নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

অন্যদের সেভাবেই দেখি, নিজেকে যেভাবে দেখতে চাই। যারা জীবনকে উপভোগ করতে চান, আমি তাঁদের একজন। সহজ-সরল চিন্তা-ভাবনা করার চেষ্টা করি। আর, খুব ভালো আইডিয়া দিতে পারি।

সত্যপথিক শাইয়্যান

আমি লেখালিখি করি, মনের মাধুরী মিশিয়ে

সত্যপথিক শাইয়্যান › বিস্তারিত পোস্টঃ

ধর্ষণের ইতিহাস এবং বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এই অপকর্মের শাস্তি

০২ রা জুলাই, ২০২৪ রাত ২:৩২

রোজকার মত সখীদের নিয়ে ফুল কুড়াতে বেড়িয়েছিলেন ইঊরোপা। সেদিন আর রক্ষে হলো না। সাদা ষাঁড় বেশি দেবতা জিউস তাকে তুলে নিলেন নিজ কাঁধে। পালিয়ে গেলেন ক্রিট নামক এক দ্বীপে। পথিমধ্যে অথবা সেই দ্বীপে করা হলো ইউরোপার সম্ভ্রমহানি।

শুধু পৃথিবী'র সুন্দরী নারীরা গ্রীক দেবতাদের দ্বারা নির্যাতিত হোননি, সুন্দর নরেরাও রক্ষা পাননি। কিশোর গেনিমিডের কথাই ধরুন না। গ্রীক রুপকথায় কথিত আছে, মানব ইতিহাসের সবচেয়ে সুন্দর ছিলো এই ছেলেটি। এই গেনিমিডকেই বাজ পাখী বেশে ছোঁ মেরে নিজ রাজ্যে নিয়ে গিয়েছিলেন দেবতা জিউস, করেছিলেন অবাধ যৌনাচার, অন্য অর্থে ধর্ষণ!

রোমান মিথোলোজিতেও ধর্ষণের ঘটনা খুজে পাওয়া যায়। রোমের প্রতিষ্ঠাতা রমিউলাস ও তার সঙ্গীদের যখন ঘর-সংসার করার ইচ্ছে জেগেছিলো, তখন তারা পাশের গোত্র সেবাইনদের কাছে প্রস্তাব পাঠালো তাদের মেয়েদের বিয়ে করার। সেবাইনরা এতে রাজি না হওয়ায় রমিউলাস এক অভিনব বুদ্ধি বের করলো। একদিন ঘটা করে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে সেবাইনদের মেয়ে-ছেলে সবাইকে দাওয়াত করে তারা। সেবাইনরা তাতে যোগদান করলে, ধূর্ত রমিউলাসের ইঙ্গিতে মওকা বুঝে তার সঙ্গীরা অতিথী মেয়েদের উপর ঝাপিয়ে পড়ে। খুন করে ছেলেদের।

প্রাচীন এই ঘটনাগুলোকে অনুসরণ করেই কি না কে জানে শুধু বাংলাদেশে নয়, প্রতিবেশী দেশ ভারতেও ধর্ষণ দিন দিন বেড়ে চলেছে। ২০০৮ সাল থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত এই ছয় বছরে ভারতে শিশু নির্যাতনের ঘটনা ৪০০ শতাংশ বেড়েছে বলে খবরে প্রকাশ পেয়েছে। পশ্চিমা কোন কোন দেশের অবস্থা আরো ভয়াবহ। ২০১৪ সালে European Union Agency for Fundamental Rights-এর একটি জরিপে দেখা গেছে, ফিনল্যান্ড ৪৭% নারী জীবনের কোন না কোন সময় শারীরিক ও যৌন নির্যাতনের স্বীকার হয়েছেন। ডেনমার্কের অবস্থা খুবই ভয়াবহ। সে দেশের নারীদের ৫২ ভাগই এরকম অত্যাচারের সম্মুখীন হয়েছেন বলে স্বীকার করেছেন। দ্যা হাফিংটন পোস্টের একটি রিপোর্ট থেকে জানা গেছে, কানাডাতে প্রতি বছর ৪,৬০,০০০ নারী যৌন নির্যাতনের স্বীকার হোন।



