![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
দাড়ি নিয়ে বাড়াবাড়ি
সং ঢং রকমারি।
ছন্দ বাদ দিয়ে কয়েকটি প্রশ্ন দিয়ে শুরু করছি-
মাথার নিচে বালিশ ত্যগ করে কেউ আপনাকে পায়ের নিচে বালিশ দিয়ে শুইতে বললে আপনি মেনে নিবেন কি?
আপনার সবচেয়ে প্রিয় ব্যক্তির সাথে শত্রুতা পোষণ করতে বললে রাজি হবেন কি?
যদি আপনাকে বলা হয় আপনার স্ত্রীর চুল ন্যড়া করে ফেলুন, আপনি তার মত লম্বা চুল রেখে খোপা বেঁধে চলাফেরা করুন। আপনি মানবেন?
উপরোক্ত একটা প্রশ্নও আপনি মেনে নেয়া তো দূরের কথা বরং প্রশ্ন কর্তাকে ধিক্কার দিবেন। কারন, আপনি জানেন এবং মানেন কোনটা স্বাভাবিক আর কোনটা অস্বাভাবিক। কোনটা সামাজিক আর কোনটা অসামাজিক।
কালের বিবর্তনে দাড়ি চাঁছার মত একটা অস্বাভাবিক আত্মঘাতী কালচার স্বাভাবিক ও সামাজিক করনীয় হিসেবে রুপ নিয়েছে। শুধু পুরুষদের দাড়ি না হয়ে মহিলাদেরও তো হতে পারত। যেহেতু আল্লাহর চাওয়া পুরুষ থাকবে শ্মশ্রুমণ্ডিত বা দাড়িযুক্ত আর নারী থাকবে দাড়ি মুক্ত। তাই বান্দা হিসেবে এটাই মেনে নেয়া বুদ্ধিমত্তার কাজ। সৃষ্টি একমাত্র সৃষ্টিকর্তারই ইচ্ছা। এখানে কারো হস্তক্ষেপ করার অধিকার নেই। সিংহের কেশর আছে সিংহির নেই, ময়ূরের পেখম আছে ময়ূরীর নেই, হরিণের সুন্দর সিং আছে হরিণীর নেই, পুরুষের দাড়ি আছে নারীর নেই। এভাবে প্রতিটি সৃষ্টির মধ্যেই রয়েছে ভিন্নতা। বিজ্ঞানও স্বীকার করে নিয়েছে মানুষ কোন বস্তু সৃষ্টি করতে পারে না রুপান্তর করেতে পারে। সিংহের কেশর যেমন সিংহির সাথে তুলনামুলক এক বিশেষত্ব বহন করে তেমনি পুরুষের দাড়িতেও রয়েছে বিশেষত্ব। দাড়ি মুসলমানের জাতীয় চিহ্ন বা Beard is the national symbol of Muslim. সৃষ্টির স্বাভাবিক সৌন্দর্যতা দিয়েই প্রভু সারা দুনিয়াকে সাজিয়েছেন এক অপরূপ সাজে। কারো সাধ্য নেই তা পরিবর্তন করে সৌন্দর্য বর্ধনের। দাড়ির অস্বাভাবিক দৈর্ঘ্যকে পরিপাটি করা যেতে পারে। যেমন আমরা নখ চুল কেটে পরিপাটি করে থাকি।
আল্লাহ তায়ালা নারী পুরুষকে গঠনগত ও বৈশিষ্ট্যগত ভিন্নতা দিয়ে সৃষ্টি করেছেন। সেই স্বাভাবিকতা মেনে বিরুদ্ধাচারন না করে চলাটাই তো কৃতজ্ঞ সৃষ্টির পরিচয়। পক্ষান্তরে আল্লাহর অকৃতজ্ঞ হওয়ার ভয়াবহতা মানুষের জ্ঞানের বাহিরে। অনেক জ্ঞানী গুনি রয়েছেন যাদের বেহুঁশির হুঁশ ফেরাতে উদাহরণগুলো।
