নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

[email protected]

শ।মসীর

At present I am living in the consequences of a choice made earlier বেঁচে আছি এটাই আনন্দের.........।। ইচছা হয় সারাদিন ঘুরি পথ থেকে পথে ঘোরা হয়না..............................।।

শ।মসীর › বিস্তারিত পোস্টঃ

বাড়িওয়ালির অশরীরি মেয়ে - ১১তম পর্ব

২৪ শে নভেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৫৫



এই এলাকায় চলে আসা নিয়ে আম্মার ছেলে মেয়েরা খুব একটা খুশি ছিলনা । হউকনা নিজের বাড়ি, এখানেত তাদের পরিচিত বলতে কেউ নেই । তাদের বন্ধু বান্ধবরা সবাই তখনো আগের সেই সরকারি কোয়ার্টারেই থাকে । বিকেলে কিংবা সন্ধ্যায় তাদের মাথা খারাপ হয়ে যেত । তাদের পীড়াপিড়িতে এক সময় বাধ্য হয়ে গাড়ি কেনা হল । তারা খুশি কারন প্রতিদিন বিকেলে বন্ধুবান্ধবদের সাথে সময় কাটাতে চলে যেতে পারে । কিন্তু সমস্যা দেখা দিল অন্য জায়গায় । কোন ড্রাইভারই এক মাসের বেশী টিকেনা । এই ক্ষেত্রে পুরা দোষ আম্মার । এই নিয়ে ছেলে মেয়েদের সাথেও ওনার ঝামেলা বেঁধে যায় । আসলে আম্মারে নিয়ে চিঠিতে যে কথাগুলা লিখছে কোন টাই মিথ্যা না ।

আমারে গ্রাম থেকে নিয়া আসছেন এইটা আমার জন্য বিশাল একটা ব্যাপার । আর উনি কেন জানি আমার সাথে কোনদিনও খারাপ ব্যবহার করেন নাই । হয়ত নিজে আমারে নিয়া আসছেন বলে । কিন্তু মানুষ হিসেবে উনি খুব একটা সুবিধার না । সরকারি কোয়ার্টারে থাকাকালীন ও দেখছি ওনার সাথে কেউ বাধ্য না হলে মিশতনা । কোন দরকার ছাড়া কেউ আমাদের বাসায় ও আসতোনা । এর কারন ওনার স্বভাব । ওনি কারো ভাল দেখতে পারতেননা । সবার সাথেই কোন না কোন ঝামেলা লাগতই ওনার । অন্যের বাসার বুয়ারে ডেকে নানা কথা জিজ্ঞেস করতেন, তারপর উল্টাপাল্টা মন্তব্য একটা করে বসতেন । এই গুলো নিয়ে কোয়ার্টারে মাঝে মাঝেই ঝামেলা হত । চাচা সিনিয়র হওয়াতে হয়ত এইসব নিয়া অন্যারা পরে আর তেমন চিল্লাফাল্লা করতোনা ।

ওনার এইসব স্বভাবের কারনে চাচার সাথেও ওনার সম্পর্ক ভালনা । ঠিকমত কথা বার্তাও হয়না দুজনের । স্বামী স্ত্রী ছিলেন এককালে , এখন এক বাসায় থাকে এই আর কি । চাচা থাকেন দোতালায় বেড রুমে, আর উনি থাকেন নিচের তালায় । কেউ আসলে আগে থেকে বলেন ওনার পায়ের ব্যথার কারনে দোতালায় উঠতে পারেননা । পুরা বাসায় এই কারনে চারটা টিভি চলে । এখনও গেলে দেখবেন উপরে চাচা একা একা বসে জি বাংলা দেখতেছে, নিচে ও উনি জি বাংলাই দেখতেছেন । একসাথে তাদের টিভি দেখাও হয়না, সেটা একই চ্যানেল হলেও । খুবই নোংরা তার মুখ । মানুষকে গালাগালি করতে করতে এত নিচে নেমে যানযে, সেটা বলার অপেক্ষা রাখেনা । সোজা বাংলায় উনি কোন জাতের মহিলাই না । আগের এলাকায়তো ওনারে সবাই অসভ্য আর ইতর হিসেবেই চিনত ।

