![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমার মনে বিষ আছে এবং আমি তা ব্লগে এপ্লাই করি! জানেনই তো, পৃথিবীর সবচেয়ে দামী ঔষধ বিষ দিয়েই তৈরী হয়!
আমি ঢাকার লালমাটিয়া এ ব্লক এলাকায় বড় হয়েছি। একদিন মায়ের সাথে স্কুলে হেঁটে যাচ্ছি। আমি তখন ক্লাস ওয়ান কি টুতে পড়ি। হঠাৎ ছিনতাইকারী আমাদের পথ রোধ করে দাঁড়ালো। উদ্দেশ্য আমার মায়ের ব্যাগটি ছিনিয়ে নেওয়া। আমার মাও দারুণ সাহসী মহিলা। চিৎকার দিয়ে উঠলেন - "এই কলোনির ছেলেরা, তোমরা কোথায়!" মায়ের চিৎকার শুনে সাথে সাথে আমাদের সরকারি কলোনির তরুণ ছেলেদের দল ছুটে এসে ছিনতাইকারীদের ধাওয়া দিলো! দুইজন প্রায় ১ কিমি দৌড়ে ছিনতাইকারী দুজনকে ধরে আনলেন! এরপরে, আম্মুর পায়ে ধরে মাফ চাওয়ার পালা তাদের!
এমনই ছিলেন আমাদের এলাকার ডানপিটে মানুষগুলো। নিজেদের এলাকায় কোন অপরাধ হতে দিতে চাইতেন না। কোন কিছু হলে মূহুর্তে একজোট হয়ে সমাধান করতেন। আমি ভাইয়া - আপুদের অন্যায়ের বিরুদ্ধে এরকম জোট পাকানো থেকে অনেক কিছু শিখেছি যা পরে জীবনে বহুবার এপ্লাই করেছি।
মনে আছে, এলাকার কোন এক বড় ভাই ভুল করে এক মুরুব্বীর সামনে সিগারেটে টান দিয়ে ফেলেছিলেন। এতে এলাকায় কি যে ছি ছি রব উঠলো! ভাইয়াটা লজ্জায় শেষ! ঐ মুরুব্বীর কাছে ক্ষমা পর্যন্ত চাইতে হয়েছিলো।
আর এখন? সম্মান দেখানো তো ডুরে থাক, লজ্জা-শরম পর্যন্ত উঠে গিয়েছে! আর, মানবিকতা দেখানো? ঐদিনের একটা ঘটনা বলি।
আমি ধানমণ্ডি ২৭ দিয়ে হেঁটে যাচ্ছি। প্রচণ্ড গরম পড়েছে। এর মাঝেই হাঁটছি। হঠাৎ দেখি এক রিকশাওয়ালা মাটিতে পড়ে রয়েছেন। সেদিকে কারো হুঁশ নেই। পাশ দিয়ে মানুষ দেদারসে হেঁটে যাচ্ছে। আমি রিকশাওয়ালার কাছে গিয়ে উবু হয়ে জিজ্ঞাসা করলাম -
"কি হইছে, ভাই? উঠেন! উঠে বসতে পারবেন?"
মানুষটা কোনক্রমে উঠে বসলেন। আমি তার চোখের দিকে চাইলাম। তাতে কি যে এক অসহায় চাহনী! আমি কঠোর স্বরে বললাম -
"ভাই, যে শহরে রিক্সা চালাচ্ছেন, এখানে কেউ আপনাকে ফুঁটা পয়সাও দাম দিবে না। আপনাকে নিজের পায়ে নিজে উঠে দাঁড়াতেই হবে!"
মানুষটা ফেলফেল করে আমার দিকে চেয়ে রইলো! আমি তাঁকে সেই অবস্থায় রেখেই সামনে হাঁটা দিলাম। আমার চোখের পানি কাউকে দেখাতে চাই না। কাউকে না!
১৬ ই মে, ২০২৫ রাত ১০:৪৪
সত্যপথিক শাইয়্যান বলেছেন:
এরকম তো হবার কথা ছিলো না, আপু!!!
আমরা একটা ধনী দেশ হতে না পারি, কিন্তু, মানসিকতায় অনেক উন্নত ছিলাম।
এই অবস্থা থেকে ফেরানোর উপায় কি?