উচ্চ শিক্ষিত অর্ধ শিক্ষিত আধুনিকতার দাবিদার, পশ্চিমাদের নব নব ফ্যশনের মোহে আকৃষ্ট ব্যক্তিরা, বিশেষ করে কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া মুসলিম সন্তানেরা দাড়ি নিয়ে এক উপহাস্য খেলায় মেতে উঠেছে। দাড়ি চেঁছে তো ইসলামী হুকুমের বিরোধিতা করছেই উপরন্তু বিভিন্ন সং ঢঙে, বিভিন্ন রকম ডিজাইনে দাড়ি কেটে দাড়ির সাথে উপহাস করছে প্রতিনিয়ত। অনেকে কাজটা করছে না জেনে, অনেকে করছে জেনে বুঝে, অনেকের দাড়ি রাখার ইচ্ছা আছে কিন্তু শয়তানের যুক্তির কাছে পরাজিত। এই তিন শ্রেণীর মানুষকেই আজকের লিখিত পুরো বিষয়টা আনুধাবন করার জন্য অনুরোধ করছি।
একটা ঘটনা, এক মরমি কবির লেখায় আকৃষ্ট হয়ে ইরান থেকে এক ব্যক্তি আসলো তাঁর সাথে দেখা করতে। এসে দেখতে পেল কবি তাঁর দাড়ি মুন্ডাচ্ছে। লোকটি কবির এ অবস্থা দেখে চিৎকার দিয়ে বলে উঠল আপনি একজন মরমি কবি হয়ে এ কি করছেন! কবি বলে উঠল কেন আমি তো কারো কলিজা মুন্ডাচ্ছি না। লোকটি বলল আপনি রসুল (সঃ) এর কলিজা মুন্ডাচ্ছেন। এতদ শ্রবণে কবি তৎক্ষণাৎ বেহুঁশ হয়ে গেল। কিছুক্ষণ পড়ে হুঁশ ফিরে আসলে এ কবিতা বলতে লাগল- তুমি আমাকে বাঁচালে ভাই, তুমি আমাকে পথ দেখালে। উল্লেখ্য, হাদিস শরীফে আছে হুজুর (সঃ) বলেছেন- যে ব্যক্তি দাড়িতে ক্ষুর লাগায় সে যেন আমার কলিজায় আঘাত করে। আরেকটা ছোট্ট গল্প- ঘটনা চক্রে একটা ইসলামী মানসিকতার মেয়েকে দাড়ি ওয়ালা একটা ছেলে প্রেমের প্রস্তাব দিল। মেয়েটা প্রস্তাবে রাজি হল তবে শর্ত হল আমাকে পেতে হলে দাড়ি চেঁছে আসতে হবে। ছেলেটাও প্রস্তাবে রাজি হয়ে পরদিন ক্লিন সেভ করে মেয়েটার সান্যিধ্যে গেল। কিন্তু কি আশ্চর্য মেয়েটা ছেলেটার চেহারার দিকে এক নজর তাকিয়েই মুখ ঘুরিয়ে নিল এবং হাঁটা শুরু করল। ছেলেটাও তাঁর পিছনে ছুটল ও চলে যাওয়ার কারন জানতে চাইল। মেয়েটা বলল আমাকে পাওয়ার জন্য তুমি নবীর ছুন্নতের সাথে এতবড় প্রতারণা করলে আমার সাথে প্রতারণা করতে তুমি মোটেও দিধা বোধ করবে না। সুতারং তোমার সাথে প্রেম করা আমার পক্ষে আদৌ সম্ভব না।
দাড়ি সংক্রান্ত বিভিন্ন কিতাব অধ্যায়ন করে জানা যায় পৃথিবীতে সকল নবীদের দাড়ি ছিল, সকল সাহাবীদের দাড়ি ছিল, সকল ইমামদের দাড়ি ছিল, এমনকি বর্তমান বিশ্বে সকল বুজুর্গ ও হক্কানি আলেমদের দাড়ি আছে।