ড্রাইভারদের সাথে অযথা উনি ঝামেলা লাগাইতেন । সবাইরে সন্দেহ করা ছিল ওনার রোগ। ওনার ধারনা উনি ছাড়া আর কেউ ভাল মানুষ না । উনি যা ভাবেন কিংবা বলেন সেটাই ঠিক । ওনি ধরেই নিছেন সব ড্রাইভার টাকা চুরি করে, তেল গ্যাস যা নেই তার চেয়ে বেশী বিল করে আনে । চাচার এই সব ব্যাপারে মাথা ঘামানোর মত সময় ছিলনা । এই সুযোগে উনি ঝামেলা পাকাতেন। গাড়িতে চড়লেই ড্রাইভারদের জেরা শুরু করে দিতেন। ড্রাইভাররা এক দুদিন কিছু না বললেও পরে বিরক্ত হয়ে উল্টাপাল্টা উত্তর দিত আর চাকরি ছেড়ে চলে যেত । এই নিয়ে বাসায়ও ঝামেলা । ছেলে মেয়েরা ওনার এইসব কাজে বিরক্ত । তারা কেউ ওনার সাথে ঠিকমত কথা বার্তা বলায় ছেড়ে দিয়েছিল , কারন কথা বললেই ঝামেলা লাগত । ড্রাইভার নিয়ে এসব ঝামেলার কারনে ছাড়া বাসায় ঘোষনা দিলেন উনি ছাড়া ড্রাইভারদের সাথে কেউ কোন কথা বলতে পারবেনা , কিছু বলতে হলে ওনাকে বলতে হবে, উনি সেই অনুযায়ি ব্যবস্হা নিবেন । সবাই কেবল গাড়িতে চড়ে যাবে আর আসবে ।

আশরাফুলকেত চিনেন , দেখছেন । তার বাড়িও আমাদের ঐদিকেই । চাচার পরিচিত ফ্যামিলির ছেলে । ক্লাশ টেন পর্যন্ত লেখাপড়া করে পরে আর পড়ে নাই । কার মাধ্যমে যেন এই বাসায় আসে । চাচা ওকে দারোয়ানের চাকরিতে নিয়োগ দেন। এর আগে দারোয়ান নিয়েও ড্রাইভারের মত অবস্হা । আম্মা তাদেরকে খানা দানা দিবেননা, তারা নিজেরা রান্না করে খেতে হবে । তার উপর ফালতু কথা ত আছেই, পান থেকে চুন খসলেই গালাগালি । কেউই স্হায়ী হয়না । শেষমেষ এই আশরাফুলের আগমন । তারচেয়ে অবাক করা বিষয় হচ্ছে এরে কেন যেন আম্মার পছন্দ হয়ে গিয়েছিল । এলাকার বলে কিনা কে যানে, ওরে তিনি গালাগালি করতেননা । আশরাফুলও চালাক, সেও কেমনে কেমনে জানি আম্মার মন জয় করে নিয়েছিল । আম্মার বাজার সদাই থেকে শুরু করে যখন যা লাগুক সে হাজির । মজার ব্যাপার ছিল আশরাফুল দেদারছে টাকা মারত, যেটা আম্মা ধরতেও পারতেননা । তিনি কিছুদিন পরে আশরাফুলরে বুদ্ধী দিলেন গাড়ি চালানো শিখতে, তাহলে তাকে ড্রাইভার হিসেবে নিয়োগ দেবেন । ওনার উতসাহে আশরাফুল এখন ড্রাইভার কাম ম্যানেজার, সবই আসলে সে । বিল্ডিং এর এখনত সব দেখাশোনার কাজই সে করে ।

