![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
• ধুমপানের বদ অভ্যাসটা সামান্য আছে। ( ঈদে চাঁন্দে আর কি) •মানুষের সাথে মিশতে ভাল লাগে। তবে সবার সাথে না। যাদের মাথায় সামান্য পরিমান হলেও গিলু নামের বস্তুটি আছে তাদের সাথে। • গান শুনতে ভাল লাগে। প্রিয় শিল্পিঃ প্রিতম আহমেদ। কুমার বিশ্বজিৎ। চন্দনা মজুমদার। আইয়ুব বাচ্চু। প্রয়াত সন্জিব চৌধুরী। • বই পড়তে ভালবাসি। যে কোন বই। গল্প উপন্যাস কবিতা সব কিছু। রাতের বেলায় ঘুমোতে যাওয়ার আগে ভুতের গল্প পড়ে ভয় পেতে ভাল লাগে। •রাত জাগতে ভাল লাগে। দু চোখে প্রচণ্ড ঘুম এবং সীমাহিন ক্লান্তি নিয়েও মাঝে মাঝে সারা রাত জেগে থাকি।
সালমার বাবার নাম সোলেমান গাজি। সোলেমান গাজির নির্দিষ্ট কোন পেশা নাই। নানান সময় নানান ধরনের কাজ করে। কখনো ব্যাপারীর ম্যানেজারি, কখনো গ্রামের একমাত্র প্রাইমারি স্কুলের খন্ডকালীন শিক্ষকতা, কখনো পাশের গ্রামের পল্লী চিকিৎসক আদম আলীর সহকারী।
এখন ভরা বর্ষা। চারদিকে পানি থই-থই করছে। স্কুলের ভিতরে পানি ঢুকে যাওয়ায় হেডমাষ্টার অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য স্কুল ছুটি দিয়ে দিয়েছে। যখন পানি কমে যাবে তখন আবার চালু হবে।
স্কুল বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর সোলেমান গাজি ডাক্তার আদম আলীর সাথে যোগ দিয়েছে। বর্ষা মৌসুমে মানুষের রোগ-শোক বেশী হয়। সর্দি, কাশি, জ্বর, ডাইরিয়া লেগেই থাকে। এই গ্রামে কোন ডাক্তার নেই। সোলেমানের ইচ্ছা ডাক্তারীটা শিখে ফেলতে পারলে এই গ্রামে একটা চেম্বার খুলে বসবে। কিন্তু এখনো সে বিদ্যাটা পুরোপুরি আয়ত্ত্বে আনতে পারেনি। ডাক্তার আদম আলি লোকটা বেশি সুবিধার না। কিছুই শিখাতে চায় না। হয়তো সোলেমানকে নিয়ে তাঁর ভয়, যদি ডাক্তারি শিখার পর সে তাঁর নিজ গ্রামে দোকান খোলে বসে তাহলে অনেক রুগী কমে যাবে। সোলেমানও হাল ছাড়ছেনা। নানান কৌশলে আদম আলীকে ভুলানোর চেষ্টা করছে। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সে তাঁর সাথে সাথে থাকে। নিজে নৌকা বেয়ে রুগীদের বাড়ি বাড়ি যায়। ডাক্তার আদম আলীর একটাই ছেলে। নাম শফিক। যেমন শরিরের গড়ন তেমন রুপের বহর। তাঁর মত রুপবান ছেলে আশে পাশের সাত গ্রামেও একটা নাই। কিন্তু সমস্যা একটাই। ছেলেটার মাথায় সামান্য সমস্যা আছে। কয়েকদিন পর পর সে বাড়ি থেকে উধাও হয়ে যায়। তখন আদম আলীর সঙ্গে সুলেমানও ঘুরে ঘুরে তাকে খুঁজে।
আজও সোলেমান গাজি আদম আলী ডাক্তারের সঙ্গে শফিককে খুঁজতে বের হয়েছিল। খুঁজতে খুঁজতে সারাদিন পার হয়ে গেলেও শফিকের দেখা মেলেনি। সোলেমান বাড়ি ফিরে যাবার জন্য উসখুস করছে। কিন্তু ডাক্তারের মুখের উপর বলতেও পারছেনা। তাছাড়া ফিরতি পথে ডাক্তারকে বাড়িতে নিয়ে যেতে হবে। তাঁর মায়ের শরিরটা হঠাৎ করে খুব খারাপ হয়ে গেছে। তাঁর ছোট মেয়ে মরিয়মের শরিরটাও ভালনা। মনে হয় জ্বর-টর আসবে।
সোলেমানকে কিছু বলতে হলনা। ডাক্তার আদম আলী তাঁর অস্থিরতা ধরতে পারল। পাঞ্জাবীর হাতা গুটিয়ে সোলেমানের পিঠে হাত বুলাতে বুলাতে বলল
' তোমার কি মনে হয় সোলেমান, শফিক কই যাইত পারে?'
