নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
অনেক সুখের গল্প হল-এবার কিছু কষ্টের কথা শুনি...
আগের পর্বের জন্যঃ Click This Link
আলকাশ প্রথম পর্বঃ Click This Link
সুক্ষ চেকের ছাই-রঙ্গা ট্রাউজার। সুগোল কনুই এর কাছে অতি যত্নে গোটানো, ভাজ হীন মোলায়েম পাতলা সাদা কাপড়ের শার্ট! অতি কালো ঘন চুল পনিটেল করে বাঁধা। সাজ গোজের একদম বাহুল্য নেই। ঠোটে শুধু একটু খানেক হালকা রঙের প্রলেপ। সোনা রাঙ্গা রোদ এসে তার গায়ে লুটিয়ে যেন আত্ম- হননে ব্যাস্ত!
ধরিত্রীতে পা রাখতেই আমার দৃষ্টি পিছলে গেল তার বা হাতে ধরে রাখা একটা চামড়ার বেল্টের দিকে। ও বাপ! এ দেখি ধেড়ে কুকুড়। তাও টেরিয়র- শেফার্ড হলে কথা ছিল! ইনি থ্যাবড়ানো মুখের বুকে কাঁপন ধরানো বুল ডগ!
বুল-ডগ দেখে আমার আবাগ টাবেগ ‘কুল্লু খাল্লাস’- সব শেষ(নাজাত)!
আমার সামনে এসে দাড়িয়েই চরম স্মার্ট ভঙ্গীতে হাত খানা বাড়িয়ে ধরে বলল, ‘তি মিশু? ইয়া লিয়েনা।‘ তার মুখে মিশূ ডাক শুনে মনে হল, আমার নামকরনের স্বার্থকতা এতদিন বাদে হল। দু’ সেকেন্ড তব্ধা মেরে গেলাম! হাত বাড়িয়ে মনে হোল, এমন মোলায়েম হাতের স্পর্শ এ জনমে পাইনি। হাত ছেড়ে কুকুরের দিকে ভীত চোখে একটু চাইতেই, সে হেসে বলল, ওকে দেখে যতটা ভয়ঙ্কর মনে হয় সে অতটা নয়। বন্ধু চেনে চট করে! তুমি এখন ওর গায়ের উপর উঠে বসে থাকলেও সে কিছু বলবে না।
আমি তার কথা শুনে খানিকটা আশ্বস্ত হলাম কিন্তু শান্তি পেলাম না! কি চেহারা’রে বাবা। এ ব্যাটা সারাক্ষন আমাদের কাছে পিঠে থাকবে ভাবলেই’ওয়াফ’!
লিয়েনা টপ করে নিঃসঙ্কোচে আমার কনুই ধরে হাটতে শুরু করল। রূশীয় যুবতিরা পরিচিত যুবকের সাথে হাত খুলে হাটতে পারে না। এটা নাকি অসৌজন্যতা! ওদিকে আমার হৃদপিন্ড-তো গলার কাছে উঠে এসেছে! হাত ধরলে বুকের ছোয়া এড়ানো কঠিন। আট দশখানা রূশীয় মেয়েদের তুলনায় বেশ ভারি তার বক্ষ! হয়তো সুক্ষ কারুকাজের মোলায়েম অন্তর্বাসের সেগুলো বেধে রাখার সাধ্য নেই। প্রজ্বলিত মোমের শীতল উষ্ণতায় হাড় মাংস যেন গলে গলে যাচ্ছে। ‘ফ্লোরিওর’ এর রাস্তার সব ফুলের স্নিগ্ধতা আর সৌরভ যেন সে একা বয়ে বেড়াচ্ছে। সে বৈভবে মাতাল হয়ে আমার মাথার নাট-বল্টু সব খুলে পড়ার যোগার!
লিয়েনার কুকুরের নাম ‘রোল্ডা’ আদপে ‘রোল্দা’। তার কোন বিকার নেই, প্রভুর পাশে নিশ্চিন্ত মনে চুপচাপ হেটে আসছে। আমি তখনও জানি না ওটা মাদি না পুরুষ কুকুর। তবে রুশ নারীরা পুরুষ কুকুর পোষেনা তাই জানি।
বাসায় ফিরে লারিসার সাথে উষ্ণ কুশলাদি বিনিময়। মইন ওকে দেখে ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে কি ভাষায় কথা বলবে ভেবে না পেয়ে তোতলাতে লাগল!
