নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

[email protected]

শ।মসীর

At present I am living in the consequences of a choice made earlier বেঁচে আছি এটাই আনন্দের.........।। ইচছা হয় সারাদিন ঘুরি পথ থেকে পথে ঘোরা হয়না..............................।।

শ।মসীর › বিস্তারিত পোস্টঃ

রোড টু মোঘল ভায়া রাজপুত

১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ দুপুর ১২:৪৬



[ ১৩ বছর পার হয়ে গেল Somewhere in ব্লগ এ ]

রাত সাড়ে বারটায় সম্পূর্ণ অচেনা একটা শহরে গিয়ে নামলাম । সত্যি বলতে মনের মাঝে তেমন কোন সংশয়ও কাজ করেনি , কাজটা ভাল হল কিনা এই টাইপ ভাবনায় । বরং মাথায় ভেতর কাজ করছিল এত রাতে খাবার কিছু কই পাওয়া যায় । ডোমেষ্টিক এয়ার এ যে তারা খাবার কিছুই দিবেনা এটা মাথায় আসেনি । লাগেজ বুঝে নিয়ে বাইরে আসতেই চোখে পড়ল প্রিপেইড ট্যাক্সি সার্ভিস এর কাউন্টার । গন্তব্য বলার সাথে সাথে ভাড়া বলল , আমি ওকে বলাতে একটা রিসিট কেটে দিল , একজন চালক এসে বলল তার সাথে যেতে । মালপত্র উঠিয়ে আমরা নেমে পড়লাম রাতের ঘুমন্ত জয়পুরের পথে । মহারাজাদের পদধূলিতে মুখরিত ছিল যে জনপদ একসময় ।

সড়কবাতির আলোয় শুরু হয়ে গেল আমাদের নগর দর্শন । রাস্তা দেখে বোঝা গেল নিয়মিত পরিচর্যায় কখনো কমতি হয়নি , দুপাশে মাঝারি আকারের বিল্ডিং গুলোকে রেখে সুনসান নীরব শহরের মাঝ দিয়ে আমরা ছুটে চলেছি । হিন্দী চ্যানেলের কল্যানে পরিচিত হয়ে উঠা দুচারটা ব্যান্ডশপের নিয়ন সাইন দেখে কেমন চেনা চেনা লাগল । জিপিএস গাইডেড ক্যাবের চালক কাউকে একটা কথাও জিজ্ঞেস না করে সোজা আমাদেরকে গন্তব্যে পৌঁছে দিল । হোটেলে আগে থেকে জানানো থাকাতে চেকইন করতে কোন সমস্যা হলোনা , হাসিমুখে ম্যানেজার আমাদেরকে স্বাগত জানাল , মাঝরাত বলে ওয়েলকাম ড্রিংকসটা মিস হলেও এতরাতে ঝক্কিঝামেলা ছাড়া রুমে ঢুকতে পেরেই মনটা ভাল হয়ে গেল । একটু থিতু হয়ে ব্যাগে থাকা বাচ্চাদের জন্য রাখা বিস্কিট আর চকলেটের দিকে হাত বাড়াতে হল , আমাদের ঢাকা শহরে যত রাতই হউক পনের কিলো পথ পাড়ি দিলে অন্তত দু-একটা হোটেল নিশ্চিত খোলা পাওয়া যেত । মহারাজাদের শহরে কার ঠেকা পড়েছে আমার জন্য রাত জেগে বসে থাকার ।

সকালে নাস্তার মেন্যু চুজ করতে গিয়ে হালকা কনফিউজড হয়ে গেলাম । এই সাত সকালেও পনিরের এত আইটেম । অত ভাবাভাবিতে না গিয়ে লুচির সাথে পনির মাসালা অর্ডার করে দিলাম, সাথে আলু পনির ! অন্য আইটেম যাই হউকনা কেন আলু নিশ্চয় বেঈমানি করবেনা এই সাতসকালে । না আলু কখনো বেঈমানি করেনা , পনিরও ভালই ছিল ।

