নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ফরহাদের খেরো খাতা \n.........\n(লেখকের অনুমতি ব্যাথিত এই ব্লগের কোন লিখা কপি ও অন্য কোন মাধ্যমে প্রকাশ করা দন্ডনীয় অপরাধ।)

নেক্সাস

কে হায় . হৃদয় খুঁড়ে বেদনা জাগাতে চায়

নেক্সাস › বিস্তারিত পোস্টঃ

সী ইজ বিউটিফুল

০১ লা অক্টোবর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৪৯

হোলি আর্টিজান তখন সারাদেশে এক অপবিত্র লজ্জার নাম।ধর্মের নামে অধর্মের যে রক্তাক্ত এপিসোড তা তখনো সারা দেশ কে ঘৃণা ও লজ্জায় নুহ্য করে রেখেছে। ঠিক এমন একটি সময়ে আমি দেশত্যাগী হওয়ার চুড়ান্ত ধাপে উপনীত। মধ্যপ্রাচ্যের দেশ কাতারের দোহাতে নতুন কর্মস্থল। বউ আর নিকটাত্মীয়দের সাথে বিদায়ের পালা শেষ। জিয়া আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ওয়েটিং লাউঞ্জে আনমনে বসে হৃদয়ের গহীনে বেজে উঠা বিরহ বেদনার করুন বিউগল নিজে নিজেই শুনছিলাম।
হঠাত মগ্ন চৈতন্যে শিষ দিয়ে, স্মীত হেসে, হেলো বলে পাশের সীটে এসে বসল এক স্বর্ণকেশী। তন্বী পশ্চিমা তরুনী। চাহনি কিছুটা ক্লান্ত ও পোশাকে একদম ক্যাজুয়েল। আসার পর থেকে তার ফোন, ঠোঁট , দাঁত কিছুরই বিরাম নেই। একের পর এক ফোন আসছে। আর সে কখনো বাংলা, কখনো ইংরজী, কখনো জার্মান ভাষায় কথা বলে যাচ্ছে। কথার ফাঁকেফাঁকে সে তার টিফিন বক্স খুলে বিচি কলা, পেঁয়াজু আর বেগুনি চিবিয়ে সাবাড় করছিল। বুঝলাম মেয়েটি জার্মান। আমি তার ভাষা প্রাচুর্যে এবং খাদ্যভ্যাসে বেশ অবাক হচ্ছিলাম ও কৌতুকবোধ করছিলাম, বিশেষ করে বিচি কলা! সে ফোনে যে কথা গুলো বলছিল তার বেশীরভাগের সারমর্ম হচ্ছে, সে নিরাপদে এসে ইমিগ্রেশান পাস করেছে, সে ভাল আছে, সে নিরাপদ। আমি মেয়েটার বিমর্ষ ও ক্লান্ত চেহারার হোলি কারনটা অনেকটা আচ করতে পারলাম এবং লজ্জিত হলাম। একটু আডমোড় দিয়ে নিজেকে পরখ করে নিলাম। আমার সাথে কোন চাপাতি বা বন্দুক নেইতো?
এর ফাঁকে আমি আরো কয়েকজন ক্রিষ্টিয়ান সাদাচর্মের লোক দেখলাম। তাদের মধ্যে একজন মধ্য বয়স্ক রমনীও ছিলেন। ওয়েটিং লাউঞ্জের পাশে কতগুলো দানবক্স রাখা। দেওয়ানভাগী বা কোন হুজুরে কেবলার দানবক্স নয়। দেশের সুপ্রতিষ্ঠিত কিছু মানবিক দাতব্য প্রতিষ্ঠানের দানবক্স। সাদা চামড়ার লোকগুলো দল বেধে সে বাক্সগুলোতে ডলার ফেলতে লাগলো আমেনা সখিনাদের জন্য। আমি আবারো লজ্জিত হলাম। কিজানি আমি কিংবা আমার আশেপাশের কেউ তাদের কল্লা ফেলে দিয়ে অশেষ নেকি হাসিলের কথা ভাবছে কিনা?
চুড়ান্ত ইমিগ্রেশান শেষ করে অনবোর্ড, অতঃপর আকাশে উড়াল দিলাম। তন্বী জার্মান স্বর্ণকেশী এর মধ্যে কোথায় হারিয়ে গেল জানিনা। আর যাই হোক সেতো আর আমার মত ইকনোমি ক্লাসের যাত্রী নয়।

