নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

শাওন মিয়া

বাংলাদেশী

শাওন মিয়া › বিস্তারিত পোস্টঃ

ফিলিস্তিন-ইসরাইল সমস্যা নিয়ে কিছু কথা

০৫ ই জানুয়ারি, ২০০৯ রাত ১১:৩৬

সমস্যাটাকে আরব-ইসরাইল সমস্যা না বলে ফিলিস্তিন-ইসরাইল সমস্যা বলছি কারন বেশিরভাগ আরব দেশ এ সমস্যায় যুক্ত না এবং যারা যুক্ত ছিলেন তাদের অধিকাংশ সমস্যা থেকে সরে এসে ফিলিস্তিনকে অনেকটা একঘরে করে দিয়েছে। আরব দেশসমূহের মধ্যে বর্তমানে শুধু সিরিয়া ও লেবানন এতে যুক্ত আছে। যাইহোক মূল কথায় আসি।



প্রথম বিশ্বযুদ্ধে তুর্কি অটোমান সাম্রাজ্যের পতনের মাধমে মূল সমস্যা শুরু। যুদ্ধের পর প্যালেস্টাইন বা ফিলিস্তিন সহ বেশিরভাগ আরব এলাকা চলে যায় ইংল্যান্ড- ফ্রান্সের ম্যান্ডেটে। ১৯১৭ সালের দোসরা নভেম্বর বৃটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী আর্থার জেমস বালফোর ইহুদীবাদীদেরকে লেখা এক পত্রে ফিলিস্তিনী ভূখন্ডে একটি ইহুদী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতি ঘোষণা করেন। বেলফোর ঘোষনার মাধমে প্যালেস্টাইন এলাকায় ইহুদিদের আলাদা রাস্ট্রের সম্ভবনা উজ্জল হয় এবং বিপুলসংখ্যক ইহুদি ইউরোপ থেকে প্যালেস্টাইনে এসে বসতি স্থাপন করতে থাকে।



১৯০৫ থেকে ১৯১৪ সাল পর্যন্ত ফিলিস্তিনে ইহুদীদের সংখ্যা ছিল মাত্র কয়েক হাজার। কিন্তু ১৯১৪ সাল থেকে প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ১৯১৮ সাল পর্যন্ত বৃটিশদের সহযোগিতায় ফিলিস্তিনে ইহুদীদের সংখ্যা ২০ হাজারে উন্নীত হয়। এরপর প্রকাশ্যে ফিলিস্তিনে ইহুদী অভিবাসীদের ধরে এনে জড়ো করা শুরু হলে ১৯১৯ থেকে ১৯২৩ সাল নাগাদ ফিলিস্তিনে ইহুদীদের সংখ্যা ৩৫ হাজারে পৌঁছে যায়। ১৯৩১ সালে ইহুদীদের এই সংখ্যা প্রায় ৫ গুণ বৃদ্ধি পেয়ে ১ লাখ ৮০ হাজারে পৌঁছায়। এভাবে ফিলিস্তিনে ইহুদী অভিবাসীর সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে বাড়তে থাকে এবং ১৯৪৮ সালে সেখানে ইহুদীদের সংখ্যা ৬ লাখে উন্নীত হয়।



১৯১৮ সালে বৃটেনের সহযোগিতায় গুপ্ত ইহুদী বাহিনী "হাগানাহ" গঠিত হয়। এ বাহিনী ইহুদীবাদীদের অবৈধ রাষ্ট্র তৈরির কাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। প্রথমে ফিলিস্তিনী জনগণের বিরুদ্ধে ইহুদীবাদীদের সহায়তা করা হাগানাহ বাহিনীর দায়িত্ব হলেও পরবর্তীতে তারা সংঘবদ্ধ সন্ত্রাসী বাহিনীতে পরিণত হয়। ফিলিস্তিনী জনগণের বাড়িঘর ও ক্ষেতখামার দখল করে তাদেরকে ফিলিস্তিন থেকে বিতাড়িত করা এবং বাজার ও রাস্তাঘাটসহ জনসমাবেশ স্থলে বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ফিলিস্তিনীদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করে তাদের বিতাড়নের কাজ ত্বরান্বিত করা ছিল হাগানাহ বাহিনীর কাজ।



দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ১৯৪৭ সালে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে ফিলিস্তিনী ভূখন্ডকে দ্বিখন্ডিত করা সংক্রান্ত ১৮১ নম্বর প্রস্তাব গৃহিত হয়। জাতিসংঘ ফিলিস্তিনকে দ্বিখন্ডিত করার প্রস্তাব পাশ করে নিজেদের মাতৃভূমির মাত্র ৪৫ শতাংশ ফিলিস্তিনীদের এবং বাকি ৫৫ শতাংশ ভূমি ইহুদীবাদীদের হাতে ছেড়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। এভাবে ১৯৪৮ সালের ১৪ মে ইসরায়েল স্বাধীনতা ঘোষনা করে।





