নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মাঝে মাঝে মনে হয় জীবনটা অন্যরকম হবার কথা ছিল!

শেরজা তপন

অনেক সুখের গল্প হল-এবার কিছু কষ্টের কথা শুনি...

শেরজা তপন › বিস্তারিত পোস্টঃ

চামড়া ও চামড়া শিল্পের কেন আজ এই ভয়াবহ পরিস্থিতি!! পর্ব ৬

১৬ ই জুলাই, ২০২১ বিকাল ৫:০০


গত পর্বের জন্যঃ Click This Link
ই পি বি’র বেহুদা মেলাঃ
এক্সপোর্ট প্রমোশন ব্যুরো(রপ্তানী উন্নয়ন ব্যুরো)যারা মুলত ই এক্স পি (এক্সপোর্ট পারমিশন)ও ফর্ম এ বা কান্ট্রি অফ অরিজিনের বিপরীতে জি এস পি প্রত্যায়ন করেন।সাথে রপ্তানী উন্নয়নের নিমিত্তে সব ধরনের তাত্ত্বিক সহযোগীতা আর আন্তর্জাতিক মেলায় অংশগ্রহনের নিমিত্তে কিছু প্রণোদনা দিয়ে থাকেন।
তবে অন্য সব বিষয়ের থেকে দেশের অভ্যান্তরে বানিজ্য মেলা(যার নাম মুলত আন্তর্জাতিক রপ্তানী বানিজ্য মেলা)দ্বী দেশীয়,অঞ্চল ভিত্তিক ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন মেলায় অংশগ্রহনে সবচেয়ে বেশী আগ্রহ ও উদ্দীপনা দেখা যায়।
ভাল- দেশের রপ্তানী বানিজ্যের জন্য দেশীয় উৎপাদক ও রপ্তানীকারকদের সাথে বিদেশী ক্রেতাদের সাথে মেল বন্ধনের এইটাই সবচেয়ে সহজ সঠিক ও ভাল উদ্যোগ!
আমরা প্রথমেই আলোচনা করি আমাদের দেশের অভ্যান্তরে প্রতিবছর মাসব্যাপী অনুষ্ঠিত বিশাল ও ব্যাপক আকারে ঢাকা আন্তর্জাতিক বানিজ্য মেলা চলে। যেটা রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো ও বানিজ্য মন্ত্রনালয় এর যৌথ উদ্যোগে অনুশঠিত হয়। ইদানীং শুনি ঢাকার বাইরেও এর বিস্তার হয়েছে। এ বিষয়ে আসুন দেখি ওরা কি বলতে চেয়েছে;
ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলাঃ বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, ইরান, জাপান, চিন, যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, অস্ট্রেলিয়া, জার্মানিসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ও দেশের প্রতিষ্ঠান মেলায় নিজেদের উৎপাদিত পণ্য প্রদর্শন করে। দেশি ও বিদেশি পণ্যসামগ্রী প্রদর্শন, রপ্তানি বাজার অনুসন্ধান এবং দেশি-বিদেশি ক্রেতার সঙ্গে সংযোগ স্থাপনের ক্ষেত্রে এ মেলা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
আমাকে যদি এক লাইনের ক্ষুদ্র একটা জোকস বলতে বলেন,তাহলে আমি বলব;
ঢাকা আন্তর্জাতিক বানিজ্য মেলা!!!!
কি উদ্দেশ্য নিয়ে এই মেলা শুরু হয়েছিল আর এখন কি উদ্দেশ্য নিয়ে চলছে সেটার উত্তর ওনারাই ভাল দিতে পারবে।
শুধু বলি,এখানে ভারত, পাকিস্থান,চীন আর ইরান ভুটানের মত দেশ গাট্টি বোচকা বেধে তাদের গার্বেজ নিয়ে আসে আর আমরা তাই টিকেট কেটে গিয়ে কিনে এনে বগল বাজাই।
এই মেলা শুধু একটা স্বল্পমেয়াদী বড় বাজার ছাড়া কিছু নয়! সেখানে অবশ্য অল্প কিছু প্রতিষ্ঠান থাকে যারা সারা বছরের স্টক লট আর রিজেক্টেড মাল খালি করার পাশা পাশি লোক দেখানোর জন্য ভাল কিছু পন্য প্রদর্শন করেন।
মেলার প্রথমদিন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী( এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর স্বদিচ্ছার অভাব নেই),বানিজ্য মন্ত্রী,অর্থমন্ত্রী সহ আরো কিছু চ্যালা চামুণ্ডা দেশের উন্নয়ন আর ঠেকিয়ে রাখা যাবেনা এইরকম বিগলিত হাসি হেসে অহংকারী পদক্ষেপে মেলা প্রাঙ্গনে যান। মেলায় তখন বহিরাগতদের প্রবেশ নিষেধ-পুরোটাই নিরাপত্তা রক্ষীদের করায়ত্বে থাকে। স্টলে শুধু মালিক বা মালিকের প্রতিনিধি একজন এক্রেডিশন কার্ড গলায় ঝুলিয়ে তির্থের কাকের মত ভি ভি আই পি দের অপেক্ষায় থাকেন।
উনারা আসেন,স্টলের মালিক বিশিষ্ট রপ্তানীকারকেরা হন্তদন্ত হয়ে তার সেরা পণ্যটি বের করে প্রধানমন্ত্রীর সামনে এগিয়ে ধরেন। পেছন থেকে চ্যালা চামুণ্ডারা আহা উহু করেন। ভি ভি আই পি দের মনে হয় এমন উমদা মাল জগতে দ্বীতিয়খানা আর হয়নি। ভূয়সী প্রশংসা করে তারা সেই উদ্যোক্তার পিঠ চাপড়ে দেন। ই পি বির ভাড়াটে ফটো সাংবাদিক এই ফাঁকে সাটারে মাল্টি ক্লিক করতে থাকেন। ভি ভি আই পি দের বিদায়ের পরে তিনি আসেন,বুদ্ধিজীবীর মত হাসি দিয়ে তিনি বলেন,স্যার ছবি যা একখান হয়েছে না? সেই বিশিষ্ট রপ্তানীকারক পয়সার বিনিময়ে সেই ছবিখানা কিনে নিয়ে তার অফিস ঘরে সারম্বরে বাঁধিয়ে রাখেন। আর সবাইকে দেখিয়ে বলেন দ্যাখ ব্যাটা-এইবার ফের সি আই পি হওয়া আটকায় কে?
সেই যে তিনি মেলা থেকে ফিরে আসেন আর ওমুখো হন না। হ্যাঁ ফের আসেন মেলার শেষ দিনে আবার ভি ভি আই পি দের মুখোমুখি হতে,যদি সেরা স্টল বা পণ্যের একখানা ট্রফি পান তাহলেতো …
অভ্যান্তরিন একক দেশীয় মেলা (সিঙ্গেল কান্ট্রি ফেয়ারঃ)
একক দেশীয় মেলা মুলত আয়োজন করে সেই খাতের সাথে সংশ্লিষ্ট কিছু সংগঠন ও বেসরকারি আয়োজকেরা ( কিছু কিছু ক্ষেত্রে কমার্স মিনিস্ট্রি ও ইপিবি সহযোগীতা করে থাকে)
এই আয়োজনগুলো মুলত একসময় অনুষ্ঠিত হত বিভিন্ন নামকরা হোটেল আর মাঠে ময়দানে। পরবর্তীতে চীন মৈত্রী ও বসুন্ধরা কনভেনশন হলে স্থানন্তরিত হয়। কিন্তু তাত বস্ত্র মেলা, পাট শিল্প মেলা সহ কিছু মেলা এখনো সেই মাঠে ময়দান-ই অনষ্ঠিত হয়ে আসছে।
প্যান প্যাসেফিক সহ কিছু আন্তর্জাতিক মানের হোটেলে একসময় যে মেলাগুলো আন্তর্জাতিক মেলা বলে চালানো হত সেগুলো বেশ জাঁকজমক শান শওকতের সাথে আয়োজিত হলেও বায়ারদের উপস্থিতি ছিল প্রায় শুন্যের কোঠায়। শুধু হোটেলে অবস্থিত কিছু বিদেশি মেহেমান অবসরের ফাঁকে একটু ঘুরে যেত আরকি! স্থানীয় খুচরা চ্রেতাদের ভীড়ে ঠাসা সেই সব মেলার আসলে আউটপুট ছিল শুন্য!
তবে এখন খানিকটা দিন বদলেছে। সংগঠনগুলো চেষ্টা করে দু-চারজন বায়ারকে আমন্ত্রন করে মেলায় ঘোরাতে। তবুও কাজের কাজ তেমন কিছু হয়নি।
তথাকতিথ কিছু নারী উদ্যোক্তাঃ
