নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
অনেক সুখের গল্প হল-এবার কিছু কষ্টের কথা শুনি...
ঢাকার নামকরন নিয়ে প্রথম কিংবদন্তি
অনেক ঐতিহাসিকের মতে মুঘল সম্রাট জাহাঙ্গীর ১৬১০ খ্রিষ্টাব্দে ঢাকাকে সুবাহ্ বাংলার (বর্তমান বাংলাদেশ, ভারতেরপশ্চিমবঙ্গ, বিহার, ঝাড়খণ্ড এবং উড়িষ্যার বেশকিছু অঞ্চল) রাজধানী হিসেবে ঘোষণা করেন;তখন সুবাদার ইসলাম খানআনন্দের বহিঃপ্রকাশস্বরূপ শহরে ঢাক বাজানোর নির্দেশ দেন। এই ঢাক বাজানোর কাহিনী লোকমুখে কিংবদন্তির রূপ নেয় এবংতা থেকেই শহরের নাম ‘ঢাকা’হয়ে যায়। এখানে উল্লেখ্য যে, মুঘল সাম্রাজ্যের বেশ কিছু সময় ঢাকা সম্রাট জাহাঙ্গীরের প্রতিসম্মান জানিয়ে জাহাঙ্গীরনগর নামে পরিচিত ছিলো।তাছাড়া ক্ষুদ্র ব্যক্তিত্বের চাঁনমাল সরদার ছিলেন ঐতিহ্যবাহী পুরানঢাকার নারিন্দা, ওয়ারি, ধোলাইখাল, গেন্ডারিয়া, সূত্রাপুর, সদরঘাট, সিদ্দিক বাজার সহ আশেপাশের সকল এলাকার সরদারযিনি পুরনো ঢাকার উন্নয়নের লক্ষ্যে তার ও তার সমগ্র পৈতৃক সম্পত্তি ভান্ডার বিলিন করে দেন।
ঢাকাইয়া নাটকগুলি দেশজুড়ে জনপ্রিয়,এমনকি ভারতীয় চলচ্চিত্রনির্মাতা সত্যজিৎ রায়ওএই উপভাষায় সংলাপ লিখেছেন। ঢাকাইয়া কুট্টি লোককথা সমূহ "কুট্টি কৌতুক" নামে এবং সাধারণত উপভাষার রম্য দিকের জন্য বিখ্যাত।
এটিকে বাংলা উপভাষাগুলির মধ্যে একটি মর্যাদাবান উপভাষা বলে মনে করা হয়। সাধারনত ‘ঢাকাইয়া’ লোকগাঁথায় উল্লেখিত; তারা বহিরাগতদের বা অঢাকাইয়া বাঙ্গালিদের ‘গাঁইয়া’ নামে অভিহিত করে আর কোলকাতানদের ‘ডেমচি’ নামে ডাকে।
সত্যজিৎ রায়ের ‘ছিম্বল’ ও পুরান ঢাকার বক্সার মিয়া:
-----------------------------------------------------------------------------
বাংলাদেশের স্বাধীনতার মাস দেড়েক পরে সত্যজিৎ রায় ঢাকায় এসেছিলেন। বক্তৃতা দেন ঐতিহাসিক পল্টন ময়দানে। আহামরি নয়,একেবারেই মামুলি।
একটি বাক্যে পুলকিত আমরা; এই আমার পিতৃ-পুরুষের দেশ। কী করে ভুলি বাংলাদেশ,কেউ কি ভোলে?...
প্রতিটি শব্দ কানের ভেতর ঢুকে এখনও সেঁধে আছে। কেন থাকবেনা। ছিলুম মঞ্চের সামনেই। দেখি আপাদমস্তক। পরনে সাদা পাঞ্জাবি, পায়জামা। ভরাটকণ্ঠ। আগে শুনিনি। পাশেই কলতাবাজারের ঢাকাইয়া কুট্টির কথা,
-এই হালারপোর কাছে আমাগো শ্যাখ ছাহাব(শেখ সাহেব।বঙ্গবন্ধু।)লম্বায় খাটো হইব।
মাগার,কলকাত্তার ডায়লগে লেচকার ঝাড়ে। হালায় নাকি বহুত কামিল।
-----------------------------------------------------------------------
সত্যজিৎ রায়ের সাথে নিন্মের সরস আলোচনাটা নির্বাসিত কবি- দাউদ হায়দারের স্মৃতিচারন থেকে নেয়াঃ ( পাঠকদের কাছে অনুরোধ, কুট্টি ভাষা কম জানলেও চলবে- কিন্তু লেখাটা দু’বার কুট্টি ঢঙ্গে জোরে জোরে পড়বেন, তাহলে হয়তো আসল স্বাদ পাবেন।)
কলকাতার ৭ নম্বর যতীন বাগচী রোড। সপরিবারে নিচের তলায় ভাড়াটে সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায়। ইউএসআইএস (৭ নম্বর জওহরলাল নেহরু রোড। এখন নাম ও স্থানের বদল।)-এর প্রোগ্রাম ডিরেক্টর।
সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায়ের ফ্ল্যাটে, প্রায়-প্রতিবার বিকেল সন্ধ্যায় জমজমাট আড্ডা। বহু রথী-মহারথীর উপস্থিতি। শিল্পীসাহিত্যিক, গায়ক-গায়িকা, অধ্যাপক, বুদ্ধিজীবী, সাংবাদিক, রাজনীতিক মায় ভবঘুরেও।
এক আড্ডায় কথা উঠলো সত্যজিৎ রায়ের ‘অশনি সংকেত’ ছবি নিয়ে। নানা মুনির হরেক মতামত। অর্থনীতিবিদ-অধ্যাপক সত্যেশ চক্রবর্তী (কবি বিষ্ণু দে’র বড়ো জামাই) খাঁটি ঢাকাইয়া বাঙাল। বললেন, ‘এইটা (অশনি সংকেত) হইলো দুর্ভিক্ষের রোমান্টিক সিম্বলিক ফিলিম।’
- শুনে,আমি সশব্দে হেসে বলি, ‘সিম্বল?’
- এই কথায়, কেউ-কেউ চোখ খাটো করে, রাগমাখা কণ্ঠে জানতে চান, ‘হাসার কী আছে?কারণ কী?’
- বলতেই হয়। বলায় যে কী বিপদ, চারদিন পরে হাড়েমজ্জায় টের পাই। সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায় টেলিফোন করে বললেন, ‘কাল বিকেল পাঁচটায় আমার অফিসে আসবি। মানিকদার ওখানে যাবো। মানিকদা তোকে দেখতে চান, তোর সঙ্গে কথা বলতে চান।’ স্থির বিশ্বাস হয়, সত্যজিৎ রায় আগামী ছবির জন্যে নতুন নায়ক খুঁজছেন, চেহারা দেখে, কথাবার্তা শুনে নিশ্চয় নির্বাচন করবেন। অভিনয় না-জানলেও শিখিয়ে দেবেন।
সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায় দেখেই বললেন, ‘কী রে, এত মাঞ্জা মেরে এসেছিস কেন? ঠোঁটে লিপস্টিক লাগিয়েছিস মনে হচ্ছে। শুরুতেই টাস্কি খেলুম।
ট্যাক্সিতে যেতে-যেতেও সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায় খোলাসা করেননি রহস্য। উত্তেজনায় কাঁপছি।
পৌঁছে গেলুম সত্যজিতের ১ নম্বর বিশপ লেফরয়েড-এর বাড়িতে। দরোজা খুললেন সত্যজিৎ রায়। দেখে বুক, হাত-পা কাঁপে (পরে অবশ্য বহুবারই গেছি, নানা অছিলায়। নিজেও ফোন করে ডেকেছেন বিভিন্ন কারণে। থাক সে সব।)চা এলো।
সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায় বললেন,‘ওর নামই দাউদ হায়দার।ওর কাছেই বিস্তারিত শুনুন।’
সত্যজিতের প্রশ্নঃ‘তুমি নাকি আমাকে নিয়ে কী সব বলেছো সুপ্রিয়’র বাড়িতে? সুপ্রিয় বলেনি,বলেছে তোমার মুখেই শুনতে।’
-আকাশ থেকে পড়ি না, গা গতরও জখম হয় না, প্রায়-আধমরা। মৌন। তা হলে নায়ক-টায়ক নয়, উবে গেলো আশা। স্বপ্ন কুহকিনী।
সত্যজিৎঃ বলছো না কেন?