Click This Link





মধ্যপ্রাচ্যের আরব দেশগুলোর পক্ষে ফিলিস্তিনের মুসলিম ভূখন্ডে একটি ইহুদীবাদী রাষ্ট্রকে মেনে নেয়া সম্ভব ছিল না। এ কারণে মিশর, ইরাক, সিরিয়া, লেবানন ও জর্দানের সেনাবাহিনীর সমন্বয়ে একটি সম্মিলিত আরব বাহিনী গঠিত হয়। ১৯৪৮ সালের ১৫ই মে এই বাহিনী ফিলিস্তিনের দিকে মার্চ করে এবং বাইতুল মোকাদ্দাস ও ফিলিস্তিনী ভূখন্ড মুক্ত করার লক্ষ্যে ইসরাইলের সাথে আরব বাহিনীর সর্বপ্রথম যুদ্ধের সূচনা হয়।



এ যুদ্ধে ইসরাইল জাতিসংঘের মাধ্যমে যে ভূমি পেয়েছিল, তার চেয়েও অনেক বেশী ভূখন্ডের ওপর জবরদখল প্রতিষ্ঠা করে। ইহুদীবাদী সেনারা নতুন করে দখলীকৃত ফিলিস্তিনী ভূখন্ডের অধিকাংশ গ্রামকে এবার মাটির সাথে মিশিয়ে দেয়।



১৯৬৭ সালের যুদ্ধে সিনাই মরুভূমির পাশাপাশি সিরিয়ার গোলান মালভূমি, জর্দান নদীর পশ্চিম তীর, গাজা উপত্যকা এবং জেরুজালেমের পূর্ব অংশসহ অবশিষ্ট সকল ফিলিস্তিনী ভূখন্ড ইসরাইল দখল করে নেয়।



১৯৪৮ সাল থেকে ১৯৬৭ সাল পর্যন্ত পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুজালেম জর্দানের নিয়ন্ত্রণে এবং গাজা উপত্যকা মিশরের অধীনে ছিল। ১৯৬৭ সালের যুদ্ধের ফলে জাতিসংঘের প্রস্তাবে মাত্র ৪৫ শতাংশ ফিলিস্তিনী ভূখন্ড নিয়ে যে স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠিত হওয়ার কথা ছিল, সে সম্ভাবনাটুকুও বিলীন হয়ে যায়।



এ সম্পর্কে ইসরাইলের প্রথম প্রধানমন্ত্রী ডেভিড বিন গোরিওন ১৯৪৮ সালে বলেছিল, সবাইকে এটা মনে রাখতে হবে যে, 'যুদ্ধের মাধ্যমে ইসরাইল প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এবং এ রাষ্ট্র কখনো তার বর্তমান আয়তন ও সীমান্ত নিয়ে সন্তুষ্ট থাকবে না। নীল নদ থেকে ফোরাত উপকূল পর্যন্ত ইসরাইলের সীমানা বিস্তৃত হবে।'



এরপার ১৯৭৩ আরব-ইসরাইল যুদ্ধে অবস্থার কোন পরিবর্তন হয় নি। এরমধ্যে জর্ডান ও মিশর ইসরাইলের সাথে শান্তিচুক্তি করে সমস্যা থেকে বিদায় নিয়েছে।



ইতিহাসের কথা অনেক হলো। বর্তমান প্রেক্ষাপটে আসি। একথা অনস্বিকার্য যে ইসরাইল আমেরিকার সহায়তায় বর্তমানে সামরিক ও অর্থনৈতিকভাবে অত্যন্ত শক্তিশালি রাস্ট্র হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। বর্তমান প্রেক্ষাপটে ইসরাইলের ধ্বংশ সম্ভব না। এটা আমাদের মুসলমানদের বুঝতে হবে।



বর্তমান যে সায়ত্বশাসিত ফিলিস্তিন তা জাতিসংঘের resolution 181 এ উল্লেখিত এলাকার সামান্য অংশমাত্র। আমার মতে মুসলমান দেশসমূহের এখন যেটা করা উচিত তা হলো resolution 181 এ উল্লেখিত এলাকা নিয়ে যাতে ফিলিস্তিন স্বাধীন হতে পারে তার চেষ্টা করা। কিন্তু এটা নিয়ে বিশ্ব নেতৃবৃন্দের কোন চেষ্টা আছে বলে মনে হচ্ছে না।



আমার মতে resolution 181 উল্লেখিত এলাকা নিয়ে ফিলিস্তিন স্বাধীন হতে পারলেই ফিলিস্তিন-ইসরাইল সমস্যার সমাধান হতে পারে।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +৫/-১

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০৬ ই জানুয়ারি, ২০০৯ রাত ১২:৩৮

আছহাবুল ইয়ামিন বলেছেন: একমাত্র ফিলিস্তিন স্বাধীন হতে পারলেই ফিলিস্তিন-ইসরাইল সমস্যার সমাধান সম্ভব - একমত

১৫ ই অক্টোবর, ২০০৯ বিকাল ৩:২৮

শাওন মিয়া বলেছেন: পড়ার জন্য ধন্যবাদ।

২| ১৩ ই জানুয়ারি, ২০০৯ দুপুর ২:১৭

আবু আব্দুল্লাহ মামুন বলেছেন: আরবসহ সারা বিশ্বের মুসলিদের এক হতে হবে। তবেই সমস্যার সমাধান হবে।

১৫ ই অক্টোবর, ২০০৯ বিকাল ৩:৩০

শাওন মিয়া বলেছেন: পড়ার জন্য ধন্যবাদ। কিন্তু ভাই সেটা হওয়াটা বড়ই কঠিন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.