![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমাদের সমাজে অনেক বিষয় নিয়ে গুরামি চিন্তা-ভাবনা আছে। তার মধ্যে ধর্ম নিয়ে গুরামি করা নুতুন কিছু না আমাদের ভেতর।
ধর্ম মানে কি আসলে? বিভিন্ন মানুষ বিভিন্ন ভাবে এই শব্দ টির বর্ণনা করে থাকে। কিছু মানুষ আছে যারা নিজেকে একটু বেশি ধার্মিক এবং বুদ্ধিমান মনে করে থাকে অথচ দেখতে গেলে গুরামি তাদের ভেতর ই বেশি। আবার, কিছু মানুষ আছে যারা শুধু মাত্র নিজের আত্মার এবং তার সৃষ্টিকর্তার সন্তুষ্টির জন্য নামায-কালাম পড়ে থাকে। কিছু মানুষ আছে শুধু মানুষ কে দেখানোর জন্য নামায পড়ে বাদ্ধ হয়ে।
অপরদিকে, কিছু জাতির মানুষ আছে যারা খুব নামাজী ,ধার্মিক ,ধর্মের প্রায় নিয়ম কানুন মেনে চলে, কিন্তু তারা এই কাজ গুলো কাকে খুশি করার জন্য করছে প্রশ্ন তা এখানে। যদি কখনো তাদের ধার্মিকতা, পরদা দেখে প্রশ্ন করে বসি, আরে বাঃ এত বড় পরিবর্তন কিভাবে? তখন কেউ কেউ গর্ব করে বলবে,
"আমি নামায না পড়লে যে সে কথা বলবে না ,সে রাগ করে, তো কি করবো নামায তো পরতেই হয়।"
আমি তো অবাক দৃষ্টি তে তাকায় থাকি এই সুন্দর মুখের দিকে, আর ভাবি এদের কি আসলে বিবেক বলতে কিছু আছে নাকি তাও বেচে দিছে। যাইহোক, আমি বুঝলাম , একটা মানুষের চিন্তা-ভাবনার ওপড় আরেকটা মানুষের চিন্তা- ভাবনা অনেক ভাল ভাবেই প্রভাব ফেলে থাকে। কিন্তু এখানে নিজের লাভ টা কোথায়? তুমি যা করছ সব তোমার কাছের মানুষের খুশির জন্য। নিজের জন্য কি করছ তুমি? নিজের মুক্তির জন্য কি করতেছো? আল্লাহ্ কে খুশি করার বদলে তুমি এমন একজনের নামে নামায পড়ছ।
আমরা প্রায় যাদের কে ভালবেসে থাকি তাদের কে খুশি করার জন্য অনেক কিছু করে থাকি ,যদি ইচ্ছা না থাকে , যদি নাও মানি তবুও করে থাকি শুধু সে মানুষটার জন্য। অথচ যেই কাজ টা একান্ত আল্লাহ্ তালার জন্য সেখানে কিভাবে এই মানুষ গুলো আরেক জনকে ভাগিদার বানায় বুঝি না।
অপরদিকে, কেউ কেউ বলে " আল্লাহ্ হেদায়েত করেছে, আল্লাহ্ পথে চলব ভেবে নিয়েছি" । আচ্ছা তাহলে বুঝলাম এটা ভাল কথা। কিন্তু এই মানুষ গুলোর এইসব কথার পেছনে রহস্য তো অন্য কিছুই, ভালোভাবে লক্ষ্য করলে দেখা যায়, যারা এই কথা গুলো বলছে, তাদের কাজের পেছনে নিজের কোন ইচ্ছায় ছিল না নিজে মান্তেই চাই না , তারা তো সবার মত সুন্দর সেজে গুঁজে চলতে চায়, আকাশে উড়ে বেড়াতে চায় মুক্ত ভাবে , কিন্তু দেখা যায় পরিবার, ঘরসংসার, স্বামী , শাশুড়ি এর হুকুম পালন করছে তারা বাদ্ধ হয়ে । সেটা অনিচ্ছাকৃত হোক না কেন।
যদি ভালোভাবে বিবেচনা করা হয় তাহলে দেখা যায়, আজ অবধি ধর্ম শাস্ত্র কোথাও বলা হয় নাই যে, ইচ্ছা না থাকা সত্তেও, বিশ্বাস না থাকা সত্তেও সৃষ্টিকর্তার ইবাদত করতে হবে, এবং ধর্মের সব নিয়ম-কানুন মেনে চলতে হবে জোর করে। তাহলে ধর্ম বলেছে টা কি ভাই।
ধর্ম মানে আমি মনে করি, পূর্ণ বিশ্বাস থাকতে হবে, সম্পূর্ণ ভাবে জ্ঞান থাকতে হবে, এবং প্রেম পূর্ণ এবং সৎ জীবনযাপন করা। নিজের বুদ্ধি, নিজের বিবেক এর বিকাশ করার কথা বলা হয়েছে। অন্ধের মত কিছু না জেনে, না বুঝে, শুধু মাত্র মানুষকে দেখানোর জন্য অথবা শশুর-শাশুরির হুকুম পালন করার জন্য অনুসরন করতে আল্লাহ্ বলেনি।
আমাদের সৃষ্টিকর্তা আমাদেরকে সুন্দর দেহের সাথে আমাদের কে বিবেক ও দিয়েছেনএবং আদেশ করেছেন জ্ঞান অর্জন করার জন্য। যে কারণে আমরা পশু থেকে আলাদা এবং ভাবতে জানি, বিবেচনা করতে জানি, ভালো খারাপ বুঝি । আমরা সম্পূর্ণ ভাবে মুক্ত, আমাদের চিন্তা ভাবনা মুক্ত, আমরা নিজের বিবেচনার ধারা নিজের বিশ্বাস কে মজবুত করতে সক্ষম । কিন্তু আমরা আমাদের বিবেক কি বলে, সেটা কে পরোয়া না করে মানুষ কি বলে ,মানুষ কি চায় সবসময় এটার পেছনে মরিয়া হয়ে পড়ে থাকি। এখানে নিজের চিন্তা-ভাবনার মুক্তি টা কোথায়? অথচও যেখানে আত্মার মুক্তির কথা বলা হয়েছে।
আমি মুসলিম তাই বলে কি আমার বংশধররা যা করে এসেছে সারাজীবন তা আমাকেও করতে হবে? আমি মুসলিম বলে আমাকে জোর করে সৃষ্টিকর্তার ইবাদত করতে হবে যদি আমি আমার সৃষ্টিকর্তা কে ভালোই না বাসতে পারলাম। নিজে মান্তেই না পারলাম। তাকে ভালোবেসে জ্ঞান অর্জন না করতে পারলাম, তার ইবাদত নাই করতে পারলাম , নিজের বিবেক কে বিকাশ ই না করতে পারলাম ,নিজের বিশ্বাস কে মজবুত না করতে পারলাম তো এমন ঠুনকো ইবাদত দিয়ে আমি কি করব যার ভিত ই নড়বড়ে?
