নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মানুষ

সরকার পায়েল

মানুষ যা অনুভব করে তাই জ্ঞান।

সরকার পায়েল › বিস্তারিত পোস্টঃ

সোনার খাঁচা

৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৪ বিকাল ৫:০৩

মানুষ জন্মগতভাবেই পোষা প্রাণী । সে জন্মগতভাবেই বন্দী । মানুষ ছাড়া বাকী সব প্রাণী জন্মের পরই হয়ে যায় মুক্ত । সব বন্ধন থেকে চির স্বাধীন ।



জন্মের পরই সে বন্দী হয়ে যায় মায়ের বাহুতে । পোষ মানতে থাকে মায়ের । একসময় মা ছাড়া সে অচল আর চিরদিনের জন্য বন্দী হয়ে যায় ভালোবাসা আর মায়ায় । মা ডাকটি শুনলেই চোখ তুলে চায় । খুঁজতে থাকে চির চেনা আর চির ভালোলাগার মানুষটাকে ।



তারপর তার জগৎ যত বড় হয় । তার খাঁচায় যুক্ত হতে থাকে নব নব সোনার আর রঙ বেরঙের শিক । বুঝতে শেখার পর বাবা , ভাই-বোন , স্বজন । যৌবনে প্রিয়তমা , প্রৌঢ়ে সন্তান ।



যে যত বেশি ভাগ্যবান তার খাঁচার শিক ততো বেশি , ততো দৃঢ় । যে বেশ ভাগ্যবান তার খাঁচায় রয়েছে ধন সম্পদ , প্রাচুর্যের চুনি পান্নার শিক । যে নামিদামী তার খাঁচায় থাকে খ্যাতি মোতির শিক । আরও ভাগ্যবান মানুষের থাকে ক্ষমতার হীরার শিক ।



আরও কত কত রঙ বেরঙের শিক । একের পর এক , একের পর এক । দৃঢ় থেকে দৃঢ়তর হয় খাঁচা । আহা মায়ার খাঁচা , আহা সোনার খাঁচা । এ খাঁচা ভাঙবো আমি কেমন করে !!!





কি মুক্ত , কত স্বাধীন বাকী প্রাণীকুল । না বন্ধন , না মায়া । যা খুশি করো , যেখানে খুশি যাও । বাধা দেয়ার কেউ নেই , নেই কোন পিছুটান । হয়তো জলের ধারে দল বেঁধে পানি পান করছে হঠাৎ কুমির এক টানে নিয়ে গেলো একটাকে । তড়িৎ লাফে সরে যাওয়া । ব্যাস তারপরে আবার আপনমনে হেটে চলা ।





পাশেই হয়তো জবাই করা হচ্ছে সগোত্রীয় একজনকে । পাশে দাড়িয়ে আপন মনে জাবর কাটছে । এক ঈর্ষনীয় অভিব্যক্তি । পারবে মানুষ ????



সাধু - সন্ন্যাসীদের সাথে বাকী প্রানিকুলের এক আশ্চর্য মিল খুঁজে পাই । তারা সবাই জাগতিক সব বন্ধন থেকে মুক্ত । চলে যায় মানুষের চোখের আড়ালে , লোকান্তরে । বনে , পাহাড়ে বাকী প্রাণীকুলের সাথে ওরাও হয়ে যায় মুক্ত , স্বাধীন , বন্ধনহীন ।





মানুষের জীবনের প্রথম শেকল দুটি বাহু । যারা জন্মের পর পরম যতনে জড়িয়ে ধরে । সোনার খাঁচার প্রথম সোনার দুটি শিক । খাঁচার যে শিকটি সবচেয়ে দৃঢ় সেটি হলো " নাম " ঘোড়ার যেমন লাগাম পরানো হয় , ঠিক তেমনি এই নাম । যা পরম যতনে মানুষের গলায় পরিয়ে দেয়া হয়। "নাম" হচ্ছে মানুষের লাগাম। যেদিক থেকে ডাক আসে মানুষ সেদিকেই যায়।





মানুষ জন্মগতভাবে পোষা ও বন্দী বলেই পৃথিবীর সব প্রাণীকে সে বন্দী করতে চায় । বন্দী করতে চায় পৃথিবীর সব রূপ । প্রকৃতির রূপটাকে বন্দী করতে চায় সে কল্পনা আর ছবি দিয়ে । বন্দী করে ফেলতে চায় আপন খাঁচায় ।



আহা কেমনে বন্দী হইলাম আমি সোনার খাঁচাতে!!

আহা কেমনে বন্দী হইলাম আমি সোনার খাঁচাতে !!

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ৮:০৫

ভারসাম্য বলেছেন: খুব সুন্দর! ভাবের কথাও কবিতার মতই সুন্দর করে লিখেছেন। কবিতা হিসেবেই লিখে দেখতে পারেন কথাগুলো।

+++++++++++

৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ১২:৫০

সরকার পায়েল বলেছেন: ধন্যবাদ । মনে আসা কথা কবিতার মত করে সাজাতে গেলে হয়ত যা বলতে চাই তা ঠিক বঝাতে পারবোনা । কবিতা তৈরির বিষয়ে আমি বেশ দুর্বল ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.