আগেই লেখাপড়া মোটামুটি ছেড়ে দিয়েছিলাম । আম্মা মাঝে মাঝে বকাঝকা করতেন । এখানে আসার পর তাও বন্ধ হয়ে গেল । কারন আশেপাশে কোন স্কুল নাই । সারাদিন আমার কোন কাজ নেই । টিভি দেখি, মাঝে মাঝে সব রান্নাবান্না নিজে করি । এই বিল্ডিং এর মজার দিক কি জানেন, এইটার যে ডিজাইন করছে তার কোন কস্ট করতে হয় নাই । আম্মা দশজনের বাড়ির থেকে একটু একটু নিয়া এইটা বানাইছেন । তিনি ঐ লোকেরে নিয়া বিভিন্ন পরিচিতজনের বাড়িতে যাইতেন আর সেখানের যেটা তার আগে থেকে পছন্দ ছিল সেটার মত করে করতে বলতেন । কারো বাড়ির সিঁড়ি, কারো বাড়ির বাথরুম, কারো ব্যালকনি, সব যোগ করে এই বাড়ি বানানো হইছে । কাজ নাই, তাই আম্মা আমারে একটা কাজ দিলেন । উপরের দিকের তিন তালার ছাদ ঢালায় হলেও বাকি কাজ তখনো বাকি । আমার কাজ হল দিনে চার পাঁচবার ঘুরে ঘুরে দেখে যাওয়া আর তারে রিপোর্ট করা যে মিস্ত্রীরা ঠিক মত কাজ করছে কিনা, নাকি বসে বসে আড্ডা দিচ্ছে । তিনি এসে যদি দেখতেন তারা কাজ না করে গল্প করছে, তাইলে সেদিন তাদের কপালে শনি ছিল । গালাগালি বকাঝকা একটাও মাটিতে পড়তোনা । আমিও সানন্দে এই কাজ নিয়ে নিলাম । একদিন উপরে যাব দেখতে, এমন সময় তিনি আমারে বললেন, তুই একা যাইসনা, আশরাফুলরে সাথে করে নিয়ে যা । এত্তগুলা পুরুষ মাইনষের মাঝে একলা যাওনের দরকার নাই ।

আশরাফুলরে আমার তেমন একটা পছন্দ ছিলনা । ওর সাথে পারতপক্ষে আমি খুব একটা কথাও বলতামনা । মাঝে মাঝে আমি বাজার করতে গেলে ওরে আমার সাথে নিয়ে যাইতে হইত আম্মার নির্দেশে । তেমন আলগা কথাবার্তা হতোনা । তো এখনও আম্মার নির্দেশে ওরে ডেকে নিয়ে এক সাথে উপরে যাইতাম মিস্ত্রীদের কাজ কর্ম দেখার জন্য । প্রথম কয়দিন সে বিরক্তি নিয়ে উপরে উঠে আসত । পরের দিকে খেয়াল করলাম সেও মনে হয় আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করে কখন আমি তাকে ডাক দিব । ডাক দেয়া মাত্রই সে হাজির । আমি তাকে আশরাফুল ভাই বলে ডাকতাম। আমার সাথে ছাদে গেলে তখন তার ভাবভঙ্গী চেঞ্জ হয়ে যেত । যারা কাজ করত সে তাদের সাথে বেশ হম্বীতম্বি শুরু করে দিত । এটা করেন, ওটা করেন, এই জায়গা পরিষ্কার করেন, নানা রকম উপদেশ বের হয়ে আসত তার মুখ থেকে । প্রথম প্রথম সাথে করে যাওয়াই হত, আমি তার সাথে তেমন কোন কথা বার্তা বলতামনা । আস্তে আস্তে এটাতে পরিবর্তন আসল । সারাদিন বাসায়তো আর তেমন কথাবার্তা বলা হতোনা, সুতরাং আমিও তার সাথে দুচার কথা বলা শুরু করলাম ।