প্রায় ছয় ঘন্টা যাত্রা শেষে ককপিটের ঘোষনা আসলো ' আমরা অল্প কিছুক্ষনের মধ্যে দুবাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করবো। আমি অবাক হলাম এক যুগ আগেও এই বিমানবন্দরের নাম এটাই ছিল। এরা আমাদের চাইতে সব দিক দিয়ে এগিয়ে থাকলেও এদিক দিয়ে ব্যাকডেটেড। গত বার বছরে অন্তত একবার বিমানবন্দরের নাম আপডেট করা উচিত ছিল। এসব ভাবতে ভাবতে দুই থেকে তিন মিনিটের ব্যবধানে আবার ঘোষনা 'অনিবার্য কারণবশত আমরা দুবাই অবতরন করতে পারছিনা। আমরা চলে যাব প্রতিবেশী আল- আইন বিমানবন্দরে।" হেতু কি? হেতু কি? কেবিন ক্রুদের মুখে তালা। কেউ কিছু বলছেনা।তবে আল-আইন বিমানবন্দরে বিমানের পেটের ভিতর বসে বিবিসি লাইভে জানলাম এমিরেটস -এর ফ্লাইট গ্রাউন্ড এক্সিডেন্টের স্বীকার হয়েছে এবং ফলশ্রুতিতে বিমানবন্দর ক্লোজ।এক কান দু'কান করে সবাই জানল, হায় হুতাশ সংক্রমিত হল। কিন্তু তখনো কেবিন ক্রুরা জেনেও কিছুই না জানার ভান ধরলো! প্রফেশনালিজম কাকে বলে?

