নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

হ্রণের ভুবনের স্বাগতম

হাইপেশিয়া লিজা

আমি একজন আম জনতা

হাইপেশিয়া লিজা › বিস্তারিত পোস্টঃ

বিয়ে: বয়স: নারী এবং বাংলাদেশের সামাজিক প্রেক্ষাপট

২২ শে জুলাই, ২০১৬ সকাল ১১:২৯

পুতুল খেলার বয়স থেকেই একটা মেয়ের স্বপ্ন দেখা শুরু। না বুঝেই ঘর বাঁধার, স্বপ্ন দেখার প্রবৃত্তি মেয়েদের সহজাত। একটা সময় এমন ছিল যখন বালিশের ওয়ারে নঁকশী বুনন দিয়ে মেয়েদের যোগ্যতা বিচার করা হত। ঘর গৃহসথালির কাজ সামলে রাতের বিছানায় স্বামীর মনোরঞ্জনই ছিল মেয়েদের প্রথম এবং প্রধান কাজ।অল্প বয়সে বিয়ে, অনেক গুলো সন্তান, কাজ করতে করতে জীর্নশীর্ন দেহ আর দিন শেষে ঘরে থেকে শুয়ে বসে আড্ডা দেয়া ছাড়া তোমার তো আর কাজ নেই এই ছিল প্রাপ্তি।অনেক প্রবীণার মুখে তাদের অতীত জীবনের গল্প শুনে শিউরে উঠি। ঘরে কতটুকু ভাত রান্না হবে সেই চালটুকু মেপে দেবেন শাশুড়ি, দিনের বেলা স্বামীর সাথে বসে গল্পতো দুরে থাক এক সাথে দেখলেই যেন পাপ আরো কত কি।বড় বড় জজ, ব্যারিস্টার, উকিল , মোক্তারের বউরা যে সারা জীবন অশিক্ষিত, অন্ধকরাচ্ছন্নই রয়ে গেল বাবু মশাই সব দিকেই খেয়াল রাখলেন শুধু এই বিষয়টি বোঝার এবং জানার সময় হলনা তার। মেয়েটি না পড়তে পাড়লো কোন বই না জানতে পাড়লো জীবনের মানে। হিসেব নিকেশের সমস্ত পাট চুকিয়ে যাবার বেলায় অর্জন শূন্য জেনেই বিদায়।এসব ছাপিয়ে যারা বের হয়ে আসতে পেরেছেন তারা আজ আমাদের চোখে আইকন। কিন্তু সেই সংখ্যা খুবই নগণ্য।বাস্তবতা হচ্ছে বৃহৎ জনগোষ্ঠির অধিকাংশেরই থাকেনা সেই সাহস, মনোবল এবং সর্বোপরি সুযোগ।যদিও আমার আজকের আলোকপাতের বিষয় এগুলো নয় তথাপি প্রসঙ্গক্রমে কিছুটা বলতেই হল।
দিন বদলেছে, বদলেছে সময়।মেয়ারা আজ অনেক সাবলম্বী, অনেক সফল।তাহলেতো লেটা চুকেই গেল আজকের লিখার কোন দরকারই নাই।অতীত দিনের প্রবীণাদের মুখোমুখি হওয়া সমস্যাগুলো হয়ত আজ ঐ ভাবে নেই কিন্তু আধুনিক যুগে সমস্যাগুলো ফিরে এসেছে আধুনিক ভাবে।খুবই দুঃখ নিয়ে বলতে হচ্ছে একটা মেয়ে শিশু জন্মায়ই এক গাদা সমস্যা সাথে নিয়ে।স্কুলে যাওয়ার দিন থেকে শুরু প্রতিটা পদে পদেই সমস্যা আর সমস্যা ।আমার ঘরে বড় হয়, বেড়ে উঠে আমার মেয়ে আর ঘুম হরাম হয় আমার প্রতিবেশীর। মেয়ের বিয়ের বয়স পার হয়ে যাচ্ছে এখনো বিয়ে দিচ্ছন না, আর ক দিন গেলেতো ভাল পাত্র পাবেন না, দাম থাকতেই বিয়ে দেয়া ভাল এসব শুনে শুনে বি পি হাই হয় একজন মেয়ের বাবার ।বিয়ের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়ার অধিকার কোন মেয়ের কোন কালে ছিলও না আজও নেই। পড়াশুনা শেষ হওয়ার আগেই বাবা মায়ের চিরায়ত সমস্যা পাত্রস্ত করা। আর কোন কারণে মেয়ে যদি একটু বেশী শিক্ষিত হয় তা হলে তো কথাই নেই।শিক্ষিত মেয়ে মুখে মুখে তর্ক করবে, তাদেরকে হাতের মুঠোয় রাখা যাবেনা, বেশী পড়ালেখা জানা মেয়ে আমার ছেলেকে পাত্তাই দেবে না, বিদেশে পড়তে যাবে অসমম্ভব!