নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার ভেতরের কারণগুলো জানতে এবং বিশ্লেষণ করতে চেষ্টা করি এবং সবার সাথে শেয়ার করতে পছন্দ করি। সামাজিক, রাজনৈতিক আর আন্তর্জাতিক বিষয়ে লেখালেখি করতে ভালো লাগে। তাই ব্লগে পদচারনা।
মেসি ও বার্সেলোনা শব্দ দুইটি যেন একে অপরের পরিপূরক। গত এক দশকে মেসি ছাড়া যেমন বার্সাকে চিন্তা করা যায় না তেমনি বার্সার জার্সি ছাড়া মেসিকে কল্পনা করা ভক্তদের কাছে এক প্রকার অসম্ভব হয়ে গেছে।
তবুও নেইমারের বার্সা ছেড়ে চলে যাওয়ার পর কেমন যেন মেসির সঙ্গীর অভাব অনুভব করছে সবাই, এদিকে দিবালা বা ডি-মারিয়া কাউকেই মেসির সঙ্গী হিসেবে বার্সায় আনতে পারেনাই ক্লাব কর্তৃপক্ষ। সুতরাং মেসি বার্সায় বড় একা হয়ে পড়েছেন। সুতরাং প্রশ্ন উঠছে সত্যিই বার্সার সাথে সব পাঠ চুকিয়ে ফেলবেন এই ফুটবল জাদুকর? অন্যদিকে দীর্ঘদিনের গুরু গারদিওলা মেসিকে খুব করে চাচ্ছেন নিজের ক্লাব ম্যানচেস্টারসিটিতে নিয়ে আসতে। শুধু টাকার জোড়ে মেসিকে পাওয়া যাবে না এটা সবাই জানে কিন্তু গুরু যখন তার ছাত্রকে নিজের দলে ডাকেন তখন সেই ডাক উপেক্ষা করা সহজ হয় না।
তারপরও দেখে নেই কেন এখনও মেসি বার্সাতে থাকতে পারেনঃ-
আনুগত্য ও ভালোবাসা
আর্জেন্টিনার রোজারিও শহরের ছোট্ট ক্লাব নিউ ওয়েলস ওল্ড বয়েজের হরমোনজনিত সমস্যায় ভোগা ফরোয়ার্ড আজকের লিও মেসিতে বদলে দিয়েছে বার্সেলোনা। চিকিৎসা করিয়েছে, খেলোয়াড়ি বৃত্তিতে সুযোগ করে দিয়েছে বিশ্বের অন্যতম সেরা একাডেমিতে অনুশীলন করার। মেসিও দুহাত ভরে উপহার দিয়েছেন প্রিয় ক্লাবকে। ২০০৮-০৯ মৌসুম থেকে এখন পর্যন্ত ২২টি শিরোপা জিতেছে কাতালান ক্লাবটি, এর বড় অবদান মেসির। যদিও ইউরোপীয় ফুটবলে ক্লাব-আনুগত্যের সংস্কৃতি হারিয়েছে গেছে অনেক আগেই। তবে খেলোয়াড়টি মেসি বলেই ভাবতে হচ্ছে বারবার। এই দীর্ঘ সময়ে হাজারো প্রলোভনেও বার্সা ছাড়েননি তিনি।
প্রমাণের তাগিদ
নিন্দুকেরা আবারও গুঞ্জন তুলেছেন, শেষ সীমায় এসে পড়েছেন মেসি। আগের মতো ধার নেই বুটে। ওদিকে প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী রোনালদো রীতিমতো গোল উৎসবে মেতে আছেন। সমালোচকদের জবাব দেওয়ার কাজটা ভালোই পারেন আর্জেন্টিনা অধিনায়ক। ক্যারিয়ারে আরও একবার যদি প্রমাণ করতে হয় তিনিই সেরা, তবে সেটা লা লিগায় দিলেই ভালো। এখানেই তো রোনালদোর সঙ্গে সরাসরি পাল্লা দেওয়ার সুযোগ। রিয়াল মাদ্রিদ যখন তাদের সবচেয়ে সুসময় পার করছে, বার্সার হয়ে এরই পাল্টা জবাব দেওয়ার তাগিদ মেসির মনে তৈরি তো হবেই।