ট্যুর এ গিয়ে কখনো যা করিনা এইবার তাই করে বসলাম । প্রথমত কোথাও যাবার আগে তা সম্পর্কে ভালভাবে পড়ে যায়, দ্বিতীয়ত সেখানে গিয়ে কারো বুদ্ধিমত ডিসিশান না নিয়ে নিজের মত করে নেই , বিশেষ করে ট্যক্সিওয়ালাদের কথায়ইত নয়ই ! হোটেল ম্যানেজার খুব সুন্দর একটা ম্যাপ হাতে দিয়ে কি কি দেখার মত আছে , কোথা থেকে শুরু করলে ভাল হবে সবই বলে দিলেন আর আমি কিনা তার কথাও না শুনে শুনলাম ট্যাক্সিড্রাইভারের কথা । সে কিভাবে কিভাবে যেন আমাকে সারাদিনের জন্য রাজি করিয়ে ফেলল, কি কি দেখাবে সেটা আসলে আমার লিস্টের সাথে মিলে যাওয়াতে আমি তার ফাঁদে পা দিয়েছিলাম ।

শুরু হল আমাদের পিংক সিটি দর্শন । ১৮৭৬ সালে প্রিন্স অব ওয়েলস কে স্বাগত জানানোর জন্য যে শহর পুরোটা পিংক কালারে রাঙানো হয়েছিল , তারপর থেকে জয়পুরের অন্যনামই হয়ে গেছে পিংক সিটি । চলতি পথে হঠাত করেই সবকিছু পিংক হতে শুরু করেছিল । প্রতিটা বিল্ডিং মোটামুটি কাছাকাছি ডিজাইনের , এর মাঝেই আমরা এসে পড়লাম হাওয়া মহলের সামনে ।

৯৫৩ টা জানালা সম্বলিত এই হাওয়া মহল বানাও হয়েছিল রাজকীয় মহিলাদের শহুরে কোলাহল আর রাজপথে হওয়া বিভিন্ন অনুস্ঠান উপভোগ করার জন্য । নেমে দাঁড়াতে না দাঁড়াতেই টাক্সিওয়ালা তাড়া দেয়া শুরু করল এইকাহনে বেশিক্ষন দাঁড়ানো যাবেনা, পুলিশ ঝামেলা করবে এইটাইপ কথাবার্তা বলে । শুরুতেই মেজাজটা খারাপ হয়ে গেল । যায় হউক বাইরে থেকে হাওয়া মহল দেখে পরের গন্তব্য ঠিক করেছিলাম এম্বার/এমার ফোর্ট , যদিও পথে জলমহাল পড়বে । আমার প্ল্যান ছিল সুর্য ডোবার সময় জলমহাল দেখার । ট্যাক্সিতে উঠার সাথে সাথে সে রাজস্হানের এত সুন্দর কালারফুল কাপড় কি করে তৈরি হয় তা দেখার টোপ দিল আমাদেরকে , সে টোপ গিলে আমরা গেলাম কাপড় রং করা দেখতে আর গিয়ে বুঝলাম এর সাথে আছে আসলে মানুষকে শপিং করতে মোটামুটি লোভাতুর করে ফেলার আয়োজন । কাপড়ে রং করার ব্যাপারটা আসলেই মুগ্ধ করল, শতশত বছর আগে কি করে মানুষ রঙ্গীন কাপড় তৈরি করত তার একটা আইডিয়া পাওয়া গেল আর তাদের কথায় মুগ্ধ হয়ে সেখান থেকে বেশ কেনাকাটাও করে ফেললাম !!! পড়তে এতই আরামদায়ক দেখে উটের চামড়ার জুতাটা না কিনে পারলামনা !!!

