![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
• ধুমপানের বদ অভ্যাসটা সামান্য আছে। ( ঈদে চাঁন্দে আর কি) •মানুষের সাথে মিশতে ভাল লাগে। তবে সবার সাথে না। যাদের মাথায় সামান্য পরিমান হলেও গিলু নামের বস্তুটি আছে তাদের সাথে। • গান শুনতে ভাল লাগে। প্রিয় শিল্পিঃ প্রিতম আহমেদ। কুমার বিশ্বজিৎ। চন্দনা মজুমদার। আইয়ুব বাচ্চু। প্রয়াত সন্জিব চৌধুরী। • বই পড়তে ভালবাসি। যে কোন বই। গল্প উপন্যাস কবিতা সব কিছু। রাতের বেলায় ঘুমোতে যাওয়ার আগে ভুতের গল্প পড়ে ভয় পেতে ভাল লাগে। •রাত জাগতে ভাল লাগে। দু চোখে প্রচণ্ড ঘুম এবং সীমাহিন ক্লান্তি নিয়েও মাঝে মাঝে সারা রাত জেগে থাকি।
".....বালিকার ভয়শীতল কোমল ক্ষুদ্র দুইটি হাত দুই হাতে তুলিয়া লইয়া বধুকে আপনার দিকে ধীরে আকর্ষণ করিল। শংকিত বালিকা কোন বাঁধা দিলনা। মানুষকে কাছে অনুভব করিবার জন্য সে তখন ব্যাকুল। অটল অন্ধকারের মধ্যে নিশ্বাসস্পন্দিত রমেশের বক্ষপটে আশ্রয় লাভ করিয়া সে আরাম বোধ করিল।
তখন তাহার লজ্জা করিবার সময় নহে।
রমেশের দুই বাহুর মধ্যে সে আপনি নিবিড় আগ্রহের সহিত আপনার স্থান করিয়া লইল!"
.....আবারো পড়ছি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর'র "নৌকাডুবি।" প্রথমবার পড়েছিলাম আমার বয়স যখন দশ! গৃহ-শিক্ষকের ট্রাংক থেকে চুরি করে!
আমার এবং আমার বড় বোনের শৈশব কেটেছে মোটা-মোটি বন্দী অবস্থায়। তীক্ষ্ণ পাহারা এবং কঠিন শাষনের জেলখানায় আমরা বন্দী ছিলাম। সেই জেলের জেলার ছিলেন গৃহ শিক্ষকেরা। বছরের বারো মাসই কোননা কোন গৃহ শিক্ষকের তত্বাবধানে আমরা থাকতাম। একমাত্র ঘুমের সময় ছাড়া তাদের হাত থেকে আমাদের রেহাই ছিলনা। পুকুরে গোসল করতে যাবে, স্যারের সাথে যাও। খাওয়ার সময়, স্যারের সাথে বসে খাও। বাড়ির অন্যান্য ছেলে-মেয়েরা যখন পুকুরে দল বেঁধে লাফা-লাফি, ঝাপা-ঝাপি করে গোছল করত। সাঁতরে মাঝ পুকুরে চলে যেত, আমি তখন অসহায়ের মত তাকিয়ে তাকিয়ে দেখতাম। আমাকে হাটু পানিতে নেমে মগ দিয়ে মাথায় পানি ঢেলে গৃহ-শিক্ষক গোসল করিয়ে দিত!
গৃহ শিক্ষকেরা যখন ছুটি নিয়ে এক-দুই দিনের জন্য তাদের বাড়িতে যেত, তখন আমাদের আনন্দ দেখে কে। সারাদিন ছুটা-ছুটি হৈ-চৈ করে বেড়াতাম। একদিন স্যার ছুটি নিয়ে তাদের বাড়ি বেড়াতে গেছে। বলে গেছে দুইদিন থাকবে।
স্যার ঘরে নাই। এরচে আনন্দময় ঘটনা আর কি হতে পারে। পড়ার টেবিলে বসে বসে ছবি আঁকলেও বলার কেউ নাই। আমি দুপুর বেলায় পড়ার ঘরে বসে আছি। হঠাৎ মনে হল দেখি স্যারের ট্রাংকে কি কি আছে। কারো অনুমতি ছাড়া তাঁর কিছু ধরা ঠিকনা যেনেও কৌতহলের কাছে পরাজিত হয়ে স্যারের ট্রাংক খুললাম। দেখি অন্যান্য জিনিষ পত্রের সাথে "নৌকাডুবি" নামের বইটা।
বইটা নিয়ে পড়া শুরু করলাম। কঠিন-কঠিন শব্দ! কিছু বুঝি, কিছু বুঝিনা। তবুও পড়ে যেতে লাগলাম। নৌকা কখন ডুবে, কয়টা ডুবে সেটা দেখার দরকার আছে।
স্যার দুইদিনের কথা বলে গেলেও পরেরদিন চলে আসল। আমি তখনো "নৌকাডুবি" পড়ছি। ধরা খেলাম হাতে-নাতে। স্যার হায়-হায় করে উঠল। এতটুকু ছেলে বড়দের বই পড়ছে...। এমন দৃশ্য দেখবে স্যার হয়তো কল্পনাও করেনি।
বলল "কতটুকু পড়ছস?"
আমি ভয়ে ভয়ে বললাম .....পৃষ্টা পর্যন্ত।
স্যার বলল "কিছু বুঝেছিস।"
আমি ফিস-ফিস করে বললাম "অল্প-অল্প বুঝছি।"
তারপর স্যার বইটা খুলে উপরে উল্লেখিত লাইনগুলোতে আন্ডার মার্ক করে বলল "এগুলোও বুঝছস?"
আমি মাথা নাড়লাম। "না বুঝিনি।"
স্যার স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলল!
আসলে সেদিন আমি স্যারের সাথে মিথ্যা বলেছিলাম। আমি আসলে এগুলো বুঝেছি।
©somewhere in net ltd.