লাভ করবে অথচ তখনও পূর্ণ কুরআন অবতীর্ণই হয়নি।
কুরআনে এর আরও ৩৩টি নাম বর্ণিত হয়েছে। এর কয়েকটি এরূপ: আল্ কিতাব, আল্ কুরআন, আয্ যিক্র, আল্ হুদা, আল্ আয়ান, আন্ নূর, আল্ হাকীম, আল্ বশীর, আল্ নাযীর, আল্ মাজীদ, আল্ কারীম।
কুরআন এমন একখানা পুস্তক যা ১১৪টি পরিচ্ছেদ বা Chapter -এ বিভক্ত। প্রতিটি পরিচ্ছদকে বলে সূরা। সারা কুরআন আবার ৩০ ভাগে বিভক্ত করা হয়েছে। এর এক একটি অংশকে পারা বা Part বলে। আবার পুরা কুরআন ৭টি মঞ্জিলে বিভক্ত। এসবই করা হয়েছে কুরআন সহজে মুখস্থ করার সুবিধার জন্যে। কুরআন যিনি মুখস্থ করে রাখেন তিনি ‘হাফিয’ নামে পরিচিত। বিশ্বের কোন গ্রন্থ এভাবে কেউ মুখস্থ রাখতে পারে না। এটা কুরআনেরই একটি বৈশিষ্ট্য। আর এ ব্যাপারে কুরআনে প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে। কুরআনের সূরাগুলোর কোন কোনটি মক্কায় অবতীর্ণ হয়েছে এবং কোন কোনটি হিজরতের পরে অবতীর্ণ হয়েছে মদীনায়। এদের সংখ্যা যথাক্রমে ৮৪ এবং ৩০। তাই এ সূরা গুলোকে মক্কী ও মাদানী নামে অভিহিত করা হয়েছে। সূরার কোন কোনটি মক্কা মদীনা উভয় স্থানেই অর্থাৎ ২ বার অবতীর্ণ হয়েছে। কুরআন মজীদে আয়াতের সবমোট সংখ্যা ৬২৩৬। আর সূরার প্রারম্ভে ‘বিসমিল্লাহ্’-কে আয়াত ধরে গণনা করলে সংখ্যা দাঁড়ায় (৬২৩৬ + ১১৩) ৬৩৪৯। কোন কোন বর্ণনায় ৬৬৬৬ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। আয়াতের গঠন নিয়ে মতভেদের কারণে এ রকম হতে পারে। কুরআনের শব্দের সংখ্যা ৭৭, ৯৩৪ (ইমাম সাইউতী প্রণীত কিতাবুল ইতকাল ফি উল্কমিল কুরআন, প্রথম খন্ড, পৃষ্ঠা: ৬৬-৭২)। কুরআন মজীদ দীর্ঘ ২৩ বছর(মক্কায় ১২ বছর ৫ মাস ২১ দিন এবং মদীনায় ১০ বছর ৬ মাস ৯ দিন) বছর বা ৭৯৭০ দিনে অবতীর্ণ হয়েছে। এতে বুঝা যায় কুরআন খুব ধীরে ধীরে অবতীর্ণ হয়েছে, অর্থাৎ দৈনিক গড়ে প্রায় ৯টি শব্দ অবতীর্ণ হয়েছে। প্রাথমিক যুগে কুরআনে এখানকার মত ‘ই’রাব’ বা ‘যের’, ‘যবর’ ইত্যদি ছিলো না। উমাইয়া রাজত্বকালে হাজ্জাজ বিন ইউসুফের সময় এর প্রবর্তন করা হয়। আরও পরে মুখস্থ করার সুবিধার্থে কুরআন করীমকে ৫৪০ রুকূ এবং ৭টি মঞ্জিলে বিভক্ত করা হয়। এটা আগেও উল্লেখ করা হয়েছে। কুরআন সম্বন্ধে আরও কিছু তথ্য এরূপ:
(ক) কুরআনের সবচেয়ে বড় সূরা হলো সূরা বাকারা। এতে ৪০ রুকূ এবং ২৮৭ আয়াত। আর সবচেয়ে ছোট সূরা হলো কাওছার। এতে ১ রুকূ এবং ৪ আয়াত।
(খ) কুরআনের সবচেয়ে বড় আয়াত হলো সূরা বাকারার ২৮৩ আয়াত এবং সবচেয়ে ছোট আয়াত রয়েছে একাধিক
(গ) সূরা মুয্যাম্মিলের ২১ আয়াতটি ১ রুকূ সম্বলিত।
(ঘ) কুরআনের সবচেয়ে বড় রুকূ সূরা সাফ্ফাতের ২য় রুকূটি। এটি ৫৩ আয়াত সম্বলিত।
আগেই বলেছি কুরআনে ৩০টি পারা। যাতে ৩০ দিনে কুরআন খতম করা যায় তাই এ ব্যবস্থা। প্রত্যেক পারাকে আবার এক চতুর্থাংশ, অর্ধাংশ, এক তৃতীয়াংশ এভাবেও ভাগ করা হয়েছে। কুরআনে দু রকমের আয়াত - ‘আয়াতে মুহকামাত’ (আদেশসম্বলিত সুস্পষ্ট) এবং ‘আয়াতে মুতাশাবিহ’ (রূপ দ্বার্থবোধক)। কুরআনে ২৯টি সূরার প্রথমে সূরা হুরূফে মুকাত্তায়ত আছে। আরবীকে বলে ‘উম্মুল আল সিনা’ বা ভাষার জননী। এ ভাষায় কুরআন করীম অবতীর্ণ হয়েছে (সূরা ইউসূফ: ৩)। এ কুরআন সব গ্রন্থের জননী (সূরা যুখরুফ: ৫)। সব স্থায়ী আদেশ এতে সন্নিবেশিত করা হয়েছে (সূরা বাইয়েনাহ: ৪)। এ কুরআন শেষ ও পরিপূর্ণ শরীয়ত গ্রন্থ মানুষের জন্য পরিপূর্ণ জীবন বিধান (সূরা মায়েদা: ৪)। আল্ কুরআনে ‘আল্লাহ্’ শব্দটি ২৬৯৮ বার ব্যবহৃত হয়েছে। ‘মুহাম্মদ’ শব্দটি ব্যবহৃত হযেছে ৪ বার।