কথায় বলে মানুষ অভ্যাসের দাস । প্রতিদিনের এই মিস্ত্রীদের কাজ কর্ম দেখতে যাওয়ার অভ্যাস পেয়ে বসল আমাকে । ঐ সময় বাসা থেকে একটু বের হতে পারি, খোলা ছাদে ঘুরতে পারি এটাও একটা কারন । সাথে সাথে আরেকটা জিনিস হল কাজটা একা করতেও আমার ভাল লাগেনা । যেদিন আশরাফুল কোন কারনে বাসায় নাই বা কোন কাজে গেছে সেই সময়টাতে ছাদে যাবার ইচ্ছে মনে জাগলেও আমি যাবার ব্যাপারে তেমন একটা আগ্রহ পেতামনা । বুঝতে পারছিলামনা, আশরাফুলের প্রতি অপছন্দের মনোভাবটা কিকরে যেন উবে গিয়েছিল । ছাদে কাজ দেখার জন্য গিয়ে আমি আসলে তার সাথে হেঁটে হেঁটে গল্প করতাম। সময়টা বেশ উপভোগও করতাম । হতে পারে ঐসময়ের বয়সের কারনে এই ভাললাগা । গল্পের কোন বাঁধা ধরা টপিকস না থাকলেও বেশীরভাগ সময় আমরা বিল্ডিং বানানোর বিষয়াদি নিয়েই কথা বলতাম । আসলে আমি একটা না একটা প্রশ্ন করতাম আর আশরাফুল সেটার উত্তর দিত । কি করে টাইলস বসানো হয়, কি করে পানির পাইপ বসানো হয়, কারেন্টের তার কেমনে লাগানো হয়- এই টাইপ হাবিজাবি যা মনে আসত সবই জানতে চাইতাম । সেও খুব সুন্দর করে আমাকে বুঝিয়ে দিত । সম্ভবত এই ব্যাপারটা, সে যা তা না বলে আমাকে আসলেই ব্যাপারটা বুঝাত, তার প্রতি আমার মনোভাব পরিবর্তনে ভূমিকা রাখে ।
যাই হউক তার সঙ্গ আমি তখন ভালই উপভোগ করা শুরু করলাম । সেও যে উপভোগ করে তাও আমি বুঝতে পারতাম ।

সময় বয়ে যাচ্ছে, সেই সাথে আমাদের সময় কাটানোও । একসময় আমি আশরাফুলকে নিয়ে আরো গভীরভাবে ভাবা শুরু করলাম । ব্যাপারটা আমার কাছে অগ্হনযোগ্যও মনে হয় নাই । আল্টিমেটলি ঘর সংসারতো করতেই হবে, তো চেনা জানা এমন কাউকে করাই ভাল। তাকে আমার ধীরে ধীরে ভাল লেগে গেছে, সুতরাং তাকে নিয়ে আরো বেশীদূর চিন্তা করায় যায় । তার আচার আচরনেও আমি বুঝতে পারি সেও এমনটাই ভাবছে । আম্মাও হয়ত এই ব্যাপারে বেশী একটা আপত্তি করবেন বলে আমার মনে হয়নি । আশরাফুলকে তিনি এমনিতেই পছন্দ করেন । রেডিমেড কিছু পেয়ে গেলে আমাকে নিয়ে তাকে আর তেমন ঝামেলায় ও পরতে হবেনা । কেবল একটা বিষয় নিয়ে আমি দোটানায় ভুগতাম। আশরাফুল তখনও এখানে দারোয়ানির কাজ করে, তার ড্রাইভিং শেখা তখনও শেষ হয় নাই ।