আল-আইনে ছয় ঘন্টার দুঃসহ বিরতি শেষে আবারো বিমান আকাশে উড়ল। ত্রিশ মিনিট পরে নামলাম দুবাই। স্থানীয় সময় রাত ন'টা। ততক্ষনে আমার দোহা ট্রানজিট ফ্লাইটের সময় সদ্যপ্রয়াত অতীত। আমি জানিনা আমাদের পরবর্তী ফ্লাইটের ভাগ্যে কি আছে। আমি একা নই। হাজার হাজার লোক। বহির্গমন, আগমনী সব জায়গায় জনস্রোত। চরম সিডিউল বিপর্যয়। বিশ্ব জাতিস্বত্তার এক অন্য রকম মিলনমেলা। বিশ্বের অধিকাংশ জাতির প্রতিনিধি আপাতত এইমুহুর্তে দুবাই বিমানবন্দরে উদগ্রীব হয়ে শুয়ে বসে আছে।সবার একি প্রশ্ন 'হোয়াট এবাউট মাই ফ্লাইট?' হুড়োহুড়ি, ছুটোছুটি ত্রাহি অবস্থা। যেন মোহনগঞ্জ স্টেশনে এসে থেমেছে ট্রেন।
একটা লম্বা লাইনে গিয়ে দাঁড়ালাম। পাশাপাশি তিনটা লাইন। রাত অনেক হয়েছে। এতক্ষনে দোহা পোঁছে বাড়িতে জানিয়ে দেওয়ার কথা।ওরা নিশ্চয় উদ্বিগ্ন। নিজের কাছেও অস্থীর লাগছিল। পকেট থেকে মোবাইল বের কিরে ওয়াইফাই কানেক্টের চেষ্টা করছি। হঠাত পাশ থেকে কেউ একজন আমাকে হেলো বল্ল। দেখি আমার পাশের লাইনে একি সামান্তরালে দাঁড়িয়ে আছে সেই স্বর্ণকেশী। আমি হেলো বললাম। এই প্রথম শুরু হল আমাদের কথা। বউকে ইমোতে কল দিয়ে পেয়ে গেলাম। মন কিছুটা শান্ত হল। আমার মোবাইলের স্ক্রীনে আমাদের যুগল ছবি। সে দেখে জিজ্ঞেস করলো কে, বললাম আমার স্ত্রী। খুব সুন্দর করে সে বললো," সী ইজ বিউটিফুল। তারপর বাংলায় বললো 'তিনি খুব সন্দর'। আমার মন ভাল লাগায় পরিপূর্ণ হল।
জানলাম ওর নাম আন্নালিসে। বাংলাদেশে আছে একটা এনজিওতে। থাকে মায়মেনসিং।সেখান থেকে এসেই বিমানে উঠেছে। পথের যাত্রা নিয়ে তার মা ও বন্ধুরা খুব ওয়ারিড ছিল। ৬ মাসের ছুটিতে যাচ্ছে একাডেমিক প্রয়োজনে(তার ভাষায় স্টাডি লাগবে)। জানতে চাইলাম তার বাংলা ভাষায় পারদর্শিতা নিয়ে। খুব সরল স্বীকারুক্তি, যাদের সাথে কাজ করি তারা গ্রামের খুব সাধারণ মানুষ।তাদের কে বুঝতে হলে, বুঝাতে হলে ইংরেজী অকার্যকর ও বিলাসীতা। তাই সে বাংলা শিখেছে। তার কোন শিক্ষক নেই। নিজের চেষ্টা ও মায়মেনসিংয়ের সাধারণ নারীদের সহযোগিতায় সে এখন বাংলা বলে। কথা হল বাংলাদেশের চলমান পরিস্থিতি নিয়ে। সে অবাক। হিসেব মিলাতে পারছেনা। বাংলাদেশের মানুষের মাঝে সে এমন টা কোনদিন দেখেনি।এমন কি অনেক দাড়িওয়ালা সেইন্ট ( হুজুর তার ভাষায় সেইন্ট) সাথে তার কথা হয়েছে। তারাও ভাল। কিন্তু হটাত কেন এমন হল। সামথিং রং। অথচ জাতি হিসেবে এই পর্দার আড়ালের রং সত্য আমরা বুঝলাম না।বুঝার প্রয়োজনও বোধ করলাম না!

উইল ইউ কামব্যাক এগেইন? জানতে চাইলাম। আন্না জানাল সে বাংলাদেশে আরো অনেকদিন থাকতে চায়। সে বাংলাদেশ কে ভালবাসে। কিন্তু এবার তার মা তাকে আসতে দেয় কিনা কে জানে। তবে সে সর্বোচ্চ চেষ্টা করবে।
একটা সময় ডাক আসলো। আমি আর আন্না পরস্পর বাই বলে দু'দিকে চলে গেলাম। সে চলে যাওয়ার পর আমার অসস্থি লাগছিল। মেয়েটা যে মন, মনন ও দর্শনে সুন্দর সেটা তাকে বলা উচিত ছিল। কিন্তু বলা হয়নি।
আমার ফ্লাইট ক্যন্সেল। পরেরদিন সকাল দশটায় নতুন সিডিউল। হোটেল ভাউচার নিয়ে রাত দুটায় এসে উঠলাম দুবাই পাম হোটেলে। ক্ষুধায় প্রান ওষ্ঠাগত। হাতে লোকাল কারেন্সি নাই। থেকেও কি হবে দোকান পাট বন্ধ। হোটেলের রেষ্টুরেন্ট ততক্ষনে ধুয়ে মুছে কাল সকালের জন্য সাজছে। রুম সার্ভিস ফ্রী পানি দিয়ে গেল। বল্লো টাকা দিলে খাবার দেওয়া যাবে। কিন্তু টাকাতো নাই। অগত্য পানি খেয়ে ঘুমানোর ব্যর্থ চেষ্টা করলাম। সকালে উঠেই রেডি হয়ে নিচে নেমে রেষ্টুরেন্টে গিয়ে পেট শান্তি করলাম। সাতটায় বের হয়ে যেতে হবে।রিসিপশানে রুম কি হ্যান্ডওভার করতে এসে দেখি লবিতে বসে আছে আন্না। হেলো আন্না ইউ অলসো হিয়ার। সে স্মীথ এসে উত্তর দিল ইয়া।মিউনিখ গামী ফ্লাইট এগারটায়। সে আমার এক ঘন্টা পরে বের হবে । শাটল বাসের ড্রাইভার ডাকাডাকি করছে। যেতে হবে। তবে এবার আর ভুল নয়। আন্নার কাছে এগিয়ে গেলাম। চোখের দিকে তাকিয়ে বললাম, " আন্না ইউ আর বিউটিফুল। স্মীত হেসে প্রশংসা গ্রহন করে ধন্যবাদ জানাল সে।