আমার ছেলের সংসার হবে না, বাচ্চা দেখবে কে, সারাদিন চাকরি করলে স্বামীর সেবা করবে কখন ইত্যাদি ইত্যাদি শঙ্কায় ভোগে পাত্র পরিবার ।আমার কাছে খুবই আশ্চর্য্য লাগে বিষয় গুলো।প্রচলিত এই চিন্তাগুলো আমি কিছুতেই মেনে নিতে পারিনা।মেয়েরা আধুনিক হচ্ছে তার মানে কি এই যে মেয়েরা সংসার করতে চায় না, স্বামী কে পাত্তা দেয়া না দেয়ার প্রশ্নই বা আসে কোথা থেকে।যার সাথে একটা মেয়ে সারাটি জীবন পার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যার সাথে সে তার বিছানা শেয়ার করবে কি করে আপনারা ভাবেন যে সে তার স্বামীর প্রতি শ্রদ্ধাশীল নয় ।দিন শেষে একটা মেয়ে সব ছাপিয়ে তার স্বামীর কাছেই শেষ আশ্রয় টুকু খোঁজে বলেই আমার বিশ্বাস।কুৎসিত এই ধারণাগুলো সমাজের বানানো মানুষের নিজের তৈরি করা ।আর কি বা আসে যায় যদি একটা মেয়ে বিয়ে করতে না চায়, থাকতে চায় নিজের মত করে স্বাধীন। স্বাধীনভাবে জীবন যাপন করার অধিকার প্রতিটি মানুষেরই আছে ।মেয়ে বলে আলাদা করে না ভেবে ভাবুননা একটা একটা বার তাদেরকে মানুষ।
মহিলা সমিতির এক মিটিং এ বয়স্ক এক ভদ্র মহিলা খুব রস করে একটা কথা বলেছিলেন “ দস্তার চেয়েও সস্তা বস্তার চেয়েও ভারী , এই হল গিয়ে অবস্থা বাংলাদেশের নারীর”। নারীকে সস্তা বানোর প্রক্রিয়া সেই আদিম কাল থেকেই । যাই কিছুই ঘটুক না কেন দোষ একটা মেয়ের ।অবিবাহিত হলে দশ বারটা প্রেম আর বিবাহিত হলে খুব সহজেই পরকিয়া অপবাদটা চাপিয়ে দেয়া যায় যে কোন কিছুতেই। আধুনিক মেয়েদের নাকি সংসার টেকেনা। এর দায়ভার ও তাদেরই।এর উত্তর সঠিকভাবে দেয়ার জন্য দিস্তা দিস্তা পৃষ্টা খরচ করা যাবে। যে কোন সুশিক্ষিত মানুষেরই বিবেকবোধ হয় উন্নত। অন্যায়ের সাথে আপস করতে তখন আর মন চায় না। আপনার অন্যায় আবদার ,অন্যায় কাজকর্ম আপনার চোখে পরেনা আর আমি যবে থেকে তা আপনাকে দেখিয়ে দিতে শুরু করলাম তবে থেকেই আমি উদ্ব্যত, কথা শুনিনা। অনেক অনেক মেধাবী মেয়েকে শুধুমাত্র সংসারের কারণে দেশের বাইরের পি এইচ ডি ছেড়ে দিতে দেখেছি সানন্দে কিন্তু কৈ কখনোতো কোন স্বামীকে তার স্ত্রীর কারণে তার ক্যারিয়ার সেকরিফাইস করতে দেখিনি।এগুলো ভাবার বিষয় একটু সময় নিয়ে ভাবুন।ছেলে, মেয়ে বিভাজন না করে মানুষ হিসেবে চিন্তা করতে পারলেই এর উত্তোরণ সম্ভব।এর জন্য মেয়েদের আর একটু সাহসী হওয়া দরকার, দরকার সুশিক্ষায় শিক্ষিত হওয়া।আমি বলছিনা রাস্তায় দাঁড়িয়ে সিগারেট ফুঁকে তুমি তোমার সাহসিকতা প্রদর্শন করো ।আর এ ও বলছি না পুরো দায় ভারটাই পুরুষ সমাজের।কারণ বেগম রোকেয়া , সুফিয়া কামালদের পাশে এমন মহান পুরুষ ছিলেন বলেই তারা আজ এতটা উজ্জ্বল। দরকার উন্নত মানসিকতার।কারণ শিক্ষিত মহলে আজকাল যে অশিক্ষা শুরু হয়েছে দেশটা রসাতলে যাওয়ার জন্য তাই যথেষ্ট......