একটা ড্রাইভারকে বিয়ে করা যায়, সমাজে তার একটা পরিচয় আছে, কিন্তু একটা দারোয়ানকে বিয়ে করার আসলে কিছু নাই । আমার কাছে দারোয়ানের কাজ যারা করে তাদেরকে সমাজের সবচেয়ে অকর্মণ্য শ্রেণীর মনে হয় । অনেকেই হয়ত দেশে আর কোন চাকরি নেই বলে বাধ্য হয়ে এই কাজ করছে, তবে বেশীর ভাগ গুলাকে আমার মনে হয় নিজেদের আলসেমির কারনেই তারা এখনও এই কাজ করছে । আমি ব্যাপারটা নিয়ে আরো অনেক সামনের কথা ভাবতে শুরু করে দিয়েছিলাম । দারোয়ানের চেয়ে ড্রাইভারের বউ এর পজিশন নিশ্চিত ভাল হবে এবং উপরে হবে । আর তাই আমি তাকে নিয়মিত উতসাহ দিতে থাকলাম , তার ড্রাইভিং শেখার আর কতদূর বাকি জানতে চাইতাম। প্রতিদিন এক ঘন্টা করে ট্রেনিং করে আসত সে ।

সময় কিংবা ঘনিষ্ঠতা আসলে সবকিছু বদলে দেয় । এক সময় যে আশরাফুলকে আমি দেখতে পারতামনা, আশেপাশে দেখলে বরং বিরক্ত লাগত এখন সে আশরাফুলের জন্য আমি মাঝে মাঝে বাসার ভাল খাবারের কিছু অংশ সবার অগোচরে আলাদা করে রেখে দিই । আমি বুঝতে পারি তার প্রতি আমার একধরনের মমতা জন্মে গেছে । বিশেষ কোন কারনে এই মমতা না, প্রতিদিন একটু একটু করে সময় কাটানোর কারনেই এই মমতা , বলা যায় অভ্যাসটাই এই মমতা তৈরি করে দিয়েছে । তাকে প্রতিদিন না দেখলে, দুচারটা কথা না বললে আমার দিনটাই অসম্পূর্ণ থেকে যায় । সে দুই তিন দিনের জন্য বাড়ি গেলে আমার অস্হির লাগা শুরু হয় , যেটা কাউকে বলাও যায়না, বলতেও পারিনা , এমনকি আশরাফুলকেও না । কয়েক মাসের মাঝে বিল্ডিং এর কাজ শেষ হয়ে যায় , আমাদের ছাদে উঠে সব দেখাশোনার ও আর দরকার পড়েনা । কিন্তু জীবনটাত আসলে একটা অভ্যাস , সে অভ্যাসের টানেই আমাদের দেখা হওয়া থেমে যাবার কোন সুযোগ আসলে আর থাকেনা । আমি বের হয়ে আশরাফুলকে ডাক দেই, সেও অপেক্ষায় থাকে । আগে কস্ট করে উপরে উঠতে হত, এখন লিফটে করে আমরা এক টানে উপরে উঠে যায় ।

টিভি নাটকের মতই লিফটে উঠার সময় একদিন আমি আশরাফুলের হাতটা ধরে ফেললাম , ইচ্ছা করেই । সে কোন প্রতিক্রিয়া দেখালনা । স্বাভাবিক থাকার চেস্টা করল, যদিও আমি তার শরীরের হালকা কেঁপে উঠা টের পেলাম । ভেতরে ভেতরে আমিও যে কাঁপছিলাম । আস্তে আস্তে হাত ধরাটাও নিয়মিত হয়ে গেল । একদিন আমরা দুইজন যথারীতি ছাদে হাঁটাহাঁটি করে নিচে নামলাম, এই সময়টা কিন্তু খুবই অল্প, বড়জোড় দশ মিনিটের মতন আমরা একসাথে থাকতাম । আমি এক তালায় নেমে গেলাম, আর আশরাফুল গ্রাউন্ডফ্লোরে । কপাল এতই খারাপ , আম্মা তখন তারে খোঁজার জন্য নিচে নেমে গেছেন। তারে লিফট থেকে বের হতে দেখে তিনি তার আসল রুপে ফিরে গেলেন । নিচের গেট খোলা রেখে উপরে যাবার কারনে যাচ্ছেতাই ভাবে গালাগালি করলেন । উপর থেকে শুনে আমার এত মন খারাপ হয়েছিল যে চোখ ভর্তি করে কান্না চলে এসেছিল । বাথরুমে গিয়ে অনেকক্ষন ফুঁপিয়ে কেঁদেছিলামও ।
বিকালের দিকে আম্মা বাইরে গেলেন, বাসায় আমি একা । আস্তে করে নিচে নেমে আসলাম । তখন নিচে এখনকার মত এত হাউকাউ ছিলনা । রুম গুলো ভাড়া দেয়াই ছিল, তারা বেশীরভাগই চাকুরিজীবি কিংবা অন্য বিল্ডিং এর ড্রাইভার , রাতের আগে কেউ ফিরতেননা । নীচটা কেমন যেন গুমোট হয়ে আছে, আম্মার চিতকার চেঁচামিচের কারনে মনে হচ্ছিল পরিবেশ অনেক ভারী হয়ে আছে তখনও । আমি আস্তে করে গেটের পাশে আশরাফুলের রুমের সামনে চলে আসলাম। দরজা খোলাই ছিল, আশরাফুল বিছানায় শুয়ে ছিল । আমাকে দেখে উঠে বসল । আম্মার গালাগালিতে আমার যতটা খারাপ লেগেছিল, তার মনে হয় ততটা লাগেনি । তার চেহারায় এর কোন ছাপ দেখলামনা । ব্যাপারটার সাথে যেহেতু তার পূর্ব পরিচয় ছিল তাই মনে হয় গায়ে মাখেনি । কিন্তু আজকের ব্যাপারটা আমার কারনে হওয়ায় আমার কস্ট লাগা একটুও কমছিলনা ।