- না, কিছু বলিনি তো।
সত্যজিতঃ বলোনি? কী সুপ্রিয়...?
সুপ্রিয়ঃ মানিকদাকে নিয়ে ঢাকাইয়া কুট্টির সিম্বলের গল্পটা বল।
- বলা যাবে না।
সত্যজিৎঃ কেন?
- আপনাকে ‘হালা’মানে শালা বলতে হবে।
সত্যজিৎঃ -আমাকে শালা বলবে?
-বলতেই হবে। উপায় নেই। জানেন,বাপ ছেলেকে হালা বলে,ছেলে বাপকে হালা। ঘরোয়া তথা আত্মিক সম্বোধন। হালা কলোকুয়াল। আরবি ভাষায়,- হালা সুন্দরী ও সুখী। ঢাকাইয়া কুট্টিদের নিত্যবেলার মুখের বুলি হালা,ছোট-বড় বয়স মানেনা। এবং এই নিয়ে কেউ ঘিলু খামচায় না।
-জানি, কুট্টিরা কথায় কথায় ‘হালা’ বলে।
আমি,- যদি অনুমতি দেন,ঘটনা বলতে পারি?
-তারমানে, তুমি আমাকে হালা বলবেই?
সুপ্রিয় বন্দোপাধ্যায় বলল,
-একটু কম বলিস। আচ্ছা বল।... যেন সত্যজিতের হয়ে তিনিই অনুমতি দেন। সত্যজিতের মুখ ভয়ঙ্কর গম্ভীর। পরিবেশ থমথমে। লজ্জা ও ভয়ে শরীরে কাঁপুনি আমার। কয়েক সেকেন্ড কেটে যায়।
সত্যজিৎ রায় বললেনঃ -শুরু করো।
পুরান ঢাকার বকশিবাজারের বক্সার মিয়ার বহুত ঝনঝনানি(টাকাকড়ি)। খরচের অলিগলি-মাঠ-ময়দান নাইক্যা। বক্সার মিয়ার খায়েস জাগছে টকি খ্যালাইবো (সিনেমা বানাবে)। বনছলের(আর ডি বনসল) ল্যাহান নাম ফাটাইবো দুনিয়ায়। এই হাউস লইয়া, রিসকায় চইড়্যা,গায়ে লাল পাঞ্জাবি,গলায় ফুল তোলা রুমাল,পরনে সফেদ লুঙ্গি, ডাইন পায়ের উরপে(উপরে)বামটা তুইল্যা ঢাকার ফিলোম স্টুডিওয়(এফডিসি)গ্যাছে। গ্যাটম্যানরে হুকুম ঝাড়ে,
-এইহালায়,তোগো মহল্লায় ক্যাঠায়-ক্যাঠায়(ডিরেক্টর)টকিস খ্যালায়? ডাইক্যা লইয়া আয়। জলদি যা,
-এই ল দুই পাত্তি (দশটাকা,দশটাকা)।
বক্সার মিয়ার নাম হুইন্যা দুই খ্যালোয়ার(ডিরেক্টর) হাইজাম্প দিয়া আইয়া ছালাম ঠোকে।
বক্সারমিয়াঃ-তুমরা হালায় টকি খ্যালাও?
দুই পরিচালক (বুকখোলা। দু'জনের বুকেই সোনার চেন।)
-দেইখখ্যা ও কি মালুম হয়না?
বক্সারমিয়াঃ এক্ষণে হইছে। ওই হালারা,কলিকাত্তার বনছল পোরডিউছার হালার নাম হুনছ? ওই বনছল মিয়া আর ছোত্যযিত হালার টকি খ্যালায় ( সিনেমা বানায়)। দুই হালায় তামাম দুনিয়ায় চক্কর মারে। বনছল পোরডিউছার হইয়া বহুত নাম ফাটাইছে। ছোত্যযিত মিয়া ছিম্বলের টকি মারে ( সিম্বোলিক ফিল্ম করে)। তুমরা হালারা,ছোত্যযিত হালার ল্যাহান টকি খ্যালাইবার পারবা?
দুই পরিচালক কয়ঃ পারুমনা মানে,আমাগো হালায় পোলাপান পাইছেন? ডবল ছিম্বল খ্যালামু। ছোত্যযিতের উস্তাদ হইয়া যামু। আফনিও (আপনিও)হালায় বনছল হইবেন।
বক্সারমিইয়াঃ-টকির দুই সটের(সিনেমার দুই শটের)কাহানি লাগাও?
প্রথম পরিচালকঃ বিহান বেলায় সুরয ওঠে আর ডোবে,প্রেমিক-প্রেমিকা রমনা পার্কে। লা জবাব। ঝিরিঝিরি হাওয়া। প্রেমিকার ছিনার উড়ূনি খইস্যা ( বুকের ওড়না খুলে) ঘাসে লুটায়। লভর (প্রেমিক)খাবি খায়। এইটা হইলো নয়া ছিম্বল (সিম্বলিক শট)
বক্সারমিয়াঃ ওই হালা,আমারে ছাগলনাইয়ার পাগলা পাইছো? সুরয ডোবে আর ওঠে? বিহানবেলায় উড়ূনি পিন্দায়ে জগিং মারে ( সকালে ওড়না পড়ে জগিং করে?)? ছিম্বলের মাজেজা হিগাইয়া আমারে টিচিং দিবা? টাল্টিবাল্টি ঝাইড়ো না।
দ্বিতীয় পরিচালকঃ
-রাইতের আসমানে এক ফালি চান (চাঁদ)। ফাগুন মাস। জোছনা টাঙ্কি মারে নদীর ঢেউয়ে। ম্যাঘ আইয়া ফুচকি মারে। লভর-লাভার কচি ধুতরা ফুল মুখে হান্দায়,না চিবাইয়া কিসিং করে। মহব্বতের এই ছিম্বল- ছোত্যযিত দেখাইতে পারবো?
বক্সারমিয়া কয়ঃ এই হালার হালা,আমারে কাছিমপুরের কাওঠা (কাছিম)পাইছো? আসমানে এক চিলতে চান(চাঁদ),তুমার মরা বাপ হালায়- গোর ত্যান বাই পোস্টে জোছনাম্যাঘ পাঠাইছে?
বক্সার মিয়াঃ
-লভর কি বিষ ধুতরা খায়? দিমুনে চটকানি। আচ্ছা টকির প্লটে কি ছিম্বল অইব কই; ছাহারা ডেরজারট। চোত মাসের দুপ্পুরবেলা। মধ্যিখানে পার্ক। টবের গাছগাছালি কালার দিয়া সাজাইবা- সব কালারের ফুল সদরঘাটে পাইবা। কাগজের গাছ ও- কাগজের বহুত কালারের ফুলও পাওন যায়। ছব হাচা মনে হইবো।
পার্কের এক ফার্লং তফাতে সইরছা খ্যাত,পটলের খ্যাত। মনে লয় তো একখান কদম গাছও লাগাইও। কদমফুলও। চোত মাসের ছাহারায় লভর-লুভর সানবাথ করবো। কসটিউম বেশি ছোট কইরো না। সেন্সর আটকাইবো। পাবলিকে পেঁদাইবো।
যহন ডেরেস চেরেন্জ করত্যাছে,হঠ্ঠাস ওল্ড লভর হাজির। শুরু হইলো ওল্ড আর নব্যর (নতুন লাভারের) ফাইট। ওল্ড- ভিলেন। নব্য- হিরো। ঢিসুমঢুসুম চলত্যাছে,চলত্যাছে। নব্যর বলো (ঘুষি) ছুটত্যাছে ওল্ডের ডাইন চোক্ষে। কাট!
অহন কও,কী ছিম্বল অইব?
দুই পরিচালক চুল ঝাঁকিয়ে,মাথা খামচিয়ে নানা ‘ছিম্বল’ বললে।
বক্সারমিয়াঃ
-ধুর হালারা,তুমরা হালা ছোত্যযিত হইবার পারবা না,আমিও হালায় বনছল। ওই যে বলো ছুটত্যাছে, কাট কইরা দেখাইবা সইরছা খ্যাত,ওল্ড সইরছা ফুল দ্যাখত্যাছে চোক্ষে।
দোসরা ছিম্বল; আরব দরিয়ার বিচে লভর-লুভর হাঁটত্যাছে। কোলাজ (ক্লোজ)মোসনে দেখাইবা। খবরদার,হাত ধরাধরি না। পাবলিকে পিটাইয়া তক্তা বানাইবো। আবার ওল্ডের লগে দেখা। ফাইট। চলত্যাছে,চলত্যাছে। নব্যর বলো ক্যারেন্টের ল্যাহান ছুটত্যাছে। কাট।
কও কী ছিম্বল?
