নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
At present I am living in the consequences of a choice made earlier বেঁচে আছি এটাই আনন্দের.........।। ইচছা হয় সারাদিন ঘুরি পথ থেকে পথে ঘোরা হয়না..............................।।
"তোমার লেক্সাসটাত পুরোনো মডেলের " ! এই একটা কথার খেসারত দিতে হয়েছিল আমাদের পরবর্তী ঘন্টা খানেক । ডেজার্ট সাফারিতে যাবার জন্য এক পাকিস্তানি চালকের গাড়িতে চেপে বসেছিলাম আমরা । হেলেদুলে চালানো চালক কে যখন বেশিরভাগ গাড়িই পাশ কাটিয়ে চলে যাচ্ছিল , তখন জামিল বলে বসল ঐ কথা , আর তার কিছুক্ষন পর শুরু হল গাড়ির শক্তি পরীক্ষা । গাড়ির ভেতরে বিশেষ কায়দায় ধরে বসার জন্য পাইপ বসানো আছে । অল্পকিছুক্ষন আগে লাঞ্চের বদলে বার্গার আর কোক খাওয়া আমাদের চলছে গাড়ির ভেতরে টিকে থাকা তথা বাড়িটাড়ি না খাওয়ার প্রানপন লড়াই আর সাথে জামিল কে গালাগালি ।
নানা রকম প্যাকেজের মাঝে আমরা সাফারির প্রিমিয়াম প্যাকেজ নিয়েছিলাম । এতে খাওয়া নাকি দিবে সবার আগে, বসাবে সবার সামনে, নাচানাচি দেখা যাবে কাছ থেকে আর উটের পিঠে চড়ে ছবি তুলতে দিবে ! শহুরে ইট পাথরের দুবাই ফেলে একসময় আমরা নেমে এলাম মরুভূমিতে ।
দুবাই, আবুধাবী কিংবা শারজা - এদের সবকিছুই আসলে মরুভূমি । যত আকাশছোঁয়া প্রাসাদ কিংবা যা কিছুই তারা বানিয়েছে সবই তো আসলে মরুভূমির উপরেই । বলা চলে আস্তে আস্ত মরুভূমির পরিমান কমছে, যেমনটা আমাদের চাষের জমি কিংবা বন ।
দুবাই এর ডেজার্ট সাফারি আর আমাদের দেশে গাজীপুরের রিসোর্ট এ ঘুরতে যাওয়া আসলে একি টাইপ ব্যাপার । শহরের শেষ সীমায় সবুজের সমারোহে হারিয়ে যাওয়ার মতই দুবাই এর উপকন্ঠে মরভূমি দেখার জন্য ডেজার্ট সাফারি । মনে মনে আমি ভেবেছিলাম হয়ত এমন কোন জায়গায় নিয়ে যাবে যেখান থেকে চারপাশে কিছুই আর দেখা যাবেনা, কেবল বালি আর বালি ! আদৌ ব্যাপারটা তা না । গাড়ি যখন বালির খাদ থেকে বালির টিলার উপর উঠে আসছিল তখন ঠিকি শহরের উঁচু বিল্ডিং চোখে পড়ছিল ! মরুভুমির বুকে কিছুদূর পরপর একটা এলাকা নিয়ে এক একটা সাফারি অপারেটরের আস্তানা । সেখানে চাইলে রাত্রি যাপনের জন্য ছোট ছোট কটেজ, একটা স্টেজ আর ছবি তোলার কিছু আয়োজন । সবগুলো আসলে একি টাইপের ই ।