মন্তব্য ১১ টি রেটিং +৫/-০

মন্তব্য (১১) মন্তব্য লিখুন

১| ২২ শে জুলাই, ২০১৬ দুপুর ১২:২৬

বিবেক ও সত্য বলেছেন: সুন্দর লিখেছেন। তবে নারীদের সমস্যার মূল কারন কি আর সমাধনই কি তা ভালভাবে পরিস্ফুটিত হয়নি। সময় পেলে আমি লিখব এ বিষয়ে।

২২ শে জুলাই, ২০১৬ বিকাল ৪:১৭

হাইপেশিয়া লিজা বলেছেন: অবশ্যই লিখবেন। লিখা খুবই জরুরী। মানুষের চিন্তাধারার পরিবর্তন হওয়া দরকার।

২| ২২ শে জুলাই, ২০১৬ বিকাল ৩:১০

আহমেদ মারুফ বলেছেন: Ha apni tik bolesen.ar ata akmatro mukti diye sen Begum Rukeya Sakawat Hussain.

২২ শে জুলাই, ২০১৬ বিকাল ৪:১৮

হাইপেশিয়া লিজা বলেছেন: সমাজ পরিবর্তনে আপনাদের মত সুন্দর মানসিকতাই তো দরকার ।

৩| ২২ শে জুলাই, ২০১৬ বিকাল ৩:২৭

মাহিরাহি বলেছেন: আপা বিনীত একটা প্রশ্ন,
মেয়েদের কি আরো স্বাধীনতার দরকার।

আপনারই বক্তব্য অনুসারে, মেয়েরা আগের চাইতে অনেক ভাল আছে।

যদি তাই হয়ে থাকে, যে সব মেয়েদের জীবন যাপন আগের যুগের মেয়েদের চাইতে খারাপ, তাদের দিকে দৃষ্টি দেই না কেন?

যেমন ধরুন, গার্মেন্ট এ কর্মরত ৩০ লক্ষ মেয়েরা। দিন মজুরিতে (ইট ভাংগা ইত্যাদি) আরো কয়েক লক্ষ।

আপনার মাসিক ব্যয় কত! (প্রশ্ন করা নয়, বাক্য হিসাবে নিবেন)।

আর ঐসব মহিলাদের মাসিক ব্যয় কত!

