নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার ভেতরের কারণগুলো জানতে এবং বিশ্লেষণ করতে চেষ্টা করি এবং সবার সাথে শেয়ার করতে পছন্দ করি। সামাজিক, রাজনৈতিক আর আন্তর্জাতিক বিষয়ে লেখালেখি করতে ভালো লাগে। তাই ব্লগে পদচারনা।
মিসরের মুসলিম ব্রাদারহুডের সাবেক সর্বোচ্চ নেতা (মুর্শিদে আ’ম) মুহাম্মদ মাহদি আকিফের মৃত্যুর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই সরকারি নির্দেশে দ্রুততার সাথে তার দাফন সম্পন্ন করতে বাধ্য হয়েছে তার পরিবার। একান্ত ঘনিষ্ঠ পারিবারিক সদস্য ছাড়া আর কাউকেই সেখানে উপস্থিত থাকার অনুমতি দেয়নি দেশটির সামরিক সরকার। তার মেয়ে পিতার মৃত্যু সম্পর্কে বলেন ‘আমার আব্বা আল্লাহর হেফাজতে রয়েছেন। আমরা সবাই আল্লাহর কাছ থেকে এসেছি এবং সবাইকে তার কাছেই ফিরে যেতে হবে।’ জীবিত অবস্থায় এই নেতা সামরিক শাসকদের যতটা তটস্থ রেখেছিলেন, মৃত্যুর পর যেন সেটি আরো বেড়ে যায়। জীবিত আকিফের মতোই যেন তার লাশকেও ভয় করছে মিশরের সিসি সরকার।
৮৮ বছর আগে এই সেপ্টেম্বর মাসেই লিবিয়ার ঔপনিবেশিকতা বিরোধী নেতা ওমর আল মুখতারের সাথে একই ধরনের আচরণ করেছিল দখলদার ইতালির বাহিনী। ১৯৩১ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর আল মুখতারের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করে ঔপনিবেশিক শাসকেরা। মনে করা হয় তার রক্তই শেষ পর্যন্ত লিবিয়ার স্বাধীনতার পথ উন্মুক্ত করেছিল। এই মজলুম বিদ্রোহী নেতার মৃত্যুর কারণেই বিদেশী শাসকেরা কখনো লিবীয় জনতার মনে স্থান পায়নি। ফলে তাদের বিদায় নিতে হয়েছে দেশটি থেকে। ৭৩ বয়সী আল মুখতারকে আটকের পর গোপনে বিচারকার্য করে ইতালি। এমনকি তার জানাজা ও দাফনও হয়েছে অত্যন্ত গোপনে ও সেনা পাহারায়। এ ক্ষোভই শেষ পর্যন্ত ইতালির শাসনের কবর রচনা করেছিল আফ্রিকার মুসলিম অধ্যুষিত দেশটিতে। ওমর আল মুখতার সম্পর্কে জানতে আমার আগের পোষ্টটি দেখতে পারেন, মরু সিংহ "ওমর আল মুখতার" এক মুসলিম বীরের জীবনী।
মিসরের জন্যও মাহদি আকিফ তেমন কোনো নজির হয়ে দেখা দেবেন কি না সেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
৮৯ বছর বয়সে মৃত্যুবরণকারী এই নেতা ছিলেন দেশটির অন্যতম জনপ্রিয় ব্যক্তিত্ব। মুসলিম ব্রাদারহুডের সপ্তম মুর্শিদে আ’ম মাহদি আকিফ দেশটির পার্লামেন্টের সদস্যও ছিলেন। ২০০৪ সালে তার নেতৃত্বে ব্যাপক সংস্কার কার্যক্রম নিয়ে অগ্রসর হয় ব্রাদারহুড। পরের বছর নির্বাচনে ব্যাপক সাফল্য পায় দলটি, যা ছিল ২০১১ সালের বিপ্লবের আগে সর্বোচ্চ। ২০০৯ সালে জর্দানভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান রয়্যাল ইসলামিক সেন্টার ফর স্ট্রাটেজিক স্টাডিজের জরিপে বিশ্বের প্রভাবশালী মুসলিম নেতাদের মধ্যে ১২তম স্থান লাভ করেন আকিফ। বিশ্বব্যাপী ইসলামি নেতাদের কাছে ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতা ছিল তার। ২০১০ সালে স্বেচ্ছায় ব্রাদারহুডের পদ থেকে সরে দাঁড়ান এই নেতা। ২০১৩ সালে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত মিসরের প্রথম প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসি সেনাবাহিনী কর্তৃক ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর আরো অসংখ্য নেতাকর্মীর সাথে গ্রেফতার করা হয় এই প্রবীণ নেতাকেও।