এই সব মেলাতে সবসময় সরব উপস্থিতি থেকে কিছু নারী উদ্যোক্তাদের। অনেকেই হয়তো কষ্ট পাবেন শুনে নারী উদ্যোক্তার তকমাধারী কিছু ভদ্র মহিলারা এসব মেলায় যায় মুলত প্রভাবশালীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে, কিছু মেডেল আর ট্রফি লাভের ধান্দায় আর সরকারি অনুদান, বিদেশি সাহায্য, নারী উদ্যোক্তার লেবাসে কম সুদে ঋণ আর বিদেশী সংস্থা কতৃক ফ্রি ট্রেনিং এর আশায় (দেশের বাইরে)।
আমি দেশে কি বিদেশে সবখানেই দেখেছি এনারা হুলস্থুল করে সেসব মেলায় অংশগ্রহন করে গাট্টি বোঁচকা ভরে মাল সামানা নিয়ে গিয়ে শেষ সুতোটাও বিক্রি করে দিয়ে ব্যাগ ভর্তি টাকা নিয়ে নাচতে নাচতে বাড়ি ফেরেন। (বেশীরভাগ-তবে সবাই নয়)
এদের দাপটে রিয়েল এন্টারপ্রেইনাররা সুযোগ হারান।
আমার অগ্রজের কৃপায় দেশে বিদেশে প্রায় সব ধরনের মেলায় অংশগ্রহনের সুযোগ হয়েছে।এর মধ্যে দেশের বাইরের দুটো মেলার চালচিত্র আমি তুলে ধরব;
প্রথমটা হচ্ছে হংকং এ অনুষ্টিত একটা আন্তর্জাতিক মেলার(সালঃ ২০০০)এই মেলা নিয়ে আমি বিস্তারিত আলোচনা করব পরের আরেকটা পর্বে; জার্মানি বিশেষজ্ঞ মি। বাউয়ারের প্রসঙ্গ যখন আসবে।
আর আট বছরের ব্যাবধানে দ্বীতিয়টা চায়নার বেইজিং এ অনুষ্ঠিত আঞ্চলিক মেলার( মুলত আফগানিস্থান, নেপাল, ভারত, পাকিস্থান এইসব দেশ মিলে)।
প্রথমে আলোচনা করে নেই দেশের বাইরের মেলা নিয়ে ইপিবির ভুমিকা নিয়েঃ
এইসব ব্যাপারে সরকারের আন্তরিকতা প্রশ্নবিদ্ধ নয়। সরকারের উপর মহল থেকে সর্বোতভাবে চেষ্টা করা হয়েছে ভাল কোন ফল লাভের জন্য। কিন্তু গোলমাল বেঁধেছে পরের ধাপে;
বাইরের বড় মাপের আন্তর্জাতিক মেলাগুলো মুলত টোকিও ইন্টারন্যাশনাল ফেয়ার, ইতালিতে মিলান, জার্মানির ফ্রাংফুর্ট, কানাডার টরেন্টো, আমেরিকার লাস ভেগাস উল্লখযোগ্য। এইসব মেলায় আসলেই রপ্তানিকারকদের নিজের পণ্যের উপস্থাপনের সেরা জায়গা। কিন্তু প্রথমত ইপিবির কিছু শর্ত বা নিয়ম কানুনের জন্য উঠতি ও ছোট উদ্যোক্তারা মেলায় অংশগ্রহনের সামর্থ্য রাখেননা বা ভয় পান! দ্বীতিয়ত; জুতা ও কিছু কিছু ব্যাগ বাদে বাকি চামড়াশিল্প বৈশ্বিক বাজারের জন্য উপযুক্ত বা মান সম্পন্ন না হওয়ায় বেশীরভাগ শিল্প মালিকেদের এর থেকে ভাল কোন ফল না পাবার আশংকায় অংশগ্রহনে দ্বীধা!
ইপিবির নিয়ম কানুনঃ
এক সময় ইপিবি বড় কোন মেলায় অংশগ্রহনের জন্য তাদের পছন্দমত শিল্প মালিকদের আমন্ত্রন জানাত কিংবা যারা ভাল লবিং করতে পারে ক্ষমতাবান ও নিজের পণ্যের গুনাগুন প্রচার করতে পারে এবং আগে রপ্তানী করেছেন এমন উদ্যোক্তা ও শিল্প মালিকদের মেলায় অংশগ্রহনের জন্য সরাসরি অনুরোধ জানাতেন। তবে এক দেশীয় বা আঞ্চলিক মেলায় যেখানে নামি দামি উদ্যোক্তারা যেতে অনাগ্রহী থাকতেন সেখানে খুজে খুজে ছোট শিল্প মালিক ও সরবারহাকারিদের প্ররোচিত করতেন।
এখন অবশ্য দিন পাল্টেছে- এখন মেলায় অংশগ্রহনের আমন্ত্রন জানান ইপিবির হয়ে সেই খাতের সাথে সংশ্লিষ্ট সংগঠন। তবে সেখানে শুধু সংগঠনের সদস্যরাই আমন্ত্রিত হন।
তবে এখানে যুক্ত হয়েছে আরেকটা বিষফোঁড়া! দেশী বিদেশী থার্ড পার্টি বা আয়োজক সংস্থার অনুমোদিত কিছু বেসরকারি সংস্থা। এরা মেলা কমিটির কাছে জায়গা বরাদ্দ নিয়ে ইপিবি বা সংগঠনগুলোর অনুমোদন সাপেক্ষে শিল্প মালিকদের মেলায় অংশগ্রহনের আমন্ত্রন জানায়-তাদ্র প্রস্তাবগুলো বেশ আকর্ষণীয় ও লোভনীয় হলেও খরচ বেড়ে যায় কয়েকগুণ!
কোন কোন ক্ষেত্রে ইপিবি, কমার্স মিনিস্ট্রি যৌথভাবে মেলায় অংশগ্রহনের ফি’র একটা অংশ প্রদান করলেও দিনশেষে বাকি টাকার অংকও বেশ মোটা দাগের।
বরাবরই ইপিবি দেশীয় শিল্প বিকাশের স্বার্থে মেলায় অংশগ্রহনের ফি’র অর্ধেক টাকা শিল্প মন্ত্রানলয়ের ফান্ড থেকে বরাদ্দ দেয়।
ধরে নিই লাস ভেগাসের একটা মেলার মুল খরচ( ৩ বাই ৩ মিটার স্টল); ৮ লাখ টাকা। সেখানে সরকার বহন করবে ৪ লাখ আর শিল্প মালিক ৪ লাখ। কিন্তু এ টাকার মধ্যে আপনি কি পাচ্ছেন;
ইতিবাচকঃ
১.মেলায় যাবার অনুমতি ২.মেলায় অংশগ্রহন ৩.ইপিবির তত্বাবধানে দেশ থেকে ৪০ কেজি পর্যন্ত স্যম্পল খরচ বিহীন মেলা প্রাঙ্গনে পৌছে দেয়া।
নেতিবাচকঃ
১. মেলায় অংশগ্রহনের জন্য অগ্রিম টাকা পে অর্ডারের মাধ্যমে অগ্রিম দিতে হবে কিন্তু কোন কারনে আপনি ভিসা না পেলে সে দায়ভার ইপিবি বহন করবে না সেই সাথে আপনার জমা দেয়া অগ্রিম টাকাও আপনি ফেরত পাবেন না।
২. বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই মেলার স্টল এর সাথে প্যাকেজ হিসেবে একটা টেবিল, দুটো চেয়ার, একটা ডিসপ্লে শো-কেস ও বৈদ্যুতিক সংযোগ দেয়া হবে শুধু। কিন্তু ব্যানার থেকে শুরু করে বাকি অন্য কাজ আপনার নিজ খরচে করে নিতে হবে।
বিমান খরচ, হোটেল ভাড়া থেকে শুরু করে যাবতীয় ব্যয় অংশগ্রহণকারী নিজে বহন করবেন।
৩. যে চল্লিশ কেজি স্যাম্পল আপনি নিয়ে যাবেন সেগুলো ফেরত নিয়ে আসার দায়িত্ব আপনার। হতে পারে আপনার বিমান সংস্থা ২০ কেজির বেশি মাল বহন করার অনুমতি দিবে না।আপনার পণ্যের মান উন্নয়নের জন্য আপনি বাইরের দেশ থেকে বিশেষ কিছু স্যম্পল বা এক্সেসরিজ ক্রয় করতে পারেন- নিজের ব্যাবহার্য জিনিসের কথা বাদই দিলাম তখন আপনি আপনার এতদিনের কষ্ট, মনন, আর শিল্প প্রতিভা দিয়ে তৈরি করা চল্লিশ কেজি স্যাম্পলের তখন কি সৎকার করবেন? হয় ফেলে আসতে হবে না হয় কারো কাছে বিক্রি করে দিতে হবে!!!!
আমাদের পণ্যের যে গুনগত মান,ডিজাইন,নিন্মমানের এক্সেসরিজ ও লাইনিং- সব মিলিয়ে ইউরোপ এমেরিকা থেকে বড় ক্রয়াদেশ পাবার সম্ভাবনা একেবারেই কম। বরাবরই আসবে সুযোগসন্ধানী কিছু বায়ার- যারা ভীষণ কমদামে অল্প সংখ্যক মাল, তাদের পছন্দমত ডিজাইন দিয়ে তৈরি করতে পারে। জি এস পি সুবিধার জন্য তাদের স্বার্থে ও আপনার সরকারের নগদ প্রণোদনার মুলা ঝুলিয়ে ও আসেন কেউ কেউ।
ছোট উদ্যোক্তা হয়ে ধার দেনা করে যে কয়েক হাজার ডলার খরচ করে মেলায় অনশগ্রহন করলেন তার অর্ধেক টাকার স্পট অর্ডার পাবেন কি-না সন্দেহ আছে।
লাভের মধ্যে সেইসব কাঙ্ক্ষিত দেশের অতি অমুল্য ভিসা আর মেলায় অংশগ্রহনের নিমিত্তে একখানা সার্টিফিকেট,এই নিয়ে সারাজীবন বসে বসে মনের সুখে জাবর কাটা!