আমি সোজা তার দিকে এগিয়ে গেলাম । দেখলাম সে কেমন যেন আড়স্ট হয়ে যাচ্ছে । কোন কথা না বলে , কোন দিকে না তাকিয়ে দুহাত দিয়ে তাকে জড়িয়ে ধরে লম্বা একটা চুমু দিলাম । দুজনেই হতবাক আমি বুঝছিলাম,সেও আমাকে কাছে টেনে নিয়েছিল । কারো মুখে কোন কথা ছিলনা, কথা হয়ওনি । কতসময় ছিল সেটা বলতে পারবোনা, খুব কমওনা বেশী ওনা শিউর । তারপর আমি সোজা ঘুরে বাসায় চলে এসেছিলাম । একবারও পেছনে ফিরে তাকায়নি । সে কি করছিল বা তাকিয়ে ছিল কিনা তাও দেখতে চাইনি ।

এই ঘটনার পর থেকে সব কিছু কেমন যেন লাগতেছিল। পনের ষোল বছরের আমি হঠাত করে যেন অনেক বড় হয়ে গিয়েছিলাম । সেই সাথে আশরাফুল মনে হয় পুরোপুরি আমার মাথায় গেঁথে গিয়েছিল। সারাক্ষনই তার চিন্তা মাথায় ঘুরে । নিচে নামলেই তার সাথে দেখা হবে, কিন্তু কেন জানি আমার তার মুখোমুখি হতে ইচ্ছা করছিলনা । তিন চারদিন তার সাথে আমার দেখা হয়নি , জানিনা এই সময় তার কেমন লেগেছিল, কখনো জানতেও চাইনি । প্রতিদিনই সে বেশ কয়েকবার উপরে এসেছে কোন না কোন কাজে, অন্য সময় হলে বেলের শব্দ পেলে আমিই যেতাম দরজা খুলতে । তার কারন ছিল যদি আশরাফুল হয় , তবে তাকে একবার দেখতে পাব, দুই একটা কথা হবে । এই কয়দিন আমি একবারও দরজা খুলতে যাইনি, বাসায় যে খালা কাজ করতেন তাকে বলেছি দরজা খুলে দিতে, আমি রান্না ঘরে কিংবা অন্য রুমে থাকতাম ।

