সৎ সঙ্গে স্বর্গবাস আর অসৎ স্বঙ্গে বড় বড় বাঁশ...

০২ রা ডিসেম্বর, ২০১৪ সকাল ৯:৪৭

মেয়েদের কমন রুমের এক পাশে দাঁডিয়ে আড্ডা দেওয়া ওদের কাজ...।
আড্ডা বললে ভুল হবে.., এক প্রকার উত্তক্তকরন..!!
বিভিন্ন ধরনের মেয়ে হেঁটে যায় সেই দিক দিয়ে..
তবে ওরা কোন স্মার্ট মেয়েদের উত্তক্ত করেনা..,
বরং তাদের উত্তক্ত করে যারা বোরখা পরে, পর্দা করে...!!!!
কত রকমের কথা যে শুনায় তাদের...!!
*টিনা, মিতা আর তুলি ..
ধনীর তিন দুলালী..
কলেজের সেরা সুন্দরীও.. ভাবে তাদের পা মাটিতে ঠেকে না...,, এমন ভাব করে যেন তারা তিন
জন হচ্ছে মিস ওয়ার্ল্ড, মিস ইউনিভার্স জাতীয় কিছু...!!
অন্য সুন্দরী মেয়েদের তাদের দুচোখে সহ্য হয়না...
আর আনস্মার্ট মেয়েদের পেলে তো কথাই নেই...,
তাদের গোষ্ঠী উদ্ধার করে ছাড়ে...
*আয়েশা...
গ্রাম থেকে আসা একটা মেয়ে..
বোরখা পরে, খুব হেজাতি, কারো সঙ্গেই মিশেনা তেমন, ছেলেদের সঙ্গে তো নয়ই..
ও যখনি কমন রুমে আসত..
তখন ই টিনারা শুরু করে দিত তাদের মিষ্টি সুরে আয়েশার রুপের গুনকীর্তণ...
টিনা :উফফ.. ডিগাস্টিং...,, কোত্থেকে যে আসে এসব!! সহ্য হয়না. ..
মিতা: আর বলিস না.., দেখ কেমন গেঁয়ো ক্ষ্যাত.., এই যুগে কেউ বোরখা পরে..!! তাও আবার আরব
যুগের..!! এরা না কোন দিনও দেখেও শিখবেনা.. দেখাতেও পারবেনা।
তুলি : কি আর দেখবে বল..! চোখের সামনে যে একটা জাল ঝুলিয়ে রাখে দেখিস না..!!
আর ও দেখাবে কি বল..??
ওর দেখানোর কিছু আছে নাকি..!!
ও তো একটা হি** !
বলেই সবাই হাসিতে ফেটে পড়ে..!
আয়েশা ওদের দিকে তাকিয়ে একটা মুচকি করে হাসে.., সে হাসির অর্থ টিনারা বোঝেনা!!
**সে দিন কলেজে আসার সময় হাল্কা বৃষ্টি আসায় একটু ভিজে যায় আয়েশা..!!
কমন রুমে এসেই সে নিজের স্কার্ফ খুলে নিজেকে ঠিক করতে থাকে..!!
টিনারা রুমে এসে ওকে কিছু একটা বলতে নিবে..
কিন্তু ওর দিকে তাকিয়ে সবার চোখ ছানাবড়া হয়ে যায়..!
এ কাকে দেখছে তারা!! তারা নিজেদের চোখকেই বিশ্বাস করতে পারেনা..!!
এত সুন্দরী মেয়ে তারা তাদের জীবনে দেখেনি..!! পিত্তি জ্বলে যায় ওদের.. কিন্তু ওর রূপ
দেখে কমেন্ট করার সাহস হারিয়ে ফেলে..
তাদের জানতেই হবে ও কি ক্রিম ব্যবহার করে.. কোন পার্লারে যায়, কোথায় ফেসিয়াল করে..
না কোথাও ফেয়ারনেস ট্রিটমেন্ট নিয়েছে...
কি তার রূপের রহস্য? তাদের জানতেই হবে..
তাই তারা একসময় ওর কাছে গিয়ে নির্লজ্জের মত জিজ্ঞেস করল..
কিভাবে সে এই রূপের অধিকারীনী?
তখন আয়েশা বলে..
আমি তোমাদের মত জি এম মার্কা বা ইন্ডিয়ান ইয়েহ ওয়ালা ক্রিম ব্যবহার করিনা... না কোন
আটা ময়দা.!
আমি এমন একটা জিনিষ ব্যাবহার করি যা তোমরা
খুবই ঘৃণা কর..
আর সেটা হল বোরখা..!!
এই একটা জিনিষ যা শুধু আমাকে পুরুষের বদ নজর থেকেই নয় বাইরের ধুলোবালি, বাতাস, সূর্যের
রশ্মি
সব কিছু থেকই রক্ষা করে..!!
এটা নেচারেল সান প্রটেক্ট, এয়ার প্রটেক্ট, ডাষ্ট প্রটেক্ট। তাই আমার স্কিন এত সুরক্ষিত থাকে...
আর এই শরীরটা সবাইকে দেখানোর জন্য নয়..
এটা তোমার স্বামী, সন্তান, বাবা আর বিবাহ অযোগ্য নিকট আত্মীয়ের কাছেই দেখানোর
বিধান রয়েছে..!
সবাইকে দেখিয়ে তুমি শুধু তাদের উচ্ছ্রিঙ্খল মন্তব্যই পেতে পার মানষিক প্রশান্তি নয়..!!
শুধু ধর্মীয় বিধানের জন্যই বলছিনা..
নিজেকে সম্মান করতে তো শেখ...
নিজেকে বাজারের পন্য বানিওনা..!!
অতঃপর তারা লজ্জিত হল ও ক্ষমা চাইল..
এবং কিছুদিন পর কলেজে চার জনের একটা বোরখা টিম দেখা গেল...
কি বুঝলেন?
সৎ সঙ্গে স্বর্গবাস আর অসৎ স্বঙ্গে বড় বড় বাঁশ...

০ টি +০/-০