প্রথম পরিচালকঃ
- ঢেউয়ে-ঢেউয়ে গর্জন। ঢেউ আর নট নড়নচড়ন।
দ্বিতীয় পরিচালকঃ
-নীল নদে আমেরিকা আর রাশিয়ার নাবিক হুইস্কি-ভদকা খাইত্যাছে। গল্গাসে-গল্গাসে ঠক্কর দিয়া ‘তুম হামারা কমরেড বইল্যা ডিসকো নাচত্যাছে’!
বক্সারমিয়াঃ
-তুমরা হালারা ঝিঁঝির পোলা। গুন্জরণ করো। নব্যর বলো ওল্ডের খোমার (মুখের)দিকে যাইত্যাছে, কাট কইরা দ্যাখাইবা,ওল্ড পটল তুলত্যাছে। কও,ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন ...
সত্যজিৎ রায় গলা-চড়িয়ে হেসেই বিষম খান। কয়েক সেকেন্ড ঘরময় আর কোনও শব্দ নেই। সত্যজিৎ স্থিতু হন।
সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায়: পটল তুলল, মানে?
সত্যজিৎ রায় বললেনঃ ওল্ড প্রেমিক মারা গেছে। আচ্ছা, গল্পটি ঢাকাইয়া কুট্টির না তোমার?
-না আমার না, এটা চাঁদভাই মানে অভিনেতা গোলাম মুস্তফা ভায়ের গল্প।
কবি দাউদ হায়দার (জন্মই যার আজন্ম পাপ…) বাংলাদেশের প্রথম নির্বাসিত লেখক
'আমিও ভাবি তাই, ভাবি নতুন মডেলের চাকায় পিষ্ট হবো
আমার জন্যই তোমাদের এত দুঃখ
আহা দুঃখ
দুঃখরে!
আমিই পাপী, বুঝি তাই এ জন্মই আমার আজন্ম পাপ'।
কালো সূর্যের কালো জ্যোৎস্নায় কালো বন্যায়- অবশ্যই আপত্তিকর এমন কিছু কথা আছে যা চরমভাবে ধর্মীয় অনুভুতিতে আঘাত হানে! তিনি একসাথে তিন তিনটে ধর্ম অনুসারীদের ক্ষেপিয়ে তুলেছিলেন (কিন্তু মাত্র বাইশ বছের একজন সদ্য যুবক কি-ই বা বুঝত তখন?)।
যদিও পরে ক্ষমা চেয়েছিলেন-‘কোন ধর্মকে বা ধর্মবোধকে আঘাত করার অভিপ্রায় আমার ছিলনা।আমি নিজেও মুসলমান। আল্লাহ, রাসুল(দঃ) ও কোরানে আমি বিশ্বাস করি।অন্য ধর্মমতকে আমি শ্রদ্ধা করি।আমার কবিতার জন্য আমি শুধু লজ্জিত ও বিব্রত নই পীড়িত ও অপরাধ বোধ করিতেছি।ভবিষ্যতে আমি ওই কবিতাটি কোন বইতে অন্তর্ভুক্ত করিব না কিংবা কাহাকেও প্রকাশ করার অনুমতি দিব না’।
সেই সময়ে ক্ষমা করে দিলে কি হত জানিনা- তবে পরবর্তীতে তিনি তার কথা রাখেননি, হয়তো ক্ষমা পাননি বলে।
তবে আমার ব্যক্তিগতভাবে তার কবিতা’কালো সূর্যের কালো জ্যোৎস্নায় কালো বন্যায়’ বেশ কিছু বক্তব্যের ব্যাপারে চরম আপত্তি থাকলেও-সেইকবিতার কয়েকটা লাইন বেশ ভাল লাগে।
'আদমের সন্তান আমি; আমার পাশে আমি?
আমি আমার জন্ম জানি না। কীভাবে জন্ম?আতুরের ঘরে কথিত
জননী ছাড়া আরে কে ছিল? আমায় বলে নি কেউ।
আমার মা শিখালো এই তোর পিতা, আমি তোর মাতা।
আমি তাই শিখেছি। যদি বলতো, মা তোর দাসী, পিতা তোর দাস;
আমি তাই মেনে নিতুম। কিংবা অন্য কিছু বললেও অস্বীকারের
উপায় ছিল না।
আমি আজ মধ্য যৌবনে পিতা মাতার ফারাক বুঝেছি। বুঝেছি সবই মিথ্যা
বুঝেছি কেউ কারও নয়; কেউ নয় বলেই তো বলি
একদিন সবকিছুই যাবে চলে (চলে যাবে)'
দাউদ হায়দার একজন বাংলাদেশী বাঙালী কবি, লেখক ও সাংবাদিক, যিনি ১৯৭৪ খ্রিষ্টাব্দে দেশ থেকে নির্বাসনের পর বর্তমানে জার্মানীতে নির্বাসিত জীবন যাপন করছেন। তিনি বর্তমানে একজন ব্রডকাস্টিং সাংবাদিক।তিনি একজন আধুনিক কবি যিনি সত্তর দশকের কবি হিসাবে চিহ্নিত। তার একটি বিখ্যাত কাব্যের নাম "জন্মই আমার আজন্ম পাপ"।
কর্মজীবন
সত্তর দশকের শুরুর দিকে দাউদ হায়দার দৈনিক সংবাদের সাহিত্য পাতার সম্পাদক ছিলেন। ১৯৭৩ সালে লন্ডন সোসাইটি ফর পোয়েট্রি দাউদ হায়দারের কোন এক কবিতাকে “দ্যা বেস্ট পোয়েম অব এশিয়া” সম্মানে ভুষিত করেছিল। সংবাদের সাহিত্যপাতায় 'কালো সূর্যের কালো জ্যোৎসায় কালো বন্যায়' নামে একটি কবিতা লিখেছিলেন। ধারণা করা হয়ে থাকে, তিনি ঐ কবিতাতে হযরত মোহাম্মদ, যিশুখ্রীষ্ট এবং গৌতম বুদ্ধ সম্পর্কিত অবমাননাকর উক্তি ছিল যা সাধারণ মানুষের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করেছিল। তার সংস্ অব ডেস্পায়ার বইতে এই কবিতাটি সঙ্কলিত আছে বলে ধারণা করা হয়। বাংলাদেশে মৌলবাদী গোষ্ঠী এর বিরুদ্ধে প্রচণ্ড প্রতিবাদ শুরু করে। ঢাকার এক কলেজ-শিক্ষক ঢাকার একটি আদালতে এই ঘটনায় দাউদ হায়দারের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছিলেন।
দেশত্যাগ
তৎকালীন বঙ্গবন্ধুরসরকার তখন চায়নি আন্তর্জাতিকভাবে মুসলিম সরকারদের সাহায্য হারাতে। ১৯৭৩ সালে কবিকে নিরাপত্তামূলক কাস্টডিতে নেয়া হয়। ১৯৭৪ এর ২০ মে সন্ধ্যায় তাকে জেল থেকে মুক্তি দেওয়া হয় সুকৌশলে ২১শে মে সকালে বাংলাদেশ বিমানের একটা রেগুলার ফ্লাইটে করে তাকে কলকাতায় পাঠানো হয়। ওই ফ্লাইটে তিনি ছাড়া আর কোনো যাত্রী ছিল না।
তার কাছে সে সময় ছিল মাত্র ৬০ পয়সা এবং কাঁধে ঝোলানো একটা ছোট ব্যাগ (ব্যাগে ছিল কবিতার বই, দু'জোড়া শার্ট, প্যান্ট, স্লিপার আর টুথব্রাশ)।
কবির ভাষায়,-আমার কোন উপায় ছিল না। মৌলবাদীরা আমাকে মেরেই ফেলত। সরকারও হয়ত আমার মৃত্যু কামনা করছিল।
কলকাতা জীবন
