![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মানুষ হতে চেয়ে কি যে হচ্ছি তা নিজেও জানিনা
অপূর্ব সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালের সামনে এসে এক অদ্ভুত মানসিক টানা পোড়নে পড়ে গেলো। সে যাবে চাঁদপুরে। সড়ক পথে না গিয়ে সে জল পথে যাচ্ছে কারন তার অনেক দিনের সখ সে দুচোখ ভোরে নদী দেখবে। অনেক দিন নদী দেখা হয় না। নদীর কাছে আসলেই তার মনে হয় সে বহমান সময়কে দেখছে। নদীর পাড়ে দাড়ালে সে নদীর স্রোতকে অতীত, বর্তমান ভবিষ্যৎ এর বাস্তব রূপে দেখতে পায়। প্রতিটা মানুষ যে খুব একা তা সে এখানে এলেই খুব ভালো ভাবে বুঝতে পারে। তার নামে একটা কেবিন বুক করা আছে আগে থেকেই। পারাবত ২ নামের এই লঞ্চ তিন তলা। তার কেবিন তৃতীয় তলাতে। সারেং এর কেবিনের কয়েকটা কেবিন পরেই তারটা। সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসছে। সামনে দীর্ঘ স্রোতযাত্রা। সারাটা রাত সে জেগে কাটাবে তাই মোবাইলে রাত বারোটার এলার্ম দিয়ে সে ঘুমিয়ে পড়লো।
ঠিক বারোটায় এলার্মের শব্দে তার ঘুম ভাংলো। সে বিছানা থেকে নেমে সামনের দরজা খুলে দেখে নদীতে জোছনা গলে গলে পড়ছে। কেবিন থেকে চাদটা দেখা যাচ্ছে না তাই সে রুম থেকে বেরিয়ে সামনের খোলা ডেকে চলে এলো। প্রকৃতির এই রূপ যে দেখেনি তার জন্ম বৃথা। সবচাইতে ভালো হতো যদি তিন তলার ছাদে চলে যাওয়া যেতো। সেই ব্যবস্থা আছে কিনা সে জানে না। নিশ্চয়ই আছে। সারেং এর রুমে চলে যাওয়া যায়। তাকে বললে নিশ্চয়ই একটা ব্যবস্থা করে ফেলবেন। কিছু টাকা খসাতে হবে এই যা। বয়লারের ঘর ঘর শব্দটাও একটা বিরাট সমস্যা। সে মনে মনে কল্পনা করলো লাঞ্চের সবগুলো বাতি নিভে গিয়েছে , সুনসান নীরবতা। নদীর বুকে স্রোত কেটে এগিয়ে চলেছে পারাবত। সে সব থেকে সামনে দাঁড়িয়ে। নিজেকে টাইটানিক চলচ্চিত্রের জ্যাক মনে হতে লাগলো। দূরে জেলেদের বিচ্ছিন্ন অনেক গুলো নৌকা ভাসছে। সেখানে হারিকেন অথবা কুপির টিম টিম আলো জ্বলছে
এখানে শহরের সারি সারি আলো নেই, কোলাহল নেই। এরকম একটা পূর্ণিমায় হাতিয়া যাওয়া যায়। সে মনে মনে বললো নেক্সট টাইম টাকা জমিয়ে নিঝুমদ্বীপে চলে যাবো।
©somewhere in net ltd.