আন্নার কাছ থেকে ধন্যবাদ নিয়ে চলে আসলাম।সুসজ্জিত দুবাইয়ের মসৃন রাস্তায় সাঁই সাঁই করে ছুটলো শাটল। মরুভুমি থেকে ছুটে আসা সকালের উষ্ণ বাতাসে অন্যরকম এক মাদকতা। ভাল লাগার সৌরভে ভরে আছে চারপাশ। তবুও বুক ভেঙ্গে নামে দীর্ঘশ্বাস। এবারও আন্না কে একটা কথা বলা হয়নি।খুব ইচ্ছে করছিল বলি"আন্না ইউ আর অলওয়েজ ওয়েল্কাম টু বাংলাদেশ। বাংলাদেশ ইজ সেইফ ফর ইউ"। কিন্তু বলতে পারলাম কই?

মন্তব্য ৩০ টি রেটিং +৯/-০

মন্তব্য (৩০) মন্তব্য লিখুন

১| ০১ লা অক্টোবর, ২০১৬ রাত ৮:০২

সুলতানা শিরীন সাজি বলেছেন:
সুন্দর লিখেছো।
খুব ইচ্ছে করছিল বলি"আন্না ইউ আর অলওয়েজ ওয়েল্কাম টু বাংলাদেশ। বাংলাদেশ ইজ সেইফ ফর ইউ"। কিন্তু বলতে পারলাম কই?
খুব সত্যি অনুভব।
ভালো থেকো।
শুভেচ্ছা নেক্সাস।

০২ রা অক্টোবর, ২০১৬ বিকাল ৫:৩২

নেক্সাস বলেছেন: ধন্যবাদ আপু। আমরা একসময় আমাদের দেশ নিয়ে যে গর্ব করতাম তা জিও পলিটিক্যাল রাজনীতির ষড়যন্ত্র, অগনতান্ত্রিক শাষন,মোট জনসংখ্যার অতি ক্ষুদ্রতম অংশের ধর্মান্ধতা বা ধর্মের অপব্যাখ্যা মিলিয়ে ঘটে যাওয়া কিছু অনিভিপ্রেত ঘটনায় হাইয়ে যেতে বসেছে। আমাদের জাতিয় ঐক্যের কোন বিকল্প নাই। জাতিগত ঐক্য পারে আমাদের কে আগের জায়গায় ফিরিয়ে নিতে।