কলকাতা ছিল তার কাছে একদম অচেনা বিদেশে যেখানে কাউকেই চিনতেন না। তিনি দমদম এয়ারপোর্টে নেমে প্রথমে কাঁদছিলেন। কলকাতায় তিনি সাংবাদিক-সাহিত্যিক গৌরকিশোর ঘোষ এর কাছে প্রথম আশ্রয় পান। তিনি সেখানে একমাসের মতো ছিলেন। তিনি সেখানে লেখালেখি শুরু করেন। কলকাতার কঠিন বাস্তবতার মাঝে তিনি দ্য স্টেটসম্যান পত্রিকায় লেখা শুরু করেন। তার জীবনে প্রেমও আসে সেখানে। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় ও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই তরুণী, তাকে প্রেম নিবেদন করে। তারপরও তিনি বুঝতে পারেন যে তিনি একা কলকাতা শহরের মতোই। তিনি সেখানে একজন আগন্তুক মাত্র।১৬ আগস্ট ২০০৯ সালের সমকালে লেখা তার কলামে (বঙ্গবন্ধু ও অন্নদাশঙ্কর) দেখা যায় ১৯৭৫ সালের আগস্ট মাসে তিনি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে 'আন্তর্জাতিক তুলনামূলক সাহিত্যের' ছাত্র ছিলেন। কলকাতায় তিনি সমাদৃত হন। অন্নদাশঙ্কর রায় তাকে নিজ বাড়ীতে আশ্রয় দেন। নির্বাসিত অবস্থায় ১৯৭৯ সালে তিনি ভারতেবাংলাদেশ দূতাবাসে নবায়ণের জন্য পাসপোর্ট জমা দিলে তা বাজেয়াপ্ত করা হয়। দাউদ হায়দারকে ভারত থেকেও নির্বাসনে পাঠানোর চেষ্টা করা হয়েছে। ১৯৮৫ সালে পেন আমেরিকান সেন্টারের ২০০০ লেখকের পক্ষ থেকে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর কাছে একটা চিঠি লেখা হয় যাতে দাউদ হায়দারকে ভারতের নাগরিকত্ব দেয়ার অনুরোধ করা হয়।
(ভারতে গিয়েও রক্ষা পাননি কবি। বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুর পর জিয়াউর রহমান এর নির্দেশে তাঁর পাসপোর্ট বাজেয়াপ্ত করা হয়। হাইকমিশনার তাঁর বাসায় গিয়ে, বাসা মানে দাউদ হায়দার ভারতে যাঁর আশ্রয়ে থাকতেন সেই বাড়ীতে গিয়ে পাসপোর্ট নিয়ে আসে। ভারত সরকার তাঁকে ভারত ত্যাগের ফাইনাল নোটিশ দেয়- “… য়্যু হ্যাভ নো কেইস ফর গ্রান্ট অব লংটার্ম ষ্টে ফ্যাসিলিটিজ ইন ইন্ডিয়া এন্ড য়্যু আর দেয়ারফর রিকোয়েষ্টেড টু লীভ ইন্ডিয়া ইম্মিডিয়েটলি উইদাউট ফেইল।”
এর পর নোবেল লরিয়েট জার্মান সাহিত্যিক গুন্টার গ্রাস ভারত সফরে এসে পুরো ঘটনা শুনলেন। কথা দিয়ে গেলেন তাঁকে “তোমার জন্য কিছু একটা করবো। তিনি জার্মান সরকারের উচ্চপর্যায়ে কথা বলে বাংলাদেশ থেকে নির্বাসিত কবিকে রাজনৈতিক আশ্রয় দেয়ার ব্যবস্থা করেন। সামরিক শাসক হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ক্ষমতায় এলে তিনি আটক পাসপোর্ট ফেরত চেয়ে আবেদন করেন। তার পাসপোর্ট ফেরতের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে এরশাদ সরকারও। এরশাদের আমলে ঘোষণা করা হোল, “এই লোক বাংলাদেশের জন্য সন্দেহজনক”- এই মর্মে পৃথিবীর যেসব দেশে বাংলাদেশ দূতাবাস আছে, সেই সব দেশে নোটিশ পাঠানো হল। নোটিশে বলা হল- “এই ব্যক্তিকে সরকারের পূর্বানুমতি ব্যতিরেকে কোনো পাসপোর্ট প্রদান করা যাইবে না। তাহার নাম সন্দেহজনক ব্যক্তিদের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করিতে হইবে।’)
জার্মানীতে
জার্মানীর নোবেল বিজয়ী সাহিত্যিক গুন্টারগ্রাসের সহযোগিতায় ২২ শে জুলাই ১৯৮৭ সালে তিনি জার্মানীর বার্লিন শহরে যান এবং তারপর থেকে সেখানেই আছেন। উল্লেখ্য তিনি বার্লিন যাত্রায় পাসপোর্টের পরিবর্তে জাতিসংঘের বিশেষ ট্র্যাভেল পাস ব্যবহার করেছেন। দাউদ হায়দার পরে এই জাতিসংঘের ট্র্যাভেল পাস ব্যবহার করে বহু দেশ ঘুরেছেন। ১৯৮৯ সালে তিনি জার্মানীতে সাংবাদিক হিসেবে চাকুরী শুরু করেন।
তিনি প্রায় ৩০টির মতো বই লিখেছেন জার্মান, হিন্দি, ইংরেজি, ফ্রেঞ্চ, জাপানি ও স্প্যানিশ ভাষায়। -সমাপ্ত
সুত্রঃ বাংলা ট্রিবিউন,ঢাকাইয়া কুট্টি ভাষার অভিধান;মোশাররফ হোসেন ভূঞা,নাজির হোসেনের ‘কিংবদন্তির ঢাকা’, দৈনিক ইত্তেফাক। ইসলাম টাইমস। ছবিঃ নেট
ঢাকাইয়া কুট্টি নিয়ে ৪ পর্বের আলোচনার -এক পর্ব সমাপ্ত।
১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৫৭
শেরজা তপন বলেছেন: হাসতে হাসতে আমি কাত !!!
আপনার এই কৌতুকগুলো আমি ঢাকাইয়া কুট্টির পর্বে সংযোজন করতে পারি কি?
আরো থাকলে কিছু ধার দিয়েন ভাইজান।
আপনার মন্তব্য পড়ে আমি দারুন আপ্লুত হলাম। পরের পর্ব গুলোতেও আপনাকে এমন করে সাথে পাব আশা করছি সাথে নতুন কিছু কুট্টি কৌতুক।
ভাল থাকুন নিরন্তর!
২| ১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:০১
শাহ আজিজ বলেছেন: বেশ লাগলো অজানা এপিসোড পড়ে । নির্বাসিত হবার পর তিনি কি লেখালেখি চালিয়ে গেছেন ? তার কবিতায় তেমন কিছু পাইনি আহামরি ।
১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ৮:০২
শেরজা তপন বলেছেন: শাহ আজিজ ভাই, অনেকদিন অপেক্ষায় ছিলাম আপনার একখানা মন্তব্যের আশায়-অবশেষে আজ আমার অপক্ষার পালা সাঙ্গ হল!
আমি দারুন আনন্দিত ও আপ্লুত আপনার মন্তব্যে।
আমি যতদুর জানি- এখনো তিনি লেখালেখি চালিয়ে যাচ্ছেন। তার বর্তমান লেখালেখি সন্মন্ধে আরো যদি কিছু জানতে পারি আপনাকে বলব।
তবে ব্লগার সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: কবি দাউদ হায়দার ইদানীং একটা পত্রিকায় লিখছেন। দুই একটা লেখা পড়েছি।
ফের আমার ব্লগে আমন্ত্রন রইল।
৩| ১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:০১
নুরুলইসলা০৬০৪ বলেছেন: এক নিশসাসে পড়ে ফেললাম।মনেহলো পুরনো স্মৃতির মতো।সেই সময়েই প্রতিটি ঘটনার প্রতিক্রিয়া হত মনে।কি হওয়ার কথা, আর কি হইতেছে।এখনতো চাইনি।
১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ৮:১২
শেরজা তপন বলেছেন: জ্বী ভাই বড়ই মর্মস্পর্শী তার কাহিনী। না আমরা কখনোই এমন চাইনি- কখনো চাইবও না।
তিনি কি ভুল ছিলেন না সঠিক ছিলেন তার বিচার ইতিহাস করবে-আমরা তার বিচার করবার কে?
