নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

এ কে সরকার শাওন ১৯৬৭ সালের ৬ ফেব্রুয়ারী ব্রাহ্মণবাড়িয়া নবীনগরের গোপালপুরে জন্মগ্রহন করেন। পিতা মো: আবদুল গনি সরকার একজন সরকারী কর্মকর্তা এবং মাতা মিসেস সালেহা গনি সরকার একজন আদর্শ গৃহিনী ছিলেন।\n\nশিক্ষা জীবনের শুরু ঝালকাঠির উদ্ধোধন হাই স্কুলে। ১৯৮৩ সা

এ কে সরকার শাওন

Writer, Organizer & Creative Director

এ কে সরকার শাওন › বিস্তারিত পোস্টঃ

কাশ্মীরী শাল

১৫ ই জুলাই, ২০১৯ দুপুর ১২:৫৪


রাজস্থানী তলোয়ার ও ঢাল,
মসৃন-কোমল কাশ্মীরী শাল,
আর বাবুগিরী চাল;
এই তিনে খায়েশ ছিল
আমার বহুকাল।

তিন যুগের অধিক কাল আগে
১৯৮১ সাল,
কিশোর বেলায় বায়না ধরিলাম,
বাবার কাছে বলিলাম,
“আমার চাই রাজস্থানী তলোয়ার ও ঢাল”।
বাবা কৃত্তিম রেগে ও হেসে এক গাল
বললেন, “এ কেমন বায়না!
ওগুলো রাজা মহারাজাদের কাজ,
আমরা তো নইকো রাজা
নইকো জালিম অস্ত্রবাজ।”
বোঝালেন বাবা আমি বুঝিলাম,
ধরিনি বায়না তলোয়ার আর ঢালে
আর কোন কালে।

বাবুগিরী চাল আজ ও রয়ে গেছে
ঠিক আগেরেই মত;
এ নিয়ে বাবা-মা
শুনিয়েছেন নানান কথা
বকেছেন কত-শত।
তাঁহারা হয়েছেন স্বর্গগত
আমি আজো তথৈবচ।

তারপরে ১৯৮৩ সালের দিকে
ইউ পি ‍নির্বাচনে চেয়ারম্যান চাচা
গায়ে চাপিলেন কাশ্মীরী শাল,
হাজার হাজার পোষ্টার ছাপিলেন
ঘরে বাইরে পোষ্টার সাটিলেন।
আমি তা দেখে মনে মনে ভাবি
আমারও চাই একটি কাশ্মীরী শাল,
মাকে পটাতে দিলাম একটি চাল,
এটা করে দিব ওটা করে দিব মা
কে মামা বাড়ি নিয়ে যাব
উদ্দেশ্য ভাল,
যদি মিলে একটি
বহুল কাঙ্খিত কাশ্মীরী শাল।

অবশেষে মাকে পাড়িলাম
আমার মনের কথা,
“মা, একটি কাশ্মীরী শাল,
আমাকে কিনে দিতে হবে।
নেতা হব
পান্জাবীর উপর ভাজ করা শাল চাপবো,
ডানে বায়ে চোখ নাচাবো।
“মা দিলেন এক ধমক,
“পরীক্ষার পড়া পড়ো
নেতাগীরি করিও
যখন হবে অনেক বড়!”
মুখ করিলাম ভার,
কাশ্মীরী শাল
আর গায়ে চাপা হলো না আমার।

তারপর ৯ টি বছর পরে
সস্ত্রীক চলিলাম ইষ্টার্ন প্লাজায়
কাশ্মীরী শাল কিনিবার তরে
আবার বাঁধা, স্ত্রী সুধায়,
কথা শোন, শাল কেন কিনিবে?
ওটা কি তোমার মত যুবকদের মানায়?
চল কিনে দেই সুট টাই।
তারপর আর কোনদিন
কাশ্মীরী শাল কেনার কথা
আর মুখে আনি নাই।
কত কিছু কিনেছি তার
ইয়াত্তা নাই।

তারপর আরও ২৬ টি বছর পার
কাশ্মীরী শালের কথা ভুলেই গিয়েছি।
এইতো ক’দিন আগে
বিদেশ ঘুরে ছোটমামনি বাড়ী এসে
আমার দু’চোখ থেকে
হাত সরিয়ে বলে,
“বাবা, এবার চোখ খোল!
তোমার জন্য কি এনেছি দেখ,
ভারতের দার্জিলিং থেকে কেনা,
পছন্দ হয়েছে কি না বল?”
আমি তো হতবাক!
এ তো কাশ্মীরী শাল!
যা আমার ভাগ্যে
জোটেনি কোন কালে,
অতি আনন্দে দু’ফোটা অশ্রু
গড়িয়ে নামল গালে!
কত স্মৃতি কত ব্যাথা
কত গাথা পড়িল মনে ।
এই কাশ্মীরী শালে!!
হায়রে কাশ্মীরী শাল
তোমায় পেতে আমার কেটে গেল
জীবনের অর্ধশত সাল।

২৫ নভেম্বর ২০১৮ একডালা, নাটোর।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.