আমাদের ড্রাইভার তার সম্ভারে থাকা এক একটা কারিশমা দেখাতে দেখাতে এগিয়ে চলছে । স্পিডিং করে হার্ড ব্রেক, পুরো গাড়ির চারপাশ বালুতে ঢেকে যাওয়া, ধুম করে টিলার উপর থেকে বালির খাদে লাফ দেয়া , নানা কসরত একটার পর একটা । আমরা ভাবতেছি কখন যে শেষ হবে এই যাত্রা ।
রিসোর্ট এ পৌঁছার পর সে আরেক ব্যাপার । আমাদের প্রিমিয়াম প্যাকেজ তাই আমরা উটের পিঠে চড়ে ছবি তুলতে পারব আর ১০ মিটার চড়তে পারব । এর বেশি গেলে আলাদা টাকা । উটের পিঠে চড়ে ছবি তুলে আমরা ১০ মিটার গিয়ে নেমে পড়লাম ! বেচারা উটের রাখাল খুবই মনোক্ষুন্ন হয়েছে ব্যাপারটাই । পানি স্ন্যাকস কোক ফান্টা খাবার শেষে শুরু হল শো । শুরুতেই এক যুবক নানা রকম নৃত্য পরিবেশন করে গেল ।
বেলী ডেন্স ই মূল আকর্ষন এই ডেজার্ট সাফারির । এইটা যে মানুষের কেন এত ভাল লাগে এই যুগে এসেও সেটাই আমি বুঝলামনা !!! যারা ডেজার্ট সাফারি পর্যন্ত গিয়েছে, জগত সংসারের সব ড্যান্স অনলাইনে আগেই তাদের দেখা হয়ে যাবার কথা
সাফারির খাওয়া দাওয়াটা খুব ভাল ছিল , দিনশেষে এটাই হচ্ছে আসল কথা , আর সবচেয়ে শান্তির ব্যাপার ছিল ফিরতি পথের নিস্তরঙ্গ যাত্রা , নাহলে খবর ই ছিল ।
পরদিন আমাদের গন্তব্য শারজাহ । ট্রাভেলার হিসেবে আমি খুব বাজে প্রকৃতির । আমার টার্গেট থাকে কোন একটা জায়গায় গেলে সেখানকার সম্ভাব্য সবকিছু একেবারে দেখে আসা, যাতে ঐ জায়গায় আর যাবার ইচ্ছা না হয়, অন্য কোন জায়গায় যেতে পারি । শারজাহ পরিকল্পনায় যখন সাফারি পার্কের কথা বললাম শুরতে বন্ধুরা গাইগুই করলেও পরে সে পথেই আমরা গেলাম ।
আফ্রিকার বাইরে বৃহত্তম আফ্রিকান সাফারি - এই থিম নিয়ে তৈরি শারজাহ সাফারি । আট বর্গকিলোমিটার এলাকা বিস্ত্বত, ১২০ প্রজাতির প্রাণীর মুক্ত বিচরন । বলা চলে পুরো আফ্রিকান সাফারির একটা মিনি ভার্সন । শেখদের সব কিছু বড় করে করার শখ, এটা দেখলে আবার ও সে কথাই প্রমানিত হয় । এক লাখ আফ্রিকান গাছ লাগিয়ে, আফ্রিকা থেকে মাটি এনে , তারা বানিয়ে ফেলেছে আফ্রিকার নামকরা সব সাফারির রেপ্লিকা । এ কর্মযজ্ঞ না দেখলে বিশ্বাস করা কঠিন । ন্যাশনাল জিউগ্রাফিতে আপনি আফ্রিকার যেসব অঞ্চলের কথা শুনে থাকবেন তার সবগুলোই এখানে পাবেন । সাভানা থে সেরেংগাটি কিংবা জাঞ্জিবার , দেশের কথা ভাবলে মৌরিতানিয়া থেকে তানজানিয়া , কেনিয়া থেকে কালাহারি ! এইসব দেখে মনে হবে লাইফে টাকা থাকলে কি না করে ফেলা যায়
মরুভূমির বুকে জাস্ট টাকার জোরে পুরো আফ্রিকা বানিয়ে ফেলেছে । প্রায় সাড়ে তিন ঘন্টা লেগেছিল এটা গাড়িতে করে ঘুরে দেখতে !