জলমহাল কে চোখের দেখা দেখতে দেখতে আমরা চললাম এম্বার/এমার ফোর্টের পথে । চলতে চলতেই বোঝা যায় আমরা আস্তে আস্তে উপরের দিকে উঠছি । এম্বার ফোর্টে পৌঁছানোর আগেই চোখে পড়ে জায়গার ফোর্ট আর তখনই ট্যাক্সিওয়ালা চেস্টা করবে ঐ জায়গায়ও আপনাকে ঘুরিয়ে আনার প্রস্তাব গেলানোর !!! তার প্রস্তাবে সাড়া না দিয়ে আমরা চারপাশ দেখতে দেখতে আগাতে থাকি । ফোর্টের আশেপাশে না কেবল, জয়পুরের বিশাল এলাকা জুড়ে চাষাবাদের কোন লক্ষনই চোখে পড়বেনা । ফলে জীবন ধারনের প্রয়োজনীয় খাবার সরবরাহ যে বেশ দূর থেকেই আসত তা নিশ্চিত , কেবলমাত্র নিরাপত্তার খাতিরেই সম্ভবত এমন পাহাড়ের চুড়ায় বসবাসের কারন ।



রাস্তা থেকে দূর্গ চোখে পড়ার সাথে সাথেই আসলে বিস্ময়ের শুরু হবে । প্রথমেই মাথায় আসবে আজকে থেকে পাঁচশত বছর আগে কি করে এমন জিনিস বানানো সম্ভব হল , আর নির্মাণ কেমন মানের হলে সেটা এখন স্বরূপে অক্ষুন্ন থাকতে পারে । এম্বার ফোর্টের পাদদেশেই একটা জলাধার রয়েছে নাম মাউতা লেক । বৃষ্টির পানি ধরে রাখার জন্য এটা বানাও হয়েছিল আর এখনা থেকেই দূর্গে পানি সরবরাহ করা হত ।



দূর্গে প্রবেশের পূর্বে মনে হল একজন গাইড নিয়ে নিলে ভাল হবে , কিছু টাকা গেলেও হেঁটে হেঁটে লেখা পড়ে পড়ে আগানোর থেকে গাইডের কথা শুনে শুনে আগালে ব্যাপারটা আরো বেশি বোধগম্য হবে । দর কষাকষি করে একজনকে সাথে নিয়ে নিলাম । গাইড জানতে চাইল হিন্দি বুঝি কিনা , মাথা নেড়ে সায় দিলাম ,একসময় প্রচুর হিন্দী সিনেমা দেখার কল্যাণে ভাষাটা বলতে না পারলেও মোটামুটি কাজ চালানোর মত করে বুঝে নিতে পারি ।



দূর্গে প্রবেশের মুখেই রয়েছে মোগল রীতিতে বানানো বাগান , যার দুপাশে রাজকীয় বসার আয়োজন আর মাঝখানে একসময় যে ফোয়ারা ছিল তা দেখেই বোঝা যায় । গাইডের ভাষ্য মতে আগত বিদেশী অতিথীদের সন্মানে এখানে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হত যেটা আবার সাধারনের জন্যও উন্মুক্ত থাকত , তাই এটা দূর্গের বাইরে বানানো । বাগান পেরিয়ে শুরু হল দূর্গে প্রবেশ ।

যেহেতু পাহাড়ের বেশ উঁচুতে এই দূর্গের অবস্হান তাই রাজা মহারাজাদের মনে হয়না হেঁটে উঠার কোন সুযোগ ছিল , যেকারনে দূর্গে প্রবেশের রাস্তাও এমন ভাবে বানানো যাতে সহজেই হাতি ঘোড়া চলাচল করতে পারে । মহারাজাদের সেই দূর্গে প্রবেশের স্মারক হিসেবে চাইলে যেকেউ এখনও দুপুরের আগে হাতির পিঠে করে দূর্গে প্রবেশ করতে পারে । তবে বর্তমানে পশুক্লেশ নিবারন সংস্হা টাইপের কেউকেউ এটার বিপক্ষে ভালই জনমত গড়ে তোলার চেস্টা করছে । আমরা যখন পৌঁছায় ততক্ষনে হাতি চড়ে দূর্গে প্রবেশের সময়সীমা শেষ হয়ে গিয়েছিল, অবশ্য থাকলেও সেটা চড়ার কোন ইচ্ছা মনে ছিলনা । পশুক্লেশ নিয়ে ভাবনার কারনে নয় , চড়ার জন্য যে উচ্চমূল্য গুনতে হত সেটা ভেবে । ।



