![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি খুব সাধারন একটা ছেলে বেড়ে উঠা গ্রামে, আর ভালোবাসি বাংলাদেশ। পড়তে খুব পছন্দ করি, মাঝে মাঝে লিখারও চেষ্টা করি।
লিখো, যখন খুশি লিখো
ইচ্ছে হলেই লিখো, ভালোবেসে লিখতে বসো।
চিঠি দিতে না চাইলে নিজের মনের মধ্যে লিখো
দেয়ালে লিখো, সবুজ প্রান্তরে, মাঠে-ঘাটে,
গাছে অথবা গাছের পাতায় লিখো।
ভালোবাসা না এলে অন্তত ঘৃণা করে লিখো।
বৃষ্টি হলে লিখো, রোদের তেজে লিখো,
শীতের কুয়াশায় কিংবা শরতের বিকেলে লিখো।
রাতের অন্ধকারে তোমার রূপের আলোয় লিখো,
জ্যোৎস্নায় আমাকে ভেবে লিখো দুটো লাইন।
কান্না পেলে লিখে ফেলো, সুখের হাসিতেও
অথবা মন খারাপ করা সন্ধ্যায় লিখতে বসো।
আমাকে পাবার আকুলতা এলে লিখে দিও,
হারানোর ব্যথা যদি তীব্র হয়, রেখে যেও দু-চারটি শব্দ।
অভিমানে লিখো, প্রেম পেলে লিখো,
লিখবার মতো কিছু না থাকলেও লিখে ফেলো।
ভাবনায় নেই—তবুও লিখো, লিখে যাও প্রিয়।
তোমার সন্তান হাঁটতে শিখছে—সেই মুহূর্তে লিখো,
বারান্দার খাঁচায় ডিম পেড়েছে দুটি লাভ বার্ড—সে গল্পও লিখো।
তোমার শরীরে নতুন মা হওয়ার আলো জেগেছে—
সে আলোয় ভিজে লেখা একটি কবিতা রেখে যেও।
বিচ্ছেদের দিনগুলো, নীরব হাহাকার,
ভুলতে না পারার দীর্ঘশ্বাস—সেগুলোও শব্দে আঁকো।
অবাক হলে লিখো, অবজ্ঞাও জানাও
যখন খুশি লিখো, প্রয়োজনে অপ্রয়োজনে লিখো।
আমার সাথে কাটানো সময়ে একান্তে বসে লিখো,
সেই রেস্টুরেন্টের চেয়ারে বসে দেয়ালে তাকিয়ে লিখো।
আমাদের হাসির শব্দের তালে কিংবা
চোখে চোখ রেখে ডুবে যাওয়া আবেগে লিখো।
হাত ধরে হেঁটে যাওয়া মনে পড়লেই লিখো,
একলা একা রিক্সায় চড়লে আমি পাশে আছি ভেবে লিখো।
রাস্তার পাশে গোলাপ দেখলে হাত বাড়িয়ে ছুঁয়ে দিতে দিতে লিখে যেও।
হুট করে মন খারাপ হলে লিখে জানিও,
বাড়ির কোনের শিউলি গাছে ফুল এলে জানিও।
আকাশ মেঘলা হলে লিখে দিও-
তোমার ভিজতে ইচ্ছে করছে।
মুখে ব্রণ দেখা দিলে জানিও,
পিরিয়ডের ব্যথা হলে তাও লিখে দিও।
চুলে তেল দেয়ার খবর, নতুন কানের দুলের স্মৃতি
সব লিখে দিও, প্রান ভরে লিখো।
চিঠিতে লিখতে না চাইলে মনের মধ্যে লিখো।
লিখে লিখে করে ফেলো পাহাড় সমান।
ঝর্নার মত লিখা হয়ে ঝরে পড়ুক তোমার সমস্ত আবেগ।
নৌকায়, জাহাজে, নদীর স্রোতে কিংবা
সমুদ্রে ভাসতে ভাসতে ঢেউয়ের আঘাতে আঘাতে লিখো।
ইচ্ছায়-অনিচ্ছায় লিখো, সময়ে অসময়ে লিখো।
রাতের আঁধারে জোনাকির দেখা পেলে লিখো
একা ভয় পেলে বুকে জড়িয়ে ধরে লিখো
প্রচন্ড সাহসে মহা উচ্ছলতায় লিখো।