লিয়েনা-ই ওকে সহজ করল রোমানিয়ান ভাষায় সম্ভাষন করে! মইন চমকে উঠল; প্রথম ধাক্কাতেই সে খল বল করে উঠল। যেন, কত দিনের আপনজন। কিন্তু দু-চারটা কথা বলেই আবার মুখে কুলুপ!
আমি জিগাই; কি ভাই চুপ মেরে গেলেন কেন।
-দাড়ান দুই পেগ মেরে নিই। চরম স্মার্ট মেয়ে! কথা বলে খাটি রোমানিয়ান ভাষায়- আমিট জানি টুক টাক, ভাবটা নেই একটু বেশী!
তবে ভাই চেহারা ফিগার কিন্তু চমতকার!আপনার সাথে মানাবে।
কি দিয়ে কি বলেন? পাগল নাকি। ওর হাভ-ভাব দেখেছেন? পুরো কিষিনেও তে এরকম আরেকটা পাবেন?
আরে মিশু ভাই, আপনি কি ভাবছিলেন- লারিসা আমারে ভালবাসবে? কন? লারিসা আমাকে বলেছে- ওকে আপনার জন্যই দাওয়াত দিয়েছে। আপনার বইন আপনারে খুব ভালবাসে।
ভাইরে মাথা একদম গ্যাছে। আমার স্ট্যাটাস আর ওরটা দেখেন? তারপরে রাস্তার ফকিরের দশা আমার।
বাইরে প্রতিবাদ করলেও- মনে মনে আমি খুশীতে টগবগ করে ফুটছি। তারপরেও চরম শঙ্কা! এই মেয়ে- কি করে সম্ভব?
আমন্ত্রিত অতিথি-বৃন্দ, আজকে আমার অতি প্রিয় ছোট সন্তান, আন্দ্রেউস্কার ১৮তম জন্মদিন! ফিট ফাট পোশাকে ছোট খাট মানুষটা হাতে মদের গ্লাস ধরে সবার উদ্দেশ্যে কথাগুলো বলে একটু থামলেন। সবার হাতেই গ্লাস, মেয়েদের বেশীর ভাগের হাতে লম্বাটে ঘাড় উচু গ্লাসে, শ্যাম্পেন! ছেলেদের হাতে ওয়াইন। আন্দ্রে মদের গ্লাস ধরে তির তির করে কাঁপছে। মুখে খানিকটা রক্ত জমে আছে লজ্জায়। অল্প একটু মাথা নিচু করে কেমন যেন অপরাধীর ভঙ্গীতে দাঁড়িয়ে আছে!
আন্দ্রে তাকাও, ওর বাবা ফের গলা খাঁকড়ি দিয়ে বলল; আন্দ্রে একটু খানি মাথা উচু করে আড় চোখে বাবার দিকে তাকাল।
আজ থেকে তুমি সবার সামনে মদ খাওয়ার অনুমতি পেলে। কিন্তু- ধুমপানের নয়। তোমাকে কখনোই যেন ধুমপান করতে না দেখি।
‘দাভায় বগু’ চলো শুরু করি। সবাই গ্লাস তুলে এ ওর সাথে ঠুকাঠুকি করে, টুক করে এক পেগ মেরে দিয়ে-আন্দ্রেকে অভিনন্দন জানাতে ব্যাস্ত হয়ে উঠল।
মেয়েরা শ্যম্পেন একবারে খায় না, চুক চুক করে একটু একটু করে পান করে। লিয়েনার হাতে কিন্তু খাটি মদের গ্লাস।
সে শ্যম্পেনের ধার ধারে না- ওয়াইনেও তার আপত্তি। সে খাচ্ছে খাঁটি ভদকা!
ওরে বাপরে! মইন দেখে চমকে উঠল। একদম ‘র’...সে বড় ড্যাম কেয়ার মেয়ে- কারো প্রতি ভ্রূক্ষেপ নেই। ওকে যত দেখি তত চমকিত হই। মনে হয় এর অ্পেক্ষাতেই ছিলাম...
মইন ধীরে ধীরে ফের খোলস ছাড়ছে। লিয়েনাকে সে নাচের আমন্ত্রন জানাল- লিয়েনা সঙ্গে সঙ্গেই রাজী, কোন দ্বীধা নেই। আমি অগত্যা সিভেতার সাথে। আন্দ্রে নাচে ওর বোনের সাথে।
মাঝে মাঝে টুক টাক খাওয়া দাওয়া, গ্লাসে গ্লাসে ঠোকা-ঠুকির বিরতি! এর মাঝে পার্টনার পরিবর্তন। মইন লিয়েনাকে ছেড়ে তার মুলে ফিরে গেল। লারিসা প্রথমে সায় দেয় না। মইন এই ভয়-ই পাচ্ছিল! কিন্তু নেশার ঘোরে তাল ঠুকল!