ঐসব মহিলাদের জন্য কিছু কি করা যায় না।

৪| ২২ শে জুলাই, ২০১৬ বিকাল ৪:৪১

হাইপেশিয়া লিজা বলেছেন: প্রথমেই আপনাকে অনেক ধন্যবাদ আপনি কষ্ট করে আমার লিখাটি পড়েছেন । মানসিক স্বাধীনতা এবং দারিদ্রিক মুক্তি দুটোর মধ্য পার্থক্য আছে। আমি কিন্তু সামাজিক প্রতিবন্ধকতা এবং মেয়েদের করুণ অবস্থা কোনটাকেই এড়িয়ে যাইনি। হয়ত সময় স্বল্পতার কারণে আরো গভীরে গিয়ে লিখতে পারিন। হ্যাঁ অন্য আর দশটা মেয়ের থেকে (আপনি যাদের কথা উল্লেখ করেছেন) আমার আয় এবং ব্যয় দুটোই অনেক বেশী । সত্যি বলতে আমি আমার জায়গাটা থেকে যথেষ্ট চেষ্টা করি একটু হলেও মানুষকে বিশেষত নারীদের সহায়তা করার। আজকাল মেয়েরা যে গার্মেন্টস এ এসে তথাপি বাইরে এসে কাজ করছে এটা কিন্তু নারী জাগরণেরই একটা সুফল। কিন্তু কর্মক্ষেত্রে তারা যে প্রতিবন্ধকতা সহ্য করছে এটা গোরা সমাজের নোংরামি।আমি নিজেও এই পরিস্থিতির বাইরে নই ।এগুলো দূর করা দরকার। আমার একার পক্ষে কিছুই সম্ভব নয় ।তাই আপনার সহযোগিতাও একন্ত কাম্য ।

৫| ২২ শে জুলাই, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৪৪

মাহিরাহি বলেছেন: ধন্যবাদ মন্তব্যের উত্তর দেওয়ার জন্য।

হঠাত করেই একটি উদ্বৃত্তি মনে পড়ে গেল।

Freedom is secured not by the fulfillment of one's desires, but by the removal of desire.

এপিকটেটাস

Are we slaves to our desires in life slaves to our wants? Can we be free of our base desires and instincts through meditation and removal of worldly things?

৬| ২৪ শে জুলাই, ২০১৬ সকাল ১০:৪৪

ক্লে ডল বলেছেন: দিন শেষে একটা মেয়ে সব ছাপিয়ে তার স্বামীর কাছেই শেষ আশ্রয় টুকু খোঁজে

সমাজ পরিবার তা বোঝে।কিন্তু ভাবে, আত্ননির্ভরশীল হলেই বোধ হয় আশ্রয় ছেড়ে পালাবে!!

ভাল লাগল আপনার লেখা। :)

৭| ২৫ শে জুলাই, ২০১৬ দুপুর ১:৪৫

হাইপেশিয়া লিজা বলেছেন: Thank you so very much for your nice comment.

৮| ২৬ শে জুলাই, ২০১৬ সকাল ১০:০১

অগ্নি সারথি বলেছেন: না বুঝেই ঘর বাঁধার, স্বপ্ন দেখার প্রবৃত্তি মেয়েদের সহজাত।- আমার মনে হয় এটা সহজাত প্রবৃত্তি নয় বরং সমাজের চাপিয়ে দেয়া। সুন্দর অবতারনা।

৯| ২৮ শে জুলাই, ২০১৬ রাত ১২:২৫

হাইপেশিয়া লিজা বলেছেন: হয়ত আপনার ধারণাই ঠিক।অত গভীরে গিয়ে ভেবে দেখার সুযোগ হয়নি। সময় পেলে বিষয়টি নিয়ে সুগভীর চিন্তা করবো। সবশেষে ধন্যবাদ আপনাকে আপনার মূল্যবান মন্তব্যর জন্য..

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.