আর ছোট ছোট দেশে একক দেশীয় ও আঞ্চলিক আন্তর্জাতিক নামধারী মেলার খবর শুনলে চমকে উঠবেন!
এই সবখানে একটাই সুবিধা টাকা কম লাগে। এখানে বড় শিল্প উদ্যোক্তারা কেউ যেতে আগ্রহী নয়। কাজেই ভরসা তখন অতি ছোট,ছোট, উঠতি কিংবা মাঝারি উদ্যোক্তারাই। তবে সব ছাপিয়ে তথাকতিথ সেই সকল নারী উদ্যোক্তাদের ভীড় এখানে বেশিমাত্রায় লক্ষণীয়।
কখনো চেন্নাই,কখনো থিম্পু,লাইবেরিয়া,ঘানা,কেনিয়া এইসব এলাকায় কখনো চীন,কোরিয়া,তাইওয়ানে।
শেষোক্ত তিনটে দেষের নাম শুনে আপনি লম্ফ দিয়ে উঠবেন! এরাই বা কম কি?
চলুন আমরা তেমনি চায়নার একটা মেলার কথা শুনিঃ
প্রথমে ইপিবির আমন্ত্রণ আর পরে বড় ভায়ের অতি উৎসাহে আশাবাদী হয়ে আমি চীনের বেইজিং –য়ে এই মেলায় যেতে আগ্রহী হলাম। চীন ঘুরে দেখার বাসনা বহুদেশের ছিল। লেনিনের দেশ দেখা হয়ে গেছে –আশা ছিল মাও সে তুং এর দেশটাও দেখব।
বড় ভাই তখন জাপানে ছিলেন- তিনি ওখান থেকেই মেলায় অংশগ্রহন করবেন বলে,ইপিবির সাথে বৈঠক, অর্থকড়ি জমা দেয়া,স্যাম্পল এপ্রুভাল করে সেগুলো প্যাকিং করে জমা দেয়া থেকে শুরু করে ভিসা নিয়ে দৌড় ঝাঁপ সব আমাকেই করতে হোল!এর ফাঁকে অতি দরকারি দু-চারটে চাইনিজ শব্দও শিখে নিলাম। তখন গুগল বা ট্রান্সিলেটর আমাদের হাতের নাগালে আসেনি।
যথারীতি ভিসা পেয়ে নির্দিষ্ট দিনে চায়না ইস্টার্নে বেইজিং এ পৌছে গেলাম! হোটেল বুকিং ছিল অনলাইনে। হোটেল কতৃপক্ষ চাইনিজ ভাষায় যে ম্যাপটা সরবরাহ করেছিল সেই ম্যাপ ট্যাক্সিওলাকে দেখিয়ে অনেকটা ঝামেলা ছাড়াই হোটেলে গিয়ে পৌঁছুলাম। খানিক বাদেই থাইল্যান্ড থেকে আমার আরেক বন্ধু চীন ঘোরার নিমিত্তে সেই হোটেলে এসে উতফুল্ল! আর আমি এক সঙ্গী পেয়ে তখন দারুন উৎফুল্ল!

