![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
• ধুমপানের বদ অভ্যাসটা সামান্য আছে। ( ঈদে চাঁন্দে আর কি) •মানুষের সাথে মিশতে ভাল লাগে। তবে সবার সাথে না। যাদের মাথায় সামান্য পরিমান হলেও গিলু নামের বস্তুটি আছে তাদের সাথে। • গান শুনতে ভাল লাগে। প্রিয় শিল্পিঃ প্রিতম আহমেদ। কুমার বিশ্বজিৎ। চন্দনা মজুমদার। আইয়ুব বাচ্চু। প্রয়াত সন্জিব চৌধুরী। • বই পড়তে ভালবাসি। যে কোন বই। গল্প উপন্যাস কবিতা সব কিছু। রাতের বেলায় ঘুমোতে যাওয়ার আগে ভুতের গল্প পড়ে ভয় পেতে ভাল লাগে। •রাত জাগতে ভাল লাগে। দু চোখে প্রচণ্ড ঘুম এবং সীমাহিন ক্লান্তি নিয়েও মাঝে মাঝে সারা রাত জেগে থাকি।
রোদে পোড়া শহরে আজ হঠাৎ বৃষ্টি হয়েছে। তীব্র গরমে রাস্তার পিচগুলো যখন গলে গলে চারদিকে ছড়িয়ে পড়ছিল, ঠিক তখনি এক পশলা শীতল বৃষ্টি-ধারা এসে তাদেরকে থমকে যেতে বাধ্য করল।
ফুটপাতের আকাশে এলো-মেলো উড়তে থাকা ধুলোর মিছিলও থেমে গেছে। ব্যস্ত গাড়ীর পাল গতি কমিয়ে কচ্ছপে রুপান্তর হওয়ার প্রতিযোগীতায় নেমেছে। ওভার ব্রিজের নিচে আবু তাহেরের চায়ের দোকানে কাস্টমারের ঢল। ওপাড়ে একজোড়া কিশোর-কিশোরী বৃষ্টি থেকে মাথা বাঁচাতে রাস্তার পাশের রেইন্ট্রি গাছের নিচে আশ্রয় নিয়ে ক্ষণে-ক্ষণে আকাশের পানে তাকাচ্ছে। কিশোরের কাঁধে ঝুলানো ব্যাগ। কিশোরী দুহাতে বুকের সাথে স্কুলের বই চেপে ধরে রেখেছে। গায়ের উড়নায় বই ঢাকার বৃথা চেষ্টা করতে গিয়ে সে বিব্রত। কিশোর কিশোরীটির চোখের দিকে তাকিয়ে মনে-মনে বলল ‘আমি তোমাকে ভালবাসি।’ তখনি দমকা বাতাস এল। বৃষ্টির ছাট তাঁর চোখ,মুখ ভিজিয়ে দিল। সে চোখ বন্দ করে ‘ওহ শিটট’ বলে একটু সামনে সড়ে দাড়াল। কিশোরী চমকে উঠল। তাঁর চমকে যাওয়া মুখের দিকে তাকিয়ে কিশোর আবার মনে-মনে বলল ‘ভালবাসি’।
মনের কথা বুঝার ক্ষমতা সৃষ্টিকর্তা কাউকেই দেননি। যদি দিতেন তাহলে কিশোর শুনতে পারত কিশোরীটিও তাকে বলছে ‘আমি তোমাকে ভালবাসি’
রেইন্ট্রি গাছের পাতাগুলো এখন আর বৃষ্টির পানি আটকাতে পারছেনা। ওরা এখন কি করবে বুঝতে পারছেনা। এখানে দাড়িয়ে থেকে কোন লাভ হচ্ছেনা। তারচে বরং বৃষ্টি ভিজতে-ভিজতে বাসার দিকে এগিয়ে যাওয়া যেতে পারে। রাস্তার ওপাশ থেকে কেউ একজন তাদেরকে ডাকছে। দুজনেই সেদিকে তাকাল। আবু তাহের হাত ইশারায় ওদেরকে টিনের চালার নিচে চলে আসতে বলছে।
দুজনেই ছুটে গিয়ে টিনের চালের নিচে আশ্রয় নিল। তাহের বলল ‘চুলার পাশে আইসা খাড়ান। ভিজা জামা তারাতারি শুকাইব।’ তাঁরা চা জ্বাল দেওয়া চুলার পাশে এসে দাঁড়াল। আবু তাহের দুজনকে দু-কাপ চা দিল। কিশোরী চায়ের কাপে চুমুক দিতে সংকোচ বোধ করছে।
কিশোর চায়ের কাপে চুমুক দিতে গিয়ে থেমে গেল। আবু তাহেরেকে চায়ের কাপটা দেখিয়ে বলল ‘ভাঙা কাপে চা দিছ কেন মামা, ভাঙা কাপে চা খেলে কপাল ভাঙে জাননা?’