দূর্গে প্রবেশের পূর্বেই লেকের মাঝখানে চোখে পড়বে কৃত্রিমভাবে বানানো কেইজার গার্ডেন যাতে একসময় শেফরন/জাফরান গাছ লাগানো হয়েছিল । কথিত আছে রানীর ইচ্ছা পূরনের জন্য কোন এক রাজপূত রাজা কাশ্মীর থেকে জাফরানের গাছ আনিয়ে ছিলেন। যেহেতু জাফরান গাছ শীতল আবহাওয়ায় টিকে থাকে তাই লেকের মাঝখানে এই বাগান তৈরি করা হয়েছিল । ভালাবাসার প্রমান দেয়ার জন্য মনে হচ্ছে রাজা-মহারাজা, সম্রাট হওয়া জরুরি , তাজমহল দেখার পর আমার এই ধারনা আরো পাকাপোক্ত হয়েছে । ডানপাশে চোখে পড়বে পুরোনো একটা মসজিদ , যেটার নাম আকবরী মসজিদ, রাজপুত জামাই আকবরের জন্য বানানো হয়েছিল এই মসজিদ , যদিও আকরব কখনোই এখানে আসেননি ।



সকালের প্রথম আলো ফোর্টে প্রেবেশ করে যে গেট দিয়ে তার নাম সুরজপোল বা সান গেট । আমরাও সেদিক দিয়ে ফোর্টে ঢুকে গেলাম । ঢুকতেই বিশাল খোলা জায়গা যেটা একসময় প্যারেডগ্রাউন্ড হিসেবে ব্যবহৃত হত । রাজার নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত সেনাদল এই প্যারেডে অংশ নিত , ফাঁকা জায়গার চারপাশ ঘিরে সৈনিকদের থাকার জায়গা আর আস্তাবল আজও সেই স্মৃতি বহত করে চলেছে । বাম পাশে উঁচুতে চোখে পড়বে দেওয়ান-ই-আম তথা আমজনতার কথা শোনার জায়গা । প্রজারা তাদের আর্জি নিয়ে এখানে হাজির হত ।



চমতকার কারুকার্যখচিত গেট গনেশা পোল দিয়ে প্রবেশ করতে হয় মূল প্রাসাদে । এখানে আছে শীষ মহল তথা আয়না খচিত মহল, মোমের আলোয় যেটা ঝলমল করে উঠত কোন এক কালে । মূল প্রাসাদে মোঘলদের রীতিতে বানানো বাগানও আছে , যেখানে পানি প্রবাহের সুন্দর ব্যবস্হা করা আছে সেই পাঁচশত বছর আগে থেকেই । মূল প্রাসাদে প্রবেশের আগে একটা মন্দির আছে শিলা দেবি নামে যার সাথে জড়িয়ে আছে আমাদের বাংলাও । মহারাজা মান সিং যশোরের রাজাকে পরাস্ত করার পর রাজা মানসিংকে একটা কষ্ঠিপাথরের স্লাব উপহার হিসেবে প্রদান করেন যেটার উপর দুর্গার মূর্তি খোদাই করা হয়েছে ।