অস্ট্রেলিয়ার অবস্থাও ভায়াবহ। যেখানে পুরো বিশ্বে প্রতি ১৪ জনের মাঝে একজন নারী ধর্ষণের স্বীকার হয়ে থাকেন, সেখানে অস্ট্রেলিয়াতে ২০১৪ সালে প্রতি ৬ জন মহিলার মাঝে ১ জন এমন নির্যাতনের সম্মুখীন হয়েছেন। নিউজিল্যান্ডের নারীরাও ভালো অবস্থায় নেই। সেখানেও এরকম ভয়াবহ অপরাধ ঘটে সারা বিশ্বের গড়ের চেয়ে বেশি।



আফ্রিকা মহাদেশও এমন অনাচারের ক্ষেত্রে পিছিয়ে নেই। এই মহাদেশে যৌন নির্যাতনের ঘটনা ঘটে, তার মাঝে সবার চেয়ে এগিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা। ২০১০ সালের একটি গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতি ১ লক্ষের মাঝে ১৩২.৪ জনই এরকম নির্যাতনের স্বীকার হোন সেই দেশে।




সারা বিশ্বেই যখন এরকম ভয়াবহ অবস্থা, তখন জেনে নেওয়া যাক, কোন দেশে কি ধরণের শাস্তির সম্মুখীন হচ্ছে ধর্ষকরা।

ভারতঃ ২০১৩ সালের এপ্রিল মাসে ভারতে ধর্ষণবিরোধী একটি বিল পাশ হয় যাতে অপরাধীকে তিন ধরনের শাস্তির বিধান রাখা হয়। সেগুলো হচ্ছে- ১৪ বছরের জেল, যাবজ্জীবন কারাদন্ড এবং কিছু কিছু ক্ষেত্রে মৃত্যুদণ্ড।



ফ্রান্সঃ পশ্চিমা এদেশে যৌন নির্যাতনের শাস্তি ১৫-৩০ বছর পর্যন্ত।



চীনঃ এদেশে ধর্ষণের শাস্তি মৃত্যুদণ্ড ও খোজা করে দেওয়া।



সৌদি আরবঃ একদিনের মাঝে কতল করা হয় এমন অপরাধীদের।



উত্তর কোরিয়াঃ ফায়ারিং স্কোয়াডে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয় ধর্ষণের শাস্তি হিসেবে।



আফঘানিস্তানঃ অভিযোগের ৪ দিনের মাঝে হয় মাথায় গুলি করে অথবা ফাঁসিতে ঝুলিয়ে ধর্ষকের মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়।



আমেরিকাঃ এই দেশে ধর্ষকদের শাস্তি হিসেবে যাবজ্জীবন ও বিভিন্ন মেয়াদে কারদন্ডে দন্ডিত করা হয়।



রাশিয়াঃ ক্যাথলিক খ্রিস্টান অধ্যুষিত এদেশে ধর্ষকদের শাস্তি অপরাধের মাত্রা বুঝে ৩ - ২০ বছর পর্যন্ত।


কিছু আশার আলোঃ

পৃথিবীর আর সকল দেশ থেকে যে ভূমিটি একদমই আলাদা সেটি হচ্ছে Liechtenstein। ২০২০ সাল পর্যন্ত সাড়ে ৩৭ হাজার জনসংখ্যা বিশিষ্ট এদেশে একটিও ধর্ষণ হয়নি!

ছবি: Liechtenstein-এর রাজপুত্র

আর, মিশরে প্রতি ১০ লক্ষে ১-জন ধর্ষনের স্বীকার হোন। আজারবাইজান ও আর্মেনিয়াতে প্রতি লক্ষে ধর্ষণের স্বীকার হোন মাত্র ০.২ এবং ০.৪ জন!