এপর্ব সামনের পর্বে সমাপ্ত হবে
ছবিঃ চায়নায় সাউথ এশিয়ান কমিউনিটি ফেয়ারের উদ্বোধনের প্রাক্কালে~ আমার তোলা
প্রথম পর্বের জন্যঃ Click This Link

মন্তব্য ২৫ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (২৫) মন্তব্য লিখুন

১| ১৬ ই জুলাই, ২০২১ বিকাল ৫:৩৫

হাবিব বলেছেন:





ঢাকা আন্তর্জাতিক বানিজ্য মেলা এবং ইপিবি নিয়ে যা বললেন তা একদমই ঠিক। আন্তর্জাতিক বানিজ্য মেলায় যে পণ্য মিলে তা নিউ মার্কেকেটের ওভারব্রিজেও পাওয়া যায়। তফাৎ হলো একটা টিকেট কেটে কিনতে আরেকটা কিনতে টিকেট লাগে না।

চামরা শিল্পের সম্ভাবনা এবং এই শিল্পে নতুন উদ্যোক্তা হতে গেলে কি কি করনীয় আপনার কাছ থেকে জানতে চাই।

১৬ ই জুলাই, ২০২১ বিকাল ৫:৫১

শেরজা তপন বলেছেন: জ্বী সুপ্রিয় হাবিব ভাই, ঠিক বলেছেন, বেশী ভাড়া দিয়ে গিয়ে - টিকেট কেটে। ভিড়ভাট্টা সামলে ৫/৭ গুন দাম দিয়ে ফুচকা কাবাব খেয়ে নিউমার্কেট আর পুরানো ঢাকার বাতিল মাল কিনি :)

ব্ব্যাপক পরিসরের লেখা। অনেক অনেক অথেনটিক তথ্যের প্রয়োজন আছে।
এর আগে ড: এম আর ভাই ইয়ের মন্তব্যের প্রতিউত্তরে বলেছিলাম;
এই সমস্যা থেকে উত্তরণের পথ, চামড়ার ধরন বা প্যাটার্ন, খুচড়া ম্ররকেট ও অনলাইনে চামড়া বলে অ-চামড়াজাত দ্রব্য দিয়ে প্রতারনা ও অতিরিক্ত মুনাফার চেষ্টা। প্রাকৃতিক চামড়া চেনার সহজ উপায় সহ চামড়া দিয়ে এস এল জি( স্মল লেদার প্রডাক্ট) তৈরি করার কিছু কলাকৌশল জানানোর ইচ্ছে আছে।
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে, মন্তব্য ও লাইকের জন্য।

২| ১৬ ই জুলাই, ২০২১ বিকাল ৫:৫৭

হাবিব বলেছেন: আগের তুলনায় চামড়ার দাম কমে যাবার প্রধান কারন বলে কোনটিকে মনে হয় আপনার?
চামড়া নিয়ে আমার আগ্রহ আছে। তবে জ্ঞান নেই সেই পরিমান।

১৬ ই জুলাই, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:১১

শেরজা তপন বলেছেন: আমার আগের পর্বগুলোতে এ সন্মন্ধে অনেক কিছু আলোচনা করেছি। সুযোগ পেলে পড়বেন আশা করি;

অতি সংক্ষেপে কিছু বলছি;
১। ট্যানার্স এসোসিয়েশন ও ট্যানারী ফড়িয়ে কাঁচা চামড়ার আড়তদারতের কারসাজি।
২। বেশীরভাগ বড় ট্যানারি বন্ধ হয়ে যাওয়া।
৩। ইউরোপিয়ান বায়ারদের মুখ ফিরিইয়ে নেয়া- নেতিবাচক প্রচারনার জন্য, এদেশের চামড়া নিতে অস্বীকৃতি।( বাইরে থেকে চামড়া এনে সেটা দিয়ে প্রয়াডাক্ট করে এক্সপোর্ট)
৪। চায়নার সিন্ডিকেটের কারসাজি।
৫। রপ্তানি বাজারে বড় ধরনের ধ্বস।
৬। কেমিক্যাল ও লবনের দাম বাড়ায় ট্যানিং ও সংরক্ষনের খরচ বেড়ে যাওয়া
৭।ব্যাঙ্কলোন নিয়ে অসততার জন্য- চামড়া ব্যাবসায়ীদে পুনরায় চামড়া কেনার জন্য লোন না দেয়া। এবং লোন পেলেও সেই টাকা অন্য খাতে বিনিয়োগ বা পাচার করা
এইরকম আরো অনেক কিছু...