মজার ব্যাপার হচ্ছে এই রাজপ্রাসাদগুলো আসলে খুব একটা বড় না । রুমের পরিধিগুলোও আমার কাছে খুব ছোট মনে হয়েছে । দূর্গের ভেতর মূলপ্রাসাদে কেবল মহারাজা আর তার রানীদের থাকার ব্যবস্হা থাকত, সাথে তাদের সহকারীরা । বাকি পরিবার পরিজন ও অন্যান্যরা মূল প্রাসাদের বাইরে বানানো ঘরে থাকত । সেই আমলের সব কিছুতেই সম্ভবত রাজার নিরাপত্তা আর ভীতি মূল বিবেচ্য বিষয় ছিল বিশেষ করে প্রাসাদ ষড়যন্ত্র ।


আগ্রহ নিয়ে গাইডের কাছে জানতে চেয়েছিলাম জোধা বাঈ এর ঘর কোনদিকে ছিল । গাইড তেমন কোন ইনফো দিতে পারলোনা । মজার ব্যাপার হচ্ছে মোঘলদের লিপিবদ্ধ ইতিহাসে জোধা বাঈ নামে কোন কিছু পাওয়া যায়না । সেখানে পাওয়া যায় আকবর পুত্র জাহাঙ্গীরের মাকে মরিয়ম উজ জামানি উপাধিতে ভূষিত করা হয়েছিল যার নাম সম্ভবত হরকা বাই এবং বাবার নাম বিহারী মাল । নিজের রাজপুত রাজত্ব রক্ষার খাতিরে তিনি তার মেয়েকে আকবরের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হবার প্রস্তাব করেছিলেন । এই বিয়ে পরিনতিতে মোঘল আর রাজপুত দুপক্ষের জন্যই সাপেবর হয়েছিল । মোঘলরা পেয়েছিল জোধা বাঈ এর ভাইয়ের ছেলে মহারাজা মান সিং এর মত বিশাল বীর কে যাকে আকবরের নবরত্নদের একজন বলে ধরা হয়, আর রাজপুতরা পেয়েছিল নিজেদের দৃশ্যমান স্বাধীন রাজত্ব ও সন্মান । যদিও মোঘলদের সাথে সম্পর্ক তৈরির আসল অগ্রদূত ছিলেন জোধা বাঈ এর চাচা পুরান মাল । তিনিই রাজপুতদের মাঝে প্রথম মোঘলদের দিকে সন্ধি স্হাপনের জন্য হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন । এটা অন্যতম বিচক্ষন সিদ্ধান্ত হিসেবে পরবর্তীতে প্রমানিত হয় । আমার ধারনা যেকোন বিচক্ষন কাউকে মেনশন করতে আমরা যে এখনও পুরানমাল শব্দটা ব্যবহার করি তা সম্ভবত ঐ রাজপুত রাজারই নাম আসলে ।



ফিরতি পথ ধরতে ধরতে সূর্য তখন বিদায় নিয়ে চলে গেছে । জলমহাল এ যখন পৌঁছালাম তখন মাগরিবের আজান দিচ্ছে । আলো এখনও জ্বলে উঠেনি , অপেক্ষা করতে হবে । ট্যাক্সি ওয়ালা ঘ্যানঘ্যান শুরু করে দিয়েছে । সে লোকাল আরো আমর্কেটি নিয়ে যাবার নানা প্রস্তাব দিয়ে যাচ্ছে । একসময় মেজাজ এত খারাপ হল তাকে তরা পাওনা পুরো টাকাটা দিয়ে বললাম এইবার মাফ করো , তুমি যাও । বেটা বিদেয় নেওয়ার আগে আবার জানতে চাই আমি রাগ করে এমন কান্ড করছি কিনা । এমন কান্ডের পেছনে অবশ্য আমার অন্য উদ্দেশ্য ছিল। আমি জানি এম্বার ফোর্টে রাতে একটা লাইট শো হয়, এই বেটা থাকলে সে নিশ্চিত আবার উল্টা পথে এম্বার ফোর্টে যেতে কোনভাবেই রাজি হবেনা । মাত্রই কিছুক্ষন আগে পুরানমালের প্রাসাদ ঘুরে এসে আমিও তার মত বিচক্ষন সিদ্ধান্ত নিয়ে ঐ ড্রাইভারের সাথে সম্পর্কচ্ছেদ করলাম ।