ভাবনায় জাতীয় দল
পিএসজিতে গিয়ে ব্রাজিল দল গুছিয়ে নেবেন নেইমার—এমনটাই ভাবছেন বিশেষজ্ঞরা। একটু বদলে নিয়ে একই কৌশল নিতে পারেন মেসিও। স্কোয়াডের গভীরতা বাড়াতে খেলোয়াড় কিনেই চলেছে বার্সা। অ্যাঙ্গেল ডি মারিয়া কিংবা পাওলো দিবালারা ওপর বার্সার চোখ আছে বলে কাতালান সংবাদমাধ্যমের ধারণা। বিশেষ করে দিবালাকে মেসি নিজে প্রলুব্ধ করতে পারেন বার্সায় আসার জন্য। আশপাশে জাতীয় দলের কয়েকজন সতীর্থ পেলে মেসির জন্যও ভালো হয়। যদিও বার্সার পুনর্গঠন-প্রক্রিয়ায় এই মৌসুমে আর দিবালার আসার সম্ভাবনা নেই। আর ডি মারিয়াকে পিএসজি বার্সায় যেতে দেবেও বলে মনে হয় না। যদি এখনো বাজারে গুজব, ডি মারিয়াকে কাতালুনিয়ায় আনার চেষ্টা করছেন প্রেসিডেন্ট জোসেপ মারিয়া বার্তেমিউ।
বার্সা-দর্শনের শেষ সৈনিক
২০০৮-০৯ মৌসুমে পেপ গার্দিওলার বার্সেলোনা অংশ নিয়েছিল ৬টি প্রতিযোগিতায়, জিতেছিল ছয়টিই। সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছিল ‘টিকি-টাকা’র সুবাস। স্পেন জাতীয় দলের হয়েও ইউরোপ আর বিশ্ব জয় করে নিল টিকি-টাকা। বার্সার সেই দলের বেশির ভাগ খেলোয়াড়ই ছিলেন ‘লা মাসিয়া’, অর্থাৎ একাডেমির খেলোয়াড়। গার্দিওলা নিজেই বলেছিলেন, সেই দলটিকে টিকি-টাকা শেখাতে হয়নি। সেটি তাদের ডিএনএতেই ছিল।
এখন পরিস্থিতি ভিন্ন। একাডেমির পরিবর্তে বার্সায় এখন কেনা খেলোয়াড়দের আধিপত্য। নতুন খেলোয়াড় এলে দলের খেলার ধরনেও প্রভাব পড়ে। অস্তাচলে চলে যাওয়া আন্দ্রেস ইনিয়েস্তা ছাড়া বার্সার দর্শনের শেষ সৈনিক হিসেবে মেসিই আছেন। তাঁর থাকা তাই জরুরি।
অসম্ভবের চ্যালেঞ্জ
জিদানের রিয়াল সদর্পে তাদের শ্রেষ্ঠত্ব ঘোষণা করেছে। একঝাঁক প্রতিভাবান একাডেমি খেলোয়াড়, সঙ্গে বড় তারকা—পরপর দুই মৌসুম চ্যাম্পিয়নস লিগ জিতেছেন ‘জিজু’। বার্সার সেরা সময়টা এখন রিয়ালের পোষ মেনেছে। রিয়ালের এই আধিপত্য ভাঙতে হলে মেসির বিকল্প নেই। বার্সা নতুন করে সংসার গোছাচ্ছে। এই সময়ে মেসির ক্লাব ছাড়ার প্রশ্নই ওঠে না।
(কার্তেসিঃ খেলার পাতা, প্রথম আলো)
©somewhere in net ltd.