৩| ১৬ ই জুলাই, ২০২১ বিকাল ৫:৫৮

হাবিব বলেছেন: কাঁচা চামড়া প্রক্রিয়াজাত করন থেকে শুরু করে পণ্য তৈরীতে বিনিয়োগ করা কতটা যুক্তিসম্মত বর্তমান বাজারে?

১৬ ই জুলাই, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:১৪

শেরজা তপন বলেছেন: স্থানীয় বাজারে চামড়াজাত পন্যের চাহিদা দিন দিন বাড়ছে।
ব্যাবসায় নামার আগে কিছুটা পুর্ব অভিজ্ঞতা আবশ্যক। ইনভেষ্ট করতে হবে ধীরে ধীরে।
সঠিক জায়গায় নক করতে পারলে অবশ্যই ভাল কিছু হবে। জেনে শুনে বুঝে তারপরে ব্যাবসা- তবে সম্ভাবনা অনেক

৪| ১৬ ই জুলাই, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:১৩

হাবিব বলেছেন: চামড়া শিল্পের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ মনে হয় সলিড এবং লিকুইড ওয়াস্ট ম্যানেজমেন্ট। উন্নত দেশগুলো কিভাবে এসবের রক্ষনাবেক্ষণ করে তা জানা প্রয়োজন। প্রসেসিং কস্ট কমিয়ে ওয়াস্ট ম্যানেজমেন্ট তরতে পারলে মনে হয় চামড়া শিল্প ঘুরে দাড়াতে পারে। সরকারের সুদৃষ্টি থাকতে হবে। নামকাওয়াস্তে বিসিকের কার্যক্রম আরো ডুবাবে এই শিল্পকে। আজকেও নয়া দিগন্তে একটা রিপোর্টে দেখলাম ৫ টি কারখানা বন্ধ হওয়ার খবর। একদিকে চামড়ার দাম দেই অপর দিকে লোকসানে পরে বন্ধ হচ্ছে কারখানা!! এতিমখানা-মাদ্রাসাগুলোর বড় একটা আয়ের উৎস আজ ধ্বংসের পথে।

১৬ ই জুলাই, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:২২

শেরজা তপন বলেছেন: এতিম মাদ্রাসার বড় ভুল হয়েছে চামড়ার উপর নির্ভরশীলতা।
তাদের উচিত হবে চামড়ার সল্টিং প্রসেসটা জানা- না হয় কোন এক্সপার্ট কে ভাড়া করে এনে চামড়া লবন মাখিয়ে ৬ মাস থেকে
এক বছরের অধিক সংরক্ষন করা যায়।
বছরের কোন এক সময় চামড়াদ ঘাটতি হবেই- তখন বিক্রি করা উচিত। মাদ্রাসার লোকেরা যদি সবাই চামড়া ধরে রাখে তবে
চামড়ার জন্য হাহাকার পরে যাবে আমি নিশ্চিত।
উন্নত বিশ্বে কাঁচা চামড়াকে বুলু ওয়েটে রুপান্তর করতে গিয়ে ওয়েষ্ট ম্যনেজমেন্ট বাবদ যে টাকা খরচ হয় তাতে চামড়ার দাম অনেক বেড়ে যায়। সেজন্য অনেক দেশই আমাদের দেশের মত দেশে কাঁচা চামড়া পাঠিয়ে এসবদেশকে ভাগাড় বানিয়ে ব্লু ওয়েট করে নিয়ে যায়।
ব্লু ওয়েট চামড়া রপ্তানী নিষিদ্ধ করার উদ্যোগটা ভাল ছিল কিন্তু অসময়ে হয়েছিল। হেমায়েতপুরে ট্যানারি পল্লি কমপ্লিট করেই সেটা করা উচিত ছিল।

৫| ১৬ ই জুলাই, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:৩২

ইসিয়াক বলেছেন: চমৎকার মন্তব্য প্রতিমন্তব্য পড়ছি। আগের এক পর্ব পড়েছি বাকিগুলো পড়ার আগ্রহ হচ্ছে। সময় করে পড়বো।
পোস্টে ভালো লাগা রেখে গেলাম প্রিয় ব্লগার।
শুভ বিকাল।

১৬ ই জুলাই, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:৩৯

শেরজা তপন বলেছেন: আগের পর্বে মন্তব্যতো পেলামনা ভাই- এক আধটা কথা বলে গেলে আনন্দিত হতাম :)
তবে পড়েছেন জেনে এতেই আনন্দিত হলাম।
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্য ও লাইকের জন্য, ভাল থাকবেন।

৬| ১৬ ই জুলাই, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:৪৭

ইসিয়াক বলেছেন: ব্যক্তিগত ব্যস্ততার জন্য সবসময় মন্তব্য করা হয় না ভাইয়া। আর আপনার এই লেখাটি পড়ে আমার চামড়ার ব্যপারে আরও জানবার আগ্রহ জন্মেছে।
ধন্যবাদ

১৬ ই জুলাই, ২০২১ রাত ১১:০৩

শেরজা তপন বলেছেন: আপনি সবসময়ে আমার সাথে আছেন সেটা আমি নিশ্চিত জানি :)
কোন সমস্যা নেই সময় সুযোগ পেলেই মন্তব্য করবেন।চামড়া নিয়ে আরো অনেক কিছু বলার আছে- সাথে থাকবেন বরাবরের মত সেই প্রত্যাশা রাখি

৭| ১৬ ই জুলাই, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:৪৯

হাবিব বলেছেন: সেজন্য অনেক দেশই আমাদের দেশের মত দেশে কাঁচা চামড়া পাঠিয়ে এসবদেশকে ভাগাড় বানিয়ে ব্লু ওয়েট করে নিয়ে যায়। এই তথ্যটা আমার অজানা ছিল। কি সাংগাতিক কথা!!! :((