প্রজাদের পানির অভাব দূর করার জন্য মহারাজা মান সিং এই মান সাগর লেক খনন করেন , আর তার মাঝখানে তৈরি করা হয় এই মহলের । পাঁচতালা এই প্রাসাদের চার তালায় পানির নিচে চলে যায় যখন লেক পানিতে পরিপূর্ণ হয়ে যায় । এটা রাজপুত রাজাদের পাখি হাঁস শিকারের প্রাসাদ হিসেবে পরিচিত হয়ে উঠেছিল । বাতি জ্বলে উঠার পর মহল পানির বুকে ভিন্ন একটা আমেজ তৈরি করে । সেটা দেখে আরেকটা ট্যাক্সি নিয়ে চলে আসলাম আবার এম্বার ফোর্টে । নিরাশ হতে হয়নি, কিছুসময় অপেক্ষার পর শুরু হয় লাইট শো । আলোতে যেন সেই পাঁচশত বছর আগের ইতিহাস স্মরন করিয়ে দিচ্ছিল। তখনকার মশালের আলোতে কেমন লাগত এই দূর্গ সেটা বেশ অনুভব করতে পারছিলাম লাইটশোর নিয়ন্ত্রিত আলোর খেলায় ।



শহরে ফিরতি পথে সম্পূর্ণ অন্যরকম ভাবে চোখের সামনে হাজির হল হাওয়া মহল, রাতের হাওয়া মহল আর তার চারপাশ দেখে মনে হল পিংক সিটি দেখা অবশেষে পরিপূর্ণ হল ।






























মন্তব্য ১৮ টি রেটিং +৯/-০

মন্তব্য (১৮) মন্তব্য লিখুন

১| ১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ দুপুর ১:০২

শাইয়্যানের টিউশন (Shaiyan\'s Tuition) বলেছেন:
প্রিন্স অফ ওয়েলস কি গোলাপী রঙ খুব ভালোবাসতেন?

বর্ণনা ভালো হয়েছে। প্রিয়তে নিলাম।

১৩ বছর পার করায় ফুলেল শুভেচ্ছা।

১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ বিকাল ৪:১৭

শ।মসীর বলেছেন: তাত বলতে পারবোনা :(

অনেক ধন্যবাদ ।

২| ১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ দুপুর ১:০৪

ম্যাড ফর সামু বলেছেন: সোনালী প্রান্তরে......... ভ্রোমরার গুঞ্জনে......... ঘুরে এলাম রাজস্থান থেকে আপনার সঙ্গে অথচ আপনি তা একদমই জানেন না! ভ্রমণসঙ্গী করার জন্য অন্নেক ধন্যবাদ। ভবিষ্যতে আরও চাই, তবে কিছু ছবি ক্যাপশন ছাড়া।

১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ বিকাল ৪:২৩

শ।মসীর বলেছেন: অনেক শুভকামনা ।

৩| ১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ দুপুর ১:২৬

বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: চমৎকার পোস্ট, সাবলীল বর্ণনার সাথে মনোমুগ্ধকর সব ছবি। ফের জয়পুর বেড়িয়ে এলাম যেন।

সামুর আঙিনায় ত্রয়োদশ বর্ষপূর্তির শুভেচ্ছা জানবেন। অনাগত এই পথচলা আনন্দমুখর হোক, ভাল কাটুক প্রতিটি দিন প্রতিটি ক্ষণ।

১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ বিকাল ৪:৩১

শ।মসীর বলেছেন: ভাল কাটুক সবার সব সময় :)

৪| ১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ দুপুর ১:৫৫

মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন:
সুন্দর ছবি ব্লগ।

++++++++

১৩ বছর সামুর সাথে থাকার জন্য অভিনন্দন।

১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ সন্ধ্যা ৭:৫২

শ।মসীর বলেছেন: শুভকামনা রইল ।

৫| ১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ দুপুর ১:৫৯

রাজীব নুর বলেছেন: খুব সুন্দর পোষ্ট।
তবে ছবির সাথে ক্যাপশন দিলেন না কেন?