এই পর্ব আজকের মত শেষ- কাল ফের দেখা হবে...
পরের পর্বের জন্যঃ Click This Link
০২ রা আগস্ট, ২০২০ বিকাল ৫:১০
শেরজা তপন বলেছেন: না না এই জীবনের কাহিনী
কাহিনী ৯০ দশকের। লিখেছি তার একযুগ পরে। এই লেখার শেষ পোস্ট দিয়েছি সাত বছর আগে।
২| ০২ রা আগস্ট, ২০২০ রাত ৮:৩১
আকন বিডি বলেছেন: আসসালামুআলাইকুম বস।
ভাবি আসে পাশে নাইতো?
এখন তাদের সাথে কোন যোগাযোগ আছে?
০২ রা আগস্ট, ২০২০ রাত ৯:১০
শেরজা তপন বলেছেন: ভাবি আছে কাছে পিঠে সুবিধা হইল আমি কি লেখালেখি করি এই নিয়ে সে মাথা ঘামায় না !
পুরোটা আগে লিখে শেষ করি তারপরে একটা প্রশ্ন উত্তর পর্ব না হয় হবে- কি বলেন? আশা রাখছি সব প্রশ্নের উত্তর কিছু ছবি সহ ও দিব।
তার আগে অবশ্য মিশু ভায়ের অনুমতি নিতে হবে
ধন্যবাদ ব্রাদার আপনার সাথে থাকার জন্য।
৩| ০২ রা আগস্ট, ২০২০ রাত ৮:৫১
রাজীব নুর বলেছেন: পোস্ট পড়ে মনে হচ্ছে আপনি সাহসী।
০২ রা আগস্ট, ২০২০ রাত ৯:১৪
শেরজা তপন বলেছেন: নারে ভাই সাহসী না- সাহসী হলে সাত বছর আগে এই সিরিজ ছেড়ে ভাগতাম না!
সামনে পড়লে অনেক অন্যরক কিছু জানবেন সেই নিশ্চয়তা দিচ্ছি। সাথে থাকুন
৪| ০৩ রা আগস্ট, ২০২০ বিকাল ৩:২৭
অশুভ বলেছেন: পাইলাম, অবশেষে তাহাকে পাইলাম। মাঝে কয়েকদিন সামুতে আসার সময় পাই নি। আজকে এসেই বিগ সারপ্রাইজ!!!
অসংখ্য ধন্যবাদ তপন ভাই। আগে ধন্যবাদটা জানিয়ে দিলাম। এখন পড়া শুরু করব।
০৩ রা আগস্ট, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:২৯
শেরজা তপন বলেছেন: আমিও সারপ্রাইজড হলাম- পুরনো কাউকে না পেয়ে বিমর্ষ ছিলাম! আজকে ফেসবুকে একটা মন্তব্য পেয়ে আর আপনাকে দেখে বিমর্ষ ভাব কেটে গেছে।
সুস্থ থাকুন- সুন্দর থাকুন
৫| ০৪ ঠা আগস্ট, ২০২০ দুপুর ২:১০
অশুভ বলেছেন: আপনার লেখাগুলো অনেকটা কাল্ট ফিল্মের মত। একটা নির্দিষ্ট ফ্যানবেইজ আছে, যারা আপনার লেখার একনিষ্ট ভক্ত। বিশেষকরে কিছু সিরিজের ক্ষেত্রে এটা প্রকট (এই যেমন আলকাশ, রুস্কাইয়া ব্লুদা বা কাগদা ভ রাশিয়া)। তাই আপনার লেখার পাঠক নিয়ে দুশ্চিন্তার কিছু নেই।
০৪ ঠা আগস্ট, ২০২০ বিকাল ৩:৪৯
শেরজা তপন বলেছেন: আমিও তাই ভাবি- কিন্তু সময় মত সবার কাছে পৌছাতে পারিনা। তখন মনে হয় সবাই আগ্রহ হারাচ্ছে- তাই একটু হতাশ হয়ে পড়ি। সামুতে এখন অল্প কিছু ব্লগার তাদের লেখা আর মন্তব্য নিয়ে পুরো ব্লগের পাতা দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন।
এদের পাশাপাশি নিজের অবস্থান ফের তৈরি করা একটু কঠিন বৈ-কি। তবে এবার আমি দৃঢ় সঙ্কল্পবদ্ধ যে, এটা শেষ করে ছাড়ব।
তবে মাঝে আরেকটা সমসাময়িক বিষয় নিয়ে নতুন একটা সিরিজ ঢুকে যেতে পারে, কিন্তু পাশাপাশি এটা চলবে।
সবগুলো কি পড়েছেন(আলকাশ)? অনেক অনেক ধন্যবাদ। ভাল থাকুন। আপনিও ভ্রমন কাহিনী আরো লিখুন
৬| ০৫ ই আগস্ট, ২০২০ রাত ১:২৮
কাতিআশা বলেছেন: মনে হচ্ছে ভাসিলি সুকশিনের ছোট গল্প পড়ছি..খুব ভাল লাগছে!