ধন্যবাদ নিরন্তর।
২| ১৬ ই মে, ২০২৫ রাত ১১:২৪
সৈয়দ কুতুব বলেছেন: ঢাকার মানুষ এখন পুরোপুরি বদলে গেছে। ২০০৩ সালে যখন এসেছি প্রথম ঢাকায় তখন বগুড়া ও বরিশালের মানুষ বেশি ঢাকায় আসতো। এরপর আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে শুরু হয় উত্তরবঙ্গের মানুষের পদযাত্রা ঢাকায়। বিভিন্ন জেলা থেকে মানুষ আসায় কালচার কিছুটা সংকর হয়ে গেছে।
চিটাগাং শহরে ধর্মীয় দিবসগুলো যেভাবে পালন হয় ঢাকায় হয় না। সবাই ওয়াহাবী, সালাফি এবং জামাতী স্টাইলে ধর্ম পালন করে। আমরা সুন্নী পন্থী ধর্মীয় আচার ব্যবস্থায় অভ্যস্ত ছিলাম। তাই আম্মা শবে বরাতে বিভিন্ন মিষ্টি জাতীয় দ্রব্য, হালুয়া রুটি বানাতো। আশেপাশের পরিচিতদের আমরা খুশি মনে বিলাতাম। কিন্তু মানুষ কে দেখতাম হাসাহাসি করে। তারা বলতো এগুলো আমরা পালন করি না।
আমি তখন ক্লাশ ফাইভে পড়ি। একবার স্কুল ভ্যানে করে যাচ্ছিলাম। দেখি বড়ো কিছু পোলাপান একটা ব্যাগ নিয়ে দৌড়াচ্ছে। পুলিশ তাদের পিছনে। আমরা ভ্যানের সবাই খুব পুলকিত অনুভব করলাম। পুলিশ তাদের ধরতে পারলো না। ছেলেগুলো আমাদের সাথে ভ্যানে যেত এমন এক ছেলের বাড়ির গ্যারাজে লুকিয়ে ছিলো।। আমরক তো দেখেই তাদের চিনতে পারি। বুদ্ধি করে পাশের দোকানদের থেকে তালা নিয়ে বাড়ির সামনের দরজায় মেরে মসজিদের মাইকে খবর দেই। পুলিশ সবাইকে ধরে। ব্যাগে টাকা ছিলো। পুলিশ আমাদের প্রশংসা করে। কিন্তু যে লোকের ব্যাগ ছিলো সে আমাদের সাথে কোনো কথা তেমন না বলেই রিকশায় করে চলে গেল। যে দোকানদার থেকে তালা নিয়েছিলাম সে বলে, "ঢাকায় কেউ কারো এইজন্য উপকার করে না "।
৩| ১৭ ই মে, ২০২৫ রাত ১২:১৯
অপলক বলেছেন: আমিও কেমন যেন হয়ে গেছি। সব কিছুতে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছি। আগের মত মায়া মমতা বিবেক কাজ করে না। হয়ত নাগরিক জীবনে এসে কংক্রিট আবাসনে থেকে পাথর হয়ে যাচ্ছি।
৪| ১৭ ই মে, ২০২৫ সকাল ৯:৪৭
রাজীব নুর বলেছেন: গুরুত্বপূর্ন একটা পয়েন্ট নিয়ে লিখেছেন।
শহরের মানুষ গুলো- দয়া মায়া হীন। বিশেষ করে গত ২০ বছরে পুরো দেশের মানুষ বদলে গেছে। এখন কেউ বিশ্বাস করে না। কেউ কারো বিপদে এগিয়ে আসে না।
©somewhere in net ltd.
১|
১৬ ই মে, ২০২৫ রাত ১০:৩৫
মেহবুবা বলেছেন: মানুষগুলো কেমন হয়ে যাচ্ছে নয়, হয়ে গিয়েছে। প্রথমতঃ অসংখ্য মানুষের ভীড়, ভারাক্রান্ত এ নগরীতে তারা অন্ধ, বোবা বধির।
জানিনা কিভাবে শান্তি আসবে!