আবার কিছু মানুষ খুজে পাওয়া যায়, যারা মনে করেন মুসলিম হলে ইসলাম সম্পর্কেও সব ধরনের জ্ঞান থাকা আবশ্যক হোক সেটা পরীক্ষার ইসলাম বিষয়। বলা যায় হয়ত তা একদিকে দেখতে গেলে ঠিক যে , জাত যেটাই হোক নিজের জাতের সম্পর্কে জ্ঞান থাকা ভালো।
কিন্তু কথা হলো, কোন মানুষ কতটা ধার্মিক অথবা সে কতটা জানে এটার সাথে পরীক্ষায় ইসলাম বিষয় এ নম্বর খারাপ অথবা ভালো করার সাথে কি সম্পর্ক? এমন একটা তুচ্ছ বিষয় দিয়ে একজন মানুষ কতটা ধার্মিক এই বিবেচনা কিভাবে করতে পারে মানুষ । এমন কত মানুষ আছে যারা মানুষের সামনে ঠিক ভাবে কথা বলতেও দ্বিধা বোধ করে কিন্তু অপরদিকে দেখা যায় তর্কে বসলে তাদের কে হারানো মুশকিল হয়ে যায়।
আমি বুঝি না, এমন এমন বিষয় নিয়ে আমরা মানুষকে তুলনা করি যেটা দেখা গেলে তুচ্ছ আর ভিত্তিহীন মাত্র।
আমাদের সমাজে একটা জিনিস মানুষ আবার খুব ভালো করে মান্য করে। সেটা হল আযানের সময় মাথায় কাপড় দেওয়া। না এটাতে আমার কোনও সমস্যা নাই। খুব ভালো কাজ কিন্তু আমার সমস্যা হল এরপর এরা যা করে। যেখানে ধর্ম শাস্ত্র তে মাথায় কাপড় দেওয়ার কথা কোথাও বলা ই হয় নাই , সেখানে মাথায় কাপড় দেওয়া নিয়ে এত মাতামাতি কেন? কে দিল নাকি দিল না এগুলো নিয়ে এত মাতামাতি কেন?
আচ্ছা ভালো মাতামাতি করতে ভালো লাগে তো করছ। কিন্তু আযান শেষ হওয়ার সাথে সাথেই মাথার কাপড়
এমন ভাবে ফেলে দাও যেন খুব কষ্ট লাগছিল কাজ টা করতে, শুধু করতে হবে বলে করতেছিল।
অতঃপর আযানের পর, মাথার কাপড় তখন কোথায় চলে যায়? তখন যদি দিতে পারে তাহলে বাকি সময় টা দিতে তাদের কি হয়? যে কাজ গুলো মানুষ করে শুধু নিজে মুসলিম বলে অথচ নিজের ভেতর সেই কাজ গুলোর জন্য কোনও বিশ্বাস, সম্মান ই নাই তো এগুলো করার কি মানে? কেন আমার মানুষকে দেখাতে হবে আমি ধার্মিক।
আমি বুঝি না, একটা মানুষ প্রকিত রূপে যা সেটা সমাজের সামনে তুলে ধরতে এত ভয় পায় কেন? যেটায় বিশ্বাস করে সেটা কে মানুষের সামনে মেনে চলতে এত ভয় কিসের?
আমরা সবসময় ধর্ম কে বিভিন্ন ভাবে বিবেচনা করে থাকি আর সবসম ধর্মের ভাব টা না বুঝে খোলস তাকে আঁকড়ে ধরে অন্ধের মত মেনে চলি সারাজীবন।
অথচ, ধর্ম যে মানব কল্যাণের এক অনুপম নিদান, জীবন কে ধন্য করার উপায় , নিজেকে বিকাশিত করার উপায়, অন্ধ অনুসরণের ব্যাপার নয় এটা মানুষ কবে বুঝবে?
©somewhere in net ltd.