সেখান থেকে বের হয়ে আমরা যাব শারজাহ শহরে । শাকিল ভাই লাঞ্চ না করে বসে আছেন আমরা কখন আসব । পথে দুই রাশিয়ান লিফট চাইল , তাদেরকে কোথাও যাতে নামিয়ে দেই যেখান থেকে ট্যাক্সি/বাস কিছু একটা পাওয়া যাবে । জানা গেল তারা জব করে মরিশাসের কোন এক কোম্পানিতে, কিন্তু থাকে দুবাইতে, কারন কোন ট্যাক্স দেয়া লাগেনা ।
দুবাই আবুধাবীর মত ঝা চকচকে না হলেও শারজাহর মাঝে একটা সরল সৌন্দর্য আছে । আর শারজাত তো মনে হয় আমাদের কত চেনা একটা শহর , ক্রিকেটের কল্যানে । শারজাহ স্টেডিয়াম দিয়েই চিনি এই শহরকে আমরা সেই কবে থেকে । শহরে ঢুকতেই চোখে পড়বে ইউনিভার্সিটি সিটি , অনেক বিদেশী ভার্সিটির ক্যাম্পাস আছে সেখানে ।
ভার্সিটির শান্ত সৌম্য সিনিয়র শাকিল ভাই, সদা হাসিমুখ যার । প্রায় একযুগ পরে দেখা হবে আমাদের । দুপুর গড়িয়ে বিকেল হয় হয় । সবাই না খেয়ে অপেক্ষায়, শাকিল ভাই গুগল ম্যাপে এক রেস্টুরেন্টের লিংক পাঠিয়ে বললেন সোজা সেখানে যাও, আমিও আসতেছি । বান্নু বীফ নাল্লী পোলাও এ গিয়ে হাজির হলাম আমরা । মজাদার নাল্লী পোলাও খেতে খেতে সন্ধ্যা । কত আলাপ, আর দুবাইতে কোথায় কি খাব, কই যাব সব গাইড লাইনের পাশাপশি ভাই বললেন দেশে ফেরার আগে আরেকবার যেন শারজাহ ঘুরে যাই, দুবাই থেকে মাত্র ৪০ কিলো যেহেতু । নানা দিকে ঘুরাঘুরিতে সে সময় আর করতে পারি নাই , যদিও প্রতিদিন ই শাকিল ভাইয়ের সাথে কথা হত কি খাব, কই খাব এইসব নিয়ে
দুবাই ফিরে আসলাম রাতে । এসে দেখি আমার ফেসবুক একাউন্ট লক । শারজাহ সাফারিতে থাকা কালীন একটা চেক ইন দিয়েছিলাম , তানজানিয়ায় আছি, আফ্রিকান সাফারিতে । ফেসবুক জানাল একাউন্টে সাসপিশাচ একটিভিটি হচ্ছে , এই আফ্রিকা এই দুবাই । অলরেডি লগ ইন আছে এমন একটা পিসি থেকে লগইন না করলে তারা ফেসবুকে ঢুকতে দিবেনা !!!
৩০ শে জানুয়ারি, ২০২৪ সকাল ১১:৫০
শ।মসীর বলেছেন: ব্লগে আসা হয় খুব ই কম, আর এসে যদি পুরোনো ভাই ব্রাদারদের দেখা পাই তাহলে অন্য রকম ভাল লাগা কাজ করে । আর মনে পড়ে কি দারুন আনন্দময় ছিল আমাদের সেই সব দিন গুলো
শুভকামনা দাদা, আপনিও ভাল থাকুন । ।
২| ৩০ শে জানুয়ারি, ২০২৪ সকাল ৯:৩৮
লাইলী আরজুমান খানম লায়লা বলেছেন: বহু মাস-বছর পর আপনার পোস্ট পড়লাম। অসাধারণ একটি পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছেন। পুরাতন ব্লগারদের আনাগোনা ব্লগে খুবই কম -- যাইহোক আপনার পোস্ট পেয়ে শান্তি পেলাম।
শুভকামনা রইলো নিরন্তর।
৩০ শে জানুয়ারি, ২০২৪ দুপুর ১:১৮
শ।মসীর বলেছেন: আপনার কমেন্ট পেয়ে ও ভাল লাগল
আসাই হয়না এখন ব্লগে
ভাল থাকবেন, শুভকামনা । ।
৩| ৩০ শে জানুয়ারি, ২০২৪ সকাল ৯:৫৯
নয়ন বড়ুয়া বলেছেন: ছবি সব চমৎকার...