কুরআন করীমের অবতীর্ণ ও গ্রন্থবদ্ধ হওয়ার ইতিবৃত্ত
আগেই বলেছি কুরআন করীম রূহুল আমীন হযরত জিবরাঈলের মারফত দীর্ঘ ২৩ বছর ধরে নবী করীম সল্লাল্লাহু আলায়হে ওয়া সাল্লামের কাছে অল্প অল্প করে ওহীর মাধ্যমে অবতীর্ণ হয়েছে। আঁ হুযূর (সা.)-এর রীতি ছিল, কুরআনের যতটুকু অংশ যখনই অবতীর্ণ হতো তিনি তখনই আল্লাহ্ তাআলার প্রত্যক্ষ তদারকীতে ও নির্দেশে তা লিপিবদ্ধ করিয়ে নিতেন চামড়া হাড় গাছের পাতা বাকল প্রভৃতিতে। কেননা, তখনও কাগজ আবিষ্কৃত হয়নি। আর আল্লাহ্ তাআলার ফযল ও অনুগ্রহে নবী আকরম (সা.)-এর হৃদয়পটেও এ অংশ অঙ্কিত হয়ে যেতো। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ্ তাআলার প্রতিশ্রুতি ছিল ‘সা নুক্বরিউকা ফালা তানসা’ (সূরা আলা) অর্থাৎ আমি তোমাকে কুরআন এমনভাবে পড়িয়ে দেবো যে তুমি তা ভুলবে না। মহান আল্লাহ্ তাআলা আরও বলেছেন, ‘ইন্না আলায়না জামাআহূ ওয়া কুরআনাহূ’ (সূরা কিয়ামাহ্&zwnj অর্থাৎ নিশ্চয় এ কুরআন (তোমার হৃদয়পটে) সমাবেশ করে দেয়া আমাদের দায়িত্ব।
কুরআন কিভাবে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলায়হে ওয়া সাল্লামের কাছে অবতীর্ণ হতো এ প্রসঙ্গে দু একটি হাদীস উদ্ধৃত করার অবকাশ রয়েছে বলে মনে করি:
• হযরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত। হারিছ ইবনে হিকাম (রা.) রসূলুল্লাহ্ (সা.) কে জিজ্ঞাস করলেন, হে আল্লাহ্র রসূল আপনার কাছে কিভাবে ওহী আসে? তিনি (সা.) বললেন, ‘কোন সময় এমন হয়, একটি (চিত্তকর্ষক) টুং টাং শব্দ আমি শুনতে পাই। সেই শব্দ বন্ধ হতে না হতেই যা বলা হয় সব কিছুই আমি মুখস্থ করে নিই। এ ধরনের ওহী আমার জন্যে বড়ই শান্তিদায়ক হয়। আবার কোন কোন সময় স্বয়ং ফিরিশ্তা মানুষের আকার ধারণ করে আমার কাছে আসে এবং আল্লাহ্র বাণী আমাকে বলে দেয়। আমি তা মুখস্থ ও হৃদয়ঙ্গম করে নেই। প্রথম ধরনের ওহী সম্পর্কে হযরত আয়েশা (রা.) বলেন, ‘আমি অতি প্রচন্ড শীতের সময়ও হযরতকে ওহী অবতীর্ণ হওয়ার কারণে ঘর্মাক্ত হয়ে যেতে দেখছি’ (বুখারী)। প্রসঙ্গত বলা হচ্ছে, ওহী যখন অবতীর্ণ হওয়ার সময় হতো তখন পরিবেশটা এমন এক ধরনের হয়ে যেতো, আঁ হুযূর (সা.)-এর আশে পাশে যারা থাকতেন তারা এটা বুঝতে পারতেন। ওহী অবতরণকালীন সময়ে নবী করীম (সা.)-এর আমল কি রকম হতো নিম্নোক্ত হাদীস থেকে তা-ও আমরা জানতে পারি।
• হযরত ইবনে আব্বাস (রা.) বর্ণনা করেন। মানব জগতে রসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলায়হে ওয়া সাল্লামের চেয়ে বড় দাতা আর কেউ হয়নি এবং হবেও না। তিনিই ছিলেন সর্বশ্রেষ্ঠ দানশীল। বিশেষ করে যখন রমযান মাস আসতো এবং যখন জিব্রাঈল আমীন এসে তাঁর সাথে কুরআন শরীফের পুনরাবৃত্তি করতেন তখন তাঁর দানশীলতার কোন সীমা পরিসীমা থকাতো না। প্রত্যেক দিন হযরত জিব্রাঈল এসে রসূলুল্লাহ্ (সা.)-কে কুরআনের পুনরাবৃত্তি করাতেন। অবশেষে তখন তাঁর কল্যাণ, অনুগ্রহ ও আধ্যাত্মিক দৃষ্টি জীবনী শক্তিবাহী বসন্তের মলয় সমীরণের চেয়েও অধিকতর ব্যাপক হতো (বুখারী)।