১৬ ই জুলাই, ২০২১ রাত ১১:০৫

শেরজা তপন বলেছেন: ব্লু ওয়েট চামড়া রপ্তানী বন্ধ করার পরে এই ট্রেন্ড কমে এসেছে।

ফের ধন্যবাদ সাথে থাকার জন্য

৮| ১৬ ই জুলাই, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:০৭

সেলিম আনোয়ার বলেছেন: আপনার লেখায় আমাদের দেশীয় প্রডাক্টের ঘাটতির বিষয়টি আছে। সহজ ভাবে বলতে গেলে মধ্যস্বত্ত্বভোগীদের স্তরে স্তরে দূর্ণীতি অতিরিক্ত মুনাফার লোভ সামগ্রিক দ্রব্য সেবাকে আকর্ষণহীন করে তুলেছে । দ্রব্য ও সেবার গুণগত মান অটুট থাকলে বিপনন সঠিক পরিকল্পনা ও তার বাস্তবায়ন আলোর মুখ দেখাবে সমৃদ্ধি বয়ে আনবে প্রতিযোগিতার বাজারে শক্ত অবস্থান তৈরি করতে পারবে। না হলে নয়। তার মানে কাঁচা মাল থেকে শুরু করে চূড়ান্ত প্রোডাক্ট পর্যন্ত প্রতিটি স্তরে কাঙিক্ষত উৎকর্ষতা মানে পৌছতে হবে এবং খরচও একটা আদর্শ মাত্রার মধ্যে থাকলেই কেবল আমাদের দ্রব্য ও সেবা বিশ্ববাজারে টিকে যাবে। কিন্তু আমাদের প্রতিটি পলিসি মেকার, আবার মোটাদাগে বললে মাঠ ব্যবস্থাপনা অর্থলোভী এবং অতিরিক্ত মুনাফা লাভে মরিয়া । দক্ষ শ্রমিকের অভাব। অভাব কাঙিক্ষত লজিস্টিক সাপোর্টের । ফলে সংশ্লিষ্ট প্রতিটি ব্যক্তির কেউ কিন্তু দায় এড়াতে পারবে না। আরেকটা বিষয় না বললেই নয় সেটা হলো পরিবেশ সচেতনতা সেখানে আজও বাঙালি জিরো বলতে হবে যতটুকু আছে তা হলো চাপিয়ে দেয়া লোকদেখানো। সুযোগ পেলে পরিবেশের বারোটা বাজিয়ে দেবে। আন্তর্জাতিক পরিবেশ মান বজায় রাখতে না পারার কারণে অনেক প্রডাক্ট আন্তর্জাতিক বাজারে বাজেয়াপ্ত হয়ে যায়। আর পৃথিবীটা প্রতিযোগিতার। নব্য উপনিবেশবাদ শুধু রাজনৈতিক টার্ম নয় । ব্যবসায়িক টার্মও বটে । বিশেষ করে আধুনিক বিশ্বে যখন কুটনীতি বলতে অর্থনৈতিক কূটনীতি বুঝায় সেক্ষেত্রে উন্নত বিশ্বের দাবিয়ে রাখার যে প্রবণতা সেটাকে জয় করে সফল হতে হবে কিন্তু। ভেবে দেখুন আমাদের দেশটা আয়তনে ক্ষুদ্র হলেও জনসংখ্যায় পৃথিবীর ৭ম/৮ম বৃহত্তম রাষ্ট্র। সে বিবেচনায় এটা একটা বৃহত্তম বাজারগুলোর একটি। আর মানুষ যেহেতু ভোক্তা সেহেতু আমাদের রাজারের শত ভাগে পৌছতে পারলে আমাদের মার খাওয়ার কোন সুযোগ থাকছে না। জাতিগত ভাবে আমাদের দরকার সার্বজনীন শুদ্ধাচার । সিঙ্গাপুর শুধু শ্রমের উপর ভিত্তি করে এতদূর এগুতে পারলে আমরা পারবো না কেন? আমাদের তো সস্তা শ্রম আছে আর চামড়ার ক্ষেত্রে কুরবানির পশু চামড়া নেহায়েত কম নয় সহজ ভাষায় বলতে বিশাল মজুদ। এ কাঁচা চামড়াগুলোর থেকে ব্যবহার্য চামড়াজাত দ্রব্য উৎপাদনের বিষয়টি সুষ্ঠু পরিকলন্পনা ও লাগসই বাস্তবায়ন করতে পারা অব্দি গেলেই চামড়া ও চামড়াজাত শিল্পে আমরা সফল হবো। আন্তর্জাতিক পলিসি মেকারদের আধিপত্য বাদিদের বৃদ্ধাঙ্গলী দেখিয়ে আমরা কাঙিক্ষত লক্ষে পৌছতে পারবো।


আপনি নির্মম প্রতিবন্ধকতাগুলো তুলে ধরেছেন । এটাও ঠিক কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখিতে টিকতে না পেরে চামড়া ও চামড়া জাত শিল্পের এই ভয়াবহ অবস্থা। অনেক ক্ষেত্রে উন্নত সমৃদ্ধ রষ্ট্রগুলো ক্ষুদ্র রাষ্ট্রগুলোকে দাবিয়ে রাখে ডাম্পিং করে। আমাদের বড় প্রতিবেশি রাষ্ট্র ভারতও এক্ষেত্রে আরও এক কাঠি সরেস। সেসব লিখতে গেলে একদিনে লেখা শেষ হবে না।

যাই হোক চমৎকার শেয়ার। চামড়াজাত দ্রব্যের বেহাল দশা জানা গেল। সংশ্লিষ্ট আরও অনেক তথ্যও জানা হলো। এসব দুষ্ট চক্র থেকে আমাদের বের হতে হবে । তার জন্য কঠোর পরিশ্রম দেশ প্রেম সততার সঠিক কর্মপরিকল্পনা ও টেকসই বাস্তবায়ন আবশ্যক।

ধন্যবাদ শেরজা তপন চমৎকার শেয়ারে ।

১৬ ই জুলাই, ২০২১ রাত ১১:১৯

শেরজা তপন বলেছেন: ~সহজ ভাবে বলতে গেলে মধ্যস্বত্ত্বভোগীদের স্তরে স্তরে দূর্ণীতি অতিরিক্ত মুনাফার লোভ সামগ্রিক দ্রব্য সেবাকে আকর্ষণহীন করে তুলেছে । দ্রব্য ও সেবার গুণগত মান অটুট থাকলে বিপনন সঠিক পরিকল্পনা ও তার বাস্তবায়ন আলোর মুখ দেখাবে সমৃদ্ধি বয়ে আনবে প্রতিযোগিতার বাজারে শক্ত অবস্থান তৈরি করতে পারবে। না হলে নয়। তার মানে কাঁচা মাল থেকে শুরু করে চূড়ান্ত প্রোডাক্ট পর্যন্ত প্রতিটি স্তরে কাঙিক্ষত উৎকর্ষতা মানে পৌছতে হবে এবং খরচও একটা আদর্শ মাত্রার মধ্যে থাকলেই কেবল আমাদের দ্রব্য ও সেবা বিশ্ববাজারে টিকে যাবে~
আপনি খুব মুল্যবান কথা বলেছেন- সেলিম আনোয়ার ভাই। আমার লেখায় আপনার মুল্যবান মতামতটা বেশ কাজে লাগবে।
অব্যাবস্থাপনা, দুর্নীতি, অদক্ষতা, লিঙ্কেজ ব্যাকয়ার্ডের চরম ঘাটতি,চৌর্যবৃত্তি বায়ারদের সাথে প্রতারনা। সবারই ম্যানুফ্যাকচারার হবার বাসনা। না জেনে বা অল্প জেনে শুধু অর্থের জোরে মার্কেট কন্ট্রোল করার চেষ্টা সহ অনেক কিছুই আমার এই ব্যবসায় উন্নতির পথে বাধা।
আমাদের বিশ্বমানের চামড়া থাকার পরেও নিন্মমানের পন্য তৈরি, গছিয়ে দেবার মানসিকতা, অনৈতিকতা, অতি মুনাফা লোভ এই ব্যবসাকে ধ্বংস করে দিচ্ছে।
আপনার এই সুদীর্ঘ মন্তব্য আমাকে দারুনভাবে অনুপ্রাণিত করল এবিয়ে আরো ভাল কিছু লেখার জন্য।