ভাল লাগল আপনার মন্তব্যে। ধন্যবাদ আপনাকে- ভাল থাকুন
৪| ১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:০২
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: কবি দাউদ হায়দার ইদানীং একটা পত্রিকায় লিখছেন। দুই একটা লেখা পড়েছি।
১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ৮:১৪
শেরজা তপন বলেছেন: আপনি দেখি বেশ ভালই খবর রাখেন ওনার ব্যাপারে। কবির ভাইয়েরা বলেছেন নাকি কবি আক্ষেপ করেছেন; বর্তমান প্রজন্ম তাকে ভুলে গেছে। কিন্তু আমি, আপনি ও আমরা তাকে এখনো বুকে ধারন করি।
ধন্যবাদ ফের
৫| ১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:১৫
আখেনাটেন বলেছেন: জন্মই আমার আজন্ম পাপ---এই বাক্য অনেক শুনেছি সাথে কবির নামও....আজ উনার ব্যক্তিগত অনেক বিষয়ও জানলাম। ধন্যবাদ।
আর হালায় ছত্যযিতরে নিয়ে যা কইছে মাইরি......
১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ৮:১৮
শেরজা তপন বলেছেন: জ্বী ছ্ত্যজিতের এই গল্প পড়ে আমি হেসেছিলাম বেশ কয়েকদিন।
বুকের ভিতরে কটা কষ্ট চাপা দিয়ে মর্মস্পর্শী এমন কবিতার পঙতি শুধু দাউদ হায়দারের মত কবির কলম দিয়েই বেরুতে পারে।
ভাল থাকুন ভাই আখেনাটেক
৬| ১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:২২
মা.হাসান বলেছেন: কোলকাতার লোকদের যে ঢাকাইয়ারা ডেমচি বলে জানা ছিলো না।
১৯৭৩-৭৪ সালে দেশে মৌলবাদিরা কোথা থেকে আসবে? বর্তমান সরকারের বক্তব্য শুনে আমার ধারনা হয়েছিলো সব মৌলবাদিরা ৭৫ এর আগস্টের পর জন্ম নিয়েছে।
গুন্টারগ্রাস আশির দশকের মাঝামাঝি বাংলাদেশে এসেছিলেন। দেশে যথেষ্ট মাতামাতি হয়েছিলো।
কেউ দোষ করলে শাস্তি দেয়া যায়, কিন্তু এভাবে তাকে পরিত্যাগ করা অন্যায় বলে মনে করি। পরমত সহিষ্ণুতার অভাব আজকাল সব জায়গায়ই দেখি। কবি বা তার বিরোধিতাকারি- কেউই এর থেকে মুক্ত ছিলেন না।
১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ১০:১০
শেরজা তপন বলেছেন: আমার ধারনা সে সময়ে কিছু মানুষ ছিল যাদের বদ্ধমুল ধারনা ছিল পাকিস্থান থেকে বাংলাদেশ আলাদা হলে ধর্ম হুমকির মুখে পড়বে। তাদের বলির প্রথম শিকার হলেন দাউদ হায়দার।
প্রচারনাটা এভাবে করা হয়েছিল( সম্ভবত) যে, তারা যা ধারনা করেছিল তাই ঠিক- এভাবেই নতুন প্রজন্ম ধর্মকে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করএ দেশটাকে ধর্মহীন করার উৎসবে মেতে উঠবে!
আপনার কথায় যুক্তি আছে কিন্তু তখন সত্যিই চরম আন্দোলন হয়েছিল দাউদ হায়দারের বিরুদ্ধে। তখনকার কিছু পত্রিকার সংবাদ থেকে এমন আভাস পাওয়া যায়।
আপনার শেষের কথাগুলোর সাথে একমত। যেহেতু সে ক্ষমা চেয়েছিল- তাকে অন্তত কিছু শাস্তি দিয়ে হলেও ক্ষমা করে দেয়া উচিত ছিল!
৭| ১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৪৫
আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: কবি দাউদ হায়দারের প্রতিভার যথাযথ মূল্যায়ন হয়নি। অবশ্য এজন্য অংশত দাউদ হায়দার নিজেও দায়ী।
১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ১০:১৩
শেরজা তপন বলেছেন: আপনার কথায় যুক্তি আছে।
কিন্তু মাত্র বাইশ বছরের একটা ছেলে কি-ই বা বুঝত তখন। তাকে এত বড় শাস্তি দেয়া উচিৎ হয়নি- কবিতার মাত্র চারটি চরনের জন্য আজীবন নির্বাসন কাম্য নয়।
হয়তো তিনি অংশত দায়ী।
ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য। শুভ কামনা রইল।
৮| ১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ৮:০২
আমি সাজিদ বলেছেন: গোলাম মুস্তফার গল্প আর দাউদ হায়দারকে নিয়ে পড়ে বেশ লাগলো৷ প্রথম কমেন্টের দ্বিতীয় চুটকি পড়ে হাসি থামাতে পারছি না। বাকি তিন পর্ব পড়ার অপেক্ষায় রইলাম।
১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ১০:১৫
শেরজা তপন বলেছেন: আমিও দারুন মজা পেয়েছি উনার চুটকি পড়ে! কমেন্টেও সেটা উল্লেখ করেছি
সবিশেষ ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য। পরের পর্বে ফের আপনাকে পাবার আশা রাখছি।
৯| ১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ৮:১৪
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: কৌতুকের মালিক আমি না। আপনে হালায় নির্দ্বিধায় ওইগুলা আপনার লেখায় চালাইতে যাইতে পারেন। সমস্যা নাইক্কা। আরেকটা কই; এইটা ঢাকাইয়া ঘোড়ার গাড়ির গাড়ওয়ানদের নিয়ে। কথিত আছে যে এরা খুব বেঁকা তেরা কথা বলত কিন্তু রসবোধ অনেক উন্নত ছিল।
ঘোড়ার গাড়ি থেকে নেমে আরোহী ধীরে ধীরে বাসার ভিতরে গেলেন ভাড়া না দিয়ে। অনেকক্ষণ হয়ে গেছে অথচ ফিরছেন না। গাড়ওয়ান চিন্তিত আর অধৈর্য। কিছুক্ষন পরে আরোহী টাকা নিয়ে আসছেন। হঠাৎ সিঁড়ির কাছে আসার সময় পিছলে পরে গেলেন। যাই হোক কোনও রকমে উঠে উনি গাড়ওয়ানের কাছে আসলেন ভাড়া দেয়ার জন্য।
গাড়ওয়ান এক গাল হেসে বলছে -
সাহেবে গেসেন ধীরে ধীরে কিন্তু আইসেন কিন্তু হালায় জলদি জলদি।
১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ১০:২৪
শেরজা তপন বলেছেন: কুট্টি কৌতুকেতো আপনার স্টক বেশ ভাল
আশা করি ভবিষ্যতে আরো কিছু এমন উমদা চিজ পাব
১০| ১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ৮:৩১
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: আরেকটা ঢাকাইয়া চুটকি ঘোড়ার গাড়ির চালকদের নিয়ে;
আরোহী ঘোড়ার গাড়িতে ওঠার আগে চালকের সাথে দামাদামি করছে।
আরোহী - কি মিয়া সদরঘাট কত নিবা?
চালক - ৮ আনা লাগবো।
আরোহী - ২ আনায় জাইবা নাকি।
চালক - আস্তে কন সাব, হুনলে আমার ঘোড়ায় ভি হাসবো। ( সর্বসত্ত্ব সকলের জন্য উন্মুক্ত)
১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ১০:৩৮
শেরজা তপন বলেছেন: সৈয়দ মুজতবা আলীর লেখায় এই চুটকিটি পড়েছিলাম একটু অন্যভাবে।
ভাল লাগল-শেয়ারের জন্য ধন্যবাদ
১১| ১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ৮:৫৫
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: দাউদ হায়দারের সাম্প্রতিক লেখার জন্য এটা পড়ুন -
দাউদ হায়দারের সাম্প্রতিক লেখা
১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ১০:২৩
শেরজা তপন বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ ভাই, আপনার লিঙ্কের জন্য- আমি পড়ছি...
১২| ১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ৮:৫৭
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: banglatribune.com এ ওনার লেখা পাবেন। আগের লিঙ্কটা ঠিক মত আসছে না।
১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ১০:৩৯
শেরজা তপন বলেছেন: ঠিক বলেছেন; আগেরটায় আমিও পেলাম না
দেখি বাংলা ট্রিবিউনে পাই কিনা?