২| ০১ লা অক্টোবর, ২০১৬ রাত ৮:১৭

সৈয়দ আবুল ফারাহ্‌ বলেছেন: ভাল কথা জানালেন। ভাল লাগল।

০২ রা অক্টোবর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৪৯

নেক্সাস বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই

৩| ০১ লা অক্টোবর, ২০১৬ রাত ৮:৪৭

আহমেদ জী এস বলেছেন: নেক্সাস ,


অদ্ভুত ... অদ্ভুত ...অদ্ভুত.....
রম্য ঢঙয়ে লেখার ভেতরেও কয়েকটি কথা এমন হৃদয় নিঙরিয়ে বললেন যে, আপনার মতো আমারও বুক ভেঙ্গে নেমে এলো একটা দীর্ঘশ্বাস।
আমরা কাউকেই বলতে পারিনে - "ইউ আর বিউটিফুল" ! ওটা আমাদের সো-কলড মজ্জায় নেই । ভয় হয়, অন্য কোনও অর্থ করে বসে কিনা ! অথচ সাদা চামড়াদের দেখেছি , পথ চলতে একেবারে সামনা সামনি হলেই সালোয়ার -কামিজ পরিহিতা আমার স্ত্রীর দিকে তাকিয়ে বলতে - বিউটিফুল । উত্তরে আমরাও তাকে ধন্যবাদ দেয়ার সাথে প্রশংসা করলে মিষ্টি হেসে "বাই" বলে তার পথে চলে যেতো । এই দেশে এটি সম্ভব নয় ।
আবার তেমন করে সম্ভবও হয়না আর বলার সাহসও নেই --- " ইউ আর অলওয়েজ ওয়েল্কাম টু বাংলাদেশ। বাংলাদেশ ইজ সেইফ ফর ইউ"। +

০৩ রা অক্টোবর, ২০১৬ দুপুর ১:৪৩

নেক্সাস বলেছেন: আহমেদ ভাই আপনি খুব দারুন জায়গাটা ধরতে পারছেন। আমরা আসলে কারো সৌন্দর্যের প্রশংসা করতে হেসিটেট করি। কনফিউজড থাকি আইদার ইটস অফেন্স, ফ্লির্টিং অর নট। নারী তার সৌন্দর্য কেবল অন্তপুরের আলো হয়ে থাকবে, সেটা এক্সপোজ করা পাপাচার। এমন বিশ্বাসে আমাদের মনস্ত্বাত্তিক কাঠামো গড়ে ঊঠেছে। তাই আমরা সবজায়গায় ভয় পাই।

আর বাংলাদেশ কে কাউকে স্বাগতম জানানোর যে বড় মুখ হারিয়ে গেছে সেটা নাহয় নাহি বললাম।

৪| ০১ লা অক্টোবর, ২০১৬ রাত ১১:০৮

খায়রুল আহসান বলেছেন: "বাংলাদেশ ইজ সেইফ ফর ইউ" - এ কথাটা আর জোর গলায় কাউকে বলার উপায় নেই। আমাদের নিজেদের জন্যই বা কতটুকু নিরাপদ?
লেখাটা পড়ে খুব ভাল লাগলো। আন্নার মত বহু বিদেশী যারা গ্রামে গঞ্জে কাজ করেন, তারা বাংলাদেশ সম্পর্কে বেশ ভাল ধারণা নিয়ে যা্ন। সমস্যা শুধু নগর ও নগরবাসীদের নিয়ে।
আজ থেকে সাতাশ বছর আগে আমি বাংলাদেশের একটি বৈদেশিক দূতাবাসে প্রথম সচিব হিসেবে কাজ করতাম। সেখানে একদিন এক শেতাঙ্গ এলেন আমার অফিসে, বাংলাদেশে আসবেন, তাই ভিসা সম্পর্কিত কিছু তথ্য জানতে। এর আগেও তিনি বাংলাদেশে ছিলেন। আমি তাকে ইংরেজীতে স্বাগত জানিয়ে কথা শুরু করলাম, কিন্তু অবাক হয়ে গেলাম যখন তিনি পরিস্কার এবং শুদ্ধ উচ্চারণে বাংলায় তার জবাব দিলেন। তিনি যশোর এলাকায় কোন একটা এনজিওতে কাজ করতে করতে পরিস্কার বাংলা শিখে ফেলেছিলেন।