সবশেষে যা বলেছেন;
~ সংশ্লিষ্ট আরও অনেক তথ্যও জানা হলো। এসব দুষ্ট চক্র থেকে আমাদের বের হতে হবে । তার জন্য কঠোর পরিশ্রম দেশ প্রেম সততার সঠিক কর্মপরিকল্পনা ও টেকসই বাস্তবায়ন আবশ্যক~
এত সন্দর মন্তব্যের দ্বারা আমার লেখাকে সমৃদ্ধু করার জন্য আন্তরিক কৃতজ্ঞতা। ভবিষ্যতে সাথে থাকবেন এই প্রত্যাশায় রইলাম।

৯| ১৬ ই জুলাই, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:০৭

কামাল১৮ বলেছেন: চামড়া শিল্প ধংসের মূলে আছে আমাদের ব্যবসায়ীদের অসততা।

১৬ ই জুলাই, ২০২১ রাত ১১:০০

শেরজা তপন বলেছেন: ্প্রিয় কামাল ভাই,
ব্যাবসায়িদের অসততা একটা মুখ্য কারন বটে কিন্তু সেটা একমাত্র কারন নয়।
প্রথমত যারা অসাধু ব্যবসায়ী তারা আদপে মুল ধারার ব্যবসায়ী নয়- সত্যিকারে ডাই হার্ট ব্যাবসায়িরা তাদের রুটু রুজি বন্ধ হয়ে
যেতে পারে এমন আশঙ্কা থাকলে কখনোই তেমন অসাধু হবেন না।

আমরা আসলে জাতিগতভাবে মোটামুটি সবাই অসৎ- অতি দ্রুত অর্থ উপার্জন করতে চাই এবং ব্যাবসা বুঝি না।
দেশের যে কোন অরথনৈতিক দুর্ঘটনার জন্য সরাসরি ব্যাবসায়িদের গালি দেয়া একটা ট্রেন্ড হয়ে গেছে। কিন্তু ভিতরে তলিয়ে দেখেন, এর পেছনে আছে রাজনীতিবিদ, আমলা, ব্যাঙ্কের কর্মকর্তা, ফড়িয়া দালাল, দেশি বিদেশি কুচক্রী মহল সহ অনেকেই।

ধন্যবাদ আপনাকে-ভাল থাকুন

১০| ১৬ ই জুলাই, ২০২১ রাত ১০:৫০

স্প্যানকড বলেছেন: দেশে মানুষের দাম নাই ! আর ভাই আপনি বলছেন পশুর চামড়ার কথা ! সব যাবে এক এক করে আমরা হারাতে জানি গড়তে জানি না। ভালো থাকবেন এবং সুস্থ ও নিরাপদ থাকুন তপন দা ।

১৬ ই জুলাই, ২০২১ রাত ১১:০৮

শেরজা তপন বলেছেন: ধনবানদের দাম কিছুটা আছে :)
কি বলব? উত্তর খুঁজে পাচ্ছি না- দেখি আগে পশুর চামড়ার কিছু একটা মুল্য পাওয়া যায় কিনা- তারপরে না হয় নিজের মুল্য নিয়ে ভাবব!

আপনি ভাল থাকুন সুস্থ্য থাকুন- নিরাপদে থাকুন প্রিয় ভ্রাতা,

১১| ১৭ ই জুলাই, ২০২১ রাত ৮:৩০

ডঃ এম এ আলী বলেছেন:



এই বিষয়ে আপনার পুর্বের পর্বটি ( ৫ম পর্ব ) পাঠের পর একটি
ছোট মন্তব্য লিখে রেখে এসেছি ।

এ পর্বেও চামড়া শিল্পের বানিজ্যিক নিয়ে একটি মনোরম আলোচনা
দেখতে পেলাম । অলোচনার শুরুতেই ই পি বি'র বেহুদা মেলা নিয়ে
বেশ কিছু গুরুত্বপুর্ণ দিক তুলে ধরেছেন । ইপিবির বেহুদা কর্ম
নিয়ে আমার নিজেরো কিছু ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা আছে , তবে সেগুলি
বছর বিশেক আগের বলে তার পুনরুল্লেখ আর করতে চাচ্ছিনা
এখানে, তবে আপনার কথার সাথে সুর মিলিয়ে বলি তার অনেকগুলিই
স্রেফ বেহুদাই বটে ।

আন্তর্জাতিক মেলায় অংশ গ্রহনের নিমিত্ত বিভিন্ন ধরনের প্রনোদনাও বেশ
প্রশ্নের সম্মুখীন পুর্বেও ছিল এখনো আছে ।

ঢাকা আন্তর্জাতিক বানিজ্য মেলায় প্রদর্শনী কিংবা নিছক স্থানীয় ক্রেতাদের কাছে
ফুটপাতের কমদানী মানহীন জুতার সমাহার সেদিকটিতেও হয়েছে আলোকপাত,
যার সাথে একমত না হওয়ার কিছু নেই, কারণ ভুক্তভোগী সকলেই তা জানে ।

সিংগেল কান্ট্রি ফেয়ার নিয়ে বিভিন্ন নামি দামী ভেনুতে ইভেন্ট আয়োজনে বিবিধ
পদের বানিজ্যিক অভিসন্ধি ও সেগুলির পিছনে দৌঁড় ঝাপের সুফল চামড়া শিল্প
কতটা যে ভোগ করছে তার চিহ্ন দেখা যায় সর্বক্ষেত্রে এর বিপর্যয়ের দারুন চিত্রে ।