১৩| ১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ৯:৫৩
বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: এক অজানা অধ্যায়ের পর্দা তুলে দিলেন ভায়া!!!
নিষিদ্ধতার মতো চরমপন্থা অনুসরন করেও কে কবে মহত হয়েছে।
মহাকাল সবাইকে তার আপনা স্থানেই স্থাপিত করে, সে চাক বা না চাক! এটাই মহাকালের সত্য
কি সক্রেটিস, কি হোসাইন,, কি সিরাজ, কি লালন!
প্রকৃতি তার ন্যায় বিচারেই সত্যাসত্য নির্ণয় করে।
ভাল লাগলো।
+++++++
১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ১০:৩৫
শেরজা তপন বলেছেন: কি বলেন ভাই, এই অধ্যায় আপনার অজানা!!!
আমিতো লেখাটা দিয়েছিলাম ভয়ে ভয়ে- না জানি আবার গালি খাই, বহু চর্চিত প্যাচাল নিয়ে হাজির হলাম বলে
'মহাকাল সবাইকে তার আপনা স্থানেই স্থাপিত করে, সে চাক বা না চাক! এটাই মহাকালের সত্য
কি সক্রেটিস, কি হোসাইন,, কি সিরাজ, কি লালন!'
কি দারুন মন্তব্য আপনার- আমি বহু চেষ্টা করেও এমন একখান মন্তব্য করতে পারিনি আজও
অনেক অনেক ধন্যবাদ- ভাল থাকুন , সুন্দর থাকুন
১৪| ১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ১০:১১
দারাশিকো বলেছেন: দীর্ঘ পোস্ট পড়লাম। প্রথমে থৈ পাচ্ছিলাম না, পরে সামলে নিতে পেরেছি। পরের পর্বগুলোও পড়বো আশা করছি।
দাউদ হায়দার সম্ভবত যে সময়ে নির্বাসনের সিদ্ধান্তে পড়েছেন এবং পড়েই থেকেছেন - সেই সময়টা খুব গোলমেলে ছিল। ফলে কোন সরকারই ঝুকিঁ নিতে চায়নি বলেই মনে হচ্ছে। যাহোক - এতে হয়তো আখেরে ভালোই হয়েছে। বাংলাদেশী সাহিত্যিক না হয়ে তিনি বিশ্বসাহিত্যিক হয়েছেন।
১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ১০:২৯
শেরজা তপন বলেছেন: আমি খেই হারিয়ে ফেলেছিলাম বলে আপনি থৈ পাননি
আসলে এটা আমার লেখা তৃতিয় পর্ব। কেন যেন মনে হল এই লেখাটা প্রথমে পোষ্ট করলে কেমন হয়? পোষ্ট করে দিলেও ধারাবাহিকতার অভাবটা রিপেয়ার করতে পারিনি ঠিক ঠাক মত।
তবে আপনার মত বিজ্ঞ ব্লগার যে খানিকটা টাল খেয়ে একটু বাদে সঠিক পথ খুঁজে পাবেন সেটা আমি বিলক্ষন জানি।
আপনাকে বেশ অনেকদিন বাদে আমার ব্লগে পেলাম। ভাল লাগল খুব।
আপনার সাথে সহমত পোষন করছি। আসবেন ফের পরের পর্বে- ভাল থাকুন
১৫| ১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ১০:১৩
নেওয়াজ আলি বলেছেন: মজাদার লেখা পড়লাম । ফেনীতে প কে হ বলে পানি বলে না বলে হানি । আই হানি খামু ।
১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ১০:৩১
শেরজা তপন বলেছেন: হেনীতে দোকানে গিয়ে মজা করে বুলতাম 'ক্যান কোক আছেনি ক্যান'?
ধন্যবাদ আপনাকে ফের লেখাটি পাঠ করে মন্তব্যের জন্য। ভাল থাকুন
১৬| ১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ১১:২৩
রাজীব নুর বলেছেন: হালা মানে শালা।
সত্যজিৎ কে শালা বলে!!! হায় হায়---
মজার পোষ্ট।
১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ১১:২৮
শেরজা তপন বলেছেন: সত্যজিৎ- কে যখন হালা বলা হয়েছে তবে এখন থেকে সব ব্লগারদের 'হালা' বললে কেমন হয়?
আপনাকে পেয়ে ভাল লাগল- ধন্যবাদ ভাল থাকুন।
১৭| ১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ১১:৪০
কল্পদ্রুম বলেছেন: রম্যের ক্ষেত্রে ঢাকাইয়া কুট্টি ভাষার কারিশমা অন্যরকম। একটা ন্যাচারাল স্যাটায়ারিক টোন আছে। অনেক কঠিন কঠিন কথাও হাসি ঠাট্টার আড়ালে এই ভাষায় বলে ফেলা যায়। ইদানিং কালের নাটকে, লেখায় এই ভাষার এই বিশেষ গুণের সদ্ব্যবহার আমার চোখে তেমন পড়ে না। দাউদ হায়দারের ব্যাপারে নতুন করে পড়লাম।
১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ সকাল ১১:০৩
শেরজা তপন বলেছেন: হ্যা তা ঠিক তারা স্পষ্টভাষী! কথা মাটিতে পড়তে দেয় না- মজা করে ঠোঁটকাটা জবাব দেয়। মাঝে -মধ্যে ইজ্জত বাঁচানো মুশকিল হয়
এ ভাষার যথেচ্ছ অপব্যাভার হচ্ছে- ব্যাপারটা দুঃখজনক নিঃসন্দেহে!
আপনার মন্তব্য পেয়ে আনন্দিত হলাম- বাকি পর্ব গুলো পড়ার আমন্ত্রণ রইল।
১৮| ১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ১১:৪০
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: @ রাজিব নূর - সব হালা হালা না।
১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ সকাল ১১:১৬
শেরজা তপন বলেছেন: ঠিক বলেছেন- কুট্টিদের হালা মানে শালা নয়। সম্ভবত এ শব্দটা আমাদের ভিন্ন ভিন্ন আঞ্চলিক ভাষায় বহুল ব্যাবহৃত শব্দ; ব্যাটা, বাহে, মামুর বেটা -টাইপের কুট্টিদের বচন!
ধন্যবাদ
১৯| ১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ১:৩৩
মোঃমোস্তাফিজুর রহমান তমাল বলেছেন: কবি দাউদ হায়দার সম্পর্কে কিছুই জানতাম না। নির্বাসিত লোকদের কথা শুনলে খারাপ লাগে। বারবার মনে হয় যে দেশে বড় হয়েছে সেই দেশে আর কখনো ফিরতে পারবে না।ভাবতেই কেমন যেন লাগে। আমিও একটা বহুল প্রচারিত চুটকি পেশ করার ধৃষ্টতা দেখাচ্ছি।
এক ঢাকাইয়া কলকাতায় গিয়ে ট্রেনে উঠেছে।পাশের সিটেই এক কলকাতার লোক বসে আছে।সে বারবার তাচ্ছিল্যের দৃষ্টিতে ঢাকাইয়া লোকের দিকে তাকায় আর নিজের আঙ্গুল নাড়াতে থাকে। সেই আঙ্গুল আবার একটু পরপর নাকের কাছে নিয়ে গন্ধ শোকে আর বলে," আহ! দাদা ! সকালে কী যে সুস্বাদু ঘি খেলুম না! এখনো গন্ধ লেগে আছে হাতে! কতবার ধুয়ে নিলুম,গন্ধই যাচ্চে না মাইরি!!
তখন ঢাকাইয়া লোকটি বললো, আপনে হালায় তুড়ি বাজাইবার পারেন নি আঙ্গুল দিয়া??
জবাব এলো, আরে বলচেন কী ? এটা কোনো ব্যাপার নাকি?বলেই তিন-চার বার তুড়ি বাজিয়ে দেখালো।
এবার ঢাকাইয়া লোকটি হাই তুলতে তুলতে বললো, এইডা কিচ্ছু অইলো মিয়া? কিয়ের ঘি খাইছেন আপনে? বিহানে ঘি খাইয়া অহনই তুড়ি বাজাইবার পারেন।আর আমি হালায় কত বচ্ছর আগে ঘি খাইলাম,এহনো তুড়ি বাজাইবার পারি না।হাত হালায় পিছলাইয়া যায় গা বারবার।
পোস্টের জন্য ধন্যবাদ।পরের পোস্টের অপেক্ষায় রইলাম।
১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ সকাল ১০:৫৫
শেরজা তপন বলেছেন: আপনার সাথে সহমত জনাব মোঃমোস্তাফিজুর রহমান তমাল!