নিজেকে আর ধরে রাখতে পারিনি এরপর । তাকে দেখার জন্য মন উতলা হয়ে গিয়েছিল । আম্মা দুপুরের পরে ঘুমাচ্ছেন দেখে আমি নিচে নেমে আসলাম । আশরাফুল গেটের কাছেই ছিল । সে ফেলফেল করে আমার দিকে তাকিয়ে আছে । বুঝলাম আমার মত তারও কস্ট হচ্ছিল । আমিই গেট টা লাগিয়ে দিলাম । তাকে নিয়ে লিফটে উঠলাম । আবারও দীর্ঘ চুমু খেলাম আমরা । কয়বার যে লিফটে উঠা নামা করলাম সেটা গনে দেখার চিন্তা তখন মাথায় আসেনি । সে হাসিমুখে আমাকে বিদায় দিল ।বাসায় এসে দেখি আম্মা নাক ডেকে ঘুমাচ্ছেন, নিজেকে কেমন হালকা লাগল । সেই সাথে সুখ সুখ একটা অনুভূতিও ভর করল আমার মাঝে । একটা গল্পের বই নিয়ে বিছানায় শুয়ে শুয়ে পড়তে লাগলাম । প্রেমের উপন্যাস, প্রেম টাকেই তখন কেবল জীবনের একমাত্র সত্য মনে হল । সবকিছু হারিয়ে ফেলা সে আমার তখন মনে হল কেবল এই প্রেমের জন্যই বেঁচে থাকা যায় । এই প্রেম না থাকলে বেঁচে থাকা অর্থহীন ।

আমি তখন প্রতিদিন স্বপ্ন বুনে চলি ওকে নিয়ে। ড্রাইভিংটা তাড়াতাড়ি শিখে ফেলতে উতসাহ দেই । সে যে খুব বেশী সময় পায় তাও না । আম্মা কিছু একটা আঁচ করতে পারেন হয়ত, তবে সেটা ঠিক কিনা তা নিয়ে তিনি নিজেও সংশয়ে , তাই আমাকে তেমন কিছু বলেন না । মাঝে মাঝে খালি বলেন আশরাফুলের সাথে এত কথা বলার কি আছে । আম্মাকে কি করে বুঝাই আমার সব কথায় যে এখন তাকে ঘিরে, তার সাথে, শয়নে স্বপনে যেকোন সময়েই । আমার ধারনা শুরতে ব্যাপারটা নিয়ে আম্মা হাউকাউ করবেন, এইটা তার চরিত্রগত স্বভাব, তারপর এটা মেনেও নিবেন । ভাববেন ভালই হল একসাথে থাকবে, একজন ঘরদোর সামলে দিবে আরেকজন গাড়ি চালাবে , হা হা হা ।

স্বপ্নের ফানুস উড়িয়ে দিয়ে আমি ভাবি আম্মা হয়ত নিচের একটা রুমে আমাদেরকে থাকতে দিবেন । আশরাফুলের অপেক্ষায় সেখানে বসে আমি দিন গুনতে থাকব । ব্যাপারটা আম্মার জন্য ভাল, আমার জন্যতো বটেই ।আম্মার কাছাকাছিও থাকা হল, নিজের পছন্দের পাত্রকে বিয়েও করা যাবে তাহলে । আমাদের ঘনিষ্ঠতা বেড়ে চলে, আমরা আগের চেয়েও বেশী সময় কাছাকাছি থাকার চেস্টা করি, অনেক গল্প করি । আর..........হা হা হা ।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২৪ শে নভেম্বর, ২০২০ রাত ৮:৪৪

শায়মা বলেছেন: এটা কি ভৌতিক গল্প ভাইয়া???

আচ্ছা প্রথম থেকে পড়ে আসি.....

২৫ শে নভেম্বর, ২০২০ রাত ৯:২৫

শ।মসীর বলেছেন: অপেক্ষায় :)

২| ২৪ শে নভেম্বর, ২০২০ রাত ১০:২৭

রাজীব নুর বলেছেন: ভালোবাসা প্রকাশের সবচেয়ে বড় মাধ্যমই হলো চুমু।

২৫ শে নভেম্বর, ২০২০ রাত ৯:২৬

শ।মসীর বলেছেন: হা হা হা :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.