০৫ ই আগস্ট, ২০২০ বিকাল ৩:৩৭
শেরজা তপন বলেছেন: মন্তব্যে আপ্লুত হলাম! আগের পর্বগুলো বলেছিলেন পড়বেন-পড়েছেন?
পরে পর্বগুলোতেও আপনাকে সাথে পাব আশা করতেই পারি- ধন্যবাদ
৭| ০৮ ই আগস্ট, ২০২০ সকাল ১১:০২
মনিরা সুলতানা বলেছেন: কাহিনীর বাঁকে বাঁকে যে কত কি আছে !!!!
দুর্দান্ত বর্ণনা ।
০৮ ই আগস্ট, ২০২০ সকাল ১১:০৬
শেরজা তপন বলেছেন: আপনাকে ছাড়াই কতগুলো পোষ্ট দিয়ে ফেললাম!! বেড়ালেন কেমন?
১১তে যান আর আমিও রেডি হচ্ছি ১২তম পোষ্ট নিয়ে।
ধন্যবাদ- তবে এতদিন পরে এসে এত ছোট ছোট মন্তব্যে হবেনা...
৮| ০৮ ই আগস্ট, ২০২০ সকাল ১১:১৪
মনিরা সুলতানা বলেছেন: বেড়ানো তো ঈদ করতে যাওয়া, সে সব সময়ই আনন্দের ! ভ্রমণ বলে কথা। তবে এবারে বাই রোড যাওয়াতে বেশ ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে, ৫ ঘণ্টার জার্নি ২০ ঘণ্টায় শেষ হয়েছে।
বিশাল মন্তব্য তো আমাকে দিয়ে হয়না কোন কালেই; এক সময় প্রচুর কথা বলতাম হয়ত সেই বিশ্ববিদ্যালয় আমলে এ লেখা পড়লে পোষ্ট এর সমান মন্তব্য ই করে বসতাম।
০৯ ই আগস্ট, ২০২০ সকাল ১০:১২
শেরজা তপন বলেছেন: -পাটুরিয়া নাকি মাওয়া রোডে?
আহারে আমি যদি সেই দিনে ফিরে যেতে পারতাম- তাহলে কত বড় বড় মন্তব্য না পাইতাম!!!
আফসোস...
৯| ২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৫৭
পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: আমি আজ সারাদিনে আপনার আলকাশ নিয়েই আছি।। আঠারোতে পা দিলো আন্দ্রে। ওয়াইনের অনুমতি পেলেও সিগারেটে নয়। বরাবরের মতো চমৎকার। দেখি এখন কোন পর্বে কমেন্ট নেই।
শুভেচ্ছা প্রিয় তপন ভাইকে।
১০| ০৯ ই জুলাই, ২০২৪ সকাল ৯:৫৫
খায়রুল আহসান বলেছেন: "প্রজ্জ্বলিত মোমের শীতল উষ্ণতায় যেন হাড় মাংস গলে গলে যাচ্ছে" - সেটা বেশ বোঝা যাচ্ছে, কিছুটা প্রাক অনুমানও করা যাচ্ছিল; এবং লিয়েনার সাথে সাক্ষাতে মইনের তোতলামিটাও।
"তার আগে অবশ্য মিশু ভাইয়ের অনুমতি নিতে হবে" (২ নং প্রতিমন্তব্য) - এই ছলটাও।
পোস্টে চতুর্থ প্লাস। + +
১০ ই জুলাই, ২০২৪ বিকাল ৩:৪৭
শেরজা তপন বলেছেন: চমৎকার সব মন্তব্যের জন্য সবিশেষ ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা।
©somewhere in net ltd.
১| ০২ রা আগস্ট, ২০২০ বিকাল ৫:০৭
চাঁদগাজী বলেছেন:
ছাত্র জীবনের কাহিনী?