তার পরিবার জানিয়েছে, গত বছর তার শরীরে ক্যান্সার ধরা পড়ার পরও চিকিৎসার যথাযথ ব্যবস্থা না করে তাকে নির্জন কারাবাসে রেখেছিল সামরিক সরকার। রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ২৫ বছরের জেলও দেয়া হয়েছিল তাকে। বৃদ্ধ ও অসুস্থ এই নেতাকে চার বছর অমানবিক অবস্থায় কারান্তরীন করার ঘটনায় কোনো পশ্চিমা সরকার বিন্দুমাত্র প্রতিবাদ কিংবা তার মুক্তির অনুরোধ করেনি। এ নীরবতার সুযোগেই তার বিরুদ্ধে আনীত সব অভিযোগ সত্য বলে প্রতিষ্ঠিত করেছে প্রশ্নবিদ্ধ মিসরীয় আদালত। এর ফলে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তাকে কাটাতে হয়েছে কারাবন্দীর জীবন।
জীবিত ও মৃত আকিফের সাথে সিসির সামরিক সরকার যে আচরণ করেছে, তা থেকেই বোঝা যায় নির্দিষ্ট নীতির ওপর অটল থাকা লোকদের বিষয়ে তারা কতটা আতঙ্কিত। তার বিষয় কিংবা পুরো মিসরজুড়েই সামরিক শাসকেরা যে নির্যাতন-নিপীড়ন চালিয়েছে, সে বিষয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ছিল পুরোপুরি নীরব। যদিও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ সম্প্রতি মিসরীয় কর্তৃপক্ষের নিপীড়নের বিষয়ে একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। এ রিপোর্টে বিষয়টিকে বিদ্বেষমূলক ও মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ হিসেবে সাব্যস্ত করা হয়েছে।
(তথ্য সুত্রঃ নয়াদিগন্ত)
২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৭ রাত ১০:১৬
আল-শাহ্রিয়ার বলেছেন: ভাই বিশ্বের একমাত্র ভালো রাষ্ট্র হল অ্যামেরিকা আর তাদের প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সব থেকে ভালো মানুষ!!
২| ২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৭ রাত ১০:৩৩
ওমেরা বলেছেন: আল্লাহ উনাকে জান্নাত নসীব করুন ।
২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৭ রাত ১০:৫২
আল-শাহ্রিয়ার বলেছেন: আমিন।
৩| ২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৭ রাত ১:৩৮
স্বল্প বাঁধন বলেছেন: সবই ভিসা পাওয়ার ধান্দা। কেউ যদি দিয়ে দেয়! লাইফ স্যাটেল! ইউরোপ/আমেরিকার বিপক্ষে বললে এই আজব মার্কা পাবলিকগুলোর সবখানে চুলকায়।
২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৭ সকাল ১০:২৯
আল-শাহ্রিয়ার বলেছেন: সহমত।
©somewhere in net ltd.
১| ২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৭ রাত ১০:১৩
চাঁদগাজী বলেছেন:
মিশরের মানুষ এখনো রাজতন্ত্রে বিশ্বাসী; ব্রাদারহুড সুযোগ পেলে রাজতন্ত্রই চালাতো, ওরা সেনাবাহিনীর মতোই, মুদ্রার এপিঠ ওপিঠ