আগেই বলেছি, ওহী অবতীর্ণ হওয়া মাত্রই নবী করীম (সা.)-এর হৃদয়পটে তা খোদিত হয়ে যেতো। এমনকি সাহাবা কেরামের মাঝেও এর প্রভাব সৃষ্টি হতো। তাঁরাও সহজেই শুনে শুনে মুখস্থ করে ফেলতেন। তবে এর মাঝে যাতে কোন বিকৃতি না ঘটে সেজন্যে এ ওহী লিখার জন্যে কোন কোন সাহাবী নিযুক্ত ছিলেন। তাঁদের বলা হতো ‘কাতেবে ওহী’ বা ওহী লিখক। এঁদের মাঝে ছিলেন: (১) হযরত আবূ বকর (রা.) (২) হযরত ওমর (রা.), (৩) হযরত উসমান (রা.) (৪) হযরত আলী (রা.) (৫) যাবির বিন আলা আওয়াম (৬) শারজীল বিন হাসনাহ্ (৭) আব্দুল্লাহ্ বিন রাওয়াহাহ্ (৮) ওবায় বিন কা’ব (৯) যায়েদ বিন ছাবিত। রসূলুল্লাহ্ (সা.)-এর দরবারে এ রকম ৪২ জন কাতেবে ওহী ছিলেন। প্রত্যেক বছর কুরআন মজীদের কতটুকু অংশ অবতীর্ণ হতো রমযান মাসে হযরত জিব্রাঈল তা নবী করীম (স.)-এর কাছে পুনরাবৃত্তি করতেন। যে বছর নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলায়হে ওয়া সাল্লাম ইন্তেকাল করেন সেই বছর হযরত জিব্রাঈল রমযান মাসে অবতীর্ণ গোটা অংশ ২ বার পুনরাবৃত্তি করেন। এতে নবী করীম (সা.) বুঝতে পারলেন কুরআন করীম অবতীর্ণ হওয়ার কাজ পূর্ণ হয়েছে এবং তাঁর (সা.) অন্তিম যাত্রার পালাও ঘনিয়ে এসেছে।
নবী করীম (সা.)-এর ইন্তেকালের পর হযরত উমর (রা.)-এর পরামর্শক্রমে হযরত আবূ বকর (রা.) হযরত যায়েদ সাবিত আনসারী (রা.)-কে নির্দেশ দিলেন যেন তিনি লিখিত কুরআন শরীফের একখানা কপি পুস্তকাকারে বাঁধাই করে রাখেন। অতএব তিনি (রা.) অনেক পরিশ্রম করে প্রত্যেক আয়াতের ব্যাপারে লিখিত ও মুখস্থ প্রত্যেক প্রকারের দৃঢ় সাক্ষ্যের সত্যায়নের মাধ্যমে এ কুরআনকে একখানা গ্রন্থের রূপ দান করেন, (বুখারী কিতাবু ফাযায়েলিল কুরআন)। এ কুরআন খানা হযরত উম্মুল মু’মিনীন হাফসা বিনতে উমর (রা.)-এর কাছে সংরক্ষিত ছিল। হযরত উসমান (রা.)-এর সময়ে যখন পঠনপদ্ধতি নিয়ে বিভিন্ন মতভেদ দেখা দিলো তখন হযরত উসমান (রা.) উপরোক্ত সংরক্ষিত কুরআন খানার বহু কপি নকল করিয়ে এক ফরমান জারির মাধ্যমে তা দেশে দেশে প্রেরণ করেন। নকল করার কাজে যারা নিয়োজিত ছিলেন তাঁরা হলেন-যায়েদ বিন ছাবিত, আব্দুল্লাহ ইবনে যুবায়ের, সায়্যেদ ইবনুল আস ও আব্দুর রহমান ইবনুল হারিস রেযওয়ানুল্লায়হে আলায়হিম। আজ সারা বিশ্বে সেই কুরআনের কপিই মজুদ আছে। আর এ কুরআনই যে সেই কুরআন যা নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলায়হে ওয়া সাল্লামের কাছে অবতীর্ণ হয়েছিল তা ইসলামের ঘোরতর শত্রু প্রাচ্যবিদও স্বীকার করেছেন (Life of Mahomet By Sir William Muir. Encyclopaedia Britannica, কুরআন অধ্যায় দ্রষ্টব্য)। জার্মান প্রাচ্যবিদ নলডিকির সাক্ষ্যও এ প্রসঙ্গে স্মর্তব্য। তিনি বলেছেন,
‘যেহেতু কুরআনের ব্যবহার উপাসনালয়ে বিদ্যালয়ে এবং অন্যান্যভাবে খ্রিষ্টান দেশগুলোতে বাইবেল পাঠের তুলনায় অধিকতর সেহেতু এটা প্রকৃতই বলা হয়েছে, সর্বাধিক ব্যাপকভাবে পঠিত গ্রন্থ হলো কুরআন’।
(এন সাইক্লোপেডিয়া ব্রিটানিকা নবম সংস্করণ)
তিলাওয়াত শব্দের প্রতি এক নজর