'আমার মনে অয় শফিক আগের মত গানের দলের লগেই আছে।'
আদম আলী দীর্ঘশ্বাষ ফেলল।
' শফিক আমার একমাত্র পোলা হেয় যদি এমুন করে কিছু ভাল্লাগে কও।'
'ভাইজান একটা কাম করেন। শফিকরে বিয়া করাই দেন। বিয়া অইলে এইসব পাগলামি বন্ধ অইব।'
আদম আলী হাসল। 'কি কওনা মিয়া। একজনের যন্ত্রনায় বাচিনা, বিয়া করাইয়া আরেক যন্ত্রনা ঘরে তুলব নাকি। বিয়ার পর দেহা যাইব বউ ফালাইয়া দেশ-বৈদেশ ঘুরতাছে। তহন জ্বালা আরো বাড়ব। চল, চল আইজ তাইলে যাই। যাওয়ার পথেতো তোমগো বাড়ি অইয়া যাইতে অইব। আসমানের অবস্থাও বেশী সুবিধার না।
ওরা ছই দেওয়া নৌকার পাটাতনে গিয়ে বসল। সাথে সাথেই অঝর ধারায় বর্ষণ শুরু হল। বৃষ্টির জন্য সামনের কিছুই দেখা যাচ্ছেনা। মাঝি নৌকাও চালাচ্ছে খুব ধীর গতিতে। পাঁচ মাইল পথ পাড়ি দিয়ে কখন বাড়ি ফিরবে সেই চিন্তায় সোলেমান অস্থির।
ওদিকে বাবার চিন্তায় সালমাও অস্থির হয়ে আছে। একটু পর পর জানালার পর্দা সরিয়ে বাহিরে তাকাচ্ছে। রাত অনেক হয়েছে, বাবা আসলে বাবার সাথে খাবে বলে সে খায়নি। বাহিরে প্রচণ্ড বৃষ্টি। বাতাসও আছে। ঝড় হবে মনে হয়। সালমার খুব ভয় লাগছে। কাদতে ইচ্ছা হচ্ছে। বাবার জন্য চিন্তা, ভয় আর পেটের ক্ষুদায় সালমা কেঁদে ফেলল। নিরবে নয়। সালমা শব্দ করে কাঁদছে। পাশের ঘর থেকে তাঁর দাদি চেচাচ্ছে। 'কি লো, তর অইছে কি? কান্দস ক্যা'
দাদি তাঁর অসুস্থ শরির নিয়ে উঠে আসতে পারছেনা। দাদি উঠে আসতে না পারলেও মরিয়ম ঘুম থেকে জেগে উঠেছে। অবাক হয়ে সালমার দিকে তাকিয়ে আছে। সে বুঝতে পারছেনা তাঁর বোন এভাবে বিলাপ করে কাঁদছে কেন!
(চলবে...।)
পর্ব-১ (ক) পড়ার জন্য ক্লিক করুন
বধুয়া উপন্যাসের প্রস্তাবনা-১ পড়ার জন্য ক্লিক করুন। প্রস্তাবনা অংশগুলো মূল উপন্যাসে থাকতেও পারে। নাও থাকতে পারে।
বধুয়া উপন্যাসের প্রস্তাবনা-২ পড়ার জন্য ক্লিক করুন। প্রস্তাবনা অংশগুলো মূল উপন্যাসে থাকতেও পারে। নাও থাকতে পারে।
২| ০৮ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ৮:০১
নাজিম-উদ-দৌলা বলেছেন: ভাল হচ্ছে লেখা।
©somewhere in net ltd.
১|
০৮ ই জুলাই, ২০১৩ দুপুর ১২:৪১
বটের ফল বলেছেন: ভালো লাগছে। চালিয়ে যান।+++++++++++++