০৩ রা অক্টোবর, ২০১৬ বিকাল ৩:০৪

নেক্সাস বলেছেন: হুম আমি নিজেও অবাক হই সাথে আনন্দিত হই। বিদেশিদের কাছে যে সুন্দর সৌম্য বাংলাদেশ তা কেন হারিয়ে যাচ্ছে? আমাদের কে জাতিগত ভাবে এই প্রশ্নের সন্মুখিন হতে হবে। আমাদের কে ফিরে আসতে হবে আমাদের গৌরবের জায়গায়

৫| ০২ রা অক্টোবর, ২০১৬ রাত ২:৫০

রক্তিম দিগন্ত বলেছেন:
বাংলাদেশ কি আসলেই আন্নালিসের জন্য নিরাপদ?
আবেগ বলে হ্যাঁ নিরাপদ। যুক্তিও বলে নিরাপদ।

কিন্তু কিছু ঝামেলা থেকেই যায়।

সাম্প্রতিক হামলাগুলোয় বিদেশীদেরই হত্যা করা হয়েছে। তাদেরই প্রাণ নাশ করার চেষ্টাও চলছে। বাংলাদেশের এনজিও, বিভিন্ন দাতব্য প্রতিষ্ঠানের সুবাদে বিদেশীদের সংখ্যাও কম না। বলতে গেলে সেবার একটা অংশ তারাই দিচ্ছে।

তাদেরকেই যদি লক্ষ্যবস্তু বানিয়ে হামলা করা হয় - তাহলে তারা কীভাবে বাংলাদেশকে নিরাপদ মনে করবে?
আপাতদৃষ্টিতে দেশ তো নিরাপদই। কিন্তু তার কোন নিশ্চয়তা নেই।

তাই আর আগের মত জোর গলায় কোন বিদেশীকে বলাও যায় না যে বাংলাদেশে তোমাকে স্বাগতম। এগুলো এখন অতীত।

০৪ ঠা অক্টোবর, ২০১৬ দুপুর ২:১২

নেক্সাস বলেছেন: তাদেরকেই যদি লক্ষ্যবস্তু বানিয়ে হামলা করা হয় - তাহলে তারা কীভাবে বাংলাদেশকে নিরাপদ মনে করবে?
আপাতদৃষ্টিতে দেশ তো নিরাপদই। কিন্তু তার কোন নিশ্চয়তা নেই।


ধন্যবাদ রক্তিম সুন্দর মন্তুবের জন্য।

৬| ০২ রা অক্টোবর, ২০১৬ সকাল ১১:০০

হাসান মাহবুব বলেছেন: ঝরঝরে সুন্দর লেখনী। হলি আর্টিজানের ক্ষত সারতে সময় লাগবে। অবশ্য ততদিনে যদি আবার এমন কোন ঘটনা ঘটে যায়! ভাবতেই পারি না। আন্নার সরলতা মুগ্ধ করেছে। "হঠাৎ করে বাংলাদেশে এমন হলো কেন!"। এর উত্তর যদি তাকে দিতে পারতাম!

০৪ ঠা অক্টোবর, ২০১৬ বিকাল ৩:৩৭

নেক্সাস বলেছেন: এই প্রশ্নের উত্তর আসলে আমরা নিজেরাই খুঁজে দেখিনি হামা ভাই। আআমদের খুঁজে দেখতে হবে গতানুগতিকতার বাহিরে গিয়ে।

আপনার আমার প্রিয়ি বাংলাদেশ যেন স্বমহিমায় অটুট থাকে।
ধন্যবাদ।

৭| ০২ রা অক্টোবর, ২০১৬ দুপুর ২:০৪

সুমন কর বলেছেন: লেখার অন্তরালের বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। আমরা কি আন্নালিসের মতো সব বিদেশীদের বলতে পারবো, "বাংলাদেশ ইজ সেইফ ফর ইউ" !!