আরবী ‘তিলাওয়াত’ শব্দের অর্থ করা হয় সাধারণত আবৃত্তি। কিন্তু ব্যপকতার দিক থেকে তিলাওয়াত ও আবৃত্তির মাঝে অনেক পার্থক্য আছে। আবৃত্তির অর্থ বারে বারে পাঠ, অভ্যাস করন, ছন্দ ভাব প্রভৃতি বজায় রেখে ঊচ্চঃস্বরে পাঠ, পুনঃপুনঃ আগমন ইত্যাদি (সংসদ)। কিন্তু ‘তিলাওয়াত’ শব্দ দিয়ে পাঠ করা, উপলব্ধি করা, অনুসরণ করা প্রভৃতি বুঝায় (মুফরাদাত)। অর্থাৎ না বুঝে পাঠ করলে হবে না এবং অনুসরণ না করে পাঠ করলেও একে তিলাওয়াত বলা যাবে না। তাই কুরআন মজীদ তিলাওয়াত করার মাধ্যমে সাধারণত আবৃত্তি বুঝাবার পরেও এর ওপর সবিশেষ চিন্তা করতে হবে এবং প্রত্যাশিত সুফল লাভের জন্যে এর ওপর আমল অর্থাৎ কর্মে বাস্তবায়িত করতে হবে। আর কুরআন করীম তিলাওয়াতের প্রসঙ্গে আদেশ দেয়া হয়েছে- খুব উঁচু স্বরে, এবং খুব আস্তেও নয় অর্থাৎ ধীরে ধীরে বুঝে শুনে তিলাওয়াত করুন বিগলিত চিত্তের করে পাঠ করতে হবে (১৭:১১১; ৪৭৩:৫)।
আল্লাহ্ তাবারক ওয়া তাআলা বলেন, ওয়া ইয্ ক্বুরিয়াল কুরআনা ফাসাতমি’উ লাহূ ওয়ান সিতু লাআল্লাকুম তুরহামুন অর্থাৎ, আর কুরআন যখন পাঠ করা হয় তখন তোমরা এ (কুরআন) কান পেতে শুন এবং নীরব থাক যেন তোমাদের প্রতি কৃপা করা যায় (সূরা আ’রাফ: ২০৫)। কুরআন খতমের নামে যখন দেখি হাফিয সাহেবরা মাইকে কুরআন তিলাওয়াত করেন হাটে বাজারে বন্দরে তখন দুঃখ হয়। কেউ কেউ হয় তো তা শুনে। অধিকাংশ লোকই শুনার সুযোগ পায় না। যারা কুরআনের এ নির্দেশ জানে না বা বুঝে না তাদের কথা না হয় বাদই দিলাম কিন্তু যারা জেনে বুঝে মাইক লাগিয়ে এভাবে কুরআন খতম করেন তারা যে আল্লাহ্ তাআলার আদেশের অবমাননা করছেন তা জোর দিয়ে বলা যায়। অনেক সময় কোন এক উপলক্ষে যেমন বিয়ে সাদী বা সভা সম্মেলনে তিলাওয়াতের সময় যারা হৈ চৈ করেন বা অন্যান্য কথা বার্তা বলেন তারাও যে আল্লাহ্র আদেশ পালন না করে নিজেদের হাতে আল্লাহর কৃপার দরজা বন্ধ করে দিচ্ছেন তা-ও বোধ করি বলার অপেক্ষা রাখে না।
কুরআন করীম তিলাওয়াতের পূর্বে পাক পবিত্র হওয়া
বাহ্যিক পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার ওপর যে অভ্যন্তরীণ পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা নির্ভরশীল এতে কোন সন্দেহের অবকাশ নেই। কুরআন করীম পাঠ করার পূর্বে দৈহিক পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা তথা ওযূ এবং প্রয়োজনে গোসল প্রভৃতি করে নিতে হবে। তবে অধিক সম্মান দেখাবার খাতিরে অনেকে কুরআন গিলাফে ভর্তি করে অনেক উঁচুতে তাকের ওপর রেখে দেন। এতেই যে এর প্রতি অধিক সম্মান ও শ্রদ্ধ-ভক্তি দেখানো হয় তা কেউ বলতে পারবে না। অবশ্য একথা ও ঠিক, বাহ্যিকভাবেও কুরআনকে সম্মান দেখাতে হবে। এমন কি কুরআন শরীফ নিচু স্থানে রেখে উঁচু স্থানে বসাও সমীচীন নয়। প্রয়োজনে কুরআন করীমের বিশেষ বিশেষ স্থানে চিহ্ন দাগ প্রভৃতি দেয়া যেতে পারে এবং নোট প্রভৃতিও লেখা যেতে পারে। সাধারণ্যে কুরআন করীম তিলাওয়াতের অভ্যেস নেই বললেই চলে। আগেই বলেছি কুরআনকে সম্মান দেখানোর জন্যে অনেক উঁচুতে উঠিয়ে রাখা হয়। কোন কোন সময় কসম খাওয়ার কাজে, বাটি চলান দিতে এবং মৃত্যু ব্যক্তির সামনে বসে কুরআন তিলাওয়াতের প্রবণতা লক্ষ্য করা গেছে।