১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ সন্ধ্যা ৭:৫৩

শ।মসীর বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ । ছবিগুলো আসলে আগের গুলোর সাথে রিলেটেড করা তাই দেইনাই ।

শুভকামনা রইল ।

৬| ১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ দুপুর ২:০৯

মাহমুদুর রহমান বলেছেন: খুব সুন্দর ছবি ব্লগ।

১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ দুপুর ১২:০৯

শ।মসীর বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ ।

৭| ১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ রাত ৮:১২

জুন বলেছেন: তের বছর পুর্তির অভিনন্দন শামসীর। আরেক বার দেখে নিলাম একাধিক বার দেখা জয়পুরকে। ইন্ডিয়ার পর্যটন কেন্দ্রিক শহরগুলোতে ট্যাক্সি আর রিকশ ড্রাইভাররা কি পরিমান বাটপার তা যাদের অভিজ্ঞতা নাই তাদের ধারনার বাইরে।
আর ভারতের রাজপ্রাসাদের রুম গুলোর আয়তন নিয়ে আমিও বিস্মিত হয়েছি। বিস্মিত হয়েছি চীনের ফরবিডেন সিটির প্রাসাদ দেখে, থাইল্যান্ডের বাংপা ইন এর সামার প্যালেসে অবস্থিত একাধিক প্রাসাদ দেখে, মিয়ানমারের মান্দালয়ের কিংস প্যালেস ও তার আসবাব পত্র দেখে। ঐ খাট নাকি রাজা রানীর জন্য যা আমি ভেবেছি খেলার পুতুলের জন্য তৈরী।
যাই হোক অনেকদিন পর ব্লগে দেখে ভালোলাগলো। :)
+

১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ দুপুর ১২:১৩

শ।মসীর বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ আপু আপনার কমেন্টের জন্য ।

প্রাসাদ গুলোর রুমের সাইজ আমাকে ব্যাপক অবাক করেছে । রুমগুলো দেখে ঠিক বুঝলামনা বিলাসী আয়োজন কিভাবে সম্ভব হত । আপনিত আরো অনেক জায়গায় দেখেছেন , এর কোন কারন কি আছে ?

ব্লগে লিখতে সবসময় ভালই লাগে, খালি সময়টা করে উঠা হয়না :(

৮| ১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ রাত ৮:৫৪

ভুয়া মফিজ বলেছেন: ১৩ বছর পূর্তিতে আন্তরিক শুভেচ্ছা। এতো পুরানো একটিভ ব্লগার সম্ভবতঃ ব্লগে খুব বেশী নাই। কামনা করি, আরো অনেক বছর ব্লগে আপনাকে পাবো (যদি ততোদিন আমি থাকি আরকি :) )

ও হ্যা, আপনার ভ্রমন-বৃত্তান্ত, ছবি সবই চমৎকার হয়েছে। শুধু এটুকুই নিশ্চয়ই বেড়াননি.....কাজেই আরো পর্ব আশা করতেই পারি, নাকি?

১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ বিকাল ৩:৩৭

শ।মসীর বলেছেন: আপনাকেও ধন্যবাদ সাথে থাকার জন্য ।

আশা করি আরো পর্ব লিখতে পারব :)

৯| ১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ রাত ১২:৩৪

আখেনাটেন বলেছেন: চমৎকার ভ্রমণ পোস্ট।

১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ বিকাল ৪:১৩

শ।মসীর বলেছেন: শুভকামনা

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.