এই কথা শুনে কিশোরী খিল-খিল করে হেসে ফেলল। কিশোরীর হাসি মুখের দিকে তাকিয়ে কিশোরের আরো কয়েকটা পাগলামী করার সাধ জাগল। সে দু হাত উপরে তুলে বৃষ্টির মধ্যেই রাস্তায় নেমে পড়ল। রাস্তায় কোন গাড়ী চলছে না। কিশোর মাঝ রাস্তায় গিয়ে চেঁচিয়ে বলতে লাগল ‘আজ হরতাল। সব গাড়ী চলাচল বন্ধ। আজ বর্ষা উৎসব। আজ সবাইকে বৃষ্টি-স্নান করতে হবে।’
আবু তাহেরের দোকানে দাড়িয়ে থাকা মানুষজন এই ঘটনায় খুব মজা পাচ্ছে। কিশোরী অবাক হয়ে কিশোরের পাগলামী দেখছে। সে লজ্জায় মরে যাচ্ছে। একবার মাটির দিকে আরেকবার মাঝ রাস্তায় দুহাত উপরে তুলে দাড়িয়ে থাকা কিশোরের দিকে তাকাচ্ছে। যখনই সে কিশোরের দিকে তাকাচ্ছে তখনই মনে-মনে বলছে ‘আমি তোমাকে ভালবাসি’
কয়েক বছর পর।
আমাদের গল্পের সেই কিশোরীটি এখন যুবতী। আর কিশোরটা এখনো কিশোর। আজ যুবতীটির বিয়ে।
এই রাস্তায় বর যাত্রী কনে নিয়ে বিদায় হবে। কিশোর আগেই এসে রেইন্ট্রি গাছের আড়ালে দাঁড়িয়ে আছে। শেষ দেখা দেখবে বলে। রেইন্ট্রি গাছটির বার্ধক্য-কাল চলছে। গাছের ডাল-পালা-পাতায় স্পস্ট মৃত্যুর চিহ্ন। হঠাৎ বৃষ্টি শুরু হল। সেদিনের মত আবু তাহের আজও কিশোরকে ডেকে টিনের চালার ভিতরে নিয়ে গেল। হাতে এক কাপ চা ধরিয়ে দিয়ে বলল ‘আরাম করে খান বাপজান। এত ভাইঙা পইড়েন না।’
কিশোর চায়ের কাপে চুমুক দিতে গিয়ে থমকে গেল। ভাঙা কাপ! হঠাৎ বৃষ্টি তীব্র হল। এমন অঝর-ধারায় বর্ষণ গত কয়েক বছরেও কেউ দেখেনি।
কিশোরের দৃষ্টি রাস্তার দিকে। বৃষ্টির জন্য দুহাত সামনের কিছুই দেখা যাচ্ছেনা। এর মধ্যে যদি বর যাত্রীর বহর চলে যায় সে বুঝতেও পারবেনা। কিশোর হাতের চায়ের কাপ ছুড়ে ফেলে দিয়ে দুহাত উপরে তুলে রাস্তায় নেমে চিৎকার করতে শুরু করল। ‘আজ হরতাল। সব গাড়ী চলাচল বন্ধ। সব বন্ধ।’
সেইদিন থেকে কিশোর আর ঘরে ফিরেনি। রাস্তায়-রাস্তায় ঘুরে। হটাৎ-হঠাৎ সে শুনতে পায় কেউ একজন তাকে বলছে ‘আমি তোমাকে ভালবাসি’। তখনি সে দুহাত মাথার উপর তুলে চিৎকার করতে করতে রাস্তায় নেমে যায়। চেঁচিয়ে বলতে থাকে ‘আজ হরতাল। আজ সব গাড়ী চলাচল বন্ধ’।
(শাহজাহান আহমেদ)
২৩ শে এপ্রিল, ২০১৪ সকাল ৯:৪৫
শাহজাহান আহমেদ বলেছেন: আপনার সুন্দর মন্তব্যে অনুপ্রাণিত হলাম। ঠিকই বলেছেন শেষে এসে দ্রুত টেনে ফেলেছি।
২| ১৫ ই এপ্রিল, ২০১৪ দুপুর ১২:৩৭
দেশ প্রেমিক বাঙালী বলেছেন: সুন্দর
২৩ শে এপ্রিল, ২০১৪ সকাল ৯:৪৭
শাহজাহান আহমেদ বলেছেন: ধন্যবাদ
৩| ১৫ ই এপ্রিল, ২০১৪ দুপুর ১২:৫১
জমরাজ বলেছেন: ভাল লিখেছেন।
২৩ শে এপ্রিল, ২০১৪ সকাল ৯:৪৯
শাহজাহান আহমেদ বলেছেন: ধন্যবাদ।
৪| ১৫ ই এপ্রিল, ২০১৪ দুপুর ১:৫৯
লাইলী আরজুমান খানম লায়লা বলেছেন: শিরোনাম দেখে চমকে গিয়েছিলাম---------গল্পটা দারুন হয়েছে
২৩ শে এপ্রিল, ২০১৪ সকাল ৯:৫১
শাহজাহান আহমেদ বলেছেন: আপনাকে চমকে দেওয়ার জন্য আমি শরমিন্দা!
এবং প্রশংসা করার জন্য ধন্যবাদ।
©somewhere in net ltd.
১|
১৫ ই এপ্রিল, ২০১৪ সকাল ১০:১৪
জাহাঙ্গীর.আলম বলেছেন: দুটি অল্পবয়সী জীবনের স্বপ্নকে নিয়ে এসেছেন সুন্দর করে একটি মুহূর্তের মাঝে ৷ দৃশ্যকল্পে কিছুটা কাব্যিক ছোঁয়া দেখা যায় ৷ শেষে বাস্তবতার চরম প্রকাশ ৷
আজ বর্ষা উৎসব। আজ সবাইকে বৃষ্টি-স্নান করতে হবে। এ লাইনটি ভাল লাগল ৷
তবে শেষে এসে খানিকটা দ্রুত টেনেছেন ৷ আর একটু বর্ণনা যুক্ত হলে আরো সুন্দর করে ফুটে উঠতে পারত ৷ ঘটনা বর্ণনার সাথে আপনার কল্পনার রূপকল্পটি যোগ দিতে পারতেন ৷ পাঠকের দৃষ্টিকোণ থেকে মতামত মনে করবেন আশা করি ৷ ভাল থাকবেন ৷