কুরআন মানবের জন্য জীবন বিধান-মুক্তির মহাসনদ। বেশি বেশি পাঠ করতে হবে বলেই এর কুরআন নামকরণ একটি বিশেষ কারণ। কুরআন গোটা মানবমন্ডলীর উদ্দেশ্যে অবতীর্ণ হয়েছে। তাই একজন অমুসলিমকে যদি কুরআন থেকে শিক্ষা গ্রহণ করতে হয়, কুরআনের জ্ঞানে সমৃদ্ধ হতে হয় সেক্ষেত্রে তাকে আগেই যদি ওযূ গোসল শিখতে হয় যা সে প্রথম প্রথম হয়তো করবে না বা করতেই চাইবে না অন্যথায় তার পক্ষে কুরআনের আলোকে আলোকিত হওয়াতো অনেক দূরের কথা। আসলে এ ব্যাপারটি এ রকম নয়। কুরআন করীমে বলা হয়েছে – “লা ইয়ামাসসু হু ইল্লাল মুত্বাহ্হারূন” অর্থাৎ পবিত্র লোক ছাড়া কেউ এ (কুরআন) স্পর্শ করবে না (সূরা আল্ ওয়াকেয়া: ৮০)। এর সত্যিকারের অর্থ হলো কেবলমাত্র সেসব সৌভাগ্যবান ব্যক্তি যারা ধার্মিক জীবন ধারণের মাধ্যমে হৃদয়ে পবিত্রতা ও স্বচ্ছতা অর্জন করেছেন তারাই কুরআনের সঠিক তাৎপর্য ও অর্থ উপলব্ধি করার সৌভাগ্য অর্জন করেছেন। অপবিত্র কলুষ হৃদয় এত্থেকে আলো সংগ্রহ করতে পারবে না। সে হাজার বার গোসল এবং ওযূ করে নিক না কেন। ইমাম গায্যালী (রহ.)-ও এ আয়াত প্রসঙ্গে বলেছেন,
“পবিত্র হস্ত ব্যতীত যেরূপ প্রকাশ্যে কুরআন শরীফ স্পর্শ করা নিষিদ্ধ, তদ্রূপ যাহার হৃদয় কুরিপুর কর্দম হইতে পবিত্র নহে এবং ভক্তি ও মহব্বতের নূরে আলোকিত নহে সে আত্মাও কুরআনের প্রকৃত তত্ত্ব অবগত হওয়ার যোগ্য নহে।”
(কিমিয়ায়ে সা’দত, ইবাদত খন্ড)
অবশ্য একথাও ঠিক, বাহ্যিকভাবে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন হয়ে পবিত্র কুরআন স্পর্শ করা উচিত। এখানে উল্লেখ থাকে, ঋতুবতী মহিলারা মাসিকের সময় কুরআন স্পর্শ করবেন না। তবে মুখস্থ দোয়া কালাম পাঠ করতে পারেন।
কুরআন পাঠের পূর্বে আল্লাহ্ তাআলা শয়তান থেকে তাঁর আশ্রয় প্রথৃনা করার আদেশ দিয়েছেন। যেমন বলা হয়েছে,
“ফা ইযা কারা’তাল কুরআনা ফাসতাইয বিল্লাহি মিনাশ শাইত্বানির রাজীম”
অর্থাৎ, অতএব তুমি যখন কুরআন পাঠ কর তখন বিতাড়িত শয়তান থেকে আল্লাহ্ আশ্রয় প্রথৃনা করো।
(সূরা নাহল: ৯৯)
সুতরাং যে কোন সময়েই কুরআন তিলাওয়াত করা হোক না কেন এ ‘তা‘আব্বুয’ পাঠ করা ফরয। এখানে এ প্রার্থনার মাধ্যমে কুরআন তিলাওয়াতকারীকে অভ্যন্তরীণ শয়তানী প্রভাব থেকে মুক্ত ও পাক পবিত্র হয়ে কুরআনের প্রকৃত শিক্ষা লাভ করার জন্যে দোয়া শিখানো হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে ‘তা‘আব্বুয’-ও একটি দোয়া। সাধারণ্য প্রচলিত বিশ্বাস অনুযায়ী বাইরে আলাদা একটি শয়তানের অস্তিত্ব রয়েছে। এর কাছ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্যে আল্লাহ্র আশ্রয় চাওয়া হয়-এ ধারণা ঠিক নয়। এতে আল্লাহ্ তাআলার প্রতিপক্ষ একটি সত্তার কল্পনা করা হয় মাত্র যা মানুষকে শির্কের দিকে ঠেলে দিতে পারে। আসলে শয়তান মানুষের আন্তর্নিহিত কুপ্রবৃত্তিকে বলা। যেভাবে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলায়হে ওয়া সাল্লাম বলেছেন,
আশ শায়ত্বানু মিনাল জিন্নাতে ওয়ান্নাস।
শয়তান মানুষ ও জিনের মাঝেই রয়েছে।
সুতরাং কুরআন তিলাওয়াতের পূর্বে এ আশ্রয় চাওয়ার অর্থ, মানুষের মাঝে নিহিত কুপ্রবৃত্তির কুপ্ররোচনা যেন তার কুরআনী জ্ঞান আহরণের পথে বাধা হয়ে দাঁড়াতে না পারে সেজন্য মহান আল্লাহ্র আশ্রয় এসে তাঁর কৃপা ও কল্যাণ কামনা করা যেন সে কুরআনের আলোকে আলোকিত হতে পারে।
কুরআন করীমে ‘বিসমিল্লাহ্’-এর ব্যবহার
নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলায়হে ওয়া সাল্লামের শিক্ষানুযায়ী প্রত্যেক কাজ করার আগে ‘বিসমিল্লাহির রহমানির রহীম’ [আমি আল্লাহ্র নামে (আরম্ভ করছি) যিনি পরম করুণাময়, অযাচিত-অসীমদাতা (ও) বার বার কৃপাকারী] পাঠ করা উচিত। নবী করীম (সা.) সামান্য সামান্য কাজ এমন কি পাতিলের ঢাকনাটি উঠানোর সময়েও এ বাক্যটি পাঠ করতে বলেছেন কল্যাণ ও বরকতের জন্যে।
আগে বলে এসেছি কুরআন মজীদে ১১৪টি সূরা রয়েছে। প্রতিটি সূরা আরম্ভ হয়েছে ‘বিসমিল্লাহির রহমানির রাহীম’ আয়াত দিয়ে কেবল সূরা তাওবা এর ব্যতিক্রম। আর সূরা নামলের ৩১ আয়াতেও ১বার ‘বিসমিল্লাহ্র’ উল্লেখ এসেছে। সুতরাং সারা কুরআনে ১১৪ বার বিসমিল্লাহ্র উল্লেখের মাধ্যমে বনী ইসরাঈলকে ১১৪ বার দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। তাওরাতের দ্বিতীয় বিবরণের ১৮ অধ্যায়ের ১৯ শ্লোকে বলা হয়েছিল-মূসার ভ্রাতৃগণের মাঝ থেকে যে, মহানবীর আবির্ভাবের কথা বলা হযেছিল,
‘তিনি আমার নামে যে সকল বাক্য বলবেন তাহাতে যে কেহ কর্ণপাত না করিবে তাহার কাছে আমি পরিশোধ লইব’।
যথাসময়ে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলায়হে ওয়া সাল্লামের ব্যক্তি সত্তার মাধ্যমে সেই প্রতিশ্রুত মহানবী আবির্ভূত হলেন। তিনি ‘বিসমিল্লাহ্’ অর্থাৎ আল্লাহ্র নামে সব কথা বলেছেন। কিন্তু বনী ইসরাঈল তাওরাতের সুস্পষ্ট ভাবিষ্যদ্বাণীর পূর্ণতা সত্ত্বেও মহানবী বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলায়হে ওয়া সাল্লামকে মান্য করেনি; বরং তাঁর (সা.) জীবদ্দশায়ও তাঁকে অশেষ দুঃখ যাতনা দিয়েছে এবং তাঁর জাতিকে এখনও কষ্টের পর কষ্ট দিয়ে যাচ্ছে। তাই উপরোক্ত বিধান অনুযায়ী তারা সদাপ্রভু আল্লাহ্র নিকট অপরাধী। আল্লাহ্র প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী তাদের কাছ থেখে পরিশোধ নিয়েছেন এবং নিতে থাকবেন। যদিও সাময়িকভাবে তারা এখন কিছুটা সুখ সুবিধা ভোগ করছে। কিন্তু শেষ যুগে তাদের জন্যে মহা আযাব অপেক্ষা করছে (১৭: ১০৫)। নিঃসন্দেহে ‘বিসমিল্লাহ্’ সূরার একটি আয়তে। আহমদী জামাআত বিসমিল্লাহ্-কে একটি আয়াত ধরেই সূরার আয়াত গণনা করে থাকে। যে ‘তা‘আব্বুয’ পাঠ করার তাগিদ আছে তা কিন্তু কোথাও লেখা নেই। অথচ যা সূরার প্রারম্ভে লেখা আছে তা কেন গণনা থেকে বাদ দেয়া হবে? অন্যান্যরা এটা গণনা করতেন না বা এখনও সব ক্ষেত্রে গণনা করেন না। সূরা ফাতিহা হলো কুরআন মজীদের প্রথম সূরা। একে ‘সাবাআম মিনাল মাসানী’ অর্থাৎ পুনঃপুনঃ পাঠ্য সাত আয়াত আখ্যায়িত করা হয়েছে কু্রআনে হাকীমে (সূরা হিজর: ৮৮)। যখন বলা হলো ‘বিসমিল্লাহ্’ বাদে ৭টি আয়াত দেখিয়ে দিন, তখন কেউ তা পারলেন না। তাই ইদানিং কালে সৌদী রাজার সহায়তায় ও পৃষ্ঠপোষকতায় মুফতী মুহাম্মদ শফী সাহেব প্রণীত যে কুরআন শরীফের বাংলা ভাষায় অনুবাদ করা হয়েছে এবং বিপুল সংখ্যায় বাংলাদেশে বিলি করা হয়েছে এতে দেখা যায়, সুরা ফাতিহার আরবী অংশে ‘বিসমিল্লাহ্’-কে এক নম্বর আয়াত হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে কিন্তু বাংলা অনুবাদে ‘বিসমিল্লাহ্’-এর অর্থে আয়াত নম্বর দেয়া হয়নি। ৬ নম্বর আয়াতকে ৬ ও ৭ নম্বর হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। আরও আশ্চর্যের বিষয়, এরপর বাকারাসহ আর কোন সূরায় ‘বিসমিল্লাহ্’-আয়াতকে সংখ্যা হিসেবে গণনা করা হয়নি। এসবের কী অর্থ আমরা বুঝি না। ‘আল আয়াযুবিল্লাহ্’ - এত্থেকে আল্লাহ্র আশ্রয় চাচ্ছি। এটা কি স্বেচ্ছাপ্রণোদিত ধোঁকাবাজি না আত্মাপ্রবঞ্চনা এর বিচারের ভার পাঠক সামাজের ওপর অর্পিত হলো।