০৫ ই অক্টোবর, ২০১৬ বিকাল ৫:০০

নেক্সাস বলেছেন: আমরা একসময় বলতে পারতাম। এখন পারছিনা। নানা ষড়যন্ত্র আমাদের অহংকার ধংস করে দিয়েছে।

ধন্যবাদ ভাই

৮| ০২ রা অক্টোবর, ২০১৬ বিকাল ৪:৪৮

শ্রাবণধারা বলেছেন: লেখাটা ভাল লাগলো । অল্প সময়ের ব্যাবধানে একের পর এক বিদেশী খুনের ধারাবাহিকতায় হোলি আর্টিজানের রক্তপাত খুব দ্রুত বাংলাদেশকে পাল্টে দিয়েছে । এটা আর এখন কোন ছায়া সুনিবিড় শ্যামল প্রান্তর নয়, বরং চাপাতির কোপে সওয়াব হাসিলের রক্তাত্ত মরুভূমি ।

সত্যি বলতে কি আন্নারা আমাদের বিশ্বাস সম্পর্কে এবং দাড়িওয়ালা সেইন্ট (!) দের সম্পর্কে যত কম জানবে তত মঙ্গল, উভয়েরই ।

শুভকামনা ।

০৫ ই অক্টোবর, ২০১৬ বিকাল ৫:৫৭

নেক্সাস বলেছেন: না আন্না অনেক কিছু জানে। আমার আন্নার সাথে মেলা কথা হয়েছে। সবকিছুতও লিখা যায়না। আন্নার ভাবনার জগত অনেক উচু। আন্না সেইজন্য বাংলাদেশ কে এখনো নিরাপদ ভাবে। সে শুধু বলছে তা মা হয়ত তাকে আসতে দিবেনা।
আমাদের কালচার আমাদের দাড়িওয়ালাদের সম্পর্কে আন্না যতটা জানে, আপ্সোস আমরা ততটা জানিনা। আমরা গড্ডালিকা প্রবাহে গা ভাসাই, দোষারপের রাজনীতি করি, ইচ্ছামত বলির পাঠা বানাই। কিন্তু প্রকৃত সত্য জানিনা। জানার প্রয়োজন বোধ করিনা। আমরা চিলের পিছে ঘুরে মরি।

আন্নার যে ভাবনা সেভাবে আমরা ভাবলে, আমরা সচেতঅন হলে আমাদের সোনার দেশ সোনায় থাকবে।

ধন্যবাদ

৯| ০২ রা অক্টোবর, ২০১৬ রাত ১১:৫৯

তামান্না তাবাসসুম বলেছেন: সুন্দর সাবলিল ঝরঝরে লিখা, এরি মধ্যে দেশ নিয়ে দীর্ঘশ্বাস, চাপা অভিমান।

চমৎকার লেখনী।

১২ ই অক্টোবর, ২০১৬ দুপুর ২:১৯

নেক্সাস বলেছেন: নেকদিন পরে উত্তর দিতে হল তামান্না। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।

১০| ০৩ রা অক্টোবর, ২০১৬ সকাল ৮:১৪

জুন বলেছেন: হলি আর্টিজানের পরের দিনের কথা, আমার ছেলে স্কাইপে বলছে, "কাল আমার নতুন সেমিস্টার, নতুন ফ্যাকাল্টি জাপানিজ প্রফেসর । সেতো ক্লাশে এসে সবার নাম ধাম জানতে চাইবে, আমি কি করে বলবো আমার দেশ বাংলাদেশ! "। এ দুর্নাম আমরা যেন খুব দ্রুত কাটিয়ে উঠতে পারি নেক্সাস।
সুন্দর সাবলীল ভাষায় লেখাটি পড়ে আমার বলতে ভুল হলো না,
'অপুর্ব লেখা আপনার '।
+