৩০ শে জানুয়ারি, ২০২৪ দুপুর ১:১৯
শ।মসীর বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ
৪| ৩০ শে জানুয়ারি, ২০২৪ সকাল ১১:০১
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:
আরব আমিরাতে কেন গেলেন!
৩০ শে জানুয়ারি, ২০২৪ দুপুর ১:২১
শ।মসীর বলেছেন: একটা টেকনোলজি শো ছিল, সাথে ঘুরেও আসলাম । ।
৫| ৩০ শে জানুয়ারি, ২০২৪ সকাল ১১:২৩
এম ডি মুসা বলেছেন: এই নৃত্য কোন দেশের? ছবিটি আমি আরব আমিরাত গেছি! আজমান শহরে ছিলাম বেশ কিছুদিন
৩০ শে জানুয়ারি, ২০২৪ দুপুর ১:২২
শ।মসীর বলেছেন: দুবাই ডেজার্ট সাফারিতে .........
৬| ৩০ শে জানুয়ারি, ২০২৪ দুপুর ১২:১২
মোগল সম্রাট বলেছেন:
ভ্রমন বিষয়ক সুন্দর পোষ্ট । পড়ে মজা লাগে।
৩০ শে জানুয়ারি, ২০২৪ দুপুর ১:২২
শ।মসীর বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ । ।
৭| ৩০ শে জানুয়ারি, ২০২৪ বিকাল ৩:২৬
রাজীব নুর বলেছেন: ভ্রমন কাহিনী আমার পছন্দ।
০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ সকাল ১১:২৬
শ।মসীর বলেছেন: ভালবাসা ভাই
৮| ৩০ শে জানুয়ারি, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৩২
বিজন রয় বলেছেন: অনেক সুন্দর পোস্ট।
নিয়মিত লিখতে থাকুন প্রিয় ব্লগার।
০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ সকাল ১১:৩৪
শ।মসীর বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ ।
৯| ৩০ শে জানুয়ারি, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৫৮
মেঠোপথ২৩ বলেছেন: খুব ভাল লাগল এই ভ্রমন ব্লগ। দারুন সব ছবি ও ঝরঝরে বর্ননা
০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ সকাল ১১:৪৯
শ।মসীর বলেছেন: শুভকামনা । ।
১০| ৩০ শে জানুয়ারি, ২০২৪ রাত ৮:০২
করুণাধারা বলেছেন: ট্যাক্সি চালক কোন দেশীয় ছিল?
এই সাফারি আর বেলি ড্যান্সে কোন মহিলা দর্শক ছিলেন কি?
০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ সকাল ১১:৫০
শ।মসীর বলেছেন: পাকিস্তানি ড্রাইভার ।
অনেক মহিলা ছিল, ভারতীয়, চাইনিজ, আরব । ।
১১| ৩০ শে জানুয়ারি, ২০২৪ রাত ১০:১৮
ঢাবিয়ান বলেছেন: মরুভুমিতে গোধুলির রঙ এর খেলা খুব ভাল লাগল।
০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ সকাল ১১:৫০
শ।মসীর বলেছেন: ধন্যবাদ । ।
©somewhere in net ltd.
১| ৩০ শে জানুয়ারি, ২০২৪ সকাল ৮:৪৫
শেরজা তপন বলেছেন: প্রিয় পুরনো ব্লগারের দারুন একটা ভ্রমণ পোস্ট! দেখেই লগ ইন করলাম, দুবাই সারজা আমার অনেক পরিচিত শহর। যদিও প্রথমবার সারজায় গিয়েছিলাম প্রায় ৩৪ বছর আগে আর দুবাইতে থেকে ছিলাম ২৫ বছর আগে তখন এসবের কিছুই ছিল না!
আপনার সাথে আমিও ঘুরে আসলাম সব জায়গায় দারুন লাগলো ধন্যবাদ। ভালো থাকুন নিয়মিত দেখুন ব্লগারদের সাথে থাকুন।