চামড়া শিল্পে সত্যিকারের নিবেদিত প্রাণ নারী উদ্যোক্তাদের স্বাগত জানাই ।
তাঁরা শিল্প বানিজ্যে সফল হোন , তাঁদের সফলতার সুফল জাতি ভোগ করুক
এটা সব সময়ই কামনা করি । তবে এ পোষ্টে তথাকথিত কতেক নারী উদ্যোগক্তার
হরেক প্রকার ধান্ধার কথা দেখে অনেকটাই বিচলিত , এরাই মুলত উঁচু মহলে
বিবিধ প্রকারের কলকাঠি নারে , একদিকে যেমন নিয়ে যায় ট্রফি আর দিকে
দেশী বিদেশী বিবিধ অনুদান টেনে নিয়ে ভিন্নখাতে কৌশলে করে চালান ।

দেশের বাইরে ইপিবির মেলা নিয়ে কিছু তুঘলকি কান্ডকারখানাও উঠে
এসেছে লেখাটিতে , অনেক কথাই জানা হল এ সাথে । ইতিবাচক দিকের
চেয়ে নেতিবাচক দিকগুলিই প্রকট হয়ে উঠেছে। একটি গুঢ় কথাই বলেছেন,
লাভের মধ্যে কিছু নামি দামী দেশের ভিসার সিল লাগানো যায় পাশপোর্টে
পরে সেটা সুযোগমত কাজে লাগানো যায় বিবিধ উদ্দেশ্যে ।

সামনের পর্বে আরো মুল্যবান কথামালা তথ্য উপাত্তসহ দেখার অপেক্ষায়
রইলাম । এ পর্বটিকেও নিয়ে গেলাম প্রিয়তে ।

গত কোরবানীর ঈদের পরে কোরবানীর পশুর চামড়া নিয়ে একটি পোষ্ট
দিয়েছিলাম । এবার কোরবানীর পশুর চামড়া নিয়ে সরকার যে দাম বেঁধে
দিয়েছে সে তথ্য উপাত্ত দেখে কোরবানী পশুর চামড়া নিয়ে আবারো কোন
তেলেসমাতি কান্ড না ঘটে তারি আশঙ্কা বুকে দুরু দুরু করে বাজছে ।
মনে হচ্ছে পুর্বের পোস্টটাকেই রিপোষ্ট করার প্রয়োজন এখনো আছে ।

অনেক অনেক শুভেচ্ছা রইল

১৮ ই জুলাই, ২০২১ বিকাল ৫:৫২

শেরজা তপন বলেছেন: আমি প্রথম ই পিবি'র মাধ্যমে হংকং এ অনুষ্ঠিত APLF Leather show তে প্রথম অংশগ্রহন করেছিলাম ২০০০ সালে, আমার
বড় ভাইয়ের সাথে।
সেই মেলাইয় অংশগ্রহন ও অভিজ্ঞতার বিষয়ে আমি পরের পর্বে লিখব বলে আশা রাখছি। আপনি সম্ভবত সেই সময় কালের কথা বলতে চাচ্ছেন?
৯৮,৯৯ পর পর দু'বছর আমরা বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক বানিজ্য মেলায় অংশ নিয়েছিলাম। সে অভিজ্ঞতাও খুব সুখকর নয়।

-আন্তর্জাতিক মেলায় অংশ গ্রহনের নিমিত্ত বিভিন্ন ধরনের প্রনোদনাও বেশ
প্রশ্নের সম্মুখীন পুর্বেও ছিল এখনো আছে ।- ঠিক বলেছেন, এটা অনেকাংশেই হাস্যকর!

নারী উদ্যোক্তাদের নিয়ে দেশে বিদেশে আমার অনেক তিক্তকর ও মধুর( বেশ কম) অভিজ্ঞতা আছে। সব খোলামেলাভাবে বললে, উঠতি নারী এন্টারপ্রেইনাররা কষ্ট পাবেন- আগ্রহ হারাবেন।

আমার ধারনা এইবার কুরবানী এমনিতেই প্রতিবারের তুলনায় কম হবে। স্থানীয় বাজারে চামড়ার ঘাটতি আছে বেশ। বছরের শেষ দিকে ছাগলের চামড়া বেশ দুস্প্রাপ্য ছিল।
কাঁচা চামড়ার-ব্যাপারীদের কাছ থেকে অনেক উচ্চমুল্যে নাকি ট্যানারীর মালিকদের চামড়া কিনতে হয়েছে শেষমেশ। শেষ বল-টা কাঁচা চামড়ার ব্যাপারীদের হাতে ছিল।
প্রতিটা এতিমখানা ও মাদ্রাসা কতৃপক্ষ যদি স্ব-উদ্যোগে চামড়ায় লবন লাগিয়ে স্টোরে রেখে দিতে পারে, তাহলে কারোই লস হবার সম্ভাবনা নেই। যদিও কথা থাকে সল্টিং এর টাকা ও চামড়া রাখার স্টোর পাবে কই?

অনেক অনেক ধন্যবাদ ও ফের কৃতিজ্ঞতা আপনাকে আপনার মহা মুল্যবান মতামতের জন্য।
ভবিষ্যতে আপনার মন্তব্যের অপেক্ষায় থাকব।


১২| ১৮ ই জুলাই, ২০২১ বিকাল ৪:০৪

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: আপনার পোষ্ট পড়তে পড়তেই মনে ভাসছিল ড. এম এ আলী ভায়ার সেই পোষ্টটার কথা

মাটিতে প্রোথিত কুরবানীর পশুর চামড়াই ধ্বংসের হাতিয়ার হয়ে ঝাপিয়ে পড়ুক চামড়াশিল্পের অশুভ সিন্ডিকেট বিনাশে

সত্যি হতাশ হয়ে যায় মন। এত এত অনাচার কিভাবে ঘটে একটা দেশে!
দেশকে ভালবাসার কেউ কি নেই।!!!!
:((

১৮ ই জুলাই, ২০২১ বিকাল ৫:৫৭

শেরজা তপন বলেছেন: কেউ নেই- যারা ভালবাসে তাদের ক্ষমতা নেই! এইটাই রিয়েলিটি, ফের আমি ক্ষমতায় গেলে আমি দেশকে ভালবাসব না হয়তো। আমিও অবৈধ অর্থবিত্তের মালিক হব। টাকার পাহাড় হবে, নৈতিকতা জলাঞ্জলি দিব, বিদেশে বাড়ি গাড়ি করব। ভাবব যে আমি অনন্তকাল বাঁচব আর এই টাকার পাহাড়ে বসে সুখ, বিলাস আর আরামের সাগরে ভেসে বেড়াব। ভাবব দেশের সবাই চোর আমি একা ভাল থেকে কি হবে?????
তার থেকে আমরা এভাবেই দেশকে ভালবাসি- আমাদের ক্ষমতার দরকার নাই।

১৩| ২২ শে জুলাই, ২০২১ রাত ৩:১১

ডঃ এম এ আলী বলেছেন:

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.