দাড়ির পরিমাপঃ মাজহাবের চার ইমামই দাড়ির পরিমাপের ব্যপারে একমত। নিজ হাতের এক মুষ্টি পরিমাণ দাড়ি রাখা ওয়াজিব। দাড়ি ছেঁটে ছোট করে রাখাটা না রাখারই নামান্তর। দাড়ি রাখার নির্দেশ শুধু আলেমদের উপর নয় বরং সকল মুসলমানের জন্য সমান নির্দেশ।
দাড়ি চাঁছার অপকারিতাঃ ১) ত্বকের ক্ষতি করে, কোন কোন লোকের ত্বক অতিরিক্ত অত্যাচারের ফলে কিছুটা নীল বর্ণ ধারন করতে দেখা যায়। বার বার ক্ষুরের আঘাতে ত্বকের অনুভূতি শক্তি কমে যায়। চিমটি দিয়ে নিজেরটা নিজেই প্রমান করুন। ২) সময়ের অপচয় হয়, তাড়াতাড়ি অফিসে কিংবা কোন অনুষ্ঠানে যেতে দাড়ি চাঁছা একটা বাড়তি ঝামেলা। ৩) অর্থের অপচয়, যত বেশি অর্থশালীই হোক কেউ কি চায় অর্থ দিয়ে ক্ষতি কিনতে? বরং দাড়ি চাঁছার অর্থ ভালো কোন কাজে ব্যয় করুন। একটু চিন্তা করলে দেখা যায় দাড়ি চাঁছার অপচয় বাদ দিলে শুধু বাংলাদেশেই প্রতিমাসে কমপক্ষে হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় হয়। ৪) দাড়ি চাঁছার ফলে দৃষ্টি শক্তি কমে যায়। ৫) দাড়ি চাঁছা আল্লাহ ও রসুলের (সঃ) অসন্তোষটির কারন।
দাড়ি রাখার উপকারিতাঃ ১) উপরোক্ত ক্ষতির বিপরীতে উপকারিতা তো রয়েছেই এছাড়াও ২) দাড়ি রাখলে চেহারায় ব্রন ও অন্যান্য চর্ম রোগের প্রবণতা হ্রাস পায়। ৩) দাড়ি রাখলে অশ্লীল কাজে পা বাড়ানর প্রবণতা অনেকাংশে হ্রাস পায়। ৪) দাড়ি ওয়ালা চেহারাই দাড়ি চাঁছার চেয়ে সুদর্শন।
আত্মভোলা মুসলমান শুনে নিন, যখন কেয়ামতের কঠিন ভয়াবহতা শুরু হয়ে যাবে আর পিপাসায় মানুষগুলো ছটফট করতে থাকবে সেই কঠিন বিপদ মুহূর্তে একমাত্র মুহাম্মদ (সঃ) এর হাতে বিলানো হাউজে কাওসারের পানিই শুধু তৃষ্ণা মিটাতে পারবে। অন্য কোন উপায় থকবে না। কিন্তু দাড়ি চাঁছার মত অপরাধে অপরাধীরা পানি তো দূরের কথা নবীজির ধিক্কারের শিকার হবেন।
পুরো আলোচনার আলোকে প্রতীয়মান হল দাড়ি চাঁছা আধুনিকতা নয় বরং আত্মঘাত ও মূর্খতা এবং পরকালীন শাস্তির কাঠগড়ায় অবস্থান করা।
২০ শে মার্চ, ২০১৭ বিকাল ৪:১৯
শাহজালাল হাওলাদার বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই আপনাকেও
২| ৩০ শে জুলাই, ২০১৬ বিকাল ৪:৪০
ফিডেল বলেছেন: আফসোস!! মুসলমানের পরিচয় বহন করাই বিপদজনক আজকের দুনিয়ায়।
১৬ ই আগস্ট, ২০১৬ রাত ১০:২৮
শাহজালাল হাওলাদার বলেছেন: মানুষকে দাওয়াত দিতে থাকুন
©somewhere in net ltd.
১|
২২ শে জুন, ২০১৬ রাত ১১:৪৭
নাবিক সিনবাদ বলেছেন: ধন্যবাদ