![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
শীতকালে আমাদের দেশে ওয়াজ মাহফিল হয় পারায় পারায়, এলাকায় মহল্লায়। তখন অনেক সময় দেখা যায় এলাকার রাস্তা যানবাহন চলাচলের জন্য বন্ধ করে দেয়া হচ্ছে। হুজুরদের টাকার বিনিময়ে ওয়াজ মাহফিল করার জন্য আনা হয়। গত দুইদিন আগে আমাদের এলাকায় ওয়াজ হচ্ছে সন্ধ্যাবেলায়। আমি চা পান করার জন্য বাইরে বের হয়েছি। যেখানে ওয়াজ হচ্ছে পাশেই চা এর দোকান। দেখি বেশ কিছু লোক ইসলামি পোষাক পানজাবি পায়জামা পরিধান করে ওয়াজ এর পাশাপাশি আড্ডা দিচ্ছে। সংখ্যায় ৪ থেকে ৫ জন হবে। আমি চা এর অর্ডার দেই। চায়ের দোকানে টিভি আছে। টিভিতে সংবাদ চলছে। সংবাদ পরিবেশন করছে একজন নারী। তারা দেখছে আর কটুক্তি করছে। আমি তাদের বললাম ভাই এসব বাজে কথা বলছেন কেন। তারা আমাকে বললো কোনটা বাজে কথা এই যে মেয়েরা নির্লজ্জ হয়ে সবার সামনে বেপর্দা হয়ে সংবাদ উপস্থাপন করছে এটা বাজে কথা। তারা বাজে ভাবে সবার সামনে আসতে পারবে আর তাদের নিয়ে কিছু বলা যাবে না। আমাকে আরো বললো আপনিতো দাড়ি রেখেছেন। নামাজ রোজা কিছু করেন নাকি মিয়া। দেখেতো মনে হয় না। কোথা থেকে কোথায় চলে গেল আমি বললাম নামাজ রোজা করি বা না করি এটা আমার ব্যক্তিগত বিষয়। আপনাদের এই বিষয়ে নিশ্চয়ই জবাবদিহি করবো না। আমি জিজ্ঞেস করলাম কারো ব্যক্তিগত বিষয়ে আপনাদের হস্তক্ষেপ করার অধিকার কে দিয়েছে? তাদের ভাষায় দেশের মেয়েরা হিজাব বোরকা পরিধান না করে রসাতলে যাচ্ছে। ধর্মের অবমাননা যেন একা মেয়েরাই করছে। পুরুষরা যেন ধোয়া তুলসি পাতা। আমি প্রতিবাদ করলাম যে মেয়েরা বোরকা পরলে ধর্ম মানা হবে আর না পরলে ধর্ম মানা হবে না। এটা কোন জাতীয় কথা। এক কথায় দুই কথায় বাতবিতন্ডা শুরু হয়ে গেল। তারা বললো আপনার স্ত্রীতো যতটুকু জানি সাংবাদিক। দেখি রাতবেরাতে ঘরে ফিরে আবার পোশাক আশাক দেখি জিন্স, শার্ট পরে। এলাকায় থাকতে হলে এইসব চলবে না। আমি উত্তোজিত হয়ে গেলাম। বললাম মানে কি আপনারা কি বলতে চাচ্ছেন? তারা সংখ্যায় ৪ থেকে ৫ জন, বললো বেশী কথা বলবেন না তা না হলে কিন্তু খবর আছে। তাদের চোখে মুখে কোন ভয় ডর নাই। তাদের সংখ্যায় বেশী দেখে আমি কথা না বাড়িয়ে চলে আসলাম সেখান থেকে। পিছন থেকে একজন বললো এখনও সময় আছে। তা না হলে একেবারে শেষ করে দিব। আমি অনেকটা ভয় পেয়ে সেখান থেকে চলে আসলাম। তার একদিন পর একটা নাম্বারহীন ফোন কল পাই। ওপাশ থেকে কোন এক ব্যক্তি অশালীন ভাষায় গালাগালি করছে। বলেছে এখনও সময় আছে তোর স্ত্রীকে সাংবাদিকতা ছেড়ে ঘরে থাকতে বল’’। এদেশে সাংবাদিকতা করা কি অন্যায়? সাংবাদিকতা করতে গিয়ে জীবন এখন হুমকির সম্মুখীন। বুঝতে পারলাম আমি তাদের না চিনতে পারলেও তারা আমাদের সম্পর্কে সবই জানে। জীবন নাশের হুমকি কিন্তু তারা কারা বা কোন গোষ্ঠীর না জানতে পারলেও বুঝতে বাকি রইলো না।
©somewhere in net ltd.