কি এমন আইন আছে শেষোক্ত এ চার দেশে! নাকি, বলবো এদেশগুলোর মানুষগুলো অন্য ধাতুতে গড়া! সে যে ধাতুতেই গড়া হোন না কেন, এইসব দেশের নারীরা বাংলাদেশের চেয়ে ভালো আছেন তা আর বলতে হয় না।


একটি প্রতিবাদঃ

দেশে দেশে ধর্ষণের ঘটনার প্রতিবাদে সাধারণ মানুষ রাস্তায় নেমে এসেছেন। বাংলাদেশও এর ব্যতিক্রম নয়। আমাদের দেশেরই কিছু নাগরিক একত্রিত হয়ে ধর্ষণের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবীতে এই পিটিশনে সাইন করেছেন- Death Sentence as a punishment to a rapist in Bangladesh

এই পিটিশনে স্বাক্ষরকারীদের সংখ্যা দিনকে দিন বেড়েই চলেছে।

তথ্যসূত্রঃ

১) হাফিংটন পোস্টঃ Click This Link
২) নিউজ ডট কমঃ Click This Link
৩) ওয়ান্ডার লিস্টঃ Click This Link
৪) ন্যাশন মাস্টারঃ Click This Link
৫) রেডিওঞ্জঃ Click This Link
৬) স্কুপ হুপঃ Click This Link
৭) হাইপ ফিডঃ Click This Link
৮) ছবিসূত্রঃ হাফিংটন পোস্ট, উইকিপিডিয়া, ওয়ান্ডারলিস্ট ডট কম, এসরা মিডিয়া, থাই নিউজ ২৪ এইচ ডট কম, ডেথ পেনাল্টি নিউজ

মন্তব্য ১২ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (১২) মন্তব্য লিখুন

১| ০২ রা জুলাই, ২০২৪ রাত ২:৪৫

শাহিন-৯৯ বলেছেন:

শাস্তি তো কম-বেশি সব দেশেরই বেশ ভাল তবে থামছে না কেন? আমার ধারণা অপরাধী শাস্তির মুখোমুখি কম হোন অন্তত ভারত বাংলাদেশ ও পাকিস্থানে মালদার পার্টি হলে তো কথায় নেই আইন সমাজ সব তার পক্ষে কিন্ত পশ্চিমাদের এই হাল কেন তারা তো আইনের প্রতি বেশ শ্রদ্ধাশীল।

০৩ রা জুলাই, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:০৫

সত্যপথিক শাইয়্যান বলেছেন:



হবে হয়তো!!!

মন্তব্যের জন্যে ধন্যবাদ নিরন্তর।

২| ০২ রা জুলাই, ২০২৪ সকাল ৮:৩৩

অহন৭১ বলেছেন: আমৃত্যু কারাবাস দেয়া হোক।

০৩ রা জুলাই, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:০৫

সত্যপথিক শাইয়্যান বলেছেন:


মন্তব্যের জন্যে ধন্যবাদ নিরন্তর।

৩| ০২ রা জুলাই, ২০২৪ দুপুর ১২:২১

নতুন বলেছেন: আমাদের দেশে ধর্ষনের ঘটনা গুলি লুকিয়ে ফেলে।

শক্তিশালী পক্ষই ধর্ষনের ঘটনা গুলি ঘটায়, এবং তাদের পরিবারই প্রভাব খাটিয়ে মিটিয়ে ফেলে।

ধর্ষিতা যদি শারিরিক ভাবে আহত না হয় তবে পরিবারকেও জানায় না।

যদি হাসপাতালে যেতে হয়, ডাক্তারের কাছে যেতে হয় তখন সেটা সবার সামনে আসে।

পরিবার লোক লজ্জার ভয়ে ৯৯% সময়ই ঘটনা চেপে যায়।

আরেকটা জিনিস ঘটে সেটা হলো বয়ফ্রেন্ডের সাথে দেখা করার সময় এলাকার দুস্টু ছেলেরা দুজনকে একা পেয়ে ধর্ষন এবং ব্লাকমেইল করে... এই সবও বেশিরভাগ সময়ে চেপে যায়।