আগে বলে এসেছি কুরআন শরীফ পাঠ করার পূর্বে ‘তাআব্বুয’ বা আউযুবিল্লাহ্ পাঠ করার নির্দেশ দিয়েছেন আল্লাহ্ তাবারক ওয়া তাআলা কিন্তু কুরআনে কোথাও তা অবতীর্ণ করেন নি অথচ সূরার প্রারম্ভে বিসমিল্লাহ্ অবতীর্ণ করেছেন। আমার মনে হয়, শেষ যুগে মৌলভী সাহেবান বিসমিল্লাহ-কে সূরা থেকে বাদ দেবার চেষ্টা করবেন তাই মহান আল্লাহ্ সূরার প্রারম্ভে ‘বিসমিল্লাহ্র’ উল্লেখ করে দিয়েছেন। সূরা তাওবার প্রারম্ভে ‘বিসমিল্লাহ্’ অবতীর্ণ করেন নি। কেউ কি এতে ‘বিসমিল্লাহ্’ ব্যবহার করার ধৃষ্টতা দেখাতে পারবেন?
বিসমিল্লাহ্’তে যেসব অক্ষর ব্যবহৃত হয়েছে এর সংখ্যা হলো ১৯টি। কেউ কেউ এ ১৯ সংখ্যা দিয়ে কুরআন থেকে নানা প্রকার তথ্য বের করার চেষ্টা করেছেন যেমন, কুরআনে বিসমিল্লাহ্ ১১৪ বার ব্যবহৃত হযেছে। এ সংখ্যা ১৯ দিয়ে বিভাজ্য। তবে এর কোন সমর্থন কুরআন হাদীসে নেই। আবার বিসমিল্লায় ১৯ টি অক্ষরের আবাজদের মূল্যমান হয় ৭৮৬। কেউ কেউ বিসমিল্লাহ্কে সংক্ষেপে ‘৭৮৬’ লিখে থাকেন। এরও কোন ভিত্তি আছে বলে আমাদের জানা নেই।
কুরআন তিলাওয়াতে প্রারম্ভে সব সময় ‘তাআব্বুয’ পাঠ করা আবশ্যকীয়। তবে সূরার প্রারম্ভে যেখানে ‘বিসমিল্লাহ্’ রয়েছে সেখানে ছাড়া অন্য স্থানে তিলাওয়াতের সময় বিসমিল্লাহ্ পাঠ করা জরুরী নয়। নামাযের কিরাতে নবী করীম (সা.) কখনো ‘বিসমিল্লাহ্ বিল যিহ্র’ (সশব্দে) আবার কখনো ‘বিল খফী’ (নিশব্দে) পাঠ করেছেন। সুতরাং উভয় ধরনই জায়েয বা সিদ্ধ। তবে আমরা আমাদের খলীফাদের অনুসরণে বিসমিল্লাহ্ বিল খফী পাঠ করে থাকি।
কুরআন তিলাওয়াতে পরে কেউ কেউ সশব্দে বা নিঃশব্দে ‘সাদাকাল্লাহুল আলীউল আযীম’ বা এ ধরনের স্বীকৃতিমূলক বাক্য পাঠ করে থাকেন। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলায়হে ওয়া সাল্লামের সুন্নত থেকে এটা সাব্যস্ত হয় না তবে কেউ কেউ কুরআনের এ আয়াতগুলো উল্লেখ করে এর যথার্থতা প্রমাণ করার চেষ্টা করেন: (১) কুল সাদাকাল্লাহু অর্থাৎ তুমি বলো আল্লাহ্ সত্য বলেছেন, (আলে ইমরান: ৯৬) এবং (২) ওয়া সাদাকাল্লাহু ওয়া রাসুলুহূ অর্থাৎ প্রকৃতপক্ষে আল্লাহ্ ও তাঁর রসূল সত্যই বলেছেন (আহযাব: ২৩)।
আল্লাহ আমাদের সবার হাফেজ, নাসের ও হাদী হোন, আমীন।
৮| ৩০ শে মার্চ, ২০১৮ দুপুর ১২:২৮
পলাশবাবা বলেছেন: নারীর যোনিপথে (পায়ুপথে নয়) পুরুষের লিংগ প্রবেশের মাধ্যমে সংগমের মাধ্যমে মানবকুলের প্রজনন ক্রিয়া হয় জানতাম। আর এপথেই (যোনিপথে, পায়ুপথে নয়) শিশু ভুমিষ্ট হয়।
লেখকের ক্ষেত্রে মনে হচ্ছে পৃথিবীর মানবকুলের একমাত্র ব্যতিক্রম হয়েছে।
৯| ৩০ শে মার্চ, ২০১৮ দুপুর ১২:৩৩
পলাশবাবা বলেছেন: এই আবিষ্কারের জন্য লেখক কে পুরুষ্কৃত করলামঃ
এই আবিষ্কারের জন্য লেখক কে পুরুষ্কৃত করলামঃ
৩০ শে মার্চ, ২০১৮ দুপুর ২:০৩
শহিদুল বলেছেন: পুরুষ্কারের জন্য ধন্যবাদ! এগুলা আমি আপনার উপর ব্যবহার করবো!!
