![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ফেসবুককে বলা হয় যোগাযোগের একটি শক্তিশালী মাধ্যম। ফেসবুক আমাদের জীবনে যত দিয়েছে তার চেয়ে অনেক বেশী কেড়ে নিয়েছে। এ ব্যপারটি নিয়ে সকলের উপলব্ধি একরকম নাও হতে পারে।
গতকাল আমার খুব কাছের একজন বন্ধু আমাকে প্রশ্নকরলো আচ্ছা ফেসবুকে কি সব সময় ভালই হয়,নাকি কিছু খারাপ হয়? আমি চিন্তায় পড়ে গেলাম। শেষে কিছু ঘটনা মনে পড়লো। যা থেকে সিদ্ধান্তে আসা আমার জন্য কিছুটা কঠিন হয়ে গেলো।
ফাহমিদা, ৩০ বছর বয়স, ১ সন্তানের জননী। স্বামী বিদেশে থাকেন। একাকী তার সময় কাটেনা। বাচ্চাকে স্কুলে দেয়ার পর তার আর কোন কাজ থাকেনা। একদিন কার থেকে যেন ফেসবুকের খবর পেলেন। ফাহমিদা সেখানে একাউন্ট খুললেন। তারপরের ইতিহাস সবার জানা। অনেক পরিচিত,অপরিচিত বন্ধু জুটে গেলো তার। এদের মধ্যে একটি ছেলে নাম শান্ত তাকে সব সময় হায় হ্যলো করে, ছবির প্রশংসা করে। ফাহমিদার এসব প্রসংশা খুব মনে ধরে গেলো। একদিন দুইদিন তাদের কথা হয়, ঘন্টার পর ঘন্টা চ্যাট চলে। চ্যাট থেকে মোবাইলে আলাপ। একসময় তারা দুজন সরাসরি দেখা করা শুরু করে। বাড়ে বন্ধুত্ব। বন্ধুত্ব থেকে ভালোবাসা। ভালোবাসা থেকে প্রনয়। সেখান থেকে পরবর্তীতে আর যা হবার সবই হলো। ফাহমিদা ভুলে গেলেন তার বাচ্চার কথা, প্রবাসী স্বামীর কথা। তিনি শান্তর কাছে সমর্পন করে বসে আছেন নিজের সব কিছু। শান্তর কথা বার্তা চলন ভঙ্গি অনেকটা মডেলদের মতো। ফাহমিদা যতই শান্তকে দেখে ততই মুগ্ধ হয়।
কিন্তু একদিন ইন্টারনেটের একটি ভিডিও ফাহমিদার ভুবনকে এলোমেলো করে দেয়। না !!!! শান্ত কিভাবে পারলো তাদের গোপন প্রনয়ের ভিডিও ধারন করে ইন্টারনেটে ছেড়ে দিতে। আত্মীয় স্বজনের মধ্যে জানাজানি হয়ে যায়, জেনে যান ফাহমিদার স্বামীও। তিনি সেখান থেকেই তালাক পেপার পাঠিয়ে দেন। তার পরের দিন ফাহমিদা হলেন পত্রিকার সংবাদ। একসন্তানের জননীর আত্মহত্যা। ফাহমিদার বাচ্চাটা ওয়ানে পড়তো। সে এখন নানীর কাছে বড় হচ্ছে, নানী তাকে বলেছে তার মা বেড়াতে গেছে। খুব শীঘ্রই ফিরে আসবে। প্রতিদিন রাতে বাচ্চাটা জানালার গ্রীল ধরে অপেক্ষা করে কখন তা মা আসবে। মায়ের কথা মনে করে তার কান্না আসে, একসময় ক্লান্ত চোখে ঘুমিয়ে পড়ে আর অপেক্ষা করে আরেকটি দিনের।
ফেসবুক একটি শিশুর সব সম্ভাবনাকে শেষ করে দিলো, তাকে মা হারা করে দিলো।