পারিবারিক পরিচিত আত্নীয়দের দ্বারা শারিরিক এবিউজ অনেক কমন ঘটনা। :(

কিন্তু বিয়ের প্রতিস্রুতি দিয়ে ধর্ষনের বিষয়টা বন্ধ হউয়া উচিত। বয় ফ্রেন্ডের সাথে ব্রেক আপের পরে ধর্ষনের মামলাটা বন্ধ করা উচিত। এই রকমের মামলা সমাজে ধর্ষন মামলার বিষয়টাকে হালকা করে দেয়।

০৩ রা জুলাই, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:০৬

সত্যপথিক শাইয়্যান বলেছেন:



হবে হয়তো!!! লুকিয়ে ফেলে কিনা আমি জানি না!

মন্তব্যের জন্যে ধন্যবাদ নিরন্তর।

৪| ০২ রা জুলাই, ২০২৪ দুপুর ২:৪৬

কিশোর মাইনু বলেছেন: ২০১৭ সাল থেকে শুরু হয়েছে এই পিটিশন। টার্গেট মাত্র ৩৫ হাজার। ৭ বছরে আমরা এই সামান্য টারগেট ও পুরণ করতে পারিনি?!?!? আর আমি আজ ফার্স্ট শুনলাম এই পিটিশনের কথা। :( আর অনেস্টলি বললে আমি যদি ও সাইন করে এসেছি কিন্তু আমি ও direct death penalty-র বিপক্ষে। মরেই যদি গেল দুম করে তাহলে আর শাস্তি কয় পেল?!?!? খোজা বানিয়ে উলংগ করে জনসম্মুখে জুলিয়ে রেখে পাথর ছুড়ে মৃত্যুদন্ড দেওয়া উচিত এদের। শাস্তি হতে হবে এমন কোন মেয়েকে ধর্ষণ করা দুরের কথা, কোন মেয়ের দিকে কুদৃষ্টিতে তাকাতে ও সাহস হবে না ছেলেদের। নাহলে এই ধর্ষণ কমানো সম্ভব হবে না।

০৩ রা জুলাই, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:০৬

সত্যপথিক শাইয়্যান বলেছেন:


অনেক অনেক ধন্যবাদ।

ভালো থাকুন নিরন্তর।

৫| ০২ রা জুলাই, ২০২৪ বিকাল ৪:২৫

ধুলো মেঘ বলেছেন: ধর্ষণের একমাত্র শাস্তি হওয়া উচিত পুরুষাঙ্গ কর্তন। অন্য কোন ভাবেই এই অপরাধ কমবেনা।

জিউস একটা পাষন্ড - তারপরেও সৌরজগতের সবচেয়ে বড় গ্রহের নামকরণ করা হয়েছে এই বদমাশের নামে। এই নামকে সম্মানিত করতে বৃহস্পতির বড় বড় উপগ্রহগুলোর নামকরণ করেছে বদমাশটা যাদেরকে যাদেরকে ধর্ষণ করেছে - তাদের নামে।

নাসার নামকরণ কমিটির সদস্যদেরকে ধরে গণ বলৎকার করা উচিত এই অপরাধে।

০৩ রা জুলাই, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:০৭

সত্যপথিক শাইয়্যান বলেছেন:



শুভেচ্ছা। ভালো থাকুন নিরন্তর।

৬| ০২ রা জুলাই, ২০২৪ রাত ১১:০৭

মৌরি হক দোলা বলেছেন: শেষের চার দেশে ধর্ষণ হয় না নাকি ধর্ষণের মামলা নথিভুক্ত হয় না?!

০৩ রা জুলাই, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:০৮

সত্যপথিক শাইয়্যান বলেছেন:



খুঁজে দেখা দরকার তেমন হয় কিনা।

মন্তব্যের জন্যে ধন্যবাদ নিরন্তর।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.