১২ ই অক্টোবর, ২০১৬ বিকাল ৩:২৭

নেক্সাস বলেছেন: এ দুর্নাম আমরা যেন খুব দ্রুত কাটিয়ে উঠতে পারি। এর জন্য রাজনীতি বাদ দিয়ে আমাদের কে জাতিয় ঐক্য আনতে হবে। বলির পাঠা বানানোর থিঊরি থেকে বেরিয়ে আস্তে হবে।


ধন্যবাদ জুনাপা

১১| ০৩ রা অক্টোবর, ২০১৬ রাত ৯:৪৮

মুহাম্মদ জহিরুল ইসলাম বলেছেন: "আন্না ইউ আর অলওয়েজ ওয়েল্কাম টু বাংলাদেশ। বাংলাদেশ ইজ সেইফ ফর ইউ"। কিন্তু বলতে পারলাম কই?

:( :( :(

১৩ ই অক্টোবর, ২০১৬ বিকাল ৩:৩৫

নেক্সাস বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই।

১২| ০৪ ঠা অক্টোবর, ২০১৬ সকাল ৭:২৯

ডঃ এম এ আলী বলেছেন: চমৎকার গল্প । যে কয়বার দুবাই হয়ে যাতায়াত করেছি অভিজ্ঞতা তেমন ভাল হয় নাই । আপনার গল্পেও তাই উঠে এসেছে । দেশের বিষয় নিগেটিভলী আসলে খারাপ লাগে । ফ্রন্ট লাইনে যারা থাকে তাদের চিন্তাধরা ততটা মেচিউর্ড না থাকলেও ব্যকফুটে যারা থাকে তাদের মধ্যে যদি দেশ প্রেম বলতে কিছু থাকত তবে তারা দেশের নিরাপত্তার বিষয় নিয়ে এমন ঘটনা ঘটাতে পারতনা বলেই মনে হয় ।
ধন্যবাদ শুভেচ্ছা রইল ।

১৩ ই অক্টোবর, ২০১৬ বিকাল ৪:৩৮

নেক্সাস বলেছেন: আপনার সুন্দর গোছানো মন্তব্যের সাথে আমি একমত। ধন্যবাদ ডঃ সাহেব।

১৩| ০৪ ঠা অক্টোবর, ২০১৬ বিকাল ৩:৫৮

কানিজ ফাতেমা বলেছেন: যেখানে আমরা নিজেদের দেশে নিজেরাই নিরাপদ নই। সেখানে আন্নালিসের মত নাগরিকদের কিভাবে অলওয়েজ ওয়েল্কাম জানানো সম্ভব ! আমরা কি মুখ লুকানো জাতি হয়ে বেঁচে থাকব ?

১৬ ই অক্টোবর, ২০১৬ দুপুর ২:৩৫

নেক্সাস বলেছেন: যেখানে আমরা নিজেদের দেশে নিজেরাই নিরাপদ নই। সেখানে আন্নালিসের মত নাগরিকদের কিভাবে অলওয়েজ ওয়েল্কাম জানানো সম্ভব ! আমরা কি মুখ লুকানো জাতি হয়ে বেঁচে থাকব

একি প্রশ্ন আমারো


ধন্যবাদ ফাতিমা জান্নাত।

১৪| ০৪ ঠা অক্টোবর, ২০১৬ বিকাল ৪:১৬

মেহেরুন বলেছেন: লেখাটা পড়ে ভালো লাগলো। নিরাপদে থাকুক সবাই। এদেশে সবাই যেন নিরাপদে থাকতে পারে এটাই কাম্য।

১৬ ই অক্টোবর, ২০১৬ দুপুর ২:৪১

নেক্সাস বলেছেন: অনেক দিন পর মেহুরুন। অনেক অনেকদ ধন্যবাদ।

১৫| ০৪ ঠা অক্টোবর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:১৫

কল্লোল পথিক বলেছেন:



চমৎকার লেখনী।

১৬| ০৫ ই অক্টোবর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:১৭

শ্রাবণধারা বলেছেন: কাতারে কোথায় আছেন ? ভোডাফোন?

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.