![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমাদের পরিচিত চারপাশ হঠাৎ করেই খুব অপরিচিত লাগতে শুরু করে যখন আমরা নির্বাক হয়ে যাই, ডুবে যাই অতল রহস্যের গহ্বরে । যে পরিচিত বাতাস আমার শরীরে অশরীরি আদর বুলিয়ে যায়, যে রোদ আমার বহু পরিচিত শরীরে রক্তের স্পন্দন গুনতে পারে, যে পরিচিত পৃথীবি আমাকে বুকে করে লালন করে সেই সবই যেন হঠাৎ করেই অচেনা লাগতে শুরু করে । নিজেকে বড়ই অসহায় লাগতে শুরু করে এই অমিমাংসিত রহস্যের বেড়জালে জড়িয়ে যেতে দেখে । আমি ভাষা বুঝিনা বলে জানিনা এসব কিছু কী সংকেত আমার কানে কানে এসে বলে যায় । মানুষের ইতিহাসে পাশাপাশি জ্বল জ্বল করতে থাকে জ্ঞান এবং অজ্ঞানের স্বাক্ষর । কেউ কেউ জানে বলেই বাকীরা সব নির্বোধ । এই নির্বুদ্ধিতা মাঝে মাঝে মহাবিশ্বের সব রহস্যকেও ছাপিয়ে যায় । আশার কথা হলো, কেউ কেউ এই রহস্যজালের অদৃশ্য তন্তু ছিঁড়ে মিথ্যে মুখশের আবডালে সত্যকে বীরদর্পে বের করে আনে আর আমার মত মূর্খরা নিজেদের অজ্ঞেয়তা উপলব্ধি করে এর অমৃত সাদৃশ্য রসটুকু চেটেপুটে খেয়ে জ্ঞানের মিথ্যে অহংকারের বহ্নিশিখায় সূর্যকেও ভস্মিভূত করি ।
যাহোক, ১১৭৫ খ্রীষ্টাব্দে লিওনার্দো ফিবোনাচি আবিষ্কার করলেন এক আনইউজুয়াল সিকোয়েন্স অব নাম্বারস । ২৩৩-কে যদি ১৪৪ দিয়ে ভাগ করা হয় তাহলে আপনি যা পান তার নাম হল থেটা । এই থেটা হল গোল্ডেন রেশিও বা গোল্ডেন স্পাইরাল-এর গ্রিক সিম্বল যা প্রমান করে মাহাবিশ্বের কোনকিছুই গণিতের উর্ধ্বে না । এই মহাবিশ্বের সবকিছুই একটা সুবিন্যস্ত সিকোয়েন্স মেনে চলে তাই আমাদের আশপাশের সবকিছুই গণিতের মাধ্যমে ব্যাখ্যা করা সম্ভব । এই গোল্ডেন রেশিও-কে জিওম্যাট্রি-তে উপস্থাপন করা হয় গোল্ডেন রেক্ট্যাংগেল-এর মাধ্যমে । পরে ১৫০৯ খ্রীষ্টাব্দে লিওনার্দো দ্যা ভিঞ্চি পুনরাবিষ্কার করেন তার মাস্টার পিস ‘De Divina Proportione’ –এর মাধ্যমে । পিথাগোরাস (৫৭০-৪৯৫ খ্রীষ্টপূর্বাব্দ) এই শেইপ খুঁজে পেয়েছিলেন সবকিছুতেই । শামুক-ঝিনুক, ভেড়ার শিং, ঝড়-বাতাস-জলোচ্ছ্বাস, ফিংগার প্রিন্ট, ডিএনএ এমনকি মিল্কিওয়ে-তেও গোল্ডেন স্পাইরাল-এর সিকোয়েন্স দেখা যায় । অর্থাৎ প্রকৃতির সবকিছুই একটা গাণিতিক সিকোয়েন্স ফলো করে । গ্রিসের ইউক্লিড, ইতালিয়ান ম্যাথমেটিশিয়ান লিওনার্ডো অভ পিসা, রেনেসাঁ এ্যাস্ট্রোনমার জোহান্স কেপলার প্রমুখ মহান ব্যাক্তিবর্গ তাঁদের মহামূল্যবান জিবনের বিশাল একটা অংশ ব্যয় করেছেন এই গোল্ডেন রেশিও-র রহস্যাবৃত ভুবনে । এই আশ্চর্যমন্ডিত রেশিও শুধু গনিতেই সীমাবদ্ধ না, বায়োলজিস্ট, আর্টিস্ট, মিউজিশিয়ান, হিস্টোরিয়ান, আর্কিটেক্ট, সাইকোলজিস্ট সবাই এর অপরিমেয় সৌন্দর্য্যে বুঁদ হয়ে আছেন । এরকম ধরনা করা হয় যে, গোল্ডেন রেশিও-র আবেদন যতখনি আন্দোলিত করেছে আর কোন সংখ্যা-ই এটা পারেনি ।