তোমার প্রিয় কোন খাবার খেতে খেতে লিখো
অদেখা কোন আক্ষেপ থাকলে লিখে জানিও
অজানা কোন কথা জানতে লিখে জিজ্ঞেস করো।
তোমার অভিযোগ আমাকে লিখো,
তোমার বেদনার ভাগ লিখে পাঠিও
যত কিছু ক্ষোভ আছে, যত অভিমান
জমে গেছে আমাদের হারানো সময়ে
এক নিমিষেই সব লিখে জানিয়ে দিও।
কথা পাঠিও, চুমু পাঠিও, অশ্রু পাঠিও
আর লিখে দিও হাতের কোমল স্পর্শ।
তোমার কাজের খবর দিও, ব্যস্ততা-
চলমান দিন, ছুটে চলা সংসার কেমন যাচ্ছে জানিও
স্বামীর আদরের কথা, তোমার কামনার কথা
আমার সাথে মিলে যাওয়া মুহুর্তের কথা
লিখে দিও, লিখে দিও।
ভালোবেসে না হলে ঘৃনা করে লিখো।
দেশের রাজনীতির আলাপ করো তোমার হাতের লিখায়
বৈশ্বিক পরিবর্তন, যুদ্ধের কথা, বিদ্রোহের আলাপ
কিংবা তোমার প্রিয় ক্রিকেটের খবর,
আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ জয়ের স্মৃতিচারণ,
ক্রিশ্চিয়ানোর নতুন প্রেমের গল্প
সব লিখে দিও সুযোগ করে।
তোমার প্রিয় খাবারের বদলে যাওয়া লিস্ট জানিয়ে দিও
প্রিয় জামাটার তুলে রাখা, প্রিয় রঙ ভুলে যাওয়া
তোমার প্রেমে পড়া বাড়ির পাশের ছেলেটার গল্প,
সাথে তোমার শৈশবের স্মৃতিও লিখে দিও।
আমার জন্মদিনে লিখতে বসো,
শুভকামনা দিতে না চাইলে অভিশাপ দিও
তবুও লিখো প্রিয় তবুও লিখো।
লিখতে লিখতে বুড়ো হয়ে গেলেও লিখো,
তোমার বৃদ্ধ হয়ে যাওয়ার স্মৃতি, চলার কষ্ট জানিও।
দৃষ্টিশক্তি কমে গেলে মোটা ফ্রেমের চশমা নিও।
লিখতে না পারলে নাতি-নাতনীর সাহায্য নিও।
লাঠি হাতে, সাদা চুলে বেণী করে
তোমায় কেমন লাগে লিখে জানিও, অবশ্যই জানিও।
অনন্তকালের শেষ যাত্রায়ও আমায় লিখো।
মনে মনে লিখো, চোখ বন্ধ করে লিখো
আমাদের তারুণ্যের প্রেমের স্মৃতি লিখো।
প্রথম ছুঁয়ে দেখার অনুভূতি জানিও,
যেন প্রথম চুমুর আবেগে কেঁপে কেঁপে উঠো তখনও।
যমদূতকে অপেক্ষায় রেখে তুমি লিখে যেও প্রিয়।
ওপারে গিয়েও লিখো আমায়,
চিঠি লিখতে না পারলে স্বপ্নে লিখো,
কোন স্বর্গে বসবাস করো ঠিকানা দিও।
আমাদের সেখানে আবার দেখা হবে নিশ্চয়ই,
আমি তো তোমার আগেই স্বর্গের অলিগলি চিনে নিবো।
একদিন তোমার ঠিকানায় ঠিকঠাক পৌঁছে যাবো।
এপারে লেখা তোমার সমস্ত চিঠির জবাব ওপারে দিবো,
লিখতে না পারলে পাশাপাশি বসে দিবো।
তোমার হাত ধরে মুখে মুখে চিঠির উত্তর দিতে দিতে
অনন্তকাল কাটিয়ে দিবো।
স্বর্গেতো আর আমাদের কোন কিছুতেই নিষেধাজ্ঞা থাকবে না।
এপারে তাই যত পারো লিখে যেও, লিখে দিও।।
(কবিতা: লিখো/© শামীম মোহাম্মদ মাসুদ)
©somewhere in net ltd.