কৌতুকটা শেয়ারের জন্য ধন্যবাদ- যদিও কলকাতার ক্যরেক্টারটা ঠিক রেখে অনেক অঞ্চলেই তাদের মত করে এই কৌতুকটা বলে।
আমি এটা শেষ পর্ব অর্থাৎ 'কুট্টি জোকস' পর্বে রাখব।
আরো কিছু থাকলে শেয়ার করুন - ভাল থাকুন
২০| ১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ১:৪৯
শায়মা বলেছেন: হাহাহাহা হায়রে হালা খালা মালা। পুরো পোস্ট আর কমেন্টেই হালা খালার ছড়াছড়ি!! হা হা হা
১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ সকাল ১০:৫৮
শেরজা তপন বলেছেন: খালিতো হালা কইলাম- খালা আর মালা পাইলেন কই ???
আপনাকে আমি খালাই বলব- মাইন্ড করবেন নাতো?
এ পর্বে একজন অন্তত নারী মন্তব্যকারী আপনাকে পেয়ে ভাল লাগল। ভাল থাকুন 'হালার খালা' থুক্কু শায়মা আপু
২১| ১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ সকাল ১০:৫১
নতুন নকিব বলেছেন:
কুট্টি ভাষা ভালো লাগলো। কিছু বিষয় সবিস্তারে জানার সুযোগ হলো। দাউদ হায়দারের লেখাটা পড়া গেল না। আপনার একটি প্রতিমন্তব্যে দেয়া লিঙ্ক কাজ করে না। ট্রাই করে দেখতে পারেন।
ভালো থাকবেন। +
১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ সকাল ১১:০৬
শেরজা তপন বলেছেন: আমিও চেষ্টা করেছি পড়তে পারিনি
অন্য কোন লিংক পেলে আপনাকে দিব।
কুট্টি ভাষা ( আমিও বুঝিনা ভাল) ও লেখকের ব্যাপারে কিছু জানার ও জানানোর চেষ্টা আমি করেছি। আপনার ভাল লেগেছে জেনে ভাল লাগল।
ভাল থাকবেন ও পরের পর্বগুলোতে সাথে থাকবেন
২২| ১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ সকাল ১১:১০
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: দেখুন দাউদ হায়দারের কলাম
২৩| ১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ সকাল ১১:১৯
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: তমাল ভাইয়ের কৌতুক ভালো লেগেছে। ঢাকাইয়াদের সাথে কথায় পেরে ওঠা মুশকিল। ঢাকাইয়া ব্লগার কারা জানেন না কি?
১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ সকাল ১১:৫৮
শেরজা তপন বলেছেন: হ্যা ভাল লেগেছে।
দুই একজনকে চিনি- আপনি সবাইকে চেনেন?
২৪| ১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ দুপুর ১২:০৪
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: দাউদ হায়দারের লিঙ্ক পেয়েছেন? আমি কোনও ব্লগার সম্পর্কেই তেমন জানি না।
১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ দুপুর ১২:১০
শেরজা তপন বলেছেন: হ্যা পেয়েছি- গদ্য লেখায় সে স্বাদ পাইনি। তেলবাজি মনে হচ্ছে
২৫| ১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ দুপুর ১২:১৮
রাজীব নুর বলেছেন: লেখক বলেছেন: সত্যজিৎ- কে যখন হালা বলা হয়েছে তবে এখন থেকে সব ব্লগারদের 'হালা' বললে কেমন হয়?
আপনাকে পেয়ে ভাল লাগল- ধন্যবাদ ভাল থাকুন।
বেশির ভাগ ব্লগাররা রসিকতা নিতে পারে না। তারা ক্ষেপে যাবে।
১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ দুপুর ২:৫০
শেরজা তপন বলেছেন: রসিকতা শুধু আপনার সাথে করেছি- আপনি নিতে পারলেই হল।
বাকি যারা রসিকতা হজম করতে পারেন না- তারা যদি অন্যের মন্তব্যের প্রতিউত্তরে রুষ্ঠ হন, বিষয়টা পার্সোনালি নেন তাহলে আমার কিছু বলার নেই।
কেউ কষ্ট পেয়ে থাকলে আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত! আপনি ও কষ্ট পেলে আমি দুঃখিত।
২৬| ১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ বিকাল ৪:১৬
মোঃমোস্তাফিজুর রহমান তমাল বলেছেন: এই নিন আরো দুটো।
১।ঢাকার একজন বেপারি নতুন গাড়ি কিনেছেন।গাড়ি কিনে ফেরার পথে বেপারি আয়েশি ভঙ্গিতে ড্রাইভারকে বললো, সিটটা ইটটু পিছায়া দে, আরাম কইরা বহি। ওই এউগা গান লাগা।
আচমকা গাড়ি একটু ঝাঁকুনি খায়। বেপারি প্রশ্ন করলো, আব্বে হালায় নয়া গাড়ি, ফাল পাড়ে ক্যালা?
ড্রাইভার বললো: না ফাল পাড়ে না, গাড়ির গিয়ার চেঞ্জ করলাম আর কি।
কথাটা শুনেই আচমকা বেপারি চেঁচিয়ে ওঠে, আমি গাড়িত বইয়া রইছি আর আমার সামনেই তুই গাড়ির গিয়ার চেঞ্জ কইরা ফালাইছস? হালার জালা, আমি গাড়িত না থাকলে তো তুই পুরা গাড়িই চেঞ্জ কইরা ফালাইবি। নাম, নাম হালায় গাড়িত্থে নাম। যা সিদা ভাগ। চোর হালায়.....
২।পুরান ঢাকার এক খালা তার দুই ভাগ্নেকে নিয়ে বাজার গেছেন। খালা সবকিছু দেখেন কিন্তু কেনেন না।
ছোট ভাগ্নে: খালা হালারে নিয়া বাজারে আইলেই হালার ঝামেলা, হালায় এইডা দেহে, হেইডা দেহে মাগার কিচ্ছুই হালায় কিনে না।
বড় ভাগ্নে: ধুর হালার ঘরের হালা, খালারে কেউ হালা কয়! হালা মুরুব্বী না?
খালা: হালার এমুন পোলা জন্ম দিছে, কুনো আদব লেহাজ শিখে নাইক্কা। তোগো বাপ হালায় আইজকা আহুক, বিচার দিয়া সব হালার পিঠের চামড়া উঠামু।
১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ১১:৩০
শেরজা তপন বলেছেন: দুইটাই চরম হৈসে ব্রাদার বহুক্ষন ধরে হাসলাম
আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ এমন দারুন সব কৌতুক শেয়ার করার জন্য। আশা করি সামনে আরো কিছু পাব।
-ব্যাস্ততার কারনে উত্তর দিতে কিছুটা দেরি হল বলে দুঃখিত
আরো কিছুর অপেক্ষায় রইলাম...
২৭| ১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ বিকাল ৪:২৯
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: তমাল ভাইয়ের জোকস দুইটা হালার জব্বর হইসে।
আরেকটা হুনেন;
ঢাকার বুদ্দু মিয়া কলকাতায় নয়া গেছে। ঘুরতে ঘুরতে পথে একটা বিজ্ঞাপনী সাইনবোর্ড দেখে দাঁড়িয়ে পড়লো সে। সঙ্গে বন্ধু ছাবেদকে জিজ্ঞেস করলো, দোস্ত দেখছস, কি বোদাইয়ের কাম? এই দ্যাখ, লেখা লাগায়া রাখছে 'গোপাল-এর গেঞ্জি ও জাঙ্গিয়া পরুন'।
- ক' তো দেহি, গোপালের গেঞ্জি আর জাঙ্গিয়া যদি অন্য কেউ পইরা যায়- ওই হালায় গোপালে আয়া পিনবো কি?
১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ১১:৩৩
শেরজা তপন বলেছেন: এইটা কিন্তু মারাত্মক( চরম)
মজা পেলাম ভীষন! অনেক অনেক ধন্যবাদ, এইবার মনে হচ্ছে কুট্টিদের জোকস দিয়ে একখানা পুরোদস্তুর বই হয়ে যাবে( মুজতবা আলীর সপ্ন স্বার্থক হবে।
ভাল থাকুন- আরো কিছুর অপেক্ষায়...