১০| ৩০ শে মার্চ, ২০১৮ দুপুর ২:৫১
লতিফপুর বহরদার বাড়ী বলেছেন: post ta dehke nejka 1st muslim bolte lojja pache.jini post ta koreche unar namer 1st a jodi MAOLANA kinba mufti thktoh ami apnk ans ta oivabe dewar try kortam.amr kohtay apni negative dek a nea jaben na .post ta likte apnar onk time toh gese bote ,kintu apni QURANER ayat gulu k joto bar use ba likechen toh toh bar apnar bektikk,pariparishik obosta kmn chilo ami proshnobiddoh..ami tmn like pora kingba kono shushikkittoh o na ..echa kre become final year that means 2nd year cmplt kre left korse just amr thke dgree dorkar nai ,ALLAH kono nirdishtoh manob jatik bojanor jnno Hazrat MOHAMMED SW k peron korchen apni QURANER JE ayat gulu Ullek korchen ta shorbosrshto nobi MD SW r ager nobider koht blchen .quraner ayat gulu kub kub marattok vai .kichu mone koren na .anmite muslim ajk nirjatitoh akn apnara muslimder ay pobitro jinishta k nea tamasha koren na.shudu muslim kno kono dormer proti SORBOOSHE MANOB nejay bolchen je DORMO NEA KONO prokar kob na deknor jnno.even prottek dormer nij nij gronte sposhto kre bola ache...apni kichu ayat dekeche kintu kon ayat ta kobe ki jonno najil hoiche tar shotik tottoh kuje ber korte apnr amr mohto manusher ordohshoto bochor lege jabe so ..quraaner ayat gulu amn shosta kre dean na.jader dorkar porbe tara arobi jeney sheke ne be.ami apnk kno bektigotoh akromon korche na just apnk bolte chaitse quran k jiboner shesh nishash porjonto tene anben na ..apni jodi resrch kre thken thle vlo kohta .5000 hajar hadis ache ogulu thke 2500 something SHish bol goshna dechen 4 kahlifar mohdoi gon.o gulu poren ageh thn quran research korte 2000 bochor lge jbe ...valo kre porun ,dekun ,nijer jiboner shate melan ta hole apni nejay upolobdi korte parben AMADER priyo naobiji 60-62 bochor a keno ay pritibir maya chere cholegechen..ami o muslim ay apnara jemnta mone kren temn tay..tobe muslimer 1st kaj hoche namaj /ebadoat koraa r ami aj 2 bochor hobe moshjida jai na namaj pori na ,tar mane ki apni bolben ami kafir ?ita ALLha y vlo jane karon je membar a dary ALEM ULEMARA shotto ta bole na ,20 min bachader pory 1500-5000 tk porjontoh ne jay ki shekan r ki gan orjon korechen unara ami aykntay o proshnobiddo?akn apni bolben unar family ra kmne cholbe ?ISLAM MEANING TA SHANTI TAR MANE AY NAJE ATOYE SHOJA APNI JANEN ARIBIC GRAMMAR ?AMI JANI?so ay jeneshta ne a keno apnara tamasha kren
kono nirdishttoh jati-e jannate jabe apni just koi aekta ayat dekay bole fellen ?research kren vlo just ondabon kren r silent thken akn apni ami chaile o kicuy krte parbo na ..NASO climate INTR. NASA porjontoh TADER R SCINCE K AGEHY nete parche na full stop kre dese ,r KORAR ami apni unader chaite toh r boddiman na? climate r shotro c07 % r at present 7Oc% te ache agulor meaning unara shotro ble amdr shekeychen amro shekce asholy aer meaning ki janen???////???????
©somewhere in net ltd.
১|
৩০ শে মার্চ, ২০১৮ সকাল ১০:৫২
নাঈম মুছা বলেছেন: আহ্! জামানার সবথেকে মুহাক্কিক মুফাস্সিরের পোস্ট পড়লাম! আহ কত মধুময় যুক্তি!