ইশিতা ফেসবুক পোকা। গ্রাজুয়েশান শেষ করে চাকরী করছেন মাল্টি ন্যশনাল কোম্পানীতে। ইশিতা যখন ক্লাস এইটে পড়তো তখন তার সবচেয়ে কাছের বন্ধু ছিলো আদনান। ইশিতা আর আদনান তাদের টিফিন, হোমওয়ার্ক সব কিছু শেয়ার করতো আদনানের সাথে। কিন্তু একদিন আদনানের বাবা ডিভি লটারী পেয়ে যান। স্বপরিবারে আদনানরা চলে যান আমেরিকা। আদনান আমেরিকায় বড় হচ্ছেন।সেখানে পড়াশোনা করে সেখানে চাকরী করছেন। আদনান সব কিছুর শেষে যখন অবসর পান। তিনি ভাবেন ঈশিতার কথা। মনের গভীরে তিনি ঈশিতাকে জায়গা দিয়েছেন সেই কিশোর বয়সে,আর তাই আদনানের মন মন্দিরে ঈশিতা মূর্তি অম্লান। অন্যদিকে ঈশিতার ফেসবুকে ঘোরাঘুরির একমাত্র কারন হলো আদনান। ফেসবুকে তিনি আদনানকে খুজেন। একদিন দুইদিন এক সময় ঈশিতা পেয়ে যান আদনানের খোঁজ। সঙ্গে সঙ্গে ফ্রেন্ড রিকুয়েষ্ট। তার পরের কাহিন মোটামুটি এই রকম ১০ বছর পর আদনান ঈশিতার দেখা হয় এই ফেসবুকের কল্যানে, তাদের ভালোবাসার পরিনতি বিয়ে পর্যন্ত গড়ায়। আদনান ঈশিতার কোল জুড়ে আসে পুত্রসন্তান। তারা সিদ্ধান্ত নেয় যেহেতু ফেসবুকের কল্যানে তাদের মিলন হয়েছে তাই তাদের সন্তানের নাম ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জুকারবার্গ এর নাম অনুসারে মার্ক রাখবেন।আদনান ঈশিতার জীবনকে খুশিতে ভরে দিতে এই ফেসবুক যে অবদান রেখেছে, তার জন্য এই যুগল চিরদিন ফেসবুকের কাছে ঋনী।
এই দুই গল্পের সারমর্ম। ফেসবুক দিয়েছে অনেক আর কেড়ে নিয়েছে সব। তাই সকলের কাছে অনুরোধ আমরা যাতে হুট করে ভার্চুয়াল জগতের মানুষকে বিশ্বাস করে কোন কঠিন ভুল করে না বসি। শেষে কোরআনের একটি আয়াতের কথা না উল্লেখ করলেই নয়, সুরা বনী ইসরাইলে আল্লাহ বলেন " হে মানুষ তোমাদের বড়ই তাড়াহুড়া।
আসুন জীবনে তাড়াহুড়ার সিদ্ধান্ত পরিহার করি। সবাই ভালো থাকবেন এই কামনা।
২| ২৭ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১২:২০
শরতের আকাশ বলেছেন: ফেসবুক বর্তমান যুগের ডিনামাইট .. উদ্দেশ্য খারাপ ছিলো না কিন্ত ব্যবহার করছি খারাপ ভাবে ।
৩| ২৭ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১২:৪৩
এ্যাপোলো৯০ বলেছেন: সুরা বনী ইসরাইলে আল্লাহ বলেন " হে মানুষ তোমাদের বড়ই তাড়াহুড়া।
৪| ২৭ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১:১৪
*কুনোব্যাঙ* বলেছেন: অনলাইনে পরিচয় পরিণয় এবং বিয়ের দিন তারিখ ঠিক করে বিয়ের উদ্দেশে ছেলের ফিলিপাইন যাত্রা এবং মেয়ের সাথে সাক্ষাত। উল্লেখ্য, ছেলে ফিলিপিনো বংশদ্ভোত হলেও তাদের কয়েক পুরুষের নিবাস ইটালী। এটা তাদের দুজনেরই বর্তমান প্রোফাইল পিক। তাদের এই রিলেশন দেখে সিদ্ধান্তে এসেছি যে ভালো মানুষের সাথে সব সময় ভালোই হয়, এমনকি সেটা অনলাইন হলেও। এরা দুজনেই অত্যন্ত ভালো মানুষ।
©somewhere in net ltd.
১|
২৭ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১২:০৭
স্বপনবাজ বলেছেন: ফেসবুক দিয়েছে অনেক আর কেড়ে নিয়েছে সব