২৮| ১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ বিকাল ৪:৩৫
পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: চমৎকার একটা বিষয় শেয়ার করেছেন। আমি কলকাতার আসেপাশে অনেকের মুখেই শুনেছি,হালার পো। একটু বিরক্তি নিয়ে বলা কথাটা শুনতে মন্দ লাগে না। আমার এক কলিগ কথায় কথায় বলে,হালার পুত। ভদ্রলোক রিটায়ার করেছেন।ব্যক্তিগত ভাবে আমার সঙ্গে খুব ভালো সম্পর্ক ছিল। উনি একটু রাগ করলে আমি বহুবার মনে করিয়ে দিতাম,হালার পুত' কোথাকার বলে। সঙ্গে সঙ্গে হেসে ফেলতেন।
আপনার সুন্দর পোস্ট থেকে অজানা অনেক কিছু জানলাম। ভালো লাগলো চির নির্বাচিত কবি দাউদ হায়দার সম্পর্কে জেনে। তবে একটা লাইন বা একটা কবিতা একজন মানুষের সারা জীবনের নির্বাসনের কারণ হতে পারে না। সাম্প্রতিককালে তসলিমা নাসরিনের লেখা পড়েও বুঝেছিলাম নির্বাসনে থাকার তীব্র যন্ত্রনার কথা। আমার মনে প্রশ্ন জাগে ধর্ম কি এতই তুচ্ছ? এতই ঠুনকো? যে একজন বা একদল মানুষের কলমের খোঁচায় তা নষ্ট হবে? হ্যাঁ ভাবাবেগে আঘাত করলে খারাপ লাগে ঠিকই কিন্তু তার অর্থ এই নয় যে তাকে প্রাণে মেরে ফেলতে হবে বা তাকে দেশ ছাড়া করতে হবে?
চমৎকার একটি পোস্টের জন্য আপনাকে আবারো ধন্যবাদ।
পোস্টের উপরি পাওনা সাড়ে চুয়াত্তর ভাইয়ের চুটকি গুলো ভীষণ ভালো লেগেছে।
শুভকামনা জানবেন।
১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ১১:৩৬
শেরজা তপন বলেছেন:
আপনাকে পেয়ে ভাল লাগল দাদা(ভাই)।
'হালার পুত' আসলেই মজার শব্দ!
আপনার সাথে শতভাগ সহমত পোষন করছি- বিশেষ করে ধর্ম ও কবিতা নিয়ে যা বললেন, রিয়েলি হ্যাটস আপ টু য়ু!
পরের পর্বে সাথে থাকবেন। ভাল থাকুন সবসময়
২৯| ১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ বিকাল ৪:৪০
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: চানখাঁরপুলের হোটেলের এক পিচ্চি বেয়ারা ছুটছে অর্ডার নিয়ে, কেউ চাচ্ছে পুরি, ভাজি, কেউ বা এক গ্লাস পানি।
কেউ বলছে- ওই পিচ্চি এক কাপ চা দে, চিনি ভাসায়া, মালাই ডুবাইয়া। পিচ্চি বেচারার দম ফেলার জো নেই।
এর মধ্যে একজন বললো - ওই পিচ্চি, পানি কম দুধ বেশি এক কাপ চা আন।
দ্বিতীয় কাস্টোমার- পিচ্চি, দুধ ছাড়া এক কাপ চা।
পিচ্চি ছুটছে- কোনটা রেখে কোনটা আনবে। সবাই চোখ মুখ লাল করে ধমকায় তাকে।
আরেক কাস্টোমার এসে হাঁক দেয় - ওই পিচ্চি হালায় হোন, এক কাপ চা আন। দুধ, চিনি, লিকার ছাড়া।
পিচ্চি তো অবাক! ছুটতে গিয়ে থমকে দাঁড়ায়। মনে মনে ভাবে সে আনবেটা কি? পরে মনে মনে বলে ধুর হালা এইডা কাস্টমারের জাতই না।
১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ১১:৩৮
শেরজা তপন বলেছেন: বাহ বাহ স্টকতো অফুরন্ত আপনার! আমিতো বিস্মিত হচ্ছি...
মজা পেলাম
৩০| ১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ বিকাল ৪:৪৮
রাজীব নুর বলেছেন: আমার পরের মন্তব্যের উত্তর দেওয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
আমি রসিকতা বুঝি। আমি প্রচন্ড রসিক মানুষ। আমার রসিকতায় বন্ধুরা মাতিতে গড়াগড়ি খায়।
১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ১১:৩৯
শেরজা তপন বলেছেন: আপনি মাইন্ড না করলেই হয়। আমি আনন্দিত
একদিন আড্ডার অপেক্ষায় রইলাম...
৩১| ১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ১২:২৪
মোঃমোস্তাফিজুর রহমান তমাল বলেছেন: সারে চুয়াত্তর ভাইয়ের স্টক ঈর্ষণীয়। পুরা উরকি-ধুরকি জোক্স সব কয়টা। আরেকখান লন মিয়াভাইয়েরা।
এক বেপারি ব্যবসায় লস খেয়ে বিমর্ষ চিত্তে আড়তে বসে আছেন। তখন তার ছেলে এসে তার কাছে টাকা চাইলো ঘুরতে যাবে বলে।তখন বেপারি তাকে কিছু টাকা দিয়ে দিলেন। কিন্তু টাকা পেয়ে ছেলে সন্তুষ্ট না।
এত অল্প ট্যাকা দিলেন কিয়ের লিগ্যা?এই ট্যাকায় কী অইব আব্বা? আব্বে হালায় যামু ক্যামনে এত অল্প ট্যাকায়?
তখন বেপারি বললেন, আহন-যাওনের বাসভাড়া দিয়া দিছি! আর কী চাছ?
তখন ছেলে বলল,বাস ভাড়ায় অইতো না।রিশকা ভাড়া দ্যান?
তখন বেপারি রেগে গিয়ে বললেন, এএএহহ হালার ঘরে হালার ছখ(শখ) কত? খাওইন্না ভাত নাই আবার পুলাও(পোলাও) খাইবার চায়!!!
১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০২০ সকাল ১০:৪০
শেরজা তপন বলেছেন: এই কৌতাকটাও হারুন মজার জনাব মোঃমোস্তাফিজুর রহমান তমাল!
শেয়ারের জন্য কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ।
©somewhere in net ltd.
১| ১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৪৭
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: আপনার গল্প হালায় জব্বর হইসে।
আমি ধাকাইয়াদের নিয়ে দুইটা চুটকি এই প্রসঙ্গে বলি নিজের মতো করে;
১ নং চুটকি -
ঢাকাইয়া গেসে কলকাতাতে সিনেমায় অভিনয়ের জন্য। কলকাতার পরিচালক বলছেন যে তোমার অভিনয়তো ঠিক আছে। কিছু ঢাকাইয়া লোক তো সিনেমায় নেয়া যাবে না।
ঢাকাইয়া বলছে ' কেন সমস্যা কি'।
পরিচালক বলছেন যে তোমরা 'হ' কে 'শ' আর 'শ' কে 'হ' বল।
ঢাকাইয়া বলছে - কোন হালায় কইসে?
পরিচালক - এই যে এই মাত্র বললে।
ঢাকাইয়া - ও এইটা তো শটাত কইরা বইলা ফালাইসি।
২ নং চুটকি -
ঢাকাইয়া কলকাতার মুদির দোকানে গিয়ে বলছে -
দাদা আমারে এক পোয়া চিড়া দেন তো।
দোকানি - দাদা এটাকে চিড়া বলে না। এটাকে বলে চিঁড়ে।
ঢাকাইয়া - ও আচ্ছা, জানতাম না।
তো চিঁড়ে কেনার পর ঢাকাইয়া দোকানিকে বলছে -
দাদা আমারে এইবার এক হালি কেলে দেন।
দোকানি - দাদা ভুল বলছেন, এটা কেলে নয় কলা।
ঢাকাইয়া - আরে হালায় কয় কি, চিড়া চিঁড়ে হইবার পারলে কলা কেলে হইব না কেলা। আমারে হালায় বেকুব পাইস নি। কেলেই তোমারে দিতে হইব।