প্রায় ১০০০০ খ্রীষ্টপূর্বাব্দে হিব্রু ভাষাভাষিরা উপলব্ধি করেছিলেন, এই মহাবিশ্বের আছে একটা সুবিন্যস্ত বিন্যাস । হিব্রু ভাষায় ২২টা অক্ষর আছে যার প্রত্যেকটা-ই ১টা করে নাম্বার রিপ্রেজেন্ট করে । এই নাম্বারগুলোর আবার আছে আলাদা আলাদা ভ্যাল্যু । তাদের মতে, এই মহাবিশ্ব এ্যালফাবেটিক অর্ডারে গঠিত কারন হিব্রু অক্ষরের আছে নাম্বার ভ্যাল্যু । এটা ন্যুমেরোলজিস্ট-দের থেকে কিছুটা আলাদা । এই তত্ত্বটাকে বলা হয় থিওমেটিক্স । একটু সহজভাবে ব্যাখ্যা করলে উদাহরণ টানতে হয় ।
হিব্রু, Aleph = এক , Bet = দুই
হিব্রু ভাষায় ‘বাবা’ হল ‘আব’ (AB) অর্থাৎ (Bet+Aleph) = (২+১) = ৩
Mem = ৪০
হিব্রু ভাষায় ‘মা’ হল ‘এইম’ (Haim) অর্থাৎ (Mem+Aleph) = (৪০+১) = ৪১
তার অর্থ হল, (বাবা+মা) = (৩+৪১) = ৪৪
হিব্রু, Daleth = ৪, Lamed = ৩০, Yod = ১০
হিব্রু ভাষায় সন্তান হল ‘ইয়ালিড’ (Yeled) অর্থাৎ (Daleth+ Lamed+ Yod) = (৪+৩০+১০) = ৪৪
উল্টো করে লেখা হল কারন হিব্রু ভাষা ডানদিক থেকে পড়া হয় ।
বাবা-মা মিলিয়ে সন্তান হয় তাই সমীকরণটা এরকম । আরও ১টা উদাহরণ দেয়া যাক ।
হিব্রু ভাষায় ‘গড’ হল ‘এ্যাডনয়’ (Adonai) যার বানান হল (Yod+ Nun+ Daleth+ Aleph) = (১০+৫০+৪+১) = ৬৫
Yod = 10, Nun = 50, Daleth = 4, Aleph = 1
মজার ব্যাপার হল, হিব্রু ভাষায় 65 Value আছে এরকম word-গুলো Interrelated ।
যেমন, Hekel মানে Temple
Hekel-এর বানান হল (Lamed+Kaph+Yod+Heh) = (৩০+২০+১০+৫) = ৬৫
এখানে, Lamed = 30, Kaph = 20, Yod = 10, Heh = 5
আবার, Has মানে Silence
Has-এর বানান হল (Samekh+Heh) = (৬০+৫) = ৬৫
এখানে, Heh = 5, Samekh = 60
এখন প্রশ্ন হল, এদের মধ্যে কি রিলেশন আছে? একটু চিন্তা করলেই দেখা যায় এই তিনটা Word মিলিয়ে একটা অন্ত্রর্নিহিত অর্থ জ্ঞাপন করছে । আপাতদৃষ্টিতে মনে হচ্ছে “SILENCE is required in the TEMPLE of GOD” । আরেকটু গভীরভাবে চিন্তা করলে, “SILENCE is the TEMPLE of GOD” অর্থাৎ “যে নিস্তব্ধতার ভাষা বোঝে সে GOD-এর ভাষা বোঝে” বা “যে নিস্তব্ধতার ভাষা বোঝে GOD তার সাথে কথা বলেন” ।
কারো কারো মতে, এগুলো হচ্ছে ‘কোড অব ক্রিয়েইশন’ বা ‘কোড অব নেচার’ । এই কোডগুলোর রহস্য উদ্ঘাটন করতে পারলে মহাবিশ্বের সকল রহস্যই উন্মোচন করা সম্ভব ।
©somewhere in net ltd.